স্টাফ রিপোর্টার :
বাংলাদেশের কর্মীদের অনেকই মধ্যপ্রাচ্যের অনেক দেশে গিয়ে কাজ পাচ্ছে না। বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে কোন দেশে সর্বনিম্ন কত বেতনে বাংলাদেশি কর্মীরা যাবে, সেটির একটি চাহিদাপত্র তৈরির বিষয়ে কাজ করছে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। মঙ্গলবার (১৩ ডিসেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে ‘প্রত্যাশা প্রবাসীদের আশা’ শীর্ষক সেমিনার শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এ তথ্য জানান প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ। ‘প্রত্যাশা প্রবাসীদের আশা’ শীর্ষক সেমিনার ও চিত্র প্রদর্শনীর যৌথভাবে আয়োজন করে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, আইওএম ও ব্র্যাক।
ইমরান আহমদ বলেন, এ বছর (২০২২ সাল) আমাদের বিদেশে কর্মী যাওয়ার সংখ্যা ১১ লাখ হয়ে গেছে। অর্থবছর হিসেব করলে এবং মালয়েশিয়ায় ভালোভাবে যাওয়া শুরু হয়ে গেলে ১৫ থেকে ১৬ লাখ কর্মী হয়ে যাবে। মন্ত্রণালয় থেকে অ্যাসেসমেন্ট করা হচ্ছে, কোন কোন দেশে মিনিমাম কত স্যালারি হলে ডিমান্ড নোট গ্রহণ করব। আমরা একটা ফিগারে আসব।
এ সময় মন্ত্রী সৌদিতে বাংলাদেশিদের সঙ্গে অন্য দেশের কর্মীদের বেতনের যে পার্থক্য তা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, সৌদিতে আমাদের ওয়ার্কাররা পায় ৮০০ রিয়াল আর অন্যান্য দেশের ওয়ার্করা পায় ১ হাজার থেকে ১২শ রিয়াল। এখানে একটা বিষয়ে আমাদের গুরত্ব দেওয়া দরকার। আমাদের ওয়ার্কারদেরও দক্ষতা বাড়াতে হবে, এটা বিরাট দায়িত্ব।
অভিবাসন ব্যয় প্রসঙ্গে প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী বলেন, অভিবাসনটা ওয়ান ওয়ে প্রসেস না। দু’পক্ষ থেকে এটা হয়। কর্মী পাঠানো দেশ হিসেবে আমাদের একটা সীমাবদ্ধতা আছে। আমরা যে দেশে কর্মী পাঠাচ্ছি, সেদেশে কিন্তু আমাদের নিয়ন্ত্রণ থাকে না। আমাদের লক্ষ্য মানুষ পাঠানো, অনেক ক্ষেত্রে রিজেনেভল না হলেও আমাদের হজম করে নিতে হয়। তাহলে কী সরকার বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত অভিবাসন ব্যয় মেনে নিচ্ছে? -এমন প্রশ্নের জবাবে ইমরান আহমেদ বলেন, বাধ্য হয়ে না। এটা ওই দেশের যে সিস্টেম আছে, সেটা আমাদের এগ্রি করতে হচ্ছে। এর মধ্যেই অন্যায় যেন না হয়, সেদিকে আমরা নজর রাখছি।
মন্ত্রী মালয়েশিয়ার প্রসঙ্গ টেনে বলেন, মালয়েশিয়াতে আমাদের এমওইউ মোতাবেক খরচ প্রায় ৮০ হাজার টাকা। কিন্তু আমি শুনতেছি, মালয়েশিয়ায় ২ থেকে ৩ লাখ টাকা নিচ্ছে। মালয়েশিয়ায় যে পরিমাণ কর্মী যাচ্ছে তার চেয়ে প্রায় ২০ গুন কর্মীকে ভুয়া মেডিকেল করানো হচ্ছে- এ ব্যাপারে সরকার কোনো ব্যবস্থা নেবে কি না?, জানতে চাইলে ইমরান আহমদ বলেন, মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর নামে যেসব রিক্রুট এজেন্সি ভুয়া মেডিকেল ও অতিরিক্ত অর্থ আদায় করছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এটা নিয়ে ইতোমধ্যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আমি সব লাইসেন্স বন্ধ করে দেব।
অনুষ্ঠানে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ঢাকায় নিযুক্ত ডেপুটি হেড অব ডেলিগেশন ড. ব্রেন্ড স্পেনিয়ের বলেন, প্রবাসীদের দেশের উন্নয়নে শক্তিশালী অবদান রয়েছে। চলতি বছর বাংলাদেশি প্রবাসীরা ২২ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছেন। তবে আমরা নিরাপদ অভিবাসন প্রত্যাশা করি। সে লক্ষ্যেই আমাদের কাজ করতে হবে। ব্র্যাকের শিক্ষা, দক্ষতা উন্নয়ন ও অভিবাসন বিষয়ক পরিচালক সাফি রহমান খান বলেন, প্রবাসীদের অবদান কোনোভাবেই অস্বীকার করা যাবে না। কোভিড-১৯ কালেও প্রবাসীরা উল্লেখযোগ্য রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। প্রবাসীদের বিদেশের যাওয়ার পাশাপাশি ফিরে আসার পরেও কাজে যুক্ত করতে চাই আমরা। প্রবাসীদের দক্ষতা উন্নয়নে ব্র্যাকের অনেক উদ্যোগও রয়েছে বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশে আইওএম চিফ অব মিশন আব্দুস সাত্তার ইসব বলেন, নিরাপদ অভিবাসনের লক্ষ্যে প্রত্যাশা প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। গত ৫ বছরে এই প্রকল্প বাস্তবায়নে সরকার সহযোগিতা করছে বলে আমরা ধন্যবাদ জানাই।
চলারপথে রিপোর্ট :
ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য সরকার ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের জন্য উপহার হিসেবে রংপুরের বিখ্যাত হাড়িভঙ্গা আম পাঠিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনুস। আজ ১০ জুলাই বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ৩০০ কেজি আম পাঠানো হয়। ৬০টি কার্টনে করে ৩০০ কেজি হাড়িভাঙ্গা আম পাঠানো হয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে কার্গোওয়ার্ল্ড লজিস্টিকস নামে একটি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টার উপহার হস্তান্তর করা হয় আগরতলাস্থ বাংলাদেশ সহকারি হাইকমিশনের প্রতিনিধির কাছে। আখাউড়া স্থল শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম জানান, রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনায় সকল প্রকার ফি ও আদায়যোগ্য কর মওকুফ করে আমগুলো ছাড়করণ করা হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
কর অঞ্চল ময়মনসিংহের অন্তর্গত কিশোরগঞ্জ জেলার নিবন্ধিত করদাতাদের সঙ্গে কর কর্মকর্তাদের মতবিনিময় ও গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ ৫ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার স্থানীয় একটি হোটেলের কনফারেন্স রুমে অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ময়মনসিংহ কর অঞ্চল ও কিশোরগঞ্জ উপ কর কমিশনারের কার্যালয় (সার্কেল ১৩, ১৪ ও ২১)।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ময়মনসিংহ কর অঞ্চলের কর কমিশনার মো. আশরাফুজ্জামান। এ সময় যুগ্ম কর কমিশনার শামসুল আলম, কিশোরগঞ্জ জেলা কর আইনজীবী সমিতির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহমুদুল ইসলাম জানু, সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক মোল্লা দুলু, কিশোরগঞ্জ জেলা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রীর সভাপতি মজিবুর রহমান বেলাল ও সহ সভাপতি ইকবাল আহমেদ চৌধুরী অপু উপস্থিত ছিলেন।
সভায় আয়কর আইন-২০২৩, আয়কর সেবা প্রদানসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করা হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আজ। পাকিস্তানে হানাদারদের বন্দিদশা থেকে মুক্তি পেয়ে ১৯৭২ সালের এদিন তিনি সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের মাটিতে প্রত্যাবর্তন করেন। বঙ্গবন্ধু দীর্ঘ ৯ মাস কারাভোগের পর ৮ জানুয়ারি পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তি লাভ করেন। পরে তিনি পাকিস্তান থেকে লন্ডন যান এবং দিল্লি হয়ে ঢাকা ফেরেন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। এতে বঙ্গবন্ধু সর্বস্তরের জনগণকে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানান। স্বাধীনতা ঘোষণার কিছুক্ষণ পর পাকিস্তানের সামরিক শাসক ইয়াহিয়া খানের নির্দেশে তাকে গ্রেফতার করে পশ্চিম পাকিস্তানের কারাগারে নিয়ে আটক রাখা হয়। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি সৈন্যদের বিরুদ্ধে নয় মাস যুদ্ধের পর চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়। তবে ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মধ্য দিয়ে জাতি বিজয়ের পূর্ণ স্বাদ গ্রহণ করে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তান থেকে ছাড়া পান ১৯৭২ সালের ৭ জানুয়ারি ভোর রাতে অর্থাৎ ৮ জানুয়ারি। এদিন বঙ্গবন্ধুকে বিমানে তুলে দেওয়া হয়। সকাল সাড়ে ৬টায় তিনি পৌঁছান লন্ডনের হিথরো বিমানবন্দরে। ব্রিটেনের বিমানবাহিনীর একটি বিমানে পরের দিন ৯ জানুয়ারি দেশের পথে যাত্রা করেন বঙ্গবন্ধু। ১০ জানুয়ারি সকালে তিনি নামেন দিল্লিতে। সেখানে ভারতের রাষ্ট্রপতি ভিভি গিরি, প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী, সমগ্র মন্ত্রিসভা, সরকারি দল কংগ্রেসের প্রথমসারির প্রায় সব নেতা, দেশটির তিন বাহিনীর প্রধান ও অন্যান্য অতিথি এবং সে দেশের জনগণের কাছ থেকে উষ্ণ সংবর্ধনা লাভ করেন সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান। এরপর স্বদেশের পথে রওয়ানা দেন তিনি। এই স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে বঙ্গবন্ধু আখ্যায়িত করেছিলেন ‘অন্ধকার হতে আলোর পথে যাত্রা হিসাবে।’
জাতির পিতা এদিন দুপুর ১টা ৪১ মিনিটে ঢাকায় এসে পৌঁছেন। চূড়ান্ত বিজয়ের পর ১০ জানুয়ারি বাঙালি জাতি বঙ্গবন্ধুকে প্রাণঢালা সংবর্ধনা জানানোর জন্য অপেক্ষায় ছিল। আনন্দে আত্মহারা লাখ লাখ মানুষ ঢাকা বিমানবন্দর থেকে রেসকোর্স ময়দান পর্যন্ত তাকে স্বতঃস্ফূর্ত সংবর্ধনা জানান। বিকাল ৫টায় রেসকোর্স ময়দানে প্রায় ১০ লাখ লোকের উপস্থিতিতে তিনি ভাষণ দেন।
অনলাইন ডেস্ক :
কুয়াকাটায় স্থাপিত দেশের দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবলের (সি-মি-উই-৫) রক্ষণাবেক্ষণ কাজের জন্য আগামীকাল ১৮ এপ্রিল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে এক ঘণ্টা ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ পরিষেবা বন্ধ থাকবে।
আজ ১৭ এপ্রিল বুধবার বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবলস পিএলসি এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়।
এতে বলা হয়, কুয়াকাটায় স্থাপিত দেশের দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবলের (সি-মি-উই-৫) রক্ষণাবেক্ষণ কাজের জন্য ১৮ এপ্রিল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত এক ঘণ্টা ক্যাবলটির মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ পরিষেবা বন্ধ থাকবে। ফলে গ্রাহকরা সাময়িকভাবে ইন্টারনেটে ধীরগতির সম্মুখীন হতে পারেন বা ইন্টারনেট সেবা বিঘ্নিত হতে পারে।
তবে, একই সময়ে কক্সবাজার ল্যান্ডিং স্টেশন থেকে (সি-মি-উই-৪) সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে ব্যান্ডউইডথ সেবা যথারীতি চালু থাকবে।
অনলাইন ডেস্ক :
ইতালির ভিসা পেতে অপেক্ষায় থাকা প্রায় ৫০ হাজার বাংলাদেশি কর্মীর ভাগ্য নির্ধারণে আজ গুরুত্বপূর্ণ দিন। উন্নত জীবনের আশায় বৈধ পথে দেশটিতে যেতে বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করেও মাসের পর মাস অপেক্ষায় রয়েছেন অনেকে। আজ শুরু হওয়া ইতালির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফর থেকে তারা আশাবাদী একটি ইতিবাচক অগ্রগতি হবে।
দুইদিনের সফরে আজ ঢাকা আসছেন ইতালির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাতেও পিয়ান্তেদোসি। সফরে নিয়মিত ও বৈধ অভিবাসন নিয়ে তাৎপর্যপূর্ণ আলোচনা হবে।
অবৈধ পথে ইতালি যাওয়া বন্ধ করতে বাংলাদেশ ও ইতালি উদ্যোগ নিয়েছে। বাংলাদেশ থেকে পর্যায়ক্রমে লক্ষাধিক দক্ষ ও অদক্ষ কর্মী নেওয়ার জন্য দুই দেশের মধ্যে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হতে যাচ্ছে।
আগামীকাল ৬ মে মঙ্গলবার প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সাথে ইতালির এই এমওইউ স্বাক্ষর হবে। প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা গতকাল রবিবার রাতে গণমাধ্যমকে জানান, ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে অবৈধভাবে দীর্ঘদিন ধরে ইতালিতে পাড়ি দিচ্ছেন অনেক বাংলাদেশি নাগরিক।
ইতালি যাওয়ার পথে ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবিতে অনেক বাংলাদেশি মারাও যাচ্ছেন। সেই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ থেকে বৈধ পথে দক্ষ ও অদক্ষ কর্মী নেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে ইতালি। এ কারণে দুই দেশের আলোচনাসাপেক্ষে একটি এমওইউ (সমঝোতা স্মারক) সই করতে যাচ্ছে দুই দেশ।
এক প্রশ্নের জবাবে এই কর্মকর্তা বলেন, ইতালি সরকারের সাথে বাংলাদেশ সরকারের কথা হয়েছে। তারা লক্ষাধিক দক্ষ-অদক্ষ কর্মী নেবে। ইতালির সঙ্গে এর আগে কোনো এমওইউ ছিল না। এই এমওইউ স্বাক্ষরের পর বাংলাদেশের শ্রমিকদের ভাগ্য খুলবে। মঙ্গলবার সকাল পৌনে ১০টায় ইস্কাটন গার্ডেনের প্রবাসী কল্যাণ ভবনে অভিবাসনসংক্রান্ত এমওইউ স্বাক্ষর হবে।
অন্যদিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, আজ বিকেলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর সঙ্গে ইতালির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠক হওয়ার কথা আছে। এর আগে ইতালির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে গার্ড অব অনার দেওয়া হবে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সাথে বৈঠকে দুই দেশের গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদান, আন্তর্জাতিক অপরাধ নিয়ন্ত্রণ, প্রশিক্ষণসহ নানা বিষয়ে আলোচনা হবে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা ফয়সাল হাসান গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, আজ দুপুরে ইতালির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ঢাকা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করার কথা রয়েছে।
বৈঠক ও এমওইউ স্বাক্ষর শেষে মঙ্গলবার তিনি নিজ দেশে ফিরে যাবেন। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা এম তৌহিদ হোসেনের সঙ্গেও বৈঠক করবেন ইতালির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ইতালিতে যাওয়ার জন্য বাংলাদেশের অনেক কর্মী ভিসা পেতে অপেক্ষায় রয়েছেন। দীর্ঘদিন অপেক্ষার পরও তারা ভিসা পাচ্ছেন না। ইতালির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অনেক বাংলাদেশি ইতালি যাওয়ার জন্য যে ভিসা আবেদন করেছেন, সেখানে তারা ভুয়া নথিপত্র জমা দিয়েছেন। সে কারণে অধিকতর যাচাই-বাছাই করার জন্য ভিসা দিতে দেরি হচ্ছে। ইতালির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরে এই বিষয়টির সুরাহা হবে বলে জানা গেছে।
ইতালিতে যেতে ইচ্ছুক প্রবাসী কর্মীদের ভিসা পেতে বিলম্বের বিষয়ে একাধিকবার ব্যাখ্যা দিয়েছে ভিসা আবেদনপত্র ও ডকুমেন্টস প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত প্রতিষ্ঠান ভিএফএস গ্লোবাল। এক বিবৃতিতে বলা হয়, একটি দায়িত্বশীল সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে আমরা প্রতিনিয়ত ভিসা আবেদনকারীদের সচেতন করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি, যাতে করে তারা সতর্ক থাকেন এবং শেষ মুহূর্তের সমস্যা এড়াতে জলদি ভিসার জন্য আবেদন করেন।
গত ৩১ মার্চ থেকে ইতালির ভিসা আবেদনের ক্ষেত্রে নতুন ই-মেইল ভিত্তিক অ্যাপয়েন্টমেন্ট বুকিং সিস্টেম চালুর কথা জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, বৈধ ‘নুল্লা ওস্তা’ থাকা আবেদনকারীদের ই-মেইলে তাদের অ্যাপয়েন্টমেন্টের তারিখ ও সময় জানানো হচ্ছে। ‘নুল্লা ওস্তার’ বৈধতা ইতালীয় দূতাবাস যাচাই করে এবং অ্যাপয়েন্টমেন্টের সংখ্যাও তারাই নির্ধারণ করে। ‘নুল্লা ওস্তা’ পাওয়ার ছয় মাসের মধ্যে আবেদনকারী যদি সঠিকভাবে মেইল করলে ওই ‘নুল্লা ওস্তা’ বাতিল হয় না।
আবেদনকারীদের ধৈর্য ধরার পরামর্শ দিয়ে ভিএফএস গ্লোবাল বলছে, অ্যাপয়েন্টমেন্ট গ্রহণের অন্য কোনো উপায় নেই, প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণ বিনামূল্যে। যারা ভিন্ন তথ্য পাচ্ছেন, (তাদেরকে) প্রতারণা বা অননুমোদিত মধ্যস্থতাকারীদের বিশ্বাস না করে, ভিএফএস গ্লোবাল এবং ইতালির দূতাবাসে রিপোর্ট করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। স্মরণ করা যায়, জনশক্তি রপ্তানির সম্ভাবনাময় গন্তব্য ইতালি চলতি বছর স্পন্সর ভিসায় বিভিন্ন দেশ থেকে ১ লাখ ৯১ হাজারের বেশি শ্রমিক নেবে। তবে দুর্ভাগ্যজনক বিষয় হলো সেই তালিকায় বাংলাদেশি নেই। ফলে হাজার হাজার অভিবাসন প্রত্যাশী বেছে নিচ্ছেন অবৈধ পথ। দেশটিতে থাকা প্রবাসী বাংলাদেশিরা বৈধ ভিসার দ্বার খুলতে অন্তর্বর্তী সরকারের আরও জোরালো পদেক্ষেপ কামনা করেছেন।
সূত্র মতে, সম্প্রতি ইতালির নতুন অভিবাসন নীতি কার্যকর হয়েছে। এই নীতির আওতায় আলবেনিয়া হয়ে অবৈধ বাংলাদেশিদের ঢাকায় ফেরত পাঠানো হচ্ছে। অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর ইতালির জর্জা মেলোনির সরকার। অবৈধ অভিবাসীদের আলবেনিয়ায় পাঠানোর সিদ্ধান্তসহ কঠোরতার খড়গ যাতে বাংলাদেশিদের ওপর না পড়ে সে বিষয়ে সফরে আসা দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করবে ঢাকা।
সূত্র : দৈনিক কালের কণ্ঠ