চলারপথে রিপোর্ট :
আখাউড়া উপজেলায় শরীফুল ইসলাম ভূঁইয়া (৩৬) নামে এক ইসলামী বক্তাকে ছুরি দিয়ে জিহ্বা কেটে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এ সময় তার শরীরের বিভিন্ন অংশেও আঘাত করা হয়।
উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ৪ মার্চ শনিবার গভীর রাতে উপজেলার আজমপুর এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে।
তিনি সদর উপজেলার চাপুইর গ্রামের মাওলানা আব্দুর রশিদ ভুঁইয়ার ছেলে ও বিজয়নগর উপজেলার শ্রীপুর ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার আরবি প্রভাষক।
আহত শরীফুলের ছোট ভাই মওদুদুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, রাতে বিজয়নগর উপজেলার দৌলতবাড়ি এলাকায় একটি মাহফিল থেকে মোটরসাইকেলে করে বাড়ি ফিরছিলেন তার ভাই। পথে আজমপুর রেলস্টেশনের পাশে ৭/৮ জন তার গতিরোধ করে অতর্কিতভাবে হামলা চালায়। এ সময় তারা শরীফুলের জিহ্বার বেশিরভাগ অংশ কেটে ফেলে এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে।
এছাড়াও তার সঙ্গে থাকা ওবায়দুল্লাহ (৩৪) নামে অপর একজন আহত হন। তিনি আরো বলেন, তার ভাই বিভিন্ন সময় ওয়াজ মাহফিলে শিয়া অনুসারীদের নিয়ে বক্তব্য রেখে থাকেন। ধারণা করা হচ্ছে, শিয়া অনুসারীরাই এ হামলার সঙ্গে জড়িত।
আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ইসলাম উদ্দিন দুলাল বলেন, শিয়া অনুসারীদের নিয়ে বক্তব্য দেওয়ার কারণে পূর্ব পরিকল্পনা করে এমন হামলা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সেই সঙ্গে দ্রুত হামলাকারীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।
আখাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুল ইসলাম বলেন, এমন একটি ঘটনা আমরা শুনছি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
আখাউড়ায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থীদের মাঝে খাতা-কলম বিতরণ করেছেন বসুন্ধরা শুভসংঘের প্রতিনিধিরা। আজ ১৮ সেপ্টেম্বর বুধবার এসব শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করা হয়। দুইটি বিদ্যালয়ের মোট ১০০ জন শিক্ষার্থীর মাঝে এসব খাতা কলম দেওয়া হয়। বিডি অ্যানিমেল হেলথ নামের একটি প্রতিষ্ঠান ও প্রবাসী ইনামুল হক এ কাজে সহায়তা করেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়নের আব্দুল্লাহপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়। পরে রহিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে খাতা-কলম দেওয়া হয়।
এ সময় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদ সদস্য মো. সাইফুল ইসলাম, আখাউড়া পৌরসভার কাউন্সিলর শিপন হায়দার, উপজেলা পুজা উদযাপন কমিটির আহবায়ক দীপক কুমার ঘোষ, যায়যায়দিনের সাংবাদিক কাজী হান্নান খাদেম, নয়াদিগন্তের মো. নুরুন্নবী ভূঁইয়া, আনন্দ বাজারের কাজী মফিকুল ইসলাম, খবরের কাগজের জুটন বনিক, সাবেক ছাত্রনেতা মো. মনির হোসেন, প্রবাসী মো. আলমগীর হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
কালের কণ্ঠের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি বিশ্বজিৎ পাল বাবু এই আয়োজনের সমন্বয় করেন।
এ সময় জানানো হয়, বসুন্ধরা শুভসংঘের উদ্যোগটি অব্যাহত থাকবে।
অনুষ্ঠানে অংশগ্রহনকারী অতিথি ও বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা এ কাজের প্রশংসা করে বলেন, বন্যার সময় শিক্ষার্থীদের বই খাতা পানিতে নষ্ট হয়েছে। কিন্তু এ ধরনের ক্ষতির কথা কারোর মাথায় ছিল না। বসুন্ধরা শুভসংঘের এই ধরনের চিন্তাটা খুবই সৃজনশীল। এতে দরিদ্র শিক্ষার্থীদের উপকার হলো। আব্দুল্লাহপুর বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. শাহীন ও সুলতানা তাহমিনা এ উদ্যোগের প্রশংসা করেন। প্রশংসা করেছেন রহিমপুরের প্রধান শিক্ষক জাহানারা বেগম। বন্যার্ত শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করায় তারা বসুন্ধরা শুভসংঘের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায় রক্ত দেওয়ার নাম করে রোগীর স্বজনদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগে মো. মান্না নামে এক প্রতারক স্থানীয় লোকজনের হাতে আটক হয়। পরে তাকে স্থানীয়রা এক ব্যক্তির জিম্মায় ছেড়ে দেয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মান্না পরিচয় দেওয়া ওই ব্যক্তি ৭ ফেব্রুয়ারি বুধবার সকালে আখাউড়া পৌর এলাকার দেবগ্রামের মো. ইব্রাহিমের দোকানে আসেন বিকাশ থেকে টাকা তুলতে। ওই ব্যক্তি প্রায় সময়ই টাকা তুলেন বলে সন্দেহ হয় ইব্রাহিমের।
কিসের টাকা ও কার কাছ থেকে টাকা আনা হচ্ছে জানতে চাইলে মান্না জানান, তার ভাইয়ের কাছ থেকে টাকা নেন তিনি।
বিষয়টি সন্দেহ হলে ইব্রাহিম টাকা পাঠানো ব্যক্তিকে ফোন করলে তিনি জানান, রক্তের প্রয়োজন পড়ায় ভাড়া হিসেবে তিনি টাকা পাঠিয়েছেন। টাকা নেওয়া ব্যক্তি তাকে জানিয়েছেন তিনি ঢাকায় আছেন।
দোকানি ইব্রাহিম বিষয়টি স্থানীয় লোকজনকে অবহিত করে মান্নাকে আটক করেন।
পরে মান্না প্রতারণার বিষয়টি স্বীকার করেন। লাল বাজার নামে একটি এলাকার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের প্যাথলজি বিভাগে চাকরি করেন দাবি করা ওই ব্যক্তি নিজেকে আখাউড়া পৌর এলাকার দুর্গাপুরের বাসিন্দা বলে জানান।
মো. ইব্রাহিম বলেন, ‘মান্না নামের ওই ব্যক্তি প্রায় সময়ই আমার দোকান থেকে টাকা তুলতেন। দোকানে এলেই তার ফোনে অনেক কল আসতে দেখতাম।
এসবসহ নানা কারণে তার প্রতি সন্দেহ জাগে। সন্দেহবশত টাকা পাঠানো ব্যক্তিকে ফোন করলে তার প্রতারণার বিষয়টি ধরা পড়ে। তিনি একটি রক্তদান সংগঠনের সঙ্গে জড়িত বলে দাবি করেন।’
চলারপথে রিপোর্ট :
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, বর্তমান আওয়ামীলীগ সরকার বাজেট দিয়েছে ৭ লক্ষ ৬১ হাজার কোটি টাকা। বিএনপি দাতাদের পরামর্শে বাজেট দিত। সেই চিত্র এখন পাল্টেছে। আমরা নিজেদের পায়ে দাঁড়াতে শিখেছি। বঙ্গবন্ধুর সেই কথা আমাদেরকে আর কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না। আমরা জাতির পিতার সন্তান। আমাদেরকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না ইনশাল্লাহ।
আইনমন্ত্রী অ্যাড: আনিসুল আরো বলেন, কর্ণফুলী টানেল হয়েছে, মেট্টে রেল হচ্ছে। বাজেট ঘোষণার পর দেখা গেছে, আমাদের দারিদ্র সীমা কমে এসেছে। চাকরী প্রার্থীর সংখ্যাও আস্তে আস্তে কমে আসছে। জননেত্রী শেখ হাসিনা ২০৪১ সালে বাংলাদেশকে একটি স্মার্ট বাংলাদেশে উন্নতি করার প্রচেষ্টা এগিয়ে চলছে। কিন্তু দু:খের বিষয় সেই উন্নয়ন কারও কারও চোখে ভাল লাগছে না। এরমধ্যে বিএনপি যারা লুটপাট করে বাংলাদেশকে শেষ করে দিয়েছিল। দেশকে তলাবিহীন ঝুড়ি প্রমান করে দিয়েছিল। একটি ব্যর্থ রাষ্ট্র করার সকল সরঞ্জাম তৈরি করে ফেলেছিল। তারা সরকারের উন্নয়ন দেখতে পায় না। চোখ থাকতেও তারা অন্ধ। এখন কিছু ষড়যন্ত্রকারীও তাদের সাথে যোগ হয়েছে। এই ষড়যন্ত্রকারীদের কথা মনে রাখতে হবে। গতকাল শুক্রবার সকালে আখাউড়া উপজেলার মোগড়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে মোগড়া ইউনিয়ন ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির সমালোচনা করে মন্ত্রী আরো বলেন, ২০০৬ সালে বিএনপির শেষ সময়ে বাজেট দিয়েছিল ৬৩ হাজার কোটি টাকা। বিএনপি দাতা দেশের পরামর্শে বাজেট দিত। মিটিং হতো প্যারিসে। বড় বড় রাষ্ট্রগুলো থেকে টাকা নিয়ে বাজেট দিত। বাজেটে লিখা থাকতো শতকরা ৮০ টাকা আসবে বিদেশ থেকে আর বাকী টাকা দিবে দেশের জনগণ। সেই চিত্র এখন পাল্টে গেছে। আজকে এত বিপুল পরিমাণ টাকার বাজেট দেওয়ার পরও শতকরা ৮৩ টাকা দিবে বাংলাদেশের জনগণ। আর বাকী টাকা আসবে বিদেশ থেকে।
সকলকে সতর্ক থাকার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, অনেক ষড়যন্ত্র হচ্ছে। বিএনপি জনগণের ভোটে ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখে না। কারণ নির্বাচন দিলেই তারা বলে নির্বাচনে যাবে না। গত নির্বাচনে বিএনপি প্রতিটি আসনে ৩/৪ জন প্রার্থী দিয়েছে। তারপরে বলে নির্বাচন করবে না। মন্ত্রী বলেন, বিএনপি নির্বাচন করবে না। নিবার্চন নষ্ট করবে। মানুষকে বাসে পুড়িয়ে মারবে। এ ব্যপারে সবাইকে সর্তক থাকার আহবান জানান তিনি।
ড. মুহাম্মদ ইউনুসের প্রতি ইঙ্গিত করে আইনমন্ত্রী বলেন, সুদখুররা যারা ষড়যন্ত্র করছে তাদের ব্যাপারেও সতর্ক থাকবেন। ষড়যন্ত্রকারীদের হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন বাংলার মানুষ, বাংলার ছাত্রছাত্রীরা শেখ হাসিনার সাথে আছে। ষড়যন্ত্র করে পার পাবে না। ষড়যন্ত্র করলে জনগণ উচিত শিক্ষা দিয়ে দিবে।
এ সময় আরো বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও জেলা বারের পিপি মাহবুবুল আলম খোকন, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র তাকজিল খলিফা কাজল।
চলারপথে রিপোর্ট :
দুই বছরের হাবিবকে বিছানায় রেখে মা ঘরের বাইরে যান। এ সময় জানালা ধরে খেলা করছিল সে। এরই মাঝে জানালার ছিটকিনি খুলে আসে তার হাতে। অবুঝ শিশু হাবিব সেই ছিটকিনি মুখে ঢুকিয়ে গিলে ফেলে। এরপরই শুরু হয় পেটব্যথা ও যন্ত্রণা। পরিবারও কিছু বুঝে উঠতে পারছিল না। অবশেষে দুইদিন অবজারভেশনে রেখে শিশু হাবিবের খাদ্যনালী থেকে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে বের করা হলো জানালার সেই ছিটকিনি। বর্তমানে শঙ্কামুক্ত হাবিব।
হাবিব ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার শান্তিনগর গ্রামের জুয়েল মিয়ার ছেলে। জুয়েল মিয়ার ৩ ছেলে সন্তানের মধ্যে হাবিব কনিষ্ঠ। ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের পর বর্তমানে হাবিব সেখানেই চিকিৎসাধীন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে হাবিবের মা পাখি বেগম বলেন, আমার ছেলেটি অনেক চঞ্চল। ২ আগস্ট বুধবার সকালে তাকে আমি নাস্তা করিয়ে বসিয়ে রেখে একটু ঘরের বাইরে যাই। এসে দেখি তার শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। তার মুখ খুলে প্রথমে কিছুই দেখা যাচ্ছিল না। পরে গলায় সাদা ধরনের কিছু একটা দেখা যায় এবং মুখ দিয়ে রক্ত ঝরছিল। এই অবস্থায় তাকে দ্রুত স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে হাবিবের এক্স-রে করে দেখে গলায় কিছু একটা আছে। সেখান থেকে দ্রুত বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আসি। আসার পর এক্স-রে করে চিকিৎসকরা দেখেন পেটের ভেতর একটা ছিটকিনি। চিকিৎসকরা তাকে দুইদিন অবজারভেশনে রাখেন। এর দুইদিন পর শুক্রবার রাতে আমার ছেলেকে অপারেশন করে খাদ্যনালী থেকে একটি ছিটকিনি বের করেন ডা. আবু সাঈদ।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও হাবিবের অস্ত্রোপচারকারী চিকিৎসক ডা. আবু সাঈদ জানান, এক্স-রে রিপোর্টে শিশুটির পেটের খাদ্যনালীতে ছিটকিনি দেখা যায়। পেটের ভেতরে খাদ্যনালী প্রায় ২০ ফুট লম্বা থাকে। অস্ত্রোপচারের সময় খাদ্যনালীর ভেতর থেকে খুঁজে বের করা হয়েছে ছিটকিনিটি।
তিনি জানান, শিশুটির খাদ্যনালী কেটে ছিটকিনিটি বের করা হয়েছে। তা কিছুদিনের মধ্যে ঠিক হয়ে যাবে। তাকে আরও দুইদিন হাসপাতালে থাকতে হবে। তবে সে এখন সম্পূর্ণ ঝুঁকিমুক্ত।