চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শ্রী শ্রী শীতলা পূজা উপলক্ষে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার মজলিশপুর ইউনিয়নের ফতেহপুর ঋষিপাড়া পঞ্চায়েত কমিটির আয়োজনে ১৭ জুন শনিবার সকালে ফতেহপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন স্থানীয় সংসদ সদস্য ও বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রনালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি র.আ.ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী।
এ সময় তিনি ঋষিপাড়া মন্দিরের জন্যে তিনলাখ টাকা অনুদান ঘোষনা করেন ও ঋষিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সার্বিক উন্নয়নের আশ্বাস দেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে র.আ.ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা দেশের যে উন্নয়ন কর্মকান্ড বাস্তবায়ন করেছি, অতীতের কোন সরকার এই ধরনের উন্নয়ন কর্মকান্ড করতে পারেনি। তিনি বলেন, আমরা ভোটের জন্য রাজনীতি করিনা। জনগনের কল্যানে কাজ করছি। তিনি বলেন, সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। আপনাদের কাছে বসন্তের কোকিলরা ছলছাতুরি ও মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে ভোট চাইতে আসবে। আপনারা তাদের ব্যাপারে সর্তক থাকবেন।
পরে তিনি দুপুর ১২টার দিকে শহরের মেড্ডা এলাকার তিতাস নদীর তীরে অবস্থিত নাথ সম্প্রদায়ের সমাধি মন্দিরে শ্রী শ্রী মহাদেব দেবতার বিগ্রহ প্রতিষ্ঠা অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
এ সময় প্রবীণ আইনজীবী অ্যাডভোকেট মিন্টু ভৌমিকের সভাপতিত্বে সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, জেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও সাবেক পৌর মোঃ মেয়র হেলাল উদ্দিন, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা জজ আদালতের (পিপি) অ্যাডভোকেট মাহাবুবুল আলম খোকন, জেলা সেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ও সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট লোকমান হোসেন, জেলা আওয়ামীলীগ নেতা ও সাবেক পৌর কাউন্সিলর শেখ মোঃ মহসিন প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে র.আ.ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি বলেন, এই সমাধি মন্দিরের উন্নয়নে আমি আগেও আপনাদের পাশে ছিলাম। আগামী দিনেও যে কোনো উন্নয়নে পাশে থাকবো। তিনি মন্দিরের সার্বিক উন্নয়নের আশ্বাস দেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
মাটিবাহী ট্রাক্টরের চাপায় তারিন (৮) নামে এক শিশু নিহত হয়েছে। ৪ এপ্রিল মঙ্গলবার বিকেলে সদর উপজেলার সুলতানপুর ইউনিয়নের হাবলাউচ্চ গ্রামের রাস্তায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত তারিন ওই এলাকার অটোরিকক্সা চালক আব্দুর রহিমের মেয়ে। সে হাবলাউচ্চ প্রাইমারি স্কুলে তৃতীয় শ্রেণীতে পড়াশোনা করতো।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম বলেন, বিকেলে স্কুল শেষে শিশু তারিন বাড়ি ফিরছিল। পথে গ্রামের রাস্তায় মাটিবাহী ট্রাক্টরের চাপা পড়ে সে। শিশুটি মাথায় আঘাত পেয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায়।
ওসি আরো বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। মরদেহ উদ্ধার করে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘাতক ট্রাক্টরটি আটক করতে অভিযান চালানো হচ্ছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
আজ ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, মঙ্গলবার বেলা ১১ টায় জামে মসজিদ রোডস্থ চেম্বার ভবনের তৃতীয় তলায় ফরিদ উদ্দিন আহমেদ মিলনায়তনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি’র ৩৭তম বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
উক্ত সভায় সভাপতিত্ব করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি’র সভাপতি ও এফবিসিসিআই-এর পরিচালক আলহাজ্ব আজিজুল হক।
সভায় ২০২৩ সালের বার্ষিক প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন চেম্বারের সভাপতি আলহাজ্ব আজিজুল হক, ২০২৩ সালের অডিট রিপোর্ট উপস্থাপন করেন চেম্বারের ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি কাজী জাহাঙ্গীর, ২০২৪ সালের বাজেট উপস্থাপন করেন চেম্বারের সহ-সভাপতি হাজী মোঃ বাবুল মিয়া ও বিগত সভার কার্যবিবরণী পেশ করেন চেম্বারের সচিব মোঃ আজিম উদ্দিন।
সভায় বিগত অর্থ বছরের কার্যবিবরণী, বার্ষিক প্রতিবেদন, অডিট রিপোর্ট, প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থিত সদস্যদের অকুণ্ঠ সমর্থনে সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়। সভায় অন্যান্যবারের ন্যায় ২০২৪ সালের অডিট রহমান কাসেম এন্ড কোম্পানীকে করার অনুমোদন দেওয়া হয়।
সভায় চেম্বারের জানা অজানা যারা মৃত্যুবরণ করেছেন তাদের সকলের রুহের আত্মার মাগফেরাত কামনা করা হয়।
সভায় অন্যান্যের উপস্থিত ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি সৈয়দ মিজানুর রেজা, চেম্বারের সাবেক ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি সুভাষ চন্দ্র পাল, রেডক্রিসেন্ট ইউনিট ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক ভিপি জায়েদুল হক, জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আশিকুল ইসলাম, চেম্বারের পরিচালক মোঃ শাহজাহান মিয়া, মোঃ কামাল মিয়া, মোঃ আজিজুর রহমান শামীম, সুব্রত পাল, জাবেদুল ইসলাম সোহাগ, আলহাজ্ব মোঃ শাহ আলম, তানভীর আহমেদ, মোঃ আল মামুন, মোঃ বাবুল মিয়া, মোঃ রেজুয়ানুল হক (মনি), মোঃ রফিকুল ইসলাম, মোঃ নুরুজ্জামান ভূঁইয়া, মোঃ জুয়েল খান, আবুল খায়ের, আলহাজ্ব হারুনুর রশিদ ও মোঃ আব্দুল মালেকসহ চেম্বারের বিপুল সংখ্যক সাধারণ সদস্যবৃন্দ।
সভা পরিচালনা করেন পরিচালক আলহাজ্ব মমিনুল আলম বাবু।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ময়লা-আবর্জনাসহ দখলে ভরাট হয়ে যাওয়া মেড্ডা শ্মশান ঘাট খাল পুনরুদ্ধার কাজ শুরু করেছে পৌরসভা।
আজ ১৫ সেপ্টেম্বর শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত শহরের মেড্ডা শ্মশান ঘাট থেকে কবরস্থান পর্যন্ত খাল পুনরুদ্ধার করেছে পৌরসভা। এসময় খাল পাড়ে থাকা ২৩টি দোকান উচ্ছেদসহ ভরাট হয়ে যাওয়া জায়গা থেকে মাটি অপসারণ করে খালের ৪০০ ফুট জায়গা পুনরুদ্ধার করা হয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে, ময়লা-আবর্জনা ও দখলের কবলে পড়ে শহরের মেড্ডা শ্মশানঘাট ভরাট হয়ে গেছে। খালের দৈর্ঘ্য ৬০০ মিটার। মেড্ডা এলাকার বাসিন্দারা খালটি উদ্ধারের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার কাছে আবেদন করেন।
আবেদনের প্রেক্ষিতে শুক্রবার সকাল আটটার দিকে পৌর সভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মোঃ আবদুল কুদদূস মেড্ডা শ্মশান ঘাট খাল পুনরুদ্ধারের কাজ শুরু করেন। এসময় তাঁর সাথে পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী কাউসার আহমেদ, নগর পরিকল্পনাবিদ জান্নাতুল ফেরদৌস, হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা গোলাম কাওসার, উপ-সহকারী প্রকৌশলী (সিভিল) সুমন দত্ত ও সমাজ উন্নয়ন কর্মকর্তা মুখলেছুর রহমানসহ পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
মেড্ডা এলাকার বাসিন্দা শরাফত হোসেন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে খালটি দখল ও ভরাটের কব্জায় ছিল। একটি প্রভাবশালী মহল খালের পাড়ে মাটি ফেলে ভরাট করে দোকান নির্মাণ করে দখল করে রেখেছিল। তাছাড়া ময়লা-আবর্জনা ফেলার কারনে খালটি ভরাট হয়ে গেছে। খালটি উদ্ধার করা খুব দরকার। পৌরসভা দীর্ঘদিন পরে হলেও একটি কাজের কাজ করেছে।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার উপ-সহকারী প্রকৌশলী (সিভিল) সুমন দত্ত বলেন, মেড্ডা শ্মশান ঘাট খালটি ভরাটসহ দখল হয়ে গিয়েছিল। খালের মেড্ডা শ্মশান ঘাট থেকে কবরস্থান পর্যন্ত পুনরুদ্ধার করা হয়েছে। সকাল আটটা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা পর্যন্ত উদ্ধারকাজ চলেছে। খালটি পুনরুদ্ধারের সময় খালের পাড় ভরাট করে নির্মাণ করা ২৩টি দোকান উচ্ছেদ করে সেখান থেকে মাটি অপসারণ করা হয়েছে। খালের প্রায় ৪০০ ফুট বা ১৫০ মিটার পুনরুদ্ধার করা হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
নদীতে ভেসে উঠেছে পচাগলা মরদেহ৷ পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। ময়নাতদন্তের পর মরদেহটি দাফনের জন্য খবর দেওয়া হয় ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাতিঘর’ সংগঠনকে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পরিচয়বিহীন মরদেহ উদ্ধার হলেই দাফন কাফনের জন্য ডাক পড়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাতিঘরের। সংগঠনটি গত দুই বছরে ১০১টি পরিচয়বিহীন মরদেহ দাফন করেছে। ১১ মে শহরের মেড্ডায় তিতাস নদীর পাড়ে কবরস্থানে ১০১তম পরিচয়বিহীন মরদেহটি সংগঠনের সদস্যরা দাফন করেন।
সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান প্রকৌশলী আজহার উদ্দিন জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাতিঘর সংগঠনটি মূলত প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল ব্লাড ডোনেশনের জন্য৷ এ পর্যন্ত প্রায় ৭০০০ ব্যাগ রক্ত দান করেছেন সংগঠনের সদস্যরা। কিন্তু মহামারি করোনার সময় প্রথম দিকে কেউ আক্রান্ত হয়ে মারা গেলে মরদেহের কাছে আসতে অনেকেই ভয় পেতেন। সে সময় নিজ সন্তানও মা-বাবার মরদেহের কাছে আসেননি। এ অবস্থায় পরিবারের সদস্যরা মরদেহ দাফনে অপারগতা জানালে আমরা করোনা আক্রান্ত মরদেহ দাফনের কাজ শুরু করি। ওই সময় ৮টি করোনা আক্রান্ত মরদেহ দাফন করেছি।
আজহার উদ্দিন জানান, একদিন কবরস্থানে দেখলাম অজ্ঞাত পরিচয়বিহীন মরদেহ কোনো প্রকার কাফন এবং জানাজা ছাড়া মাটি খুঁড়ে চাপা দেওয়া হচ্ছে। একটা মরদেহ সম্মানের সঙ্গে দাফন না করায় খারাপ লেগেছিল। এরপর বন্ধু-বান্ধব সহকর্মীদের নিয়ে ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাতিঘর’ থেকে উদ্যোগ নেওয়া হলো অজ্ঞাত পরিচয়ের মরদেহ গোসল, কাফন ও ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী দাফনের। কাফন ও দাফনের আনুষঙ্গিক ব্যয় আমাদের সদস্যদের ব্যক্তিগত চাঁদায় হয়ে থাকে।
এছাড়া মাঝে মাঝে বাইরে থেকেও স্বেচ্ছায় কেউ দিয়ে থাকেন। এখন জেলার কোনো জায়গায় অজ্ঞাত মরদেহ উদ্ধার হলেই হাসপাতাল মর্গে ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাতিঘরের ডাক পড়ে। ধীরে ধীরে সেই অজ্ঞাত মরদেহের দাফনের সংখ্যা শতাধিকে দাঁড়িয়েছে।
২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তত্ত্বাবধায়ক ডা. ওয়াহীদুজ্জামান বলেন, ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাতিঘর’ যে কাজটি করছি তা খুবই মানবিক। তাদের কাজের অবশ্যই প্রশংসা করতে হয়। অজ্ঞাত মরদেহগুলো দাফনের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের অভিনন্দন জানাই। সমাজের সবার উচিত তাদের এসব কাজে পাশে দাঁড়িয়ে উৎসাহ দেওয়া।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম বলেন, আমার জানা মতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অজ্ঞাত মরদেহ দাফনের একমাত্র সামাজিক সংগঠন ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাতিঘর’। পুলিশ যখনই অজ্ঞাত মরদেহ উদ্ধার করে, তাদের খবর দেওয়া হয় দাফন কাফন করতে। তাদের উত্তরোত্তর সফলতা কামনা করি। আমাদের পক্ষ থেকে তাদের প্রতি যেকোনো সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।