স্টাফ রিপোর্টার:
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল বুধবার দেশের প্রথম এলিভেটেড মেট্রোরেল উদ্বোধন করেছেন। এর মধ্য দিয়ে দেশে স্বপ্নের মেট্রোরেলের প্রথম যাত্রা হলো, একইসাথে পদ্মা সেতু উদ্বোধনের ছয় মাসের ব্যবধানে দেশের যোগাযোগের ইতিহাসে আরেকটি মাইলফলক স্থাপিত হল। রাজধানীর দিয়াবাড়ি থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রোরেল প্রকল্পের ১১ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট (এমআরটি) লাইন-৬-এর দিয়াবাড়িতে ফলক উন্মোচনের মাধ্যমে আংশিকভাবে উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর ছোট বোন শেখ রেহানা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী মেট্রো রেলের উদ্বোধন উপলক্ষে ৫০ টাকার একটি স্মারক নোটও প্রকাশ করেন। তিনি রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়ি খেলার মাঠে একটি নাগরিক সমাবেশে ভাষণ দেন যা বিরাট জনসভায় পরিণত হয়। পরে প্রধানমন্ত্রী উত্তরার দিয়াবাড়ি থেকে টিকিট কেনার পর প্রথম সরকারি যাত্রায় আগারগাঁও যান। এ মেট্রো ট্রেন চালিয়েছেন মরিয়ম আফিজা। আজ থেকে সাধারণ মানুষ মেট্রোরেলে চড়া শুরু করতে পারবেন।
প্রাথমিকভাবে প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত উত্তরা স্টেশন থেকে আগারগাঁও স্টেশন পর্যন্ত কোনো স্টপেজ ছাড়াই চলাচল করবে মেট্রো ট্রেন। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্পোরেশন (বিআরটিসি) মেট্রো রেল স্টেশন থেকে যাত্রী পরিবহনের জন্য ৩০টি ডাবল ডেকার বাস পরিচালনা করবে। এর মধ্যে ২০টি বাস ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, শাহবাগ ও গুলিস্তান হয়ে আগারগাঁও-মতিঝিল রুটে এবং ১০টি বাস উত্তরার হাউস বিল্ডিং থেকে আবদুল্লাহপুর হয়ে উত্তরার দিয়াবাড়ির উত্তর স্টেশন পর্যন্ত চলাচল করবে।
সরকারি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) মেট্রোরেল প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করছে। জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) মেট্রোরেল নির্মাণ করছে এবং প্রকল্পে ঋণ দিচ্ছে। ২০১৬ সালে এমআরটি লাইন-৬ এর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত দ্বিতীয় সেকশন এবং মতিঝিল থেকে কমলাপুর রেলস্টেশন পর্যন্ত তৃতীয় সেকশন পর্যায়ক্রমে চালু করা হবে।
আগামী ডিসেম্বরে আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল চালু হবে। মেট্রো রেল প্রতি ঘন্টায় ৬০ হাজার যাত্রী এবং প্রতিদিন অর্ধ মিলিয়ন যাত্রী বহন করতে সক্ষম হবে এবং প্রতি চার মিনিটে প্রতিটি স্টেশনে একটি ট্রেন আসবে। ঢাকায় এলিভেটেড মেট্রোরেল-এ এখন পর্যন্ত অদৃশ্য পরিবহনের নতুন মোড দিয়ে যাতায়াতের নতুন যুগে যাত্রা শুরু করতে চলেছে বাংলাদেশ। মেট্রোরেলটি আরামদায়ক উপায়ে কম সময়ে বেশি যাত্রী পরিবহন করায় জনদুর্ভোগ অনেকটাই কমবে। রাজস্ব আদায় বাড়ানোর পাশাপাশি মেট্রোরেল চালু হলে সম্পূর্ণ চালু হলে রাজধানীর যানজট কমবে।
প্রকল্পের বিবরণ অনুযায়ী, প্রাথমিকভাবে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ছয়টি বগি বিশিষ্ট ১০ সেট ট্রেন চলবে। ১০-সেটের ট্রেনের কোনটিতে কখনো সমস্যা দেখা দিলে সহায়ক হিসেবে থাকা বাকি দুটি বিকল্প হিসেবে চলবে। আপাতত এই রুটে ধীরগতিতে ট্রেন চলবে। তবে পূর্ণ গতিতে ট্রেন চলাচল শুরু হলে প্রতি সাড়ে তিন মিনিটে একটি করে ট্রেন চলবে। ট্রেন কোন স্টেশনে কতক্ষণ থাকবে তা এখনও ঠিক হয়নি। প্রতিটি স্টেশনে, যাত্রীদের বোর্ডিং এবং নামা সম্পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত ট্রেনটি অপেক্ষা করবে। প্রতিটি ট্রেন ২,৩০০ যাত্রী নিয়ে ১০০ থেকে ১১০ কিলোমিটার গতিতে চলতে পারে। তবে বাঁকযুক্ত এলাকায় গতি কম হবে। ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর রাজধানীর ওপর চাপ কমাতে নানা উদ্যোগ নেয় আওয়ামী লীগ সরকার। যানজট নিরসনে রাজধানীজুড়ে মেট্রোরেল নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে প্রকল্পের বিবরণে জানা গেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৬ সালের ২৪ জুন মেট্রোরেল প্রকল্পের নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করেন, যা এমআরটি লাইন-৬ নামে পরিচিত। পরে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের নগরীর আগারগাঁও পয়েন্টে এলিভেটেড ভায়াডাক্টের প্রথম অংশ এবং এমআরটি লাইন-৬ এর নয়টি স্টেশনের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন। মোট ২২,০০০ কোটি টাকার প্রকল্পের মধ্যে জাইকা (জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি) প্রায় ১৬,৬০০ কোটি টাকা প্রকল্প সহায়তা হিসেবে প্রদান করেছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
জাতীয় নির্বাচন আয়োজনে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য বিএনপিসহ বিরোধীদের দাবি প্রত্যাখ্যান করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার মরিয়া ভূত হইয়া গেছে। এগুলো মাথা থেকে নামান।
নয়ত এ ভূতে বিএনপি শেষ। তত্ত্বাবধায়ক সরকার চিরনিদ্রায় ঘুমিয়ে আছে। এ তত্ত্বাবধায়ক আর কোনোদিন চোখ মেলবে না। ’
আজ ১৩ অক্টোবর শুক্রবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুর মোড়ে ঢাকার প্রবেশপথে আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ফখরুল তত্ত্বাবধায়ক বলতে বলতে শেষ। দুই সেলফিতে আপনাদের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। ভারতে এক সেলফি, এরপর নিউইয়র্কে আরেক সেলফি। দুই সেলফিতে বিএনপির ঘুম হারাম হয়ে গেছে। ’
তিনি আরো বলেন, ‘অন্তরে জ্বালা। পদ্মা সেতু হয়ে গেল, মেট্রোরেল হয়ে গেল। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে হয়ে গেল। একদিনে একশ সেতুর উদ্বোধন। জ্বালারে জ্বালা অন্তরে জ্বালা। ’
সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘তারা খাম্বা দিয়েছে বিদ্যুৎ দেয়নি। এখন শেখ হাসিনার আমলে শতভাগ বিদ্যুৎ দেওয়া হচ্ছে। খেলা হবে! অক্টোবর পার হয়ে যাচ্ছে। ফখরুল নাকি ঢাকা অবরোধ করবেন। এ নারায়ণগঞ্জের সমাবেশ থেকে বলতে চাই, জনগণ তাদের জবাব দেবে। আগুন নিয়ে এলে হাত পুড়িয়ে দেব। লাঠি নিয়ে এলে হাত ভেঙে দেব। ’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘ফখরুল বলেন—শেখ হাসিনা ঘোরাঘুরি করেন। শেখ হাসিনা কোথায় গেছেন। জি-২০ সম্মেলনে। কী সম্মান নরেন্দ্র মোদি দিয়েছেন! নিউইয়র্কে গিয়েছেন, কী সম্মান পেয়েছেন! শেখ হাসিনাকে নিয়ে আমরা গর্বিত। দেশের প্রয়োজনেই তিনি বাইরে যান। তিনি ব্রাসেলসে যাচ্ছেন আমন্ত্রণে। তিনি যাচ্ছেন দেশের জনগণের জন্য। ’
বিএনপির সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ওরা গণতন্ত্রের কী জানে? ওরা জানে মানুষ খুন, লুটপাট, ভোটচুরি। শেখ হাসিনাকে টার্গেট করেছিল বিএনপি। এদের হাতে বাংলাদেশের মানুষ ক্ষমতা আর ফিরিয়ে দেবে না। আপনাদের বলছি বিএনপি থেকে সাবধান। ’
এসময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই, সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত শহিদ মোহাম্মদ বাদল, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহা, সাবেক সংসদ সদস্য কায়সার হাসনাত, মহানগর যুবলীগের সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন ভুঁইয়া সাজনু প্রমুখ।
অনলাইন ডেস্ক :
রাজনৈতিক কর্মসূচিকে ঘিরে ট্রেনে নাশকতার ঘটনায় উদ্বিগ্ন রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। তাই নাশকতা এড়াতে ট্রেনে বসানো হচ্ছে ক্লোজড সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা। এরই মধ্যে বিভিন্ন ট্রেনে সিসি ক্যামেরা বসানোর কার্যক্রম শুরু হয়েছে। রেলওয়ে পুলিশ (জিআরপি) এসব সিসি ক্যামেরা স্থাপন করছে। প্রথম পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ আন্তঃনগর ট্রেন ও পরবর্তীতে অন্য ট্রেনগুলোতেও সিসি ক্যামেরা বসানো হবে।
জানা যায়, শুধু ট্রেনেই নয়, যেসব স্টেশনে আগে থেকে সিসি ক্যামেরা নেই সেসব স্টেশনেও এ ক্যামেরা বাসানো হচ্ছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনগুলো এরই মধ্যে সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ১০ জানুয়ারি থেকে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন ট্রেনে সিসি ক্যামেরা বসানো শুরু হয়েছে। বিশেষ করে, চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী তূর্ণা নিশিতা, মহানগর প্রভাতী ও সুবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেনে সিসি ক্যামেরা লাগানোর কাজ শেষ হয়েছে। প্রতিটি ট্রেনে ১২টি করে ক্যামেরা লাগানো হয়েছে।
চট্টগ্রাম রেলওয়ে পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী জানান, সম্প্রতি বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন ট্রেনে নাশকতার ঘটনা ঘটেছে। এতে রেল সম্পদের ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি মানুষের জানমালেরও ক্ষতি হয়েছে। তাই নাশকতা প্রতিরোধের অংশ হিসেবে রেলওয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে ট্রেনে সিসি ক্যামেরা লাগানো হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে সব ট্রেকে সিসি ক্যামেরার আওতায় নিয়ে আসা হবে। রেলওয়ে পুলিশ হেড কোয়ার্টার থেকে সিসি ক্যামেরা মনিটরিং করা হবে।
অনলাইন ডেস্ক :
সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় ১৪-১৫ জুন অনুষ্ঠিত ‘ওয়ার্ল্ড অব ওয়ার্ক সামিট: সোশ্যাল জাস্টিস ফর অল’ এ যোগদান শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটটি স্থানীয় সময় সকাল আজ ১৬ জুন শুক্রবার সকাল ১১টা ৫০ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় বিকেল ৩টা ৫০ মিনিট) জেনেভা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করে।
গত ১৩ জুন চার দিনের সরকারি সফরে সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় যান প্রধানমন্ত্রী।
সুইজারল্যান্ডে অবস্থানকালে ১৪ জুন জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার, ইউএনএইচসিআর প্রধান ফ্লিপো গ্র্যান্ডি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার বাসভবনে সাক্ষাৎ করেন।
পরে প্রধানমন্ত্রী প্যালাইস ডি নেশনস-এ সুইস কনফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট অ্যালেন বারসেটের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সেখানে বাংলাদেশ ও সুইজারল্যান্ডের মধ্যে জ্ঞান ও দক্ষতা বৃদ্ধির বিষয়ে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হয়।
ওইদিন বিকেলে প্রধানমন্ত্রী প্যালাইস ডি নেশনস-এ ‘ওয়ার্ল্ড অব ওয়ার্ক সামিট ২০২৩’ এর প্লেনারিতে ভাষণ দেন।
শেখ হাসিনা মাল্টার প্রেসিডেন্ট ডক্টর জর্জ ভেলার সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন। এরপর আইএলও মহাপরিচালক গিলবার্ট এফ হাউংবোর সঙ্গে বৈঠক করেন।
ওইদিন সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী আইএলও সদর দফতরে ডিজি আয়োজিত উচ্চ পর্যায়ের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সঙ্গে নৈশভোজে যোগ দেন।
১৫ জুন তিনি ‘এ টক অ্যাট দ্য ডব্লিউইএফ’ এ যোগ দেন। পরে ডব্লিউইএফ অফিসে এর প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক ক্লাউস শোয়াবের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানে তিনি ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম (ডব্লিউইএফ) আয়োজিত ‘নিউ ইকোনমি অ্যান্ড সোসাইটি ইন স্মার্ট বাংলাদেশ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।
সন্ধ্যায় ডব্লিউটিওর মহাপরিচালক ড. ওকোনজো-আইওয়ালা তার বাসভবনে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। প্রধানমন্ত্রী একটি কমিউনিটি রিসেপশনেও যোগ দেন।
‘দ্য ওয়ার্ল্ড অব ওয়ার্ক সামিট ২০২৩: সকলের জন্য সামাজিক ন্যায় বিচার’ হল সামাজিক ন্যায়বিচারের সমর্থনে বর্ধিত, সমন্বিত এবং সুসংগত পদক্ষেপের প্রয়োজনীয়তা মোকাবেলায় বিশ্বব্যাপী সোচ্চার হওয়ার একটি উচ্চ-স্তরের ফোরাম।
এটি সামাজিক ন্যায়বিচারের জন্য একটি গ্লোবাল কোয়ালিশন গঠনের প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা ও অবহিত করার সুযোগ দিয়েছে, যা আন্তর্জাতিক শ্রম অফিসের ৩৪৭তম অধিবেশনে গভর্নিং বডি স্বাগত জানিয়েছে।
সম্মেলনে বেশ কয়েকজন উচ্চ পর্যায়ের অতিথিদের পাশাপাশি নিয়োগকর্তা ও শ্রমিকদের প্রতিনিধিরা বক্তব্য দেন।
দুই দিনের শীর্ষ সম্মেলনে আরও টেকসই এবং ন্যায়সঙ্গত বিশ্ব তৈরিতে সামাজিক ন্যায়বিচারের মূল ভূমিকা তুলে ধরা হয়। সামাজিক ন্যায়বিচারকে এগিয়ে নিতে ও ন্যায়সঙ্গত বিশ্ব নিশ্চিত করতে বর্ধিত এবং কার্যকর ধারাবাহিক যৌথ পদক্ষেপের কৌশল নিয়ে আলোচনা করা হয়। সূত্র : বাসস
অনলাইন ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের (৪আইআর) উপকরণগুলো মানবতাকে আঘাত বা অবমূল্যায়ন করে এমন কাজে ব্যবহার না করার বিষয়টি নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, আমাদের নিশ্চিত করতে হবে যে, চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের সরঞ্জামগুলো আমাদের মানবতাকে আঘাত বা ক্ষুণ্ন করে এমন কাজে যেন ব্যবহার করা না হয়।
সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় বৃহস্পতিবার ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম (ডব্লিউইএফ) কর্তৃক আয়োজিত ‘নিউ ইকোনমি অ্যান্ড সোসাইটি ইন স্মার্ট বাংলাদেশ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এ আহ্বান জানান। খবর বাসসের
অনুষ্ঠান শেষে প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার মো. নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, চতুর্থ শিল্পবিপ্লব যেন সমাজে বিভাজন সৃষ্টি না করে, সে বিষয়টিও নিশ্চিত করার ওপর প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা নিশ্চিত করতে চাই যে, ৪আইআর আমাদের সমাজের মধ্যে আরো বিভাজন তৈরি করবে না। এ উদ্দেশে আমাদের আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কার্যকর সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব গড়ে তুলতে হবে।
এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার দেশের তরুণদের ৪আইআর ও ভবিষ্যৎ কাজের জন্য তৈরি করতে শুরু করেছে।
তিনি আরো বলেন, আমি আত্মবিশ্বাসী যে আমাদের ছেলে-মেয়েরা ৪আইআরকে শুধু অনুসরণ করবে না; বরং নেতৃত্ব দেবে।
দেশের শিক্ষার্থীরা রোবোটিক্সে যে ধরনের উদ্ভাবনী কাজ করছে, তা দেখে উৎসাহ বোধ করেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা সারাদেশে যে উদ্ভাবন মেলার আয়োজন করে আসছি, সেখানেও তাদের মধ্যে দারুণ উৎসাহ দেখেছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ অবশ্যই ডব্লিউিইএফ’র সঙ্গে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে একটি স্বাধীন ৪আইআর কেন্দ্রকে স্বাগত জানাবে।
সরকার ইতোমধ্যে বাংলাদেশে ৪আইআর-এর জন্য যথাযথ আইন, নীতি ও প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো তৈরির জন্য কাজ করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ইন্টারনেট অব থিংস, ন্যানোটেকনোলজি ইত্যাদি বিষয়ে পৃথক জাতীয় কর্ম-কৌশল তৈরি করেছি।
তিনি বলেন, এ লক্ষ্যে সরকার দেশের বিভিন্ন স্থানে ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজি, ন্যানোটেকনোলজি এবং অন্যান্য বিষয়ে বিশেষায়িত ইনস্টিটিউট স্থাপন করছে।
সরকারপ্রধান বলেন, স্মার্ট গভর্নেন্সের জন্য ভবিষ্যতের রাজনৈতিক নেতাদের বিকাশের জন্য আমরা স্মার্ট লিডারশিপ একাডেমিও চালু করেছি।
বাংলাদেশ একটি গ্লোবাল ডিজিটাল কমপ্যাক্ট তৈরির বিষয়ে জাতিসংঘের কাজে আগ্রহী উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা আশা করি যে, এই গ্লোবাল কমপ্যাক্টে ডিজিটাল ও সীমান্ত প্রযুক্তির দায়িত্বশীল ও উৎপাদনশীল ব্যবহারের বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জন্য স্পষ্ট নির্দেশনা থাকবে।
তিনি সাইবার-আক্রমণ, বিভ্রান্তিকর তথ্য ও অন্যান্য অপকর্মের বিরুদ্ধে সুরক্ষা ব্যবস্থা রাখার ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, সম্মিলিতভাবে সাইবার-আক্রমণ, বিভ্রান্তমূলক তথ্য ও অন্যান্য অপকর্মের বিরুদ্ধে সুরক্ষা ব্যবস্থা রাখতে হবে।
অনলাইন ডেস্ক
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হকের বিশেষ উদ্যোগে আজ ২ আগস্ট শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিনেও ঢাকার দুই আদালত থেকে ৪২ জন এইচএসসি পরীক্ষার্থী জামিন পেয়েছেন।
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে চলমান সহিংসতা ও নাশকতামূলক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে রুজু হওয়া মামলায় গ্রেপ্তারকৃত এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষার কথা বিবেচনায় করে আইনমন্ত্রী তাদের জামিনের বিশেষ উদ্যোগ নেন। এজন্য তিনি শিক্ষার্থীদের দ্রুত জামিন দেওয়ার ব্যাপারে উদ্যোগী হতে সারা দেশের প্রসিকিউশন টিমকে (রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী) নির্দেশনা দিয়েছেন।
এই নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে আজ শুক্রবার ছুটির দিনেও ঢাকা সিএমএম আদালত থেকে ৩৭ জন এবং চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে ৫ জন পরীক্ষার্থী জামিন পেয়েছেন।
আগামী ১১ এপ্রিল থেকে তাদের স্থগিতকৃত পরীক্ষাগুলো অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনে সহিংসতার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় কোন নিরপরাধ ব্যক্তিকে যাতে কারাগারে যেতে না হয় সে বিষয়ে সরকার ব্যবস্থা নিয়েছে।
তিনি এ বিষয়ে গত বৃহস্পতিবারও বলেছেন, বিচার বিভাগ স্বাধীন কিন্তু প্রসিকিউশন টিম আইন মন্ত্রণালয়ের অধীনে। তাই যারা সহিংসতার ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়, যারা এইচএসসি পরীক্ষার্থী, যারা মাইনর তাদেরকে জামিন দেওয়ার ব্যাপারে উদ্যোগী হওয়ার জন্য প্রসিকিউশনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।