চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বাংলাদেশ প্রান্তিক পোল্ট্রি শিল্প রক্ষা অ্যাসোসিয়েশন জেলা কমিটি গঠন ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে ১ জানুয়ারি থেকে আগামী এক মাস প্রান্তিক খামারিরা পল্ট্রি খামারিতে বাচ্চা তুলবেন না বলে জানান।
আজ ১৮ ডিসেম্বর বুধবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় প্রধান আলোচক ছিলেন বাংলাদেশ প্রান্তিক পোল্ট্রি শিল্প রক্ষা অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান মোঃ মফিজুল ইসলাম মল্লিক। বিশিষ্ট খামারি মোঃ সিদ্দিকুর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক মুখ্য আঞ্চলিক কার্যালয়ের মুখ্য আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ ইউছুফ খান।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন, বাংলাদেশ প্রান্তিক পোল্ট্রি শিল্প রক্ষা অ্যাসোসিয়েশন কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি মোঃ শাহিনুর ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক জুবেদা ইয়াসমিন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী শরিফ উদ্দিন।
বাংলাদেশ প্রান্তিক পোল্ট্রি শিল্প রক্ষা অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মোঃ ফারুক মিয়া ও শরিফ চৌধুরীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন মোঃ আলমগীর হোসেন, আব্দুল করিম, মহিবুর রহমান, জিয়াউর রহমান, হাবিবুল্লাহ শহনাজ প্রমুখ।
সভায় বক্তারা বলেন, আগামী ১ জানুয়ারি থেকে তারা খামারে খাদ্য ও বাচ্চা উঠাবে না। তারা একতাবদ্ধ হয়ে কাজ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। পাশাপাশি খামারিদের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় নেতাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
প্রধান অতিথি বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক মুখ্য আঞ্চলিক কার্যালয়ের মুখ্য আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ ইউছুফ খান বলেন, প্রান্তিক সকল খামারিদের ব্যাংকখাতে সরকার সকল সুবিধা দেয়। কৃষি ব্যাংক সবচেয়ে কম সুদে ঋন দেয় উল্লেখ করে তিনি সকল খামারিদের ক্ষুদ্রঋন নিয়ে প্রান্তিক খামারি চালিয়ে যাওয়ার আহবান জানান।
প্রধান আলোচক বাংলাদেশ প্রান্তিক পোল্ট্রি শিল্প রক্ষা অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান মোঃ মফিজুল ইসলাম মল্লিক বলেন, আমি প্রান্তিক খামারিদের নিয়ে কথা বলায় আমাকে অনেক অত্যাচার করেছে আওয়ামী সরকার। কারন তাদের সিন্ডিকেট নিয়ে আমি কথা বলায় আমাকে আয়নাঘরে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছিল কিন্তু সরকার পতন হওয়ায় আমি বেঁচে গেছি। আমি খামারিদের জন্য সারাদেশে ঘুরে ঘুরে প্রান্তিক খামারিদের রক্ষায় কমিটি করছি কারন কমিটি হলে তাদের অধিকার আদায়ে সহজ হয়। আমি প্রান্তিক খামারিদের নিয়ে জন্য কাজ করার জন্য সিন্ডিকেটের লোকজন অনেকবার মেরে ফেলতে চেয়েছে। আগামী পহেলা জানুয়ারি থেকে ১মাস কেউ যেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পল্ট্রি বাচ্চা না তুলেন সেই অনুরোধ করেন। কর্পোরেট কম্পানির সিন্ডিকেট ভাঙতে হলে প্রান্তিক খামারিরা এক হয়ে কাজ করার আহবান জানিয়ে পল্ট্রির খামারে সকল মূল্যে কমানোর দাবীতে এই আন্দোলন বলে তিনি জানান। সভায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার প্রান্তিক খামারিরা উপস্থিত ছিলেন।
অনলাইন ডেস্ক :
আজ ৬ ডিসেম্বর শুক্রবার বিকেলে নগরীর বান্দ রোড কেন্দ্রীয় হেমায়েতউদ্দীন ঈদগা ময়দানে বিভিন্ন দেশের খ্যাতিমান ক্বারীদের নিয়ে বরিশাল নগরীতে আন্তর্জাতিক ক্বিরাত মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। আল কুরআন একাডেমির আয়োজনে অনুষ্ঠিত মাহফিলে বিপুল সংখ্যক মুসল্লি অংশ নেন।
আল কুরআন একাডেমি বরিশালের আয়োজক কমিটির আহবায়ক মো. আব্দুল হাই জানান, বরিশালে আন্তর্জাতিক এই ক্বিরাত মাহফিলে ক্বিরাত পরিবেশন করেন মরক্কোর ক্বারী ইলিয়াস আল মিহয়াউঈ, পাকিস্তানের ক্বারী হাম্মাদ আনওয়ার নাফীসী, ইরানের ক্বারী হামীদ রেজা আহমাদী ওয়াফা, মিশরের শাইখ ইয়াসির শারক্বাউঈ এবং বাংলাদেশের প্রখ্যাত ক্বারী শাইখ আহমাদ বিন ইউসুফ আযহারী। আন্তর্জাতিক ক্বিরাত সংগঠন ‘ইক্বরা’র আমন্ত্রণে এসব বিদেশি ক্বারী বাংলাদেশে এসেছেন বলে জানিয়েছেন- আয়োজক কমিটির সদস্য সচিব মোহাম্মদ আবদুল মান্নান।
বক্তব্য রাখেন বরিশাল আল কুরআন একাডেমির প্রধান উপদেষ্টা মুয়াযযম হোসাইন হেলাল, উপদেষ্টা অধ্যক্ষ জহির উদ্দিন মুহাম্মদ বাবর এবং ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালের সুপারিন্টেন্ডেন্ট বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. আলতাফ উদ্দিন আহমেদ।
আল কুরআন একাডেমি বরিশালের সভাপতি ও বিএম কলেজ ইসলামী শিক্ষা বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর মোয়াজ্জেম হোসাইন ও প্রফেসর মোহাম্মদ আবদুর রব জানিয়েছেন- আল-কুরআনের মোহময় সুরে প্রকম্পিত হয়েছে বরিশালের ময়দান।
ক্বিরাত মাহফিল বাস্তবায়ন কমিটির যুগ্ম আহবায়ক তৈয়বুর রহমান আজাদ জানান, শুক্রবার বিকেল থেকে ইসলামী সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় ছিলো ঢাকার সাইমুম শিল্পীগোষ্ঠী ও হ্যাভেন টিউন নাশিদ ব্যান্ড, বরিশাল সাংস্কৃতিক সংসদ, হেরাররশ্মি শিল্পীগোষ্ঠী ও সূচনা সাংস্কৃতিক সংসদ।
মাহফিলে মহিলাদের জন্য ছিলো আলাদা প্যান্ডেল। বিশাল এলইডি ডিসপ্লেতে তিলাওয়াত শোনার সুযোগ পেয়েছেন তারা।
মঞ্চের ব্রাকগ্রান্ড ও মাঠের দুই প্রান্তে বিশাল ডিসপ্লেবোর্ডের মাধ্যমে বিদেশি ক্বারীদের খুব কাছ থেকে দেখার সুযোগ পেয়েছেন আগত কুরআন প্রেমী হাজার হাজার দর্শক।
বর্ণিল আলোর ঝালকানি আর কুরআনের মোহনীয় সুর একাকার হয়ে তৈরি করে এক নৈসর্গিক পরিবেশ। যা বরিশালবাসী মনে রাখবেন অনেক দিন।
চলারপথে রিপোর্ট :
সারাবছর বিভিন্ন মৌসুমি পণ্য ফেরি করে বিক্রি করেন মফিজ মিয়া (৪২)। শুধু বিশেষ কিছু দিবসে দুদিন বাংলাদেশের পতাকা ফেরি করেন তিনি। গত ২৫ বছর ধরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে পতাকা ফেরি করে বিক্রি করছেন মফিজ। তিনি শহরের মধ্য মেড্ডা এলাকার আলী আকবরের ছেলে।
মহান বিজয় দিবসকে কেন্দ্র করে শহরের হাসপাতাল রোড এলাকায় ফেরি করে পতাকা বিক্রি করতে দেখা গেলো মফিজ মিয়াকে।
মফিজ মিয়া বলেন, ‘গত ২৫ বছর ধরে মৌসুমি পণ্য ফেরি করে বিক্রি করে আসছি। আমার এক ভাইও এ পেশায় জড়িত। ২১ ফেব্রুয়ারি, ২৬ মার্চ ও ১৬ ডিসেম্বরকে কেন্দ্র করে শুধু দুদিন পতাকা বিক্রি করি। পতাকার সঙ্গে ব্যান্ড, ফিতা ও স্টিকারসহ নানান পণ্য বিক্রি করা হয়। এসময় বেচাকেনাও ভালো হয়। দুদিনে প্রায় ৬০ হাজার টাকার মতো বিক্রি হয়।’
তিনি বলেন, ‘আগে এত চাহিদা ছিল না। এখন দিন দিন জাতীয় পতাকা বিক্রির চাহিদা বাড়ছে। আমি মনে করি মানুষের দেশপ্রেম বাড়ার কারণে এখন পতাকার প্রতি আগ্রহ বাড়ছে।’
মাথার ব্যান্ড প্রতি পিস ১০ টাকা, মাথার পতাকা ৩০ টাকা, হাত পতাকা ১০ টাকা, ফিতা ১০ টাকা, লেইস ১০ টাকা, স্টিকার ২ টাকা এবং সাইজ অনুযায়ী ১৫০, ৮০, ৫০ ও ৩০ টাকায় পতাকা বিক্রি করছেন মফিজ মিয়া।
চলারপথে রিপোর্ট :
দেশের পূর্বাঞ্চলের অন্যতম প্রবেশদ্বার ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা। ঢাকা-সিলেট ও কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কে ব্রাহ্মণবাড়িয়া অংশে রয়েছে ৭৬ কিলোমিটার সড়ক।
আসন্ন ঈদ যাত্রায় যাত্রীদের ভোগাবে এই অংশের অন্তত ৪০ কিলোমিটার সড়ক।
দুটি সড়কে চারলেন প্রকল্পের নির্মাণ কাজের কারণে এ শঙ্কা দেখা দিয়েছে। সড়কের বেহাল দশা ও খানাখন্দের কারণে যান চালানো এখন বড় দায়। যানজট ও ধীর গতির কারণে প্রতিদিনই ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকতে হচ্ছে সড়কে। এতে একদিকে যেমন সময় নষ্ট হচ্ছে, তেমনি চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে যাত্রীদের।
সড়ক বিভাগ জানায়, ২০২০ সালের মার্চে শুরু হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ নৌ-বন্দর থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত ৫০ দশমিক ৫৮ কিলোমিটারের চারলেন সড়ক নির্মাণ প্রকল্পের কাজ। এর আওতায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে আশুগঞ্জ নৌ-বন্দর থেকে খাঁটিহাতা বিশ্বরোড মোড় পর্যন্ত ১৬ কিলোমিটার ও কুমিল্লা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কে খাঁটিহাতা বিশ্বরোড মোড় থেকে ধরখার পর্যন্ত ২৪ কিলোমিটার আঞ্চলিক সড়ক রয়েছে।
তবে করোনাকালীন সময়সহ নানা জটিলতায় বড় এই প্রকল্পের কাজে অনেকটাই ধীরগতি এসেছে। ফলে এখনও শেষ হয়নি রাস্তা নির্মাণ কাজ। এ কারণে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে এই সড়ক ব্যবহার করে চলাচলে। এসব সড়ক দিয়ে প্রতিদিন বিভিন্ন ধরণের ৩০/৩৫ হাজার যানবাহন চলাচল করছে। এরমধ্যে যাত্রীবাহী যানবাহনের সংখ্যা প্রায় ২০ হাজার।
ঈদ মৌসুমে দেশের সব সড়ক-মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বেড়ে যায় কয়েকগুণ। এর ব্যতিক্রম হবে না ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা অধ্যুষিত এই রাস্তায়ও। এমতাবস্থায় আসন্ন ঈদে এ সড়ক ব্যবহার করে চলাচলে বেশ ভোগান্তি পোহাতে হবে ঘরমুখো যাত্রীসাধারণের।
চালক ও যাত্রীরা জানান, দুটি সড়ক দিয়ে বিপুল সংখ্যক যানবাহন চলাচল করার কারণে সড়কগুলোর অবস্থা করুণ। নির্মাণকাজ করতে সড়ক খুঁড়ে রাখাসহ একপাশ বন্ধ করে রাখায় প্রতিদিনই যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। সেই সঙ্গে তীব্র ধুলোবালির কারণে এসব পথে চলাচলকারীদের দুর্ভোগের অন্ত নেই।
তারা আরো জানান, সময় নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি সড়কে বিভিন্ন সময়েই ঘটেছে ছোটখাটো দুর্ঘটনা। ফলে ঝুঁকি নিয়েই সড়কে চলাচল করতে হচ্ছে তাদের। রাস্তার খানাখন্দ ও যানজটের কারণে এক ঘণ্টার যাত্রাপথ চার থেকে পাঁচ ঘণ্টা লেগে যাচ্ছে।
এ সময় সড়কগুলো দ্রুত মেরামত করার দাবি জানিয়েছেন চালক ও যাত্রীরা।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মীর নিজাম উদ্দিন আহমেদ বলেন, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে আশুগঞ্জ থেকে বিশ্বরোড পর্যন্ত যান চলাচলের উপযোগী করা হয়েছে। ঈদে ঘরমুখো মানুষের যাত্রাকে নির্বিঘ্নে করতে অবশিষ্ট সড়ক দ্রুত মেরামত করা হবে।
সরাইল খাটিহাতা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি আকুল চন্দ্র বিশ্বাস জানান, যানজট নিরসনে চালক ও হেলপারদের সচেতন করতে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি হাইওয়ে পুলিশের সাতটি টিম সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে যানজট নিরসনে কাজ করছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ফেনীর ফুলগাজীতে খড়ের গাদার নিচে চাপা পড়ে মা ও তার দুই শিশু সন্তান নিহত হয়েছে। আজ ২০ সেপ্টেম্বর বুধবার সকালে উপজেলার আমজাদহাট ইউনিয়নের দক্ষিণ ধর্মপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন-সুমি আক্তার (৩৫), তার দুই সন্তান সাঈদ (৭) ও সিয়াম (৩)। সুমি আক্তার ওই এলাকার বাহরাইন প্রবাসী টিপু আলমের স্ত্রী।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, সকালে গবাদি পশুর জন্য খড় কাটছিলেন সুমি আক্তার। এসময় তার দুই সন্তান সাঈদ ও সিয়াম তার পাশে ছিলেন। এক পর্যায়ে দুই সন্তানসহ সুমি আক্তার খড়ের গাদায় চাপা পড়েন। তাদের উদ্ধার করে ছাগলনাইয়া সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। লাশ ছাগলনাইয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রয়েছে।
ছাগলনাইয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুদ্বীপ রায় জানান, তিনজনের মৃত্যুর খবর পেয়েছি। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।
খবর পেয়ে স্থানীয় এমপি শিরীন আখতার নিহত তিনজনকে দেখতে হাসপাতালে যান। এমপি শিরীন জানান, এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় তিনি শোকাহত।