চলারপথে রিপোর্ট :
শহরের প্রধান সড়ক ও ব্যস্ততম এলাকাগুলোতে ফুটপাত দখলমুক্ত করতে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালিয়েছে। আজ ১৮ আগস্ট সোমবার বিকেলে সদর উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এ অভিযান চালানো হয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা সিফাত মো. ইসতিয়াক ভূইয়ার নেতৃত্বে শহরের কুমারশীল মোড়, জেলরোড সহ বিভিন্ন এলাকায় এই অভিযান চালানো হয়। অভিযানে শহরের বিভিন্ন সড়কে ফুটপাত দখল করে অবৈধ দোকানপাট বসানো, পণ্য সামগ্রী রাখা ও অক্সিজেন সিলিন্ডার ফুটপাতে রেখে পথচারীদের চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করার দায়ে জরিমানা করা হয়। অক্সিজেন সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানকে ৫০ হাজার, ফুটপাতের বিভিন্ন ব্যবসায়ীকে আরো ৭ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা সিফাত মো. ইসতিয়াক ভূইয়া বলেন, ফুটপাত দখল করে ব্যবসা পরিচালনার কারণে সাধারণ মানুষ দুর্ভোগে পড়ছে। পাশাপাশি শহরে তীব্র যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। পথচারীদের স্বাভাবিক চলাচল নিশ্চিত করতে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। অভিযানে স্থানীয় সরকার আইনের বিভিন্ন ধারায় মোট ৫৭ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জনস্বার্থে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও তিনি জানান।
অভিযানে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের পাশাপাশি পুলিশ প্রশাসনের সদস্যরাও।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সাবেক গণপূর্ত ও গৃহায়ণমন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক ৮ সংসদ সদস্যসহ ২৪০ জনের নাম উল্লেখ করে ও গত দুই থেকে ৩০০ জনকে আসামি করে নাশকতা ও বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে আরেকটি মামলা করা হয়েছে।
২৫ অক্টোবর শুক্রবার সন্ধ্যায় জেলা শহরের শেরপুরের বাসিন্দা আনিছুর রহমান বাদী হয়ে সদর থানায় মামলাটি করেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মোজাফফর হোসেন মামলার তথ্য নিশ্চিত করেছেন। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর এই প্রথম কোনো মামলায় জেলার সব সাবেক এমপিকে একসঙ্গে আসামি করা হয়েছে।
সাবেক মন্ত্রী মোকতাদির চৌধুরী ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর ও বিজয়নগর) আসনের সাবেক এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। আনিসুল হক ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (কসবা ও আখাউড়া) আসনের সাবেক এমপি ও কসবা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি।
মামলার অন্য উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ (নাসিরনগর) আসনের সাবেক এমপি সৈয়দ এ কে একরামুজ্জামান, একই আসনের সাবেক এমপি বি এম ফরহাদ হোসেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের সাবেক এমপি মঈন উদ্দিন, একই আসনের সাবেক এমপি শাহজাহান আলম ও জিয়াউল হক মৃধা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ (নবীনগর) আসনের সাবেক এমপি ফয়জুর রহমান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ (বাঞ্ছারামপুর) আসনের সাবেক এমপি তাজুল ইসলাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (কসবা-আখাউড়া) আসনের সাবেক এমপি শাহ আলম, জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শফিকুল আলম ও মো. বিল্লাল মিয়া, জেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র মো. হেলাল উদ্দিন, সাবেক পৌর মেয়র ও সহ-সভাপতি নায়ার কবির প্রমুখ। এ ছাড়া মামলায় অজ্ঞাতনামা আরো ২০০ থেকে ৩০০ জনকে আসামি করা হয়।
মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, গত ৪ আগস্ট ফ্যাসিবাদী আওয়ামী সরকারের বিরুদ্ধে মিছিল নিয়ে শহরের ফুলবাড়িয়া বাসস্ট্যান্ড মোড় থেকে ছাত্র–জনতার মিছিল বের হয়। ওই মিছিলে সাবেক মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, সাবেক জনপ্রতিনিধিসহ আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীদের প্রত্যক্ষ প্ররোচনা ও হুকুমে অন্যান্য আসামিসহ অজ্ঞাতনামা আসামিরা বিভিন্ন ধরনের দা, হকিস্টিক, লোহার রড, ককটেল, হাতবোমা ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলা চালান। এতে অজ্ঞাতনামা অনেক ছাত্রছাত্রী আহত হন।
এজাহারের উল্লেখ করা হয়, ওই সময় মামলার বাদী, সাক্ষীসহ আশপাশের এলাকার সাধারণ মানুষ বাধা দিলে আসামিরা ককটেল ও হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটান। বাদীসহ সাক্ষীদের নম্বরবিহীন একাধিক মোটরসাইকেল ও পথচারীদের একাধিক অটোরিকশা ও সিএনজিচালিত অটোরিকশায় অগ্নিসংযোগ করে ১০ লাখ টাকার ক্ষতি সাধন করেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের একটি ব্যায়ামাগারে (জিমে) দুই বোনসহ তিনজনকে মারধরের ঘটনায় অভিযুক্ত জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি হাবিবুল্লাহ ভুইয়া বিপ্লবকে সংগঠন থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।
গতকাল রবিবার রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল হোসেন রুবেল ও সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন শোভনের সই করা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এর পাশাপাশি তাঁকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করতে কেন্দ্রীয় সংসদে কেন সুপারিশ করা হবে না, তা আগামী সাত কর্মদিবসে সশরীরে হাজির হয়ে লিখিত কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে।
এতে উল্লেখ করা হয়েছে, সংগঠনের নীতি ও আদর্শ পরিপন্থি কার্যকলাপে লিপ্ত থাকার অভিযোগ ওঠায় বিপ্লবকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গোপনে ভিডিও ধারণের প্রতিবাদ করায় দুই নারীসহ তিনজনকে গত বুধবার জেলা শহরের বিএস ফিটনেস ক্লাব নামের একটি জিমে পরিচালক বিপ্লব, তাঁর সহযোগী সামিন ও জিমের ফিটনেস ট্রেইনার মিতুর বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ ওঠে।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে বিপ্লবসহ অভিযুক্ত তিনজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে পরদিন তাদের বিরুদ্ধে মামলা নথিভুক্ত করে আদালতে পাঠানো হয়। তিনজনই এখন জেলহাজতে।
চলারপথে রিপোর্ট :
নিয়াজ মুহম্মদ উচ্চ বিদ্যালয়ে আজ ৬ আগস্ট বুধবার দুপুরে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের লাগার ঘটনা ঘটেছে। সিড়ি দিয়ে নামতে গিয়ে ৩০ শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। তবে শিক্ষার্থীদের কেউই আগুনে দগ্ধ হয়নি।
এদিকে, শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী রোহানকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। বাকি শিক্ষার্থীদের অবস্থা আশঙ্কামুক্ত বলে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার চিকিৎসকরা নিশ্চিত করেছেন। জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৯ শিক্ষার্থী চিকিৎসাধীন আছে।
বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও শিক্ষার্থী এবং পুলিশ সূত্রে জানা যায়, আজ সকালে সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা আসন্ন বিজ্ঞান মেলা উপলক্ষে একটি প্রজেক্ট প্রস্তুত করতে বিদ্যালয় ভবনের তৃতীয় তলায় বিজ্ঞানাগারে যান। মাল্টিপ্লাগের সাহায্যে বৈদ্যুতিক সংযোগ নিয়ে ১৫-২০শিক্ষার্থী বিজ্ঞানাগারের ভেতরে প্রজেক্ট তৈরির কাজ করছিল। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মাল্টিপ্লাগে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে অগ্নিকান্ডের সূত্রপাত হয়। এতে শিক্ষার্থীরা আতঙ্কিত হয়ে চিৎকার শুরু করেন। শিক্ষার্থীদের চিৎকার শুনে অন্য শ্রেণির শিক্ষার্থীরা বের হয়ে হুড়োহুড়ি করে সিড়ি দিয়ে নিচে নামতে শুরু করেন। মুহূর্তের মধ্যে বিদ্যালয় ও আশপাশের এলাকাজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। অভিভাবক ও স্থানীয় লোকজন বিদ্যালয়ের সামনে জড়ো হয়। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা আহত শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিয়ে যান।
৮ম শ্রেণির আমেনা জাহানা আরিশা, ৬ষ্ঠ শ্রেণির সোহামণি ইতি, ৭ম শ্রেণির তাসনোভা ইসরাত, ৮ম শ্রেণির মাকিয়া আক্তার লামিয়া, ৮ম শ্রেণির ফারিয়া সুলতানা, ৭ম শ্রেণির তানজিনা আক্তার, ৮ম শ্রেণির নোহা ইসলাম, ৮ম শ্রেণির কলি, ৮ম শ্রেণির আরিফা, ৭ম শ্রেণির রুহান, ৭ম শ্রেণির ফাতেমা আক্তার মীমসহ অনেকে আহত হন।
আহত শিক্ষার্থী সোহামণি ইতি ও ফাতেমা আক্তার মীম জানায়, আগুন লেগেছে শুনে দৌড়ে সিঁড়ি দিয়ে নামতে গিয়ে ধাক্কা লেগে পড়ে গিয়ে ব্যাথা পেয়েছে।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক মেডিকেল অফিসার সায়েমুল হুদা শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। তাদের মধ্যে নয়জনকে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কার্ডিওলজি ও সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়।
এদিকে দুপুরে সিভিল সার্জন মো. নোমান মিয়া, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) তাহমিনা আক্তার, সদর উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা সিফাত মো. ইশতিয়াক ভূঁইয়া, কেন্দ্রীয় বিএনপির অর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক ও জেলা বিএনপির সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার খালেদ হোসেন মাহবুব শ্যামল, নিয়াজ মুহম্মদ উচ্চবিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও জেলা বিএনপির সিনিয়র সদস্য এবং সাবেক পৌর মেয়র হাফিজুর রহমান মোল্লা, জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি জহিরুল হক ও সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম, জেলা যুবদলের সভাপতি শামীম মোল্লা ও সাধারণ সম্পাদক ইয়াছিন মাহমুদসহ অনেকেই হাসপাতালে ছুটে আসেন।
জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মেডিকেল সায়েমুল হুদা বলেন, শিক্ষার্থীদের কেউই আগুনে দগ্ধ হয়নি। তবে তাদের প্যানিক অ্যাটাক হয়েছে। মাসনিকভাবে তারা আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। কয়েকজন শিক্ষার্থী পায়ে আঘাত পেয়েছেন।
নিয়াজ মুহম্মদ উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সহিদুল ইসলাম বলেন, সামনে বিজ্ঞান মেলা অনুষ্ঠিত হবে। বিজ্ঞান মেলার একটি প্রজেক্টে কাজ করছিল সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী। সেখানে শর্ট সার্কিট থেকে আগুন ধরে যায়। বিদ্যালয় চলাকালীন সময়ে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে শিক্ষার্থীরা হুড়োহুড়ি করে সিড়ি বেয়ে নামতে গিয়ে পড়ে যায়। এতে শিক্ষার্থীরা আহত হয়।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দিদারুল আলম জানান, ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। এ ঘটনায় কারো অবহেলা থাকলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।