চলারপথে রিপোর্ট :
ট্রেনের ভেতরে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন এক অন্তঃসত্ত্বা নারী। শুরু হয় রক্তক্ষরণ। এতে দিশাহারা হয়ে পড়েন তার স্বামী। এক পর্যায়ে ট্রেনের ভ্রাম্যমাণ টিকিট পরিদর্শককে বিষয়টি জানান তিনি। পরিস্থিতি গুরুতর হওয়ায় ট্রেনের মাইকে ঘোষণা দেওয়ার পরামর্শ দেন টিকিট পরিদর্শক। দ্রুতই ট্রেনের মাইকে ঘোষণা করা হয় কোনো চিকিৎসক, নার্স আছেন কি না?
ঘোষণা শোনার পর অন্যান্য কামরা থেকে ছুটে আসেন দুইজন চিকিৎসক ও দুইজন নার্স। সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন অন্য যাত্রীরাও। মুহূর্তেইে ট্রেনের কামরাটি পরিণত হয় অপারেশন থিয়েটারে। চার মাসের মৃত সন্তান প্রসব করলেও প্রাণে রক্ষা পান ওই নারী।
গত রবিবার রাতে ঢাকা থেকে চিলাহাটীগামী আন্তঃনগর চিলহাটি এক্সপ্রেস ট্রেনে এ ঘটনা ঘটে। পরে ট্রেনটি পাবনার ঈশ্বরদীতে ফিরলে গল্পটি ছড়িয়ে পরে রেলকর্মীদের মাঝে। ঘটনার রাতে ট্রেনটিতে দায়িত্বরত ছিলেন রেলওয়ের পার্বতীপুর হেডকোয়ার্টারের ভ্রাম্যমাণ টিকিট পরিদর্শক (টিটিই) আমিরুল হক জাহেদী।
তিনি জানান, রাত ৮টা বাজে তখন। ঢাকা থেকে চিলহাটি যাচ্ছিল আন্তঃনগর চিলহাটি এক্সপ্রেস। টিকিট পরিদর্শন করছিলেন টিটিই আমিরুল হক জাহেদী। হঠাৎ তিনি জানতে পারেন ট্রেনের ‘ঘ’ বগিতে অন্তঃসত্ত্বা এক নারী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। খবরটি জানার পর ট্রেনের মাইকে একটি ঘোষণা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। পরে দ্রুতই মাইকে ঘোষণা দেওয়া হয়, ট্রেনের মধ্যে যদি কোনো ডাক্তার থাকেন তাহলে জরুরি ভিত্তিতে ‘ঘ’ কোচে তাকে বিশেষ প্রয়োজন, একজন গর্ভবতী মা ভীষণ অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
টিটিই আমিরুল হক জাহেদী জানান, ঘোষণার পর দ্রুতই সব ঘটতে থাকে। ট্রেনের ‘জ’ বগি থেকে ছুটে আসেন ঢাকার ল্যাবএইড ক্যান্সার হাসপাতালের চিকিৎসক মো. সানাউল্লাহ। ‘চ’ বগি থেকে আসেন রংপুর কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পঞ্চম বর্ষের শিক্ষার্থী আফসানা ইসলাম রোজা। একই সঙ্গে দুজন নার্স সেখানে উপস্থিত হন। চিকিৎসক সানাউল্লাহ ওই নারীর অবস্থা দেখে জরুরি হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন। সিদ্ধান্ত হয় টাঙ্গাইল স্টেশনে ট্রেন থামানো হবে। ৯৯৯-এ ফোন দিয়ে অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করলেন এক যাত্রী। এর মধ্যেই ক্রসিংয়ে আটকা পড়ে যায় ট্রেনটি।
এদিকে, অন্তঃসত্ত্বা ওই নারীর রক্তপাত থামছিলই না। তখন দ্রুতই ওই নারীকে ঘিরে ফেলার পরামর্শ দেন চিকিৎসক। ট্রেনে থাকা নারী যাত্রীরা কাপড় দিয়ে ওই নারীকে ঘিরে ফেলেন। ট্রেনের নারী যাত্রীরা তাদের ব্যাগ থেকে কাপড়, স্যালাইন ও হেক্সিসল যার কাছে যা ছিল বেড় করে দেন। মুহূর্তেই ট্রেনটি পরিণত হয়ে যায় অপারেশন থিয়াটারে। চিকিৎসক সানাউল্লাহর পরামর্শে সঙ্গে থাকা শিক্ষানবীশ নারী চিকিৎসক ও দুইজন নার্স কাজ করতে থাকেন। এরপর দীর্ঘ চেষ্টায় ওই নারী মৃত বাচ্চা প্রসব করলেও প্রাণে রক্ষা পান তিনি।
চিকিৎসক সানাউল্লাহ সবাইকে আশ্বস্ত করে বলেন, রোগী এখন অনেকটা শঙ্কামুক্ত। চিকিৎসকের এ ঘোষণায় পুরো ট্রেনে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেন যাত্রীরা।
টিটিই আমিরুল হক জাহেদী আরো জানান, সবকিছু ভালোভাবে হলেও জরুরি কিছু ওষুধের প্রয়োজন দেখা দেয়। তাৎক্ষণিক ওষুধ কেনার জন্য যাত্রীরা টাকা তুলতে শুরু করেন। ট্রেনটি তখনও ঈশ্বরদীর কাছাকাছি। তখন বাইরে ঝুম বৃষ্টি। ওষুধ কিভাবে জোগার করা যায়, এ নিয়ে আবার দুশ্চিন্তা। পরে তিনি ঈশ্বরদী স্টেশনের ভ্রাম্যমাণ টিকিট পরিদর্শক আব্দুল আলীমকে ফোন করে বিষয়টি জানান। আব্দুল আলীম ওষুধ কিনে ঈশ্বরদী বাইপাস স্টেশনে পাঠান। এরপর সেখানে ট্রেন থামলে ওই নারীকে ওষুধ সেবন করানো হয়। ধীরে ধীরে অনেকটাই সুস্থ হয়ে ওঠেন ওই নারী। রাত সাড়ে ৩টা নাগাদ ট্রেনটি দিনাজপুরের ফুলবাড়ি স্টেশনে পৌঁছায়। স্বামীর সঙ্গে এই স্টেশনেই নেমে যান ওই নারী।
টিটিই আমিরুল হক জাহেদী বলেন, চাকরি জীবনে ট্রেনের মধ্যে বেশকিছু মানবিক ঘটনা দেখেছি। এ ঘটনাটি আশ্চর্যের। তবে এমন মানবিক লোক আর দেখেনি। ট্রেনের মাইকে ঘোষণা শুনে ডাক্তার, নার্সসহ অন্যরা যেভাবে এগিয়ে এলেন। সারাটি রাত ওই নারী পাশে বসে থাকলেন, এটা সত্যিই প্রশংসনীয়।
ঘটনার পরে টিটিই আমিরুল হক জাহেদী চিকিৎসক মো. সানাউল্লাহসহ তার সঙ্গে সহযোগিতা করা নার্সদের সঙ্গে কথা বলেছেন। দুইজন চিকিসক ছাড়াও বেশ কয়েকজন নার্স সেখানে ছিলেন। তারা হলেন-ফারজানা আক্তার, মুন্নি খাতুন, নার্সিং ইন্সট্রাক্টর রেবেকা সুলতানা, খাদিজা খাতুন ও রুমি ইসলাম। তবে তাৎক্ষণিকভাবে কারও বিস্তারিত পরিচয় নেওয়া সম্ভব হয়নি।
অনলাইন ডেস্ক :
সাভারে দেশীয় অস্ত্রসহ কিশোর গ্যাংয়ের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ভোর রাতে ছিনতাই করার সময় তাদেরকে গ্রেফতার করে সাভার মডেল থানা পুলিশ।
পুলিশ জানায়, আজ ৪ জুলাই ভোর রাতে সাভারের শাহীবাগ এলাকায় কিশোর গ্যাং লিডার শান্তসহ বাকিরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ছিনতাই করার সময় স্থানীয়রা তাদের ধরে সাভার মডেল থানা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ গ্রেফতার করে।
সাভার মডেল থানার ওসি দীপক চন্দ্র সাহা বলেন, গ্রেফতারকৃতদের নামে সাভার মডেল থানায় আগে থেকে কোন মামলা নেই। তবে আশেপাশে যে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে সেগুলা নিয়ে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে এই কিশোররা জড়িত কিনা। যদি জড়িত থাকে এই মামলায় তাদেরকে শোন এরেস্ট করা হবে। এই ঘটনায় দ্রুত বিচার আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
অনলাইন ডেস্ক :
ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চতুর্থ ধাপে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে সারা দেশে ১৭৫ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। আজ ৪ জুন মঙ্গলবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আগামীকাল ৫ জুন বুধবার অনুষ্ঠিতব্য উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চতুর্থ ধাপে স্থানীয় বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তার জন্য ইন এইড টু সিভিল পাওয়ারের আওতায় ৩ জুন থেকে আগামী ৭ জুন পর্যন্ত নির্বাচনী এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে বিজিবি মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে কাজ করবে।
আগামীকাল ৫ জুন বুধবার দেশের ২৭ জেলার ৬০টি উপজেলায় সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলবে ভোটগ্রহণ।
এসব উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ২৫১ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২৬৫ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২০৫ জন প্রার্থী রয়েছেন। পাঁচ হাজার ১৪৪টি ভোটকেন্দ্রে এক কোটি ৪৩ লাখ ৫৭ হাজার ৮২০ জন ভোটার ভোট দেবেন। ভোট উপলক্ষে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় উপজেলাগুলোতে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
কক্সবাজারের চকরিয়ায় রড বোঝাই ট্রাক ও সিএনজিচালিত অটোরিক্সার মুখোমুখি সংঘর্ষে মা-মেয়ে নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন ৩ জন। আহতদের চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
আজ ২৪ আগস্ট বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের চকরিয়ার বানিয়ারছড়া আমতলী এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- পেকুয়া উপজেলার মগনামা ঘাট এলাকার আবদুস সালামের স্ত্রী রোকেয়া বেগম (৪০) ও তার মেয়ে জেসমিন আকতার (১৮)।
চকরিয়ার মালুমঘাট হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাকসুদ আহমেদ জানান, কক্সবাজার থেকে ছেড়ে আসা চট্টগ্রামগামী একটি রড বোঝাই ট্রাকের সঙ্গে চকরিয়াগামী সিএনজিচালিত অটোরিক্সার মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে ঘটনাস্থলেই অটোরিক্সার ২ যাত্রী নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন চালকসহ ৩ জন। তাদের চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়েছে। ট্রাক ও অটোরিক্সা পুলিশের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
বোচাগঞ্জ-দিনাজপুর সড়কের বোচাগঞ্জে ট্রাকের চাপায় মোটর সাইকেল আরোহী খালা ও ভাগিনা নিহত হয়েছেন। আজ ১১ অক্টোবর বুধবার দুপুর ১টার দিকে বোচাগঞ্জ উপজেলা পরিষদ প্রধান ফটকের সামনে সেতাবগঞ্জ বাজার হতে বাড়ীতে যাওয়ার পথে খালা ও ভাগিনা এই দুর্ঘটনায় নিহত হয়।
নিহতরা হলেন, চম্পা রানী রায় (২২) বোচাগঞ্জ-দিনাজপুর সড়কের সেতাবগঞ্জ পৌরসভাধীন জালগাঁও গ্রামের স্বদেব চন্দ্র রায়ের মেয়ে এবং শিশু জয় (৫) তার বোনের ছেলে একই উপজেলার আনোড়া গ্রামের বিশ্বজিতের ছেলে।
স্থানীয়রা ও পুলিশ জানায়, বোচাগঞ্জ-দিনাজপুর সড়কে সেতাবগঞ্জ পৌরসভাধীন উপজেলা সড়কে মাল বোঝাই ট্রাক দিনাজপুর অভিমুখে যাওয়ার পথে মোটরসাইকেল আরোহী চম্পা রানী রায় ও তার বোনের ছেলে শিশু জয় (৫)কে সাথে নিয়ে সেতাবগঞ্জ বাজার থেকে বাড়ী ফিরছিলেন। পথিমধ্যে চলন্ত ট্রাকটি মোটরসাইকেল আরোহীকে ধাক্কা দিলে তারা দুইজনে ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলে নিহত হয়। এলাকাবাসীরা শিশু জয়কে দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন। এই ঘটনায় ট্রাক, ট্রাক ড্রাইভার ও হেলপারকে আটক করে বোচাগঞ্জ পুলিশে সোপর্দ করে।
বোচাগঞ্জ থানা অফিসার ইনচার্জ আবু বক্কর সিদ্দিক রাসেল এই ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ট্রাক ড্রাইভার ও হেলফার পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে।