চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নের ওবায়দুল্লাহ সড়কের পাশে আমিনপাড়া গ্রামে দুই শতাধিক পরিবার পানিবন্দি রয়েছে।
গতকাল সকালে সরেজমিনে দেখা গেছে কয়েকজন প্রভাবশালী মিলে শাহবাজপুর আমিনপাড়া এলাকায় পানি নিস্কাশনের ড্রেইনসহ বিশাল এরিয়া নিয়ে কৃষিজমিতে মাঠি ভরাট করে হাউজিং প্রজেক্ট তৈরী করেছে। এই প্রজেক্টের পাশের সড়কের নীচে পানি নিস্কাশনের ড্রেন রয়েছে। এই ড্রেনের সামনেও মাটি ভরাট করা হয়েছে। তাই কোন কাজে আসছেনা ড্রেন। বৃষ্টির পানি জমে এলাকার রাস্তাঘাট, বাড়িঘর সহ কৃষি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। অত্যন্ত দুর্দশায় ভুগছেন আমিনপাড়ার লোকজন।
স্থানীয় ভুক্তভোগী হাজি শরিফ চৌধুরী, আলমগীর চৌধুরী ও শহিদ মিয়া চৌধুরী বলেন, পানি নিস্কাশনের ড্রেইনসহ জমিগুলোতে মাঠি ভরাট করার কারণে আমিনপাড়া ও যাদবপুর এলাকার বাড়িঘরসহ রাস্তায় পানি উঠে গেছে। এই পানি গুলো সরানোর ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টি হলে কয়েক ধরে শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে আছে। এছাড়াও প্রায় শতবিঘা জমি পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় আমরা কোন ফসল করতে পারছিনা। এ সমস্যায় তিনবছর ধরে ভুগছি। বিশেষ করে শিশুরা পানিতে ডুবে যাওয়ার আতংক রয়েছে।এছাড়া স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা স্কুল কলেজের যাইতে পারছে না।
ভুক্তভোগীরা বলেন, হাজি কুদ্দুছ, সিরাজ মিয়া, মামুন মিয়া ও গরু ফার্মের মালিক সিরাজ মিয়া এই প্রজেক্ট করে মানুষকে দুর্ভোগে ফেলেছেন।
এ বিষয়ে শাহবাজপুর ইউপি চেয়ারম্যান খায়রুল হুদা চৌধুরী বাদল বলেন, আমিনপাড়া ও যাদবপুর এলাকার মানুষ পানিবন্দি হয়ে খুবই কষ্টে দিনযাপন করছেন। আগে কখনো এখানে জলাবদ্ধতা ছিল না। কয়েক বছর আগে কয়েকজন মিলে জমিগুলোতে প্লট আকারে বিক্রি করার জন্য মাটি ভরাট করে। এজন্য এই সমস্য হয়েছে। পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থা না রেখে মাটি ভরাট করার জন্যই এ সমস্যায় কয়েক বছর ধরে ভুগছেন এলাকাবাসি। এছাড়াও পানি নিস্কাসনের নালাটি বন্দ হওয়ার জন্য এই সমস্য হয়েছে। এ বিষয়ে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সরনাপন্ন হয়েছি।
সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মেজবা উল আলম ভূঁইয়া জানান, আমি বিষয়টি জেনেছি এর সমাধানের জন্য ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া জন্য বলা হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
সরাইলে বিভিন্ন মামলার গ্রেফতারী পরোয়ানার ৭ আসামীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গতকাল বুধবার রাতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, মোঃ রাজিব মিয়া (২৫), রাজন মিয়া (৩০), আমিন মিয়া (২৫), সমুজ আলী (৩৫), লিটন মিয়া (৫০), নাছিমা বেগম (২৫) মোঃ আল আমিন (১৯)।
পুলিশ জানায়, তাদের মধ্যে ২জন নিয়মিত মামলার, ৪জন সিআর মামলার ও একজন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামী। আজ ৪ মে বৃহস্পতিবার সকালে তাদেরকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আসলাম হোসেন বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে গ্রেফতারকৃতদেরকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট:
আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলা প্রেসক্লাবের পক্ষে থেকে শতাধিক পরিবারের মাঝে ঈদ সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে।
আজ ৬ এপ্রিল শনিবার দুপুরে সরাইল পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ক্লাস রুমে ঈদ সামগ্রী হিসেবে চাল, আলু, পেয়াজ, সেমাই, চিনি বিতরণ করা হয়।
সরাইল উপজেলা প্রেসক্লাবের আহবায়ক মোহাম্মদ শফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধা।
সরাইল উপজেলা প্রেসক্লাবের সদস্য সচিব শরীফ উদ্দিনের সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন, সরাইল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ রফিক উদ্দিন ঠাকুর, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ নোমান মিয়া, সরাইল প্রেসক্লাবের সভাপতি মোহাম্মদ আলী মাষ্টার, উপজেলা ঠিকাদার সমিতি সাধারণ সম্পাদক মো. শফিকুল ইসলাম খন্দকার (সেলু), উপজেলা জাতীয় জাতীয় পার্টির সভাপতি হুমায়ুন কবির, আওয়ামী লীগ নেতা মাহফুজ আলী, ইকবাল হোসেন প্রমুখ।
এছাড়া উপস্থিত ছিলেন, দৈনিক প্রভাত প্রতিনিধি আবেদুর আর শাহীন, আমাদের সময় প্রতিনিধি মোঃ আলমগীর মিয়া, এশিয়ান টেলিভিশন প্রতিনিধি আল মামুন খান, কালেবেলা প্রতিনিধি নারায়ণ চক্রবর্তী, বাংলাদেশ বুলেটিন প্রতিনিধি মোঃ রিমন খান, ভোরের দর্পন প্রতিনিধি মাহবুব খন্দকার, অগ্রসর প্রতিনিধি ফাইজুল কবির, যায়যায় কাল প্রতিনিধি পারভেজ, দেশের কন্ঠ প্রতিনিধি শরীফ বক্সসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় নেতৃবৃন্দ।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইলে চোর সন্দেহে বজলু মিয়া (২২) নামে এক যুবককে গণপিটুনিতে মেরে ফেলা হয়েছে। এ সময় গণপিটুনিতে বজলু মিয়ার সাথে থাকা সুজন মিয়া নামে অপর যুবকও আহত হয়। গতকাল সোমবার গভীর রাতে উপজেলার চুন্টা ইউনিয়নের লোপাড়া গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মর্গে প্রেরণ করে।
নিহত বজলু মিয়া লোপাড়া গ্রামের আলী আফজলের ছেলে। আহত সুজন মিয়া একই গ্রামের শফিকুল ইসলামের ছেলে। আহত সুজন মিয়াকে সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
স্থানীয় সূত্র ও পুলিশ জানায়, সোমবার গভীর রাতে বজলু ও সুজন মিয়া একই গ্রামের মৃত আলফাজ মিয়ার বাড়িতে আলফাজ মিয়ার কন্যা রাজিয়া বেগমের ঘরে চুরি করতে যায়। রাজিয়া বেগম বিষয়টি টের পেলে বজলু ও সুজন দৌড়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় রাজিয়া বেগমের চিৎকারে প্রতিবেশীরা বজলু ও সুজনকে ধরে আলফাজ মিয়ার বাড়িতে নিয়ে আসে। পরে তাদেরকে বেদম মারধোর করলে বজলু মিয়া মারা যায় ও সুজন মিয়া আহত হয়। খবর পেয়ে রাতেই পুলিশ গিয়ে নিহত বজলুর লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
এ ব্যাপারে চুন্টা ইউনিয়ন পরিষদের ১ নং ওয়ার্ডের মেম্বার আবদুল হাই বলেন, সোমবার গভীর রাতে বজলু মিয়ার মা ও তার বোন আমাকে ঘুম থেকে ডেকে তুলে বলেন, গ্রামের লোকজন বজলু মিয়াকে ঘর থেকে তুলে আলফাজ মিয়ার বাড়িতে নিয়ে গেছে।
পরে আলফাজ মিয়ার বাড়িতে গিয়ে দেখি বজলু ও সুজনকে গ্রামের লোকজন আলফাজ মিয়ার ঘরের বারান্দার একটি পিলারের সাথে বেঁধে মারধোর করছে। তখন গ্রামের লোকজনকে জিজ্ঞেস করে জানতে পারি তারা রাজিয়া বেগমের ঘরে চুরি করতে আসছিলো। আমি সুজন ও বজলুকে চুরির ঘটনা জিজ্ঞেস করলে তারা কিছু বলেনি। পরে আমি তাদের হাতের বাঁধন খুলে দেই।
এক পর্যায়ে ফজর নামাজের আজান পরলে আমি তাদেরকে যেন আর মারধোর করার অনুরোধ করে সেখান থেকে চলে যাই। সকালে খবর পাই বজলু মিয়া মারা গেছে। ইউপি সদস্য আবদুল হাই আরো বলেন, সুজন মিয়ার স্বভাব চরিত্র ভালো নয়। তবে বজলুর বিষয়ে কখনো কোন খারাপ কথা শুননি।
এ ব্যাপারে সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম বলেন, গ্রামবাসীর সাথে কথা বলে জেনেছি, সুজন ও বজলুর স্বভাব চরিত্র ভালোনা।
সোমবার গভীর রাতে তারা এলাকার মৃত আলফাজ মিয়ার বাড়িতে গিয়ে তার কন্যা রাজিয়া বেগমে ঘরে চুরি করতে গেলে গ্রামবাসী তাদেরকে ধরে গণপিটুনি দিলে বজলু মারা যায় ও সুজন আহত হয়। আমরা নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেছি। এ ঘটনায় নিহতের পরিবার মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে মাওলানা মাহমুদুল হাসান রাজধানীতে গুলিতে নিহত হন। হাসিনা সরকারের পতনের দিন ৫ আগস্ট বাড্ডায় নিহত হন তিনি। তার মৃত্যুর ৫২ দিন পর উত্তরা পূর্ব থানায় একটি হত্যা মামলায় আসামি করা হয়েছে এই মাওলানা মাহমুদুল হাসানকে। সম্প্রতি নিহতের গ্রামের বাড়িতে সরাইল থানা থেকে পুলিশি তদন্তের জন্যে কাগজ গেলে এ নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। নিহত ব্যক্তির নামে মামলা হওয়ায় সবাই ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
নিহত মাহমুদুল হাসান ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলার অরুয়াইল ইউনিয়নের ফতেপুর গ্রামের আব্দুস সাত্তারের ছেলে। তিনি পরিবার নিয়ে রাজধানীর উত্তরায় বসবাস করতেন। গাজীপুরের কাপাসিয়া চাঁদপুর বাজার মসজিদের খতিব ছিলেন তিনি।
নিহত মাহমুদুল হাসানের চাচা সাইদুর রহমান বলেন, ৫ আগস্ট বিকেলে বাড্ডায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয় আমার ভাতিজা মাহমুদুল হাসান। স্থানীয় ইউপি সদস্য আমাকে কয়েকদিন আগে ফোন করে জানায়, আমার ভাতিজা মাহমুদুল হাসানের বিরুদ্ধে ঢাকায় মামলা হয়েছে। তা শুনে আমি হতভম্ব! মৃত ব্যক্তির নামে এতোদিন পরে মামলা কীভাবে সম্ভব হয় !
তিনি আরো বলেন, আমি বিষয়টি নিয়ে ঢাকায় মাওলানা মামুনুল হক এবং ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়দের সাথে কথা বলেছি। তারা আশ্বস্ত করেছেন বিষয়টি কঠিন ভাবে দেখবেন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য শরীফ উদ্দিন বলেন, কয়েকদিন আগে সরাইল থানা থেকে ফোন দিয়ে মাহমুদুল হাসানের বিষয়ে খোঁজ খবর নিচ্ছিলেন। কারণ জিজ্ঞেস করায় তারা জানালেন, তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। শুনে আমি অবাক হলাম। কারণ ঢাকায় নিহত হওয়ার পর তার মরদেহ আমাদের গ্রামে দাফন করা হয়েছে। এখন সে নাকি মামলার আসামি! পরে দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসার জানালেন, তার মৃত্যু সনদ দিতে। আমি বিষয়টি তার চাচাকে জানাই।
সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক এ বিষয়ে বলেন, রাজধানীর উত্তরা পূর্ব থানা থেকে একটি অনুসন্ধান স্লিপ এসেছে। যেহেতু অভিযুক্ত মৃত, সেই অনুযায়ী আমরা প্রতিবেদন সেখানে পাঠিয়ে দেব।