আজ বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস

আখাউড়া, কসবা, জাতীয়, নাসিরনগর, বিজয়নগর, রাজনীতি, সরাইল, 9 January 2023, 8194 Views,
স্টাফ রিপোর্টার:
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আজ। পাকিস্তানের বন্দিদশা থেকে মুক্তি পেয়ে ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি তিনি সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের মাটিতে প্রত্যাবর্তন করেন। এর আগে ৮ জানুয়ারি পাকিস্তানের মিয়ানওয়ালি কারাগারে দীর্ঘ ৯ মাস কারাভোগের পর মুক্তি লাভ করেন তিনি। পরে তিনি পাকিস্তান থেকে লন্ডন যান। তারপর দিল্লী হয়ে ঢাকা ফেরেন বঙ্গবন্ধু। দিবসটি পালন উপলক্ষে আওয়ামী লীগ ও দলের বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনসহ বিভিন্ন দল ও সংগঠন ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
১৯৭১ সালের ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করে বঙ্গবন্ধু সর্বস্তরের জনগণকে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানান। স্বাধীনতা ঘোষণার অব্যবহিত পর পাকিস্তানের সামরিক শাসক জেনারেল ইয়াহিয়া খানের নির্দেশে তাকে গ্রেফতার করে তদানীন্তন পশ্চিম পাকিস্তানের কারাগারে নিয়ে আটক রাখা হয়। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি সৈন্যদের বিরুদ্ধে নয় মাস যুদ্ধের পর চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হলেও ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মধ্য দিয়ে জাতি বিজয়ের পূর্ণ স্বাদ গ্রহণ করে।
জাতির পিতা পাকিস্তান থেকে ছাড়া পান ১৯৭২ সালের ৭ জানুয়ারি ভোর রাতে ইংরেজি হিসেবে ৮ জানুয়ারি। এদিন বঙ্গবন্ধু ও ড. কামাল হোসেনকে বিমানে তুলে দেওয়া হয়। সকাল সাড়ে ৬টায় তারা পৌঁছান লন্ডনের হিথরো বিমানবন্দরে। বেলা ১০টার পর থেকে বঙ্গবন্ধু কথা বলেন, ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী এডওয়ার্ড হিথ, তাজউদ্দিন আহমদ ও ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীসহ অনেকের সঙ্গে। পরে ব্রিটেনের বিমান বাহিনীর একটি বিমানে করে পরের দিন ৯ জানুয়ারি দেশের পথে যাত্রা করেন।
১০ জানুয়ারি সকালেই তিনি নামেন দিল্লীতে। সেখানে ভারতের রাষ্ট্রপতি ভিভি গিরি, প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী, সমগ্র মন্ত্রিসভা, শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দ, তিন বাহিনীর প্রধান এবং অন্যান্য অতিথি ও সেদেশের জনগণের কাছ থেকে উষ্ণ সংবর্ধনা লাভ করেন সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের পিতা শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধু ভারতের নেতৃবৃন্দ এবং জনগণের কাছে তাদের অকৃপণ সাহায্যের জন্য আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানান। তার এই স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে আখ্যায়িত করেছিলেন ‘অন্ধকার হতে আলোর পথে যাত্রা হিসেবে।’
এদিন বেলা ১টা ৪১ মিনিটে তিনি ঢাকা এসে পৌঁছেন। চূড়ান্ত বিজয়ের পর ১০ জানুয়ারি বাঙালি জাতি বঙ্গবন্ধুকে প্রাণঢালা সংবর্ধনা জানানোর জন্য প্রাণবন্ত অপেক্ষায় ছিল। আনন্দে আত্মহারা লাখ লাখ মানুষ ঢাকা বিমান বন্দর থেকে রেসকোর্স ময়দান পর্যন্ত তাঁকে স্বতঃস্ফূর্ত সংবর্ধনা জানান। বিকাল পাঁচটায় রেসকোর্স ময়দানে প্রায় ১০ লাখ লোকের উপস্থিতিতে তিনি ভাষণ দেন। পরের দিন দৈনিক ইত্তেফাক, সংবাদসহ বিভিন্ন পত্রিকায় বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন নিয়ে এভাবেই লিখা হয়- ‘স্বদেশের মাটি ছুঁয়ে বাংলাদেশের ইতিহাসের নির্মাতা শিশুর মতো আবেগে আকুল হলেন। আনন্দ-বেদনার অশ্রুধারা নামলো তার দু’চোখ বেয়ে। প্রিয় নেতাকে ফিরে পেয়ে সেদিন সাড়ে সাত কোটি বাঙালি আনন্দাশ্রুতে সিক্ত হয়ে জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু ধ্বনিতে প্রকম্পিত করে তোলে বাংলার আকাশ-বাতাস।’
জনগণ নন্দিত শেখ মুজিব সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দাঁড়িয়ে তাঁর ঐতিহাসিক ধ্রুপদি বক্তৃতায় বলেন, ‘যে মাটিকে আমি এত ভালবাসি, যে মানুষকে আমি এত ভালবাসি, যে জাতিকে আমি এত ভালবাসি, আমি জানতাম না সে বাংলায় আমি যেতে পারবো কিনা। আজ আমি বাংলায় ফিরে এসেছি বাংলার ভাইয়েদের কাছে, মায়েদের কাছে, বোনদের কাছে। বাংলা আমার স্বাধীন, বাংলাদেশ আজ স্বাধীন। সশ্রদ্ধ চিত্তে তিনি সবার ত্যাগের কথা স্মরণ করেন এবং সবাইকে দেশ গড়ার কাজে উদ্বুদ্ধ করে বলেন, ‘আজ থেকে আমার অনুরোধ, আজ থেকে আমার আদেশ, আজ থেকে আমার হুকুম ভাই হিসেবে, নেতা হিসেবে নয় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নয় প্রেসিডেন্ট হিসেবে নয়। আমি তোমাদের ভাই, তোমরা আমার ভাই। এ স্বাধীনতা আমার পূর্ণ হবে না যদি বাংলার মানুষ পেট ভরে ভাত না পায়, এ স্বাধীনতা আমার পূর্ণ হবে না যদি বাংলার মা-বোনেরা কাপড় না পায়, এ স্বাধীনতা আমার পূর্ণ হবে না যদি এদেশের যুবক যারা আছে তারা চাকরি না পায়। মুক্তিবাহিনী, ছাত্র সমাজ তোমাদের মোবারকবাদ জানাই তোমরা গেরিলা হয়েছো, তোমরা রক্ত দিয়েছো, রক্ত বৃথা যাবে না, রক্ত বৃথা যায় নাই।
বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘একটা কথা-আজ থেকে বাংলায় যেন আর চুরি-ডাকাতি না হয়। বাংলায় যেন আর লুটতরাজ না হয়। বাংলায় যারা অন্য লোক আছে অন্য দেশের লোক, পশ্চিম পাকিস্তানের লোক বাংলায় কথা বলে না, তাদের বলছি তোমরা বাঙালি হয়ে যাও। আর আমি আমার ভাইদের বলছি তাদের উপর হাত তুলো না আমরা মানুষ, মানুষ ভালোবাসি। ‘তবে যারা দালালি করেছে যারা আমার লোকদের ঘরে ঢুকে হত্যা করেছে তাদের বিচার হবে এবং শাস্তি হবে’ উল্লেখ করে জাতির পিতা বলেন, ‘তাদের বাংলার স্বাধীন সরকারের হাতে ছেড়ে দেন, একজনকেও ক্ষমা করা হবে না। তবে আমি চাই স্বাধীন দেশে স্বাধীন আদালতে বিচার হয়ে এদের শাস্তি হবে। আমি দেখিয়ে দিতে চাই দুনিয়ার কাছে শান্তিপূর্ণ বাঙালি রক্ত দিতে জানে, শান্তিপূর্ণ বাঙালি শান্তি বজায় রাখতেও জানে।’ বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘আমায় আপনারা পেয়েছেন। আমি আসছি। জানতাম না আমার ফাঁসির হুকুম হয়ে গেছে। আমার সেলের পাশে আমার জন্য কবর খোড়া হয়েছিলো। আমি প্রস্তুত হয়েছিলাম, বলেছিলাম আমি বাঙালি, আমি মানুষ, আমি মুসলমান, মুসলমান একবার মরে দুইবার মরে না। আমি বলেছিলাম, আমার মৃত্যু আসে যদি আমি হাসতে হাসতে যাবো। আমার বাঙালি জাতকে অপমান করে যাবো না, তোমাদের কাছে ক্ষমা চাইবো না। এবং যাবার সময় বলে যাবো জয় বাংলা, স্বাধীন বাংলা, বাঙালি আমার জাতি, বাংলা আমার ভাষা, বাংলার মাটি আমার স্থান।’
বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে মুক্তিযুদ্ধে প্রবাসী সরকার তাঁর নির্দেশিত যুদ্ধ পরিচালনা করে। নয় মাসের যুদ্ধের এক পর্যায়ে বাঙালির মুক্তিযুদ্ধ চূড়ান্ত রূপ নিতে শুরু করে। ধীরে ধীরে স্বাধীনতা অর্জনের পথে মুক্তিযোদ্ধা, জনতা ও মিত্রবাহিনীর যৌথ আক্রমণ তীব্র হয়। জয় তখন সময়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায় মাত্র। একই সাথে বঙ্গবন্ধুর মুক্তির দাবিতে বিশ্বব্যাপী জনমত গড়ে তোলা হয় প্রবাসী সরকারের নেতৃত্বে। বিশ্ব নেতৃবৃন্দ বঙ্গবন্ধুর মুক্তির দাবিতে সোচ্চার হলে পাকিস্তানী বর্বর শাসকগোষ্ঠী বাধ্য হয় তাঁকে সসম্মানে মুক্তি দিতে।
১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীন দেশের রাষ্ট্রপতি হিসেবে বাংলাদেশের মাটিতে প্রত্যাবর্তন করেন। এর আগে সরকার পরিচালনা করে অস্থায়ী প্রবাসী সরকার। ১২ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। ২৩ সদস্য বিশিষ্ট আওয়ামী লীগের মন্ত্রিসভা রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বভার গ্রহণ করে। ১৯৭২ সালের ২৩ মার্চ জারিকৃত প্রেসিডেন্সিয়াল আদেশ বলে গণপরিষদ গঠন করে নভেম্বর মাসের মধ্যেই দেশের জন্য একটি সংবিধান উপহার দেয়া হয় এবং যা ১৯৭২ সালের ১৬ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হয়। বাসস।

Leave a Reply

গাজীপুরে মামা হত্যার আসামি ভাগিনা গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : গাজীপুরে আনিসুর রহমান হত্যার মামলার আসামি ভাগিনা Read more

সদর মডেল থানায় যোগদান করেই কঠোর…

সঞ্জীব ভট্টাচার্য্য : আজহারুল ইসলাম সম্প্রতি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার

চলারপথে রিপোর্ট : ফ্ল্যাট বাসা থেকে শরীর মীর (৪০) নামের Read more

নাসিরনগরে বাবাকে হত্যার ঘটনায় ছেলে আটক

চলারপথে রিপোর্ট : নাসিরনগরে আলম মিয়া (৬০) নামের এক ব্যবসায়ী Read more

আখাউড়ায় খেলাফত মজলিসের প্রার্থীর মতবিনিময়

মোঃ ইসমাইল: ব্রাহ্মণবাড়িয়া- ৪ (কসবা-আখাউড়া) আসনের খেলাফত মজলিস মনোনীত প্রার্থী Read more

৫০ কেজি গাঁজাসহ একজন গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : ৫০ কেজি গাঁজা ও ১টি সিএনজি উদ্ধারসহ Read more

কাপ্তাই হ্রদের পানি বিপদসীমায়, জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের…

অনলাইন ডেস্ক : বর্ষার শেষপ্রহরে নেমে আসা অবিরাম বৃষ্টি ও Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার নতুন ওসি আজহারুল…

চলারপথে রিপোর্ট : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে Read more

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে…

অনলাইন ডেস্ক : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ঐতিহাসিক Read more

কুমিল্লার দাউদকান্দিতে ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : কুমিল্লার দাউদকান্দি বারপাড়া ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) Read more

মেক্সিকোতে যাত্রীবাহী বাসে ট্রেনের ধাক্কায় ১০জন…

অনলাইন ডেস্ক : মেক্সিকোর আটলাকোমুলকো শহরে একটি পণ্যবাহী ট্রেন ও Read more

কানাডায় বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত

মুমিনুল হক : কানাডার টরেন্টোতে বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত হয়েছে। Read more

সিলেটে দুই ট্রাকের সংঘর্ষে গেল তিনজনের প্রাণ

জাতীয়, 12 June 2023, 1168 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
দুই ট্রাকের সংঘর্ষে তিনজন নিহত হয়েছেন। এসময় গুরুতর আহত হয়েছেন আরো একজন। আজ ১২ জুন সোমবার ভোর ৪টা ৫০ মিনিটের দিকে সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলার দয়ামীর ইউনিয়নের নিজ কুরুয়ায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

banner

নিহতদের পরিচয় পাওয়া যায়নি।

আহতের নাম জসিম (৩৫), তিনি পেশায় ট্রাক চালক। তিনি মানিকগঞ্জ জেলার সিংগাই থানার বাইনি গ্রামের মৃত আব্দুর রহমানের ছেলে।

জানা গেছে, সিলেটগামী একটি ট্রাক উপজেলার নিজ কুরুয়া নামক স্থানে আসার পর টায়ার পানচার হলে চালক ও সহকারী মিলে চাকা পরিবর্তন করছিলেন। ভোর সাড়ে চারটার দিকে একই দিকে সিলেট গামী আরেকটি ট্রাক এসে পেছন থেকে তাদের ট্রাককে ধাক্কা দেয়।

এতে ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকের চালক, চালকের সহকারীসহ তিনজন ঘটনাস্থলেই নিহত হয়।

খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস ওসমানীনগর স্টেশনের উপ সহকারি পরিচালক খন্দকার সানাউল হকের নেতৃত্বে একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে হতাহতদের উদ্ধার করে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ওসমানীনগর ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের লিডার ফখরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘একটি ট্রাকের চাকা পাংচার হওয়ায় সেটিকে রাস্তার পাশে রেখে চালক ও সহকারী সেটি মেরামত করছিলেন।

চাকা খুলে সেটি পরিবর্তন করে শেষ পর্যায়ে আরেকটি ট্রাক পেছন থেকে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই তিনজন মারা যান। গুরুতর আহত আরেকজনকে ওসমানী মেডিক্যাল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘নিহতদের নাম পরিচয় এখনও পাওয়া যায়নি তবে আহতের নাম জসিম। তিনি বুকে মারাত্মকভাবে চাপ খেয়েছেন।

এ বিষয়ে হাইওয়ে পুলিশ তামাবিলের ইনচার্য আবুল কাশেমের সঙ্গে দুপুর সোয়া ১২টার দিকে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘নিহত তিনজনের পরিচয় এখনও পাওয়া যায়নি।’

আখাউড়ায় উপজেলা ও পৌর বিএনপির সম্মেলন অনুষ্ঠিত

আখাউড়া, রাজনীতি, 27 November 2024, 588 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
দেশের সবকিছু সংস্কারের দায়িত্ব অন্তর্বর্তী সরকারকে দেয়া হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির কুমিল্লা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া।

banner

২৭ নভেম্বর বুধবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আখাউড়া উপজেলা ও পৌর বিএনপির সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে দেশে সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য বিএনপি অন্তর্বর্তী সরকারকে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করছে। কারণ বড় রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপির দায়িত্ব দেশ ও জাতিকে রক্ষা করা। এজন্য বিএনপি সেই দায়িত্ব পালন করছে।

তিনি বলেন, দেশের মানুষ এখন নির্বাচন চায়। তাই এই সরকারকে দ্রুত নির্বাচন দিতে হবে। নির্বাচন নিয়ে আর বিলম্ব করা যাবেনা। নির্বাচন বিলম্ব করে শেখ হাসিনার মত ষড়যন্ত্র করার পায়তারা করতে বিএনপি দিবে না। দেশে যেই সংস্কার প্রয়োজন তা জনগনের ভোটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা করবে। সবকিছু সংস্কারের দায়িত্ব অন্তর্বর্তী সরকারকে দেয়া হয়নি। নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে দ্রুত নির্বাচন দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। তিনি আরো বলেন, জুলাই বিপ্লবে ছাত্র-জনতার! জনতার আবরণে ছিলো বিএনপি। বিএনপি ছাত্রদের সবকিছু দিয়ে সহায়তা করেছে। ছাত্ররা একপর্যায়ে মাঠে যখন নিয়ন্ত্রণ করতে পারছিল না, তখন বিএনপি তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পেছনে মূল ভূমিকা পালন করেছে বিএনপি। সেদিন শেখ হাসিনা যদি না পালাতো তাহলে তাকে রাজপথে পাথর নিক্ষেপ করে মারা হতো। সেই সরকারের দোসররা এখন পতনের পর বিএনপির নানান পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে যোগ দিয়ে বিএনপিকেও বিতর্কিত করতে চাচ্ছে। বিএনপি জনগণের দল, এই দলে হাইব্রিডদের জায়গা নেই।

স্বাগত বক্তব্য রাখেন আহ্বায়ক কমিটির সদস্য কবির আহমেদ ভূইয়া।

আখাউড়া শহীদ স্মৃতি ডিগ্রি কলেজে আয়োজিত সম্মেলনে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক জয়নাল আবেদীন আব্দুর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন কুমিল্লা বিভাগের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মুস্তাক মিয়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুল মান্নান, সদস্যসচিব সিরাজুল ইসলাম প্রমুখ।

এদিকে দীর্ঘ ১৫ বছর পর সম্মেলন হওয়ায় নেতাকর্মীদের মাঝে উৎসবের আমেজ বিরাজ করে। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে সম্মেলনস্থলে যোগ দেয়।

আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় জাতীয় সংসদ অনন্য ভূমিকা পালন করছে: প্রধানমন্ত্রী

জাতীয়, 7 April 2023, 1599 Views,

চলারপথে ডেস্ক :
পঞ্চাশ বছরের পথ চলায় জাতীয় সংসদ অনেক ঐতিহাসিক ঘটনার স্বাক্ষী হয়ে আছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সংসদীয় গণতন্ত্রের কেন্দ্রবিন্দু জাতীয় সংসদ অনেক চড়াই-উৎরাইয়ের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিতে ভূমিকা রেখে চলেছে। সরকারের জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার মধ্য দিয়ে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় মহান জাতীয় সংসদ অনন্য ভূমিকা পালন করছে।

banner

আজ ৭ এপ্রিল শুক্রবার জাতীয় সংসদ সংসদের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ১৪৭ বিধিতে (সাধারণ প্রস্তাব) আনা প্রস্তাব উত্থাপনকালে সংসদ নেতা এসব কথা বলেন।

এর আগে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ভাষণ দেন। পরে প্রধানমন্ত্রী প্রস্তাব উত্থাপন করলে তার ওপরে সাধারণ আলোচনায় অংশ নেন প্রথম জাতীয় সংসদের সদস্য ও সরকারি দলের আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ ও শেখ ফজলুল করিম সেলিম।

প্রধানমন্ত্রীর উত্থাপিত প্রস্তাবে বরা হয়, ‘বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের ৫০ বছর পূর্তির এই মাহেন্দ্রক্ষণে সংসদের অভিমত এই যে, বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ সংসদীয় গণতন্ত্রের কেন্দ্রবিন্দুরূপে জনগণের জীবনমান উন্নয়ন এবং আশা আকাঙ্ক্ষার সফল বাস্তবায়নে অব্যাহতভাবে কার্যকর ও সক্রিয় ভূমিকা রাখবে এবং এর মধ্য দিয়ে গণতন্ত্র হবে সুসংহত, শোষণমুক্ত সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে, সকলের জন্য সাম্য ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত হবে, সংবিধানের এ অঙ্গীকারসমূহ পূরণে আমরা সকলে একযোগে কাজ করবো, গড়ে তুলবো আগামীর সুখী, সমৃদ্ধ, উন্নত, ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত স্মার্ট বাংলাদেশ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা- এই হোক আমাদের প্রত্যয়।’

প্রস্তাব উত্থাপনকালে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা জাতির পিতার আদর্শ নিয়ে পথ চলি। তাই ধারাবাহিকভাবে ২০০৮ সালের পরে দেশে গণতন্ত্র অব্যাহত আছে। যার ফলে একটা স্থিতিশীলতা আছে। মাঝে মাঝে আমাদের প্রতিবন্ধকতা, অনেক চড়াই-উৎরাই পার হতে হয়। তারপরও বাংলাদেশকে আমরা এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। আজকে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে, আশা করি ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ এবং জাতির পিতার স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ে উঠবে।’

তিনি বলেন, ৫০ বছরের পথ চলায় জাতীয় সংসদ অনেক ঐতিহাসিক ঘটনার স্বাক্ষী হয়ে আছে। সংসদীয় গণতন্ত্রের কেন্দ্রবিন্দু জাতীয় সংসদ অনেক চড়াই-উৎরাইয়ের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্র এগিয়ে নিতে ভূমিকা রেখে চলেছে। ৫০ বছরের পথপরিক্রমা অনেক ক্ষেত্রেই মসৃণ ছিল না। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালো রাতে জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর বার বার সামরিক ফরমান জারি করে সংবিধানকে ক্ষতবিক্ষত করা হয়েছে। গণতন্ত্র ও জাতীয় সংসদের ওপর আঘাত হেনেছে। অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল সামরিক ও স্বৈরশাসনের পালাবদলের মধ্য দিয়ে সংবিধানের চার মুলনীতিতে আঘাত করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার বন্ধে ১৯৭৯ সালে দ্বিতীয় সংসদে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশকে কালো আইনে পরিণত করা ছিল সংসদীয় ইতিহাসে এক কলঙ্কজনক অধ্যায়। পরবর্তী সময়ে সপ্তম সংসদে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ বাতিলের মধ্য দিয়ে ইতিহাসের নিকৃষ্টতম ও নির্মম হত্যাকাণ্ডের বিচারের পথ সুগম করা হয়।

শেখ হাসিনা বলেন, সরকারের জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার মধ্য দিয়ে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় মহান জাতীয় সংসদ অনন্য ভূমিকা পালন করছে। সংসদের স্থায়ী কমিটিগুলো এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

?প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর মন্ত্রণালয়ের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে স্থায়ী কমিটির সভাপতি পদে মন্ত্রীর পরিবর্তে সদস্যদের নির্বাচিত করা হচ্ছে। বিরোধী দলের সদস্যদের থেকে স্থায়ী কমিটির সভাপতি নির্বাচিত করা হচ্ছে। সিপিএ ও আইপিউতে সভাপতিত্ব ছিল বাংলাদেশের সংসদের প্রতি আন্তর্জাতিক অঙ্গনের আস্থার প্রতীক।

নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশের সংসদ একটি অনন্য দৃষ্টান্ত- একথা উল্লেখ করে সংসদ নেতা বলেন, বর্তমান সংসদে স্পিকার, সংসদ নেতা, সংসদ উপনেতা, বিরোধী দলের নেতা, একজন হুইপ, চারজন স্থায়ী কমিটির সভাপতির ভূমিকা পালন করছেন নারী। জাতীয় রাজনীতিকে নারীদের উৎসাহিত করতে সংসদে নারী আসন ৫০-এ উন্নীত করা হয়েছে।

তিনি বলেন, গত তিন মেয়াদে জাতীয় সংসদের ধারবাহিক অগ্রযাত্রা, সংসদীয় গণতন্ত্রের স্থায়ীত্ব ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বাংলাদেশের ব্যাপক উন্নয়নের ক্ষেত্র রচনা করেছে। জনগণের জীবনমানের উন্নয়নে আজ বাংলাদেশ বিশ্বের বিস্ময়। দারিদ্র বিমোচন, দুর্যোগ মোকাবিলা, নারীর ক্ষমতায়ন, শিশু মৃত্যুহার হ্রাস ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে বিশ্বে বাংলাদেশ আজ রোল মডেল।

শেখ হাসিনা বলেন, সংসদীয় গণতন্ত্রের মঞ্চ মহান জাতীয় সংসদ সরকারের সামগ্রিক উন্নয়নে অংশীদার এবং সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অর্জনসমূহ সংসদে আলোচনার মাধ্যমে জাতির সামনে উপস্থাপিত হয়।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর সাড়ে তিন বছরের শাসনকালে দেশের জন্য সবচেয়ে বেশি কার্যকর ভূমিকা পালন করেছিলেন বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, একটি বিরল দৃষ্টান্ত জাতির সামনে রেখে গিয়েছিলেন জাতির পিতা যে, ইচ্ছা থাকলে কত দ্রুত একটা দেশকে পুনর্গঠন, পুনর্বাসন এবং উন্নয়ন করা যায়। আজকে তিনি বেঁচে থাকলে বাংলাদেশ অনেক আগেই উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে উঠতো।

আলোচনায় অংশ নিয়ে গণপরিষদ এবং প্রথম জাতীয় সংসদের সদস্য তোফায়েল আহমেদ বলেন, বঙ্গবন্ধু একটি লক্ষ্য নিয়েই রাজনীতি করেছিলেন- দেশের স্বাধীনতা এবং মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর বোন শেখ রেহানা আছেন। বঙ্গবন্ধুকন্যার হাতে আওয়ামী লীগের পতাকা তুলে দেওয়া হয়। সে পতাকা হাতে নিয়ে তিনি যত্ন সহকারে রাষ্ট্র পরিচালনা করছেন।

প্রথম জাতীয় সংসদের আরেক সদস্য আমির হোসেন আমু বলেন, ষড়যন্ত্র নানা দিকে বিস্তৃত। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র দেশের উন্নয়ন ও স্বাধীনতার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র।

তিনি সব ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রগতিশীল শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, তাঁরা একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে এগিয়ে যেতে চান। কিন্তু সেখানে বাধা আছে। যারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছিল, বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিদেশে চাকরি দিয়েছিল তারা বাধা।

সরকারের উন্নয়নের কথা তুলে ধরে সরকারি দলের এই জ্যেষ্ঠ সংসদ সদস্য বলেন, গ্রামের মানুষ এখন একবেলাও অভুক্ত থাকে না। সংসদ সদস্যরা এর সাক্ষী।

শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন, আর যাতে কোনো সামরিক জান্তা ক্ষমতায় আসতে না পারে সেইদিকে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।

সংসদ সদস্যদের আলোচনা শেষে রোববার এই প্রস্তাব গ্রহণ করা হবে।

৮ মাসে কোরআনে হাফেজ হলেন শিশু ওমর

জাতীয়, 26 November 2024, 404 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
রামগতিতে আট মাসে পবিত্র কোরআনে হাফেজ হয়েছেন মোহাম্মদ ওমর ফারুক নামে এক শিশু।

banner

শিক্ষকরা জানান, অধিক আগ্রহ ও মননশীলতায় দ্রুত সময়ের মধ্যে ওমর পুরো কোরআন মুখস্থ করতে পেরেছে । তার এ সাফল্যে মুগ্ধ শিক্ষক-অভিভাবক সবাই।

ওমর লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার আলেকজান্ডার দারুল কোরআন ইসলামিয়া মাদ্রাসার হিফজ বিভাগের শিক্ষার্থী ও একই এলাকার ব্যবসায়ী জিয়া উদ্দিন রানার ছেলে।

ওমরের বাবা জিয়া উদ্দিন বলেন, আমার মা চেয়েছিলেন ওমর যেন কোরআনে হাফেজ হয়। সেই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। তবে এতো দ্রুত স্বপ্ন বাস্তবায়ন হওয়ায় বিস্মৃত হয়েছি।

শিশু ওমর ফারুক বলে, আল্লাহ রহমত ছিলো বলে চেষ্টা করে আমি সফল হয়েছি। সকলের কাছে দোয়া চাই যেন বড় হয়ে ভালো একজন আলেম হয়ে দ্বীনের প্রচারে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারি।

শিক্ষকরা জানান, ওমর মেধাবী। তার শেখার আগ্রহ সবাইকে অনুপ্রাণিত করেছে। প্রথম দিকে তাকে ২-৩ পৃষ্ঠা সবক দেওয়া হতো। এরপর সে নিজেই ৫-১০ পৃষ্ঠা পর্যন্ত সবক নিয়েছে। সবাই যখন বিকেলে খেলাধুলা করত, তখন ওমর পড়া নিয়ে ব্যস্ত থাকত। তার পড়া দেখে সবাই মুগ্ধ হয়। হাফেজ হওয়ার দিনও তাকে রুটিন অনুযায়ী পড়তে দেখা গেছে।

স্বজনরা জানিয়েছেন, ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে তাকে মাদ্রাসার হেফজ বিভাগে ভর্তি করা হয়।

জেলা বিএনপির মানববন্ধন অনুষ্ঠিত

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, রাজনীতি, 11 March 2023, 2232 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ ১০ দফা দাবিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জেলা বিএনপির উদ্যোগে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

banner

আজ ১১ মার্চ শনিবার বেলা ১১টায় শহরের রেলগেইট সংলগ্ন জেলা পরিষদ মার্কেটের সামনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির আহবায়ক জিল্লুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপি সাবেক সভাপতি হাফিজুর রহমান মোল্লা কচি, সাবেক সাধারণ সম্পাদক জহিরুল হক খোকনসহ বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বরকত উল্লাহ বুলু বলেন, বর্তমান সরকার গণতান্ত্রিক সরকার নয়। ২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবর রাতের আঁধারে আইন-শৃংখলা বাহিনী এবং আওয়ামীলীগের মাধ্যমে ব্যালট বাক্স ভর্তি ক্ষমতায় এসেছিল।

বর্তমানে মানুষ ভোট কেন্দ্রে ভোট দিতে যায়না। কিছুদিন আগে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় যে ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে, তা পৃথিবীর গণতন্ত্রের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লিখা থাকবে। বিএনপি থেকে পদত্যাগ করা উকিল আবদুস সাত্তার ভ‚ইয়াকে আওয়ামীলীগের লোকেরা পাহারা দিয়ে উপ-নির্বাচনে জয়লাভ করিয়েছে।

তিনি বলেন, আরেকটি ঘটনা ঘটেছিল ১৯৭৩ সালের নির্বাচনে। শেখ মুজিবুর রহমান তখন ক্ষমতায়, কুমিল্লার দাউদকান্দিতে ইঞ্জিনিয়ার রশিদ সাহেব বিপুল ভোটে জয়লাভ করেছিলেন এবং খন্দকার মোশতাক বিপুল ভোটে পরাজিত হয়েছিলেন। সেদিন হেলিকপ্টারে ব্যালট বাক্স ঢাকায় নিয়ে মোশতাককে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছিল। যিনি পরবর্তীতে শেখ মুজিবের লাশ সিড়িতে ফেলে রেখে রাষ্ট্রপতি হয়েছিলেন।

তিনি বলেন, আজকে বাংলাদেশ থেকে লুন্ঠন করে ১৪ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন। তারা কানাডায় বেগম পাড়া গড়েছেন। তিনি বলেন, কানাডা সরকার আইন করেছে বাংলাদেশ থেকে টাকা নিয়ে যেন কেউ আর বাড়িঘর না করতে পারে। এর চেয়ে আর লজ্জাজনক কিছু হতে পারে না।