চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগরে বজ্রপাতে মো. মামুন মিয়া (৩০) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে।
১৯ মে রবিবার বিকেলে বিজয়নগর উপজেলার হরষপুর ইউনিয়নের সোনামুড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত মামুন ওই গ্রামের মো. সুলতান মিয়ার ছেলে। তিনি পেশায় একজন কৃষক ছিলেন।
বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, বিকেলে ঝড় শুরু হলে মাঠে বেঁধে রাখা গরু আনতে যান মামুন। এ সময় বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে পরিবারের লোকজন তার মরদেহ উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে দাফন সম্পন্ন করেছেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মবাড়িয়া জেলার বিজয়নগরে মেয়ের বাড়িতে বেড়াতে এসে ট্রাক চাপায় নিরু দাস (৭০) নামে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। আজ ৫ নভেম্বর রবিবার বিকালে উপজেলার বুধন্তি বাজারের সামনে এ ঘটনা ঘটে। নিহত নিরু দাসের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার চিতালপুর গ্রামে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রবিবার বিকালে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বুধন্তি বাজারের সামনে রাস্তা পারাপারের সময় মাধবপুরগামী ট্রাকের চাপায় পড়ে বৃদ্ধ ঘটনাস্থলে নিহত হয়।
খাঁটিহাতা হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আকুল চন্দ্র বিশ্বাস জানান, লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রেরন করা হয়েছে। ঘাতক ড্রাইভার রোমান (৩৫)কে ট্রাকসহ আটক করা হয়েছে।
স্টাফ রিপোর্টার:
বিশ্বে আর্থিক ব্যবস্থায় নারী ও পুরুষের যে ব্যবধান ছিল তা গত এক দশকে প্রথমবারের মতো ৪ শতাংশে নেমে এসেছে। বুধবার (১৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় বিআইজিডি ও বিশ্বব্যাংকের যৌথ আয়োজনে এক ওয়েবিনারে এ তথ্য তুলে ধরা হয়। বিশ্বব্যাংকের গ্লোবাল ফিনডেক্সের ২০২১-এর বৈশ্বিক ফলাফলের বরাতে ওয়েবিনারে জানানো হয়, আর্থিক পরিষেবা সংক্রান্ত বিষয়াবলীতে নারী ও পুরুষের যে ব্যবধান ছিল, গত এক দশকে তা প্রথমবারের মতো নেমে এসেছে ৪ শতাংশে। উন্নয়নশীল দেশগুলোতে এই ব্যবধান ৬ শতাংশের চেয়ে কিছুটা বেশি। সেখানে দেখা গেছে ৭৪ শতাংশ পুরুষের বিপরীতে ৬৮ শতাংশ নারীর একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট রয়েছে। ওয়েবিনারে উইমেনস ওয়ার্ল্ড ব্যাংকিংয়ের প্রেসিডেন্ট ও সিইও ম্যারি অ্যালেন বলেন, আর্থিক ব্যবস্থায় নারীদের অংশগ্রহণ বেড়েছে। তবে এক্ষেত্রে নারীদের ধরে রাখতে এবং তাদের অংশগ্রহণের হার বাড়াতে যা যা প্রয়োজন, সেসব প্রণোদনাও আমাদের দিতে হবে। আর্থিক সেবা প্রদানকারী ও সেবাগ্রহীতাদের মাঝে বৃহত্তর আস্থা, সচেতনতা এবং প্রাসঙ্গিকতা তৈরিতে আমাদের অবশ্যই মনোযোগী থাকতে হবে। ওয়েবিনারে গ্লোবাল ফিনডেক্সের ফলাফল তুলে ধরেন বিশ্বব্যাংকের ডেভেলপমেন্ট রিসার্চ গ্রুপের মুখ্য অর্থনীতিবিদ এবং গ্লোবাল ফিনডেক্সের প্রতিষ্ঠাতা লিওরা ক্ল্যাপার ফিনডেক্স। তিনি বলেন, উন্নয়নের জন্য আর্থিক অন্তর্ভুক্তি প্রয়োজনীয়। এটির বিস্তার নারীদের সঞ্চয়ে উৎসাহিত করবে এবং তখন তারা নিজেরাই ডিজিটাল লেনদেন করতে সক্ষম হবেন। একই সঙ্গে এটি নারীদের আয়-ব্যয়ের প্রক্রিয়াকে সহজ করবে ফলশ্রুতিতে তারা পরিবারকে আর্থিক সহায়তাও করতে পারবে।
ওয়েবিনার সঞ্চালনা করেন বিআইজিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ইমরান মতিন। এতে কথা বলেন ইউনিভার্সিটি অব কেন্ট, ক্যান্টারবেরি থেকে জাকি ওয়াহহাজ, আফ্রিকান পপুলেশন অ্যান্ড হেলথ রিসার্চ সেন্টারের ক্যারোলিন ওয়াইনানা, সেভ দ্য চিলড্রেন ইন্টারন্যাশনাল থেকে মুন্সি সুলাইমান, বিআইজিডি থেকে লোপিতা হক এবং বিশ্বব্যাংকের জেভিয়ার জিনি।
ওয়েবিনারে আলোচকরা একটি প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন। সেখানে বাংলাদেশের ডিজিটাল আর্থিক খাতে কীভাবে এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলো নারীদের আর্থিক অন্তর্ভুক্তিতে অবদান রাখছে সে বিষয়ে বিকাশের চিফ এক্সটারনাল অ্যান্ড করপোরেট অ্যাফেয়ার্স অফিসার শেখ মো. মনিরুল ইসলাম আলোকপাত করেন।
বিআইজিডি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইমরান মতিন বলেন, কিছু ইতিবাচক চিত্র আজকাল আমরা দেখছি, যা খুবই আশাব্যঞ্জক। কিন্তু আমাদের আরও বেশি করে কাজ করতে হবে যাতে আর্থিক অন্তর্ভুক্তির এই ফলাফলগুলো নারীদের জন্য টেকসই ও অর্থবহ হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
সম্পদের তথ্য গোপনসহ জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক মিহির কুমার ঘোষ ও তার স্ত্রী শিল্পী রাণী ঘোষের নামে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
আজ ৩ জুলাই বুধবার দুপুরে দুদকের সমন্বিত কুমিল্লা জেলা কার্যালয়ে উপসহকারী পরিচালক মোঃ ইমরান খান তাদের নামে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেন। মামলার আসামী শিল্পী রাণী ঘোষ (৪২) ও তাঁর স্বামী মিহির কুমার ঘোষ (৫১) জেলা শহরের টি.এ. রোড এলাকার মৌড়াইলের বাসিন্দা।
মিহির জেলার নাসিরনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের সাবেক অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক ছিলেন। বর্তমানে একই পদে বিজয়নগরে কর্মরত রয়েছেন। একটি মামলায় মিহিরকে এবং অপর মামলায় স্ত্রী শিল্পী ও তার সহযোগী মিহিরকে আসামী করা হয়। শিল্পি ও মিহিরের মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালে দুদক অনুসন্ধান শেষে শিল্পী রানী ঘোষ ও তার স্বামী মিহির কুমার ঘোষের বিষয়ে প্রাথমিক তথ্য পান। দুদক আইন ২০০৪ এর ২৬ (১) ধারামতে ২০২১ সালের ১৬ আগস্ট স্বপ্না রানীর কাছে সম্পদ বিবরণী নোটিশ ও ফরম জারি করে দুদক। ২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর দুদকের কুমিল্লার সমন্বিত কার্যালয়ে সম্পদ বিবরণী ফরম পূরণ করে পাঠান শিল্পী।
শিল্পী রানী দুদকে দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে তার ৩৬ লাখ ৬৬ হাজার ৭৮২ টাকার স্থাবর সম্পদ এবং ১৫ লাখ ৬৮ হাজার ৪১ টাকার অস্থাবর সম্পদের কথা উল্লেখ করেন। কিন্তু সম্পদ বিবরণী যাচাইকালে তার নামে ৩৯ লাখ ৫৬ হাজার ২৬ টাকার স্থাবর সম্পদ ও ১৫ লাখ ৬৮ হাজার ৪১টাকার অস্থাবর সম্পাদ অর্জনের তথ্য পায় দুদক। পারিবারিকসহ অন্যান্য ব্যয় পাওয়া যায় ৮ লাখ ২৬ হাজার ২৯১ টাকা। পারিবারিক ও স্থাবর-অস্থাবর সম্পদসহ তার নামে মোট ৬৩ লাখ ৫০ হাজার ৩৫৮ টাকার সম্পদ পায় দুদক। তিনি ২০১০-১১ করবর্ষে আয়কর নথি খোলেন। সেসময় গৃহ সম্পদ ও ব্যবসা থেকে তার আয় ছিল ৩৪ লাখ ৭৫ হাজার ৮১৯ টাকা। শিল্পীর জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে সম্পদের তারতম্য পাওয়া যায়। তার জ্ঞাত-আয় বহির্ভূত সম্পদের পরিমান ২৮ লাখ ৭৪ হাজার ৫৩৯ টাকা। তিনি সম্পদ বিবরণীতে ৫২ লাখ ৩৪ হাজার ৮২৩ টাকার সম্পদ উল্লেখ করলেও দুদক অনুসন্ধানে পান ৫৫ লাখ ২৪ হাজার ৬৭ টাকা। তিনি সম্পদ বিবরণীতে ২ লাখ ৮৯ হাজার ২৪৪ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন। ২০১০-১১ সালের আয়কর নথি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ওই আয়বর্ষে ব্যবসা থেকে তিনি আয় দেখান ৫ লাখ ৭৩ হাজার টাকা। কিন্তু সেসময় ব্যবসার পুঁজি দেখান মাত্র ২ হাজার টাকা। এতে বুঝা যায় যে, আয়কর নথি খোলার পূর্বে তার নামে কোন প্রকার ব্যবসা ছিল না। তার স্বামী মিহির কুমার অবৈধ পন্থায় উপার্জিত অর্থ দিয়ে ২০১০-১১ সালে ৫ তলাবিশিষ্ট বাড়ি নির্মাণ করেন।
সম্পদের মিথ্যা তথ্য দিয়ে স্বামী মিহিরের অবৈধ সহায়তায় অসৎ উদ্দশ্যে দুদক আইন, ২০০৪ এর ২৬(২) ও ২৭(১) ধারা এবং দন্ডবিধির ১০৯ ধারায় শাত্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।
মিহির কুমার ঘোষ (৫১) দুদকে দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে মিথ্যা হিসাব/তথ্য প্রদানসহ ৩ লাখ ৭৬ হাজার ৭২২ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করে দুদক আইন, ২০০৪ এর ২৬ (২) ধারায় শাস্তিযাগ্য অপরাধ করেছেন।
স্টাফ রিপোর্টার :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে দু’পক্ষের মারামারির দুই মাস পর আহত হারুন মিয়া (৬০) নামের এক ব্যক্তি মারা গেছেন। তিনি তার নিজ বাড়িতে চিকিৎসাধীন ছিলেন। শনিবার (১০ ডিসেম্বর) রাতে হারুন মিয়া হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসার পথে সে মারা যায়। গত অক্টোবর মাসে প্রতিপক্ষের হামলায় গুরুত্বর ভাবে আহত হয়েছিলেন হারুন মিয়া। হারুন মিয়ার মৃত্যুর পর উপজেলার পত্তন ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক দুধ মিয়ার বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। হারুন মিয়া উপজেলার পত্তন ইউনিয়নের লক্ষীমুড়া গ্রামে মৃত কিতাব আলীর ছেলে। হাসপাতাল ও এলাকাবাসীর সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন যাবত লক্ষীমুড়া গ্রামের মৃত কিতাব আলীর ছেলে হারুন মিয়ার পরিবার ও মৃত সোবহান মিয়ার ছেলে করিম মিয়ার পরিবারের জমিতে গরুর ঘাস খাওয়াকে কেন্দ্র করে বিরোধ চলে আসছিল। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে করিম মিয়ার পক্ষের লোকেরা হারুন মিয়াসহ তার পরিবারের ৪-৫ জনকে পিটিয়ে জখম করে। তারপর বিজয়নগর থানায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা করার পর করিম মিয়ার লোকজন হারুন মিয়াকে হত্যা করার হুমকি দেন? পরবর্তীতে স্থানীয় চেয়ারম্যান দু’পক্ষের লোকদেরকে ডেকে তা আপস করার চেষ্টা করেন। পরে হারুন মিয়া তার ছেলে-ভাতিজাকে নিয়ে বাড়িতে যাওয়ার পথিমধ্যে শেখ হাসিনা সড়কের উত্তর পাশে করিম মিয়ার লোকজন অতর্কিতভাবে তাদের উপর হামলা করেন। তাতে হারুন মিয়ার একটি হাত ও একটি পা ভেঙ্গে যায়। পরে তাদেরকে জেলা সদর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। হারুন মিয়ার অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে এক মাস হাসপাতালে ভর্তি রাখা হয়। পরবর্তীতে বাড়িতে তার চিকিৎসা চলে।
এলাকাবাসী সূত্রে আরও জানা যায়- এই হামলার ইন্দনদাতা পত্তন ইউনিয়ন আওয়ামিলীগ সাধারণ সম্পাদক দুধ মিয়া।
নিহত হারুন মিয়ার ভাতিজা সোহেল বলেন, দুধ মিয়া সরাসরি করিম মিয়ার পক্ষে নিয়েছে। যার কারণে আমার চাচা হারুন মিয়ার উপর হামলা হয়েছে। আমার চাচার হত্যা সাথে দুধ মিয়া জড়িত। দুধ মিয়াসহ যারা আমার চাচাকে হত্যা করেছে তাদের ফাঁসির দাবি জানায়।
বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজু আহমেদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, একজন মারা গেছেন বলে শুনেছি। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। লাশ জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে আছে। ময়নাতদন্তের পর মৃত্যু রহস্য উন্মোচন হবে।