চলারপথে রিপোর্ট :
সাম্প্রতিক সময়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের কাউতলীর মোড়, কালীবাড়ির মোড়, মঠের গোড়া ও কোট রোড, কুমারশীল মোড়সহ গুরুত্বপূর্ণ মোড় ও বিভিন্ন পাড়া-মহল্লার রাস্তায় যানজট তীব্র আকার ধারণ করেছে।
অবৈধভাবে ফুটপাত দখল, যত্রতত্র পার্কিং এবং বিপুল সংখ্যক লাইসেন্সবিহীন অটোরিকশা শহরে প্রবেশ করায় যানজট সহনীয় মাত্রা অতিক্রম করেছে।
শহরের যানজট নিরসনে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসন, ট্র্যাফিক বিভাগ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভাসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা নাগরিক ফোরাম।
আজ ৯ সেপ্টেম্বর সোমবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জেলা নাগরিক ফোরামের সভাপতি সাংবাদিক পীযূষ কান্তি আচার্য ও সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা রতন কান্তি দত্ত জেলা শহরের যানজট নিরসনে ফুটপাত অবৈধ দখলমুক্ত করা, লাইসেন্সবিহীন রিকশা, অটো রিকশা শহরে প্রবেশে বাধা প্রদান করার আহ্বান জানান।
বিবৃতিতে তারা আরো বলেন, যানজট নিয়ন্ত্রণ ও নিরসনে জেলা ট্র্যাফিক পুলিশের কার্যক্রম সন্তোষজনক নয়। সমস্যা সমাধানে অতিরিক্ত জনবল নিযুক্ত করা ছাড়াও জনগণকে ট্র্যাফিক আইন মেনে চলার জন্য সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনার জোর দাবি জানান।
চলারপথে রিপোর্ট :
জেলাপরিষদ চেয়ারম্যান, যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা আল-মামুন সরকার বলেছেন, বর্তমান বৈশ্বিক পরিবেশ বিপর্যয় প্রতিরোধে বৃক্ষরোপনের কোন বিকল্প নেই। তাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশিত, দেশের একইঞ্চি ভূমিও খালি রাখা যাবে না। বৃক্ষরোপনে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদাত বার্ষিকীতে শোকাহত আগস্টের প্রথমদিনে জেলাপরিষদের আয়োজনে বৃক্ষরোপন কর্মসূচি উদ্বোধনকালে তিনি একথা বলেন।
এ সময় জেলাপরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (উপ-সচিব) এম এম মাহমুদুর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোঃ আবু হোরায়রাহ, রেডক্রিসেন্ট ভাইস চেয়ারম্যান জায়েদুল হক, প্রবাসী ফোরামের আহবায়ক সমাজকর্মী মাসুকুল কবীর এবং শিক্ষক নেত্রী শাহিনা পারভিনসহ জেলা পরিষদের কর্মকর্তাবৃন্দ কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আসমাতুন্নেছা বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ও অটিস্টিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে শীত বস্ত্র কম্বল বিতরণ করা হয়েছে।
আজ ১ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার সকালে প্রধান অতিথি হিসেবে বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) এস.এম. শান্তুনু চৌধুরী।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শামীমা সিকদার দীনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সিভিল সার্জন কার্যালয়ের চিকিৎসক ডাঃ মোঃ মাহমুদুল হাসান, জেলা প্রতিবন্ধী বিষয়ক কর্মকর্তা গায়েত্রী দেবনাথ, সরকারি শিশু পরিবারের উপ-তত্ত্বাবধায়ক রৌশন আরা, বিদ্যালয়লয়ের দাতা সদস্য এ.বি.এম তৈমুর।
অনুষ্ঠানে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ১৫০টি কম্বল বিতরণ করা হয়। অনুষ্ঠানে বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও অভিভাবকগণ উপস্থিত ছিলেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাদীপ্ত জেলা ব্রাহ্মণবাড়িয়া। সংস্কৃতির রাজধানীখ্যাত তিতাস বিধৌত জেলা ব্রাহ্মণবাড়িয়া। মুক্তিযুদ্ধে এই জেলার রয়েছে গৌরবোজ্জল ইতিহাস। যুগে যুগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় জন্মগ্রহণ করেছেন অনেক জ্ঞানী, গুনী মহাপুরুষ। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার মানুষ সংস্কৃতিমনা ও অতিথি পরায়ন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া একটি ঐতিহ্যবাহী জেলা। এখানকার ঐতিহ্যের মধ্যে রয়েছে মিষ্টি, ছানামুখী, মেলা/বান্নি, হাঁসলি মোরগ, গরুর দৌড়, নৌকা বাইচ ও পুতুল নাচ।
এক সময় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুতুল নাচ দেশে ও বিদেশে বিখ্যাত ছিলো। পুতুল নাচের সংস্কৃতি ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে সমৃদ্ধ করেছিলো দেশে-বিদেশে। তবে কালের আর্বতে পুতুল নাচের আগের জৌলুস আর নেই। আধুনিক সংস্কৃতির আগ্রাসনে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঐতিহ্যবাহী পুতুল নাচ এখন বিলুপ্তির পথে।
বাঙ্গালীর অন্যতম উৎসব পহেলা বৈশাখ, বসন্ত উৎসবসহ হাতেগুনা দুই/একটি উৎসবে পুতুল নাচে অনুষ্ঠান ছাড়া তেমন আর চেখে পড়েনা।
শহরের প্রবীন ব্যক্তিদের কাছ থেকে জানা গেছে, ভারতীয় উপমহাদেশে পুতুল নাচের সৃষ্টি করেছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার কৃষ্ণনগর গ্রামের বিপিন পাল। বিপিন পালকে ভারতীয় উপমহাদেশে পুতুল নাচের জনক বলা হয়। তিনি প্রথম আধুসিক পুতুল নাচের প্রচলন করেন। তিনি হিন্দু ধর্মের বা পৌরাণিক কাহিনী অবলম্বনে ও তৎকালীন সময়ের সামাজিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় পুতুল নাচ করতেন।এ ছাড়াও গ্রামীন জীবনের নানা দৃশ্যপট তুলে ধরতেন তার পুতুল নাচে। তাঁর পুতুল নাচ দেখে শিশু থেকে সব বয়সী মানুষ আনন্দ পেতো। বিশেষ করে শিশুদের আনন্দের সীমা ছিল না, এই ভাবনা থেকেই তিনি প্রথমে মাটির পুতুল, ক্রমান্বয়ে স্টিক পুতুল, স্প্রিং পুতুল ও সূতোর তৈরি পুতুল তৈরী করেন। একই এলাকার কয়েক জন শিষ্যকে সাথে নিয়ে তিনি চমক তৈরি করে ছিলেন পুতুল নাচ সৃষ্টির মাধ্যমে। পুতুল নাচের ব্যাপক জনপ্রিয়তা দেখে তাঁর পরিবার সহ মতি মিয়া, রমনাথ বাবু, তারু মিয়া ও সিদ্দিক মিয়াকে সাথে নিয়ে বৃদ্ধি করেন পুতুল নাচের প্রচার ও প্রসার। তাঁর এ শিষ্যরা দীর্ঘবছর তাঁর সাথে থেকে পরবর্তীতে যার যার এলাকায় পুতুল নাচের দল তৈরি করে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জনপদে পুতুল নাচের সাথে জড়িত আরো কয়েকজনের নাম জানা যায়। এরা হলেন জেলার নবীনগরের কৃষ্ণনগর গ্রামের গিরীশ আচার্য্য, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার মেড্ডা গ্রামের ধন মিয়া, কালু মিয়া ও মোঃ রাজ হোসেন। এক সময় ধন মিয়ার পুতুল নাচ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেন।
ধন মিয়ার পুতুল নাচ দলের নাম ছিলো রয়েল বীনা অপেরা। ধন মিয়া শুধু দেশে নয়, বিদেশে ও খ্যাতি অর্জন করেছিলেন।
১৯৮০ সালে ধন মিয়া পুতুল নাচ দেখাতে সোভিয়েত ইউনিয়নে গিয়েছিলেন। তৎকালীন সময়ে ধন মিয়া রাশিয়ার মস্কো, তাসখন্দ, সমরখন্দসহ বিভিন্ন শহরে ২০ দিন অবস্থান করে পুতুল নাচ দেখিয়ে বাংলাদেশের নাম বিশ্ব পরিমন্ডলে ছড়িয়ে দেন। ধন মিয়ার পুতুল নাচের মধ্যে ছিলো “বড়শি বাওয়া” “বাঘে কাঠুরিয়াকে ধরে নেওয়া” এবং “বৈরাগী বৈরাগিনীর ঝগড়া” অন্যতম।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুতুল নাচের জৌলুস এখন আর আগের মতো নেই। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঐতিহ্য পুতুল নাচ এখন বিলুপ্তির পথে।
গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের সূর্যমুখী কিন্ডার গার্টেন এন্ড উচ্চ বিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় শিশু শিক্ষার্থীদের দিয়ে পুতুলের আদলে অসাধারণ নৃত্য প্রদর্শন করা হয়। যা এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। অনুষ্ঠানে স্কুলের শিশু শিক্ষার্থীরা পায়ের আঙ্গুলের সাথে হাতে সূতো বেঁধে, মাথায় ঘুমটা দিয়ে ও গায়ে বাঙ্গালীয়ানা পোশাক পরিধান করে নাচ প্রদর্শন করে।
পুতুলের আদলে ২৬ জন শিশু গানের তালে তালে অসাধারণ নৃত্য প্রদর্শন করে। ৫ মিনিটের মনোমুগ্ধকর পুতুলের আদলে নাচের ভিডিও উপস্থিত অতিথি ও অভিভাবকদের মুগ্ধ করে, তাদের হৃদয় জয় করে। সেই নাচের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে তা দেখে সূধীজনরা প্রশংসা করছেন। পুতুলের আদলে শিশুদের নাচ নতুন প্রজন্মের সাথে পুতুল নাচের পরিচয় করিয়ে দিচ্ছে।
পুতুলের আদলে শিশুদের দিয়ে এই নৃত্যের মূল কারিগর শহরের পশ্চিম মেড্ডা এলাকার তরুন নৃত্য শিল্পী মোহাম্মদ আল সাইফুল আমিন জিয়া। তিনি পশ্চিম মেড্ডা এলাকার মৃত রমজান মিয়ার ছেলে। তিনি সূর্যমূখী কিন্ডার গার্টেন এন্ড উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রায় ১১ বছর ধরে সহকারী শিক্ষক (নৃত্য) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
এ ব্যাপারে নৃত্যশিল্পী মোহাম্মদ আল সাইফুল আমিন জিয়া বলেন, ছোট বেলায় পুতুল নাচ দেখতাম। সূতা দিয়ে পুতুল নাচানো হতো। তবে এখন আর পুতুল নাচ সেভাবে হয় না। আমি ভাবলাম একজন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সন্তান ও সংস্কৃতির কর্মী হিসেবে বিলুপ্ত হতে থাকা পুতুল নাচের জৌলুসকে আবারো আনতে। নতুন প্রজন্মকে পুতুল নাচের সাথে পরিচিত করার ভাবনা থেকেই এই পুতুল নাচটি তৈরী করি। তিনি আরো বলেন, আমার প্রদর্শিত পুতুলের আদলে শিশুদের নৃত্যটি দেশ-বিদেশে প্রশংসিত হওয়ায় আমি অনেক খুশি। আমি মনে করি আমার কষ্ট সার্থক হয়েছে। তিনি বলেন, আমি নিজের চেষ্টায় ৬ বছর বয়স থেকে নাচ করি, এবং ১৫ বছর বয়স থেকে নাচ করাই। আমি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সংস্কৃতিকে এগিয়ে নিতে কাজ করছি।
চলারপথে রিপোর্ট :
সোমবার রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পুলিশ মিডিয়া উইংস থেকে পাঠানো এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানা থেকে লুট হওয়া একটি বিদেশি রিভলবার পরিত্যক্ত অবস্থায় উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল ২৮ অক্টোবর রাত সাড়ে ৮টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-বিজয়নগর সড়কের শিমরাইলকান্দি এলাকা থেকে এই অস্ত্রটি উদ্ধার করা হয়। প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, সদর মডেল থানার এসআই রেজাউল করিম ও এসআই নেয়ামত উল্লাহ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রাতে শিমরাইলকান্দি এলাকা থেকে বিদেশি রিভলবারটি উদ্ধার করে। রিভলবারটি গত ৫ আগস্ট সদর থানা থেকে লুট হয়।