ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি।।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আদালতে চলমান অচলাবস্থা নিরসনে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিনের সঙ্গে জেলা আইনজীবী সমিতির নেতাদের বৈঠক হয়েছে। আইনজীবী ও কর্মচারীদের পাল্টাপাল্টি অবস্থানের কারণে এ ঘটনা ঘটে।ঢাকায় আইনমন্ত্রীর গুলশানের আবাসিক কার্যালয়ে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।আজ বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বাবুল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।বৈঠকের বিষয়ে মফিজুর রহমান জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আদালতে যা চলছে, সে সম্পর্কে আদ্যপান্ত জানানোর পর আইনমন্ত্রী বিষয়টি দ্রুত সুরাহা করার ব্যাপারে তাদের আশ্বস্ত করেন। বৈঠকে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের প্রতিনিধি হিসেবে মোহাম্মদ সাঈদ আহমেদ রাজা, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির ও সাধারণ সম্পাদক আবদুর নূর দুলালও উপস্থিত ছিলেন।জেলা আইনজীবী সমিতির এই নেতা বলেন, দুর্নীতিবাজ কর্মচারীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়ার কারণে যে আমরা জেলা জজ শারমিন নিগারের অপসারণ দাবি করছি, তাও তাদের বলেছি। এ ছাড়া বিচারক ফারুক আহমেদও যে চাকরি বিধিমালা লঙ্ঘন করে তিনটি জরুরি মামলা গ্রহণ না করে, আইনজীবীদের সঙ্গে অসঙ্গত আচরণ এবং ঢালাওভাবে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সব আইনজীবীদের নিয়ে খারাপ মন্তব্য করেছেন। সেটাও অবহিত করা হয়েছে।
এদিকে আজ বৃহস্পতিবারও আইনজীবীদের আদালত বর্জনের কর্মসূচি চলমান থাকবে জানিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি তানবীর ভূঁইয়া বলেন, আইনজীবীদের দাবি অনুযায়ী জেলা জজসহ দুই বিচারক ও দুর্নীতিবাজ নাজিরকে অপসারণ না করা পর্যন্ত আদালত বর্জন কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। উল্লেখ্য, শীতকালীন ছুটির আগে আদালতের শেষ কার্যদিবস ছিল গত ১ ডিসেম্বর। ওই দিন তিনটি মামলা না নেওয়ায় গত ১ জানুয়ারি থেকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মোহাম্মদ ফারুকের আদালত বর্জন করেন আইনজীবীরা। এরপর গত ২ জানুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১-এর এজলাস চলাকালে বিচারক মোহাম্মদ ফারুকের সঙ্গে আইনজীবীদের বাদানুবাদের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পরে গত ৪ জানুয়ারি জেলা বিচার বিভাগীয় কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশন আদালতের সব এজলাসের দরজা ও প্রধান ফটকে তালা দিয়ে এক দিনের কর্মবিরতি পালন করে। এর প্রতিবাদে ৫ জানুয়ারি আইনজীবীরা সাধারণ সভা করে তিন কার্যদিবসের কর্মবিরতির ডাক দেন। পরে এটি বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বাড়ানো হয়। গত সপ্তাহের বুধবার থেকে আজ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত টানা সাত কার্যদিবস আদালতে বিচারিক কার্যক্রম বন্ধ আছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
অনলাইন ডেস্ক :
আজ ২৮ জুলাই শুক্রবার এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়। প্রকাশিত ফলাফলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার ৫৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৫৯৯৪ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৪৯৩৮ জন পরীক্ষার্থী এস.এস.এসসি ও সমমান পরীক্ষায় পাশ করেছে। এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪৯২জন শিক্ষার্থী। ৫৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা শতভাগ পাশ করেছে।
সদর উপজেলার ৫৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে ৪৪টি উচ্চ বিদ্যালয়, ১০টি দাখিল মাদরাসা ও ১টি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সদর উপজেলার ৪৪টি উচ্চ বিদ্যালয়ের ৫৬২৬ জন শিক্ষার্থী এস.এস.সি পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে ৪৫৬০জন শিক্ষার্থী পাশ করেছে। এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪৭৪জন পরীক্ষার্থী।
উপজেলার ১০টি দাখিল মাদ্রাসা থেকে ৫৪২ জন পরীক্ষার্থী দাখিল পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে ২৩০ জন শিক্ষার্থী পাশ করেছে। এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১১জন।
সদর উপজেলার একমাত্র টেকনিক্যাল স্কুল ব্রাহ্মণবাড়িয়া টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজে থেকে ২২৬ জন পরীক্ষার্থী এস.এস.সি টেকনিক্যাল পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে ১৪৮জন পাশ করেছে। এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৭জন শিক্ষার্থী।
ফলাফল ঘেঁটে দেখা যায় সদর উপজেলার উইজডম স্কুল এন্ড কলেজ ও বিয়াম ল্যাবরেটরী স্কুলের শিক্ষার্থীরা শতভাগ পাশ করেছে। উইজডম স্কুল এন্ড কলেজ থেকে ৭৮জন শিক্ষার্থী এস.এস.সি পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে ৭৮জনই পাশ করেছে। এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১০জন শিক্ষার্থী।
বিয়াম ল্যাবরেটরী স্কুল থেকে ৫জন শিক্ষার্থী এস.এস.সি পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে ৫জনই পাশ করেছে। এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ২জন শিক্ষার্থী।
এদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঐতিহ্যবাহী অন্নদা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় জিপিএ-৫-এর দিক থেকে বরাবরের মতো এবারো তাদের শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রেখেছে।
অন্নদা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ৩৫৩জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে ৩৪৯জন শিক্ষার্থী পাশ করেছে। এই বিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৭৪জন শিক্ষার্থী।
সাবেরা সোবহান সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ৩৩৭জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে ৩২৮জন শিক্ষার্থী পাশ করেছে। এই বিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১০৬ জন শিক্ষার্থী।
গভঃ মডেল গার্লস হাই স্কুল থেকে ২০৪জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে ২০০জন শিক্ষার্থী পাশ করেছে। এই বিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৯৭ জন শিক্ষার্থী।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২১৩জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে ১৯৪জন শিক্ষার্থী পাশ করেছে। এই বিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ২৫জন শিক্ষার্থী।
বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস স্কুল এন্ড কলেজ থেকে ২৯২জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে ২৭৮জন শিক্ষার্থী পাশ করেছে। এই বিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪৪ জন শিক্ষার্থী।
নিয়াজ মুহম্মদ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ৪৫৬জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে ৪২৭জন শিক্ষার্থী পাশ করেছে। এই বিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩৩ জন শিক্ষার্থী।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেসিডেন্সিয়াল মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ১৭০জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে ১৬৯জন শিক্ষার্থী পাশ করেছে। এই বিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ২০জন শিক্ষার্থী।
চিনাইর আঞ্জুমান আরা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৩ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে ১৭৪ জন শিক্ষার্থী পাশ করেছে। এই বিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৫জন শিক্ষার্থী।
আইডিয়াল রেসিডেন্সিয়াল স্কুল এন্ড কলেজ থেকে ১১৭জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে ১০২জন শিক্ষার্থী পাশ করেছে। এই বিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৬ জন শিক্ষার্থী।
অষ্টগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১২১জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে ৭৮জন শিক্ষার্থী পাশ করেছে। এই বিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪জন শিক্ষার্থী।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৮৭জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে ১৪১জন শিক্ষার্থী পাশ করেছে। এই বিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৯ জন শিক্ষার্থী।
আনন্দময়ী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২৬০জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে ২১৯জন শিক্ষার্থী পাশ করেছে। এই বিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৯ জন শিক্ষার্থী।
বুধল উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৪৫জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে ১০১জন শিক্ষার্থী পাশ করেছে। এই বিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪ জন শিক্ষার্থী।
রামকানাই হাই একাডেমি থেকে ৪৯জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে ৩২জন শিক্ষার্থী পাশ করেছে। এই বিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১জন শিক্ষার্থী।
লায়ন ফিরোজুর রহমান উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১১০জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে ৬৪জন শিক্ষার্থী পাশ করেছে। এই বিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ শিক্ষার্থী।
অন্বেষা বিদ্যাপীঠ (স্কুল এন্ড কলেজ) থেকে ২২জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে ২০জন শিক্ষার্থী পাশ করেছে।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার জীবন ভট্টাচার্য বলেন, এ বছর আমাদের রেজাল্ট আশানুরুপ হয়নি। জেলায় জিপিএ-৫-এর দিক থেকে অন্নদা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ভালো করেছে। আগামীতে যাতে ফলাফল সন্তোষজনক হয় সেদিকে আমরা খেয়াল রাখবো।
অনলাইন ডেস্ক :
একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত সংগঠনগুলোর বিচার প্রসঙ্গে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেছেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হয়েছে, কিন্তু সংগঠনের বিচার এখনো হয়নি। আমার মনে হয় সেটাও সম্ভব যদি আমরা চিন্তা করি। কিন্তু মুশকিলটা হলো, এখনো বিভ্রান্ত করার সুযোগ রয়ে গেছে, অনেক মানুষ বিভ্রান্ত হচ্ছে। আমাদের দায়িত্ব হলো তরুণ প্রজন্মের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো।’
আজ ৯ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার রাজধানীর জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে অধ্যাপক কবীর চৌধুরী স্মারক বক্তৃতা ও আলোচনাসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই মন্তব্য করেন। প্রয়াত জাতীয় অধ্যাপক কবীর চৌধুরীর জন্মদিন উপলক্ষে এই স্মারক বক্তৃতা ও আলোচনাসভার আয়োজন করে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি।
অধ্যাপক কবীর চৌধুরী সম্পর্কে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আমি প্রথমত তাঁকে চিনেছি আমাদের সাহিত্য, সংস্কৃতি ও সমাজে অসামান্য অবদানের জন্য। দ্বিতীয়ত, একাত্তরের যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তীকালে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির ব্যানারে নাগরিক আন্দোলনের সংগঠক ও সক্রিয় কর্মী হিসেবে অসামান্য অবদানের কারণে।’
ওবায়দুল হাসান বলেন, ‘সব ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করে স্বাধীন বাংলাদেশের যুদ্ধপদ্ধতির বিচার হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের এক ও দুইয়ে আজ পর্যন্ত ৫৫টি মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে। এই বিচারকাজে বাকি চ্যালেঞ্জগুলোও জয় করা (ওভারকাম) সম্ভব। সে জন্য ক্রমাগত চাপ ও দাবি অব্যাহত রাখতে হবে।’
যুদ্ধাপরাধীদের চলমান বিচারে ট্রাইব্যুনালের জনবলসংকটকে ‘প্রাথমিক চ্যালেঞ্জ’ উল্লেখ করে ১৯৭১ : গণহত্যা-নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘর ট্রাস্টের সভাপতি ইতিহাসবিদ অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন বলেন, ‘যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু হওয়ার পর প্রায় ১৩ বছর পার হয়ে গেছে। প্রসিকিউশন ও তদন্ত সংস্থার কেউ কেউ মারা গেছেন, অনেকের বয়স হয়েছে। এখন প্রসিকিউশন ও তদন্ত সংস্থায় নতুন করে সদস্য নিয়োগ দেওয়া না হয়, তাহলে এই বিচারকাজ চালু রাখা একটা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে।’
মুনতাসীর মামুন বলেন, ‘এখনো মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী শক্তি অধ্যাপক কবীর চৌধুরী ও আমাদের বিরুদ্ধে অনলাইনে নানা রকম বিষোদগার করছে। বিটিসিএলের উচিত এসব ভিডিও সরিয়ে দেওয়া।’
একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সহসভাপতি শিক্ষাবিদ শহীদ জায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী অধ্যাপক কবীর চৌধুরীকে শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, ‘যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ক্ষেত্রে আমরা সবাই ন্যায়বিচার পাইনি। যেটুকু পেয়েছি তাতে আমরা সন্তুষ্ট। আমার স্বামীকে (শহীদ ডা. আবদুল আলীম চৌধুরী) নির্মমভাবে হত্যা করেছে আলবদররা। কিন্তু আলবদরের মতো সংগঠনগুলোর বিচার তো হয়নি। তাহলে আমি কি ন্যায়বিচার পেয়েছি? এই দুঃখ আমাদের আছে।’
অধ্যাপক কবীর চৌধুরী স্মারক বক্তৃতায় বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তাপস কান্তি বল বলেন, ‘বর্তমানে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে একটি ট্রাইব্যুনালে ৩০টি মামলার কার্যক্রম চলমান রয়েছে এবং একটি মামলা রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রয়েছে। এই মামলাগুলোতে আনুমানিক ২০০ জন অভিযুক্ত আসামি রয়েছেন। এই মামলাগুলোতে সাক্ষ্য প্রদান করবেন ২০০ থেকে ২৫০ সাক্ষী। তদন্ত সংস্থার কাছে আরো ৫০০ থেকে ৬০০ মামলা তদন্তের জন্য অপেক্ষমাণ রয়েছে। আসামি এবং সাক্ষী সবারই বয়স ৭০-এর বেশি। প্রাকৃতিক নিয়মেই হয়তো আর তিন-চার বছর পর এদের কাউকেই আমরা বিচারের জন্য পাব না। তাই দুটি বা প্রয়োজনে তিনটি ট্রাইব্যুনাল করে অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে চলমান মামলাগুলো নিষ্পন্ন করা প্রয়োজন।’
একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি লেখক সাংবাদিক শাহরিয়ার কবির সভাপতির বক্তব্যে বলেন, ‘যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এবং জামায়াতে ইসলামীর মৌলবাদী-সাম্প্রদায়িক রাজনীতি নিষিদ্ধকরণের দাবিতে ৩২ বছর আগে শহীদ জননী জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে যে অভূতপূর্ব নাগরিক আন্দোলন সূচিত হয়েছিল, এর প্রধান নেতাদের অন্যতম অধ্যাপক কবীর চৌধুরী।’
একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির আইন সম্পাদক ব্যারিস্টার নাদিয়া চৌধুরী বলেন, ‘স্কুলের পাঠ্যপুস্তকে হিজড়াদের গল্প একটি নিয়ে বিতর্ক থেকে শুরু করে ধারাবাহিকভাবে মন্দির ভাঙচুরের মাধ্যমে আমাদের এই দেশে মৌলবাদের যে একটি ক্রমবর্ধমান উত্থান ঘটছে তা সহজেই অনুমেয়। কিন্তু আমরা এই দেশ গড়েছিলাম মূলত ধর্মনিরপেক্ষতা, জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র ও সমাজতন্ত্রের মূলনীতির ভিত্তিতে। আমাদের মধ্যে যারা এখনো এই নীতিগুলোকে ধারণ করেন তারা কবীর চৌধুরীর মতো ব্যক্তিত্বকে খুঁজে ফেরেন অনুপ্রেরণার আশায়।’
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সহযোগিতায় ও এনজিও সংস্থা প্রয়াসের আয়োজনে কুষ্ঠরোগ প্রতিরোধ ও আরোগ্য লাভে জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে সাংবাদিকদের দিনব্যাপী কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ ৩০ এপ্রিল মঙ্গলবার সকাল ১১টায় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এই কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। কর্মশালায় কুষ্ঠরোগের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন সিভিল সার্জন কার্যালয়ের ডিস্ট্রিক সার্ভিল্যান্স মেডিকেল অফিসার মফিজুর রহমান ফিরোজ। ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোঃ জসীম উদ্দিনের সভাপতিত্বে ও এনজিও সংস্থা প্রয়াসের টেকনিক্যাল সাপোর্ট অফিসার জুয়েল খিয়াংয়ের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত কর্মশালায় জানানো হয়, প্রাথমিক পর্যায়ে কুষ্ঠরোগ সনাক্ত করে চিকিৎসা নিশ্চিত করা হলে শারীরিক ক্ষতির পরিমান কমে আসে। দেশের সরকারি হাসপাতালগুলোতে বিনামূল্যে কুষ্ঠরোগীর চিকিৎসা দেয়া হয়ে থাকে। তাই শরীরে অনুভূতিহীন যেকোন ফ্যাকাসে দাগ হলে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। এছাড়াও কর্মশালায় কুষ্ঠরোগ প্রতিরোধে সুষম ও পুষ্টিকর খাবার গ্রহনের পাশাপাশি কুষ্ঠরোগ থেকে মুক্তি পেতে বিভিন্ন করণীয় বিষয় তুলে ধরা হয়।
কর্মশালায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কর্মরত বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকগণসহ এনজিও সংস্থা প্রয়াসের ফিল্ড ফ্যাসেলেটেটর মোঃ আরিফুর রহমানসহ উপস্থিত ছিলেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সদর উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উদ্যোগে ক্যান্সার, কিডনী, লিভার সিরোসিস, স্ট্রোক প্যারালাইজড, জন্মগত হৃদরোগ ও থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত ১২৩ জন রোগীর মধ্যে এককালীন অনুদানের চেক বিতরণ করা হয়েছে।
আজ ১৪ জুলাই শুক্রবার বেলা ১১টায় সদর উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গনে প্রধান অতিথি হিসেবে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি র.আ.ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী ১২৩ জন রোগীর প্রত্যেকের হাতে ৫০ হাজার টাকার অনুদানের চেক তুলে দেন।
সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ সেলিম শেখ ও সদর উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মোঃ নূরুল মাহমুদ ভূইয়ার সঞ্চালনায় চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান লায়ন ফিরোজুর রহমান ওলিও, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট লোকমান হোসেন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শামীমা আক্তার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোঃ বাহারুল ইসলাম মোল্লা, সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম ভূঁইয়া। বক্তব্য রাখেন ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আবদুর রশীদ ভূঁইয়া ও আল আমিনুল হক পাভেল।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে র.আ.ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানবতার মা। তিনি দেশের প্রতিটি সেক্টরে অভাবনীয় উন্নয়ন করেছেন। তিনি সাধারণ মানুষের জীবনমানের উন্নয়নের জন্য নিরলসভাবে কাজ করছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে অসহায় মানুষকে জায়গাসহ ঘর নির্মান করে দিচ্ছেন। করোনাকালে অসহায় মানুষের ঘরে ঘরে খাদ্য সামগ্রী পৌছে দিয়েছেন। বছরের প্রথম দিন শিক্ষার্থীদের হাতে বিনামূল্যে নতুন বই তুলে দেয়া সহ, বিধবা ভাতা, মাতৃদুগ্ধভাতা, স্বামী পরিত্যক্তাদের ভাতাসহ প্রতিবন্ধীদেরকে ভাতার আওতায় এনেছেন। শুধু তাই নয় তিনি ক্যান্সার, কিডনী, লিভার সিরোসিস, স্ট্রোক প্যারালাইজড, জন্মগত হৃদরোগ ও থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য অনুদান দিচ্ছেন।
তিনি বলেন, আগের কোন সরকারের আমলে মানুষ এতো ভাতা পেয়েছেন কিনা জানিনা, তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একজন মমতাময়ী মা, তাই তিনি সকলের খবর রাখেন। তিনি কঠিন রোগে আক্রান্তদের পাশে দাড়িয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ উদ্যোগে প্রত্যেক রোগীকে ৫০ হাজার টাকা করে দেয়া হচ্ছে।
মোকতাদির চৌধুরী এমপি বলেন, আগের সরকারের আমলে নেতারা নিজেদের ভাগ্যের উন্নয়ন করেছেন, কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের উন্নয়নে, মানুষের কল্যাণে কাজ করছেন।
আলোচনা সভা শেষে প্রধান অতিথি র.আ.ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী ১২৩ জন রোগীর প্রত্যেকের হাতে ৫০ হাজার টাকার অনুদানের চেক তুলে দেন।