অনলাইন ডেস্ক :
সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) বাংলাদেশের জ্বালানি খাতে বিশেষ করে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগে আগ্রহ দেখিয়েছে। সফররত সংযুক্ত আরব আমিরাতের শিল্প ও উন্নত প্রযুক্তি মন্ত্রী ড. সুলতান আহমেদ আল জাবের আজ ২০ জুলাই বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে এ আগ্রহ প্রকাশ করেন।
বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎকালে আমিরাতের মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা প্রচলিত জ্বালানির পাশাপাশি জ্বালানি খাতে বিশেষ করে নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রতি খুবই আগ্রহী।’
জ্বালানি কোম্পানি মাসদার-এর চেয়ারম্যান এবং আবুধাবি ন্যাশনাল অয়েল কোম্পানির (এডিএনওসি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. সুলতান আহমেদ বলেন, তারা সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে বাংলাদেশে দুটি দল পাঠাবেন‒ একটি নবায়নযোগ্য জ্বালানি নিয়ে আলোচনার জন্য এবং অন্যটি ব্যবসা নিয়ে আলোচনার জন্য। বৈঠকে তারা মূলত অর্থনৈতিক সহযোগিতাসহ জলবায়ু পরিবর্তন ও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করেন।
আমিরাতের জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক বিশেষ দূত এবং ২৮তম কনফারেন্স অব দ্য পার্টিস (কপ২৮) এর মনোনীত প্রেসিডেন্ট ড. সুলতান আহমেদ জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করেন এবং এ বিষয়ে তাঁর আরো সমর্থন কামনা করেন।
তিনি প্রধানমন্ত্রীকে জলবায় পরিবর্তন ও খাদ্য নিরাপত্তা ইস্যুতে সহায়তা বাড়ানোরও অনুরোধ করেন। ‘আমরা একটি গেম চেঞ্জার হতে চাই’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারা কপ২৮ এর আগে সমস্যা সমাধানের জন্য জলবায়ু তহবিল সংগ্রহের ওপর জোর দিচ্ছেন। এরপর তিনি সংযুক্ত আরব আমিরাতকে সবুজ করা হচ্ছে উল্লেখ করে বলেন, তারা সংযুক্ত আরব আমিরাতের কপ২৮ থেকে একটি ইতিবাচক প্রভাব পেতে চান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কপ২৮ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এই সম্মেলনে প্যারিস চুক্তির বৈশ্বিক স্টকটেক নিয়ে আলোচনা হবে। তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করি, ইউএই প্রেসিডেন্সি ১.৫ ডিগ্রি তাপমাত্রা বজায় রাখার জন্য বিশ্বব্যাপী জলবায়ু কর্মপন্থাকে ত্বরান্বিত করার ক্ষেত্রে অগ্রগতি এবং তার পাশাপাশি বিশাল ব্যবধানের একটি বাস্তবসম্মত মূল্যায়ন করতে সহায়তা করবে। বাংলাদেশ ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের কথা বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের মধ্যে অনেক বিষয়ে মিল রয়েছে।’
এ সময় প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর অ্যাম্বাসেডর অ্যাট-লার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ এবং বাংলাদেশে সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রদূত আবদুল্লাহ আলী আল হামুদি উপস্থিত ছিলেন।
সূত্র : বাসস
অনলাইন ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খ্রিষ্টীয় নতুন বছর উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেছেন, ‘আজ আমরা যে সময়কে পেছনে ফেলে নতুন দিনের আলোয় উদ্ভাসিত হতে যাচ্ছি, সে সময়ের যাবতীয় অর্জন আমাদের সম্মুখ যাত্রার শক্তিশালী সোপান হিসেবে কাজ করছে। তাই নতুন বছরের এই মাহেন্দ্রক্ষণ সকল চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে নতুন নতুন সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে উন্নতির নতুন শিখরে আরোহণের সোপান রচনা করার অনুপ্রেরণা।’
খ্রিষ্টীয় নতুন বছর-২০২৪ উপলক্ষে আজ ৩১ ডিসেম্বর রবিবার দেয়া এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। শেখ হাসিনা বলেন, ‘নতুন বছরে মানুষে-মানুষে সম্প্রীতি, সৌহার্দ্য ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধন আরো জোরদার হোক, সকল সংকট দূরীভূত হোক, সকল সংকীর্ণতা পরাভূত হোক এবং সকলের জীবনে আসুক অনাবিল সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি এই প্রার্থনা করি।’
২০২৩ সাল বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়নের এক স্বর্ণযুগ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা গত ২০২২ সালের ২৫ জুন নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত পদ্মাসেতু উদ্বোধনের পর ২০২৩ সালের ১০ অক্টোবর সেতুতে রেল যোগাযোগের শুভ উদ্বোধন করেছি। ২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর উত্তরা-আগারগাঁও রুটে মেট্রোরেল চালুর পর ২০২৩ সালের ৪ নভেম্বর মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল সেবা সম্প্রসারণ করেছি।’
আমাদের অন্যান্য মেগা ও মাঝারিসহ সকল অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর কাজও পুরোদমে এগিয়ে যাচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘২ সেপ্টেম্বর ঢাকায় প্রথম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে চালু করেছি। ৫ অক্টোবর রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে জ্বালানি সরবরাহ করেছি। ফলে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার তৃতীয় পারমাণবিক জ্বালানি ব্যবহারকারী রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। ৭ অক্টোবর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল এবং ১৯ অক্টোবর দেশের ৩৯টি জেলায় ১৫০টি সেতু এবং ১৪টি ওভারপাস একসাথে উদ্বোধন করেছি। ২৮ অক্টোবর দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে প্রথম চট্টগ্রামে কর্ণফুলি নদীর তলদেশে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল’ যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দিয়েছি। ১১ নভেম্বর দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথ উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে ঢাকা-কক্সবাজার সরাসরি রেল চালু করেছি।’
শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার সবসময় নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কাজ করে। আমরা ২০০৮ সালের নির্বাচন হতে পরপর তিন দফা জনগণের ভোটে জয়ী হয়ে গত ১৫ বছরে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের প্রতিটি ক্ষেত্রেই অভূতপূর্ব অগ্রগতি সাধন করেছি।
তিনি বলেন, করোনা ভাইরাস মহামারির কারণে বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশের অর্থনীতিও কিছুটা মন্থর হয়েছিল। সেই ধাক্কা সামলে উঠতে না উঠতে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ এবং অর্থনৈতিক অবরোধ ও পাল্টা অবরোধ সারা পৃথিবীতে নিরীহ মানুষের জন্য কষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা এরই মধ্যে ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরাইলের আগ্রাসন বন্ধের আহ্বান জানিয়েছি। আমরা যুদ্ধ চাই না, শান্তি চাই।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারই দেশের যেকোনো সংকট আলোচনার মাধ্যমে শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান করার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। আমরা প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতের সাথে ছিটমহল বিনিময় করেছি। মিয়ানমারে গণহত্যা থেকে আত্মরক্ষার্থে পালিয়ে আসা প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দিয়েছি। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে দেশের ৩৩টি জেলাকে ভূমিহীন-গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করেছি। শতভাগ মানুষকে বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় নিয়ে এসেছি। প্রায় ১৮ হাজার ৫০০ কমিউনিটি ক্লিনিক ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্যসেবা ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র থেকে বিনামূল্যে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা এবং বিনামূল্যে ৩০ প্রকারের ঔষধ দিচ্ছি। ২ কোটি ১০ লাখ কৃষককে কৃষি উপকরণ সহায়তা কার্ড প্রদান করেছি। ২ কোটি ৫৩ লাখ শিক্ষার্থীকে বৃত্তি-উপবৃত্তি দিচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০২৩ সালের ১৭ আগস্ট চারটি ক্যাটেগরিতে ১০ কোটি মানুষের জন্য সার্বজনীন পেনশন চালু করেছি। আওয়ামী লীগ সরকার ২০১০ সাল থেকে বছরের প্রথম দিন ছাত্রছাত্রীদের হাতে বিনামূল্যে বই পৌঁছে দিচ্ছে। এই বই উৎসব বাংলাদেশে ইংরেজি নববর্ষ উদ্যাপনের ক্ষেত্রেও এক নতুন মাত্রা যুক্ত করেছে।
‘বাংলাদেশ ব-দ্বীপ পরিকল্পনা-২১০০’ বাস্তবায়ন শুরু করেছি জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছি, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের উপযোগী দক্ষ জনসম্পদ সৃষ্টি করছি এবং গ্রামীণ অর্থনীতিকে শক্তিশালী করছি। ২০২১ সালে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপনের সময় জাতিসংঘ বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশ ঘোষণা করেছে। আমরা ২০৩১ সালের মধ্যে উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ শুরু করে দিয়েছি।
শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারে থাকলেই দেশের উন্নয়ন হয় এবং জনগণের মঙ্গল হয়। কারণ, একমাত্র আওয়ামী লীগই স্বাধীনতার সুমহান আদর্শকে ধারণ করে নিবেদিতপ্রাণ হয়ে দেশ ও মানুষের জন্য কাজ করে।
দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আসুন আমরা মানুষের সার্বিক কল্যাণে আত্মনিয়োগ করি, অগ্নিসন্ত্রাস প্রতিহত করে মানুষের জানমাল ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষা করি এবং সর্বোপরি গণতন্ত্র ও উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর স্বপ্নের অসাম্প্রদায়িক ‘সোনার বাংলাদেশ’ গড়ে তুলি।
শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের মহান নেতা সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর নেতৃত্বে রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে পাকিস্তানিদের পরাজিত করে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর আমরা বিজয় অর্জন করি। স্বাধীনতা অর্জনের পর মাত্র নয় মাসেই তিনি আমাদের একটি সংবিধান উপহার দিয়েছিলেন।
তিনি বলেন, ১৯৭৩ সালের ৭ মার্চ সংবিধান অনুযায়ী স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল এবং ৭ এপ্রিল প্রথম অধিবেশন বসেছিল। ২০২৩ সালের ৬ এপ্রিল মহান জাতীয় সংসদের ৫০ বছরপূর্তি উদ্যাপন উপলক্ষ্যে ২২তম/বিশেষ অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেই অধিবেশনে আমাদের মহান নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, শূন্য হাতে সদ্যস্বাধীন দেশকে যুদ্ধের ধ্বংসাবশেষ থেকে টেনে তুলেছিলেন। তখন ব্যাংকে কোন রিজার্ভ মানি ছিল না, কোনো কারেন্সি নোট ছিল না। সেই অবস্থায় গণতন্ত্রের মজবুত ভিত প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তিনি জাতীয় নির্বাচনের আয়োজন করেছিলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জন করেছিল। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সরকার গঠনের পর ১৯৭৩ সালের ১ জুলাই থেকে প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলেন। মাত্র সাড়ে তিন বছরেই তিনি বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশে উন্নীত করেছিলেন এবং জাতিসংঘ সেই স্বীকৃতি দিয়েছিল।বাসস
চলারপথে রিপোর্ট :
লক্ষ্মীপুর সদরে আম পাড়তে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মো. রাকিব হোসেন নামে এক মাদরাসা শিক্ষকের মৃত্যু হয়েছে। আজ ৯ এপ্রিল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার মান্দারি ইউনিয়ন ৯ নম্বর ওয়ার্ডের গন্ধ্যব্যপুর আতর আলি ভূঁইয়া বাড়ি জামে মসজিদ মাদরাসার ছাদে এ দুর্ঘটনা ঘটে। তিনি ওই মসজিদের ইমাম ও মাদ্রাসার শিক্ষক ছিলেন। কুশাখালি ইউনিয়নের মিডাইর খিল গ্রামের ইলিয়াস মৌলভি সাহেবের বাড়ির নুর আলমের ছেলে তিনি।
স্থানীয়রা জানায়, শিক্ষক রাকিব হোসেন গাছ থেকে আম পাড়ার জন্য মাদ্রাসার চাদের উপর উঠেন। চাদের উপর দিয়ে একটি হাই ভোল্টেজের বিদ্যুতের লাইন ছিল। আম পাড়তে গিয়ে অসাবধানতাবসত তিনি বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। এতে সেখানেই মারা যান তিনি। মান্দারি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন রুবেল পাটওয়ারী দুর্ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
নোয়াখালীর সুবর্ণচরে মসজিদের ছাদে পাতা কুড়াতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। আজ ২৫ সেপ্টেম্বর সোমবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার হাজীপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলো- উপজেলার পূর্ব চরবাটা ইউনিয়নের হাজীপুর গ্রামের হোসেন সর্দার বাড়ির মোহাম্মদ ফারুক হোসেনের ছেলে ও ছমির হাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র মো. জিসান (১০) এবং একই গ্রামের আবু তাহেরের ছেলে ও চরবাটা ইসমাইলিয়া ফাজিল মাদরাসার ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র রাহাত হোসেন (১২)।
স্থানীয় ইউপি সদস্য জামাল উদ্দিন জানান, নিহত দুই শিশু সম্পর্কে মামা-ভাগ্নে ছিল। তারা একই বাড়িতে পাশাপাশি ঘরে থাকত। সকালে তারা মক্তবে পড়তে যাওয়ার উদ্দেশ্যে ঘর থেকে বের হয়। কিন্তু তারা মক্তবে না গিয়ে সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ৩ জন শিক্ষার্থী মিলে গাছের পাতা কুড়াতে গাছ বেয়ে স্থানীয় হাজীপুর গ্রামের আস্তানার জামে মসজিদের ছাদে উঠে। ওই সময় মসজিদের ছাদের পাশ দিয়ে যাওয়া পল্লী বিদ্যুতের ১১ হাজার ভোল্টের বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে শিশু জিসান ও রাহাত গুরুতর আহত হয়। একপর্যায়ে তারা নিচে পড়ে গেলে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে সুবর্ণচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
চরজব্বর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ুন কবির বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। নিহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ না থাকায় পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে মৃতদেহ তাদের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
চট্টগ্রাম নগরের আগ্রাবাদের আমেরিকান হাসপাতাল এলাকায় অভিযান চালিয়ে বিক্রয় নিষিদ্ধ বিপুল পরিমাণ অনিবন্ধিত ওষুধ জব্দ করেছেন জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত। অভিযানে হাসপাতালের প্রধান ফটকের সামনে থাকা মা ফার্মেসি, মা মেডিকেয়ার এবং স্বাগতা ফার্মেসি থেকে চীন, ভারতসহ বিভিন্ন দেশের বিক্রয় নিষিদ্ধ প্রায় ৬ লাখ টাকার অনিবন্ধিত ওষুধ জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় তিন ফার্মেসিকে ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
আজ ১৯ জুন সোমবার অনিয়মের অভিযোগ পেয়ে কেন্দ্রীয় চর্ম ও সামাজিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে (আমেরিকান হাসপাতাল) যৌথ অভিযান চালায় জেলা প্রশাসন ও ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর।
অভিযানে নেতৃত্ব দেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রতীক দত্ত। তিনি জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাঁরা পিলে চমকানোর মতো তথ্য-প্রমাণ পেয়েছেন। আমেরিকান হাসপাতালের পাশে থাকা তিনটি ফার্মেসি থেকে তাঁরা বিপুল পরিমাণ বিক্রয় নিষিদ্ধ ওষুধ জব্দ করেছেন। এ অপরাধে প্রত্যেক ফার্মেসিকে ২০ হাজার করে জরিমানা করা হয়েছে। পাশাপাশি প্রতিষ্ঠান-সংশ্লিষ্টদের সতর্কও করা হয়েছে। তবে ফার্মেসি মালিকদের অভিযোগ, হাসপাতালের চিকিৎসকরাই অনিবন্ধিত ওষুধ রোগীদের ব্যবস্থাপত্রে লেখেন।
প্রতীক দত্ত জানান, অভিযানের সময় তাঁরা হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা বেশ কয়েকজন রোগীর সঙ্গে কথা বলেন। তাঁরা জানিয়েছেন, হাসপাতালের চিকিৎসকরাই এসব বিক্রয় নিষিদ্ধ ওষুধগুলো লেখেন। এসব ওষুধ কেবল এখানকার কয়েকটি ফার্মেসি ছাড়া বাইরে পাওয়া যায় না।
তিনি বলেন, ‘রোগীদের দেওয়া ব্যবস্থাপত্রে সরকারি হাসপাতালের স্লিপে বিভিন্ন অনিবন্ধিত ওষুধ লেখার প্রমাণও পেয়েছি আমরা। বিক্রয় নিষিদ্ধ এসব ওষুধ বিক্রি বাবদ চিকিৎসকরা মোটা অঙ্কের কমিশন পান বলে ফার্মেসি মালিকরা জানিয়েছেন। এ ছাড়া হাসপাতালের সব রোগীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা পাশের মেডিলিভ নামক ল্যাবে করানোর জন্য চিকিৎসকরা পরামর্শ দেন।’
ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক এসএম সুলতানুল আরেফীন বলেন, অভিযানে জব্দ করা ওষুধগুলো ঔষধ প্রশাসনের নিবন্ধিত নয়। এসব ওষুধ কোনো ফার্মেসিতে বিক্রি করা যাবে না ও ডাক্তাররাও সেগুলো ব্যবস্থাপত্রে লিখতে পারবে না বলে আইনে উল্লেখ আছে। সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকদের এমন আচরণ চরম উদ্বেগের।
হাসপাতালের একজন সিনিয়র কনসালট্যান্ট বলেন, হাসপাতালকে ঘিরে দালালরা উঠেপড়ে লেগেছে। কয়েকজনকে এরই মধ্যে বেরও করে দেওয়া হয়েছে। এরা আগে রোগীদের হয়রানি করে বেনামি কিছু ক্রিম বিক্রি করে বাড়তি টাকা হাতিয়ে নিত। এরাই অনিবন্ধিত ওষুধ বিক্রির সঙ্গে জড়িত।