স্টাফ রিপোর্টার : আজ ২১ জানুয়ারি শনিবার বিকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর শহরের পশ্চিম মেড্ডা বড় বাড়ি এলাকার সবুজ আলীর বাসা থেকে শিরিনা বেগম (৬০) নামে এক বৃদ্ধার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তিনি সবুজ আলীর স্ত্রী। ভাড়াটিয়া আমিনকে (২৬) পিটুনির পর পুলিশে দিয়েছে এলাকাবাসী।
শিরিনার ছেলে মোশাররফ হোসেন বলেন, আমাদের বসবাস করা একটি বাড়ি ছাড়াও পাশে আরো একটি বাড়ি ভাড়া দেওয়া আছে। সেখানে তিনটি ঘরে আলাদা ভাড়াটিয়ারা বসবাস করেন। বেলা ১১টার দিকে মা সে বাসার ভাড়া তুলতে যান। এরপর বিভিন্ন জায়গায় খুঁজেও মাকে পাওয়া যাচ্ছিল না। বিকেলে ভাড়াটিয়া আমিন মিয়ার ঘরে খুঁজে খাটের নিচে দেখি মা অচেতন অবস্থায় পড়ে আছেন। তাকে হাসপাতালে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জরুরী বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক এনামুল হক বলেন, শিরিনা বেগম হাসপাতালে আনার আগেই মারা গেছেন। তার মরদেহ মর্গে রাখা আছে।
এ বিষয়ে সদর মডেল থানার ওসি এমরানুল ইসলাম বলেন, মরদেহ হাসপাতাল মর্গে রাখা আছে। এলাকাবাসীর পিটুনিতে আহত আমিনকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। নিহত শিরিনের গলায় দাগ আছে। ধারণা করা হচ্ছে গলায় ফাঁস দিয়ে তাকে হত্যা করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি চলছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
অনলাইন ডেস্ক :
আজ ২৮ জুলাই শুক্রবার এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়। প্রকাশিত ফলাফলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার ৫৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৫৯৯৪ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৪৯৩৮ জন পরীক্ষার্থী এস.এস.এসসি ও সমমান পরীক্ষায় পাশ করেছে। এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪৯২জন শিক্ষার্থী। ৫৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা শতভাগ পাশ করেছে।
সদর উপজেলার ৫৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে ৪৪টি উচ্চ বিদ্যালয়, ১০টি দাখিল মাদরাসা ও ১টি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সদর উপজেলার ৪৪টি উচ্চ বিদ্যালয়ের ৫৬২৬ জন শিক্ষার্থী এস.এস.সি পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে ৪৫৬০জন শিক্ষার্থী পাশ করেছে। এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪৭৪জন পরীক্ষার্থী।
উপজেলার ১০টি দাখিল মাদ্রাসা থেকে ৫৪২ জন পরীক্ষার্থী দাখিল পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে ২৩০ জন শিক্ষার্থী পাশ করেছে। এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১১জন।
সদর উপজেলার একমাত্র টেকনিক্যাল স্কুল ব্রাহ্মণবাড়িয়া টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজে থেকে ২২৬ জন পরীক্ষার্থী এস.এস.সি টেকনিক্যাল পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে ১৪৮জন পাশ করেছে। এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৭জন শিক্ষার্থী।
ফলাফল ঘেঁটে দেখা যায় সদর উপজেলার উইজডম স্কুল এন্ড কলেজ ও বিয়াম ল্যাবরেটরী স্কুলের শিক্ষার্থীরা শতভাগ পাশ করেছে। উইজডম স্কুল এন্ড কলেজ থেকে ৭৮জন শিক্ষার্থী এস.এস.সি পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে ৭৮জনই পাশ করেছে। এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১০জন শিক্ষার্থী।
বিয়াম ল্যাবরেটরী স্কুল থেকে ৫জন শিক্ষার্থী এস.এস.সি পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে ৫জনই পাশ করেছে। এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ২জন শিক্ষার্থী।
এদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঐতিহ্যবাহী অন্নদা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় জিপিএ-৫-এর দিক থেকে বরাবরের মতো এবারো তাদের শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রেখেছে।
অন্নদা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ৩৫৩জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে ৩৪৯জন শিক্ষার্থী পাশ করেছে। এই বিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৭৪জন শিক্ষার্থী।
সাবেরা সোবহান সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ৩৩৭জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে ৩২৮জন শিক্ষার্থী পাশ করেছে। এই বিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১০৬ জন শিক্ষার্থী।
গভঃ মডেল গার্লস হাই স্কুল থেকে ২০৪জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে ২০০জন শিক্ষার্থী পাশ করেছে। এই বিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৯৭ জন শিক্ষার্থী।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২১৩জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে ১৯৪জন শিক্ষার্থী পাশ করেছে। এই বিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ২৫জন শিক্ষার্থী।
বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস স্কুল এন্ড কলেজ থেকে ২৯২জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে ২৭৮জন শিক্ষার্থী পাশ করেছে। এই বিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪৪ জন শিক্ষার্থী।
নিয়াজ মুহম্মদ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ৪৫৬জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে ৪২৭জন শিক্ষার্থী পাশ করেছে। এই বিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩৩ জন শিক্ষার্থী।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেসিডেন্সিয়াল মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ১৭০জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে ১৬৯জন শিক্ষার্থী পাশ করেছে। এই বিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ২০জন শিক্ষার্থী।
চিনাইর আঞ্জুমান আরা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৩ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে ১৭৪ জন শিক্ষার্থী পাশ করেছে। এই বিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৫জন শিক্ষার্থী।
আইডিয়াল রেসিডেন্সিয়াল স্কুল এন্ড কলেজ থেকে ১১৭জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে ১০২জন শিক্ষার্থী পাশ করেছে। এই বিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৬ জন শিক্ষার্থী।
অষ্টগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১২১জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে ৭৮জন শিক্ষার্থী পাশ করেছে। এই বিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪জন শিক্ষার্থী।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৮৭জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে ১৪১জন শিক্ষার্থী পাশ করেছে। এই বিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৯ জন শিক্ষার্থী।
আনন্দময়ী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২৬০জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে ২১৯জন শিক্ষার্থী পাশ করেছে। এই বিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৯ জন শিক্ষার্থী।
বুধল উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৪৫জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে ১০১জন শিক্ষার্থী পাশ করেছে। এই বিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪ জন শিক্ষার্থী।
রামকানাই হাই একাডেমি থেকে ৪৯জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে ৩২জন শিক্ষার্থী পাশ করেছে। এই বিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১জন শিক্ষার্থী।
লায়ন ফিরোজুর রহমান উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১১০জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে ৬৪জন শিক্ষার্থী পাশ করেছে। এই বিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ শিক্ষার্থী।
অন্বেষা বিদ্যাপীঠ (স্কুল এন্ড কলেজ) থেকে ২২জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে ২০জন শিক্ষার্থী পাশ করেছে।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার জীবন ভট্টাচার্য বলেন, এ বছর আমাদের রেজাল্ট আশানুরুপ হয়নি। জেলায় জিপিএ-৫-এর দিক থেকে অন্নদা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ভালো করেছে। আগামীতে যাতে ফলাফল সন্তোষজনক হয় সেদিকে আমরা খেয়াল রাখবো।
চলারপথে রিপোর্ট :
নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, কিছু ধর্মান্ধ সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী বার বার আমাদের সংস্কৃতি ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার উপর আঘাত করেছে।
তিনি আজ ১২ এপ্রিল বুধবার সন্ধ্যায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসন আয়োজিত জেলার বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশু ও তাদের পরিবারে সদস্যদের সাথে ইফতার ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন।
এ সময় তিনি আরো বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ সঙ্গীতাঙ্গনে সাম্প্রদায়িক হামলার খবরে আমাদের হৃদয় যেন ছিড়ে গিয়েছিল। আমরা পবিত্র মাসে শপথ নিতে চাই, আর কোনো সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী যেন আমাদের স্মৃতি আমাদের গর্ব এবং অহংকারের জায়গাটিতে আর আঘাত করতে না পারে। আমরা ১৯৭২ সালের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার জন্যে ৩০ লাখ মানুষ প্রাণ দিয়েছে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বপরিবারে জীবন দিয়েছেন। অসম্প্রদায়িক বাংলাদেশ ও মানবিক বাংলাদেশ আমরা যেদিন বিনির্মান করতে পারবো সেই দিন এই রক্তের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে পারবো।
ইফতার মাহফিলে অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর আসনের সংসদ সদস্য ও বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি র.আ.ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী। ইফতার মাহফিলে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্য দোয়া চান।
ইফতার ও দোয়া মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক মোঃ শাহগীর আলম, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী অফিসার মোঃ আমিনুল ইসলাম, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফিরোজুর রহমানসহ প্রায় শতাধিক বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশু ও তাদের পরিবারের সদস্য।
চলারপথে রিপোর্ট :
সাংগঠনিক আবৃত্তি চর্চায় গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদ প্রবর্তিত ‘গোলাম মুস্তাফা আবৃত্তি পদক’ অর্জন করায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সাহিত্য একাডেমির সভাপতি, বিশিষ্ট কবি, সংগঠক ও গবেষক জয়দুল হোসেনকে সংবর্ধনা প্রদান করেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিভিন্ন সাহিত্য-সংস্কৃতি ও সামাজিক সংগঠনের সদস্যরা।
গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত বর্ণাঢ্য এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে কবি জয়দুল হোসেন সংবর্ধনা পরিষদ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য, বরেণ্য আবৃত্তিশিল্পী ও প্রশিক্ষক গোলাম সারোয়ার।
কবি জয়দুল হোসেন সংবর্ধনা পরিষদের আহ্বায়ক ও বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক মো মনির হোসেন-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন বঙ্গীয় সাহিত্য-সংস্কৃতি সংসদ জেলা শাখার সভাপতি, বিশিষ্ট কবি ও নাট্যকার আবদুল মান্নান সরকার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মো: বাহারুল ইসলাম মোল্লা, নারীনেত্রী বেগম ফজিলাতুন্নাহার, জেলা সরকারি গণগ্রন্থাগারের সহকারী পরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম লিমন, বঙ্গবন্ধু পরিষদের সদস্য সচিব এটিএম ফয়েজুল কবির, সাহিত্য একাডেমির সহ-সভাপতি মানিক রতন শর্মা, বাংলাদেশ বেসরকারি গণগ্রন্থাগার পরিষদ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখার সভাপতি কবি আমির হোসেন, নতুনমাত্রা পাবলিকেশনের স্বত্বাধিকারী, কবি ও সাংবাদিক আল আমীন শাহীন, ভাষা ও সাহিত্য অনুশীলন কেন্দ্রের সহ-সভাপতি মমিনুল আলম বাবু, নদী প্রাণ ও প্রকৃতি সুরক্ষা বিষয়ক সংগঠন তরী বাংলাদেশ-এর আহ্বায়ক শামীম আহমেদ, আবরনীর নির্বাহী পরিচালক, আবৃত্তিশিল্পী হাবিবুর রহমান পারভেজ, সমাজকর্মী কমরেড নজরুল ইসলাম, তিতাস আবৃত্তি সংগঠনের সহকারী পরিচালক সুজন সরকার, কবির কলমের সভাপতি কবি হুমায়ুন কবির, সোনালি সকালের সভাপতি ফাহিম মুনতাসির।
কিচিরমিচির সম্পাদক মনিরুল ইসলাম শ্রাবণ ও আবৃত্তিশিল্পী ফারদিয়া আশরাফী নাওমীর সঞ্চালনায় সভায় স্বাগত বক্তব্য উপস্থাপন করেন জেলা খেলাঘর আসরের সাধারণ সম্পাদক নীহার রঞ্জন সরকার। ধন্যবাদ বক্তব্য রাখেন সাহিত্য একাডেমির সাধারণ সম্পাদক মোঃ নুরুল আমিন। অনুষ্ঠানে সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় কবি জয়দুল হোসেনকে নিবেদিত কবিতা পাঠ করেন তিতাস সাহিত্য সংস্কৃতি পরিষদের উপদেষ্ট, কবি মোঃ আব্দুর রহিম ও সাহিত্য একাডেমির সদস্য রিপন দেবনাথ। অনুষ্ঠানে কবি জয়দুল হোসেন রচিত বিভিন্ন কবিতার দলীয় আবৃত্তি পরিবেশন করে সাহিত্য একাডেমি, তিতাস আবৃত্তি সংগঠন, ভাষা ও সাহিত্য অনুশীলন কেন্দ্র, আবরনি আবৃত্তি চর্চা কেন্দ্র এবং সোনালি সকাল সংগঠনের আবৃত্তিশিল্পীবৃন্দ। এছাড়াও দলীয় নৃত্য পরিবেশন করে সুরসম্রাট দি আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গনের নৃত্য শিল্পীর দল। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ সংবর্ধিত অতিথি কবি জয়দুল হোসেনকে ফুলের শুভেচ্ছা ও উপহার সামগ্রী প্রদান করেন।
সংবর্ধনা শেষে কবি জয়দুল হোসেন তার অনুভূতি ব্যক্ত করে বলেন- বাংলা সাহিত্যের আদি নিদর্শন চর্যাপদ যা মূলত কবিতা। পৃথিবীর অনেক ভাষার আদি নিদর্শনী কবিতা। ফলে বলা যায় মানুষের সাহিত্য সাধনার প্রথম থেকেই কবিতা রচনা তথা কাব্যচর্চা হয়ে আসছে। বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিকভাবে সাংগঠনিক আবৃত্তি চর্চা শুরু হয় আশির দশকে। সমসাময়িক সময়ে আমি জেলার সাহিত্য-সংস্কৃতির চর্চা শুরু করি। সেই সঙ্গে আবৃত্তি চর্চাও। আমি নিজে কখনো আবৃত্তি না করলেও অন্যদেরকে দিয়ে আবৃত্তি করিয়েছি। কেননা আমি তখন থেকেই বুজতে পেরেছিলাম যে কবিতার লেখার মাধ্যমে, আবৃত্তি চর্চার মাধ্যমে মানুষের মাঝে দেশপ্রেম, সমাজ সচেতনতা ও চেতনা ছড়িয়ে দেয়া যায়। আবৃত্তি দিয়ে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করা যায়। সাংগঠনিকভাবে আবৃত্তি চর্চা করলে যে পুরস্কার পাওয়া যায়, এই বিষয়টি আমার আগে থেকে জানা ছিল না। তাই পুরস্কারে আমার নাম ঘোষণা করা হলে তখন থেকেই বিষয়টি নিয়ে আমি সন্দিহান ছিলাম। যা নিয়ে আমি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলেছি।
বক্তব্যে তিনি আরো বলেন- আমি কখনো পদক বা পুরস্কারের জন্য কোন কাজ করিনি, কোনো লেখা লেখিনি, আবৃত্তি চর্চা করিনি, সাংগঠনিক কাজও করিনি। আমি জীবনে যা করেছি তা নিজের মনের তাগিদে করেছি। দায়িত্ব ও চেতনা বোধ থেকে কাজ করেছি। সংগঠন করেছি নিজের আদর্শের জায়গা থেকে। তিনি অন্যদেরকেও নিজের নাম ছড়ানোর জন্য কাজ না করে, দেশ ও মানুষের জন্য কাজ করার কথা বলেন। বক্তব্যে তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে সাহিত্য-সংস্কৃতি চর্চার উর্বর ভূমি উল্লেখ করে সকলকে এই ভূমিতে সোনার ফসল ফলানোর জন্য আহ্বান জানান। তিনি তাকে সংবর্ধনা প্রদান করার জন্য আয়োজকদের এবং উপস্থিত সকলকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি তাঁর বক্তব্যে বলেন- টেলিভিশনে ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে যেভাবে পারস্পরিক যুদ্ধের জনপদ, সংঘর্ষের জনপদ হিসেবে তুলে ধরা হচ্ছে, আমি মনে করি এটা উচিত নয়। কেননা এই ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আছে সুদীর্ঘ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য। সে ঐতিহ্যের টানেই বারবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ছুটে আসতে মন চায়। তিনি বলেন জয়দুল হোসেন আবৃত্তি পদকে ভূষিত হলেও আমরা তাঁকে এই ছোট্ট গণ্ডিতে সীমাবদ্ধ রাখতে চাই না। কেননা তাঁর দীর্ঘ জীবনে যা যা অবদান, সেই তুলনায় একটি সুনির্দিষ্ট বিষয়ে পুরস্কার খুবই ছোট্ট একটি অর্জন। তবে, যে কোনও পুরস্কার মানুষকে আলোকিত করে, দায়িত্বশীল করে। জয়দুল হোসেন তাঁর আলোয় সমাজ ও শিল্প সাহিত্যকে আরো আলোকিত করেছেন এবং ভবিষ্যতেও করবেন বলে আমার বিশ্বাস।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুই সন্তানসহ বিষপান করেছেন আইরিন আক্তার (৩২) নামে এক গৃহবধূ। এ ঘটনায় ওই গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে।
৬ মার্চ বুধবার দুপুরে পৌর এলাকার ভাদুঘর এলেমপাড়া থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্যে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়া মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।
নিহত আইরিন আক্তার জেলার আশুগঞ্জ উপজেলার লালপুরের মৃত ইদ্রিস মিয়ার মেয়ে ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার ভাদুঘরের সৌদি আরব প্রবাসী শামীম মিয়ার স্ত্রী। এ ঘটনায় নিহত আইরিনের দুই শিশু কন্যা তোবা (৬) ও সাবাকে (২) মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পাঠানো হয়েছে।
নিহত আইরিন আক্তারের ছোট ভাই রাহিম মিয়া বলেন, আমার বোনকে আট বছর আগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার ভাদুঘরের মুসলিম মিয়ার ছেলে শামীমের সঙ্গে বিয়ে দেওয়া হয়। তাদের সংসারে দুইটি কন্যা সন্তান আছে। আমি সৌদি আরব রিয়াদে ইলেকট্রিক দোকান পরিচালনা করতাম। প্রায় পাঁচ বছর আগে আমি দুলাভাই শামীমকে নিজ খরচে সৌদি আরবে নিয়ে যাই। কথা ছিল সৌদি থেকে আমাকে টাকা পরিশোধ করবে কিন্তু করে নাই। প্রায় দুই বছর আগে সৌদি আরবে আমার দোকানের পজিশন বিক্রয় করে আমি বাড়িতে চলে আসি। আমি দেশে আসার আগে আমার দোকান পজিশন দুলাভাই বাকিতে নিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তিনি আমার আগের টাকা পরিশোধ না করায় আমি তাকে দোকান পজিশন দেইনি। এতে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে আমার বোন আইরিন আক্তারকে তালাক দেওয়ার হুমকি দিয়ে আসছিলেন। এ নিয়ে আমার দুলাভাইয়ের পরিবারের সঙ্গে আমাদের বিরোধ সৃষ্টি হয়। দুলাভাই শামীম সৌদি আরব থেকে আমার বোনকে মোবাইল ফোনে প্রায় সময়ই অশ্লীল গালিগালাজ করে আসছিলেন। এবং আমার বোনকে মানসিকভাবে অত্যাচার নির্যাতন করে আসছিলেন।
এ নিয়ে আমার বোন প্রায়ই কান্নাকাটি করে বিষয়গুলো আমাদের জানাতেন। এরই জেরে তাদের দেওয়া মানসিক অত্যাচারে আমার বড় বোন দুই সন্তানকে বিষপান করিয়ে নিজেও বিষপান করেন। দুই সন্তান বেঁচে গেলেও মারা যান আমার বোন। তার মরদেহ বাড়ি থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ এবং দুই সন্তানকে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম হোসেন জানান, খবর পেয়ে পুলিশ গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্যে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মর্গে রাখা আছে। দুই সন্তানকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
নদী ও প্রকৃতি সুরক্ষা সামাজিক আন্দোলন ‘তরী বাংলাদেশ’ এর উদ্যোগে আজ ১৫ অক্টোবর মঙ্গলবার ডেঙ্গু প্রতিরোধে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর শহরের বিভিন্ন স্থানে জনসচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ করা হয়। সকাল সাড়ে ১০টায় শহরের পৌর কার্যালয়ের সম্মুখে লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি উদ্বোধন করেন স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক ও পৌর প্রশাসক মোহাম্মদ রুহুল আমিন।
উদ্বোধন শেষে পৌর প্রশাসকের কার্যালয়ে একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় বক্তব্য রাখেন পৌর প্রশাসক মোহাম্মদ রুহুল আমিন, উপ-পরিচালক জেলা মহিলা অধিদপ্তর নিরূপা ভৌমিক, উপ পরিচালক কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সুশান্ত সাহা, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস মো. শামসুর রহমান, তরী বাংলাদেশ এর আহবায়ক শামীম আহমেদ, শহর পরিকল্পনাবিদ জান্নাতুল ফেরদৌস আরা এবং তরী বাংলাদেশ এর আহবায়ক কমিটির সদস্য খালেদা মুন্নী। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার সমাজ উন্নয়ন কর্মকর্তা মুখলেছুর রহমান। সভায় পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ উপস্থিত ছিলেন।
তরী বাংলাদেশ এর পক্ষে আরো উপস্থিত ছিলেন আহবায়ক কমিটির সদস্য হৃদয় কামাল, সোহেল রানা ভূইয়া, সুশান্ত পাল, আব্দুল হেকিম, সদস্য সঞ্জীব চন্দ্র সাহা,শাকিল আহমেদ, মো. মোশারফ হোসেন, মো. বাচ্চু মিয়া প্রমুখ।
সভায় বক্তারা ডেঙ্গুর ভয়াবহতা নিয়ে আলোচনা করেন এবং ডেঙ্গু প্রতিরোধে সবার সহযোগিতা কামনা করেন। যার যার অবস্থান থেকে ব্যক্তি পর্যায়ে সচেতন হওয়ার গুরুত্ব তুলে ধরেন। জনস্বার্থে ডেঙ্গু প্রতিরোধে এই সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ কার্যক্রম এবং বিভিন্ন সময়ে জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য ‘তরী বাংলাদেশ’ কে ধন্যবাদ জানান পৌর প্রশাসক মোহাম্মদ রুহুল আমিন।
তরী বাংলাদেশ এর আহবায়ক শামীম আহমেদ জানান – আমাদের ধারাবাহিক কাজের অংশ হিসেবে জনস্বার্থে এই সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ কার্যক্রম তরী বাংলাদেশ এর বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা শাখা সমূহের মাধ্যমে অব্যাহত থাকবে।