ডেস্ক রিপোর্ট :
অবৈধভাবে পণ্য মজুতকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড করা হচ্ছে। খাদ্যদ্রব্যের উৎপাদন, মজুত, স্থানান্তর, পরিবহণ, সরবরাহ, বিতরণ ও বিপণন (ক্ষতিকর কার্যক্রম প্রতিরোধ) আইন-২০২২-এর খসড়ায় এ বিধান যুক্ত করা হয়েছে। অন্য সব অপরাধে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ডের বিধান রয়েছে।
সম্প্রতি নতুন আইনের খসড়া প্রকাশ করেছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। মন্ত্রিসভায় নীতিগত অনুমোদনের পর এ সংক্রান্ত খসড়া আইনে বড় ধরনের পরিবর্তন আনা হচ্ছে। এ ধরনের অপরাধের বিশেষ আদালতে বিচার হবে।
গত বছরের ১৮ এপ্রিল মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ আইনের খসড়া নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়। তখন সর্বোচ্চ শাস্তি পাঁচ বছর কারাদণ্ড অথবা ১০ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডের প্রস্তাব করা হয়। খসড়াটি মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে সবার মতামত নেওয়া হচ্ছে। এরপর এটি আবার মন্ত্রিসভায় পাঠানো হবে। মন্ত্রিসভা অনুমোদন দিলে তা সংসদে যাবে। এ আইন পাশ হলে ‘ফুড (স্পেশাল কোর্ট) অ্যাক্ট, ১৯৫৬’ ও ‘দ্য ফুডগ্রেইনস সাপ্লাই (প্রিভেনশন অব প্রিজুডিশিয়াল অ্যাকটিভিটি) অর্ডিন্যান্স ১৯৭৯’ বাতিল হয়ে যাবে।
উল্লেখ্য, বছরের বিভিন্ন সময় একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী অবৈধভাবে পণ্য মজুত করে বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে। এরপর ওইসব পণ্যের দাম বাড়িয়ে বিপুল অঙ্কের মুনাফা লুটে নেয়। দীর্ঘদিন পর্যন্ত চক্রটি এ কাজ করলেও সরকার কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছে না। এ কারণে নতুন আইন করা হচ্ছে।
নতুন আইনের খসড়ায় বলা হয়- কোনো ব্যক্তি নির্ধারিত পরিমাণের বেশি খাদ্যদ্রব্য মজুত করলে বা মজুত সংক্রান্ত সরকারের কোনো নির্দেশনা অমান্য করলে মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন। তবে শর্ত থাকে যে, এ অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তি যদি প্রমাণ করতে পারেন যে, তিনি আর্থিক বা অন্য কোনো লাভের উদ্দেশ্য ছাড়া মজুত করেছিলেন তাহলে সর্বোচ্চ তিন মাস কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
উৎপাদন বা বিপণন সংক্রান্ত অপরাধ ও দণ্ডের বিষয়ে বলা হয়েছে- যদি কোনো ব্যক্তি কোনো অনুমোদিত জাতের খাদ্যশস্য থেকে উৎপাদিত খাদ্যদ্রব্যকে ওই ধরনের জাতের উপজাত পণ্য হিসাবে উল্লেখ না করে ভিন্ন বা কাল্পনিক নামে বিপণন করেন, খাদ্যদ্রব্যের মধ্য থেকে কোনো স্বাভাবিক উপাদান সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে অপসারণ করে বা পরিবর্তন করে উৎপাদন বা বিপণন করেন বা খাদ্যদ্রব্যের সঙ্গে মানবস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর কৃত্রিম উপাদান মিশিয়ে উৎপাদন বা বিপণন করেন- তবে সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
খসড়ায় আরো উল্লেখ করা হয়- সরকার খাদ্যদ্রব্য সংগ্রহকালে সরকারি গুদামে রাখা পণ্য বৈধ বা অবৈধভাবে সংগ্রহ করে, দেশে উৎপাদিত খাদ্যদ্রব্যের পরিবর্তে আমদানি করা খাদ্যদ্রব্য বা সরকারি গুদামের পুরোনো বা বিতরণ করা সিল বা বিতরণ করা হয়েছে এমন চিহ্নযুক্ত খাদ্যদ্রব্য ভর্তি বস্তা বা ব্যাগ সরকারি গুদামে সরবরাহ করলে সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কারাদণ্ড বা ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। কোনো ব্যক্তি খাদ্য অধিদপ্তরের বিতরণ করা সিল বা বিতরণ করা হয়েছে- এমন চিহ্নযুক্ত সিল ছাড়া সরকারি গুদামের খাদ্যদ্রব্য ভর্তি বস্তা বা ব্যাগ বিতরণ, স্থানান্তর, কেনাবেচা করলে সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কারাদণ্ড বা ১০ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
এতে আরো উল্লেখ করা হয়, কোনো ব্যক্তি খাদ্যদ্রব্যের উৎপাদন, মজুত, স্থানান্তর, পরিবহণ, সরবরাহ, বিতরণ ও বিপণন সম্পর্কিত কোনো মিথ্যা তথ্য বা বিবৃতি তৈরি, মুদ্রণ, প্রকাশ, প্রচার বা বিতরণ করলে সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কারাদণ্ড বা ১০ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড পেতে হবে।
খসড়ায় আরো উল্লেখ করা হয়- অপরাধের বিচারের জন্য প্রয়োজনীয়সংখ্যক আদালত থাকবে, যার নাম হবে খাদ্যদ্রব্য বিশেষ আদালত। ফৌজদারি কার্যবিধিতে যা কিছুই থাকুক না কেন, সরকার সুপ্রিমকোর্টের সঙ্গে পরামর্শক্রমে সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দিয়ে প্রথম শ্রেণির জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত বা মেট্রোপলিটন এলাকার জন্য মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতকে খাদ্যদ্রব্য বিশেষ আদালত হিসাবে নির্ধারণ করতে পারবে। একাধিক আদালত নির্ধারণ করা হলে প্রতিটি আদালতের জন্য স্থানীয় অধিক্ষেত্র নির্দিষ্ট করবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
বাগেরহটের শরণখোলায় একই সঙ্গে মা ও মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। এই হত্যাকাণ্ডটি ঘটেছে আজ ১১ আগস্ট শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার রায়েন্দা ইউনিয়নের উত্তর রাজাপুর গ্রামে। নিহত পাপিয়া বেগম (৩৫) ও তার মেয়ে সাওদা জেমীকে (৫) ঘরে ঢুকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ফেলে রেখে পালিয়ে যায় হত্যাকারীরা। ঘটনাস্থলেই মারা যায় মেয়েটি। গুরুতর অবস্থায় মা পাপিয়াকে উদ্ধার করে রাত ৮টার দিকে হাসপাতলে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পুলিশ রাত ৯টার দিকে মা-মেয়ের লাশ উদ্ধার করেছে। তবে কি কারণে কে বার কারা এই হত্যাটি ঘটেছে তা তাৎক্ষণিকভাবে জানাতে পারেনি পুলিশ।
স্থানীয় গ্রাম পুলিশ স্বপন কুমার বালী জানান, খবর পেয়ে পাপিয়া বেগমকে তার ঘর থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ সময় বাড়ির কিছু দূরে পড়ে থাকা অবস্থায় মেয়ে সাওদা জেমীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশকে জানানো হয়।
গ্রাম পুলিশ স্বপন বালী জানান, পাপিয়ার স্বামী আবু জাফর হাওলাদার কাজের সুবাদে ঢাকায় থাকেন। তার ছেলে জিহাদ (১৫) পিরোজপুরের মঠবাড়িয়াতে একটি দোকানে কাজ করে। মেয়েকে নিয়ে পাপিয়া বাড়িতে থাকতেন। কি কারণে এই ঘটনা ঘটেছে তা বোঝা যাচ্ছে না।
রায়েন্দা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজমল হোসেন মুক্তা জানান, তার ইউনিয়নের ১ নম্বর উত্তর রাজাপুর ওয়ার্ডে মা-মেয়ের জোড়া হত্যাকাণ্ডটি ঘটেছে। পারিবারিক কারণে এটি ঘটতে পারে বলে ধারণা করছেন তিনি।
শরণখোলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. আশফাক জানান, হাসপাতালে আনার আগেই পাপিয়া বেগমের মৃত্যু হয়েছে। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর জখম পাওয়া গেছে।
শরণখোলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইকরাম হোসেন বলেন, মা-মেয়ের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে কোনো ক্লু পাওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে তদন্ত চলছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
সংঘবদ্ধ মানবপাচারকারী চক্রের কবলে পড়ে মিয়ানমারের আস্তানায় বন্দিশালা থেকে নানা প্রক্রিয়ায় সাত জনকে ফেরত এনে উদ্ধার করেছে কক্সবাজারের পুলিশ। এ ঘটনায় সংঘবদ্ধ পাচারকারী চক্রের নারীসহ চার সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
আজ ২৫ সেপ্টেম্বর সোমবার দুপুর আড়াইটার দিকে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন, কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ (সদর সার্কেল) মো. মিজানুর রহমান।
গ্রেফতার পাচারকারী চক্রের সদস্যরা হলেন, টেকনাফ উপজেলার সদর ইউনিয়নের লেঙ্গুর বিল এলাকার মৃত ওমর হামজার ছেলে মো. বেলাল উদ্দিন (২৮), সাবরাং ইউনিয়নের লাফার ঘোনার এলাকার আবদুল গফুরের মাহফুজা (২২), একই ইউনিয়নের গোলারপাড়া এলাকার মৃত আবদুল গণির ছেলে আব্দুল্লাহ (৫৫) ও মিয়ানমারের বুচিডং এলাকার নুরুল ইসলামের ছেলে মো. আয়াছ (২৬)।
পাচারকারী চক্রের আস্তানা থেকে উদ্ধার হওয়ারা হলেন, চকরিয়া উপজেলার হারবাং ইউনিয়নের স্টেশন পাড়ার আবদুর রহমানের ছেলে রায়হান উদ্দিন (২৮), সিরাজগঞ্জ জেলার কাজীপুরের মো. হোসেন আলীর ছেলে মো. হাবিব উল্লাহ (১৬), কক্সবাজার পৌরসভার বৈদ্যঘোনা এলাকার কফিল উদ্দিনের ছেলে মো. রায়হান কবির (১৬), একই এলাকার আবুল হাশেমের ছেলে মো. আলমগীর (১৮), মহেশখালী উপজেলার শাপলাপুর ইউনিয়নের সোনা মিয়ার ছেলে সফর আলী (১৭), একই এলাকার আলী আজগরের ছেলে শওকত আজিজ (১৮) ও উখিয়ার থাইংখালী এলাকার মো. ইউনুসের ছেলে মো. মামুন মিয়া (২১)।
সংবাদ সম্মেলনে কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. মিজানুর রহমান জানিয়েছেন, গত ৪ সেপ্টেম্বর থেকে ১৭ সেপ্টেম্বর কক্সবাজার সদর থানায় লিপিবদ্ধ হওয়া ২ টি সাধারণ ডাইরির তদন্ত করতে গিয়ে পুলিশ নিশ্চিত হয় যে একটি সংঘবদ্ধ মানবপাচারকারী চক্র কক্সবাজার সদর, চকরিয়া, মহেশখালী, উখিয়ার কিছু কিশোর ও যুবককে নানা প্রলোভ দেখিয়ে উন্নত জীবনের কথা বলে মালেয়শিয়া পাচারের উদ্দেশ্যে জিম্মি করে। তাদের প্রথমে টেকনাফের লেঙ্গুর বিল এলাকায় নিয়ে যায়। এরপর সাগর পথে মিয়ানমারের একটি আস্তানায় নিয়ে গিয়ে জিম্মি করে। ওখানে জিম্মি করার পর নির্যাতন চালিয়ে ফোনে স্বজনদের কাছ থেকে মুক্তিপণের টাকা দাবি করে।
তিনি জানান, স্বজনরা নির্যাতনের খবর পেয়ে নানাভাবে পাচারকারীদের বিভিন্ন অংকের টাকাও প্রদান করে। এই টাকা গ্রহণকারী লোকজন, তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় পুলিশ পাচারকারী চক্রের সদস্যদের চিহ্নিত করে ৪ জনকে গ্রেফতার করে। এরপর গ্রেফতারদের কৌশলে ব্যবহার করে রবিবার রাতে মিয়ানমার থেকে টেকনাফের সমুদ্র সৈকত এলাকায় ফেরত আনা হয় ৭ জনকে।
মিজানুর রহমান জানান, উদ্ধার হওয়া ব্যক্তি ও গ্রেফতারের কাছ থেকে আর নানা তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। এসব তদন্ত করে পাচারকারী চক্রের অন্যান্য সদস্যদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার ও নিখোঁজ অন্যদের বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। এসব ঘটনায় কক্সবাজার সদর মডেল থানা ছাড়াও পৃথকভাবে উখিয়া, টেকনাফ, মহেশখালী ও চকরিয়া থানায় মামলা হয়েছে।
এই অভিযানে অংশ নেন পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) এসএম শাকিল হাসান, উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আবদুল আজিজ, সাঈদ নুর। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজার সদর মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) কাইছার হামিদ ও পরিদর্শক (গোয়েন্দা) দুর্জয় বিশ্বাস।
চলারপথে রিপোর্ট :
পুর্বধলায় জালশুকা বাজারে চান মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডে দুটি দোকান পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
আজ ১৭ জানুয়ারি বুধবার বেলা সাড়ে এগারোটায় নেত্রকোনা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পুর্বধলা উপজেলার শ্যামগঞ্জের জালশুকায় মো. আব্দুল্লাহর তুলার দোকানে প্রথমে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। পরে স্থানীয়সহ পুর্বধলার ফায়ার সাভিস ও পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের সকলে আগুন নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে অল্পক্ষণেই।
এদিকে পাশাপাশি থাকায় তুলার দোকানের সাথে ওবায়দুল হক তালুকদারের ফিস ফিডের দোকানটিও পুড়ে যায়। তবে কেউ আহত হয়নি।
স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, ময়মনসিংহের গৌরিপুর উপজেলার চরপাড়া গ্রামের ব্যবসায়ী মো. আব্দুল্লাহর তুলার দোকান থেকে আগুনের সুত্রপাত ঘটে। হঠাৎ তুলার দোকানের কর্মচারি দেখেন বিদ্যুৎ এর সুইচ বোর্ডে শব্দ হয়ে ধোঁয়া বের হচ্ছে। তাৎক্ষণিক নিজে দোকান থেকে বেরিয়ে পড়েন সেইসাথে চিৎকার চেঁচামেচি করলে অন্যরাও এগিয়ে আসেন। এদিকে ততক্ষণে পাশের দোকান একই উপজেলার ময়লাকান্দা গ্রামের ওবায়দুল হক তালুকদারের ফিসফিডসহ কীটনাশকের দোকানেও আগুন ছড়িয়ে পড়ে। পরে স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীরা ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের খবর দেয় এবং আগুন নিয়ন্ত্রণে সহযোগিতা করে।
এ ব্যাপারে শ্যামগঞ্জ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ আশরাফুল ইসলাম জানান, মূলত লেপ তোষকের দোকান থেকেই আগুনের সূত্রপাত ঘটে বলে জানায় স্থানীয়রা। হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
অনলাইন ডেস্ক :
ভবিষ্যতে কেউ যেন মুক্তিযুদ্ধের বিজয়গাথা বিকৃত করতে না পারে সেজন্য সবাইকে সজাগ থাকার আহবান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করার পর স্বাধীনতার চেতনা, মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ সবই মুছে গিয়েছিলে। আমাদের কবি, শিল্পী, সাহিত্যিক, লেখকরা তাদের লেখনির মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধরে রেখেছিলেন। আমরা রাজনীতিবিদরা রাজনীতির মধ্য দিয়ে গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছিলাম।
আজ ১৫ সেপ্টেম্বর শুক্রবার বিকেলে জাতীয় জাদুঘরে স্বাধীনতা প্রদকপ্রাপ্ত আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন শিল্পী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহাবুদ্দিন আহমেদের ‘১৯৭৩-২০২৩ এ রেট্রোস্পেক্টিভ’ শীর্ষক নির্বাচিত চিত্রকর্মের বিশেষ প্রদর্শনী উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ভবিষ্যতে আবার কেউ যেন কখনো আমাদের মুক্তিযুদ্ধের বিজয়গাথা বিকৃত করতে না পারে সেজন্য সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশকে গড়ে তোলার পদক্ষেপ নিয়েছি, আজ আমাদের তরুণ সমাজের মধ্যে সেই চেতনা আবার ফিরে আসতে শুরু করেছে, এটাই হচ্ছে সবচেয়ে বড় পাওয়া।
তিনি বলেন, শিল্পীর আঁকা ছবি হৃদয় দিয়ে উপলব্ধি করা যায়, আবার সঙ্গে সঙ্গে দেশপ্রেম উদ্বুদ্ধ হওয়া যায়; একটা চেতনা জাগ্রত হয়। আর আমাদের জন্য মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেই চেতনায় বাংলাদেশের জনগণ জাগ্রত হবে, দেশকে মহান মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে গড়ে তুলবে।
তিনি আরো বলেন, চিত্রশিল্পীদের তুলির আঁচড়ে ফুটে উঠে আমাদের প্রকৃতি, আমাদের দেশের নানা চিত্র। আমাদের ইতিহাস যেমন ফুটে উঠে, সেইসঙ্গে দরিদ্র মানুষের দৃশ্যগুলো উঠে আসে। আমি ’৯৬ সালে সরকার গঠন করার পর আন্তর্জাতিক চিত্রশিল্পীর একটা সম্মেলন করি।
সেখানের কয়েকটি শিল্পকর্ম আমার দৃষ্টি আকর্ষণ করে। আমি নিজেও একটি কিনে নিই। তার সঙ্গে কয়েকটি উপহারও পাই। আমাদের পরিকল্পনা কমিশনে, যেখানে বসে উন্নয়নের পরিকল্পনা করি, সেখানে সেই চিত্রটি লাগিয়ে রেখেছি। আরেকটি আছে গণভবনে। এগুলো আমাদের সঙ্গেই থাকে।
শিল্পী শাহাবুদ্দিন আহমেদের প্রশংসা করে শেখ হাসিনা বলেন, শাহাবুদ্দিন আমার ছোটো ভাইয়ের মতো।তিনি প্যারিসে বাস করেন কিন্তু তার হৃদয় বাংলাদেশে থাকে। আমি মনে করি সে সবার মধ্যে অন্যতম, শ্রেষ্ঠ। কারণ সে হৃদয়ে ধারণ করে, সে যে মুক্তিযোদ্ধা ছিল, এখনও সে মুক্তিযোদ্ধাই। সেই চিন্তা-চেতনা নিয়েই তার শিল্পকর্ম। যেটা আমাকে সবচেয়ে বেশি অনুপ্রাণিত করে।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানা উপস্থিত ছিলেন। শিল্পী শাহাবুদ্দিন আহমেদ তার বক্তব্যে মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে স্মৃতিচারণ করেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী র.আ.ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি রাজনেতিক প্রতিপক্ষ বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে বলেন, তারা বহু চেষ্টা করেও নির্বাচন বন্ধ করতে পারে নাই। মঞ্চে উপবিষ্ট দু:জন বিজয়ী স্বতন্ত্র প্রার্থীও বলেছেন নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হয়েছে। শান্তিপূর্ণ ভাবে যে কোন মিছিল, মিটিং করলে কোন আপত্তি নাই। যদি অশান্ত হন, আগুন সন্ত্রাস করেন, জনগণের অশান্তি হয় এমন কোন কাজ করলে তা সহ্য করা হবে না। জনগনের শান্তি বিনষ্ট হয় এমন কোন কাজ করতে দেওয়া হবেনা।
তিনি আরো বলেন, রমজানুল মোবারককে সামনে রেখে যেসব লোকেরা কালো ধান্ধায় আছেন, তাদেরকে আমরা সতর্ক করতে চাই আমরা কোন রকমের মজুদদারীকে সহ্য করবো না। রমজানে যারা দ্রব্য মূল্য নিয়ে যেসকল বন্ধুরা খেলাধূলা করবেন তাদেরকে খেলাধূলা না করার অনুরোধ করবো। খেলাধূলা করলে কেউ রেহাই পাবেন না। আমি আজকে বলে দিয়েছি একজন মন্ত্রী, জননেত্রী শেখ হাসিনার একজন কর্মী হিসেবে, কোন জরিমানার ব্যাপার স্যাপার নাই, সরাসরি কারাগারে পাঠানোর জন্য আমি অনুরোধ করেছি। তিনি আরও বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার জন্য জননেত্রী শেখ হাসিন সচেষ্ট আছেন আমরাও তার সাথে আছি। সকলে মিলে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাই।
আজ ২৭ জানুয়ারি শনিবার সন্ধ্যায় স্থানীয় নিয়াজ মুহম্মদ স্টেডিয়ামে জেলা আওয়ামীলীগ আয়োজিত গণসংবর্ধনায় মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু আমাদেরকে একটি দেশ দিয়ে গিয়েছেন। তার সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে চলেছে। জননেত্রী শেখ হাসিন আমাকে মন্ত্রী বানিয়েছেন। আমি যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছি তার প্রতিটা আমি পালন করবো ইনশাল্লাহ। আগেও আমিও চাঁদাবাজ, ছিনতাইকারী, ভূমিদস্যু, মাদক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে ছিলাম আজও আছি। মাদক ব্যবসায়ীদের বলতে চাই, আপনাদের কারণে যুবসমাজ ধ্বংসের পথে যাচ্ছে, আমি তাদের ধ্বংসের পথে যেতে দিতে পারি না। তাই মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স।
জেলা আওয়ামীলীগ আয়োজিত সংবর্ধনায় সভাপতিত্ব করেন জেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র হেলাল উদ্দিন।
বিশেষ অতিথি ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ (নবীনগর) আসনের নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য ফয়জুর রহমান বাদল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ (নাসিরনগর) আসনের সাংসদ সৈয়দ এ.কে. একরামুজ্জামান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া -২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের সাংসদ মঈন উদ্দিন মঈন, মন্ত্রীর সহধর্মিণী মাউশির সাবেক মহাপরিচালক প্রফেসর ফাহিমা খাতুন।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর সভার মেয়র মিসেস নায়ার কবির, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি হাজী হেলাল উদ্দিন, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল বারী চৌধুরী মন্টু, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম ভূঁইয়া প্রমুখ।
এদিকে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের শুরুতেই ঐতিহ্যবাহী লাঠিখেলা অনুষ্ঠিত হয়। সংবর্ধনানুষ্ঠানশেষে ব্যান্ডদল নগর বাউলের জেমস সঙ্গীত পরিবেশনার মধ্য দিয়ে হাজারো দর্শককে মুগ্ধ করেন।