বিশেষ প্রতিনিধি :
বাংলাদেশের আকাশে রজব মাসের চাঁদ দেখা গেছে। আজ ২৩ জানুয়ারি সোমবার সন্ধ্যায় চাঁদ দেখা যাওয়ায় মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) থেকে ১৪৪৪ হিজরি সালের রজব মাস গণনা শুরু হবে। পবিত্র শবে মেরাজ পালিত হবে আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি (২৬ রজব) রবিবার দিনগত রাতে।
রাজধানীর বায়তুল মোকাররমে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সভাকক্ষে সোমবার সন্ধ্যায় জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. মুনিম হাসান।
সভায় অতিরিক্ত সচিব জানান, সব জেলাপ্রশাসন, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের প্রধান কার্যালয়, বিভাগীয় ও জেলা কার্যালয়, আবহাওয়া অধিদপ্তর, মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র ও দূর অনুধাবন প্রতিষ্ঠান থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী বাংলাদেশের আকাশে ১৪৪৪ হিজরি সালের রজব মাসের চাঁদ দেখার সংবাদ পাওয়া গেছে। এজন্য মঙ্গলবার থেকে রজব মাস গণনা শুরু হবে। আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি পবিত্র শবে মেরাজ পালিত হবে।
শবে মেরাজের দিন বাংলাদেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকে। তবে, সরকারি প্রতিষ্ঠানে এ দিন ঐচ্ছিক ছুটি।
‘শবে মেরাজ’ অর্থ ঊর্ধ্ব গমনের রাত। মুসলমানদের ধর্ম বিশ্বাস অনুযায়ী, ২৬ রজব দিনগত রাতে ঊর্ধ্বাকাশে ভ্রমণ করে মহানবী হয়রত মোহাম্মদ (স.) আল্লাহ তা’য়ালার সাক্ষাৎ লাভ করেছিলেন। এ বছর সেই রাতটি পড়েছে আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি।
শবে মেরাজ মুসলমানদের কাছে বিশেষ মর্যাদার। ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা নফল ইবাদত-বন্দেগির মধ্যদিয়ে এ মূল্যবান রাত কাটান। এই দিন অনেকে নফল রোজাও রাখেন।
অনলাইন ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘রমজান মাসের শুরুতে খেজুর, আমদানি করা ফল, লেবু, তরমুজ, পেঁয়াজসহ কয়েকটি পণ্যের দাম কিছুটা চড়া ছিল। তবে এসব পণ্যের দাম কয়েক দিনের মধ্যেই স্বাভাবিক ও সহনীয় পর্যায়ে নেমে এসেছে। জিনিসপত্রের দাম বাড়লে সাধারণ মানুষের, বিশেষ করে সীমিত আয়ের মানুষের কষ্ট হয়। আমরা দেশবাসীর প্রত্যাশা অনেকাংশেই পূরণ করতে সক্ষম হয়েছি।’
আজ ২৫ মার্চ সোমবার সন্ধ্যায় মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা এ বছর সরকারিভাবে এবং দলগতভাবে ইফতার পার্টির আয়োজন নিরুৎসাহিত করেছি। আওয়ামী লীগ এবং এর সকল সহযোগী সংগঠন নির্দেশমতো তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত গরিব-দুস্থদের মধ্যে ইফতারসামগ্রী বিতরণ করছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘এবারের রমজান মাসকে সামনে রেখে আমরা বেশ আগে থেকেই চিনি, ছোলা, ডাল, ভোজ্য তেলসহ কয়েকটি পণ্যের পর্যাপ্ত মজুদ গড়ে তুলি।
একচেটিয়া বাজার তৈরি করে অধিক মুনাফা যাতে কেউ করতে না পারে সে জন্য ভারত হতে ৫০ হাজার মেট্রিক টন পিঁয়াজ এবং প্রায় সমপরিমাণ আলু আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়। পাশাপাশি রমজান মাসের শুরু হতে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য রাজধানী ঢাকার অন্তত ২৫টি স্থানে ট্রাকে করে মাছ, মাংস, ডিম এবং দুধ সুলভ মূল্যে বিক্রি করা হচ্ছে। টিসিবি প্রথম পর্যায়ে সারা দেশের এক কোটি কার্ডধারী পরিবারের জন্য সুলভ মূল্যে চাল, ডাল, ভোজ্য তেল, চিনি এবং ছোলা―এই পাঁচটি পণ্য বিতরণ করছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দ্বিতীয় পর্যায়ে ঢাকা ও আশপাশের এলাকার কার্ডধারী পরিবারের জন্য চাল, ডাল, ভোজ্য তেল, চিনি, ছোলা ও খেজুর―এই ছয়টি পণ্য বিতরণ করছে।
ঈদ উপলক্ষে সারা দেশের এক কোটি ৬২ হাজার ৮০০ পরিবারের জন্য সরকার এক লাখ ৬২৮ মেট্রিক টন চালের বিশেষ বরাদ্দ দিয়েছে। প্রতি পরিবার বিনা মূল্যে ১০ কেজি করে চাল পাবেন।
তিনি আরো বলেন, লাদেশ আওয়ামী লীগ জন্মের পর থেকেই গণতন্ত্র, মানবিধাকার এবং মানুষের মৌলিক অধিকার আদায়ের লড়াই করে আসছে। এসব লড়াইয়ের অংশ হিসেবেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে পাকিস্তানের স্বৈরশাসন, শোষণ-নির্যাতনের নাগপাশ থেকে মুক্তিলাভ করে সৃষ্টি হয় বাংলাদেশের। সাধারণ মানুষের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য তিনি প্রণয়ন করেন বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সংবিধান যেখানে চার মূলনীতি হিসেবে যুক্ত হয়েছে জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র এবং ধর্মনিরপেক্ষতা।
১৯৭৫-এর পর আইয়ুব-ইয়াহিয়ার অনুকরণে জিয়াউর রহমান ক্ষমতা দখল করলে আওয়ামী লীগই প্রথম এগিয়ে আসে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রামে। পরের ২১ বছর আওয়ামী লীগের হাজার হাজার নেতাকর্মী রাজপথে রক্ত ঝরিয়েছে গণতন্ত্র এবং ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য। ১৯৮১ সালে ছয় বছরের নির্বাসন শেষে দেশে ফিরে আসার পর ভোট ও ভাতের অধিকার আদায়ের সংগ্রাম করতে গিয়ে আমাকেও বারবার মৃত্যুর মুখোমুখি এবং কারাবন্দি হতে হয়েছে। আমাকে হত্যার জন্য কমপক্ষে ১৯ বার সশস্ত্র আক্রমণ চালানো হয়।
অনলাইন ডেস্ক :
অনিবন্ধিত ও অবৈধ অনলাইনের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত। তিনি বলেন, আপনাদের দাবির সাথে আমি একাত্মতা প্রকাশ করছি—একটা ডিসিপ্লিন আনা দরকার। যেহেতু নিবন্ধনের একটা প্রক্রিয়া আছে, সেটাকে কার্যকর করা দরকার।
আজ ১৬ এপ্রিল মঙ্গলবার সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ‘অনলাইন নিউজপোর্টাল অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের (ওনাব) কার্যনির্বাহী সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আপনারা (সাংবাদিক) বলছেন, নজরদারি বা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। সরকার যে নজরদারি বা নিয়ন্ত্রণ করে না, বরং আপনারাই বলছেন কিছুটা দরকার ডিসিপ্লিনের (শৃঙ্খলা) জন্য। অর্থাৎ নিবন্ধন প্রক্রিয়ার বাইরেও অনেকে অনলাইন সংবাদমাধ্যম পরিচালনা করছেন। এখানে গণমাধ্যম এতটাই মুক্ত, উন্মুক্ত এবং স্বাধীন যে, নিবন্ধন ছাড়াও চলতে পারে এবং নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণের কথা পেশাগত সাংবাদিকরাই বলছেন—এটা করা দরকার।
তিনি বলেন, আমরা এগুলো করি না। যেটা প্রমাণ করে—প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার সংবাদমাধ্যমের পূর্ণাঙ্গ স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে। তবে, একইসাথে আমি মনে করি, এটা মুক্ত না, উন্মুক্ত। স্বাধীনতা এমন পর্যায়ে চলে গেছে, যেটা লিমিটলেস (সীমাহীন)। যে কারণে কিছুটা ডিসিপ্লিনের অভাবও হয়ে গেছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমি আবারও বলব, নিয়ন্ত্রণ কিংবা নজরদারির প্রশ্ন আসে না। আমরা এগুলোর পক্ষে না, আমরা করতে চাই না। আমরা এগুলোতে বিশ্বাস করি না। আমরা মুক্ত গণমাধ্যম ও স্বাধীন সাংবাদিকতায় বিশ্বাস করি। যারা নিবন্ধিত, তাদের কিছুটা প্রণোদনা ও সহায়তা দেওয়ার দরকার আছে, দায়িত্বশীল সাংবাদিকতাকে প্রমোট (এগিয়ে) করার জন্য। আর অনিবন্ধিত অনলাইন পোর্টালগুলোর মাধ্যমে অনেক চটকদার, অসত্য, মানহানিকর ও ডিসইনফরমেশন ক্যাম্পেইন হয়। এটা একটা ভালো দিক—সাংবাদিক মহলই চাচ্ছেন একটি শৃঙ্খল ডিসিপ্লিনযুক্ত সাংবাদিকতার বিকাশ। এখানে পূর্ণাঙ্গভাবে আপনাদের সাথে একমত।
তিনি বলেন, সংবাদমাধ্যমের পূর্ণাঙ্গ স্বাধীনতা ও সব ধরনের নজরদারির বাইরে আমরা এখানে প্রমোট করতে চাই। কারণ আমরা বিশ্বাস করি, এটা আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অংশ। আমাদের এখন ৪২৬টি নিবন্ধিত অনলাইন পোর্টাল আছে। এরমধ্যে ২১৩টির মূলধারার গণমাধ্যম আছে—ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়া। আর ২১৩টি কেবল অনলাইন নিউজপোর্টাল। আরও কিছু প্রক্রিয়ার মধ্যে আছে।
তথ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, নতুন কেউ অনলাইন নিউজপোর্টাল নিয়ে আসতে চাইলে তাদের নিজেদের প্রমাণ করার সময় দেওয়া দরকার। আর যারা অনিবন্ধিত, আমি মনে করি, অবৈধভাবে কোনো কিছু সঠিক না, তারা সমাজে ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারে না। সেগুলোর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেব। আর এটা আপনাদের (সাংবাদিক) দাবি। আমি কিন্তু বলছি না। কাজেই আমি সরকারের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে আপনাদের দাবি পূরণের ঘোষণা দিচ্ছি। আমি চাই না, সরকারের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে আমি ঘোষণা দিলাম যে, অনিবন্ধিত অনলাইন বন্ধ করে দেব, কালকে হেডলাইন করে পরের দিন আলাপ হবে, সরকার তো গণমাধ্যমের গলা টিপে ধরছে। সেটা আমি চাই না।
এ সময়ে ওনাব সভাপতি মোল্লাহ এম আমজাদ হোসেন, সহ-সভাপতি লতিফুল বারী হামিম ও সৌমিত্র দেব, যুগ্ম সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান ও আশরাফুল কবির আসিফ, কার্যনির্বাহী সদস্য নজরুল ইসলাম মিঠু, তৌহিদুল ইসলাম মিন্টু, রফিকুল বাসার, হামিদ মো. জসিম, মহসিন হোসেন, অয়ন আহমেদ, খোকন কুমার রায় প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
চলতি মৌসুমে আখাউড়ায় বাণিজ্যিকভাবে বাদাম চাষ হয়েছে। এখন জমি থেকে বাদাম তোলা শুরু করেছেন কৃষকরা। আবহাওয়া অনুকূলে আর সঠিকভাবে পরিচর্যার কারণে এবার বাদামের ফলন ভালো হয়েছে।
জানা গেছে, আখাউড়া উপজেলার মনিয়ন্দ ইউপির বেশ কয়েকটি গ্রামে নানা প্রতিকূলতা উপেক্ষা করে কৃষকরা বছরের পর বছর বাদম চাষ করে আসছেন। স্থানীয় বাজারে বাদামের চাহিদাও রয়েছে বেশ। কম খরচে বেশি লাভ হওয়ায় এ ফসল চাষের প্রতি উপজেলার প্রান্তিক কৃষকদের দিন দিন আগ্রহ বাড়ছে। উৎপাদিত বাদাম স্থানীয় চাহিদা মেটানোর পর দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে পাইকাররা এসে বাদাম কিনে নিয়ে যান।
জানা যায়, চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় ৩ হেক্টর জমিতে বাদাম আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। ফলন বৃদ্ধিতে কৃষকদের সব ধরনের সহায়তা দিচ্ছে কৃষি বিভাগ। সবচেয়ে বেশি বাদামের চাষ হয়েছে উপজেলার মনিয়ন্দ ইউপির কর্মমঠ, হারকোট, মিনারকোট, ধর্মসগর, ঘাঘুটিয়াসহ বেশ কয়েকটি গ্রামে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এখানকার বেশিরভাগ এলাকা উঁচু হওয়ায় জমিতে সবজি চাষ করা হতো। স্বল্প খরচে বেশি লাভ হওয়ায় এখন চাষিরা বাদাম চাষে বেশ আগ্রহী হয়ে উঠছেন। বাদাম আবাদ করতে প্রতি এক বিঘা জমিতে প্রায় ৭ হাজার থেকে ৮ হাজার টাকা খরচ হয়। বিঘাপ্রতি ফলন পাওয়া যাচ্ছে ৪ থেকে ৫ মণ বাদাম। স্থানীয় বাজারে প্রতি মণ বিক্রি হচ্ছে ৮ হাজার টাকায়।
মনিয়ন্দ ইউনিয়নের কর্মমঠ গ্রামের কৃষক মো. সোহাগ সরকার বলেন, এ গ্রামে প্রায় ৩০ বছর ধরে উচ্চ ফলনশীল দেশীয় জাতের বাদাম চাষ করছেন কৃষকরা। এ মৌসুমে ২ বিঘা জমিতে উচ্চ ফলনশীল হাইব্রিড জাতের বাদাম আবাদ করি। হালচাষ, বীজ রোপণসহ অন্যান্য খরচ হয়েছে প্রতি বিঘা প্রায় ৭ হাজার টাকা। তবে বাদাম চাষে কোনো কীটনাশক দেওয়া হয় না। এরই মধ্যে বাদাম তোলার কাজ শেষ হয়েছে। এক বিঘা জমিতে ফলন হয়েছে প্রায় ৫ মণ। স্থানীয় বাজারে প্রতি মণ বাদাম বিক্রি হচ্ছে ৮ হাজার টাকা দরে। বাদাম বিক্রি নিয়ে কোনো সমস্যায় পড়তে হয় না। কুমিল্লা, ভৈরবসহ দেশের বিভিন্ন জায়গার পাইকাররা এসে বাদাম ক্রয় করে নিয়ে যায়। নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে এ মৌসুমে প্রায় ৬০ লাখ টাকা আয় হবে।
কৃষক মো. মামুন বলেন, গত ১৫ বছর ধরে আবাদ করছি। চলতি মৌসুমে প্রায় দুই বিঘা জমিতে আবাদ করা হয়। এরই মধ্যে বাদাম তোলার কাজ শুরু হয়েছে। গত বছর থেকে এবার তুলনামূলক ফলন ভালো হয়েছে। গ্রামের জমি বাদাম চাষের জন্য উপযোগী হওয়ায় প্রতি বছর আবাদ বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাদাম তোলার পর কৃষি অফিসের সহযোগিতায় পরবর্তীতে চাষাবাদ করা হবে। বাদাম বপন থেকে উৎপাদন পর্যন্ত তিন মাস সময় লাগে। বর্তমানে আধুনিক প্রযুক্তির কারণে সময় অনেক কম লাগছে। কৃষকরা বেশ লাভবান হচ্ছেন।
ইউপি সদস্য মো. হামদু মিয়া বলেন, এ বছর প্রায় ২বিঘা জমিতে বাদাম আবাদ করা হয়েছে। বাদাম মাঠ থেকে তুলে বাড়ি আনা হয়েছে। গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার বাদামের ফলন ভালো হয়েছে।
তিনি বলেন, জায়গা উঁচু হওয়ায় ধানের ফলন তেমন ভালো হয় না। আমাদের গ্রামটি বাদামের গ্রাম হিসেবে বেশ পরিচিত লাভ করেছে। আখাউড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তানিয়া তাবাসসুম বলেন, বাদাম চাষে স্থানীয় কৃষকদের সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হয়ে থাকে। মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাগণ সার্বক্ষণিক কৃষকদের বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে আসছেন। বাদাম চাষে কৃষকরা বেশ লাভবান হচ্ছেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ট্রেনের ভেতরে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন এক অন্তঃসত্ত্বা নারী। শুরু হয় রক্তক্ষরণ। এতে দিশাহারা হয়ে পড়েন তার স্বামী। এক পর্যায়ে ট্রেনের ভ্রাম্যমাণ টিকিট পরিদর্শককে বিষয়টি জানান তিনি। পরিস্থিতি গুরুতর হওয়ায় ট্রেনের মাইকে ঘোষণা দেওয়ার পরামর্শ দেন টিকিট পরিদর্শক। দ্রুতই ট্রেনের মাইকে ঘোষণা করা হয় কোনো চিকিৎসক, নার্স আছেন কি না?
ঘোষণা শোনার পর অন্যান্য কামরা থেকে ছুটে আসেন দুইজন চিকিৎসক ও দুইজন নার্স। সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন অন্য যাত্রীরাও। মুহূর্তেইে ট্রেনের কামরাটি পরিণত হয় অপারেশন থিয়েটারে। চার মাসের মৃত সন্তান প্রসব করলেও প্রাণে রক্ষা পান ওই নারী।
গত রবিবার রাতে ঢাকা থেকে চিলাহাটীগামী আন্তঃনগর চিলহাটি এক্সপ্রেস ট্রেনে এ ঘটনা ঘটে। পরে ট্রেনটি পাবনার ঈশ্বরদীতে ফিরলে গল্পটি ছড়িয়ে পরে রেলকর্মীদের মাঝে। ঘটনার রাতে ট্রেনটিতে দায়িত্বরত ছিলেন রেলওয়ের পার্বতীপুর হেডকোয়ার্টারের ভ্রাম্যমাণ টিকিট পরিদর্শক (টিটিই) আমিরুল হক জাহেদী।
তিনি জানান, রাত ৮টা বাজে তখন। ঢাকা থেকে চিলহাটি যাচ্ছিল আন্তঃনগর চিলহাটি এক্সপ্রেস। টিকিট পরিদর্শন করছিলেন টিটিই আমিরুল হক জাহেদী। হঠাৎ তিনি জানতে পারেন ট্রেনের ‘ঘ’ বগিতে অন্তঃসত্ত্বা এক নারী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। খবরটি জানার পর ট্রেনের মাইকে একটি ঘোষণা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। পরে দ্রুতই মাইকে ঘোষণা দেওয়া হয়, ট্রেনের মধ্যে যদি কোনো ডাক্তার থাকেন তাহলে জরুরি ভিত্তিতে ‘ঘ’ কোচে তাকে বিশেষ প্রয়োজন, একজন গর্ভবতী মা ভীষণ অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
টিটিই আমিরুল হক জাহেদী জানান, ঘোষণার পর দ্রুতই সব ঘটতে থাকে। ট্রেনের ‘জ’ বগি থেকে ছুটে আসেন ঢাকার ল্যাবএইড ক্যান্সার হাসপাতালের চিকিৎসক মো. সানাউল্লাহ। ‘চ’ বগি থেকে আসেন রংপুর কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পঞ্চম বর্ষের শিক্ষার্থী আফসানা ইসলাম রোজা। একই সঙ্গে দুজন নার্স সেখানে উপস্থিত হন। চিকিৎসক সানাউল্লাহ ওই নারীর অবস্থা দেখে জরুরি হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন। সিদ্ধান্ত হয় টাঙ্গাইল স্টেশনে ট্রেন থামানো হবে। ৯৯৯-এ ফোন দিয়ে অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করলেন এক যাত্রী। এর মধ্যেই ক্রসিংয়ে আটকা পড়ে যায় ট্রেনটি।
এদিকে, অন্তঃসত্ত্বা ওই নারীর রক্তপাত থামছিলই না। তখন দ্রুতই ওই নারীকে ঘিরে ফেলার পরামর্শ দেন চিকিৎসক। ট্রেনে থাকা নারী যাত্রীরা কাপড় দিয়ে ওই নারীকে ঘিরে ফেলেন। ট্রেনের নারী যাত্রীরা তাদের ব্যাগ থেকে কাপড়, স্যালাইন ও হেক্সিসল যার কাছে যা ছিল বেড় করে দেন। মুহূর্তেই ট্রেনটি পরিণত হয়ে যায় অপারেশন থিয়াটারে। চিকিৎসক সানাউল্লাহর পরামর্শে সঙ্গে থাকা শিক্ষানবীশ নারী চিকিৎসক ও দুইজন নার্স কাজ করতে থাকেন। এরপর দীর্ঘ চেষ্টায় ওই নারী মৃত বাচ্চা প্রসব করলেও প্রাণে রক্ষা পান তিনি।
চিকিৎসক সানাউল্লাহ সবাইকে আশ্বস্ত করে বলেন, রোগী এখন অনেকটা শঙ্কামুক্ত। চিকিৎসকের এ ঘোষণায় পুরো ট্রেনে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেন যাত্রীরা।
টিটিই আমিরুল হক জাহেদী আরো জানান, সবকিছু ভালোভাবে হলেও জরুরি কিছু ওষুধের প্রয়োজন দেখা দেয়। তাৎক্ষণিক ওষুধ কেনার জন্য যাত্রীরা টাকা তুলতে শুরু করেন। ট্রেনটি তখনও ঈশ্বরদীর কাছাকাছি। তখন বাইরে ঝুম বৃষ্টি। ওষুধ কিভাবে জোগার করা যায়, এ নিয়ে আবার দুশ্চিন্তা। পরে তিনি ঈশ্বরদী স্টেশনের ভ্রাম্যমাণ টিকিট পরিদর্শক আব্দুল আলীমকে ফোন করে বিষয়টি জানান। আব্দুল আলীম ওষুধ কিনে ঈশ্বরদী বাইপাস স্টেশনে পাঠান। এরপর সেখানে ট্রেন থামলে ওই নারীকে ওষুধ সেবন করানো হয়। ধীরে ধীরে অনেকটাই সুস্থ হয়ে ওঠেন ওই নারী। রাত সাড়ে ৩টা নাগাদ ট্রেনটি দিনাজপুরের ফুলবাড়ি স্টেশনে পৌঁছায়। স্বামীর সঙ্গে এই স্টেশনেই নেমে যান ওই নারী।
টিটিই আমিরুল হক জাহেদী বলেন, চাকরি জীবনে ট্রেনের মধ্যে বেশকিছু মানবিক ঘটনা দেখেছি। এ ঘটনাটি আশ্চর্যের। তবে এমন মানবিক লোক আর দেখেনি। ট্রেনের মাইকে ঘোষণা শুনে ডাক্তার, নার্সসহ অন্যরা যেভাবে এগিয়ে এলেন। সারাটি রাত ওই নারী পাশে বসে থাকলেন, এটা সত্যিই প্রশংসনীয়।
ঘটনার পরে টিটিই আমিরুল হক জাহেদী চিকিৎসক মো. সানাউল্লাহসহ তার সঙ্গে সহযোগিতা করা নার্সদের সঙ্গে কথা বলেছেন। দুইজন চিকিসক ছাড়াও বেশ কয়েকজন নার্স সেখানে ছিলেন। তারা হলেন-ফারজানা আক্তার, মুন্নি খাতুন, নার্সিং ইন্সট্রাক্টর রেবেকা সুলতানা, খাদিজা খাতুন ও রুমি ইসলাম। তবে তাৎক্ষণিকভাবে কারও বিস্তারিত পরিচয় নেওয়া সম্ভব হয়নি।
চলারপথে ডেস্ক :
২০২৩ সালের শুরু থেকে নতুন কারিকুলামে পাঠদান চলছে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে। এ দুই শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নে কোনও প্রচলিত পরীক্ষা বা মডেল টেস্ট নেওয়া যাবে না বলে জানিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর। এ দুই শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন হবে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের গাইডলাইন অনুযায়ী। এ গাইডলাইনের বিষয়ে পরে স্কুলগুলোকে জানিয়ে দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছে অধিদপ্তর।
১৩ মার্চ সোমবার মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে এক আদেশে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে, মাধ্যমিক পর্যায়ের ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী শিখন-শেখানো ও মূল্যায়ন কার্যক্রমের ক্ষেত্রে এনসিটিবি প্রণীত শিক্ষক সহায়িকা এবং শিক্ষাক্রমের নির্দেশনা অনুসারে করতে হবে। শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নের ক্ষেত্রে প্রচলিত কোনও পরীক্ষা বা মডেল টেস্ট নেওয়া যাবে না। ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নের বিষয়ে এনসিটিবি থেকে যে গাইডলাইন পাওয়া যাবে তা পরবর্তীতে জানিয়ে দেওয়া হবে।
এতে আরো বলা হয়েছে, নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নে শিক্ষক, প্রতিষ্ঠান-প্রধান, উপজেলা বা থানা একাডেমিক সুপারভাইজার, উপজেলা বা থানা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার, জেলা শিক্ষা অফিসার, আঞ্চলিক উপপরিচালক এবং আঞ্চলিক পরিচালকদের নিয়মিত পরিবীক্ষণ জোরদার করতে হবে। নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট সবাইকে সচেষ্ট ও সচেতন থাকতে হবে। এ বিষয়ে কোনও রকমের ব্যত্যয় ঘটলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি দায়ী থাকবেন।