আখাউড়া প্রতিনিধি :
প্রথম দেখায় জায়গাটিকে সড়ক বলে বোঝাই দায়। নোংরা পানি-কাদায় একাকার হয়ে আছে শতাধিক পরিবারের চলার পথটি। কয়েক মাস ধরে এমন ভোগান্তিতে আছেন আখাউড়া উপজেলার ধাতুরপহেলা গ্রামের কয়েকশ মানুষ। চলার পথের এ অবস্থার কারণে তাঁদের পরিবারের ছেলে-মেয়েদের বিয়েও ভেঙে যায় বলে জানিয়েছেন কয়েকজন ভুক্তভোগী।
গ্রামবাসীর ভাষ্য, প্রভাবশালী কয়েকটি পরিবারের বাড়ির নোংরা পানি সরাসরি পড়ছে সড়কটিতে। ফলে দীর্ঘদিন ধরে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে সেখানে। ইট ফেলে হাঁটার ব্যবস্থা করেছেন ভুক্তভোগীরা। এভাবে চলাচল করতে গিয়ে পা পিছলে পড়ে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে।
এক ভুক্তভোগী বলেন, মোগড়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি হাবিবুর রহমানের গোয়াল থেকে প্রতিদিন গরুর বর্জ্য মেশানো পানি সরাসরি এখানে পড়ে। এ ছাড়া ভুট্টো মিয়া, আমির হোসেন, সেলিম মেম্বার, নাজির মিয়া, হামদু মিয়া, বিল্লাল, আনার, হেলাল, শামিম ও মোতালিব মিয়ার বাড়ির শৌচাগারের নোংরা পানি ও কলতলার পানিও উপচে আসে এ পথে। তবে তাঁরা প্রভাবশালী হওয়ায় প্রতিবাদ করতে পারছেন না।
আনু মিয়া নামের এক ভুক্তভোগী বলেন, ‘আমার মেয়ের বিয়ের জন্য পাত্রপক্ষের লোকজন এ পথের জন্য আসতে পারে না। লজ্জায় পড়তে হয়।’ শুধু তাই নয়, কিছুদিন আগে তাঁর এক সন্তানও নোংরা পানির কারণে অসুস্থ হয়েছিল। পরে তাকে হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে হয়।
হাবিবুর রহমান বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ‘শুধু আমার বাড়ির গোয়ালের পানিই নয়, আরো কয়েকটি পরিবারের পানি রাস্তায় পড়ে।’ তবে মানুষ চলাচলের জন্য রাস্তাটি উপযোগী করতে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।
মোগড়া ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. আলমগীর হোসেন বলেন, কয়েকটি পরিবারের ময়লা পানির কারণে শতাধিক পরিবার ওই পথ দিয়ে চলাচল করতে পারছে না। বিষয়টি চেয়ারম্যানও জানেন। তিনি দ্রুতই উভয়পক্ষকে ডাকবেন।
ইউপি চেয়ারম্যান মো. আব্দুল মতিন বলেন, রাস্তায় কেউ প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারবে না। এটা সম্পূর্ণ বেআইনি। সবার সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত বিষয়টি সমাধানের আশা করছেন।
চলারপথে রিপোর্ট:
বিস্তির্ণ ফসলের মাঠ চারপাশে। জমিতে যাওয়ার মেঠো পথ মাঝখান দিয়ে। পথের এক প্রান্তে গড়ে উঠেছে ছোট্ট বসতি। কৃষক ও কৃষি শ্রমিকরা এ পথ ধরে জমিতে যায়। বসতির লোকজনও এ পথ দিয়ে যাতায়াত করে।
পথের এক পাশে বড় একটি একটি পুকুর। পুকরের চারপাড়ে রয়েছে সহস্রাধিক কলা গাছের বাগান। গাছে গাছে ঝুলছে কলার ছড়া। কলাপাতার ফাঁক গলে উঁকি দিচ্ছে কলার মোচা। হাওয়ায় দুলছে কচি সবুজ কলাপাতা। এক অপরূপ দৃশ্য নজর কাড়ছে কৃষক, শ্রমিক, পথচারিদের। চলার পথে একটু দাঁড়িয়ে চোখ বুলায় কলাবাগানের দিকে। মাঝে মধ্যে স্থানীয় তরুন-যুবারাও আসে কলাবাগান দেখতে।
আখাউড়া উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়নের ছোট কুড়িপাইকা গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা সুবেদার (অব.) জাবেদ ইকবাল খন্দকার ছোট কুড়িপাইকা ফসলি মাঠে বাগানটি করেছেন। ইতোমধ্যে শতাধিক গাছে কলার ছড়া এসেছে। কয়েক ছড়া কলা নিজেরা খেয়েছেন। পাইকাররা এসে বাগান দেখে দরদাম করছেন। ফলন ভালো হওয়ায় তিনি উদ্যোক্তা খুশি। দুই লক্ষাধিক টাকার কলা বিক্রি হবে বলে আশা করছেন তিনি। বীর মুক্তিযোদ্ধা জাবেদ ইকবাল খন্দকারের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রায় ১ বছর আগে সাড়ে তিন বিঘা অনাবাদি জমিতে পুকুর খনন করেন। পুকুরের চারপাড়ে সবরি জাতের ৪’শ কলা রোপন করেন। সাথে কিছু সাগর ও আনাজি কলা। একটি চারা থেকে ৩/৪টি গাছ হয়েছে। বর্তমানে বাগানে প্রায় ১ হাজার ৩’শ কলা গাছ আছে। প্রায় দেড়শ গাছে কলা এসেছে। আরও আসছে।
কলা গাছের বাগান করার পরিকল্পনার বিষয়ে প্রবীন বীর মুক্তিযোদ্ধা জাবেদ ইকবাল খন্দকার আরও বলেন, আমি জমিতে এসে দেখি কৃষক-শ্রমিকরা রোদের মধ্যে জমিতে কাজ করে। রোদে বসে খাবার খায়। শ্রমিকরা প্রায়ই বলতো এখানে যদি গাছ থাকতো তাহলে তাদের সুবিধা হতো।
এজন্য আমি পুকুর খনন করে পুকুরের চার পাড়ে কলা গাছ রোপন করেছি। ১২টি কাঁঠাল গাছ লাগিয়েছি। শ্রমিকদের বলেছি বাগানে বসে খাবার খাওয়া এবং বিশ্রাম করার জন্য। অনেক সময় ছেলে মেয়েরা এখানে ঘুরতে আসে। বাগান দেখে আনন্দ পায়।
তিনি আরও বলেন, প্রায় ১৩ হাজার টাকার কলার চারা রোপন করেছেন। সবকিছু মিলিয়ে প্রায় ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। পুকুরে কাতল, রুইসহ বিভিন্ন জাতের মাছ চাষ করছেন। আশা করছেন দুই লক্ষাধিক টাকার কলা বিক্রি করতে পারবেন। শ্রমিক নিয়ে তিনি নিজেই বাগানোর দেখাশুনা করেন।
সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, কলা গাছে ছোট বড় কলার ছড়া ঝুলছে। পাতার ফাঁক গলে বেরিয়ে আসছে কলার মোচা। পুকুরে মাঝে মাঝে টুপ-টাপ শব্দ করে করে জানান দিচ্ছে মাছেরা আছে।
বীর মুক্তিযোদ্ধা জাবেদ ইকবাল খন্দকারের সৌদি আরব প্রবাসী পুত্র সুমন খন্দকার বলেন। বাবা সব সময় কৃষি কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। এতে তিনি আনন্দ পান। আমরা বিদেশ থেকে খোঁজ খবর রাখি। যখন যা প্রয়োজন হয় সহযোগিতা করি। বাগানটি দেখে খুব ভালো লাগছে।
আখাউড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তানিয়া তাবাস্সুম বলেন, ভালোভাবে পরিচর্যা করলে সবগুলো গাছেই কলা আসবে। সবরি কলার ফলন ভালো। রোগ-পোকার আক্রমন কম হয়। অন্যান্য কলার তুলনায় সবরি কলার পুষ্টিগুণ বেশি। আইরনের চাহিদা পূরণ করে।
সবরি কলার বাজার চাহিদাও বেশি। কৃষক আসাদের সাথে যোগাযোগ করতে আমরা তাকে পরামর্শ দিব। আমাদের উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তাকে বলবো বাগানটি দেখে আসতে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায় জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ ২০২২ উপলক্ষে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে সেরা নির্বাচিত করেছেন উপজেলা প্রশাসন। এরমধ্যে ৩ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠান, তিনজনকে শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠান প্রধান, তিনজন শ্রেষ্ঠ শিক্ষকসহ আরো কিছু ক্যাটাগরিতে সেরার স্বীকৃতি প্রদান করেছে।
সম্প্রতি এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানিয়েছে আখাউড়া উপজেলা প্রশাসন।
স্কুল পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান হয়েছেন কাজী মোঃ তারেক। তিনি উপজেলার উত্তর ইউনিয়নের আমোদাবাদ আলহাজ্ব শাহ্আলম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।
কাজী মোঃ তারেক উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত একজন অভিজ্ঞ ও দক্ষ শিক্ষক। তিনি এম.এ, এম.এড, ডিগ্রীর পাশাপাশি আইন বিষয়ে এল.এল.বি, এল.এল.এম এবং এস.এইচ.আর.এল ডিগ্রী অর্জন করেছেন। তিনি অত্যন্ত দক্ষতা, যোগ্যতা ও সুনামের সাথে বিদ্যালয়ে শিক্ষাকার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন। উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়া সত্বেও বিদ্যালয়ের ফলাফল ও অন্যান্য কার্যক্রম সন্তোষজনক।
কলেজ পর্যায়ে আখাউড়া ক্যামব্রিয়ান কলেজের অধ্যক্ষ গৌবিন্দ চন্দ্র রায় ও মাদ্রাসা পর্যায়ে টনকি ছাদেকুল উলুম আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো. আব্দুল কাইউম শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠান প্রধান হয়েছেন।
তাছাড়া শ্রেষ্ঠ শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান হিসেবে আখাউড়া ক্যামব্রিয়ান কলেজ (কলেজ পর্যায়), নাছরীন নবী পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (স্কুল পর্যায়) ও টনকি ছাদেকুল উলুম আলিম মাদ্রাসাকে (মাদ্রাসা পর্যায়) নির্বাচিত করা হয়।
কলেজ পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শ্রেণী শিক্ষক নির্বাচিত হয়েছেন আখাউড়া শহীদ স্মৃতি সরকারি কলেজের প্রভাষক (ইংরেজি) ফয়জুন্নেসা লিজা। স্কুল পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শ্রেণি শিক্ষক নির্বাচিত হয়েছেন দেবগ্রাম সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (বিজ্ঞান) মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ খান ও মাদ্রাসা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শ্রেণি শিক্ষক হয়েছেন টনকি ছাদেকুল উলুম আলিম মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক (আরবি) মো. রেজাউল কবির।
শ্রেষ্ঠ স্কাউট শিক্ষক নির্বাচিত হয়েছেন বাংলাদেশ রেলওয়ে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. সেলিম। শ্রেষ্ঠ গার্ল গাইড শিক্ষক নির্বাচিত হয়েছেন নাছরীন নবী পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক কাজী সাফিয়া খাতুন।
শ্রেষ্ঠ রোভার শিক্ষক নির্বাচিত হয়েছেন আখাউড়া শহীদ স্মৃতি সরকারি কলেজের প্রভাষক (রসায়ন) এ জেড এম শামসুল আরেফিন। শ্রেষ্ঠ শিক্ষার্থী হিসেবে দেবগ্রাম সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী অদ্বীপ্ত চক্রবর্তী, টনকি ছাদেকুল উলুম আলিম মাদ্রাসার আলিম প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী মারিয়া আক্তার ও আখাউড়া ক্যামব্রিয়ান কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী তাসলিমা খানমকে নির্বাচিত করা হয়।
শ্রেষ্ঠ স্কাউট নির্বাচিত হয়েছেন দেবগ্রাম সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী মো. ইমতিয়াজুর রহমান। শ্রেষ্ঠ রোভার নির্বাচিত হয়েছেন আখাউড়া শহীদ স্মৃতি সরকারি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী মো. ইমন।
শ্রেষ্ঠ স্কাউট গ্রুপ নির্বাচিত হয়েছেন মো. ইমতিয়াজুর রহমান ও তার দল। তারা দেবগ্রাম সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী। এ ব্যাপারে আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অংগ্যজাই মারমা বলেন, বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে আবেদনের পরিপেক্ষিতে তাদেরকে নির্বাচিত করা হয়েছে। এর মাধ্যমে নিজ নিজ দায়িত্ব পালন সম্পর্কে শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে এক ধরনের আগ্রহ সৃষ্টি হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
আখাউড়ায় জায়গা সংক্রান্ত বিষয়ে পূর্ব শত্রুতার জেরে এক যুবলীগ সদস্যের বাড়িতে হামলা ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে।
হামলাকারীরা ঘরের দরজা-জানালাসহ মূল্যবান জিনিষপত্র ভাংচুর করে লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি করেছে।
এসময় বাড়ির নারীদেরকে অকথ্য গালাগাল ও মারধরের চেষ্টা করেছে হামলাকারীরা।
গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় উপজেলার উত্তর ইউনিয়নের করুয়াতলী পূর্বপাড়ার মোঃ আলাল মিয়ার বাড়িতে এ হামলার ঘটনা ঘটে। সে ওই গ্রামের মৃত আকরাম আলীর পুত্র এবং সদ্য ঘোষিত আখাউড়া উত্তর ইউনিয়ন যুবলীগের আহবায়ক কমিটির সদস্য।
হামলার ঘটনায় আলাল মিয়া বাদী হয়ে তিনজনকে অভিযুক্ত করে রোববার দুুপুরে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। অভিযুক্তরা হলো একই গ্রামের মৃত করম আলীর পুত্র জুম্মান মিয়া (৩২), নায়েব আলীর পুত্র রনি মিয়া (২৮) ও এমরান মিয়ার স্ত্রী নাছরিন বেগম (২৭)।
বাদীর লিখিত অভিযোগে বলা হয়, জায়গা সম্পত্তি নিয়া আলাল মিয়া ও জুম্মান মিয়ার মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল।
বিষয়টি সমাধানের জন্য আলাল মিয়া স্থানীয় চেয়ারম্যানের কাছে বিচার প্রার্থী হয়।
এতে জুম্মান মিয়া আরও ক্ষিপ্ত হয়ে মাদকাসক্ত রনি ও তার সাঙ্গপাঙ্গদেরকে নিয়ে শনিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে আলাল মিয়ার বাড়ি-ঘরে হামলা করে। মূল্যবান জিনিষপত্র ভাংচুর করে লক্ষাধিক টাকার ক্ষতিসাধন করে। পরে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে হামলাকারীরা ভয় ভীতি দেখিয়ে চলে। এঘটনার পর থেকে আলাল মিয়া ও তার পরিবারের লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে আখাউড়া উত্তর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও যুবলীগ নেতা মোহাম্মদ শাহজাহান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, জায়গা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধ রয়েছে। বিষয়টি সমাধানের জন্য আলাল মিয়া আমার কাছে আবেদন করে।
আবেদনের প্রেক্ষিতে আগামী ২২ মে মাপঝোঁকের তারিখ ধার্য্য ছিল। এর আগে আলাল মিয়ার বাড়িতে হামলা হয়েছে। এটা বিচার কার্যকে বাধাগ্রস্থ করার পায়তারা তিনি আরো বলেন, অভিযুক্ত রনি মাদকাসক্ত ও উচ্ছৃঙ্খল প্রকৃতির। এর আগে সে একটি বিচারের রায় অমান্য করে। আখাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো) আসাদুল ইসলাম বলেন, উভয়পক্ষের মধ্যে জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল।
এ ব্যপারে একটি পক্ষের লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা ও আখাউড়ায় সাবেক আইনমন্ত্রী এডভোকেট আনিসুল হকের গ্রেপ্তারে আনন্দ মিছিল ও কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসাবে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন উপজেলা বিএনপি ও অংগ সংগঠন।
আজ ১৪ আগস্ট বুধবার দুপুরে কসবা পৌরশহরে এসব কর্মসুচি পালন করেন বিএনপি নেতৃবৃন্দ। দুপুরে কসবা উপজেলা সদরের সুপার মার্কেট থেকে আনন্দ মিছিলটি বের হয়। মিছিলটি কসবা পৌর শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে পুনরায় উপজেলা সুপার মার্কেট চত্বরে এসে শেষ হয়।
উপজেলা বিএনপির সাবেক আহবায়ক এডভোকেট ফখর উদ্দিনের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. শরীফুল হক স্বপন, উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মুহাম্মদ ইলিয়াছ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. ইকলিল আজম, উপজেলা বিএনপি’র কার্যনির্বাহী সদস্য ও যুবদলের সাবেক আহবায়ক মো. কামাল উদ্দিন, উপজেলা যুবদল আহবায়ক মো. মাসুদুল হক ভুইয়া দীপু, সদস্য সচিব মো. জিয়াউল হুদা শিপন, পৌর বিএনপির আহবায়ক মো. শরীফুল ইসলাম ভূইয়া, সদস্য সচিব মো. আইয়ুম খান, উপজেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি মেহেদী হাসান রুবেলসহ দলীয় নেতা-কর্মীরা। এর আগে গতকাল মঙ্গলবার রাতে সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের গ্রেপ্তারের খবরে তার নিজ এলাকা কসবায় তাৎক্ষণিকভাবে বিএনপির উদ্যোগে আনন্দ মিছিল, মিষ্টি বিতরণ এবং কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়েছে।
এসময় তারা আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের ফাঁসি দাবি করেন। এদিকে সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের গ্রেপ্তারের সংবাদে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় আনন্দ মিছিল করেছে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। মঙ্গলবার রাত সাড়ে আটটায় পৌরশহরের সড়ক বাজার তিন রাস্তার মোড় থেকে মিছিলটি বের হয়ে প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে রেলওয়ে স্টেশন রোডে পথসভা করে।
বক্তব্য রাখেন উপজেলা বিএনপির আহবায়ক মোঃ জয়নাল আবেদীন আব্দু, সদস্য সচিব ডাঃ খোরশেদ আলম ভূইয়া, পৌর বিএনপির আহবায়ক মেঃ সেলিম ভূইয়া, সদস্য সচিব মোঃ আক্তার খান, যুবদলের আহবায়ক মো: জাকির হোসেন, সদস্য সচিব মো: মহসিন ভূইয়া, পৌর যুবদলের আহবায়ক মেঃ জাবেদ আহমেদ, ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জিয়াউল হাসান সানী প্রমুখ। বক্তারা আনিসুল হকের ফাঁসির দাবি জানান। সভা শেষে আনিসুল হকের কুশপুত্তলিকায় আগুন দেয়া হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
আখাউড়ায় রেলওয়ে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন সড়কের পাশে আখাউড়া পৌরসভার ময়লার ভাগাড়। বছরের পর বছর ধরে রেলওয়ে ষ্টেশনের অদুরে রেলওয়ে ভূমিতে পৌরসভার ময়লা আবর্জনা ফেলা হয়। গুরুত্বপূর্ণ আখাউড়া-চান্দুরা আঞ্চলিক সড়কের উত্তর পাশে ময়লার ভাগাড় থাকায় রেলওয়ে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীসহ হাজার হাজার পথচারিদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। দূর্গন্ধের কারণে নাক চাপা দিয়ে পথচলতে হয় ছাত্রছাত্রীসহ সাধারণ মানুষকে। ভাগাড়ের ময়লার উৎকট দূর্গন্ধে শ্রেণী কক্ষে বসে থাকতে পারছে না শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। ফলে ব্যাহত হচ্ছে পাঠদান।
এ দূর্বিষহ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রায় দেড় মাস আগে আখাউড়া পৌরসভার মেয়রের নিকট চিঠি দিয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ করেছেন। অবগত করেছেন ইউএনও এবং শিক্ষা অফিসারকেও। কিন্তু প্রশাসনের কোন উদ্যোগ না থাকায় এ নরক যন্ত্রণা থেকে মুক্তি মিলছে না কোমলমতি শিক্ষার্থীদের। এদিকে দূর্গন্ধে ক্লাশে বসে থাকতে অসুবিধা হওয়ায় ছাত্রছাত্রীদের দরখাস্তের প্রেক্ষিতে ৩ দিন সব ক্লাশ শেষ না করেই বিদ্যালয় ছুটি দেওয়া হয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পৌরশহরের অন্তত ৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কয়েক হাজার ছাত্রছাত্রী এ সড়ক দিয়ে যাতায়াত করে। এছাড়াও আখাউড়া রেলওয়ে ষ্টেশন এবং আজমপুর রেলওয়ে ষ্টেশন হয়ে প্রতিদিন কয়েকশত ট্রেন যাত্রী এ সড়ক দিয়ে যাতায়াত করে। দৈনন্দিক বাজার সদায়সহ বিভিন্ন কাজে এই সড়ক দিয়ে চলাচল করে। ময়লার ভাগাড়ের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় দূর্গন্ধে নাক চাপা দিয়ে যেতে হয়। মানুষের দম বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়ে উঠে। মরার উপর খাড়ার ঘা হিসেবে হরিজন কলোনীর পোষা শুকুর দিনভর ময়লা-আবর্জনায় বিচরণ করার কারণে উৎকট দূর্গন্ধ আরও তীব্র হয়ে উঠে।
রেলওয়ে স্কুলের কয়েকজনের শিক্ষার্থীর সাথে কথা হয়। তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, স্কুলের সামনে ময়লা আবর্জনা ফেলার কারণে দুর্গন্ধে আমাদের খুব সমস্যা হচ্ছে। ক্লাশে বসে থাকতে অসুবিধা হয়। অতিরিক্ত দূর্গন্ধের কারণে বিদ্যালয় ছুটি দিয়ে দেওয়ার জন্য হেড স্যারের কাছে দরখাস্ত দিয়েছি।
রেলওয়ে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়েল সিনিয়র সহকারী শিক্ষক হাবিবুর রশিদ বলেন, আমাদের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের নিয়ে অনেক সমস্যার মধ্যে আছি। প্রতিদিনই কেউ না কেউ অসুস্থ বোধ করছে। আমরা পড়ালেখার জন্য নিরাপদ পরিবেশ চাই। মাহমুদুল হাসান সোহাগ নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, পৌরশহরের প্রাণকেন্দ্রে স্কুলের সামনে রাস্তার পাশে ময়লার দুর্গন্ধে মানুষের কষ্ট চরম পর্যায়ে চলে গেছে।
সড়ক বাজারের এক ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার মাসুদ রানা প্রতিদিন এই সড়ক দিয়ে আসা-যাওয়া করেন। তিনি বলেন, ময়লার ভাগাড়ের সামনে আসলে নাকে চাপা দিয়ে চোখ করে রাখি তারপরও মনে হয় বন্ধ হয়ে আসে। এগুলো আমাদের পরিবেশ খারাপ করছে। দ্রুত এগুলো অপসারণ করার দাবি করেন তিনি।
একটি বেসরকারি প্রতিষ্টানের কর্মকর্তা মেহেদী হাসান পলাশ পেশাগত কাজে মাঝে মাঝে আখাউড়া আসেন। তিনি বলেন, দূর্গন্ধের কারণে এই রাস্তা এড়িয়ে চলার চেষ্টা করি। এমন গুরুত্বপূর্ণ সড়কের পাশে ময়লা না ফেলে অন্যত্র ফেলা উচিত।
সুহেল খাদেম বলেন, এই দুর্বিষহ দুর্গন্ধের কারণে সুস্থ্য মানুষ অসুস্থ হয়ে যাবে। অন্তত ছাত্রছাত্রীদের সুস্থ্যতার কথা চিন্তা করে এখান থেকে ময়লা আবর্জনা সরিয়ে নেওয়া দরকার। দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা জন্য পৌর মেয়রের কাছে অনুরোধ করছি।
আখাউড়া রেলওয়ে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আসাদুজ্জামান খান বলেন, ময়লার দুর্গন্ধে ছাত্রছাত্রীরা শ্রেণীকক্ষে বসে থাকতে পারে না। দূর্গন্ধে ক্লাশ করতে অসুবিধা হয়। ছাত্রছাত্রীরা ২/৩ টি ক্লাশের পর বিদ্যালয় ছুটি দেওয়ার আবেদন করে। এজন্য ৩ দিন স্কুল ছুটি দিতে হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, এসএসসি পরীক্ষার আগে পৌরসভার মেয়রকে চিঠি দিয়ে বিষয়টি অবগত করেছিলাম। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানিয়েছি। এছাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং শিক্ষা অফিসারকেও বিষয়টি অবগত করেছি। কিন্তু এ বিষয়ে কোন পদক্ষেপ দেখছি না।
আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার অংগ্যজাই মারমা বলেন, এটি পৌরসভার দায়িত্ব। আমি পৌর মেয়রের সাথে এ ব্যপারে কথা বলেছি। তিনি আশ^স্ত করেছেন এ ব্যপারে ব্যবস্থা নিবেন।
এ ব্যাপারে আখাউড়া পৌরসভার মেয়র তাকজিল খলিফা কাজল বলেন, ময়লা ফেলার জন্য আমরা জায়গা খোঁজ করছি। জায়গা না পাওয়া পর্যন্ত এখানেই বর্জ্য ফেলা হবে। পৌরসভা থেকে ব্লিচিং পাউডার দেওয়া হবে। এ সময় তিনি সাংবাদিকদেরকে সমালোচনা না করে জায়গা খুঁজে দিতে বলেন।