আশুগঞ্জ প্রতিনিধি :
আগামী ১ ফেব্রুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২-(সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের উপ-নির্বাচন। নির্বাচনে বিএনপি থেকে পদত্যাগ করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়া এই আসনের ৫ বাবের সাবেক সংসদ সদস্য উকিল আবদুস সাত্তার ভূইয়ার (কলারছড়ি) প্রতীক পক্ষে কাজ করতে ও নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি বাড়াতে আশুগঞ্জ উপজেলার সকল স্তরের জনপ্রতিনিধিদের (ইউপি চেয়ারম্যান, মেম্বার) নির্দেশনা দিয়েছে আওয়ামীলীগ।
উপ-নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি বৃদ্ধিও অবাধ, সুষ্ঠ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকারের প্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সাথে আজ ২৭ জানুয়ারি শুক্রবার সকালে অনুষ্ঠিত এক মতবিনিময় সভায় এই নির্দেশনা দেয়া হয়। আশুগঞ্জ উপজেলা পরিষদ মাঠে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা আল-মামুন সরকার।
আশুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ হানিফ মুন্সীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম ওরফে শিউলি আজাদ, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুল বারী চৌধুরী মন্টু, জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল হান্নার রতন, বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারি কল্যাণ ট্রাস্টের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ শাহজাহান আলম সাজু, বাংলাদেশ আইন সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট কামরুজ্জামান আনসারি, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু নাছের আহমেদ।
মতবিনিময় সভায় বক্তারা বলেন, বিএনপির ভুল রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের কারনে জাতীয় সংসদ থেকে উকিল আবদুস সাত্তার পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। তিনি তার ভুল বুঝতে পেরে উপ-নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশগ্রহন করেছেন।
বক্তারা বলেন, উকিল আবদুস সাত্তার ভূইয়া একজন ভালো মানুষ। এই আসনের নির্বাচিত ৫বারের সাবেক এমপি। তৃনমূলে তার ব্যাপক জনসমর্থন রয়েছে। এদিকে এই আসনে আওয়ামীলীগের কোন প্রার্থী নেই। আওয়ামীলীগ গণতন্ত্র, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে বিশ্বাসী। তাই আওয়ামীলীগ উকিল আবদুস সাত্তারকে সমর্থন দিয়েছে। নির্বাচনে তার জয়ের মধ্য দিয়ে আবারো প্রমান হবে আওয়ামীলীগ অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠ নির্বাচনে বিশ্বাসী। দেশ ও বিদেশে এ বার্তা প্রচার হবে। এ জন্য ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ও তৃণমুলের নেতা-কর্মীদের সজাগ থাকতে হবে। যাতে নির্বাচনের দিন বিএনপি-জামাত কোন ধরনের বিশৃংখলা সৃষ্টি করতে না পারে। এজন্য এ উপ-নির্বাচনকে নিজেদের নির্বাচন মনে করে বেশী সংখ্যক ভোটারের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে।
মতবিনিময় সভায় উপজেলার ৮টি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেম্বারগন উপস্থিত ছিলেন।
অনলাইন ডেস্ক :
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বর্তমান স্বৈরশাহী দেশে বিরোধীদলহীন নিষ্ঠুর একদলীয় রাষ্ট্র কায়েমে বদ্ধপরিকর। তবে তাদের এই সাধ কোনোদিন পূরণ হবে না। বাংলাদেশের মানুষ গণতন্ত্রপ্রিয়, তারা বহু মত, পথ ও বিশ্বাসের ঐতিহ্যকে কখনোই ধুলিস্যাৎ হতে দেবে না।
আজ ২১ জুলাই শুক্রবার এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন। বিবৃতিতে তিনি নুরুল হক নুরের নেতৃত্বাধীন গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ভবনের মালিক পক্ষের তালা লাগিয়ে দেওয়ার পর উদ্ভূত পরিস্থিতিতে দলটির নেতাকর্মীদের পুলিশের বেধড়ক লাঠিচার্জের ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যরাতের মহাভোট ডাকাতির নির্বাচনের পর বর্তমান সরকারের দুঃশাসন আরো ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করেছে। সরকার দেশকে বিরোধী দলশূন্য করতে এখন মাঠে নেমেছে। আর এজন্য বিরোধী দলের নেতাকর্মী এবং প্রতিবাদী জনগণের ওপর নির্যাতন-নিপীড়ন চালিয়ে দেশব্যাপী আতঙ্কের বিস্তার ঘটাচ্ছে, যাতে সরকারের দুঃশাসনের বিরুদ্ধে কেউ সমালোচনা করতে সাহসী না হয়।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, নুরুল হক নুরের নেতৃত্বাধীন গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ভবনের মালিক পক্ষ কর্তৃক তালা লাগিয়ে দেওয়াসহ ভবনে প্রবেশের সময় পুলিশ গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালিয়ে কমপক্ষে ৩০ জন নেতাকর্মীকে আহত করার ঘটনায় তা আবারও প্রমাণিত হলো।
চলারপথে রিপোর্ট :
বজ্রপাত ও শিলাবৃষ্টির কারণে সরাইল উপজেলায় শনিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে বিদ্যুতের প্রবাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপর টানা ২৩ ঘণ্টা পর রবিবার রাত ১১টার দিকে পুরো উপজেলায় একযোগে বিদ্যুৎ আসে। এরপরও চলতে থাকে লোডশেডিং। দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎবিহীন থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন উপজেলাবাসী।
বিদ্যুৎ না থাকার জন্য বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিউবো) কর্তৃপক্ষের ‘খামখেয়ালি’কে দায়ী করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। অন্যদিকে বিউবোর কর্মকর্তারা সঞ্চালন লাইনে ‘সমস্যা’ হওয়ার কথা জানান।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলা সদরের বড় দেওয়ানপাড়া বাসিন্দা কলেজশিক্ষক মাহবুব খান বলেন, ‘এখানে বৃষ্টির দু-চারটি ফোঁটা পড়লেই টানা দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎ থাকে না। কর্তৃপক্ষের খামখেয়ালির কারণেই এমনটি হয়ে থাকে। এখন চলছে রোজার মাস। এ সময়ে আমরা চরম ভোগান্তিতে আছি।’
সরাইল শতভাগ বিদ্যুৎ–সুবিধার আওতায় আসা একটি উপজেলা। এর নয়টি ইউনিয়নের মধ্যে সদরসহ সাতটি ইউনিয়নে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিউবো) বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের আওতাধীন। এখানে গ্রাহকসংখ্যা ৪৪ হাজার ৫০০। বিউবোর এ বিপুলসংখ্যক গ্রাহকের অধিকাংশই শনিবার রাত ১২টার পর থেকে টানা ২৩ ঘণ্টার বিদ্যুৎবিহীন ছিলেন।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সামান্য হাওয়াসহ শিলাবৃষ্টি আর বজ্রপাতের কারণে শনিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে উপজেলা সদরসহ পুরো উপজেলায় বিদ্যুৎ চলে যায়। শাহবাজপুর ও কালীকচ্ছ ইউনিয়নে বিকেল চারটার দিকে বিদ্যুৎ আসে। এ দুটি ইউনিয়নে আবার বিদ্যুৎ চলে যায় সন্ধ্যা ছয়টার দিকে। এরপর সরাইল সদর, পানিশ্বর, চুন্টা, শাহজাদাপুর ও নোয়াগাঁও ইউনিয়নে রোববার রাত ১১টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ আসেনি। নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুতের অভাবে উপজেলাবাসী চরম ভোগান্তিতে পড়েন। অনেকের বাসাবাড়ি কিংবা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ফ্রিজে রাখা খাদ্যসামগ্রী নষ্ট হয়ে যায়।
শাহবাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি খাইরুল হুদা চৌধুরী বলেন, শনিবার দিবাগত রাতে বিদ্যুৎ চলে যায়। রবিবার বিকেল চারটার দিকে আসে। কিছুক্ষণ পর আবার চলে যায়। এখানে আকাশে মেঘ দেখা দিলেই এমনটি হয়ে থাকে, দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎ থাকে না।
ছোট দেওয়ানপাড়ার বাসিন্দা সমাজকর্মী রওশন আলী বলেন, ‘সরাইল বিদ্যুৎ কার্যালয়ে কর্মচারীদের মধ্যে গ্রুপিং আছে। এক গ্রুপ অন্য গ্রুপকে সহ্য করতে পারে না। কেউ কাউকে সহায়তা করে না। এ কারণে এখানে আমাদের ভোগান্তি হচ্ছে আরও বেশি।’
স্বল্প সময়ের মধ্যে বিদ্যুৎ–সংযোগ দিতে না পেরে দুঃখ প্রকাশ করেন বিউবোর সরাইল উপজেলা কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী (বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ) আবদুর রউফ। তিনি বলেন, ‘শনিবার দিবাগত রাতের প্রচণ্ড বজ্রপাতের প্রভাবে সঞ্চালন লাইনে সমস্যা হয়। এ সমস্যা চিহ্নিত করতে সময় লেগেছে। এ জন্য বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে অনেক দেরি হয়েছে। পরবর্তী সময়ে এ ধরনের সমস্যার দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করা হবে।’
অনলাইন ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, স্বাধীনতা-সংগ্রামে বিশ্ব জনমত সৃষ্টিতে প্রবাসীরা বড় অবদান রাখেন। প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রাম, মুক্তিযুদ্ধে প্রবাসীদের অবদান রয়েছে। এখন প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স বাংলাদেশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি।
১৬ জানুয়ারি মঙ্গলবার দুপুরে গণভবনে প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, প্রবাসীরা আমাদের স্বাধীনতা-সংগ্রামে, যেকোনো আন্দোলনে অবদান রেখেছেন। যখন বাংলাদেশে মার্শাল ল জারি হয়, আমরা যখন কাজ করতে পারি না, তখন প্রবাসীরা প্রতিবাদ জানান। আপনারা আন্দোলন-সংগ্রাম করেন, জনমত সৃষ্টি করেন, এটা আমাদের জন্য বিরাট শক্তি।
তিনি বলেন, ৭ জানুয়ারি নির্বাচন হয়ে গেছে। আমি জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই, কারণ জনগণই স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিতে এসেছে। কারণ বিএনপি যখন নির্বাচনে আসবে না, কেউ যাতে নির্বাচনে না আসে, কেউ যেন ভোট না দেয় এর জন্য লিফলেট বিতরণ শুরু করল। এই লিফলেট বিতরণের পরে ঘটনা উল্টো হয়ে গেল, মানুষজন আরও উৎসাহিত হলো, আমাদের ভোট দিতেই হবে।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, সেই ক্ষেত্রে একটা সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে। নির্বাচন স্বচ্ছ, সুষ্ঠু, কোনোরকম দুর্ঘটনা যেন না ঘটে, একটা অবাধ-নিরপেক্ষ নির্বাচন যাতে হয়– সেই প্রচেষ্টাই আমাদের ছিল। যার কারণে একের পর এক নির্বাচনে সংস্কার আমরা নিয়ে আসি। কারণ সেনা শাসকরা যখন একের পর এক ক্ষমতা দখল করে তখন তারা নির্বাচনে ভোট কারচুপি করা শুরু করেছিল। সেই জায়গা থেকে মানুষের অধিকার মানুষকে ফিরিয়ে দেওয়ার সেই আন্দোলন-সংগ্রামটাই আমরা করেছি।
শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর দেশের মানুষ উপলব্ধি করেছে সরকার জনগণের সেবক। সেই ঘোষণা জাতির পিতা দিয়েছিলেন, আমি জাতির পিতার কন্যা হিসেবে তারই পদাঙ্ক অনুসরণ করে সেই ঘোষণাটাই দিয়েছি– আমি প্রধানমন্ত্রী না, জাতির জনকের কন্যা হিসেবে মানুষের সেবক হিসেবে কাজ করবে, যেন মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করতে পারি।
তিনি বলেন, আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি, যেটা ২০২৪ সালে কার্যকর করার কথা ছিল, সেটা আমরা দুই বছর বাড়িয়ে নিয়েছি। করোনাভাইরাসের অতিমারি, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ, এরপর ফিলিস্তিনের ওপর হামলা, শিশু-নারী হাসপাতালে আক্রমণ করা। আমরা সবসময় ফিলিস্তিনের পক্ষে আছি। এভাবে একটা জাতিকে ধ্বংস করা, নারীদের ধ্বংস করা, এটা এক ধরনের গণহত্যা। আমরা সাহায্য পাঠিয়েছি, আগামীতে পাঠাব। এরপর আবার ইয়মেনে আক্রমণ। আমরা যুদ্ধ চাই না, শান্তি চাই। মিয়ানমার যখন অশান্ত হলো, তারা আশ্রয় চাইল, আমরা তাদের আশ্রয় দিয়েছি। মিয়ানমারের সঙ্গে আমরা আলোচনা করেছি, আমরা যুদ্ধে যাইনি। কারণ আমরা শান্তি চেয়েছি।
সরকারপ্রধান বলেন, আজ এই যে অস্ত্র প্রতিযোগিতা, আন্তর্জাতিকভাবে আমি যেখানেই গিয়েছি সেখানেই বলেছি, এই অস্ত্র প্রতিযোগিতা বন্ধ করে ওই টাকা শিশুদের খাদ্য, শিশুদের চিকিৎসা, শিশুদের শিক্ষায় ব্যয় হোক। মানবকল্যাণে ব্যয় করা হোক, যে দেশ এই টাকা ব্যয় করছে, সেই টাকা তো ওই দেশের জনগণের ট্যাক্সের টাকা, তাদের টাকা ধ্বংসের জন্য কেন ব্যয় হবে, ধ্বংসাত্মক কাজে কেন ব্যয় হবে, মানবকল্যাণে ব্যয় হোক। আজ শিশুরা কষ্ট পায়, নারীরা কষ্ট পায়, মানবজাতি কষ্ট পায় সে ধরনের কাজ করতে হবে কেন। আমরা এর ঘোর বিরোধিতা করি, আমরা কখনো যুদ্ধ চাই না, শান্তি চাই।
শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি অফিসে তারাই তালা দেয়, তারাই ভাঙে। তারা বলে চাবি হারিয়েছে, চাবি খোয়া গেছে। চাবিটা গেল কোথায়? তারাই তো তালা দিয়েছে। তাদের চাবি হারাবে, তারাও পথ হারাবে। তারা এখন পথ হারানো পথিক হয়ে গেছে। জানি না তাদের সাংগঠনিক কোনো যোগ্যতা আছে কি না, একটাই আছে আগুন দেওয়া।
অনলাইন ডেস্ক :
রাজনৈতিক দল হিসেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় বাতিল করেছেন আপিল বিভাগ। আজ ১ জুন রবিবার দলটির পক্ষে করা আপিল গ্রহণ করে রায় দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ। এর ফলে জামায়াতকে নির্বাচন কমিশনের দেওয়া নিবন্ধনের সিদ্ধান্ত বৈধ বলে গণ্য হবে বলে জানিয়েছেন দলটির আইনজীবীরা।
এদিকে, জামায়াতের দাঁড়িপাল্লা প্রতীকের বিষয়ে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানিয়েছেন আপিল বিভাগ।
এর আগে গত ১৪ মে এ মামলায় আপিল শুনানি শেষে রায়ের জন্য ১ জুন দিন ধার্য করেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত। ওইদিন আদালতে জামায়াতের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী এহসান এ সিদ্দিক ও আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। নির্বাচন কমিশনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী তৌহিদুল ইসলাম।
২০২৩ সালের ১৯ নভেম্বর জামায়াতের পক্ষে কোনও আইনজীবী আদালতে উপস্থিত না থাকায় আদালত আপিল মামলাটি খারিজ করে দেন।
এরপর আপিলটি পুনরুজ্জীবনের জন্য আবেদন করা হয়। গত বছরের ২২ অক্টোবর আদালত বিলম্ব মার্জনা করে আপিলটি শুনানির জন্য রিস্টোর করেছেন অর্থাৎ পুনরুজ্জীবন করেছেন। এরপর ৩ ডিসেম্বর আপিলের ওপর শুনানি শুরু হয়েছিল। চতুর্থ দিনের মতো শুনানি শেষে মামলার রায়ের দিন ধার্য করা হয়।
২০০৮ সালের ৪ নভেম্বর জামায়াতে ইসলামীকে সাময়িক নিবন্ধন দেওয়া হয়। পরের বছর বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের তৎকালীন সেক্রেটারি জেনারেল সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরী, জাকের পার্টির তৎকালীন মহাসচিব মুন্সি আবদুল লতিফ, সম্মিলিত ইসলামী জোটের প্রেসিডেন্ট মাওলানা জিয়াউল হাসানসহ ২৫ জন জামায়াতের নিবন্ধনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট করেন।
রিটে জামায়াতের তৎকালীন আমির মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, নির্বাচন কমিশনসহ চারজনকে বিবাদী করা হয়। তারা জামায়াতের নিবন্ধন বাতিলের আর্জি জানান।
এ রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক (পরে প্রধান বিচারপতি) ও বিচারপতি মো. আবদুল হাইয়ের (বর্তমানে অবসর) হাইকোর্ট বেঞ্চ ২০০৯ সালের ২৭ জানুয়ারি রুল জারি করেন। নিবন্ধন নিয়ে রুল জারির পর ওই বছরের ডিসেম্বরে একবার, ২০১০ সালের জুলাই ও নভেম্বরে দু’বার এবং ২০১২ সালের অক্টোবর ও নভেম্বরে দু’বার তারা গঠনতন্ত্র সংশোধন করে নির্বাচন কমিশনে জমা দেয় জামায়াত। এসব সংশোধনীতে দলের নাম ‘জামায়াতে ইসলামী, বাংলাদেশ’ পরিবর্তন করে ‘বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী’ করা হয়।
২০১৩ সালের ১২ জুন ওই রুলের শুনানি শেষ হয়। একই বছরের ১ আগস্ট জামায়াতকে দেওয়া নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নিবন্ধন সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে অবৈধ বলে রায় দেন বিচারপতি এম মোয়াজ্জাম হোসেন (বর্তমানে অবসর), বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম (পরে আপিল বিভাগের বিচারপতি পদ থেকে পদত্যাগ করেন) ও বিচারপতি কাজী রেজা-উল-হকের (১৯ নভেম্বর পদত্যাগ করেন) সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের বৃহত্তর (লার্জার) বেঞ্চ।
সে সময় সংক্ষিপ্ত রায়ে আদালত বলেন, এ নিবন্ধন দেওয়া আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত। একইসঙ্গে আদালত জামায়াতে ইসলামীকে আপিল করারও অনুমোদন দিয়ে দেন।
তবে এ রায়ের উপর স্থগিতাদেশ চেয়ে জামায়াতের করা আবেদন একই বছরের ৫ আগস্ট খারিজ করে দেন আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী। পরে একই বছরের ২ নভেম্বর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হলে জামায়াতে ইসলামী আপিল করে। ২০২৩ সালের ১৯ নভেম্বর জামায়াতের আপিল খারিজ করে দেন আপিল বিভাগ।
এরপর ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে টানা চতুর্থ মেয়াদে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসে। তবে গত বছর জুলাই মাস থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা কোটা প্রথার বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করে। এ আন্দোলনে গণহত্যার অভিযোগে ছাত্র-জনতা সরকার পতনের দাবি তোলে। এর মধ্যে ১ আগস্ট সরকার অঙ্গসংগঠনসহ জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর জামায়াতে ইসলামী নিষিদ্ধের আবেদন বাতিলের উদ্যোগ নেয়। গত ২৮ আগস্ট সরকার আগের নিষিদ্ধের আদেশ বাতিল করে। এরপর আপিল বিভাগে নিবন্ধন মামলাটি পুনরায় শুনানির জন্য আবেদন করে জামায়াত।
অনলাইন ডেস্ক :
খুনের মাধ্যমে জিয়া পরিবারের উত্থান হয়েছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জিয়াউর রহমান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যের নির্মমভাবে হত্যা করে। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট তার ছেলে তারেক জিয়া গ্রেনেড হামলা চালিয়ে ২৪ জন মানুষের জীবন কেড়ে নিয়েছে। তাদের উত্থানই হয়েছে খুনের মাধ্যমে।
আজ ২৫ আগস্ট শুক্রবার বিকেলে রাজশাহীর বাঘা উপজেলার প্রাচীন বিদ্যাপীঠ আড়ানী মনোমোহিনী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বাঘা উপজেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে এক শোকসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
বাঘা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বাবুলের সঞ্চালনায় তথ্যমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়নে তাঁর সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা একের পর এক উন্নয়ন করে চলেছেন। এ প্রজন্মের শিক্ষার্থীরা কুপি, চেরাগ বাতি চেনে না। কারণ দেশে এখন শতভাগ বিদ্যুতায়ন হয়েছে। আমরা নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করেছি।
ঢাকায় ইতোমধ্যে মেট্রো রেল চালু হয়েছে। এ ছাড়া অনেকগুলো মেগাপ্রকল্প চলমান। অথচ মির্জা ফখরুল বলেন- দেশে উন্নয়ন হয়নি।
বিএনপির সমালোচনা করে হাছান মাহমুদ আরো বলেন, ইদানীং লক্ষ করছি বিএনপি নেতাদের গলায় হতাশার সুর।
কারণ তারা ভেবেছিল তাদের সব চাওয়া পূর্ণ করে নির্বাচন হবে। তারা বিদেশিদের সাপোর্ট পাবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো দেশ তাদের আহ্বানে সাড়া দেয়নি। কারণ শেখ হাসিনার প্রতি সব দেশের আস্থা ও বিশ্বাস রয়েছে। তারা বুঝতে পেরেছে এ দেশে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম সভাপতির বক্তব্যে বলেন, আমরা আজ যে স্কুল মাঠে শোকসভা করছি, এই স্কুল থেকে পড়ালেখা করে তৎকালীন মন্ত্রিত্ব করেছেন প্রভাষ চন্দ্র লাহিড়ী। এ অঞ্চলের মানুষ ক্রীড়া ও সংস্কৃতিপ্রিয় মানুষ।
তিনি বলেন, সকাল থেকে এখানে বৃষ্টি হচ্ছে। তার পরও মানুষ যেভাবে শোকসভায় সাড়া দিয়েছে তা দেখে মনে হচ্ছে ২০০৮ সালের নির্বাচনের ন্যায় এবারও আওয়ামী লীগে গণজোয়ার আসবে। এ দেশের জনগণ আমাদের সঙ্গে আছে। যত দিন বাংলাদেশকে সোনার বাংলা গড়তে না পারব তত দিন আমরা ক্ষমতায় থাকব।
শোকসভায় প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল ওয়াদুদ দারা। এ ছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট আদিবা আনজুম মিতা ও রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আলফোর রহমান।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিন, সাবেক সংসদ সদস্য জিন্নতুন নেছা তালুকদার, বেগম আখতার জাহান, রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার, জেলা যুবলীগের সভাপতি আবু সালেহ, আড়ানী পৌর মেয়র মুক্তার আলী, চারঘাট পৌর মেয়র একরামুল হক, বাঘার পাঁচজন ইউপি চেয়ারম্যান, বাঘা উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফাতেমা খাতুন লতা, রাজশাহী জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি রোকনুজ্জামান রেন্টু ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী প্রমুখ।