নওগাঁ প্রতিনিধি :
নওগাঁর রাণীনগরের শত বছরের ঐতিহ্যবাহী রক্তদহ বিল। বিলের আশপাশে ৪০টি গ্রামের মানুষের বসবাস। এই মানুষদের চলাচলের একমাত্র ভরসা মেঠো পথের শেষে খেয়াঘাটের নৌকা। বিলে পানি যতদিন থাকে, ততদিন নৌকায় পারাপার আর যখন পানি থাকে না, তখন প্রয়োজনীয় কর্ম সমাধান করতে ৪০-৫০ কিলোমিটার রাস্তা ঘুরে নওগাঁ, বগুড়া, রাণীনগর ও আদমদীঘিতে যেতে হয়।
এতে করে বছরের পর বছর চরম দুর্ভোগের মধ্য দিয়ে জীবনযাপন করে আসতে হচ্ছে এই অঞ্চলের লাখো মানুষদের। কৃষকরা ন্যায্যমূল্য পাওয়া থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছে যুগের পর যুগ। হাজার চেষ্টাতে এই অঞ্চলের মানুষদের ভাগ্যে খেয়াঘাটে একটি ব্রিজ জোটেনি। ফলে আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থার সুফল থেকেও বঞ্চিত এই কৃষিপ্রধান অঞ্চল।
বোদলা গ্রামের বাসিন্দা সাইদুর রহমান মুহরী জানান, মাধ্যমিক পর্যায়ের একাধিক পাঠ্যবইয়েও এই বিলের ইতিহাস লিপিবদ্ধ আছে। কয়েক হাজার বিঘা জমি নিয়ে এই বিল অবস্থিত। বিলের পূর্বপাশে নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার কৃষি প্রধান অঞ্চল বোদলা, পালশা, কৃষ্ণপুর, তেবাড়িয়াসহ ৪০টি গ্রাম অবস্থিত। এই মানুষদের সহজেই নওগাঁ, বগুড়া, রাণীনগর, আদমদীঘি, সান্তাহারে চলাচলের সহজপথ হচ্ছে বিলের মধ্য দিয়ে রাস্তা। বিলের মধ্য একটি ব্রিজ না হওয়ার কারণে মেঠোপথ দিয়েই খেয়াঘাটে পারাপার হতে হয়। পারাপারের জন্য খেয়াঘাটে এসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয় নৌকার জন্য। এই অঞ্চলের মানুষদের হাতে দুই থেকে তিন ঘণ্টা সময় হাতে বেশি নিয়ে অন্যত্র যেতে হয়। একটি ব্রিজের অভাবে এখনো এই অঞ্চলের মানুষদের প্রাচীন যুগে বসবাস করতে হচ্ছে। দিনের বেলায় ঘাটে এসে নৌকা পাওয়া গেলেও রাতের বেলায় ৪০-৫০ কিলোমিটার রাস্তা ঘুরে এই অঞ্চলের মানুষদের নিজের বাড়িতে ফিরতে হয়। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হয় শিক্ষার্থী ও জরুরি রোগীদের। অনেক প্রসূতিদের হাসপাতালে নেওয়ার পথে এই খেয়াঘাটে এসেই প্রসব হয়ে যায়।
উপজেলার তেবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা বাদশা বলেন, এই বিলের একপ্রান্তে শত বছরের ঐতিহাসিক কোসমুড়ির দরগা রয়েছে। যেখানে বিভিন্ন মানত পূরণ করতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষ এসে থাকে। এছাড়াও বর্ষাকালে এই বিলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে অনেক দর্শনার্থীরা এসে থাকেন। তাই এই ঘাটে একটি ব্রিজ হলে এই বিল পর্যটকদের কাছে একটি আকর্ষণীয় স্পট হিসেবে গড়ে উঠতে পারে। ফলে এখানে অনেক বেকার মানুষের কর্মসংস্থানেরও সৃষ্টি হবে।
নওগাঁ এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী তোফায়েল আহমেদ বলেন, আমার জানা মতে ব্রিজ নির্মাণের সকল প্রক্রিয়া প্রায় শেষের দিকে। সকল বিভাগীয় প্রক্রিয়া শেষে অর্থ বরাদ্দ পেলেই ব্রিজ নির্মাণের কাজ শুরু করা হবে। আমি আশাবাদী দ্রুত এই অঞ্চলের মানুষদের শত বছরের স্বপ্নের ব্রিজ নির্মাণের সুখবর দ্রুতই পাওয়া যাবে।
নওগাঁ-৬ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ার হোসেন বলেন, চীনের হুয়াংহু নদীর মতো এই রক্তবিলও এই অঞ্চলের মানুষের জন্য একটি দুঃখ। এই ঘাটে একটি ব্রিজ এই অঞ্চলটিকে আমুল বদলে দিতে পারে। আমিও সংশ্লিষ্ট বিভাগকে একাধিকবার ব্রিজ নির্মাণের জন্য যাবতীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য তাগাদা দিয়েছি। দ্রুত ব্রিজ নির্মাণের সুখবর পাওয়া যাবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মোঃ শাহরিয়ার আলম বলেন, শেখ হাসিনা এবং নরেন্দ্র মোদির নেতৃতে গত ১ দশকের বেশি সময় ধরে ভারত বাংলাদেশ সম্পর্ক একটি নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে।
মুক্তিযুদ্ধের সময় ত্রিপুরার মানুষের সহায়তা আমাদেরকে আমৃত্যু বন্ধুত্বের বন্ধনে আবদ্ধ করেছে।
আজ ১১ এপ্রিল মঙ্গলবার দুপুরে আখাউড়া চেকপোষ্ট দিয়ে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে যাওয়ার সময় সীমান্তের শূণ্য রেখায় সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, এশিয়ান কনফ্লুয়েন্স (সিভিল সোসাইটি) পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলোতে কাজ করে তাদের আমন্ত্রণে আগরতলা যাচ্ছি। আগরতলার পলো টাওয়ার হোটেলে একটি সভা হবে। সভায় ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের একজন মন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী, ত্রিপুরার ম‚খ্যমন্ত্রী থাকার কথা রয়েছে।
সভায় এই অঞ্চল দিয়ে ব্যবসা বাণিজ্য বৃদ্ধি, মানুষের যাতায়াতের সুবিধার বিষয়ে আলোচনা করবো। তছাড়া রেল যোগাযোগ, সড়ক যোগাযোগে বিনিয়োগ হচ্ছে এগুলো আপডেট করবো।
সামনের দিনে আরও কিছু কাজ এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। তিনি আরও বলেন সীমান্তের ১০০ মিটারের ভেতরে সাধারণত কোন স্থাপনা করার নিয়ম নাই। কিন্তু ভারত-বাংলাদেশ উভয় উভয়ের উপর নির্ভরশীল। তাই আমরাও ছাড় দিয়েছি।
ভারতও ছাড় দিয়েছে। বাংলাদেশের সাথে উত্তর-প‚র্ব ভারতের ৭টি রাজ্যের বাজার তৈরি হয়েছে। তাদের ক্রমবধর্মান উন্নতি হচ্ছে। এটাকে আমাদের বাজারের সাথে সম্পৃক্ত করতে চাই। এজন্য কানেক্টিভিটির কোন বিকল্প নাই। সেটার উপায় খোঁজা, দেখা।
এ পর্যন্ত দু’পক্ষের সরকার যতটুকু করেছে এটা কতটুকু প্রভাব ফেলেছে সেখান থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে সামনের দিনে কাজ করা। এমন একটি ধারণা নিয়ে যাচ্ছি।
বিএসএফ’র আপত্তির কারণে আখাউড়া ইমিগ্রেশন ভবনের নির্মাণ কাজ ৬ বছর ধরে বন্ধ থাকা প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আপডেট আছে। শিগ্রই দেখবেন। অপেক্ষা করেন সমাধান দেখবেন।
এসময় মন্ত্রীর সফরসঙ্গী ছিলেন নাঈম রাজ্জাক এমপি, সহকারি পররাষ্ট্র সচিব শহিদুল হক, মোঃ আল আমিনুল ইমাম, পরিচালক স্টেট মিনিস্টার অফিস।
ভারতে প্রবেশকালে সীমান্তের শূণ্য রেখায় তাঁকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান ত্রিপুরাস্থ বাংলাদেশের সহকারী হাই কমিশনার আরিফ মোহাম্মদ। এর আগে তিনি ঢাকা থেকে সড়ক পথে আখাউড়া চেকপোষ্টে এসে পৌঁছেন। এসময় তাঁকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার অংগ্যজাই মারমা, আখাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আসাদুল ইসলাম।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন আখাউড়া স্থলবন্দরের সহকারী পরিচালক (ট্রাফিক) মোঃ আতিকুল ইসলাম, আখাউড়া ইমিগ্রেশন পুলিশের ইনচার্জ স্বপন চন্দ্র দাস প্রমুখ।
অনলাইন ডেস্ক :
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া অসুস্থ, তাই তাকে শর্তসাপেক্ষে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। যেহেতু তিনি একজন দণ্ডপ্রাপ্ত তাই তার দেশের বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আর যদি তিনি সুস্থ হয়ে থাকেন তাহলে তাকে বাকি সাজা খাটতে হবে।
আজ ১১ জুন রবিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে ‘মিট দ্য রিপোর্টার্স’ অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। ‘ল রিপোর্টার্স ফোরাম’ এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
আইনমন্ত্রী বলেন, সংবিধান অনুযায়ী খালেদা জিয়ার নির্বাচন করার কোন সুযোগ নেই। পাশাপাশি পলাতক তারেক রহমান একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামি, তিনিও নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না।
দশবছর পর জামাত ঢাকায় সমাবেশ করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তাদেরকে অনুমতি দেওয়ার মালিক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। অতএব স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করুন।
অপরাধী সংগঠন হিসেবে জামাতের নিবন্ধন বাতিলের বিষয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, অপরাধী সংগঠন হিসেবে জামাতের বিচার করার জন্য যথেষ্ট তথ্যপত্র রয়েছে। তবে তারা বিচারে যতক্ষণ পর্যন্ত দোষী সাব্যস্ত না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত তাদেরকে অপরাধী দল হিসেবে বলা যাবে না।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ল রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি আশুতোষ সরকার এবং সঞ্চালনা করেন ফোরামের সাধারণ সম্পাদক আহাম্মেদ সরোয়ার হোসেন ভূঁঞা।
আইন সচিব গোলাম সারোয়ার, যুগ্ম সচিব বিকাশ কুমার সাহা ও ফোরামের অন্য নেতৃবৃন্দ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
অনলাইন ডেস্ক :
সংঘাতপূর্ণ সুদান থেকে সৌদি আরবের জেদ্দা হয়ে ১৩৬ বাংলাদেশি ঢাকায় পৌঁছেছেন।
আজ ৮ মে সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তাদের বহন করা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটটি হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
গতকাল ৭ মে রবিবার সৌদি সময় রাত ১টার দিকে ফ্লাইটটি জেদ্দা এয়ারপোর্ট থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা করে।
এর আগে সুদান থেকে ১৩৬ বাংলাদেশি সৌদি এয়ারফোর্সের বিশেষ তিনটি বিমানে রবিবার জেদ্দায় পৌঁছান।
সুদান থেকে আসা এই বাংলাদেশিদের জেদ্দা বিমানবন্দরে স্বাগত জানান সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী। এ সময় জেদ্দার বাংলাদেশ কনস্যুলেটের কনসাল জেনারেল মোহাম্মদ নাজমুল হকও উপস্থিত ছিলেন।
এসব বাংলাদেশিদের জন্য আগে থেকেই জেদ্দা বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল ইংরেজি সেকশনে বিশ্রাম, খাবার ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। সেখানে বাংলাদেশ দূতাবাস ও জেদ্দার বাংলাদেশ কনস্যুলেট তাদের সবরকম সহায়তা দেয়।
সুদানে প্রায় দেড় হাজার বাংলাদেশি নাগরিক বসবাস করেন। এদের মধ্যে যারা দেশে আসার জন্য নিবন্ধন করেছেন, পর্যায়ক্রমে তাদের সবাইকে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে। সৌদি আরবের বাংলাদেশ দূতাবাস ও জেদ্দার বাংলাদেশ কনস্যুলেট এ বিষয়ে সব প্রস্তুতি নিয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
যথাযোগ্য মর্যাদায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া মুক্ত দিবস পালিত হয়েছে। ৮ ডিসেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়া মুক্ত দিবস উপলক্ষে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে কাউতলীস্থ শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়েছে। সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসনের পক্ষে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদা আক্তার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রাজস্ব জেসমিন সুলতানা, জেলা পুলিশের পক্ষে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইকবাল হোসাইন, জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন পাটোয়ারী, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিফাত মোহাম্মদ ইশতিয়াক ভূইয়া, বীর মুক্তিযোদ্ধা গাজী মোহাম্মদ রতন মিয়া বাহার চৌধুরি, আবু হোরায়রাহ প্রমুখ। স্মৃতিস্তম্ভে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদ, সিভিল সার্জন কার্যালয়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর সভা, গণপূর্ত বিভাগগ, সড়ক ও জনপথ বিভাগ সমাজসেবা বিভাগ সহ সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে পুস্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
আজ ৮ ডিসেম্বর রবিবার সকালে নানা আয়োজনে ও বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি পালন করা হয়। সকাল সাড়ে ১০টায় পৌর মুক্তমঞ্চ থেকে একটি র্যালি শুরু হয় এবং শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে গিয়ে তা শেষ হয়। এরপর দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ইউনিট, সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে এক আলোচনা সভার আয়োজন করে।
এতে প্রধান অতিথি ছিলেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব)জেসমিন সুলতানা।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিফাত মোঃ ইশতিয়াক ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, অতিরিক্ত জেলা পুলিশ সুপার ইকবাল হোসাইন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মুক্তা গোস্বামী।
সাবেক সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বীরমুক্তিযোদ্ধা আবু হুরায়রাহ এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের আহবায়ক বীরমুক্তিযোদ্ধা মো. বাহার চৌধুরী, সাবেক ডেপুটি কমান্ডার বীরমুক্তিযোদ্ধা গাজী মো. রতন মিয়া, সাবেক জেলা কমান্ডার বীরমুক্তিযোদ্ধা হারুন অর রশীদ, বীরমুক্তিযোদ্ধা আব্দুল ওয়াহিদ খান লাভলু প্রমুখ। অনুষ্ঠানের শুরুতেই সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। এরপর শুরু হয় আলোচনা সভা।
সভার প্রথমেই পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন হযরত মাওলানা ক্বারী আল আমীন বিন রেনু। পবিত্র গীতা পাঠ করেন, বীরমুক্তিযোদ্ধা শ্যামল দাশ গুপ্ত। অনুষ্ঠানে সকল শহীদ বীরমুক্তিযোদ্ধাদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা সহ জীবিত মুক্তিযোদ্ধাদের দীর্ঘায়ু এবং দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনা করে বিশেষ দোয়া করা হয়। এর আগে শহরের কাউতলীতে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতি ফলকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। অনুষ্ঠানে বক্তারা একটি বৈষম্যহীন দেশ গড়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন। তারা বলেন, আমরা সবাই মিলে বৈষম্যবিহীন ও দুর্নীতিমুক্ত একটা বাংলাদেশ গড়তে চাই। এজন্য সকলের ঐক্যবদ্ধ থাকা জরুরী।
অনলাইন ডেস্ক :
‘আমাদের কাছে পাবেন অরিজিনাল (এ জে এস কাগজের) গ্লেজিং প্রিন্টের সুতা জলছাপসহ নিখুঁত কাজের মাল। আমাদের কাছে ৫০, ১০০, ৫০০ ও ১০০০ টাকার জাল নোট আছে, যা ব্যাংকের মেশিন ছাড়া খালি চোখে বোঝা অসম্ভব।’ ফেসবুকের একটি গ্রুপে এমন বিজ্ঞাপন দিয়ে চলছিল জাল টাকার কারবার। এই চক্রটি জাল টাকা তৈরির টিকটক ভিডিও বানিয়ে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে প্রচারণা চালাত। তবে মূলত জাল টাকা সরবরাহের নামে প্রতারণা করে অর্থ হাতিয়ে আসছিল তারা।
সম্প্রতি এই চক্রের অন্যতম সদস্য সিফাত শেখকে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থেকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এ সময় তার কাছ থেকে দুই লাখ টাকার জাল নোট উদ্ধার করা হয়। পরে তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে জাল টাকার কারবার ও এই চক্রের বিস্তারিত।
ডিবির লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার মশিউর রহমান বলেন, সিফাত ও তার সহযোগীরা নিখুঁত জাল টাকা সরবরাহের বিজ্ঞাপন দিয়ে আগ্রহীদের আকৃষ্ট করত। এরপর অগ্রিম টাকা নিয়ে যোগাযোগ বন্ধ করে দিত। ক্রেতাদের দেখানোর জন্য কিছু জাল নোট তারা নিজেদের কাছে রাখত। তবে সেগুলো কাউকে সরবরাহ করত না। এই চক্রে ১০ জনের বেশি সদস্য রয়েছে। তারা কেউ জাল নোট বানায়, কেউ ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দেয়, কেউ ক্রেতার কাছ থেকে টাকা সংগ্রহ করে।
উপকমিশনার জানান, চক্রের সদস্যরা সবাই সাধারণ পরিবার থেকে আসা তরুণ। তবে তারা ফ্যাশনেবল ও বিলাসী জীবনযাপনের চেষ্টা চালায়। মাঝেমধ্যেই তারা কক্সবাজারসহ বিভিন্ন স্থানে বেড়াতে যায়। জাল নোট বিক্রির নামে হাতিয়ে নেওয়া অর্থ তারা মূলত ‘ফূর্তি’র জন্য ব্যয় করে। সিফাতকে গত ২৯ এপ্রিল কক্সবাজার থেকে ফেরার পথেই গ্রেফতার করা হয়।
ডিবি সূত্র জানায়, কেরানীগঞ্জ উপজেলা চত্বরে ফুটপাতে ছয় হাজার টাকা বেতনে পোশাক বিক্রেতা হিসেবে কাজ করে সিফাত। সে ইউটিউবসহ অনলাইনে বিভিন্ন সাইট ঘেঁটে জাল টাকা তৈরি করা শিখেছে। পরে নিজেরা জাল টাকা বানানোর সময় তা ভিডিও করে অনলাইনে ছড়িয়ে দিয়েছে। মূলত সহজে অধিক অর্থ উপার্জন করতে চাওয়া লোভী ব্যক্তিরা তাদের টার্গেট। তারা এক হাজার টাকার ১০০টি জাল নোটের জন্য ১০ হাজার টাকা, ৫০০ টাকার ১০০টি নোটের জন্য ১২ হাজার টাকা, ১০০ ও ২০০ টাকার এক লাখ জাল নোটের জন্য ২০ হাজার টাকা দাম নিত। মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে টাকা নেওয়ার পর তারা যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়।
এই চক্রের একটি ফেসবুক গ্রুপে গিয়ে দেখা যায়, বিভিন্ন সময়ে জাল টাকার বান্ডিলের ছবি-ভিডিও পোস্ট করা হয়েছে। ভিডিওতে দেখানো হচ্ছে, জাল টাকায় আসল টাকার সব নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য রয়েছে। ফলে হঠাৎ করে কারও পক্ষে সেটাকে জাল হিসেবে ধরা সম্ভব নয়। গত মাসের একটি পোস্টে বলা হয়েছে, ঈদ উপলক্ষে এ-গ্রেডের নিখুঁত জাল নোট তৈরি করা হয়েছে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দেশের যে কোনো এলাকায় হোম ডেলিভারি দেওয়া হবে। সেজন্য ৫০ ভাগ টাকা অগ্রিম দিতে হবে। কুরিয়ার সার্ভিস বা নিজস্ব প্রতিনিধির মাধ্যমে পাঠানো জাল টাকার চালান হাতে পাওয়ার পর বাকি টাকা দিতে হবে। যোগাযোগের জন্য একটি ফোন নম্বরও দেওয়া আছে।
একটি ফেসবুক পেজে বলা হয়েছে, ‘মালের (জাল টাকা) স্যাম্পল নিজ হাতে চেক করে তারপর অর্ডার করবেন।’
চারদিন আগে লেখক আফসান চৌধুরী ফেসবুকে জাল টাকা বিক্রির বিজ্ঞাপনের একটি স্ক্রিনশট শেয়ার করেন। সেখানে তিনি লিখেছেন– ‘পুলিশ এত কিছু জানে, এটা জানে না? রেট এত ভালো। এক টাকার বদলে নকল আট টাকা।’ তাঁর শেয়ার করা স্ক্রিনশটে লেখা রয়েছে– ‘এক লাখ মালের দাম ১২ হাজার টাকা। সব রকমের নোট। সর্বনিম্ন অর্ডার ৫০ হাজার টাকা।’
এর আগে গত ২৪ এপ্রিল রাজধানীর দক্ষিণ গোড়ান থেকে ফেসবুকে প্রচার চালিয়ে জাল নোটের কারবারে জড়িত চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করে পুলিশ।