নবীনগর প্রতিনিধি :
নবীনগর উপজেলার মেঘনা নদীবাহিত পলির বেলে-দোঁয়াশ মাটিতে ব্যাপক ভাবে সরিষা চাষ হচ্ছে। এ বছর সরিষা চাষে সাফল্যে আশানুরুপ সরিষা উৎপাদন হবে বলে আশা করা হচ্ছে। ফলে এ এলাকার কৃষকরা রবি মৌসুমে সরিষা চাষ করে অর্থনৈতিক ভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার প্রত্যাশা করছে। উপজেলার যে সব ইউনিয়নে বেশী সরিষা আবাদ বেশী হয় সে সকল ইউনিয়ন গুলো হল রছুুল্লাবাদ, বীরগাঁও, বড়াইল, সলিমগঞ্জ, কৃষ্ণনগর, বিটঘর, নাটঘর। এ বছর কৃষকরা কৃষি বিভাগের পরামর্শে সরিষা চাষ করেছে প্রায় ১৫০০ হেক্টর জমিতে। মন প্র্রতি সরিষার মুল্য ৩,৫০০-৪,০০০ টাকা। প্রতি বিঘা জমিতে প্রায় ৮-৯ মন সরিষা উৎপাদন হয়। এ বছর বৃষ্টিতে ক্ষতি না হলে প্রায় ২,০০০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষাবাদ হত।
কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের দক্ষিণ লক্ষ্মীপুর গ্রামের মো. আবু তাহের তার চাষকৃত জমির পরিমান- ৫০ শতক। বিটঘর ইউনিয়নের গুড়িগ্রামের হারেছ ভূঁইয়া তার চাষকৃত জমির পরিমাণ- ১০০ শতক। প্রতিটি জমিতেই তরতাজা সবুজ সরিষা গাছ গুলোতে হলুদ ফুলে ফুলে ভরে ওঠায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটতে শুরু করেছে। সরেজমিনে এ সমস্ত এলাকা পরিদর্শনে দেখা গেছে, ইতোমধ্যে কোন কোন জমিতে তাজা সরিষা ফুল / কোন জমিতে ফুল ঝড়তে শুরু হয়েছে। কোন জমির গাছ গুলোতে সরিষার দানা ও বাঁধতে শুরু করেছে। উপজেলা কৃষি বিভাগ সুত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলার ২০টি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের জমিতে সরিষার চাষাবাদ হয়েছে। রতনপুর ইউনিয়নের ভিটি বিশারা গ্রামের কৃষক আব্দুল খালেক মিয়া জানান, এ বছরই তিনি ৩ বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করেছেন। তার জমিতে সরিষার গাছ গুলো যেভাবে লকলকিয়ে উঠেছে এবং হলুদ ফুলে ছেয়ে গেছে তাতে তিনি এ বছর সরিষার ভাল পাবেন বলে আশাবাদি হয়েছেন। রছুল্লাবাদ ইউনিয়নের রছুল্লাবাদ গ্রামের কৃষক খন্দকার ফরিদ মিয়া জানান, এবার আবহাওয়া ভাল থাকায় জমিতে সরিষার ফলন ভাল হবে বলে তিনি আশা করছেন। গত বছর যে সমস্ত জমিতে অন্য ফসল চাষ করেছিলেন এবার সেই জমিতেই অত্যান্ত কম খরচে সরিষা চাষ করেছেন। সরিষার বাড়ন্ত ফুলে ভরা গাছগুলো দেখে তিনি আশান্বিত হয়েছেন । এবারে সরিষা উৎপাদন করে তিনি যথেষ্টই লাভবান হতে পারবেন বলে তিনি আশাবাদী।
উপজেলা কৃষি অফিসার জগলুল হায়দার জানান,অপেক্ষাকৃত নীচু এলাকার চেয়ে উঁচু এলাকার পলি সমৃদ্ধ বেলে-দোঁয়াশ মাটিতে সরিষা ফসলের আবাদ ভাল হচ্ছে। কারণ এ রুপ জমি গুলো অত্যন্ত উর্বর। এ বছর রবি মৌসুমে কৃষকরা মরিচ, সরিষা, ছিটানো পিঁয়াজ, মিষ্টি কুমড়া, ডাল, ভুট্টা, ধনিয়া পাতা, গোলআলু – মিষ্টি আলু, বাদামসহ বিভিন্ন জাতের ফসল উৎপাদনের মাধ্যমে অর্থনৈতিক ভাবে স্বাবলম্বী হতে চাই, যা গ্রামাঞ্চলের চিরায়ত অভাব নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
নবীনগরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১১ জুলাই বৃহস্পতিবার দুপুরে মায়ের সাথে চিকিৎসা করাতে গিয়ে সিয়াম নামে (৬ বছরের) শিশু সন্তান নিখোঁজ হয়ে গেছে। সন্তানকে খুঁজতে গিয়ে দিনভর নিখোঁজ রয়েছে ওই সন্তানের মা রিনা বেগম। নিখোঁজ সিয়াম ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর পৌর এলাকার আলিয়াবাদ গ্রামের মালদ্বীপ প্রবাসী রায়হান মিয়ার ছেলে, রিনা বেগম তার স্ত্রী ।
সরেজমিনে নিখোঁজ সিয়ামের বাড়িতে গেলে তার চাচা ওবায়দুল হক বলেন, বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) সকাল দশটায় রিনা তার ছেলে সিয়ামকে ডাক্তার দেখাতে নিয়ে যায়,চিকিৎসা শেষে ডাক্তারের পরামর্শ ও ওষুধ আনতে গেলে সেই সময় হারিয়ে যায় সিয়াম। হাসপাতালে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাকে পাওয়া যায়নি, ওই সময় হাসপাতালের সামনে থাকা এক পথচারী রিনাকে বলেন, একটি ছেলে রসুল্লাবাদ গ্রামের অটোরিকশায় উঠতে দেখছি। এই কথা শুনে রিনা ছেলের খোঁজে বেড়িয়ে যায়। আমাকে দুপুর ১ টার দিকে ফোন করে সিয়াম নিখোঁজ হওয়াসহ এসব কথা জানান রিনা। তখন রিনা নবীনগর ফল বাজারে আছে এবং তার মোবাইলে চার্জ নেই একথাও আমাকে বলেছে। এটাই ছিলো তার সাথে শেষ কথা। এরপর থেকে তার মোবাইল ফোন নাম্বার বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।সংবাদ পেয়ে আমরাও সিয়ামকে খোঁজতে বেড়িয়ে যায়।
এলাকায় মাইকিং করা হয়েছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তাদের ছবি দিয়ে নিখোঁজ হবার সংবাদ প্রচার করা হচ্ছে। দিন শেষে রাত হয়ে গেলো এখনো তাদের কোনো খোঁজখবর পাইনি।একদিকে ছেলে নিখোঁজ অন্য দিকে ছেলেকে খোঁজতে গিয়ে মা নিখোঁজ। এই ঘটনার পর থেকে চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে গোটা নবীনগরে এলাকাবাসী ভীড় করছে সিয়ামদের বাড়িতে। পরিবারে চলছে শোকের মাতম। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা পর্যন্ত মা ও ছেলের কোন খবর পাওয়া যায়নি। বাজারের সিসি ক্যামেরা ফুটেজেও দেখা যাচ্ছে না তাদেরকে।
এ বিষয়ে নবীনগর থানার অফিসার্স ইনচার্জ মাহবুব আলম বলেন, সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছে,পুলিশ এ বিষয়টি নিয়ে কাজ শুরু করেছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগরে বেশি দামে সিলিন্ডার গ্যাস বিক্রির দায়ে এক ডিলারকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমান আদালত।
গতকাল শনিবার বিকেলে নবীনগর পৌর শহরের নারায়ণপুর এলাকায় এই জরিমানা করেন নবীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর ফরহাদ শামীম। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকারী নবীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর ফরহাদ শামীম জানান, সরকার নির্ধারিত দাম থেকে বেশি দামে নবীনগরের বিভিন্ন জায়গায় সিলিন্ডার গ্যাস বিক্রি করছে কিছু ব্যবসায়ী। এমন গোপন সংবাদের তথ্যের ভিত্তিতে বিকেল সাড়ে ৩ টার দিকে নবীনগর পৌর শহরের নারায়ণপুর এলাকায় সিলিন্ডার গ্যাস বিক্রির ডিলার মেসার্স আনোয়ার ট্রেডার্সের দোকানে অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে ডিলার খুচরা বিক্রেতা ও ক্রেতাদের বিক্রির রশিদ না দিয়ে বেশি দামে সিলিন্ডার গ্যাস বিক্রি করছে। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ডিলার মেসার্স আনোয়ার ট্রেডার্সকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। তিনি আরো জানান, পাশাপাশি বসুন্ধরা গ্যাসের ডিলার মেসার্স মাহাদী এন্টারপ্রাইজ বিস্ফোরক পরিদপ্তরের লাইসেন্স দেখাতে না পারায় সাময়িক বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। ন্যায্য মূল্যে সিলিন্ডার গ্যাস বিক্রি করার জন্য দোকানগুলোকে কঠোর নির্দেশ প্রদান করা হয়। পাশাপাশি তাদের সতর্কও করা হয়। জনস্বার্থে তাদের এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
উপমহাদেশের শাস্ত্রীয় সঙ্গীত জগতের কিংবদন্তি ‘সুরসম্রাট’ খ্যাত ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর নিজ জন্মভূমিতে ৫২তম মৃত্যুবার্ষিকী যথাযথ মর্যাদায় নানান কর্মসূচির মাধ্যমে পালিত হয়েছে।
আজ ৬ সেপ্টেম্বর শুক্রবার সকালে নবীনগরে শিবপুর সুর সম্রাট আলাউদ্দিন খাঁ ডিগ্রি কলেজের উদ্যোগে আলাউদ্দিন খাঁর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও আলোচনা সভা, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আলাউদ্দিন খাঁ মহাবিদ্যালয় হল রুমে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোহসীন সরকারের সভাপতিত্বে ও প্রভাষক গোলাম কিবরিয়ার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর ফরহাদ শামীম।
আরো বক্তব্য রাখেন নবীনগর থানার অফিসার্স ইনচার্জ আফজাল হোসেন, অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম, ইউপি চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান, এটিএম আবদুল্লাহ, নবীনগর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি জালাল উদ্দিন মনির। শিশু খাঁন, রানা শামীম, শাহীন বিশ্বাস প্রমুখ।
আলোচনা সভা শেষে ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ সাহেবের রুহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া মোনাজাত করা হয়। পরে অতিথিগণকে সাথে নিয়ে উস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর নিজ হাতে গড়া শিবপুর খাঁ বাড়ি জামে মসজিদে জুম্মার নামাজ আদায় করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর ফরহাদ শামীম বলেন, ঐতিহ্যেবাহি এই মসজিদটি সংস্কার ও আলাউদ্দিন খাঁর নামে কলেজের প্রবেশ পথে একটি তোরণের নির্মাণ কাজ দ্রুতই শুরু করা হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
কন্দাল ফসল উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় নবীনগর উপজেলায় কয়েক বছর ধরে ওল কচুর আবাদ হচ্ছে। খরচ কম কিন্তু ফলন বেশি হওয়াতে কৃষক বসত বাড়ি কিংবা ফলজ বাগানে সীমিত পরিসরে আবাদ করছে। ইব্রাহীমপুর ব্লকের ওল চাষী মোখলেছ মিয়া বলেন- আগে নবীনগরে বাণ্যিজিক ভাবে ওল কচু চাষাবাদ দেখিনি, আমি এ বছর চাষ করেছি। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে আমাকে বীজ, সার ও প্রশিক্ষণ দিয়েছে।
ইতিমধ্যে অনেকেই ওল চাষে আগ্রহী। ওল কচুর পাশাপাশি বীজ বিক্রি করে লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা দেখছি। বড়িকান্দি ব্লকের কৃষক আজিজ মিয়া জানান- ওল কচু আমাদের এলাকায় নতুন। কৃষি বিভাগের পরামর্শে এই নতুন ফসল আবাদ করেছি। ২০ শতক পরিত্যক্ত উচু জমিতে আবাদ করেছি এখন পর্যন্ত গাছের বৃদ্ধি ভালো। নবীনগর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে- ওল কচু গাছে তেমন কোন রোগ হয় না, তবে পাতা ও কচু পঁচা রোগ দেখা যেতে পারে, ওল কচুর ক্ষেত্রে কীট পতঙ্গ তেমন কোন সমস্যা হয় না। নিয়মিত আগাছা পরিষ্কার, গোড়া মাটি উঁচু করে দেয়া ও খড় বা আচ্ছাদন দিয়ে মাটি ঢেকে দিলে ভাল ফলন পাওয়া যায়। জৈব সার ব্যবহার করা ভাল। তবে রাসায়নিক সার যেমন- ইউরিয়া, পটাশ, টিএসপি ও কিছু দেওয়া যায়। গাছ লাগানোর ৭-৯ মাস পর যখন ৮০% গাছের পাতা হলুদ হয়ে যাবে, তখন ওল সংগ্রহ করতে হবে। উপজেলা কৃষি অফিসার মো. জাহাঙ্গীর আলম লিটন জানান- কন্দাল ফসল উন্নয়ন প্র্রকল্পের আওতায় আমরা নতুন জাতের কন্দাল ফসল জনপ্রিয় করার জন্য প্রদর্শনী কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে থাকি। ওল কচু চাষের জন্য ফেব্রুয়ারি – এপ্রিল পর্যন্ত ভাল সময়, এর পর রোপণ করলে ফলন কমে যায়।
চলারপথে রিপোর্ট :
নবীনগরে বিশেষ আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১৩ জানুয়ারি সোমবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রাজীব চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন, জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দিদারুল আলম।
বিশেষ আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় বিভিন্ন দপ্তরের প্রধানগণ তাদের বিভিন্ন সমস্যাগুলি জেলা প্রশাসকের কাছে উত্থাপন করেন।
এসময় জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ দিদারুল আলম বলেন, অচিরেই নবীনগর থেকে রাধিকা হয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাস সার্ভিস চালু করা হবে সহ স্বল্প সময়ের মধ্যে অন্যান্য সমস্যাগুলি ও সমাধান করার জন্য আশ্বাস প্রদান করেন।