আশুগঞ্জ প্রতিনিধি :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২-(সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের উপ-নির্বাচনে অন্যতম স্বতন্ত্র প্রার্থী, বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা, আশুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও আশুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান (মোটর গাড়ি প্রতীক) আবু আসিফ আহমেদের সন্ধ্যান মিলেছে।
আজ ২ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার বিকেল সোয়া ৫টার দিকে আবু আসিফ আহমেদ তাঁর আশুগঞ্জের বাসায় ফিরেছেন। আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজাদ রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে আবু আসিফ আহমেদ ঢাকার বসুন্ধরায় তার নিজ বাড়িতে অবস্থান করছেন বলে আজ বৃহস্পতিবার সকালে পুলিশের কাছে তথ্য আসে।
আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আজাদ রহমান বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে একটি মাধ্যমে আমরা জানতে পারি আবু আসিফ আহমেদ ঢাকায় আছেন। বিকেল সোয়া ৫টার দিকে তিনি আশুগঞ্জের বাসায় ফিরেছেন। আবু আসিফ আহমেদ গত শুক্রবার রাত থেকে নিখাঁজ ছিলেন।
জেলা পুলিশের দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার সকালে আবু আসিফ আহমেদের স্ত্রী মেহেরুননিছা মেহেরিন আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে ফোন দিয়ে জানান, আবু আসিফ তার ঢাকার বাসায় আছেন। তিনি আশুগঞ্জে চলে আসবেন। ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বিষয়টি পুলিশ সুপার মোঃ শাখাওয়াত হোসেনকে অবহিত করেন। বিকেলে তিনি আশুগঞ্জের বাসায় ফিরে আসেন।
এদিকে আবু আসিফের নিখোঁজ থাকার বিষয়টি তার স্ত্রী মেহেরুননিছা মেহেরিন উপ-নির্বাচনে রিটার্নিং অফিসারকে লিখিতভাবে অবহিত করেছিলেন ও এবং ৩১ জানুয়ারি এ বিষয়ে আশুগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছিলেন।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার রাত থেকে আসিফ নিখোঁজ করার পর পরিবারের পক্ষ থেকে আসিফ নিখোঁজ বলা হলেও পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছিল আসিফ আত্মগোপনে আছেন। এনিয়ে নির্বাচনী এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়।
আবু আসিফ আহমেদ গত বুধবার অনুষ্ঠিত উপ-নির্বাচনে মোটর গাড়ি প্রতীক নিয়ে ৩ হাজার ২৬৯ ভোট পান। আসিফের স্ত্রী মেহেরিন আশুগঞ্জ শ্রমকল্যান কেন্দ্রের ভোট কেন্দ্রে গিয়েও ভোট না দিয়ে ফিরে আসেন। বাসায় চলে যাওয়ার সময় তিনি উপনির্বাচনকে “অসুস্থ নির্বাচন” উল্লেখ করে এই নির্বাচন স্থগিত করার দাবি জানিয়েছিলেন। নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছেন বিএনপির দলত্যাগী নেতা উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া।
এ ব্যাপারে পুলিশ সুপার মোঃ শাখাওয়াত হোসেনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে আসিফের স্ত্রী নিজেই আশুগঞ্জ থানার ওসিকে বলেছিলেন আসিফ তার ঢাকার বাসায় আছেন। বিকেলে তিনি তার আশুগঞ্জের বাসায় ফিরে এসেছেন। আসিফকে কোন জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আসিফ নিজেই ঢাকার বাসায় গিয়েছিলেন, আবার নিজেই আশুগঞ্জের বাসায় ফিরে এসেছেন এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের কি আছে?
এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য আবু আসিফের স্ত্রী মেহেরুননিছা মেহেরিনের মোবাইল ফোনে কয়েকদফা চেষ্টা করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
চলারপথে রিপোর্ট :
আশুগঞ্জে উদ্বোধনের পরই দু’পক্ষের সংঘর্ষে পণ্ড হয়ে গেছে বঙ্গবন্ধু জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্ণামেন্ট (বালক অনুর্ধ ১৭)। এসময় উভয় পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে। ফলে টুর্ণামেন্টের সকল খেলা স্থগিত করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
জানা যায়, আজ ১২ জুলাই শুক্রবার বিকেলে উপজেলার তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র মাঠে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্ণামেন্ট বালক (অনুর্ধ ১৭) এর উদ্বোধন করা হয়। আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার শ্যামল চন্দ্র বসাকের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জিয়াউল করিম খান সাজু।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের মধ্যে উদ্বোধনী দিনে চরচারতলা ইউনিয়ন বনাম দূর্গাপুর ইউনিয়ন ও আশুগঞ্জ সদর ইউনিয়ন বনাম শরীফপুর ইউনিয়নের মধ্যে দুটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবার কথা ছিল। কিন্তু উদ্বোধনের পর খেলা শুরুর আগেই বয়স যাচাই করে চরচারতলা ইউনিয়ন ও দূর্গাপুর ইউনিয়নের খেলোয়াড় নির্বাচন নিয়ে দু-পক্ষ দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পরে। এক পর্যায়ে আশুগঞ্জ সদর ইউপি চেয়ারম্যান মো. শফিকুল ইসলাম ও দূর্গাপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. রাসেল মিয়া বাকবিতন্ডায় লিপ্ত হয়ে পড়ে। এতে উভয় পক্ষের লোকজন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও আশুগঞ্জ থানার ইন্সপেক্টরের (তদন্ত) সামনেই সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। মুহূর্তের মাঝেই উভয় পক্ষের লোকজন চেয়ার ছুড়াছুড়ি ও সংঘর্ষে জড়ায়। পরে পুলিশ লাঠিচার্জ করে আধা ঘণ্টা চেষ্ট চালিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এরই মধ্যে চরচারতলা ইউনিয়ন ও শরীফপুর ইউনিয়নের খেলোয়াড়রা খেলার উপযুক্ত পরিবেশ নেই দাবি করে মাঠ ত্যাগ করে। পরে বাধ্য হয়ে টুর্ণামেন্টের সকল খেলা স্থগিত ঘোষণা করেন ইউএনও।
আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শ্যামল চন্দ্র বসাক বলেন, আইনশৃঙ্খলা অবনতির আশঙ্কায় আপাতত টুর্ণামেন্ট স্থগিত করা হয়েছে। তাৎক্ষনিকভাবে উভয় পক্ষকে নিয়ে বিরোধ মিটিয়ে দেয়া হয়েছে।
আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাহিদ আহমেদ জানান, পুলিশ দ্রুত অবস্থান নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় এখনো কেউ কোন লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
মেঘনা নদীর আশুগঞ্জ এলাকায় স্পিডবোটের ধাক্কায় পিয়াল আহমেদ (২৭) নামে এক জেলের মৃত্যু হয়েছে। নিখোঁজের দু’দিন পর আজ ৪ নভেম্বর শনিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ভৈরব নৌ-পুলিশ জেলের লাশ উদ্ধার করে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মর্গে প্রেরণ করেন।
গত বৃহস্পতিবার রাতে দুই জেলে ডিঙি নৌকা নিয়ে মাছ ধরতে গিয়ে এই দুর্ঘটনায় পড়েন। পিয়াল আহমেদ নরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলার মহেষপুর ইউনিয়নের বেগমাবাদ গ্রামের করইপুর এলাকার ছাদেক মিয়ার ছেলে।
ভৈরব নৌ-পুলিশ ইউনিটের ইনচার্জ এসআই রফিকুল ইসলাম জানান, পিয়াল ও আতাবর বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে মেঘনা নদীর আশুগঞ্জ এলাকায় একটি ডিঙি নৌকা নিয়ে মাছ ধরতে যান। এমন সময় ভৈরব থেকে দ্রুতগতিতে আসা একটি স্পিডবোট নৌকাটিকে সজোরে ধাক্কা দেয়। এতে নৌকাটি উল্টে যায় এবং দুই জেলে ভাটার টানে হারিয়ে যান। কিছুক্ষণ পর আতাবরকে নৌ-পুলিশ উদ্ধার করলেও নিখোঁজ পিয়ালকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। নিখোঁজের দু’দিন পর আজকে সকালে আশুগঞ্জ মেঘনা নদীর সার কারখানা প্রান্ত থেকে পিয়ালের লাশ উদ্ধার করে নৌ-পুলিশ।
চরচারতলা ও চরলালপুর এলাকায় মেঘনা নদীতে ইজারাদারদের ড্রেজারে ঢালাও ভবে বালু উত্তোলনের ফলে, মেঘনা নদীর পূর্বপাড়ে লালপুর এলাকায় কৃষি জমিতে ব্যাপক হারে ভাঙ্গনের অভিযোগ করেছে এলাকাবাসী।
জেলা প্রশাসকের কাছে দাখিলকৃত লিখিত অভিযোগটি খতিয়ে দেখে জনস্বার্থে পরবর্তী ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেছেন, সরাইল-আশুগঞ্জ এলাকার সংসদ সদস্য উকিল আব্দুস সাত্তার, সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য উম্মে ফাতেমা নাজমা শিউলী আজাদ এবং জেলাপরিষদ চেয়ারম্যান যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা আল-মামুন সরকার প্রমুখ।
উল্লেখ্য, মেঘনা নদী থেকে ব্যাপক হারে বালু উত্তোলনের ফলে বিভিন্ন এলাকায় নদী ভাঙ্গনের তথ্য জাতীয় পত্রিকা সহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় প্রচারিত হয়েছে।-প্রেস বিজ্ঞপ্তি