চলারপথে ডেস্ক :
রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী মনোনীত করার ক্ষমতা দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দিয়েছে আওয়ামী লীগের সংসদীয় দল। আজ ৭ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার রাতে জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের বৈঠক শেষে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এই তথ্য জানান।
ওবায়দুল কাদের বলেন, সংসদীয় দলের বৈঠকে তিনি সংসদীয় দলের পক্ষে আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে ক্ষমতা অর্পণের প্রস্তাব করেন। সেটি সর্বসম্মতভাবে গ্রহণ করা হয়। এখন ঐক্যের প্রতীক প্রধামন্ত্রী শেখ হাসিনা সব জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটাবেন।
জানা যায়, বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সংসদ উপনেতা মতিয়া চৌধুরী, চিফ হুইপ নূর–ই–আলম চৌধুরী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাক ওবায়দুল কাদের বক্তব্য দেন।
আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রপতি পদে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মনোনয়ন জমা দেবেন। এর আগে দলের প্রার্থী কে তা প্রকাশ করা হবে না। সভায় বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদ সদস্যদের এলাকামুখী হতে বলেন। তিনি বলেন, উন্নয়ন কাজ চলছে, চলবে। কিন্তু মানুষের কাছে ভোট চাইতে হবে।
অনলাইন ডেস্ক :
দেশজুড়ে শৈত্যপ্রবাহ চলছে । কনকনে ঠান্ডায় জবুথবু সারা দেশের মানুষ। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ক্রমেই নিচের দিকে নামছে পারদের কাঁটা। ফলশ্রুতিতে অধিকাংশ এলাকায়ই সূর্যের দেখা নেই কদিন থেকে। অন্যান্য বছরের তুলনায় অনেক বেশি শীত অনুভূত হচ্ছে রাজধানীতেও।
কলকারখানা-গাড়ির ধোঁয়া, মানুষের কর্মচাঞ্চল্য, কোলাহল সবকিছুকে পেছনে ফেলে সকাল-সন্ধ্যা কুয়াশায় চাদরে ঢাকা পড়ছে ঢাকা শহর। তবে সুসংবাদ নেই। চলমান এই শৈত্যপ্রবাহ আরও দীর্ঘস্থায়ী হয়ে শীত বাড়াতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
এমন অবস্থায় শীত নিবারণে রাজধানীজুড়ে চাহিদা বেড়েছে গরম কাপড়ের। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বিভিন্ন বিপণী বিতান, শপিং মল থেকে শুরু করে ফুটপাতে বেচাকেনা হচ্ছে বিভিন্ন ধরণের শীতের কাপড়।
আজ ১৩ জানুয়ারি শনিবার দুপুরে রাজধানীর সায়েন্সল্যাব, নিউমার্কেট, এলিফ্যান্ট রোডসহ আশেপাশের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন চিত্রই দেখা যায়।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, মিরপুর রোডের গোল্ডেন গেট শপিং সেন্টার, খান প্লাজা, কাদের অর্কেড, প্রিয়াঙ্গন শপিং সেন্টার, বাইতুল মামুর জামে মসজিদ মার্কেট, বদরুদ্দোজা সুপার মার্কেট, নেহার ভবন, নুরজাহান সুপার মার্কেট, চন্দ্রিমা সুপার মার্কেট, নূর ম্যানশন সুপার মার্কেট, নিউ সুপার মার্কেটসহ সবগুলো মার্কেটেই শীতের কাপড়ের ব্যাপক সমাহার। ব্যবসায়ী ও দোকানিরা ক্রেতাদের চাহিদা আর রুচির কথা মাথায় রেখে পসরা সাজিয়েছেন এসব পোশাকের। এরমধ্যে জ্যাকেট, সোয়েটার, হুডি, ফুল স্লিভ টি-শার্ট, ব্লেজার, স্লিভলেস কোট, কটি, জিন্সের মোটা শার্ট-জ্যাকেট, ডেনিম শার্ট, উইন্টার কোট, উলের তৈরি শাল, খাদির শাল, মাফলার, কানটুপি, হাত-পায়ের মোজা অন্যতম।
ব্যবসায়ীরা জানান, শীতের অধিকাংশ ক্রেতাই তরুণ-তরুণী। সেজন্য তাদের পছন্দের কথা চিন্তা করে দোকানে ক্যাজুয়াল ফ্যাশনের কালেকশনই বেশি রাখা হয়েছে। এরমধ্যে এবার জ্যাকেটের চাহিদা বেড়েছে। এরমধ্যে জেন্টস লেদার জ্যাকেট, জেন্টস ফুল স্লিভ জ্যাকেট, লেডিস ফিট ফুল স্লিভ জ্যাকেট, জেনস কটন জ্যাকেট, ফুল স্লিভ জেন্টস ক্যাজুয়াল জ্যাকেট, জেন্টস হুডি জ্যাকেট অন্যতম। নতুন প্রজন্মের তরুণ-তরুণীদের কথা মাথায় রেখে এসব জ্যাকেটের প্যাটার্নেও এখন আনা হয়েছে বেশ নতুনত্ব। সিনথেটিক এবং মিক্সড লেদারের জ্যাকেটও রয়েছে দোকানগুলোতে। এছাড়াও ছোট বাচ্চা থেকে শুরু করে সব বয়সী মানুষের কথা চিন্তা করে বিভিন্ন প্যাটার্ন স্টাইল এবং গুণগত মানের কাপড় দেখা গেছে দোকানগুলোতে।
চন্দ্রিমা সুপার মার্কেটের ব্যবসায়ী বাপ্পি হাওলাদার বলেন, নিউমার্কেটসহ আশপাশের এলাকার অধিকাংশ ব্যবসায়ীরাই মৌসুমভিত্তিক কাপড়ের ব্যবসা করেন। সে অনুযায়ী এখন অধিকাংশ দোকানেই শীতের পোশাক। তবে এক্ষেত্রে আমরা তরুণ-তরুণীদের পছন্দকে প্রাধান্য দেই। কারণ বয়স্ক মানুষজন একটি শীতের কাপড়ের একাধিক বছর চালালেও তরুণ-তরুণীদের প্রতি বছর নতুন কাপড় কেনার প্রবণতা বেশি। সেজন্য আমরা তাদের পছন্দের কথা মাথায় রেখেই শীতের পোশাক সংগ্রহ করে থাকি। এবছর বিক্রি খুবই ভালো হচ্ছে। সম্প্রতি শীত বাড়ার কারণে দোকানে ক্রেতার পরিমাণও বেড়েছে। সবমিলিয়ে গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার শীতের পোশাকের বিক্রি নিয়ে সন্তুষ্টির কথাও জানান তিনি।
রবিউল হুসাইন নামের আরেক বিক্রেতা শীতের পোশাকের দাম সম্পর্কে বলেন, গুণগত মান এবং ব্র্যান্ডের উপর ভিত্তি করে দাম নির্ধারিত হচ্ছে। দেশীয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের তৈরি ভালো কোয়ালিটির জ্যাকেট ১ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৩ হাজার টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। আবার এক্সপোর্ট কোয়ালিটি কিংবা চায়না জ্যাকেট দেড় থেকে আড়াইহাজার টাকায় বিক্রি করছি। লেদার জ্যাকেটের দাম নির্ধারিত হচ্ছে গুণগত মানের উপর। সোয়েটার এবং হুডি ৮শ টাকা থেকে শুরু করে দেড় হাজার টাকায় বিক্রি করছি। মূলত, এবছর টেক্সটাইল এবং সব ধরনের গার্মেন্টস পণ্যের উপাদানের দাম বাড়ার কারণে এর প্রভাব খুচরা বাজারে পড়েছে। তবে বেশি বিক্রির জন্য ব্যবসায়ীরা ক্রেতাদের কাছে স্বল্প লাভেই বিক্রি করছেন বলেও দাবি করেন তিনি।
বিক্রি নিয়ে সন্তুষ্ট ফুটপাতের বিক্রেতারাও। মেয়েদের ওলের ওড়না, জ্যাকেট, চাদর থেকে শুরু করে ছোট বাচ্চাদের বিভিন্ন শীতের পোশাকের পসরা নিউমার্কেটের ফুটপাতজুড়ে। দামেও কিছুটা কমের কারণে সেসব দোকান ঘিরে ভিড় করছেন মানুষজন। অনেক দোকানে আবার চাদর, হুডি, হাতাওয়ালা টিশার্ট তাল মিলিয়ে ‘বাইচ্ছা লন, তিনশ’, ‘দেইখা লন, তিনশ’ এভাবে ডেকে বিক্রি করতে দেখা যায়।
আব্দুল ওয়াহাব নামের ফুটপাতের এক বিক্রেতা বলেন, বেশ ভালো বিক্রি হচ্ছে। কমদামে ভালো কাপড় দিচ্ছি। আমাদের তো দোকান ভাড়া দিতে হয়না। কর্মচারী বিল নাই। সেজন্য অল্প লাভেই মানুষের কাছে বিক্রি করতে পারছি। আজকে ছুটির দিন হওয়ার কারণে সকাল থেকেই ক্রেতা সমাগম বেশি।
আবার নিউমার্কেটের ভেতরে দোকানগুলো ঘুরে দেখা যায়, মানুষজন বেশি কেনাকাটা করছেন তাদের এলাকায় থাকা আত্মীয় স্বজনদের কাছে পাঠানোর জন্য। বাড়ির ছোট বাচ্চা থেকে শুরু করে বয়স্কদের জন্য শাল, মাফলার, হাত-পায়ের মোজার ক্রেতার পরিমাণ বেশি। ভেতরের দোকানগুলোতে শাল চাদর মানভেদে ১ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা, মাফলার ১৫০ টাকা থেকে শুরু করে সাড়ে তিনশো টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আবার বাচ্চাদের পোশাকও গুণগত মান ও বয়সভেদে বিভিন্ন দামে বিক্রি হচ্ছে।
কেনাকাটা করতে আসা তাসলিমা বেগম বলেন, আমার বাড়ি গাইবান্ধা। সেখানে প্রচুর শীত পড়েছে। বাবা-মায়ের জন্য শীতের পোশাক আগেই পাঠিয়েছি। তারপরও এখন আবার মোটা খাদি কাপড়ের শাল চাদর, মাফলার এবং হাত পায়ের মোজা বেশি করে কিনে বাড়িতে পাঠাচ্ছি। দাম তুলনামূলক কিছুটা বেশিই। তারপরও প্রয়োজনের তাগিদে কেনাকাটা তো করতেই হচ্ছে।
ইউসুফ মিয়া নামের আরেকটা ক্রেতা বলেন, শীত একটু বেশি পড়েছে। সেজন্য সবাই হুমড়ি খেয়ে কেনাকাটা করছে। ক্রেতা যেহেতু বেশি তাই দোকানিরা দাম একটু বেশি চাইছে। তবে নিউমার্কেটের ফুটপাতে সাশ্রয়ী মূল্যে শীতের পোশাক পাওয়া যাচ্ছে। আর মার্কেটগুলোতে দাম কিছুটা বেশি। দেখেশুনে কেনাকাটা করতে হচ্ছে।
কম্বল-লেপের বিকল্প হিসেবে চাহিদা বেড়েছে কম্ফোর্টারের
শীতে আরামদায়ক ঘুমের জন্য উঞ্চতা বৃদ্ধিতে বর্তমানে সবার কাছে পরিচিতি লাভ করেছে কম্ফোর্টার। লেপ কিংবা কম্বলের তুলনায় দ্রুত উষ্ণতা পেতে এর জুড়ি নেই। তাইতো কম্বল ও লেপের তুলনায় এখন চাহিদা বেড়েছে কম্ফোর্টারের। আবার বিদেশি কম্ফোর্টারের পাশাপাশি দেশীয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান কম্ফোর্টার তৈরি করে স্থানীয়ভাবে বাজারজাত করার কারণে দামও হাতের নাগালে রয়েছে। কম্ফোর্টার তৈরিতে এগিয়ে এসেছে বেশ কয়েকটি বড় কোম্পানিও। তাই স্বল্প দামে ভালো মানের কম্ফোর্টারের দিকে ঝুঁকেছেন মানুষজন।
বিক্রেতারা জানান, অনলাইনে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণার কারণে মানুষ এখন দোকানে এসেই কম্ফোর্টার খুঁজেন। স্থানীয়ভাবে তৈরি ফাইবারের এসব কম্ফোর্টার সিঙ্গেল, সেমি ডাবল ও ডাবল হিসেবে দাম ঠিক করা হয়। আবার কম্ফোর্টারের পুরুত্বের ওপরও নির্ভর করে গুণগত মান।
নীলক্ষেত সিটি কর্পোরেশন মার্কেটের বেডশিট ব্যবসায়ী ইলিয়াস খান বলেন, কম্বল ও লেপের তুলনায় কম্ফোর্টারের ওজন একেবারেই হালকা। তবে এর সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো দ্রুততম সময়ে উষ্ণতা পাওয়া যায়। আমাদের দেশীয় বিভিন্ন ব্র্যান্ড যেমন কমফি, বেক্সি ফেব্রিকসসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান কম্ফোর্টার তৈরি করছে। এসব কম্ফোর্টার আকারভেদে এগারোশ টাকা থেকে আড়াইহাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও কোরিয়ান, চায়নাসহ অন্যান্য বিদেশি কম্ফোর্টার সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। একইসঙ্গে কম্বলের বেচাকেনা আহামরি না হলেও অন্যান্য বছরের মতোই স্বাভাবিক রয়েছে বলেও জানান তিনি।
চলারপথে ডেস্ক :
আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হবে নিবন্ধন। আগামী ১ মার্চ থেকে এনআইডি না দেখিয়ে টিকিট পাওয়া যাবে না। ট্রেনে ভ্রমণ করা যাবে না। কালোবাজারি বন্ধে ‘টিকিট যার, ভ্রমণ তার’ নীতি বাস্তবায়নে এ পদ্ধতি চালু করা হচ্ছে বলে আজ ১৫ ফেব্রুয়ারি বুধবার রাজধানীর রেলভবনে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন।
টিকিটে যাত্রীর নাম, এনআইডি নম্বর ও ফোন নম্বর থাকবে। ভ্রমণের সময় সঙ্গে যাত্রীদেরকে এনআইডি, জন্ম নিবন্ধন, পাসপোর্ট অথবা ছবিযুক্ত পরিচয়পত্রের ফটোকপি সঙ্গে রাখতে হবে। পরিচয়পত্রে ও টিকিটে থাকা নামের অমিল থাকলে, বিনা টিকিটের যাত্রী হিসেবে গণ্য করে জরিমানা করা হবে।
আন্তঃনগর ট্রেনের অর্ধেক টিকিট বিক্রি হয় অ্যাপে ও অনলাইনে। অনলাইনে এনআইডি ও ফোন নম্বর দিয়ে অ্যাকাউন্ট খুলে টিকিট কাটতে হয়। তবে এনআইডি সঠিক কিনা তা যাচাইয়ের সুযোগ নেই। এখন থেকে যাচাই হবে বলে জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী। যাত্রীদের দুর্ভোগ কমাতে, অনলাইনে টিকিট ফেরত দিয়ে অনলাইনেই টাকা ফেরত পাবেন যাত্রীরা।
রেলের অতিরিক্ত মহাসচিব সরদার সাহাদাত আলী জানিয়েছেন, কাউন্টার থেকে টিকিট কিনতে জীবনে একবারই অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে। এর জন্য ইন্টারনেটের প্রয়োজন নেই। ভুয়া এনআইডি দিয়ে নিবন্ধন করলে, ভ্রমণের সময় ধরা পড়বে। একটি এনআইডি দিয়ে একটির বেশি অ্যাকাউন্ট খোলা যাবে না।
রেল সূত্র জানিয়েছে, অন্যের এনআইডি দিয়ে অ্যাকাউন্ট খোলার সুযোগ রয়েছে। সরদার সাহাদাত আলী বলেছেন, প্রমাণ দিলে যাঁর এনআইডি তাঁকে অ্যাকাউন্টের নিয়ন্ত্রণ দেওয়া হবে।
রেলমন্ত্রী সংবাদ সম্মেলনে জানান, সব বিভাগীয় শহরে এবং আন্তঃনগর ট্রেনের প্রারম্ভিক স্টেশনে নিবন্ধনের জন্য থাকবে হেল্প ডেস্ক। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে টিকিটিং ব্যবস্থায় এই পরিবর্তন। ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সীরা বাবা অথবা মায়ের এনআইডি দিয়ে টিকিট কিনতে পারবে। ভ্রমণের সময় সঙ্গে রাখতে হবে জন্ম নিবন্ধনের সনদের ফটোকপি। টিকিট চেকিংয়ে পয়েন্ট অব সেল (পস) মেশিন ব্যবহার করা হবে। জাল টিকিট শনাক্ত করা হবে পস মেশিনে। বিনা টিকিটের যাত্রীদের জরিমানা করে টিকিট ইস্যু করা যাবে।
সংবাদ সম্মেলনে রেল সচিব ড. হুমায়ুন কবীর, মহাপরিচালক কামরুল আহসানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
পটুয়াখালীর দশমিনায় বুড়াগৌরাঙ্গ নদীতে ঝড়ের কবলে পড়ে বরযাত্রীবাহী ট্রলারডুবির ঘটনা ঘটেছে। এতে এক নারী নিহত এবং বর ও বরের মাসহ চারজন নিখোঁজ রয়েছেন। নিখোঁজদের উদ্ধারে ফায়ার সার্ভিস, নৌপুলিশসহ উপজেলা প্রশাসন কাজ করছে।
আজ ২৮ এপ্রিল শুক্রবার বিকেলে উপজেলার রণগোপালদী ইউনিয়নের আউলিয়াপুর লঞ্চঘাট সংলগ্ন বুড়াগৌরাঙ্গ নদীতে এ ঘটনা।
নিখোঁজ বরের নাম রাব্বি হাওলাদার। তিনি উপজেলার রণগোপালদী ইউনিয়নের গুলি আউলিয়ার গ্রামের মনির হাওলাদারের ছেলে।
নিহত নারীর নাম লিপি বেগম (৩০)। তিনি বর রাব্বি হাওলাদারের ফুপু। লিপি বেগম উত্তর রণগোপালদী এলাকার ধলু হাওলাদারের স্ত্রী।
বরের স্বজন মঞ্জুর এলাহী জানান, কয়েকদিন আগে রাব্বি হাওলাদারের সঙ্গে চরবোরহান ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের হুমায়ুন মুন্সির মেয়ে সুমাইয়া আক্তারের বিয়ে হয়। ২৫ এপ্রিল মঙ্গলবার বর রাব্বি হাওলাদার তার স্বজনদের নিয়ে নববধূকে আনতে কনের বাড়িতে যান। শুক্রবার নববধূ সুমাইয়াসহ ১৪-১৫ জন আত্মীয়-স্বজনকে নিয়ে চরবোরহান থেকে ট্রলারযোগে বাড়ির ফিরছিলেন। এসময় তাদের ট্রলার আউলিয়াপুর লঞ্চঘাটের কাছাকাছি গিয়ে ঝড়ের কবলে পড়ে বুড়াগৌরাঙ্গ নদীতে ডুবে যায়।
নিখোঁজ অন্যরা হলেন বরের মা সেলিনা আক্তার (৪০), উত্তর রণগোপালদী এলাকার ধলু হাওলাদারের মেয়ে খাদিজা (৫) ও উত্তর চর শাহজালাল এলাকার বেল্লাল মুন্সির মেয়ে মানসুরা (৮)।
দশমিনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী হাসান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
দশমিনা ফায়ার সার্ভিস স্টেশন লিডার আনোয়ার হোসেন বলেন, নিখোঁজদের সন্ধানে অভিযান চলছে। তবে এখন পর্যন্ত চারজনের কাউকে পাওয়া যায়নি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাফিসা নাজ নীরা বলেন, আমি ঘটনাস্থলে আছি। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। ফায়ার সার্ভিস ও নৌপুলিশ সদস্যরা উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করছেন।
অনলাইন ডেস্ক :
ভবিষ্যতে কেউ যেন মুক্তিযুদ্ধের বিজয়গাথা বিকৃত করতে না পারে সেজন্য সবাইকে সজাগ থাকার আহবান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করার পর স্বাধীনতার চেতনা, মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ সবই মুছে গিয়েছিলে। আমাদের কবি, শিল্পী, সাহিত্যিক, লেখকরা তাদের লেখনির মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধরে রেখেছিলেন। আমরা রাজনীতিবিদরা রাজনীতির মধ্য দিয়ে গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছিলাম।
আজ ১৫ সেপ্টেম্বর শুক্রবার বিকেলে জাতীয় জাদুঘরে স্বাধীনতা প্রদকপ্রাপ্ত আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন শিল্পী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহাবুদ্দিন আহমেদের ‘১৯৭৩-২০২৩ এ রেট্রোস্পেক্টিভ’ শীর্ষক নির্বাচিত চিত্রকর্মের বিশেষ প্রদর্শনী উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ভবিষ্যতে আবার কেউ যেন কখনো আমাদের মুক্তিযুদ্ধের বিজয়গাথা বিকৃত করতে না পারে সেজন্য সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশকে গড়ে তোলার পদক্ষেপ নিয়েছি, আজ আমাদের তরুণ সমাজের মধ্যে সেই চেতনা আবার ফিরে আসতে শুরু করেছে, এটাই হচ্ছে সবচেয়ে বড় পাওয়া।
তিনি বলেন, শিল্পীর আঁকা ছবি হৃদয় দিয়ে উপলব্ধি করা যায়, আবার সঙ্গে সঙ্গে দেশপ্রেম উদ্বুদ্ধ হওয়া যায়; একটা চেতনা জাগ্রত হয়। আর আমাদের জন্য মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেই চেতনায় বাংলাদেশের জনগণ জাগ্রত হবে, দেশকে মহান মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে গড়ে তুলবে।
তিনি আরো বলেন, চিত্রশিল্পীদের তুলির আঁচড়ে ফুটে উঠে আমাদের প্রকৃতি, আমাদের দেশের নানা চিত্র। আমাদের ইতিহাস যেমন ফুটে উঠে, সেইসঙ্গে দরিদ্র মানুষের দৃশ্যগুলো উঠে আসে। আমি ’৯৬ সালে সরকার গঠন করার পর আন্তর্জাতিক চিত্রশিল্পীর একটা সম্মেলন করি।
সেখানের কয়েকটি শিল্পকর্ম আমার দৃষ্টি আকর্ষণ করে। আমি নিজেও একটি কিনে নিই। তার সঙ্গে কয়েকটি উপহারও পাই। আমাদের পরিকল্পনা কমিশনে, যেখানে বসে উন্নয়নের পরিকল্পনা করি, সেখানে সেই চিত্রটি লাগিয়ে রেখেছি। আরেকটি আছে গণভবনে। এগুলো আমাদের সঙ্গেই থাকে।
শিল্পী শাহাবুদ্দিন আহমেদের প্রশংসা করে শেখ হাসিনা বলেন, শাহাবুদ্দিন আমার ছোটো ভাইয়ের মতো।তিনি প্যারিসে বাস করেন কিন্তু তার হৃদয় বাংলাদেশে থাকে। আমি মনে করি সে সবার মধ্যে অন্যতম, শ্রেষ্ঠ। কারণ সে হৃদয়ে ধারণ করে, সে যে মুক্তিযোদ্ধা ছিল, এখনও সে মুক্তিযোদ্ধাই। সেই চিন্তা-চেতনা নিয়েই তার শিল্পকর্ম। যেটা আমাকে সবচেয়ে বেশি অনুপ্রাণিত করে।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানা উপস্থিত ছিলেন। শিল্পী শাহাবুদ্দিন আহমেদ তার বক্তব্যে মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে স্মৃতিচারণ করেন।
৮ ডিসেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও সরাইল মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে মুক্তিযোদ্ধারা পাক হানাদার বাহিনীর কবল থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও সরাইলকে মুক্ত করেন। এদিন সকালে বিনা বাধায় মুক্তিবাহিনী ও মিত্র বাহিনী শহরে প্রবেশের মধ্য দিয়ে হানাদারমুক্ত হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়া। আনুষ্ঠানিকভাবে উড়ানো হয় স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা। মুক্ত দিবস উদযাপনে ব্যাপক কর্মসূচি হাতে নিয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ও সরাইল উপজেলা প্রশাসনসহ নানা সংগঠন। সূত্রমতে, ১৯৭১ সালের ৩০ নভেম্বর থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে শত্রুমুক্ত করতে জেলার আখাউড়া সীমান্ত এলাকায় মিত্রবাহিনী সদস্যরা পাকবাহিনীর ওপর বেপরোয়া আক্রমণ চালাতে থাকে।
১ ডিসেম্বর আখাউড়া সীমান্ত এলাকায় ২০ পাকিস্তানী সৈন্য নিহত হয়।
৩ ডিসেম্বর আখাউড়ার আজমপুরে প্রচণ্ড যুদ্ধ হয়। সেখানে ১১ পাকিস্তানি সৈন্য নিহত হয়। শহীদ হন ৩ মুক্তিযোদ্ধা। এরই মধ্যে বিজয়নগর উপজেলার মেরাশানী, সিঙ্গারবিল, মুকুন্দপুর, হরষপুর, আখাউড়া উপজেলার আজমপুর, রাজাপুর এলাকা মুক্তিবাহিনীর দখলে চলে আসে।
৪ ডিসেম্বর পাক হানাদাররা পিছু হটতে থাকলে আখাউড়া অনেকটাই শত্রুমুক্ত হয়। এখানে রেলওয়ে স্টেশনের যুদ্ধে পাক বাহিনীর দু’শতাধিক সেনা হতাহত হয়।
৬ ডিসেম্বর আখাউড়া উপজেলাকে শত্রুমুক্ত করার পর মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় মিত্রবাহিনী ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের দিকে দিকে অগ্রসর হতে থাকে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের চারপাশে মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর শক্ত অবস্থানের কারণে পিছু হটতে বাধ্য হয় পাক হানাদাররা। ৬ ডিসেম্বর শহর ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় রাজাকারদের সহায়তায় তৎকালীন ব্রাহ্মণবাড়িয়া কলেজের অধ্যাপক কে.এম লুৎফুর রহমানসহ কারাগারে আটকে রাখা অর্ধশত বুদ্ধিজীবী ও সাধারণ মানুষকে শহরের কুরুলিয়া খালের পাড়ে নিয়ে গিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে পাক হানাদাররা। পরদিন ৭ ডিসেম্বর রাতের আঁধারে পাক হানাদাররা ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহর ছেড়ে আশুগঞ্জের দিকে পালাতে থাকে। এর ফলে ৮ ডিসেম্বর বিনা যুদ্ধে মুক্ত হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়া। ওই দিন সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের পুরাতন কাচারি ভবনের সামনে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন মুক্তিযুদ্ধের পূর্বাঞ্চলীয় জোনের প্রধান জহুর আহমেদ চৌধুরী। একই দিনে শত্রুমুক্ত হওয়ায় সরাইল থানা চত্বরেও উত্তোলন করা হয় লাল-সবুজ পতাকা।
এদিকে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া হানাদার মুক্ত দিবস উপলক্ষ্যে জেলা প্রশাসন ও বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠনের উদ্যোগে কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।