আখাউড়ায় আওয়ামী লীগ, বিএনপির পৃথক কর্মসূচি

আখাউড়া, 11 February 2023, 1179 Views,

আখাউড়া প্রতিনিধি :
১০ দফা দাবিতে সারা দেশের ন্যায় আখাউড়ায় বিএনপির পূর্বঘোষিত পদযাত্রা কর্মসূচি পালিত হয়েছে। এসব দাবির মধ্যে রয়েছে বিদ্যুৎ, গ্যাস, চাল, ডাল, তেল, লবন, আটাসহ সকল নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য ও সার, ডিজেলসহ কৃষি উপকরণের লাগামহীন মূল্যবৃদ্বি এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, ফ্যাসিস্ট সরকারের পদত্যাগ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও সকল বন্দি নেতাকর্মীদের মুক্তি। এসব দাবির প্রতিবাদে আখাউড়া উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে পৃথক স্থানে বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করেছে। এদিকে একই সময়ে প্রতিটি ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতকর্মীরা শান্তি সমাবেশ কর্মসূচি নিয়ে মাঠে ছিল।

আজ ১১ ফেব্রুয়ারি শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় আখাউড়া উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়ন বিএনপির আয়োজনে গাজীর বাজার-হীরাপুর সড়কে পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করা হয়। উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব ডাঃ খোরশেদ আলম ভূঁইয়ার নেতৃত্বে পদযাত্রা কর্মসূচিতে দক্ষিণ ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মোঃ জহিরুল আলম ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে এ সময় বক্তব্য রাখেন বিএনপি নেতা ও দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ শাহনেওয়াজ খান, পৌর বিএনপির সদস্য সচিব আক্তার হোসেন, উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব মোঃ মহসিন ভূঁইয়া, জাহের ভূঁইয়া, জাহাঙ্গীর আলম ভূঁইয়া, মনির মুন্না প্রমুখ। সঞ্চালনা করেন ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি আল আমিন ভূঁইয়া।

এদিকে দক্ষিণ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা গাজীর বাজারে উপস্থিত হয়ে শান্তি সমাবেশ করে। এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মজনু মিয়া, আওয়ামী লীগ নেতা অহিদ ভূঁইয়া, আওয়ামী লীগ নেতা হেলাল উদ্দিন, ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহনেওয়াজ ভূঁইয়া, যুবলীগ নেতা শফিকুল ইসলাম, যুবলীগ নেতা ছাদেকুল ইসলাম, মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক আহবায়ক মোঃ ইব্রাহীম ভূঁইয়া লিটন, ছাত্রলীগের যুগ্ম আহবায়ক লুৎফুর রহমান সজিব প্রমুখ।

Leave a Reply

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় স্বচ্ছতা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে ৮৩…

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সম্পূর্ণ স্বচ্ছতা ও সঠিক প্রক্রিয়ায় ৮৩জন Read more

জননিরাপত্তার নিশ্চিত করার জন্য রাজনৈতিক ঐক্যমত…

চলারপথে রিপোর্ট : জননিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য রাজনৈতিক ঐক্যমত একান্ত Read more

বিপুল পরিমাণ গাঁজাসহ গ্রেফতার ১

চলারপথে রিপোর্ট : বিজয়নগর উপজেলা থেকে বিপুল পরিমাণ গাঁজাসহ ১ Read more

সম্মেলনকে কেন্দ্র করে বাঞ্ছারামপুরে ১৪৪ ধারা…

চলারপথে রিপোর্ট : বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় সম্মেলনকে কেন্দ্র করে উপজেলা ও Read more

বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে অংশীজন ও…

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় “বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে অংশীজন ও Read more
ফাইল ছবি

আশুগঞ্জে ট্রেনের ধাক্কায় বৃদ্ধার মৃত্যু

চলারপথে রিপোর্ট : আশুগঞ্জে ট্রেনের ধাক্কায় মাথায় আঘাত পেয়ে অজ্ঞাতনামা Read more

আখাউড়ায় বিনামূল্যে ধান বীজ বিতরণ চলারপথে রিপোর্ট : আখাউড়া উপজেলায় Read more

কুয়েতে সড়ক দুর্ঘটনায় আবু বাক্কার নিহত

চলারপথে রিপোর্ট : কুয়েতে প্রাইভেটকার দুর্ঘটনায় শেখ আবু বাক্কার (৩৪) Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বাস উল্টে যাত্রী নিহত

চলারপথে রিপোর্ট : সরাইল উপজেলায় বাস উল্টে গোপী কান্ত ঘোষ Read more

ট্রাক-অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষ একজন নিহত

চলারপথে রিপোর্ট : ট্রাক ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে অটোরিকশার Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শিশু নাট্যমের বিতর্ক প্রতিযোগিতা

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শিশু নাট্যমের ৩৮ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে Read more

ইয়াবা ট্যাবলেটসহ দুই পাচারকারী গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : আশুগঞ্জে ১হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ গোপাল রায় Read more

বন্যাদুর্গত ৩০০ জনকে বিনামূল্যে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা প্রদান

আখাউড়া, 31 August 2024, 119 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
আখাউড়ায় বন্যাদুর্গত ৩শ জন মানুষকে বিনা মূল্যে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে তাদের মাঝে বিনা মূল্যে বিভিন্ন রোগের ওষুধও বিতরণ করা হয়। বানভাসীদের পুনর্বাসন কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ১৫ জন চিকিৎসকের মাধ্যমে বন্যার্তদের চিকিৎসা প্রদান করা হয়।

আজ ৩১ আগস্ট শনিবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ার দক্ষিণ ইউনিয়নের রহিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক পরিষদ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখা এই আয়োজন করেন। ফ্রি হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা ক্যাম্পেইন-২০২৪ এর সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন আখাউড়া প্রেসক্লাব।

বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক পরিষদ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ফারুক বলেন, সকাল ১০ থেকে বিকেল ৪ টা পর্যন্ত আখাউড়ার প্রায় ৮/১০ টি বন্যা কবলিত গ্রামের মানুষদের ফ্রি হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা দিয়েছি। একই সঙ্গে তাদের মাঝে বিনা মূল্যে বিভিন্ন রোগের ওষুধও বিতরণ করা হয়েছে। চিকিৎসা সেবা নিতে আসা বেশির ভাগই পানিবাহিক রোগে আক্রান্ত। দুপুরে আখাউড়া উপজেলা নিবার্হী অফিসার গাজালা পারভিন রুহী ফ্রি হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা ক্যাম্পেইন পরির্দশন করেন। এসময় তিনি বিভিন্ন রোগীর সঙ্গে কথা বলেন ও ক্যাম্পের কার্যক্রম পরিদর্শন করেন। তিনি বলেন, বন্যাদুর্গত এলাকার মানুষজন পানিবাহিত রোগসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এই সময়ে তাদের চিকিৎসা সেবা প্রদান করা খুবই দরকার।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক পরিষদ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখার সভাপতি ডাঃ আব্দুল কাদির, আখাউড়া প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মো. ফজলে রাব্বি।

অংকুর কিন্ডার গার্টেনের বার্ষিক ফলাফল প্রকাশ ও বিদায় সংবর্ধনা

আখাউড়া, 27 December 2023, 474 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষার প্রাচীন বিদ্যাপীঠ অংকুর কিন্ডারগার্টেনের বার্ষিক পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ ও ৫ম শ্রেণীর বিদায়ী শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। আজ ২৭ ডিসেম্বর বুধবার সকালে পৌরশহরের সিরাজালয়ে বিদ্যালয় চত্বর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন আখাউড়া রেলওয়ে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আসাদুজ্জামান খান। অনুষ্ঠানে অভিভাবক ও ছাত্রছাত্রীদের উপস্থিতিতে উৎসব মুখর হয়ে উঠে বিদ্যালয় চত্বর।

বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ শফিকুল আলম তুরানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন ৩নং ওয়ার্ডের পৌর কাউন্সিলর এনাম খাদেম, রেলওয়ে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক রাধাকৃষ্ণ নুনিয়া, আখাউড়া প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি হান্নান খাদেম, সাংবাদিক মহিউদ্দিন মিশু, রুবেল আহমেদ, সাদ্দাম হোসেন, রেলওয়ে জেলা স্কাউটের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আহসান কবির লিটন প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, প্রাথমিক শিক্ষা বিস্তারে অংকুর কিন্ডারগার্টেন গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে যাচ্ছে। এজন্য স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা ও শিক্ষকদের ভূয়শী প্রশংসা করেন বক্তারা। বিজয়ী ছাত্রছাত্রীদেরকে অভিনন্দন জানান। যারা উত্তীর্ণ হতে পারেনি তাদের সাথে আন্তরিক ব্যবহার করার জন্য শিক্ষক ও অভিভাবকদেরকে প্রতি অনুরোধ জানান। হতাশ না হয়ে মনোযোগ দিয়ে পড়ালেখা করার জন্য অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের পরামর্শ দেন। এ স্কুল দায়িত্বশীল ভূমিকা

আলোচনা শেষে প্লে গ্রুপ থেকে ৫ম শ্রেণীর ছাত্রছাত্রীদের ফলাফল ঘোষণা করা হয়। ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে উত্তীর্ণ বিদায়ী ছাত্রছাত্রীদেরকে ক্রেস্ট উপহার দেওয়া হয়। ফলাফল ঘোষণার পর আনন্দ উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে ছাত্রছাত্রীরা।

পরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে অতিথিকে সম্মাননা স্মারক উপহার দেন প্রতিষ্ঠান প্রধান শফিকুল আলম তুরান। অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন শিক্ষক ফারজানা আক্তার, তানিয়া আক্তার, সোনিয়া সুলতানা, আকলিমা আক্তার। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন এ.আই সম্রাট খাদেম।

উল্লেখ্য, ১৯৯৬ সালে অংকুর কিন্ডারগার্টেন প্রতিষ্ঠিত হয়।

চলন্ত ট্রেন থেকে পা পিছলে মেঘনায়: ১৭ ঘণ্টাও খোঁজ মেলেনি তানভীরের

আখাউড়া, জাতীয়, 1 June 2024, 477 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
কিশোরগঞ্জের ভৈরব মেঘনায় রেলওয়ে সেতু পার হওয়ার সময় চলন্ত ট্রেন থেকে পা পিছলে নদীতে পড়ে নিখোঁজ হয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ার তানভীর নামে এক যুবক। নিখোঁজ হওয়ার প্রায় ১৭ ঘণ্টা কেটে গেলেও তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। তার সন্ধানে নদীতে অভিযান চালাচ্ছে ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকারী দল।

আজ ১ জুন শনিবার সকাল ১০টায় ভৈরব নৌপুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. মনিরুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে, শুক্রবার বিকেল ৫টার দিকে ভৈরবের মেঘনা নদীর ওপর শহীদ হাবিলদার রেলওয়ে সেতু পাড়ি দেওয়ার সময় চলন্ত ট্রেন থেকে পড়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে। তানভীর আখাউড়া পৌর শহরের দেবগ্রাম এলাকার মেরাজ মিয়ার ছেলে।

জানা যায়, শুক্রবার বিকেলে মালয়েশিয়া যাওয়ার কথা ছিল তানভীরের। সেই মোতাবেক মালয়েশিয়া যেতে বাড়িতে সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বের হন। ছেলেকে বিমানে তুলে দিতে বাবাও বাড়ি থেকে ঢাকায় আসেন।

বিমানবন্দর এসে হঠাৎ জানতে পারে অনিবার্য কারণে মালয়েশিয়া যাওয়ার ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। এরপর ঢাকা বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশন থেকে নোয়াখালীগামী উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেনে করে বাবার সঙ্গে নিজ বাড়ি ফিরছিলেন তানভীর। ট্রেনটি মেঘনায় রেলওয়ে সেতু পাড়ি দেওয়ার সময় হঠাৎ দরজা থেকে পা পিছলে সে নদীতে পড়ে যান। পরে নদীতে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তানভীরের সন্ধান মেলেনি।

ভৈরব নৌপুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. মনিরুজ্জামান বলেন, চলন্ত ট্রেন থেকে মেঘনা নদীতে পড়ে এক যুবক নিখোঁজ হয়েছেন। এরপর থেকে তার সন্ধানে উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকারী দল।

রেলওয়ে স্টেশন ওভার ব্রীজে র‌্যাম্প না থাকায় যাত্রীদের ভোগান্তি

আখাউড়া, 15 July 2023, 931 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
পূর্বাঞ্চল রেলপথের অন্যতম বড় রেলওয়ে জংশন আখাউড়া। এ ষ্টেশনে প্রায় প্রতিটি আন্ত:নগর এক্সপ্রেসহ সকল ট্রেনের যাত্রা বিরতি রয়েছে।

প্রতিদিন কয়েক হাজার যাত্রী এ ষ্টেশন হয়ে ট্রেন ভ্রমন করে থাকে। বর্তমানে আখাউড়া ষ্টেশনে আধুনিকায়নের কাজ চলছে। এ ষ্টেশনে যাত্রী পারাপারের জন্য নব বিশাল একটি ফুট ওভার ব্রীজ নির্মাণ করা হচ্ছে। কিন্তু ওভার ব্রীজে ওঠা-নামার জন্য র‌্যাম্প বা সমতল সিঁড়ি রাখা হয়নি। এজন্য দুর্ভোগে পড়েছে ট্রেন যাত্রীরা।

প্রতিবন্ধি, বয়োবৃদ্ধ এবং নারী-শিশুদের চলাচলে খুব অসুবিধা হচ্ছে। তাছাড়া অতিরিক্ত ব্যাগেজ বহন করে এক ফ্ল্যাট ফরম থেকে অন্য ফ্ল্যাট ফরমে যেতে হিমশিম খাচ্ছেন যাত্রীরা। যাত্রীদের সুবিধার্থে ওভার ব্রীজে ওঠা-নামার জন্য র‌্যাম্প বা সমতল সিঁড়ি নির্মাণের দাবি এলাকাবাসীর। এদিকে এ ব্যাপারে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের হস্তপেক্ষ কামনা করে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে আখাউড়া পৌরসভার প্যানেল মেয়র এনাম খাদেম একটি দরখাস্ত দিয়েছেন।

রেলওয়ের একটি সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েক বছর ধরে আখাউড়া-লাকসাম ডাবল ডুয়েল গেজ রেলপথ নির্মাণ কাজ চলছে। এর ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকা। প্রতিটি রেলওয়ে ষ্টেশন আধুনিকায়ন করা হচ্ছে। এর অংশ হিসেবে আখাউড়া রেলওয়ে ষ্টেশন আধুনিকায়ন, নতুন ফ্ল্যাট ফরম নির্মাণ, রেল ট্র্যাক স্থাপনের কাজ প্রায় সমাপ্তির দিকে। নতুন জংশনে ১৭টি রেল ট্র্যাক/লাইন বসবে।

এ স্টেশন যাত্রী পারাপারের জন্য বিশাল একটি ফুট ওভার ব্রীজ নির্মাণ করা হচ্ছে। এর দৈঘ্য প্রায় ১৯০ ফুট এবং উচ্চতা ৩০ ফুট। প্রায় ৫০ ফুট লম্বা সিঁড়ি হেঁটে যাত্রীদেরকে ওভার ব্রীজে উঠতে হবে। ওই ব্রীজে উঠা-নামার জন্য উভয় পাশে ৩টি করে ৬টি সিঁড়ি রাখা হয়েছে। কিন্তু কোন র‌্যাম্প বা সমতল সিঁড়ি রাখা হয়নি। এজুন্য প্রতিবন্ধি, অসুস্থ, বয়োবৃদ্ধ যাত্রীদের পারাপারে অসুবিধা হচ্ছে।

তাছাড়া অতিরিক্ত ওজনের ব্যাগেজ বহন করে সিঁড়ি ভেঙ্গে চলাচল করতেও সমস্যায় পড়ছেন যাত্রীরা। অথচ এ পথের ছোট ছোট ষ্টেশনগুলোর ওভার ব্রীজেও র‌্যাম্প সিঁড়ি রাখা হয়েছে।

এদিকে প্রতিবন্ধি ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন-২১৩ এর ১৩ ধারায় ভৌত অবকাঠামো, যানবাহন, যোগাযোগ, তথ্য ও তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তিসহ জনসাধারণের জন্য প্রাপ্য্য সকল সুবিধা ও সেবাসমূহে অন্যান্যদের মত প্রত্যেক প্রতিবন্ধি ব্যক্তির সমসুযোগ ও সম আচরণ প্রাপ্তির অধিকারের কথা বলা হয়েছে।

শনিবার দুপুরে আখাউড়া রেলওয়ে ষ্টেশনে গিয়ে দেখা গেছে, দু’জন নারী ছোট বাচ্চা কোলে নিয়ে রেল লাইনের উপর দিয়ে এক ফ্ল্যাট ফরম থেকে অন্য ফ্ল্যাট ফরমে যেতে দেখা গেছে। একজন শারীরিক প্রতিবন্ধি ব্যক্তি ক্রাচে ভর করে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করেছে। মালামাল বহনেও যাত্রীদেরকে বেগ পেতে হয়েছে।

ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, ব্রীজের উভয় পাশে সিঁড়ির নির্মাণ কাজ প্রায় শেষের দিকে। এখন আর র‌্যাম্প করার সুযোগ নাই।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নারী যাত্রী বলেন, আমার ছোট বাচ্চা নিয়ে এতগুলো সিঁড়ি ভেঙ্গে ওভার ব্রীজ দিয়ে যাওয়া কষ্টকর। তাই হেঁটে পার হয়েছি। সমতল সিঁড়ি থাকলে খুব সুবিধা হতো।

শারীরিক প্রতিবন্ধি মোঃ নায়েব আলী নামে এক যাত্রী বলেন, সমতল সিঁড়ি হলে প্রতিবন্ধিদের খুব সুবিধা হতো। এখন যে সিঁড়ি করা হয়েছে তা দিয়ে প্রতিবন্ধিদের চলাচল করা সম্ভব না। আখাউড়া পৌরশহরের চন্দনসারের বাসিন্দা লেখক আলী মাহমেদ বলেন, হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয় করে রেলওয়ের আধুনিকায়ন কাজ করা হচ্ছে। অথচ আখাউড়ায় ওভার ব্রীজে কেন র‌্যাম্প রাখা হলো না তা বুঝতে পারছি না। অসুস্থ, প্রতিবন্ধি যাত্রীরা কিভাবে পারাপার হবে।

বিষয়টি খুবই অমানবিক। তিনি র‌্যাম্প নির্মাণের দাবি জানান। এ ব্যপারে আখাউড়া পৌরসভার প্যানেল মেয়র এনাম খাদেম বলেন, আখাউড়া ষ্টেশনে ওভার ব্রীজে ওঠার জন্য র‌্যাম্প সিঁড়ি রাখা হয়নি। বয়োবৃদ্ধ এবং প্রতিবন্ধিদের জন্য র‌্যাম্প সিঁড়ি খুবই দরকার। এ ব্যাপারে মাননীয় আইনমন্ত্রীর নিকট একটি আবেদন করেছি।

শুক্রবার সন্ধ্যায় আখাউড়া রেলওয়ে ষ্টেশনে মন্ত্রী মহোদয়ের হাতে দরখাস্তটি হস্তান্তর করি।

এ ব্যাপারে আখাউড়া-লাকসাম ডাবল রেলপথ নির্মাণ কাজ প্রকল্প পরিচালক মোঃ সুভক্ত গীন বলেন, আখাউড়া ষ্টেশনের ওভার ব্রীজের প্ল্যানে র‌্যাম্প রাখা নাই। তারা র‌্যাম্প নির্মাণ করা হয়নি। এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে প্রপার ওয়েতে (সঠিক ভাবে) আমাদের কাছে আবেদন করলে আমরা পরামর্শক ও প্রকৌশলীদের সাথে পর্যালোচনা করে দেখব এটা করা যায় কিনা।

তিনি বলেন, প্রকল্পটির ব্যয় ধরা আছে ৬ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। আমার মনে হয় ১ হাজার কোটি টাকা কম লাগবে।

উল্লেখ্য, আখাউড়া-লাকসাম পর্যন্ত ৭২ কিলোমিটার ডুয়েল গেজ ডাবল লাইন কাজ শুরু হয়েছে ২০১৬ সালে। কয়েক দফা সময় বাড়িয়ে চলতি বছর জুলাইয়ে কাজটি শেষ হবার কথা ছিল। কিন্তু ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত সময় লাগবে বলে জানান এক কর্মকর্তা।

আখাউড়ায় বাদাম চাষ

আখাউড়া, জাতীয়, 3 December 2023, 976 Views,
ফাইল ছবি

চলারপথে রিপোর্ট :
চলতি মৌসুমে আখাউড়ায় বাণিজ্যিকভাবে বাদাম চাষ হয়েছে। এখন জমি থেকে বাদাম তোলা শুরু করেছেন কৃষকরা। আবহাওয়া অনুকূলে আর সঠিকভাবে পরিচর্যার কারণে এবার বাদামের ফলন ভালো হয়েছে।

জানা গেছে, আখাউড়া উপজেলার মনিয়ন্দ ইউপির বেশ কয়েকটি গ্রামে নানা প্রতিকূলতা উপেক্ষা করে কৃষকরা বছরের পর বছর বাদম চাষ করে আসছেন। স্থানীয় বাজারে বাদামের চাহিদাও রয়েছে বেশ। কম খরচে বেশি লাভ হওয়ায় এ ফসল চাষের প্রতি উপজেলার প্রান্তিক কৃষকদের দিন দিন আগ্রহ বাড়ছে। উৎপাদিত বাদাম স্থানীয় চাহিদা মেটানোর পর দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে পাইকাররা এসে বাদাম কিনে নিয়ে যান।

জানা যায়, চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় ৩ হেক্টর জমিতে বাদাম আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। ফলন বৃদ্ধিতে কৃষকদের সব ধরনের সহায়তা দিচ্ছে কৃষি বিভাগ। সবচেয়ে বেশি বাদামের চাষ হয়েছে উপজেলার মনিয়ন্দ ইউপির কর্মমঠ, হারকোট, মিনারকোট, ধর্মসগর, ঘাঘুটিয়াসহ বেশ কয়েকটি গ্রামে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এখানকার বেশিরভাগ এলাকা উঁচু হওয়ায় জমিতে সবজি চাষ করা হতো। স্বল্প খরচে বেশি লাভ হওয়ায় এখন চাষিরা বাদাম চাষে বেশ আগ্রহী হয়ে উঠছেন। বাদাম আবাদ করতে প্রতি এক বিঘা জমিতে প্রায় ৭ হাজার থেকে ৮ হাজার টাকা খরচ হয়। বিঘাপ্রতি ফলন পাওয়া যাচ্ছে ৪ থেকে ৫ মণ বাদাম। স্থানীয় বাজারে প্রতি মণ বিক্রি হচ্ছে ৮ হাজার টাকায়।

মনিয়ন্দ ইউনিয়নের কর্মমঠ গ্রামের কৃষক মো. সোহাগ সরকার বলেন, এ গ্রামে প্রায় ৩০ বছর ধরে উচ্চ ফলনশীল দেশীয় জাতের বাদাম চাষ করছেন কৃষকরা। এ মৌসুমে ২ বিঘা জমিতে উচ্চ ফলনশীল হাইব্রিড জাতের বাদাম আবাদ করি। হালচাষ, বীজ রোপণসহ অন্যান্য খরচ হয়েছে প্রতি বিঘা প্রায় ৭ হাজার টাকা। তবে বাদাম চাষে কোনো কীটনাশক দেওয়া হয় না। এরই মধ্যে বাদাম তোলার কাজ শেষ হয়েছে। এক বিঘা জমিতে ফলন হয়েছে প্রায় ৫ মণ। স্থানীয় বাজারে প্রতি মণ বাদাম বিক্রি হচ্ছে ৮ হাজার টাকা দরে। বাদাম বিক্রি নিয়ে কোনো সমস্যায় পড়তে হয় না। কুমিল্লা, ভৈরবসহ দেশের বিভিন্ন জায়গার পাইকাররা এসে বাদাম ক্রয় করে নিয়ে যায়। নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে এ মৌসুমে প্রায় ৬০ লাখ টাকা আয় হবে।

কৃষক মো. মামুন বলেন, গত ১৫ বছর ধরে আবাদ করছি। চলতি মৌসুমে প্রায় দুই বিঘা জমিতে আবাদ করা হয়। এরই মধ্যে বাদাম তোলার কাজ শুরু হয়েছে। গত বছর থেকে এবার তুলনামূলক ফলন ভালো হয়েছে। গ্রামের জমি বাদাম চাষের জন্য উপযোগী হওয়ায় প্রতি বছর আবাদ বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাদাম তোলার পর কৃষি অফিসের সহযোগিতায় পরবর্তীতে চাষাবাদ করা হবে। বাদাম বপন থেকে উৎপাদন পর্যন্ত তিন মাস সময় লাগে। বর্তমানে আধুনিক প্রযুক্তির কারণে সময় অনেক কম লাগছে। কৃষকরা বেশ লাভবান হচ্ছেন।

ইউপি সদস্য মো. হামদু মিয়া বলেন, এ বছর প্রায় ২বিঘা জমিতে বাদাম আবাদ করা হয়েছে। বাদাম মাঠ থেকে তুলে বাড়ি আনা হয়েছে। গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার বাদামের ফলন ভালো হয়েছে।

তিনি বলেন, জায়গা উঁচু হওয়ায় ধানের ফলন তেমন ভালো হয় না। আমাদের গ্রামটি বাদামের গ্রাম হিসেবে বেশ পরিচিত লাভ করেছে। আখাউড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তানিয়া তাবাসসুম বলেন, বাদাম চাষে স্থানীয় কৃষকদের সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হয়ে থাকে। মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাগণ সার্বক্ষণিক কৃষকদের বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে আসছেন। বাদাম চাষে কৃষকরা বেশ লাভবান হচ্ছেন।