চলারপথে রিপোর্ট :
ইচ্ছা ছিল হেলিকপ্টারে চড়ে ছেলের বিয়ে দিয়ে পুত্রবধূকে ঘরে তুলবেন। সেই ইচ্ছা পূরণ হয়েছে আখাউড়া উপজেলার ধরখার ইউনিয়নের ছতুরা শরিফ গ্রামের বাসিন্দা ইতালি প্রবাসী মো.জহিরুল হক জুরুর।
আজ ১৩ ফেব্রুয়ারি সোমবার জেলার আখাউড়া পৌরশহরের কলেজপাড়া এলাকার সৌদি আরব প্রবাসী মো. সাকের আহমদ কবিরের মেয়ে তাবাচ্ছুম আক্তার স্নেহার সঙ্গে বিয়ের পিঁড়িতে বসেন বর ইতালি প্রবাসী হৃদয় হক।
জানা গেছে, আখাউড়া উপজেলার ধরখার ইউনিয়নের ছতুরা শরিফের ছতুরা শরিফ স্কুল মাঠ থেকে দুপুর আড়াইটার দিকে হেলিকপ্টারে চড়ে উপজেলার শহীদ স্মৃতি সরকারি কলেজ মাঠে অবতরণ করেন বর। পরে পৌরশহরের কলেজপাড়ার বাঁধন কমিউনিটি সেন্টারে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পূর্ণ করা হয়। আনুষ্ঠানিকতা শেষে বিকালে নববধূকে নিয়ে আবারো একই হেলিকপ্টারে করে নিয়ে আসেন।
এদিকে নববধূ ও হেলিকপ্টার দেখতে কলেজ শিক্ষার্থীসহ মাঠে উৎসুক মানুষের ভিড় জমে। আর এসব সামাল দিতে পুলিশকে রীতিমতো হিমশিম খেতে হয়।
আখাউড়া থানার ওসি মো. আসাদুল ইসলাম জানান, বিয়ের বিষয়টা তাদের আগেই জানানো হয়েছিল। তাই যাতে কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না হয় সেজন্য আগে থেকেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
বরের বাবা মো. জহিরুল হক জুরু জানান, আমার স্বপ্ন ছিল ছেলেকে হেলিকপ্টার দিয়ে বিয়ে করাব। মহান আল্লাহ আমার ইচ্ছা পূরণ করেছেন। আমার বাকি ছেলে ও এক মেয়েকেও হেলিকপ্টারে চড়ে বিয়ে করাব।
মেয়ের জামাই হেলিকপ্টারে চড়ে বিয়ে করতে আসায় খুশি বরের শ্বশুর সাকের আহমদ কবির। তিনি বলেন, আমি গর্বিত যে জামাই হেলিকপ্টারে আমার মেয়েকে নিতে এসেছে। আমি খুবই আনন্দিত। আল্লাহ যেন তাদের দাম্পত্য জীবন সুখী করেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
৭ মাস পর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে আদা আমদানি করা হয়েছে। গতকাল সোমবার দুপুরে ১০ টন আদাভর্তি একটি ভারতীয় ট্রাক আখাউড়া স্থলবন্দরে প্রবেশ করে। প্রতি টন আদা আমদানি করা হয়েছে ৪৬৩.৫ মার্কিন ডলার। এর আগে ২ মাস যাবত কোন আমদানী হয়নি।
গাজীপুরের এস. আর. এস. এম. ট্রেডিং প্রাইভেট লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠান আদাগুলো আমদানি করেছে। স্থলবন্দরের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট হাসান এন্টারপ্রাইজ এর কাস্টমস ক্লিয়ারিংয়ে কাজ করছে।
এর আগে গত বছরের ১০ জুলাই আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ৫ টন আদা আমদানি করেছিল মদিনা এন্টারপ্রাইজ নামে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। মূলত রপ্তানিমুখী হওয়ায় আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি অনেকটাই অনিয়মিত।
সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট হাসান এন্টারপ্রাইজের সত্ত্বাধিকারী হাসিবুল হাসান জানান, আমদানীকৃত আদার মূল্য ৪ হাজার ৬৩৫ মার্কিন ডলার। পরীক্ষামূলক ভাবে ১০ টন আমদানী করা হয়েছে। পরবর্তীতে হয়তো আরও আনা হবে।
আখাউড়া স্থল শুল্ক স্টেশনের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মোঃ কামরুল জানান প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নীরিক্ষার পর আদাগুলো ছাড় দেয়া হবে বন্দর থেকে।
চলারপথে রিপোর্ট :
পবিত্র মাস মাহে রমজানের প্রথমদিন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায় বাজার তদারকিমূলক অভিযান চালিয়ে মূল্য তালিকা না থাকায় নয়টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে ১৩ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করেছে উপজেলা প্রশাসন।
আজ ২৪ মার্চ শুক্রবার দুপুরের দিকে আখাউড়া পৌর শহরের সড়ক বাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অংগ্যজাই মারমা।
জানা গেছে, মূল্য তালিকা না থাকায় সাতটি সবজি দোকান ও দুইটি মুদি দোকানকে ওই জরিমানা করা হয়। অভিযানকালে আখাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদুল ইসলামসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অংগ্যজাই মারমা বলেন, রমজানকে সামনে রেখে কেউ যাতে বাজার অস্থিতিশীল করতে না পারে, সেজন্য আমাদের কর্মকর্তারা কাজ করছেন। এরই অংশ হিসেবে বিভিন্ন মুদি ও সবজির দোকানে অভিযান চালিয়ে ওই জরিমানা করা হয়েছে। জনস্বার্থে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
শেরপুরে প্রতিবছর বারুনী মেলা শেষে ‘বউ মেলা’ অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় আজ ২৭ এপ্রিল বৃহস্পতিবার উপজেলার গাড়ীদহ ইউনিয়নের গাড়ীদহ নামক স্থানে করতোয়া নদীর পশ্চিম কোল ঘেঁষে এই মেলা বসে। মেলায় ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়ই নারী। কোনো পুরুষ আসতে পারে না। তাই বিভিন্ন বয়সী নারীরা প্রাণভরে মেলায় ঘুরে বেড়িয়েছেন। কিনেছেন প্রসাধনীসহ নানা পণ্য সামগ্রী। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে এই মেলা। বিগত কয়েক যুগ ধরে এই অঞ্চলের নারীদের জন্য মেলাটির আয়োজন হয়ে আসছে।
জানা যায়, প্রতি বছর বিশাল মাঠজুড়ে মেলা বসে। মেলায় স্থান পেয়েছে বিভিন্ন ধরনের দোকান। এক পাশে চলছে হুন্ডা ও নাগরদোলা খেলা। নারীরা দলবেঁধে আবার এলোমেলোভাবে দোকানে দোকানে ঘুরছেন। জিনিসপত্র পছন্দ করছেন। দরদাম করে পছন্দের জিনিসটি কিনছেন। আবার অনেকেই ছেলে-মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে নানা ধরনের ভাজিপুরি দোকানে যান। সন্তানদের আবদার পুরনে সেগুলো দোকানে বসে বা পাশে দাঁড়িয়ে অনেককে খেতেও দেখা যায়।
এলাকার নিমাই চন্দ্রের স্ত্রী কল্পনা ঘোষ জানান মেলা থেকে বিভিন্ন ধরনের খেলনা, কসমেটিকস, হাত পাখা, কাঠের সামগ্রী, মিষ্টান্ন সামগ্রী কিনেছেন। ছেলে-মেয়েকে হুন্ডা খেলা দেখিয়েছেন। নাগরদোলায় চড়ে ওরা ব্যাপক আনন্দ করেছে।
মেলায় আসা সালমা আকতার জানান, বাড়ির কাছে মেলা হওয়ায় সকালে একদফা এসেছিলাম। বিকেলেও আরেকদফা মেলায় এসেছি। অনেক কিছু খেয়েছি। মেলা থেকে কিছু সাংসারিক জিনিসপত্র কেনা হয়েছে। পাশাপাশি সন্তানদের জন্য নানা ধরনের খেলনা কিনেছি। বাদ যায়নি মিষ্টি কেনা। বউ মেলাটি ভীষণ আনন্দ দিয়েছে বলেও জানান তিনি।
মেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য আনিছুর রহমান জানান, প্রত্যেক বছর চৈত্রের বারুনী তিথির দ্বিতীয়দিনে এখানে বউ মেলার আয়োজন করা হয়। তবে এবার তিথি অনুযায়ী মেলা হয়নি। রোজার কারণে সেটি করা সম্ভব হয়নি। তাই রোজার ঈদের পরপরই বৈশাখে মাসে এসে ঐতিহ্যবাহী মেলাটি হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বউ মেলায় এসে বিভিন্ন বয়সী নারীরা এসে নানা ধরনের জিনিসপত্র কিনেছেন। এছাড়া এবার মেলা জাকজমকভাবে হওয়ায় সময়সীমা আরও দুই-একদিন বাড়তে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
হিন্দু শাস্ত্রমতে, বারুনী তিথিতে এককালের প্রমত্তাখ্যাত করতোয়া নদীতে স্নানোৎসব করা হতো। এই তিথিতে এখানে স্নান করলে অতীত জীবনের সব পাপ মোচন করে দেন ইশ্বর। ইশ্বরের অপার কৃপা লাভ করা যায়। তাই উপজেলার গাড়ীদহ এলাকায় বহমান করতোয়া নদীতে স্নানোৎসবের আয়োজন করা হতো। যুগ যুগ ধরে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের এই উৎসবকে ঘিরে মেলাটি হয়ে আসছে। সেই থেকে এই মেলায় হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের পাশাপাশি মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষও সমানভাবে অংশগ্রহণ করে আসছেন। মেলা ঘিরে এই অঞ্চলের প্রতিটি বাড়িতে বিরাজ করে উৎসবের আমেজ। স্বজনদের পদভারে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো গাড়ীদগ গ্রাম ও আশেপাশের এলাকা।
এলাবার প্রবীণ ব্যক্তি আজমল হোসেন জানান, কবে থেকে এখানে স্নানোৎসব ও মেলা হয়ে আসছে তা সঠিক করে বলা মুশকিল। তবে অনুষ্ঠানটি যে শতবর্ষী তা ধারণা করা হয়। আর এখানে কয়েক যুগ ধরে বউমেলা হয়ে আসছে বলেও জানান তারা।
চলারপথে ডেস্ক :
টাইগারদের বিপক্ষে ঘুরে দাঁড়ালেও শেষ রক্ষা হলো না আয়ারল্যান্ডের। লড়াই করলেও শেষ পর্যন্ত হারতে হলো আইরিশদের। সিরিজের একমাত্র টেস্ট আয়ারল্যান্ডকে ৭ উইকেটে হারিয়েছে সাকিবরা।
১৩১ রানের লিড নিয়ে চতুর্থ দিনে খেলতে নেমে শুরুতেই অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইনকে হারিয়ে বিপাকে পড়ে আয়ারল্যান্ড। এরপরই সাজঘরের পথ ধরেন গ্রাহাম হিউম। আর এতেই ২৯২ রানে গুটিয়ে যায় আইরিশদের দ্বিতীয় ইনিংসের দৌড়।
প্রথম ইনিংসে আয়ারল্যান্ডের ২১৪ রানের জবাবে দ্বিতীয় দিন প্রথম ইনিংসে ৩৬৯ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। দ্বিতীয় দিন বিকালের সেশনে ব্যাটিংয়ে নেমে টাইগার বোলারদের তোপের মুখে পড়ে আইরিশ ব্যাটাররা। ৪ উইকেট হারিয়ে ২৭ রান সংগ্রহ করে দিন শেষ করে আয়ারল্যান্ড। তবে লরকান টাকারের সেঞ্চুরিতে ফলোঅন এড়ায় আইরিশরা। শেষ পর্যন্ত দ্বিতীয় ইনিংসে ২৯২ রানে অলআউট হলে ১৩৮ রানের টার্গেট পায় বাংলাদেশ।
১৩৮ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশকে ভালো শুরু এনে দেন দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও লিটন দাস। তবে দলীয় ৩২ রানে উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ১৯ বলে ২৩ রান করে সাজঘরে ফিরে যান লিটন। লিটনের বিদায়ের পর ক্রিজে এসে দ্রুতই আউট হন নাজমুল হাসান শান্ত। দলীয় ৪৩ রানে ৯ বলে ৪ রান করে ফিরে যান শান্ত।
এরপর ক্রিজে আসেন মুশফিকুর রহিম। মুশফিককে সঙ্গে নিয়ে দৃঢ়তা নিয়ে ব্যাট করতে থাকেন তামিম। ২ উইকেট হারিয়ে ৮৯ রান সংগ্রহ করে লাঞ্চ বিরতিতে যায় বাংলাদেশ। বিরতি থাকে ফিরে রানের চাকা সচল রাখেন এই দুই ব্যাটার। তৃতীয় উইকেট জুটিতে ৬২ রান সংগ্রহ করেন এই দুই ব্যাটার।
তবে দলীয় ১০৫ রানে আউট হন তামিম। ৬৫ বলে ৩১ রান করে সাজঘরে ফিরে যান তামিম। তামিমের বিদায়ের পর ক্রিজে আসেন মুমিনুল হক। মুমিনুলকে সঙ্গে নিয়ে রানের চাকা সচল রাখেন মুশফিক। ৪৭ বলে নিজের অর্ধশতক পূরণ করেন মুশফিক।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
আয়ারল্যান্ড : ২১৪ এবং ২৯২
বাংলাদেশ : ৩৬৯ এবং ১৩৮/৩
ফল : বাংলাদেশ ৭ উইকেটে জয়ী।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায় বিষাক্ত ট্যাবলেট খেয়ে সানিয়া আক্তার (২৮) নামে এক তরুণী আত্মহত্যা করেছেন। নিহত ওই তরুণী উপজেলার মোগড়া ইউপির ধাতুরপহেলা গ্রামের শাহআলমের মেয়ে ও একই গ্রামের জুয়েল মিয়ার স্ত্রী। পারিবারিক কলহের জেরে গত ১৪ জুলাই রোববার রাতে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়।
এ ঘটনার পর ১৫ জুলাই সোমবার সবার অজান্তে বিষাক্ত ট্যাবলেট খেয়ে তিনি আত্মহত্যা করেন। জানা যায়, প্রায় ৪ বছর আগে ধাতুরপহেলা গ্রামের আক্কাস আলীর ছেলে জুয়েল মিয়ার সঙ্গে পারিবারিকভাবে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন পর থেকে তাদের মধ্যে প্রায় ঝগড়া হতো। দুই পরিবারের লোকজন বেশ কয়েকটি সালিশ করে সমস্যা মিটিয়ে দেন। একপর্যায়ে কোনো উপায় না পেয়ে উভয় পরিবারের লোকজন বৈঠক করে রোববার তাদের বিচ্ছেদ করেন। বিচ্ছেদের পর তিনি তার বাপের বাড়িতে চলে আসেন। কিন্তু এর পরও তারা দুজন নানা বিষয় নিয়ে এলোপাতাড়ি কথা বলেন। সোমবার সকালে সবার অজান্তে বিষাক্ত ট্যাবলেট খেয়ে ঘরের মধ্যে ছটপট করতে থাকেন সানিয়া আক্তার। পরে তাকে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিয়ে গেলে সেখানে তার মৃত্যু হয়।
আখাউড়া থানার ওসি (তদন্ত) মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মর্গে রাখা আছে। তবে এ ঘটনার খোঁজ খবর নেয়া হচ্ছে।