নাসিরনগর প্রতিনিধি :
দেশ ও স্বাধীনতা বিরোধী একটি চক্র বারবার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত বলে মন্তব্য করেছেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান।
তিনি বলেন, দেশ বিরোধীরা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের ষড়যন্ত্র করলেও তারা সফল হয়নি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেভাবে দেশ পরিচালনা করছেন, তাতে তাদের সফল হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আমার তো মনে হয়, দেশ থেকে সংখ্যালঘু শব্দটাই তুলে দেওয়া উচিত।’
আজ ১৪ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার বেলা ৩টার দিকে নাসিরনগর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে ‘ধর্মীয় সম্প্রীতি ও সচেতনতা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্প’ এর সহযোগিতায় মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী এসব মন্তব্য করেন।
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার সব ধর্মের বিকাশে বদ্ধপরিকর। এ জন্য ইসলামের পাশাপাশি অন্য ধর্মের কল্যাণেও কাজ করছে ধর্ম মন্ত্রণালয় ও সরকার। ধর্মীয় সম্প্রীতি রক্ষা, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ নির্মূলে সামাজিক সচেতনতার কোনো বিকল্প নেই। এ জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সদিচ্ছায় ধর্ম মন্ত্রণালয়ের আওতায় বিশেষ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে।’
মতবিনিময় সভায় উপজেলা জৈষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা শুভ্র সরকারের সঞ্চালনায় এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ফকরুল ইসলামের সভাপতিত্বে আরো উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য বদরুদ্দোজা মোহাম্মদ ফরহাদ হোসেন সংগ্রাম, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান রাফি উদ্দিন আহমেদ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপপরিচালক আশেকুর রহমান, জেলা সদর ও সরাইলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোজাম্মেল হক রেজা, নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাবিবুল্লাহ সরকার প্রমুখ।
এর আগে, নাসিরনগর উপজেলা মডেল মসজিদের নির্মাণকাজ পরিদর্শন করেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী। কাজের ধীরগতি কারণে তিনি ঠিকাদারকে সর্তক করেন। এ সময় ঠিকাদারকে তিন মাসের মধ্যে কাজ শেষ করার নির্দেশ দেন তিনি। তা না হলে বরাদ্দ আটকে দেওয়া হবে বলে জানান ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান।
চলারপথে রিপোর্ট :
বিলের ইজারা নিয়ে নাসিরনগর উপজেলা প্রশাসনের কার্যালয়ে সামনে আজ ২২ অক্টোবর মঙ্গলবার দুপুরে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছেন জেলে সম্প্রদায়ের লোকজন। মানববন্ধনে অংশ নিয়ে সমিতির সভাপতি বিশ্বজিৎ বিশ্বাস বলেন, জেলা প্রশাসন আমাদের লিজের ৮২৮ একর জলাশয় বুঝিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু স্থানীয় ছোয়াব মিয়া ও তার লোকজন বিলে আমাদের মাছ ধরতে দেয়না। বিলে থাকা আমাদের ঘর ও মাছ ধরার জাল পুড়িয়ে দিয়েছে। আমরা পরিবার নিয়ে আতঙ্কে আছি।
সমিতির সাধারণ সম্পাদক পরিতোষ চন্দ্র দাসের অভিযোগ, এই বিলে মাছ ধরতে না পারি তাহলে আমাদের কয়েক হাজার পরিবার না খেয়ে থাকতে হবে। আমাদের বাপ-দাদার পেশা মাছ ধরা। সেই পেশা যদি না থাকে তাহলে এদেশে কেমনে থাকুম। অভিযুক্ত ছোয়াব মিয়া জানান, আমাদের ব্যক্তি মালিকানা জায়গা দখল করে মাছ শিকার করছে তারা। বাধা দিলে উল্টো আমাদের ফাঁসানোর হুমকি দেয়। নিজেদের ঘর ও কিছু পুরনো জাল পুড়িয়ে আমাদের উপর দায় চাপাতে এই নাটক সাজিয়েছে।
পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসন সুষ্ঠু তদন্ত করলে প্রকৃত সত্য বের হয়ে আসবে।
নাসিরনগর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কাজী রবিউল সারোয়ার বলেন, জেলা প্রশাসন প্রায় ৮২৮ একর জলমহাল তিন বছরের জন্য ইজারা দিয়েছে। এর মধ্যে সামান্য কিছু জায়গা ব্যক্তিমালিকানা আছে। তবে উভয় পক্ষকে নিয়ে একাধিকবার বসেছি। কিন্তু কোন পক্ষই ছাড় না দেওয়ায় তার সমাধান হয়নি।
নাসিরনগর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আব্দুল কাদের বলেন, জেলেরা আদালতে একটি মামলা করেছে। তদন্ত করা হবে। আইন-শৃঙ্খলা যেন বিনষ্ট না হয় সে বিষয়ে আমরা সজাগ আছি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইমরানুল হক ভূঁইয়া জানান, আমি কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরের হরিপুর ও পূর্বভাগ ইউনিয়নে ২৮ একরের বিল হুরল ফিসারী জলমহালের ইজারা নিয়ে উত্তেজনা বিরাজ করছে নাসিরনগর জেলে পল্লীতে। এ নিয়ে স্থানীয় জেলে পল্লীর লোকজন ও অন্য সম্প্রদায়ের লোকজন মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছেন। জেলে পল্লীর বাসিন্দাদের দাবি, সরকার থেকে ন্যায্য মূল্যে ইজারা নিয়ে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করছেন। চলতি ১৪৩১ বাংলা সনের ১লা বৈশাখ থেকে ১৪৩৬ সনের ৩০ চৈত্র পর্যন্ত প্রতি বছর ছয় লাখ ৪৮ হাজার একশত ১৫ টাকা মূল পরিশোধ করার শর্তে তিন বছরের জন্য ইজারা নেয় ‘জেঠাগ্রাম মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি’।
স্থানীয় জেলেদের অভিযোগ, উপজেলার পূর্বভাগ ইউনিয়নের ছোয়াব মিয়ার নেতৃত্বে কিছু লোক রাতের আধাঁরে বিলে থাকা জেলেদের ঘর ও মাছ ধরার জাল পুড়িয়ে দেয়। এ ঘটনার ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা জজ আদালতে ২৭ জনকে আসামি করে দ্রুত বিচার আইনে একটি মামলা দায়ের করেন সমিতির সাধারণ সম্পাদক পরিতোষ চন্দ্র দাস।
চলারপথে রিপোর্ট :
নাসিরনগরে জাতীয় ছাত্রসমাজের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। ৩১ সদস্যবিশিষ্ট ওই কমিটির আহ্বায়ক হলেন শাওন রায় টিটন ও সদস্য সচিব কাঞ্চন ভূইয়া। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জাতীয় পার্টি উপজেলা শাখার আহ্বায়ক শাহনুল করিম গরীবুল্লাহ সেলিম।
গতকাল সোমবার জেলা ছাত্রসমাজের আহ্বায়ক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম ঝুটন ও সদস্য সচিব ফয়সাল আহম্মেদ স্বাক্ষরিত একটি চিঠিতে ওই কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়।
কমিটির অন্যরা হলেন- সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মাহমুদ হাসান নাহিদ, যুগ্ম আহ্বায়ক আতিকুর রহমান, নিয়ামুল খান, ডায়মুল ইসলাম, দুলন, ইসমাইল আলী, জিসান, আবুল কাসেম, সাকিব আহম্মেদ ও আমিরুল হক জমির।
সদস্যরা হলেন- শরিফ মিয়া, ফাইজুল ইসলাম, রবিন চৌধুরী, জাবের মিয়া, জহিরুল ইসলাম, আনোয়ার মিয়া, খোরশেদ মিয়া, শেখ রুবেল, টিটু মিয়া, মোস্তাক মিয়া, আশরাফুল, শরিফুল মিয়া, রতন দাস, হৃদয়, জাবেদ হুসাইন, মোহাম্মদ নয়ন, এমরান হুসাইন, নয়ন দাস, রাজিব মিয়া প্রমুখ।
জেলা ছাত্রসমাজের পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, ওই আহ্বায়ক কমিটির চিঠি পাওয়ার তিন মাসের মধ্যে একটি সম্মেলনের মাধ্যমে উপজেলা ছাত্রসমাজের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করতে হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
নাসিরনগর উপজেলার সদর ইউনিয়নে ভূমি অধিগ্রহণ না করেই ব্যক্তিমালিকানা জায়গা চলছে সেতু নির্মাণের কাজ শুরুর অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত এক জমির মালিক ঠিকাদারকে প্রধান আসামি করে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার সদর ইউনিয়নের নাসিরপুর গ্রামে। আরো অন্তত ছয়টি সেতুর কাজেও জমি অধিগ্রহণ করা হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে।
১৯ জানুয়ারি অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হেলেনা পারভীন মামলাটি আমলে নিয়ে সেতু নির্মাণে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। ঠিকাদারকে আদালতে হাজির হয়ে কারণ দর্শানোর নির্দেশও দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
মামলা করা ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিক সত্যরঞ্জন বিশ্বাস। তিনি উপজেলার সদর ইউনিয়নের নাসিরপুর গ্রামের নারায়ণ চন্দ্র বিশ্বাসের ছেলে। অভিযুক্ত ঠিকাদার মো. কামাল মিয়া জেলা শহরের বাসিন্দা। তাঁর দাবি, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ চলছে।
মামলা সূত্র ও সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছে, ৯টি সেতু নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় নাসিরপুর গ্রামের সেতুটির কুকুরিয়া খালের পূর্ব পাশে ৬৯ শতাংশ জমির মালিক সত্যরঞ্জন বিশ্বাস। সত্যরঞ্জনের জমির পাশেই সরকারি খাস জায়গা রয়েছে। আদালত নির্মাণ বন্ধ রাখতে বললেও ঠিকাদার কাজ চালিয়ে যাওয়ায় গত ২১ জানুয়ারি নাসিরনগর থানায় লিখিত অভিযোগ দেন সত্যরঞ্জন। পরে এসআই মো. ইছাক মিয়া কাজ বন্ধ করতে বলেন। এর পরও কাজ করছেন ঠিকাদার।
এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে নাসিরনগর থেকে চাতলপাড় হয়ে সরাইলের অরুয়াইল পর্যন্ত তিনশ কোটি টাকা ব্যয়ে ৯টি সেতু ও ২৩ কিলোমিটার সড়কের নির্মাণকাজ চলছে। সবক’টির দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে ২০২০-২১ অর্থবছরে। এর মধ্যে কুকুরিয়া খালের ওপর সেতুটির দৈর্ঘ্য ৩০০ ফুট ও প্রস্থ ১৮ ফুট। এটি নির্মাণে বরাদ্দ ১২ কোটি টাকা। কাজ পেয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মামুন এন্টারপ্রাইজ। যার মালিক কামাল মিয়া।
সরেজমিনে ঘুরে ও উপ-সহকারী প্রকৌশলী ইছাক মিয়ার তথ্য অনুযায়ী, কুকুরিয়া সেতুর পাশাপাশি আরও ছয়টির কাজ নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছে। ভলাকুট ইউনিয়নের ২ নম্বর সেতু নির্মাণের জন্য দু’পাশে নির্মাণসামগ্রী রাখা হয়েছে। ২০২২ সালের ২২ ডিসেম্ভর কাজ শেষ করার কথা ছিল। তবে ভূমি অধিগ্রহণ না করায় কাজ শুরু করতে পারেননি ঠিকাদার। ৪ নম্বর সেতুটি হওয়ার কথা বালিখোলা গ্রামে। এ অংশে প্রায় ১৫ বিঘা জমি অধিগ্রহণ করতে হবে। আগামী ৭ জুলাই মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও ২০ শতাংশ কাজও হয়নি।
চাতলপাড়’র চকবাজার এলাকায় ৫ নম্বর সেতুর জন্য ৩০ শতাংশ জমি অধিগ্রহণ প্রয়োজন। ভলাকুটের কান্দি গ্রামে ৬ নম্বরটির জন্য দুই বিঘা জমি অধিগ্রহণ করতে হবে। তবে ৮ ও ৩ নম্বর সেতুর অধিগ্রহণ হয়েছে। বাকি সাতটি সেতুর ভূমি অধিগ্রহণ করা হয়নি। সেতুগুলোর মধ্যে ৫ ও ৭ নম্বর ছাড়া বাকিগুলোর কাজ চলমান।
ভলাকুট সেতু এলাকার জমির মালিক আব্দুল বাছির মিয়াসহ আরো চারজনের ২০ শতাংশ জমি অধিগ্রহণ করা হয়নি। আব্দুল বাছিরের দাবি, জমি অধিগ্রহণ না করেই উপজেলা প্রকৌশলী জোর করে সেতু নির্মাণ করতে চান। জমির মূল্য না দিলে পরিবার-পরিজন নিয়ে পথে বসতে হবে।
সত্যরঞ্জন বিশ্বাস বলেন, নাসিরপুর মৌজার ৬৯ শতাংশ জায়গা তিনি ক্রয়সূত্রে মালিক। পাশেই খাসজমি রয়েছে। সরকার এ জমিতে সেতু করতে পারে। কিন্তু কিছু অসাধু লোকের পরামর্শে এলজিইডির কর্তাব্যক্তিরা তাঁর জায়গায় সেতুর কাজ চলমান রেখেছেন। সরকারি উন্নয়নকাজ হোক, তবে ক্ষতিপূরণও দিতে হবে।
উপজেলা প্রকৌশলী সৈয়দ জাকির হোসেন বলেন, ‘আমরা কারও জমিতে জোর করে সেতু নির্মাণ করার পক্ষে নই। কারও জমি সেতু এলাকায় পড়লে মূল্য পরিশোধ করা হবে।’
এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলো নাসিরনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ ফখরুল ইসলাম জানান কারও ব্যক্তিমালিকানার জমি সেতু ও সংযোগ সড়কের পাশে থাকলে তা অবশ্যই অধিগ্রহণ করা হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী ফান্দাউক দরবার শরীফের পীরে কামেলে মোকাম্মল হযরত শাহসূফী আলহাজ্ব সৈয়দ আবদুস ছাত্তার নকশে বন্দী(রঃ) ও পীরে কামেলে মোকাম্মেল হযরত শাহসূফী সৈয়দ নাছিরুল হক (মাসুম) নকশে বন্দী মোজাদ্দেদী ফান্দাউকী (রঃ) দ্বয়ের বার্ষিক ইছালে ছওয়াব উপলক্ষে দুই দিনব্যাপী ফান্দাউকের সভা আখেরী মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে।
আজ ১৮ ফেব্রুয়ারি রবিবার বাদ ফজর নামাজের পর আখেরী মোনাজাত পরিচালনা করেন ফান্দাউক দরবার শরীফের গদ্দীনিশীন মাওলানা সৈয়দ ছালেহ আহ্মাদ (মামুন)। আখেরী মোনাজাতে লাখো মুসল্লির অংশগ্রহনে মুখরিত প্রায় ৩২ মিনিট মোনাজাতে দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, ইমান-ইসলাম রক্ষায় এবং মুসলিম উম্মার ঐক্য কামনাসহ ফিলিস্তিনের জন্য রহমত কামনার করে আল্লাহর দরবারে দোয়া করা হয়।
গত শুক্রবার বাদ জুমা পবিত্র ফাতেহা শরীফ পাঠ করার মাধ্যমে মাহফিলের কার্যক্রম শুরু হয়।
মাহফিলে সভাপতিত্ব করেন ফান্দাউক দরবার শরীফের গদ্দীনিশীন মাওলানা মুফতি সৈয়দ ছালেহ আহ্মাদ মামুন আল হোসাইনী।
দুই দিনব্যাপী মাহফিলের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন দরবার শরীফের পীরজাদা মাওলানা মুফতি সৈয়দ মঈনুদ্দিন আহমাদ আল-হোসাইনী, পীরজাদা মাওলানা সৈয়দ আবুবক্কর সিদ্দিকী আল-হোসাইনী, পীরজাদা মাওলানা সৈয়দ বাকের মোস্তুফা আল-হোসাইনী।
মাওলানা সৈয়দ আশরাফ শামীম আল-হোসাইনীর সঞ্চালনায় দুইদিন ব্যাপী মাহফিলে মহান রাব্বুল আলামিনের গুণগান, কুরআন ও হাদিস থেকে শান্তির ধর্ম ইসলাম সর্ম্পকে গুরুত্বপূর্ণ এবং সঠিক জীবন বিধান নিয়ে মূল্যবান আলোচনা পেশ করেন ড. মাওলানা সাইফুল আজম বাবর আল-আজহারী, মৌকারা দরবার শরীফের পীর মাওলানা নেছার উদ্দিন ওয়ালী উল্লাহ, মাওলানা উসমান গণি ছালেহী, মাওলানা নেছার আহমেদ চাঁদপুরী, আল্লামা ড. কাফিল উদ্দিন সরকার, আল্লামা আবি আবদুল্লাহ আইনুল হুদা, হাফেজ মাওলানা নেছার উদ্দিন ফেনী, পীরজাদা মাওলানা মীর হাবিবুর রহমান যুক্তিবাদী, মাওলানা আনোয়ার হোসাইন সাইফী, মাওলানা মুফতি আলাউদ্দিন জিহাদী, মাওলানা মুফতি মোতালেব হোসাইন ছালেহী, মাওলানা হাফিজ আবু হানিফ আনোয়ারীসহ দেশের শীর্ষস্থানীয় আলেম ও ওলামাগণ।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার প্রত্যন্ত জনপথ নাসিরনগরের ফান্দাউক। এ গ্রামে দ্ইু দিনব্যাপী মাহফিলের কাজ আনুষ্ঠানিক ভাবে শুরু হয় শুক্রবার জু‘মার নামাজ বাদ। মাহফিল উপলক্ষে প্রায় ১৫ দিন ধরে সামিয়ানা টানানো হয়। বিশাল প্যান্ডেল টানানো হয় আশেকানদের জন্য। বন(খড়)বিছিয়ে হাজার হাজার ভক্ত মুরিদান বসে বয়ান শুনেন। তাদের সুবিধার জন্য প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া, হবিগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, ভৈরব, আশুগঞ্জ, নাসিরনগরসহ বিভিন্ন স্থ্ান থেকে লাখো মানুষের সমাগম ঘটেছে। ৫ হাজার লোক এক সাথে বসে খিচুরী খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। বিশাল এলাকা জুড়ে প্যান্ডেল নির্মান করা হয়। আর এর পুরোটাই করা হয় স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে। সভাকে ঘিরে অস্থায়ী ভিত্তিতে ছোট বড় কয়েক‘শ দোকান-পাট গড়ে উঠে। দূরের আশেকানদের থাকার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়। এ সভাকে ঘিরে এলাকার লোকজনের মধ্যে উৎসবের আমেজ দেখা দেয়। প্রতিবারের ন্যায় এবারও লাখো মুসল্লির অংশগ্রহনে মূখরিত ফান্দাউক দরবার শরীফ।
উল্লেখ্য, মাহফিলে দরবার শরীফের আওতায় পরিচালিত প্রতিবছরের ন্যায় এবারও ফান্দাউক মদিনাতুল উলুম মাদ্রাসার ৭ জন ছাত্রকে পাগড়ি প্রদান করা হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগরে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন সামনে আচরণবিধি ভঙ্গ করে ওয়াজ মাহফিলে ভোট চাইলেন চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে দুই প্রার্থী।
২৪ এপ্রিল বুধবার বিকেলে নাসিরনগর উপজেলার হরিপুর শংকরদহ খেলার মাঠে আয়োজিত ওয়াজ মাহফিলে ভোট চান তারা। ওই মাহফিলে প্রধান অতিথি ছিলেন আলোচিত ইসলামিক বক্তা মুফতি গিয়াস উদ্দিন তাহেরী।
মাহফিলে ভোট চান চেয়ারম্যান প্রার্থী কই মাছ প্রতীকের এটিএম মনিরুজ্জামান ও ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী চশমা প্রতীকের শেখ হুমায়ুন কবির।
এসময় চেয়ারম্যান প্রার্থী এটিএম মনিরুজ্জামান তার বক্তব্যে বলেন, ‘উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আমি একজন চেয়ারম্যান প্রার্থী। আমি আপনাদের খেদমত করতে চাই। আগামী ৮ মে নির্বাচনে আপনারা আমাকে ভোট দেবেন।’
মাহফিল শেষে মোনাজাতে চেয়ারম্যান প্রার্থী এটিএম মনিরুজ্জামান ও ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী শেখ হুমায়ুন কবিরের জন্য মোনাজাতে দোয়া করেন মুফতি গিয়াস উদ্দিন তাহেরী।
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা সাদেকুল ইসলাম বলেন, কোনো ধর্মীয় সভায় কোনো প্রার্থী ভোট চাইতে পারবেন না, তা আচরণবিধিতে অনেক আগেই বলা আছে। তবে আজকের বিষয়টি আমি অবগত নই। আমি কথা বলে তাদের সতর্ক করে দিচ্ছি। পরবর্তী সময়ে এমন হলে তাদের বিরুদ্ধে আচরণবিধি ভঙ্গের দায়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মাহফিলে ভোট চাওয়ার বিষয়ে চেয়ারম্যান প্রার্থী এটিএম মনিরুজ্জামান বলেন, আমাকে মাহফিলে দাওয়াত দেওয়া হয়েছিল। আমি সেখানে দোয়া চেয়েছি। ভোট চাওয়ার আচরণবিধি সম্পর্কে জানা ছিল না।