চলারপথে ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তাঁর সরকার ঢাকাকে স্মার্ট সিটি হিসেবে গড়ে তুলবে। আজ ১৯ ফেব্রুয়ারি রবিবার রাজধানীতে কালশী ফ্লাইওভার এবং ইসিবি স্কয়ার থেকে কালশী হয়ে মিরপুর পর্যন্ত ছয় লেনের সড়ক উদ্বোধনের পর একথা বলেন তিনি।
এ উপলক্ষে সকালে কালশী বালুর মাঠে আয়োজিত জনসভায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ঢাকা শহরকে স্মার্ট সিটি হিসেবে গড়ে তুলবো।’ তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ জীব বৈচিত্র ও চমৎকার সবুজে ভরা একটি দেশ। ফুল, ফল, পাখির অত্যন্ত সৌন্দর্য্যে ভরা এই দেশটিকে আমরা সেভাবেই গড়ে তুলবো। পাশাপাশি আধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন স্মার্ট বাংলাদেশ আমরা গড়বো এবং ঢাকা সিটিও স্মার্ট সিটি হবে। সেটাই আমাদের লক্ষ্য। আমরা সেজন্য বহু পদক্ষেপ নিচ্ছি।’
প্রধানমন্ত্রী এর আগে ফলক উন্মোচন করে ফ্লাইওভার ও সড়কের উদ্বোধন করেন।
সমাবেশে তিনি মুক্তিযুদ্ধ এবং দেশের সকল গণতান্ত্রিক ও প্রগতিশীল আন্দোলনে গৌরবময় অবদানের কারণে হারুন মোল্লার নামে কালশী ফ্লাইওভারের নামকরণের ঘোষণা দেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ক্ষমতায় আছি বলেই বাংলাদেশকে আজ উন্নত করতে পেরেছি। জাতির পিতার রোখে যাওয়া স্বল্পোন্নত দেশকে আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা এনে দিয়েছি এবং এই মর্যাদাকে ধরে রেখেই আমাদের সামনে এগিয়ে যেতে হবে। আগামীর বাংলাদেশ হবে ২০৪১ সালের উন্নত সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ।’
শেখ হাসিনা বলেন, ঢাকা শহরের প্রধান সমস্যা হল এর পূর্ব ও পশ্চিমের মধ্যে ভালো সংযোগ না থাকা। তার সরকার রাজধানীর এই অংশে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে অগ্রাধিকার দিয়েছে।
তিনি বলেন, ইসিবি স্কোয়ার থেকে ২ দশমিক ৩৪ কিলোমিটার কালশী ফ্লাইওভার এবং ৩ দশমিক ৭০ কিলোমিটার প্রশস্ত ও ছয় লেনের রাস্তা মিরপুর, ডিওএইচএস, পল্লবী, কালশী, মহাখালী, মানিকদি, মাটিকাটা, ভাষানটেক, বনানী, উত্তরা এবং বিমানবন্দরে যোগাযোগ সহজ করবে। মেট্রোরেলের পর কালশী ফ্লাইওভার ও ছয় লেনের সড়ক চালু হলে ঢাকার যানজট অনেকটাই কমে যাবে।
ঢাকা উত্তর সিটির উন্নয়নে গৃহীত ব্যবস্থা সম্পর্কে শেখ হাসিনা বলেন, ২০১১ সালে ঢাকা শহরকে দুই ভাগ করার পর গত ১২ বছরে ৩,৫০০ কোটি টাকার ২৩টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে গত কয়েক বছরে ৩ হাজার কোটি টাকার বেশি অর্থায়নে ১৬টি প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে। প্রকল্পের আওতায় রাজধানীর সৌন্দর্যায়ন, পানি সরবরাহ ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন, ফুটপাথ নির্মাণ ও উন্নয়ন, সড়ক, সেতু ও ফ্লাইওভারের পাশাপাশি বর্জ্য ব্যবস্থাপনাসহ রাজধানীর যোগাযোগ ও অবকাঠামোর উন্নয়ন করা হয়েছে।
জনসভায় প্রধানমন্ত্রী কালশী বালুর মাঠকে একটি বিনোদন পার্ক হিসেবে গড়ে তোলার ঘোষণা দেন। সেখানে শিশু ও যুবকদের খেলার মাঠ এবং বয়স্ক ব্যক্তিদের চলাচলের জন্য হাঁটার পথ থাকবে।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনী (২৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড) প্রায় ১,০১২ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে।
প্রকল্প বিবরণী অনুযায়ী, ফ্লাইওভারটি ইংরেজি ‘ওয়াই’ অক্ষরের মতো। এই প্রকল্পে যাত্রীদের ভ্রমণ সহজ করার লক্ষ্যে আগের চার লেন বিশিষ্ট রাস্তাগুলোকে ছয় লেন করা হয়েছে।
প্রধান চারলেন বিশিষ্ট ফ্লাইওভারটি ইসিবি স্কোয়ার থেকে কালশী ও মিরপুরের ডিওএইচএস হয়ে গেছে। দুই-লেন বিশিষ্ট র্যাম্পটি কালশী মোড় থেকে শুরু হয়ে কালশী সড়কে যাবে।
প্রকল্পটির আওতায় একটি পিসি গ্রিডার ব্রিজ, দুইটি ফুল ওভার ব্রিজ, একটি পাবলিক টয়লেট, দুটি পুলিশ বক্স, একটি ৭.৪০ কিলোমিটার আরসিসি ড্রেন, একটি ১৭৫৫ মিটার আরসিসি পাইপ ড্রেন, ৩৩৮৩ মিটার যোগাযোগ তার, পৃথক সাইকেল লেন ও ছয়টি বাস বে নির্মাণ করা হয়েছে।
সমাবেশে আরো বক্তব্য দেন এলজিআরডি ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম, সেনাপ্রধান জেনারেল এসএম শফিউদ্দিন আহমেদ এবং ঢাকা-১৬ আসনের সংসদ সদস্য মো. ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লা।
মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন এলজিআরডি ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য এবং স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মুহাম্মদ ইব্রাহিম।
সেনাবাহিনীর ২৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেডের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মনোয়ারুল ইসলাম সরদার কালশী ফ্লাইওভার ও ছয় লেনের সড়ক সম্পর্কে একটি সংক্ষিপ্ত প্রেজেন্টেশন দেন। অনুষ্ঠানে কালশী ফ্লাইওভার ও সড়ক প্রকল্পের একটি ভিডিও ডকুমেন্টারিও প্রদর্শিত হয়। সূত্র : বাসস
অনলাইন ডেস্ক :
ছাত্রলীগের দুই কেন্দ্রীয় নেতা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নেতাকে থানায় মারধরের ঘটনা নিয়ে মুখ খুলেছেন রাষ্ট্রপতির সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) আজিজুল হকের স্ত্রী পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) সানজিদা আফরিন। আজ ১২ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার আলাপকালে তিনি বলেন, ‘সোস্যাল মিডিয়ায় আমি বুলিংয়ের শিকার। অনেকে নোংরা মানসিকতার পরিচয় দিচ্ছে। একটি ছবি ছড়িয়ে দিয়ে হারুন স্যারের সঙ্গে আমার বিয়ের কল্পকাহিনী প্রচার করছে। যে কেউ ভালোভাবে খেয়াল করলেই বুঝবে- ওই ছবির নারী আমি নই। এর আগে অনেক ইস্যুতে অনেকেই বুলিংয়ের শিকার হয়েছেন। এবার আমি এর শিকার।’
সানজিদা আরও বলেন, ‘হাসপাতালে কী ঘটেছে সে ব্যাপারে তদন্ত হচ্ছে। তদন্তে পুরো বিষয় বেরিয়ে আসবে। ঘটনার দিন হাসপাতালে আমার স্বামী পৌঁছার পর আমাকে কোনো কিছু নিয়ে প্রশ্ন করেননি। আমার স্বামী প্রথম এডিসি হারুন স্যারের ওপর চড়াও হন।’
এডিসি হারুনের সঙ্গে ব্যক্তিগত কোনো সম্পর্ক আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘হারুন স্যারের সঙ্গে আমার কোনো ব্যক্তিগত সম্পর্ক নেই। তিনি শুধুমাত্র আমার কলিগ। তবে হারুন স্যারের সহযোগিতা নিয়েছিলাম। তিনি আমাকে ডাক্তারের সিরিয়ালের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। এ ছাড়া আর কিছুই জানি না।’
সানজিদা আরো বলেন, ‘ইনটেনশন (উদ্দেশ্য) দেখে মনে হয়েছে, তারা আমাদের দু’জনকে পাশাপাশি দাঁড় করিয়ে একটা ভিডিও করতে চাচ্ছে। পরবর্তীতে তারা সেটি ইউজ (ব্যবহার) করবেন, একটি অসৎ উদ্দেশ্যের জন্য হতে পারে।’
পরিকল্পিতভাবে আপনার স্বামী এই ঘটনা ঘটিয়েছেন কি-না জানতে চাইলে সানজিদা বলেন, ‘পরিকল্পিতভাবে এই ঘটনা ঘটিয়েছে কি-না বলতে পারব না। তবে তিনি খুব মারমুখী ছিলেন।’
সানজিদা ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ক্রাইম বিভাগের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (এডিসি) হিসেবে কর্মরত এবং ৩১তম বিসিএস কর্মকর্তা।
সেদিনের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে সানজিদা বলেন, ‘বেশ কিছুদিন আমার কার্ডিয়াক সমস্যা হচ্ছিল। ২০১৯ সাল থেকে আমি হাইপার টেনশনের মেডিসিন খাচ্ছি। চার-পাঁচ মাস ধরে সমস্যাটা বেড়ে যায়। শনিবার ব্যথা বেড়ে যায়। সেদিন ফ্রি সময় থাকায় ডাক্তার দেখাতে চাই। আমি যে ডাক্তারকে দেখাই, তিনি দেশের বাইরে থাকায় ইব্রাহীম কার্ডিয়াক হাসপাতালে এডিসি হারুন স্যারকে একটি সিরিয়াল করে দিতে বলি। তিনি ওসির মাধ্যমে সিরিয়াল ম্যানেজ করে দেন।’
ডিএমপির এই কর্মকর্তা বলেন, ‘সন্ধ্যায় ৬টায় আমি সেখানে যাওয়ার পরে দেখি, যেই ডাক্তারের অ্যাপয়েন্টমেন্ট নেওয়া হয়েছে তিনি একটি কনফারেন্সে আছেন। বিষয়টি হারুন স্যারকে জানালে, তিনি আশপাশে থাকায় হাসপাতালে আসেন। তিনি এসে একজন ডাক্তারকে ম্যানেজ করেন। তাকে দেখানোর পর বেশ কিছু টেস্ট দেন।’
ঘটনার সময় ইটিটি রুমে ছিলেন দাবি করে সানজিদা বলেন, “এ ঘটনার সময় আমি যে রুমে ইটিটি করানো হয় সেই রুমে ছিলাম। ইটিটি করানোর ১৫-২০ মিনিট পর আমি বাইরে একটা হট্টগোলের শব্দ শুনি। প্রথম যে সাউন্ডটা (শব্দটা) কানে আসে যে স্যারই (এডিসি হারুন) চিৎকার করে বলছেন, ‘ভাই, আপনি আমার গায়ে হাত তুললেন কেন? আপনি তো আমার গায়ে হাত তুলতে পারেন না’।”
তিনি আরো বলেন, ‘আমার প্রথমে ধারণা হয়েছিল যে, হয়তো অন্য কারো সঙ্গে ঝামেলা। কিছুক্ষণ পর আমি দেখতে পাই আমার হাজব্যান্ড (আজিজুল হক মামুন), উনি আসলে ওখানে কী করছিলেন, কেন গিয়েছিলেন আমি জানি না। ওনাকে টোটালি আউট অব মাইন্ড লাগছিল (মানসিকভাবে স্থির ছিলেন না) এবং খুবই উত্তেজিত ছিলেন। ওনার সঙ্গে আরো কয়েকজন ছেলে ছিল, আমি আসলে তাদের চিনি না। তারা স্যারকে (এডিসি হারুন) মারতে মারতে ইটিটি রুমে নিয়ে এলেন।’
‘তারা মূলত স্যারকে (এডিসি হারুন) মারতে মারতে, টেনে-হিঁচড়ে এই রুমে নিয়ে আসে। স্যার তাদের হাত থেকে বাঁচতে ইটিটি রুমের এক কোনায় গিয়ে দাঁড়ান’, যোগ করেন সানজিদা।
সানজিদা বলেন, “এরপর আমার হাজব্যান্ড তার সঙ্গে থাকা লোকজনকে বললেন, ‘এই ভিডিও কর।’ পরে সবাই ফোন বের করে ভিডিও করা শুরু করে। যখন তারা ভিডিও শুরু করে তখন আমি আমার হাজব্যান্ড এবং তার সঙ্গে থাকা লোকজনের সঙ্গে চিল্লাচিল্লি শুরু করি। এরপর আমি যারা ভিডিও করছে তাদের মোবাইল কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করলে তাদের হাতের সঙ্গে লেগে আমিও হাতে সামান্য ব্যথা পাই। তার কারণ আমি চাচ্ছিলাম না সেই অবস্থায় কেউ আমার ভিডিও করুক। আর তাছাড়া আমার হাজব্যান্ডের সঙ্গে যেসব ছেলে ছিল আমি তাদের কাউকে চিনতামও না।”
তিনি আরও বলেন, ‘ওই অবস্থায় আমার হাজবেন্ড আমার গায়ে হাত তোলে এবং স্যারকে বের করার চেষ্টা করে। তখন স্যারের কাছে বিষয়টি সেফ মনে হয়নি। এরপর স্যার কিছুক্ষণ অপেক্ষা করছিলেন। তখন হাসপাতালের সিকিউরিটির লোকজনও আসেন। এর ১০/১৫ মিনিট পর থানা ফোর্স এলে তারা সেখান থেকে বের হয়ে যায়।’
প্রসঙ্গত, শনিবার রাতে রাজধানীর শাহবাগ থানায় ছাত্রলীগের ২ কেন্দ্রীয় নেতাকে পুলিশ নির্মমভাবে পিটিয়ে আহত করে বলে অভিযোগ ওঠে। আহত ব্যক্তিরা হলেন- ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সংসদের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হল শাখার সভাপতি আনোয়ার হোসেন এবং ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় বিজ্ঞানবিষয়ক সম্পাদক ও শহীদুল্লাহ হলের সাধারণ সম্পাদক শরীফ আহমেদ।
ভুক্তভোগী ও তাদের সহপাঠীদের অভিযোগ, পুলিশের রমনা বিভাগের এডিসি হারুন অর রশিদ তাদের থানার ভেতিরে নিয়ে বেড়ধক পেটান। এমনকি ছাত্রলীগ নেতা পরিচয় দেওয়ার পরও হারুনের সঙ্গে ১০-১৫ পুলিশ সদস্য মিলে তাদের পিটিয়েছেন।
সংগৃহীত
অনলাইন ডেস্ক :
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া ড. ইউনূসের বিষয়ে বক্তব্য দিয়ে শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন।
আজ ৫ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক অনুষ্ঠান শেষে বেরিয়ে যাওয়ার সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
আনিসুল হক বলেন, তার (এমরান আহম্মদ) বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তিনি অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত একজন ডিএজি (ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল)। তিনি যদি সাংবাদিকদের সামনে কথা বলেন, তাহলে তাকে হয় পদত্যাগ করে কথা বলা উচিত, অথবা অ্যাটর্নি জেনারেলের অনুমতি নিয়ে কথা বলা উচিত। তিনি সেটি করেননি। তিনি শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন।
তাহলে এখন কী হবে- এমন প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, বিষয়টি আমি দেখব।
গতকাল সোমবার সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া গণমাধ্যমকে বলেন, নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিচারিক হয়রানির শিকার হচ্ছেন।
তিনি বলেন, ড. ইউনূসের পক্ষে ১৭৫ জন বিদেশি ব্যক্তি বিবৃতি দিয়েছেন। বিবৃতিদাতাদের মধ্যে বারাক ওবামা, হিলারি ক্লিনটনও রয়েছেন। ওই বিবৃতির বিরুদ্ধে অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয় থেকে পাল্টা বিবৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমাকে বিবৃতিতে সই করতে বলা হয়েছে। কিন্তু আমি ইউনূসের বিপক্ষে বিবৃতিতে সই করব না।
এ বক্তব্যের জেরে এরই মধ্যে তাকে বরখাস্ত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলায় বিএসটিআই’র লোগো ব্যবহার করে অবৈধভাবে আইসক্রিম উৎপাদন ও বিক্রির অভিযোগে এক কারখানার মালিককে ৪০ হাজার টাকা জরিমানাসহ প্রতিষ্ঠানটি সিলগালা করা হয়েছে।
আজ ১৯ জুন সোমবার দুপুরে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও র্যাব ৬ এর যৌথ অভিযানে ফকিরহাটের শ্যামবাগাত এলাকায় ওই আইসক্রিম কারখানায় উৎপাদিত বিপুল পরিমাণ অনুমোদনহীন আইসক্রিম ও আইসক্রিম তৈরির মালামাল ধ্বংস করা হয়।
বাগেরহাটের ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল ইমরান জানান, বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার শ্যামবাগাত এলাকায় ‘নিউ ভিভো আইসক্রিম’ নামে একটি কারখানায় বিএসটিআই’র অনুমোদন ছাড়াই লোগো ব্যবহার করে অবৈধভাবে আইসক্রিম উৎপাদন ও বিক্রির খবর পেয়ে সোমবার দুপুরে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও র্যাব ৬ এর যৌথ অভিযান চালানো হয়।
এসময়ে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনে কারখানার মালিককে ৪০ হাজার টাকা জরিমানাসহ প্রতিষ্ঠানটি সিলগালা করা হয়েছে। একই সাথে ওই আইসক্রিম কারখানায় উৎপাদিত বিপুল পরিমাণ অনুমোদনহীন আইসক্রিম ও আইসক্রিম তৈরির মালামাল ধ্বংস করা হয়।
এসময় র্যাব-৬ এর সদর কোম্পানির কমান্ডার ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মো. রাসেলের নেতৃত্বে র্যাব সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
অনলাইন ডেস্ক :
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তার সরকারের সব মন্ত্রী-এমপির নামে বরাদ্দ কূটনৈতিক পাসপোর্ট (লাল পাসপোর্ট) বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার প্রক্রিয়া ইতোমধ্যে শুরু হয়ে গেছে বলে জানিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয়ের নিরাপত্তা সেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. মশিউর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যেই অভিবাসন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরকে (ডিআইপি) এ বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছি। ডিআইপি ইতোমধ্যে প্রক্রিয়াটি শুরু করেছে এবং আশা করছি, শিগগিরই আদেশ জারি করা হবে।’
সংসদ সদস্যদের পাশাপাশি তাদের পরিবারের সদস্যরাও কূটনৈতিক পাসপোর্ট বহন করেন। এমপিদের পরিবারের সদস্যদের পাসপোর্ট বাতিলের বিষয়ে সিনিয়র সচিব বলেন, ‘যেহেতু আমরা প্রাথমিক পাসপোর্টধারীর কূটনৈতিক পাসপোর্ট বাতিল করছি, স্বয়ংক্রিয়ভাবে তাদের পরিবারের সদস্যদের পাসপোর্টও বাতিল হয়ে যাবে।’
মো. মশিউর রহমান বলেন, ‘যদি কেউ (কূটনৈতিক পাসপোর্টধারী) নতুন পাসপোর্ট নিতে চান, তাহলে তাকে অবশ্যই প্রথমে কূটনৈতিক বা লাল পাসপোর্টটি জমা দিতে হবে এবং তারপর আইন অনুযায়ী একটি সাধারণ পাসপোর্ট ইস্যু করা হবে।’
জানা যায়, লাল পাসপোর্ট বাতিল হয়ে গেলে যাদের নামে ফৌজদারি মামলা রয়েছে বা গ্রেপ্তার হয়েছেন, এমন সাবেক মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের সাধারণ পাসপোর্ট পেতে আইনি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হতে পারে।
সে ক্ষেত্রে আদালতের আদেশ পাওয়ার পরই তারা সাধারণ পাসপোর্টের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
অনলাইন ডেস্ক :
জাতীয় সমবায় দিবস আজ। প্রতি বছর নভেম্বরের প্রথম শনিবার দিবসটি পালন করা হয়ে থাকে।
বরাবরের মতো এবারও নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে ৫২তম সমবায় দিবস পালনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এবারের প্রতিপাদ্য ‘সমবায়ে গড়ছি দেশ, স্মার্ট হবে বাংলাদেশ।’
এদিকে জাতীয় সমবায় দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন তার বাণীতে বলেছেন, ‘সমবায় শেখায় একতা, সমবায় আনে সমৃদ্ধি। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে মাধ্যমে সম্মিলিত ও ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার দ্বারা স্বনির্ভরতা অর্জন তথা আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে সমবায় পদ্ধতি একটি ফলপ্রসূ পদক্ষেপ। কৃষি, মৎস্য, দুগ্ধ, পরিবহণ, গৃহায়ণ, শিল্প, বিমা, বাজারজাতকরণসহ অর্থনীতির সব ক্ষেত্রে সমবায় পদ্ধতি অত্যন্ত কার্যকর।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান গ্রাম-সমবায়ের মাধ্যমে একটি স্বনির্ভর অর্থনীতি গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘সমবায়কে উন্নয়নের অন্যতম প্রায়োগিক পদ্ধতি বিবেচনা করে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের সংবিধানে সমবায়কে মালিকানার অন্যতম খাত হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করেছিলেন।’
বাণীতে রাষ্ট্রপতি জাতির পিতার অর্থনৈতিক দর্শন ‘সমবায়’ শক্তিকে একটি গণমুখী সমবায় আন্দোলনে পরিণত করতে সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহবান জানান।
এ উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘শতবর্ষের ঐতিহ্যবাহী সমবায় খাত দেশের দারিদ্র্য বিমোচন ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। সমবায়ীরা দেশের কৃষি, মৎস্য চাষ, পশু পালন, দুগ্ধ উৎপাদন, পুষ্টি চাহিদা পূরণ, পরিবহণ, ক্ষুদ্র ব্যবসা, আবাসন, নারীর ক্ষমতায়ন, অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রাখছে।’
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘আমাদের সরকার স্থানীয় চাহিদা অনুযায়ী নিবিড় পেশাভিত্তিক প্রশিক্ষণ, সহজ শর্তে ঋণ সুবিধা, প্রযুক্তিগত ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা প্রদানের মাধ্যমে সমবায়ীদের দক্ষতা ও কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করতে নিবিড়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছে। স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আমরা চারটি ভিত্তি নির্ধারণ করেছি-স্মার্ট নাগরিক, স্মার্ট সমাজ, স্মার্ট অর্থনীতি ও স্মার্ট সরকার। সমবায়ের মাধ্যমে মানবসম্পদ উন্নয়ন করে স্মার্ট নাগরিক এবং স্মার্ট সমাজ তথা অর্থনীতিকে স্মার্ট করে গড়ে তোলা সম্ভব বলে আমি বিশ্বাস করি। এবারের জাতীয় সমবায় দিবসের প্রতিপাদ্য ‘সমবায়ে গড়ছি দেশ, স্মার্ট হবে বাংলাদেশ’ অত্যন্ত সময়োপযোগী হয়েছে।’