হত্যার রাজনীতি এবং মিথ্যা কথা বলার রাজনীতি এটাই বিএনপির আদর্শ : আইনমন্ত্রী

আখাউড়া, জাতীয়, 25 February 2023, 2601 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
আইনমন্ত্রী অ্যাড: আনিসুল হক বলেন, বিএনপির রাজনীতি হচ্ছে মিথ্যার আর হত্যার। ১৯৭৫ সালের পরে বিএনপি যখন থেকে ক্ষমতায় এসেছিল তখন থেকেই বিএনপি হত্যার রাজনীতি শুরু করেছে। হত্যার রাজনীতি এবং মিথ্যা কথা বলার রাজনীতি এটাই বিএনপির আদর্শ। ঠিক সেই ধারাবাহিকতা বজায় রেখে ২০০১ সালে বিএনপি যখন আবারও ক্ষমতা দখল করে তখন বাংলার জনগণের উপর প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়ে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী, ভাই-বোন পরিবার কাউকে তারা বাদ দেয়নি।

banner

আজ ২৫ ফেব্রুয়ারি শনিবার সকালে আখাউড়া রেলওয়ে ষ্টেশনে সমবেত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য তিনি এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী আরো বলেন, ২০০৪ সালে ২১ আগস্টের ঘটনা সবাই জানেন। বিএনপি প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যা করার জন্য ১৯ বার চেষ্টা করে। আল্লাহর রহমতে প্রতিবারই তিনি বেঁচে যান। ২০০৬ সালে বিএনপি প্রহসন করে। এইসবই বিএনপির আদর্শ। তারা এটা ছাড়া অন্য কিছু করতে পারে না।

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক আরো বলেন, আমরা র্ধয্যহীন ভাষায় বলতে চাই, বাংলার মানুষ জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে শুধু উন্নয়নই দেখে নাই রাজনৈতিক শান্তিও দেখেছে। আমরা এই রাজনীতিক শান্তি অব্যাহত রাখতে চাই। আমরা জনগণের কাছে জনগণের প্রাপ্য ভোটের অধিকার পৌঁছে দিয়েছি। ইনশাল্লাহ ২০২৪ সালে সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে সেটা আবারও প্রমাণ করবে।

এসময় তিনি নেতাকর্মীদেরকে ঐক্যবদ্ধ থেকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে এবং শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে যে ষড়যন্ত্র হয় তা নস্যাত করে দেওয়ার আহবান জানান। কেউ যেন জনগনের ক্ষতি করতে না পরে সে জন্য জনগণের পাশে থাকার আহবান জানান।

এর আগে তিনি ঢাকা থেকে আন্ত:নগর মহানগর প্রভাতী ট্রেনে সকাল সোয়া দশটায় আখাউড়া এসে পৌঁছেন। এসময় আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, মহিলা লীগসহ অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা মন্ত্রীকে স্বাগত জানায়।

এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আইন সচিব গোলাম সারওয়ার, জেলা প্রশাসক মোঃ শাহগীর আলম, পুলিশ সুপার সাখাওয়াত হোসেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলী, সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র তাকজিল খলিফা কাজল প্রমুখ।

Leave a Reply

জাতির কাছে ক্ষমা চাইলেন জামায়াতের আমির…

অনলাইন ডেস্ক : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান Read more

বাঞ্ছারামপুরে স্বাস্থ্য সহকারীদের অবস্থান কর্মসূচি

চলারপথে রিপোর্ট : ৬ দফা দাবিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য Read more

সাবেক সিইসি হাবিবুল আউয়াল গ্রেফতার

অনলাইন ডেস্ক : সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল Read more

রাইস কুকারে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে মা-মেয়ের মৃত্যু

অনলাইন ডেস্ক : মাগুরার সদর উপজেলার টিলা গ্রামে রাইস কুকারে Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে শিক্ষার্থীদের স্মারকলিপি

চলারপথে রিপোর্ট : সরকারি মেডিকেল কলেজ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় Read more

নাসিরনগরে মৎস্য আড়তে অভিযান, নিষিদ্ধ পিরানহা…

চলারপথে রিপোর্ট : বিক্রির জন্য রাখা নিষিদ্ধ পিরানহা মাছ জব্দ Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তিন চাঁদাবাজ গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার খাটিহাতা (বিশ্বরোড) গোলচত্বর নামক এলাকায় চাঁদাবাজির Read more

সড়ক মেরামতের সপ্তাহ না পেরোতেই উঠে…

চলারপথে রিপোর্ট : সড়ক মেরামতের এক সপ্তাহ না পেরোতেই ইতিমধ্যে Read more

কসবায় গাঁজাসহ গ্রেফতার ১

চলারপথে রিপোর্ট : আজ ২৪ জুন মঙ্গলবার সকালে এস আই Read more

শাস্তি পেলেন ঋষভ পন্ত

অনলাইন ডেস্ক : আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে অসন্তোষ প্রকাশ করে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট Read more

বাংলাদেশে গুগল পে এর উদ্বোধনী

অনলাইন ডেস্ক : বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্ণর ড. আহসান এইচ মনসুর Read more

যে কাজে নেক আমল নষ্ট হয়

ইসলাম ডেস্ক : মানুষের জীবনের সবচেয়ে মারাত্মক ক্ষতিকারক দিক হলো Read more

ঢাকা-কক্সবাজার ট্রেন চলাচল সেপ্টেম্বরে: রেলমন্ত্রী

জাতীয়, 16 May 2023, 1429 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
সব কিছু ঠিক থাকলে চলতি বছরের সেপ্টেম্বরের মধ্যে ঢাকা থেকে ট্রেনে চড়ে কক্সবাজারে যাওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন।

banner

তিনি বলেন, সরকারের অগ্রাধিকার ভিত্তিক প্রকল্প দোহাজারি-কক্সবাজার রেললাইনের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। প্রকল্পের ৮৪ শতাংশ কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে।

আজ ১৬ মে মঙ্গলবার কক্সবাজারের ঝিলংজায় দোহাজারি-কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্পের কাজ পরিদর্শনকালে নির্মাণাধীন কক্সবাজার আইকনিক স্টেশন ভবনে উপস্থিত সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি।

তিনি প্রথমে কক্সবাজারের ঝিংলজা ইউনিয়নের চান্দেরপাড়ার নির্মাণাধীন ঝিনুক আকৃতির আইকনিক স্টেশন পরিদর্শন করেন। এরপর মন্ত্রী রামু রেলওয়ে স্টেশন ও চকরিয়ার ডুলহাজার রেল লাইন নির্মাণের কাজ পরিদর্শন করেন।

রেলমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকারের ১০টি অগ্রাধিকার প্রকল্পের মধ্যে দুটি প্রকল্প রেলওয়েতে চলমান। এর মধ্যে একটি পদ্মা সেতু রেল সংযোগ এবং অন্যটি দোহাজারী-কক্সবাজার নতুন রেললাইন নির্মাণ প্রকল্প।

তিনি বলেন, আইকনিক রেলস্টেশনটি অনন্য স্থাপত্যশৈলী ও দৃশ্য নন্দন, যার নিমার্ণ কাজ শেষ পর্যায়ে। এটি কেবল কক্সবাজারে গর্ব না, এটি বাংলাদেশের গর্বও বটে।

তিনি আরো বলেন, ট্রেনে করে কক্সবাজার আসার জন্য সারা দেশের মানুষ ভীষণ আগ্রহী হয়ে আছে। কাজের সুবিধার জন্য এই প্রকল্পটি দুটি ভাগে বিভক্ত। আগস্টের মধ্যে কাজ শেষ করে সেপ্টেম্বরে তা উদ্বোধনের জন্য সার্বিকভাবে চেষ্টা করা হচ্ছে।

ট্রেন চলাচল শুরু হলে কালুরঘাট সেতু কোনো সমস্যা তৈরি করবে কি-না জানতে চাইলে মন্ত্রী জানান, কালুরঘাট সেতু সংস্কারের জন্য একটি বিশেষজ্ঞ দল কাজ করছে। তাদের সুপারিশের ভিত্তিতে সেতুটি সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ট্রেন চালাতে কোনো সমস্যা হবে না।

দোজাহারী-কক্সবাজার রেল প্রকল্পের পরিচালক মফিজুর রহমান বলেন, করোনা মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে এই রেলপথটি নির্মাণে নানামুখী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হয়েছে। বিদেশ থেকে যেসব উপকরণ আনতে হয়েছে, তাও মজুদ রয়েছে। এখন বড় ধরনের কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না আসলে সেপ্টেম্বরের মধ্যে ট্রেন চলাচলের উপযোগী হবে।

ঢাকার সঙ্গে পর্যটন নগরী কক্সবাজারকে যুক্ত করতে দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার সিঙ্গেল লাইন ডুয়েলগেজ রেলপথ নির্মাণ করছে সরকার। এ প্রকল্পের আওতায় ৩৯টি সেতু এবং ২৪২টি কালভার্ট করা হচ্ছে। এ ছাড়াও বন্য হাতি চলাচলের জন্য আন্ডারপাস ও ওভারপাস নির্মাণ করা হচ্ছে।

প্রকল্প পরিচালক মফিজুর রহমান জানান, ১৮ হাজার ৩৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হচ্ছে কক্সবাজারে এই রেলপথ। চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটারের রেলপথে ভ্রমণের সময় পর্যটকরা নানা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখতে পাবেন।

নির্বাচনকে সামনে রেখে বিজিবি পুরোপুরি প্রস্তুত : মহাপরিচালক

জাতীয়, 19 October 2023, 860 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিজিবি পুরোপুরি প্রস্তুত রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল এ কে এম নাজমুল হাসান। সীমান্ত এলাকা দিয়ে অস্ত্র ও গোলাবারুদ চালান রোধেও বিজিবি সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে জানিয়ে এ কে এম নাজমুল হাসান বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে আমরা পুরোপুরি প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি। আমরা প্রশিক্ষণ নিয়েছি এবং আমাদের সাজ-সরঞ্জামও প্রস্তুত করেছি। নির্বাচনে দায়িত্ব পালনে আমরা সম্পূর্ণভাবে প্রস্তুত।

banner

আজ ১৯ অক্টোবর বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার দিকে কুমিল্লা-১০ ব্যাটালিয়নের বিজিবি চূড়ান্ত ফায়ারিং প্রতিযোগিতা ও মাদকদ্রব্য ধ্বংসকরণ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।

কুমিল্লার সীমান্ত এলাকা দিয়ে অস্ত্র গোলাবারুদ চালান রোধেও বিজিবি সর্বোচ্চ কাজ করছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের সীমান্ত হচ্ছে চার হাজার ৪২৭ কিলোমিটার। প্যাট্রলিংয়ের টাইমে টহলে একটু ফাঁকা পেলেই মাদক চোরাকারবারিরা এই সুযোগকে কাজে লাগায়। স্থানীয়রা জড়িত না থাকলে, মাদকের সরবরাহ অনেকাংশে কমে যাবে।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লা জেলা প্রশাসক খন্দকার মু. মুশফিকুর রহমান, রিজিয়ন কমান্ডর সরাইলের ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম, কুমিল্লা ব্যাটালিয়ন-১০-এর কর্নেল শরিফুল ইসলাম মেরাজ, অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্ণেল মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম, জেলা পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান প্রমুখ।

আখাউড়া স্থলবন্দরে ২ দিন আমদানি-রপ্তানি বন্ধ

আখাউড়া, আন্তর্জাতিক, 18 September 2023, 1806 Views,
ফাইল ছবি

চলারপথে রিপোর্ট :
বিশ্বকর্মাপূজা উপলক্ষে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ২ দিন বন্ধ থাকবে পণ্য আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম। তবে বন্ধের সময় স্থলবন্দর দিয়ে ভারত ও বাংলাদেশের পাসপোর্টধারী যাত্রী পারাপার কার্যক্রম স্বাভাবিক থাকবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

banner

আখাউড়া স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. শফিকুল ইসলাম জানান, বিশ্বকর্মাপূজা উপলক্ষে ১৮ ও ১৯ সেপ্টেম্বর দুইদিন ভারতীয় ব্যবসায়ীরা আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ রাখবেন বলে জানিয়েছেন। পূজার ছুটি শেষে ২০ সেপ্টেম্বর থেকে যথারীতি আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম চলবে।

উল্লেখ্য, দেশের অন্যতম বৃহৎ ও রপ্তানিমুখী আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে প্রতিদিন গড়ে দেড় লাখ মার্কিন ডলার মূল্যের বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি হয় উত্তরপূর্ব ভারতে। রপ্তানি পণ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে হিমায়িত মাছ, প্লাস্টিক, রড, সিমেন্ট ও বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রী ইত্যাদি।

পবিত্র শবেমেরাজ আজ

জাতীয়, 8 February 2024, 697 Views,
ফাইল ছবি

অনলাইন ডেস্ক :
পবিত্র লাইলাতুল মেরাজ বা শবেমেরাজ আজ। লাইলাতুন বা শব অর্থ হলো-রাত আর মেরাজ অর্থ ঊর্ধ্বগমন। শবেমেরাজ বা লাইলাতুল মেরাজের অর্থ দাঁড়ায়-ঊর্ধ্বগমনের রাত। ব্যাপক অর্থে রাসূল সা:- এর বায়তুল্লাহ শরিফ থেকে বায়তুল মুকাদ্দাসে উপনীত হয়ে সেখান থেকে সপ্তাকাশ এবং আরশে আজিম পৌঁছে আল্লাহর সাথে কথা বলাকেই মেরাজ বলে। রাসূল সা:-এর ৫২ বছর বয়সে অর্থাৎ নবুয়তের ১২তম সনে রজব মাসের ২৬ তারিখ দিবাগত রাতে মেরাজের আশ্চর্যতম ঘটনাটি সংঘটিত হয়।

banner

শবেমেরাজ আল্লাহর অসীম কুদরত। মেরাজের ঘটনা সম্পর্কে মহান আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনের সূরা বনি ইসরাইলের ১ নম্বর আয়াতে ঘোষণা করেন-‘মহামহিম পরম পবিত্র সত্তা তিনি, যিনি স্বীয় বান্দাকে রাতেরবেলা ভ্রমণ করিয়েছেন মসজিদে হারাম থেকে মসজিদে আকসা পর্যন্ত। যাতে আমি তাকে দেখিয়ে দেই, এর চারপাশের নিদর্শনগুলো, যা বরকতময়। নিশ্চয়ই তিনি পরম শ্রবণকারী ও দর্শনশীল।’

হাদিস সূত্রে জানা যায়, রজব মাসের ২৬ তারিখ রাতে রাসূল সা: এশার নামাজ শেষে হজরত উম্মে হানি রা:-এর ঘরে ঘুমন্ত অবস্থায় ছিলেন। এ সময় হজরত জিবরাইল আ: আল্লাহ তায়ালার হুকুমে জান্নাত থেকে বোরাক নামের একটি সাওয়ারি আর অসংখ্য ফেরেশতা নিয়ে রাসূল সা:-এর কাছে হাজির হয়ে সালাম দিয়ে বললেন, হুজুর! আপনার প্রতিপালক আপনাকে স্মরণ করেছেন, এ মুহূর্তেই আপনাকে সেখানে যেতে হবে। মুহাম্মদ সা: প্রস্তুত হলে জিবরাইল আ: রাসূল সা:-কে নিয়ে কাবা শরিফের হাতিমে যান। জমজমের পানিতে অজুর পর বোরাক নামক বাহনে জেরুসালেমের বায়তুল মুকাদ্দাসে গিয়ে নামাজ আদায় করেন। সেখান থেকে প্রথম আকাশে পৌঁছান মহানবী সা:। সেখানে হজরত আদম আ:-এর সাথে সাক্ষাৎ করেন। এভাবে সাত আকাশ পর্যন্ত প্রতিটি স্তরে সাক্ষাৎ করেন হজরত ঈসা আ:, হজরত ইয়াহইয়া আ:, হজরত ইদ্রিস আ:, হজরত হারুন আ:, হজরত মুসা আ: এবং হজরত ইবরাহিম আ:-এর সাথে। সপ্তম আকাশ থেকে হজরত মুহাম্মদ সা:-কে বায়তুল মামুর পরিদর্শনে নেয়া হয়, যেখানে প্রতিদিন (সকাল-সন্ধ্যায়) ৭০ হাজার ফেরেশতা তাওয়াফ করেন ও প্রস্থান করেন; তাঁরা দ্বিতীয়বার আর সেখানে আসার সুযোগ পান না। এরপর তিনি সিদরাতুল মুনতাহার কাছে যান। সেখান থেকে রফরফ নামক বিশেষ বাহনে আরশে আজিম যান। এক ধনুক দূরত্ব থেকে আল্লাহর সাথে কথোপকথন হয়। পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে- অতঃপর তিনি নিকটবর্তী হলেন, তাদের মধ্যে ধনুকের দুই মাথার ব্যবধান রইল অথবা আরো নিকটে। তখন আল্লাহ তাঁর বান্দার প্রতি প্রত্যাদেশ করলেন যা করার ছিল।

হাদিসের বর্ণনা মতে, শবেমেরাজে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করা হয় মহানবী সা:-এর উম্মতদের জন্য। এছাড়া দেখেছেন অনেক নিদর্শন। দেখেছেন জান্নাতের নেয়ামত ও জাহান্নামের শাস্তি। হাদিসের বিখ্যাত গ্রন্থ বুখারি ও মুসলিমের বর্ণনায় উঠে আসা কয়েকটি শাস্তির বিবরণ তুলে ধরা হলো- বেনামাজির শাস্তি: বড় পাথর দিয়ে তার মাথায় আঘাত করা হচ্ছে, আঘাতে মাথা ছিন্নভিন্ন হয়ে যাচ্ছে, আবার ভালো হয়ে যাচ্ছে, আবার আঘাত করা হচ্ছে। জাকাত না দেয়ার শাস্তি : তাদের সামনে ও পেছনে পাওনাদারেরা থাকবে। তারা পশুর মতো চরবে আর নোংরা আবর্জনা ময়লা ও পুঁজ এবং কাঁটাযুক্ত আঠালো বিষাক্ত ফল খাবে, জাহান্নামের উত্তপ্ত পাথর ভক্ষণ করবে। চোগলখোরের শাস্তি : তাদের পার্শ্বদেশ হতে গোশত কেটে তাদের খাওয়ানো হচ্ছে; আর বলা হচ্ছে, যেভাবে তোমার ভাইয়ের গোশত খেতে, সেভাবে এটা ভক্ষণ করো।

গিবতকারীদের শাস্তি: তাদের অগ্নিময় লোহার নখর দিয়ে তারা তাদের চেহারা ও বক্ষ বিদীর্ণ করছে। এসব দেখে রাসূল সা: বললেন, হে জিবরাইল আলাইহিস সালাম! এরা কারা? তিনি (জিবরাইল) বললেন, এরা হলো সেসব লোক যারা পশ্চাতে মানুষের গোশত খেত (আড়ালে সমালোচনা করত)। সুদখোরের শাস্তি: সুদখোরদের বড় বড় পেট, যার কারণে তারা তাদের অবস্থান থেকে নড়াচড়া করতে পারছে না। তাদের সাথে রয়েছে ফেরাউন সম্প্রদায়, তাদেরকে অগ্নিতে প্রবিষ্ট করানো হচ্ছে। ব্যভিচারী নারী ও পুরুষের শাস্তি: জেনাকার বদকার নারী, যারা ব্যভিচার করেছে এবং ভ্রƒণ ও সন্তান হত্যা করেছে, তাদের পায়ে আংটা লাগিয়ে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে; তারা আর্তচিৎকার করছে। এক সম্প্রদায় তাদের সামনে একটি উত্তম পাত্রে উপাদেয় তাজা ভুনা গোশত এবং অন্য নোংরা একটি পাত্রে পচা মাংস। তারা উত্তম পাত্রের উন্নত তাজা সুস্বাদু গোশত রেখে নোংরা পাত্রের পচা মাংস ভক্ষণ করছে। রাসূল সা: বললেন, হে জিবরাইল! আ: এরা কারা? তিনি বললেন, এরা হলো ওই সব পুরুষ যারা স্বীয় বৈধ স্ত্রী রেখে অন্য নারীর কাছে গমন করেছে এবং ওই সব নারী যারা স্বীয় বৈধ স্বামী রেখে পরপুরুষগামিনী হয়েছে।

মেরাজ শেষে পৃথিবীতে ফিরে রাসূল সা: পুরো ঘটনা হজরত আবু বকর রা:-এর কাছে বর্ণনা করেন। তিনি নিঃসংশয়ে তা বিশ্বাস করেন। রাসূল সা: তাকে সিদ্দিক বা বিশ্বাসী খেতাব দেন। মক্কার কাফেররা রাসূলের মেরাজের ঘটনাকে অবিশ্বাস করে।

ইসলামিক ফাউন্ডেশন : শবেমেরাজ উদযাপন উপলক্ষে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে আজ বাদ জোহর ‘পবিত্র শবেমেরাজ’র ‘গুরুত্ব ও তাৎপর্য’ শীর্ষক আলোচনা সভা, দোয়া ও মুনাজাত অনুষ্ঠিত হবে। সভায় সভাপতিত্ব করবেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) ড. মহা: বশিরুল আলম। আলোচনা করবেন মিরপুরের জামিয়াহ মোহাম্মাদিয়া আরাবিয়ার মুহতামিম ও শায়খুল হাদিস মুফতি খালেদ সাইফুল্লাহ। ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস আজ

জাতীয়, 20 February 2024, 756 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
আজ মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। ১৯৫২ সালের এই দিনে মাতৃভাষা বাংলার মর্যাদা প্রতিষ্ঠার দাবিতে আমাদের তরুণ ছাত্র যুবকের রক্তে রঞ্জিত হয়েছিল ঢাকার রাজপথ। তাদের সেই সংগ্রাম এবং আত্মত্যাগ জাতি হিসেবে আমাদেরকে পৃথিবীর ইতিহাসে অবিস্মরণীয় করেছে।

banner

জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা (ইউনেস্কো) মহান একুশের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি দেয়ার পর থেকে আন্তর্জাতিক পর্যায়েও গত কয়েক বছর ধরে দিবসটি পালিত হচ্ছে। বাংলাদেশের সীমানা ছাড়িয়ে ২০০০ সাল থেকে প্রতি বছর একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে সারা বিশ্বে। আমাদের দেশে এটি শহীদ দিবস হিসেবে পরিচিত।
বাঙালি জাতির জন্য এ দিবসটি হচ্ছে চরম শোক ও বেদনার। অন্যদিকে মায়ের ভাষা বাংলার অধিকার আদায়ের জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত। যে কোন জাতির জন্য সবচেয়ে মহৎ ও দুর্লভ উত্তরাধিকার হচ্ছে মৃত্যুর উত্তরাধিকার-মরতে জানা ও মরতে পারার উত্তরাধিকার। ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি শহীদরা জাতিকে সে মহৎ ও দুর্লভ উত্তরাধিকার দিয়ে গেছেন।

১৯৫২ সালের এদিনে ‘বাংলাকে’ রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে বাংলার (তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান) ছাত্র ও যুব-সমাজসহ সর্বস্তরের মানুষ সে সময়ের শাসকগোষ্ঠীর চোখ-রাঙ্গানি ও প্রশাসনের ১৪৪ ধারা উপেক্ষা করে স্বতঃস্ফূর্তভাবে রাজপথে নেমে আসে।

মায়ের ভাষা প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে দুর্বার গতি পাকিস্তানি শাসকদের শঙ্কিত করে তোলায় সেদিন ছাত্র-জনতার মিছিলে পুলিশ গুলি চালালে সালাম, জব্বার, শফিক, বরকত ও রফিক গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হন।
্রওই দিন দেশের প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে, প্রতিটি শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানানো হয়। প্রতিটি শহীদ মিনার ভরে উঠে ফুলে ফুলে। মানুষের ঢল নামে ঢাকা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। ঢাকার সব অলিগলি রাজপথ থেকে খালি পায়ে ফুল হাতে মানুষের মিছিল ছুটে আসে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজসংলগ্ন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের দিকে। তাদের কণ্ঠে ধ্বনিত হয় ভাষা শহীদদের স্মরণে লেখা গান ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি/ আমি কি ভুলিতে পারি’।

এই দিবসটি পালন উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ পৃথক বাণী দেন।