চলারপথে রিপোর্ট :
সরাইলে গরু চোরের বল্লমাঘাতে মোহাম্মদ পারভেজ (২২) নামে এক যুবক নিহত হয়েছে। গত সোমবার গভীর রাতে উপজেলার অরুয়াইল ইউনিয়নের চর-কাকরিয়া গ্রামের মেঘনা নদীর পাড়ে এই ঘটনা ঘটে।
আজ ২৮ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার দুপুরে পুলিশ পারভেজের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মর্গে প্রেরণ করে। নিহত পারভেজ অরুয়াইল ইউনিয়নের চর-কাকরিয়া গ্রামের গ্রামের উবায়দুল্লার ছেলে।
পুলিশ ও গ্রামবাসী জানায়, সোমবার রাতে চোরের দল পারভেজের বড় ভাই হুমায়ূন কবিরের গোয়ালঘর থেকে ২টি গরু চুরি করে পালিয়ে যাওয়ার সময় মেঘনা নদীতে মাছ ধরতে যাওয়া জেলেদের চোখে পড়ে। পরে কয়েকজন জেলে হুমায়ূন কবিরের বাড়িতে এসে বিষয়টি জানালে হুমায়ূন কবির তার ছোট ভাই পারভেজকে নিয়ে গরু চোরদের ধরতে মেঘনা নদীর পাড়ে যায়।
এ সময় চোরেরা অন্ধকারের মধ্যে পারভেজকে বল্লমাঘাত করে গরু দুটো ফেলে নৌকায় করে পালিয়ে যায়।
পরে গ্রামবাসী পারভেজকে উদ্ধার করে আশঙ্কাজনক অবস্থায় কিশোরগঞ্জ জেলার কুলিয়ারচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়ার পথে পারভেজ মারা যায়।
এ ব্যাপারে সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম হোসেন বলেন, গরু চুরি করার সময় চোরদের বল্লমাঘাতে পারভেজ নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় মামলা দায়ের করার প্রস্তুতি চলছে। আমরা তার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মর্গে প্রেরণ করেছি।
সরাইল প্রতিনিধি :
সরাইলে চেকের মামলায় এক বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামী মো. ফতেহ আলী নামের এক ইউপি সদস্য গ্রেফতার হয়েছেন। প্রয়াত আহমদ আলীর ছেলে ফতেহ আলী উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য।
আজ ২২ জানুয়ারি রবিবার বিকাল সাড়ে ৩ টার দিকে উপজেলার বছিউড়া গ্রামের কুদরত আলীর বাড়ি (ঠাকুর বাড়ি) থেকে তাকে গ্রেফতার করেছেন সরাইল থানার এস আই শাহীন পারভেজের নেতৃত্বে একদল পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, দীর্ঘদিন আগে ফতেহ আলী সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ এলাকার একটি ইটভাটার মালিক থেকে শ্রমিক দেওয়ার কথা বলে বড় অংকের টাকা এনেছিলেন। এক সময় মালিক ফতেহ আলীর কাছে অনেক টাকা পাওনা হন। ফতেহ আলী ইটভাটার মালিকের ওই টাকা না দিয়ে ঘুরাতে থাকেন। টাকা উদ্ধার করতে দীর্ঘদিন চেষ্টা করেছেন ভাটার মালিক। এক পর্যায়ে ইটভাটার মালিক নিরূপায় হয়ে ফতেহ আলীর বিরূদ্ধে সিলেটের ফেঞ্চুগজ্ঞ থানার চেকের মামলা করেন। মামলা নম্বর-৬১৬/২১। সিআর মামলা নম্বর-৩৫/২০। ওই মামলায় ফতেহ আলীর এক বছরের সাজা ও ২৭ লাখ টাকা জরিমানা করেন বিজ্ঞ আদালত হয়। সাজা নিয়েই কখনো প্রকাশ্যে কখনো গোপনে চলাফেরা করতেন ফতেহ আলী। নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি বলেন, জনপ্রতিনিধি একটা সাইনবোর্ড। নানা অপরাধের সাথে জড়িত ফতেহ আলী। নারী মদ থেকে শুরূ করে মাদকের অভিযোগও আছে তার বিরূদ্ধে। গত ১০ জানুয়ারি ফেঞ্চুগঞ্জ থানার ওই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আসে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে। প্রসেস নম্বর-৮৫/২২, তারিখ- ১৫/০১/২৩ খ্রি. মূলে পরোয়ানাটি আসে সরাইল থানায়। মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আজ সাড়ে ৩ টার দিকে পুলিশ অভিযান চালিয়ে কুদরত আলীর পাশের বাড়ি থেকে ফতেহ আলীকে গ্রেফতার করেছেন।
সরাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আসলাম হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ফতেহ আলীকে বিজ্ঞ আদালত এক বছরের সাজা দিয়েছেন। গ্রেফতারী পরোয়ানা মূলে তাকে গ্রেফতার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালতে প্রেরণ করেছি।
চলারপথে রিপোর্ট :
বজ্রপাত ও শিলাবৃষ্টির কারণে সরাইল উপজেলায় শনিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে বিদ্যুতের প্রবাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপর টানা ২৩ ঘণ্টা পর রবিবার রাত ১১টার দিকে পুরো উপজেলায় একযোগে বিদ্যুৎ আসে। এরপরও চলতে থাকে লোডশেডিং। দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎবিহীন থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন উপজেলাবাসী।
বিদ্যুৎ না থাকার জন্য বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিউবো) কর্তৃপক্ষের ‘খামখেয়ালি’কে দায়ী করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। অন্যদিকে বিউবোর কর্মকর্তারা সঞ্চালন লাইনে ‘সমস্যা’ হওয়ার কথা জানান।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলা সদরের বড় দেওয়ানপাড়া বাসিন্দা কলেজশিক্ষক মাহবুব খান বলেন, ‘এখানে বৃষ্টির দু-চারটি ফোঁটা পড়লেই টানা দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎ থাকে না। কর্তৃপক্ষের খামখেয়ালির কারণেই এমনটি হয়ে থাকে। এখন চলছে রোজার মাস। এ সময়ে আমরা চরম ভোগান্তিতে আছি।’
সরাইল শতভাগ বিদ্যুৎ–সুবিধার আওতায় আসা একটি উপজেলা। এর নয়টি ইউনিয়নের মধ্যে সদরসহ সাতটি ইউনিয়নে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিউবো) বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের আওতাধীন। এখানে গ্রাহকসংখ্যা ৪৪ হাজার ৫০০। বিউবোর এ বিপুলসংখ্যক গ্রাহকের অধিকাংশই শনিবার রাত ১২টার পর থেকে টানা ২৩ ঘণ্টার বিদ্যুৎবিহীন ছিলেন।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সামান্য হাওয়াসহ শিলাবৃষ্টি আর বজ্রপাতের কারণে শনিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে উপজেলা সদরসহ পুরো উপজেলায় বিদ্যুৎ চলে যায়। শাহবাজপুর ও কালীকচ্ছ ইউনিয়নে বিকেল চারটার দিকে বিদ্যুৎ আসে। এ দুটি ইউনিয়নে আবার বিদ্যুৎ চলে যায় সন্ধ্যা ছয়টার দিকে। এরপর সরাইল সদর, পানিশ্বর, চুন্টা, শাহজাদাপুর ও নোয়াগাঁও ইউনিয়নে রোববার রাত ১১টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ আসেনি। নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুতের অভাবে উপজেলাবাসী চরম ভোগান্তিতে পড়েন। অনেকের বাসাবাড়ি কিংবা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ফ্রিজে রাখা খাদ্যসামগ্রী নষ্ট হয়ে যায়।
শাহবাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি খাইরুল হুদা চৌধুরী বলেন, শনিবার দিবাগত রাতে বিদ্যুৎ চলে যায়। রবিবার বিকেল চারটার দিকে আসে। কিছুক্ষণ পর আবার চলে যায়। এখানে আকাশে মেঘ দেখা দিলেই এমনটি হয়ে থাকে, দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎ থাকে না।
ছোট দেওয়ানপাড়ার বাসিন্দা সমাজকর্মী রওশন আলী বলেন, ‘সরাইল বিদ্যুৎ কার্যালয়ে কর্মচারীদের মধ্যে গ্রুপিং আছে। এক গ্রুপ অন্য গ্রুপকে সহ্য করতে পারে না। কেউ কাউকে সহায়তা করে না। এ কারণে এখানে আমাদের ভোগান্তি হচ্ছে আরও বেশি।’
স্বল্প সময়ের মধ্যে বিদ্যুৎ–সংযোগ দিতে না পেরে দুঃখ প্রকাশ করেন বিউবোর সরাইল উপজেলা কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী (বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ) আবদুর রউফ। তিনি বলেন, ‘শনিবার দিবাগত রাতের প্রচণ্ড বজ্রপাতের প্রভাবে সঞ্চালন লাইনে সমস্যা হয়। এ সমস্যা চিহ্নিত করতে সময় লেগেছে। এ জন্য বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে অনেক দেরি হয়েছে। পরবর্তী সময়ে এ ধরনের সমস্যার দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করা হবে।’
চলারপথে রিপোর্ট :
আগামী প্রজন্মকে সক্ষম করি, দুর্যোগ সহনশীল ভবিষ্যৎ গড়ি’ এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইলে আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস পালিত হয়েছে।
আজ ১৩ অক্টোবর রবিবার সকাল ১০ টায় উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গন থেকে উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা দুর্যােগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের সার্বিক সহযোগিতায় বর্ণাঢ্য র্যালি বের করা হয়।
র্যালিটি উপজেলা প্রধান সড়ক ঘুরে আবারো উপজেলা পরিষদে সামনে এসে শেষ হয়। পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ মেজবাহ উল আলম ভূইয়ার সভাপতিত্বে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এতে বক্তব্য রাখেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন, সরাইল উপজেলা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের কর্মকতা মোঃ রিয়াজ উদ্দিন, সরাইল প্রেসক্লাবের সভাপতি মোহাম্মদ আলী মাস্টার, উপজেলা প্রকৌশলী আনিছুর রহমান ভূইয়া, উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ মাকসুদুর রহমান, সরাইল মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ বদর উদ্দিন, সরাইল সদর ইউপি চেয়ারমান আব্দুল জব্বার প্রমুখ।
চলারপথে রিপোর্ট :
সরাইলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে বাবুল মিয়া (৪০) নামে এক প্রবাসীর মৃত্যু হয়েছে।
আজ ৫ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার দুপুর ১২ টায় সরাইল উপজেলার অরুয়াইল ইউনিয়নের দুবাজাইল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত বাবুল মিয়া অরুয়াইল ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মৃত হাজী ধন মিয়ার ছেলে।
নিহতের একমাত্র ছেলে মামুন মিয়া ও অরুয়াইল ইউপি ১ নং ওয়ার্ড সদস্য রেজাউল ইসলামের কাছ থেকে জানা যায়, বাবুল মিয়া দীর্ঘদিন ধরে ইরাক ছিলেন। গত চার-পাঁচ মাস আগে ইরাক থেকে দেশে আসেন। মঙ্গলবার দুপুর বারোটার দিকে নিজের বসত ঘরের চালে জিগার গাছ কাটার জন্য উঠেন। এ সময় তার মাথায় বিদ্যুতের তার লেগে তিনি মারা যান।
অরুয়াইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, বিদ্যুতের লাইন এলোমেলো ভাবে থাকার কারণে প্রায়ই এমন ঘটনা ঘটে। আর ওই লাইনে কোন প্লাস্টিক মোড়ানো কোন কাভার ছিলনা যার কারণে এ দুর্ঘটনাটি ঘটেছে।
সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে দুবাজাইলে এক ব্যক্তি মারা গেছে। লাশ থানায় আনা হবে এবং প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।