চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার মাসিক আইন-শৃংখলা কমিটির সভা আজ ২৮ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার সকালে অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন স্থানীয় সংসদ সদস্য এবং বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি র.আ.ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ সেলিম শেখের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ ফিরোজুর রহমান, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ এমরানুল ইসলাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোঃ বাহারুল ইসলাম মোল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রির সহ-সভাপতি কাজী জাহাঙ্গীর, জেলা ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা অ্যাডভোকেট মোঃ নাসির, এনজিও নেতা এস.এম শাহীন, ইউপি চেয়ারম্যান আল-আমিনুল হক পাভেল, আবদুল হাকিম মোল্লা, আবদুর রশিদ ভূইয়া, ওমর ফারুক, মোঃ শাহআলম, মোঃ নাছির উদ্দিন, মোঃ কামরুল হাসান ও আবু ছায়েদ।
সভায় শহরের সীমাহীন যানজট, লাগানহীন রিক্সা ভাড়া, রাতের বেলা পুনিয়াউট রেলগেইটে বিভিন্ন গাড়ির যাত্রীদের কাছ থেকে ছিনতাই, মাদক ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম, শহরে দিনের বেলায় ট্রাক চলাচল ও শব্দ দূষনের বিষয়ে আলোচনা হয় এবং তা সমাধানের ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানানো হয়।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে র. আ. ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি আইন-শৃংখলা বিষয়ে বিভিন্ন দিক নির্দেশনা দিয়ে বলেন, আইন-শৃংখলার উন্নয়নে আমাদেরকে আরো কঠোর হতে হবে। তিনি বলেন, শহরের গুরুত্বপূর্ণ দুটি ব্রীজ এখন সিএনজি ও ইজিবাইকের স্ট্যান্ডে পরিনত হয়েছে। কয়েকবার ব্রীজ থেকে এসব গাড়ি অপসারণ করা হলেও তারা আবারো ফিরে আসে। তিনি শহরের যানজট নিরসনে ট্রাফিকিং ব্যবস্থা আরো জোরদার করার আহবান জানান। তিনি বলেন, আগামী প্রজন্মের বাসযোগ্য একটি ব্রাহ্মণবাড়িয়া বির্নিমানে কাজ করছি। আপনারাও যার যার অবস্থান থেকে কাজ করবেন।
সভায় উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট লোকমান হোসেন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শামীমা মুজিব, বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যানগন ও আইন-শৃংখলা কমিটির সদস্যগণ উপস্থিত ছিলেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
কান্দিপাড়ায় বাড়ির টয়লেট থেকে সিয়াম (১৩) নামে এক স্কুলছাত্রের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
৫ ডিসেম্বর মঙ্গলবার বিকেল পৌনে ৫টার দিকে কান্দিপাড়া এলাকা থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। সিয়াম পাওয়ার হাউস রোডের স্কলারস স্কুল অ্যান্ড কলেজের পঞ্চ শ্রেণির ছাত্র ছিল।
হাসপাতাল ও পরিবারের সদস্যরা জানান, সিয়াম বিকেলে বন্ধুদের সঙ্গে খেলাধুলা করছিল। তারপর সিয়াম বাসায় এসে টয়লেটে ঢুকে আর বের হয়নি। পরিবারের সদস্যরা দরজা ভেঙে দেখেন সিয়াম টয়লেটের মেঝেতে পড়ে আছে। তাকে উদ্ধার করে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়া নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসলাম হোসেন বলেন, কী ভাবে সিয়াম মারা গেছে তা সঠিক বলা যাচ্ছে না। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
কন্টেইনার ট্রেনের গতি বেশি থাকায় বগি লাইনচ্যুত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন তদন্ত কমিটির সদস্যরা। কাঠের স্লীপারগুলো পরিবর্তন না করা পর্যন্ত রেল লাইনের ক্ষতিগ্রস্ত ওই এলাকা দিয়ে সকল ট্রেনকে ১০ কিলোমিটার গতি চলাচলের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
কন্টেইনার ট্রেনের বগি লাইনচ্যুতের ঘটনায় গঠিত চার সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটির সদস্য ও আখাউড়া রেলওয়ে জংশনের সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী মেহেদী হাসান আহমেদ তারেক আজ ২০ নভেম্বর সোমবার সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, গতি বেশী থাকায় কন্টেইনার ট্রেনের বগি লাইনচ্যুত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার কাঠের স্লীপার পরিবর্তন করে নতুন স্লীপার লাগানো পর্যন্ত রেললাইনের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা দিয়ে ১০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলবে। স্লীপার পরিবর্তনের পর ট্রেন আগের নিয়মে চলবে।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনের ভারপ্রাপ্ত মাস্টার জসিম উদ্দিন বলেন, শহরের কলেজপাড়ার লেভেল ক্রসিং এলাকার আউটার সিগন্যাল থেকে রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত সকল ট্রেন ১০ কিলোমিটার গতিতে চলবে। নতুন রেললাইন বসানো হচ্ছে। সোমবার সকাল থেকে রেলের লোকজন কাজ শুরু করেছে। কাজ শেষ হলে সকল ট্রেন পূর্বের গতিতে চলবে।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম থেকে ৩২টি বগি নিয়ে ছেড়ে আসা ঢাকা অভিমুখী কন্টেইনার ট্রেনটি রবিবার সকাল সাড়ে ৮টার সময় ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনে ঢোকার পথে শহরের কলেজপাড়ার লেভেল ক্রসিং এলাকায় পৌছলে হঠাৎ করে ট্রেনের ৩১ নং বগির পেছনের ৪টি চাকা লাইনচ্যুত হয়। পরে ট্রেনের চালক লাইনচ্যুত হওয়া বগিটিসহ ট্রেনটিকে টেনে হিচড়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনে নিয়ে যায়। এতে রেললাইনের পাত বেঁকে যাওয়াসহ ৯৮ থেকে ১০০টি স্লীপার ভেঙ্গে যায়।
দুর্ঘটনার পর আপলাইনে (ঢাকা অভিমুখী) ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ডাউনলাইন (চট্টগ্রাম অভিমুখী) দিয়েই দু’দিকের ট্রেন চালানো হয়।
এদিকে লাইনলাইনচ্যুত হওয়ার সাড়ে ১০ ঘণ্টা পর রবিবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে কন্টেইনার ট্রেনের লাইনচ্যুত বগিটি উদ্ধার করে লাইনে তোলা হয়। পরে ১৪ ঘন্টা পর ঢাকামুখী আপলাইন স্বাভাবিক হলে এই লাইনে ট্রেন চলাচল শুরু হয়।
এদিকে কন্টেইনার ট্রেনের একটি বগি চারটি চাকা লাইনচ্যুত হওয়ার পর রেলওয়ে ঢাকার সহকারি পরিবহন কর্মকর্তা-১- সাজেদুল ইসলামকে প্রধান করে চার সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে রেলওয়ে বিভাগ। তদন্ত কমিটিকে তিনদিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়।
তদন্ত কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন ঢাকা রেলওয়ের সহকারী প্রকৌশলী (সংকেত) ও সহকারী মেকানিক্যাল প্রকৌশলী (অপারেশন) এবং আখাউড়া রেলওয়ের সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী মেহেদী হাসান আহমেদ তারেক।
চলারপথে রিপোর্ট :
সুরসম্রাট দি আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গনের সরোদ মিলনায়তনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে প্রকাশিত পাঠক নন্দিত দৈনিক সংবাদপত্র সমতট বার্তা’র ৩৩ বছরে পদার্পণ উপলক্ষে দৈনিক সমতট বার্তার আয়োজনে ৭ পর্বের সমতট উৎসবের প্রথম দিনে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।
অনুষ্ঠানমালার মধ্যে ছিল সুধী সমাবেশ, গুণীজন সম্মাননা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
এতে প্রধান অতিথি ছিলেন তিতাস পাড়ে অভাবনীয় উন্নয়নের সফল রূপকার র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি।
সংবর্ধিত অতিথি ছিলেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চলচ্চিত্র নির্মাতা মোরশেদুল ইসলাম, মুখ্য আলোচক ছিলেন বরেণ্য চলচ্চিত্র নির্মাতা ফাখরুল আরেফিন। বিশেষ অতিথি ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর এএসএম শফিকুল্লাহ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর বিভূতি ভূষণ দেবনাথ।
দৈনিক সমতট বার্তার উপদেষ্টা ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান ডাঃ মোঃ আবু সাঈদ এর সভাপতিত্বে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সাহিত্য একাডেমীর সভাপতি বিশিষ্ট লেখক ও কবি জয়্দুল হোসেন। প্রধান অতিথি র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি তাঁর বক্তব্যে বলেন, আমি যখন ছোটবেলায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আসতাম তখন কুসুমকুমার চক্রবর্তী নামে একজন বড় ডাক্তার ছিলেন। তিনি আমাকে কালো মেঘ ঔষধ খাওয়াতেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে এসে দিনে দিনে গ্রামে ফিরে যাওয়া সম্ভব হতো না। সে সময় ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের নিয়াজ পার্কে আমার ফুফুর বাসায় রাত্রিযাপন করতে হতো। তখন প্রতিদিন সকাল সন্ধ্যায় আমি শুনতে পেতাম ঘরে ঘরে সুরের মূর্ছনা, ঝংকার। প্রায় সবার বাড়ি থেকে হারমোনিয়াম এর আওয়াজ ভেসে আসতো ওই সময়টাতে। এটি ছিল নিতান্তই তখন সুরের শহর। আলাউদ্দিন সংগীতাঙ্গন নামে যেখানে আমরা আজকে দাঁড়িয়ে আছি এই বাড়িটি ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর ক্রয়কৃত বাড়ি। এ বাড়িটিতে তিনি নিজে এই সঙ্গীত একাডেমী প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। আগের যে ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে আমরা দেখেছি সে ব্রাহ্মণবাড়িয়া এখন আর নেই। কিন্তু আমি আগের ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে খুঁজে পেতে চাই। আমি যখন এখানে রাজনীতি করতে এসেছি তখন আমি এই শহরকে ভালোবাসি বলেই এসেছি। কারণ, সমৃদ্ধ শিক্ষা-সংস্কৃতি, অনেক অনেক জ্ঞানী-গুণীজনদের এই ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সুনাম ছিল অনেক উপরে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঐতিহ্য ছিলেন ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ, আরও ছিলেন শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত, ব্যারিস্টার এ রসুল, নবাব শামসুল হুদা, মলয়া সংগীতের মনমোহন দত্ত, আফতাব উদ্দিন খাঁ, লব পাল এর মত অনেক গুণীজন। এখন আর সেই দিন নেই। আমি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রাজনীতি করতে এসে এখানে অনেক মানুষের সহযোগিতা পেয়েছি সহমর্মিতা পেয়েছি। তাঁদের কথাতো আমি ভুলতে পারবো না। এরমধ্যে রয়েছে দৈনিক সমতট বার্তা এবং এর সম্পাদক মনজুরুল আলম। আর সেই জন্যেই এখানে আসার ব্যাপারে তার যে আহ্বান সেটাকে আমি উপেক্ষা করতে পারিনি। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সম্পর্কে নেতিবাচক প্রচারই বেশি প্রাধান্য পেয়ে থাকে। আর এসব প্রচার যখন উপর মহলে যায় তখন আমরা অবহেলার শিকার হই। করোনাকালীন সময়ে একজন জনপ্রিয় মাওলানার মৃত্যুতে তাঁর জানাজায় অনেক মানুষ হয়েছিল। এটি নিয়েও ব্রাহ্মণবাড়িয়া সম্পর্কে অপপ্রচার চালানো হয়েছিল। কিন্তু এর কিছুদিন পরেই চট্টগ্রামে শফি নামে একজন আলেম সাহেবের মৃত্যু হয়। তার জানাজায়ও আরো অনেক বেশি মানুষ হয়েছিল। সেটিও ছিল করোনাকালেই। অথচ চট্টগ্রামের এ বিষয়টি নিয়ে কোন বিরূপ প্রচারণা কেউ করেনি। উপরন্ত চট্টগ্রামবাসীরাও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সম্পর্কে নেতিবাচক সমালোচনা করেছেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে একজন মহিলা দু’দুবারে মহিলা মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন, সেই কথাটা কেউ বলে না। কিছু লোক সংঘবদ্ধ হয়ে, অতর্কিত আক্রমণ চালিয়ে এই আলাউদ্দিন সংগীতাঙ্গন জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছারখার করে দিল, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার রেলস্টেশন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভাসহ বেশ কিছু স্থানে বর্বর হামলা চালিয়ে ধ্বংসযজ্ঞে পরিণত করলো, এ ব্যাপারে কেউ কিন্তু আমাদের পাশে এসে দাঁড়ায়নি। ঢাকা শহরে এত এত সাংস্কৃতিক সংগঠন, বড় বড় সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রয়েছেন’ তারা কিন্তু এই তান্ডবের বিপক্ষে একটি মানববন্ধন করেননি। ঢাকা থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া মাত্র আড়াই ঘণ্টার পথ। এ সত্যেও এখানে কেউ আসেননি। আমি এই ঘটনার একটি নিরপেক্ষ তদন্ত করার কথা বলেছিলাম। তাও হলোনা। এখানেও ব্রাহ্মণবাড়িয়া নিয়ে নেতিবাচকতা হয়েছে। সবচেয়ে পরিতাপের বিষয় হল এই ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে বাড়ি, এমন সাংবাদিকও ওই ঘটনা নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসীর বিপক্ষে লিখেছেন। তাদের কেউ একবার এসে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশন, মিউনিসিপ্যালিটি সহ অন্যান্য স্থাপনার ধ্বংসরূপ দেখে যাননি। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার প্রতি তাদের বিরূপ ধারণা রয়েছে। এখানে রাজনীতিতে এসে আমি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে চেষ্টা করেছি, এখনো চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমার এ প্রচেষ্টায় আমার পাশে আছে দৈনিক সমতট বার্তা এবং এর সম্পাদক মনজুরুল আলম। এখানকার অন্যান্য পত্রিকার মধ্যে দৈনিক সমতট বার্তা কিছুটা ব্যতিক্রম। জেলার শিল্প সংস্কৃতি এবং রাজনীতির প্রগতিশীল ভাবনাগুলোকে মর্যাদা দিয়ে তাঁরা পত্রিকাটি চালাচ্ছেন। আমাদের সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ইনশাল্লাহ, একদিন অতীতের ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে আমরা অবশ্যই ফিরে পাবো। এ ব্যাপারে আমি আবারো আপনারা সকলের সহযোগিতা চাই।’ অনুষ্ঠানে আজীবন সম্মাননা প্রাপ্ত খ্যাতিমান চলচ্চিত্র নির্মাতা মোরশেদুল ইসলামকে সম্মাননা ক্রেষ্ট প্রদান করেন প্রধান অতিথি উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি, মুখ্য আলোচক বরেণ্য চলচ্চিত্র নির্মাতা ফাখরুল আরেফিনকে সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করেন দৈনিক সমতট বার্তা পাঠক ফোরাম এর সভাপতি হাজী সাইদুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক সাফিরউদ্দিন চৌধুরী রনি। এর আগে মোরশেদুল ইসলাম ও ফখরুল ইসলামের জীবনচরিত ও কর্মকৃতি পাঠ করেন ফারিয়া বিনতে আলম ও ডাঃ ইশতি বিনতে আলম হৃদিলা। সংগীতানুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন নুসরাত জুহুরী প্রান্তি, পাপিয়া চৌধুরী, ডাঃ ইশতি বিনতে আলম হৃদিলা, মায়া চক্রবর্তী। নৃত্য পরিচালনা করেন নৃত্য প্রশিক্ষক যে আমিন। অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন সংগীত সংগঠক আনিসুল হক রিপন। অনুষ্ঠানের সার্বিক তত্ত্বাবধান করেন দৈনিক সমতট বার্তার সম্পাদক মনজুরুল আলম।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ট্রেন লাইনচ্যুৎ হওয়ার প্রায় ১০ ঘণ্টা পর ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট রেলপথে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। আজ ১০ মে শনিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়। ৯ মে শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর শহরের পৈরতলা লেভেলক্রসিং এলাকায় মালবাহী ট্রেনের বগি লাইনচ্যুত হয়। উদ্ধার কার্যক্রমে শেষে আজ ভোর ৫টার দিকে ট্রেন চলাচল শুরু হয়। কিন্তু এক ঘণ্টা পর একই স্থানে কক্সবাজার এক্সপ্রেসের একটি বগি লাইনচ্যুৎ হয়। বগিটি উদ্ধারের পর ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনের মাস্টার মো. জসিম উদ্দিন এসব তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, দুই দফায় প্রায় ১০ ঘণ্টা ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়। শুক্রবার রাত ১০টা ১০ মিনিটে চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা ৬০৩ নম্বর মালবাহী ট্রেনের একটি বগি ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনের অদূরে পৈরতলা রেল ক্রসিংয়ের সামনে লাইনচ্যুত হয়। আখাউড়া রেলওয়ে জংশন থেকে উদ্ধারকারী ট্রেন এসে দুর্ঘটনাকবলিত বগিটি উদ্ধারে কাজ শুরু করে। ভোরে পৌনে ৫টার দিকে বগিটি সরানো হলে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
দুর্ঘটনার কারণে তুর্ণা, নিশিথা, উপবন এক্সপ্রেস, চট্টগ্রাম মেইলসহ বিভিন্ন ট্রেন আটকা পড়ে। এতে যাত্রীদেরকে দুর্ভোগের মধ্যে পড়তে হয়। তবে ভৈরব ও আশুগঞ্জ স্টেশনে যাত্রীদেরকে শুকনো খাবার এবং পানি দিয়ে আপ্যায়ন করে রেল কর্তৃপক্ষ।
এদিকে, লাইনচ্যুৎ হওয়া মালবাহী ট্রেনের বগি উদ্ধারের পর একই স্থানে আবারও আজ ভোর ছয়টার দিকে কক্সবাজার এক্সপ্রেসের একটি বগির দুটি চাকা লাইনচ্যুতির ঘটনা ঘটে। এতে ডাউনলাইনে চট্টগ্রাম ও সিলেটের সাথে ঢাকার ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে সকাল সাড়ে আটটার দিকে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশনের স্টেশনমাস্টার জসিম উদ্দিন বলেন, আখাউড়া থেকে উদ্ধারকারী ট্রেন আসার পর আজ ভোরে মালবাহী ট্রেনের বগি উদ্ধার করে। এর এক ঘণ্টা পর একই স্থানে কক্সবাজার এক্সপ্রেসের একটি বগি লাইনচ্যুত হয়। উদ্ধারকারী ট্রেন আগে থেকে ঘটনাস্থলে থাকায় বগিটি দ্রুততম সময়ে উদ্ধার করা সম্ভব হয়। সকাল ৭টায় আপলাইনে এবং সাড়ে ৮টায় ডাউনলাইনে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাবেদুর রহমান বলেছেন, গত ৪ মাস ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জন্য দিন-রাত পরিশ্রম করে ভেঙ্গে পড়া আইন-শৃংখলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেছি। শহরের ট্রাফিকিং ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজিয়েছি। এই শহর নিয়ে আমার অনেক স্বপ্ন ছিলো। স্বপ্ন বাস্তবায়নে নিরলসভাবে কাজ করেছি, কিন্তু সময় পাইনি।
তিনি বলেন, আরো তিন মাস সময় পেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দাঙ্গা চিরতরে নির্মূল করতে পারতাম। ২২ ডিসেম্বর রবিবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবে তাঁকে দেয়া বিদায়ী সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
প্রেসক্লাবের সভাপতি জাবেদ রহিম বিজনের সভাপতিত্বে ও সহ-সভাপতি নিয়াজ মোঃ খান বিটুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিদায়ী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাবেদুর রহমান আরো বলেন, বিগত ১৫ বছরে পুলিশ একটি দলের হয়ে কাজ করেছে। যার জন্য পুলিশের প্রতি সাধারণ মানুষের একটা বিদ্বেষ ছিলো। বর্তমান সরকার পুলিশকে জনগণের পুলিশ হিসেবে দাঁড় করাতে কাজ করছে।
তিনি বলেন, আমি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় যোগদান করেই প্রথমে প্রেসক্লাবে এসেছি। আবার চলে যাবার সময়ও আবার প্রেসক্লাবে এসেছি। আমার সাড়ে ৩ মাস সময়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জন্য কতটুকু কাজ করেছি তার মূল্যায়ন আপনারা করবেন। তিনি বলেন, পুলিশের অনেক ভুল-ত্রুটি ছিলো। বৈষ্যম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় দেশে ৪৪জন পুলিশকে মারা হয়েছে। এতে করে পুলিশের মনোবল ভেঙ্গে গিয়েছিলো। আমরা পুলিশের মনোবল ফিরিয়ে আনার জন্য কাজ করছি। তিনি বলেন, পুলিশের সংস্কার প্রয়োজন।
তিনি বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানা ও থানার সকল গাড়ি, আসবাবপত্র পুড়িয়ে দেয়া হয়েছিলো। একটা ধ্বংসস্তুপের উপর আমি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার হিসেবে যোগদান করেছিলাম। আইন-শৃংখলা পরিস্থিতি বলতে কিছুই ছিলোনা। এমন পরিস্থিতিতে কাজ করতে কষ্ট হয়েছে। তিনি বলেন, বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পুলিশের সংকট রয়েছে, গাড়ির সংকট রয়েছে। এই সমস্যা একদিনে নিরসন করা সম্ভব নয়। তারপরও বর্তমানে পুলিশ ভালো কাজ করছে। তিনি বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কাজ করতে পেরে ভালো লেগেছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সাংবাদিকতা খুবই সমৃদ্ধ। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সাংবাদিকরা পেশাদারিত্বের সাথে কাজ করে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জন্য কাজ করতে পেরেছি এটাই আমার সান্তনার জায়গা। পুলিশ সুপার বলেন, ৫ আগস্টের পর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ট্রাফিকিং ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ভেঙ্গে পড়েছিলো। আমরা আস্তে আস্তে ট্রাফিকিং ব্যবস্থা আগের জায়গায় ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছি।