চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চিনাইর শিশু মেধাবৃত্তি ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ১৮তম শিশু মেধাবৃত্তি ও শিশু মেলা আজ ০১ মার্চ বুধবার অনুষ্ঠিত হয়।
বেলা সাড়ে ১১টায় সদর উপজেলার চিনাইর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ডিগ্রী কলেজ মাঠে অনুষ্ঠিত মেধাবৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত, বুদ্ধিজীবী ও ইতিহাসবিদ, সাবেক সচিব সিরাজ উদদীন আহমেদ। মেলা উদ্বোধন করেন বুদ্ধিজীবী ও শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ডঃ আবদুল মান্নান চৌধুরী।
চিনাইর শিশু মেধাবৃত্তি ফাউন্ডেশনের সভাপতি, ইউনিভার্সিটি অব ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ট্রেজারার ও মাউশির সাবেক মহাপরিচালক প্রফেসর ফাহিমা খাতুনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত শিশু মেধাবৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন চিনাইর শিশু মেধাবৃত্তি ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা, স্থানীয় সংসদ সদস্য এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি র.আ.ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মোঃ শাহগীর আলম ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন।
শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন চিনাইর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ডিগ্রী কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মকবুল আহমেদ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন চিনাইর শিশু মেধাবৃত্তি ফাউন্ডেশনের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ মোঃ ইকবাল হোসেন। বক্তব্য রাখেন অন্নদা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফরিদা নাজমীন ও কসবার ইমাম প্রি-ক্যাডেট স্কুলের অধ্যক্ষ জয়নাল আবেদীন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাবেক সচিব সিরাজ উদদীন আহমেদ বলেন, আজকের শিশুরাই আগামী দিনের দেশের কর্ণধার। তারাই দেশের নেতৃত্ব দেবে। তাই শিশুদেরকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তুলতে হবে। তাদের মধ্যে দেশপ্রেম জাগ্রত করতে হবে। তাদেরকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ করতে হবে। চিনাইর শিশু মেধাবৃত্তি প্রতিযোগীতা দেশের একটি মডেল। তিনি বলেন, কোমলমতি শিক্ষার্থীরা মেধাবৃত্তি পরীক্ষায় অংশ গ্রহনের মাধ্যমে ভবিষ্যতের জন্য নিজেকে তৈরী করতে পারবে। তিনি এই মেধাবৃত্তি চালু করায় আয়োজকদেরকে ধন্যবাদ জানান।
আলোচনা সভা শেষে বৃত্তি পাওয়া শিক্ষার্থীদের হাতে বৃত্তির নগদ টাকা ও সাটিফিকেট তুলে দেয়া হয়। চিনাইর শিশু মেধাবৃত্তি ফাউন্ডেশন সূত্রে জানা গেছে, এ বছর জেলার বিভিন্ন উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১৭৭৮ জন শিক্ষার্থী (প্রথম শ্রেনী থেকে পঞ্চম শ্রেনী) মেধাবৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নেয়। এর মধ্যে ১৯৮জন শিক্ষার্থী বৃত্তি পায়। এদের মধ্যে ৫৭জন ট্যালেন্টপুলে, ১৩৬জন সাধারণ গ্রেডে ও উপজেলা কোটায় ৫জন বৃত্তি পায়।
ট্যালেন্টপুলে বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদেরকে নগদ ৩ হাজার টাকা, সাধারণ গ্রেডে বৃত্তিপ্রাপ্তদেরকে নগদ ২ হাজার ৫০০টাকা ও উপজেলা কোটায় বৃত্তিপ্রপ্তদেরকে নগদ ১হাজার ৫০০ টাকা করে প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানে সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাগণ, জেলার বিভিন্ন উপজেলার শিক্ষক-শিক্ষার্থী, অভিভাবক, জনপ্রতিনিধিসহ বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
স্টাফ রিপোর্টার :
রানার্স কমিউনিটির উদ্যোগে আজ ১০ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার হাফ ম্যারাথন প্রতিযোগীতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ভোরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজ ক্যাম্পাস থেকে এই প্রতিযোগীতা অনুষ্ঠিত হয়। তিনটি ক্যাটাগরিতে অনুষ্ঠিত হাফ ম্যরাথন প্রতিযোগীতায় দেশ-বিদেশের বিভিন্ন বয়সের দুই ২৫০ জন দৌড়বিদ প্রতিযোগীতায় অংশ নেয়।সকালে প্রধান অতিথি হিসেবে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর বিভূতি ভূষন দেবনাথ ম্যারাথন প্রতিযোগীতা উদ্বোধন করেন।
এ সময় বক্তব্য রাখেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া রানার্স কমিউনিটির এডমিন অলি আহাদ রতন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজ ক্যাম্পাস থেকে ২১ কিলোমিটার, ১০ কিলোমিটার এবং ৫ কিলেমিটার ক্যাটাগরিতে হাফ ম্যারাথন দৌড় শুরু হয়। দৌড়বিদরা শহরের শিমরাইলকান্দি হয়ে শেখ হাসিনা সড়ক (সিমনা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া সড়ক) দিয়ে বিজয়নগর উপজেলা ঘুরে আবারো শেখ হাসিনা সড়কের তিতাস সেতুতে ফিনিসিং পয়েন্টে এসে শেষ হয়।
আয়োজকরা জানান, ভোরে হাফ ম্যারাথন প্রতিযোগীতায় অংশ গ্রহন করতে রাশিয়া, জাপান, ভারত, নেপালসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে বিভিন্ন বয়সী ২৫০জন দৌড়বিদ ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসে এসে জড়ো হয়। পরে সেখান থেকে তিনটি ক্যাটাগরিতে অনুষ্ঠিত হাফ ম্যরাথন প্রতিযোগীতা অনুষ্ঠিত হয়।
ম্যারাথনে অংশ গ্রহণকারীকারীরা জানান, সুস্থ দেহ ও সবল মনের জন্য দৌড়ের কোনো বিকল্প নেই। সিলেট থেকে আসা দৌড়বিদ গোলাম রাহাত তোফায়েল বলেন, আমি দেশের বিভিন্ন জেলায় ম্যারাথন প্রতিযোগীতায় অংশ গ্রহন করে থাকি। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অংশ গ্রহন করে খুব ভালো লাগছে।
পটুয়াখালী জেলা থেকে আসা দৌড়বিদ মশিউর রহমান পলাশ বলেন, আমি প্রথমবারের মতো ম্যারাথন প্রতিযোগীতায় অংশ গ্রহণ করেছি। ম্যারাথনে অংশ গ্রহণ করে আমার খুব ভালো লাগছে। আগামীতে দেশীয় ও আর্ন্তজাতিক পর্যায়ের ম্যারাথনে যাওয়ার চেষ্টা করবো।
ফারজানা খানম নামে এক নারী দৌড়বিদ বলেন, জীবনের প্রথমবারের মতো আমি ৫ কিলোমিটার দৌড় প্রতিযোগীতায় অংশ গ্রহন করে নারীদের মধ্যে আমি প্রথম হয়েছি। শরীরকে ফিট ও সুস্থ রাখার জন্য প্রতিটা মানুষের দৌড়ানো উচিত।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর বিভূতি ভূষন দেবনাথ বলেন, আর্ন্তজাতিক পর্যায়ে প্রথমবারের মতো ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হাফ ম্যারাথন প্রতিযোগীতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রতিযোগীতায় আমাদের দেশসহ বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষসহ ২৫০ জন দৌড়বিদ অংশ গ্রহণ করেছে। আজ হাফ ম্যারাথন অনুষ্ঠিত হয়েছে আগামীতে আমরা ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ফুল ম্যারাথন প্রতিযোগীতার আয়োজন করার চেষ্টা করবো।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া রানার্স কমিউনিটির এডমিন অলি আহাদ রতন বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আমরা প্রথমবারের মতো হাফ ম্যারাথন প্রতিযোগীতার আয়োজন করেছি। আমাদের সুস্থতার জন্য দৌড়ানো উচিত। সবার কাছে এমন তথ্য পৌছে দেয়ার জন্যই আমাদের এই আয়োজন। আগামীতে সকলের সহযোগীতায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আল্টা বা ফুল ম্যারাথন প্রতিযোগীতা করার চেষ্টা করবো।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর ট্রাফিক ইন্সপেক্টর উৎস দাস গুপ্ত জানান, প্রতিযোগীরা যাতে কোনো ধরনের সমস্যায় না পড়ে সেজন্য প্রতিযোগীতা শুরুর সময় সড়কে যানচলাচল বন্ধ রাখা হয়। ম্যারাথন প্রতিযোগীতায় অংশগ্রহনকারীদের নিরাপত্তার জন্যও আমরা কাজ করেছি।
প্রতিযোগীতা শেষে বিজয়ীদের হাতে পুরষ্কার তুলে দেন অতিথিরা।
চলারপথে রিপোর্ট :
সূর্যমুখী কিন্ডারগার্টেন এন্ড গার্লস হাই স্কুলের বার্ষিক মিলাদ মাহফিল আজ ২৯ জানুয়ারি বুধবার অনুষ্ঠিত হয়। মিলাদ মহফিলে প্রধান অতিথি ছিলেন মো: সাইফুল ইসলাম, সভাপতি সূর্যমুখী কিন্ডারগার্টেন এন্ড গার্লস হাই স্কুল ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ব্রাহ্মণবাড়িয়া।
মিলাদ পাঠ ও দোয়া পরিচালনা করেন হযরত মাওলানা মুফতি নুসরাতুল্লাহ নূর।
সভাপতিত্ব করেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সালমা বেগম। প্রধান অতিথি হামদ, নাথ, গজল ও কেরাত প্রতিযোগিতায় ৫টি বিভাগে ৫৮ জন বিজয়ীর মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন।
বিদ্যালয়ের প্রাক্তন সভাপতি প্রকৌশলী মো: রফিকুল ইসলাম, দৈনিক কুরুলিয়া পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদক ইব্রাহিম খান সাদাত, রেকটোর সত্বাধিকারী মো: আশিকুল ইসলাম সহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, অভিভাবক ও ছাত্র-ছাত্রীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। দোয়া শেষে উপস্থিত সকলের মাঝে তবারক বিতরণ করা হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
বিজ্ঞ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট শারমিন জাহান বলেছেন, বিচার বিভাগ রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ। তিনি বলেন, বিচার বিভাগের সাথে রয়েছে পুলিশের নাড়ির সর্ম্পক। ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করতে হলে পুলিশ-ম্যাজিস্ট্রেট একযোগে কাজ করতে হবে। পুলিশ বিভাগসহ সকল এজেন্সির আন্তরিক প্রচেষ্টায় ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব।
আজ ২৬ ফেব্রুয়ারি বুধবার বিকালে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত সম্মেলন কক্ষে পুলিশ-ম্যাজিস্ট্রেট সম্মেলনের সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সকলকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, বিচার কাজ সম্পন্ন করতে হলে আন্তরিক হতে হবে। ন্যায়ের শাসন ছাড়া একটা দেশ অগ্রসর হতে পারে না। দেশের উন্নয়নের জন্য ন্যায়ের শাসনের বিকল্প নেই।
সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আফরিন আহমেদ হ্যাপী ও সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রোকেয়া আক্তারের যৌথ সঞ্চালনায় এসময় বক্তব্যে রাখেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিনা আক্তার, বিজিবি ইনচার্জ মোঃ নুরুল হক, পুলিশ সুপার শচীন চাক্মা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ওবায়দুল রহমান, সিভিল সার্জন মোঃ নোমান মিয়া, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, ফরিদ আহমেদ খান, এডি মতিউর রহমান, সিনিয়র জুডিসিয়াল মাজিস্ট্রেট আসমা জাহান নিপা, সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফরহাদ রায়হান ভূইয়া, সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সাদেকুর রহমান, সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সামিউল আলম, জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শাখাওয়াত হোসেন, জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট স্বাগত স্বাম্য, জজ কোর্ট পিপি এডঃ ফখরুল আলম খান, এপিপি এডঃ তারিকুল ইসলাম খান রুমা, জেলার মোঃ কামরুল ইসলাম, ডাঃ শাহিনুর আলমসহ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার প্রতিটি থানার অফিসার ইনচার্জ ও তাদের প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া খাল ভরাট করার অভিযোগে মোবারক নামে এক ব্যক্তিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
২৮ ফেব্রুয়ারি বুধবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার নাটাই উত্তর ইউনিয়নের ভাটপাড়ায় অভিযান চালিয়ে এ জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক ও সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোশাররফ হোসেন।
তিনি জানান, খাল ভরাট করার মাধ্যমে পরিবেশ সংরক্ষণ আইন লঙ্ঘনের দায়ে ওই গ্রামের মান্নান মিয়ার ছেলে মোবারককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। তাকে আগামী পাঁচ দিনের মধ্যে খালটি পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে আনতে বলা হয়েছে। তা না হলে দ্বিগুণ জরিমানা করা হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
বিনম্র শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার মধ্যে দিয়ে আনন্দঘন পরিবেশে আজ ৮ ডিসেম্বর শুক্রবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া হানাদার মুক্ত দিবস পালিত হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে র্যালি, আলোচনা সভা ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পন করা হয়। সকালে জাতীয় পতাকা নিয়ে শহরে র্যালি করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া মুক্ত দিবস উদযাপন পরিষদের ব্যানারে মুক্তিযোদ্ধারা
সকাল ১০টায় শহরের বঙ্গবন্ধু স্কয়ারে জাতীয় বীর আবদুল কুদ্দুস মাখন মুক্ত মঞ্চে স্থাপিত বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তক অর্পন করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর-বিজয়নগর) আসনের সংসদ সদস্য ও বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি র.আ.ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী।
পরে পর্যায়ক্রমে মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযোদ্ধা সন্তানসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পন করেন। বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি র.আ.ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি বলেন, বাঙ্গালী বীরের জাতি এর প্রমান করেছে মহান মুক্তিযুদ্ধে।
তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ছিলো একটি গুরুত্বপূর্ণ সেক্টর। সীমান্তবর্তী অনেক জেলা মুক্ত হওয়ার আগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া হানাদার মুক্ত হয়। ওইদিন শহরের পুরাতন কাচারী প্রাঙ্গনে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীন বাংলাদেশের বিজয় পতাকা উত্তোলন করেন মুক্তিযুদ্ধের দক্ষিন পূর্বাঞ্চলীয় কাউন্সিলের চেয়ারম্যান জহুর আহমেদ চৌধুরী।
এসময় তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, দেশে এখন নির্বাচনী পরিবেশ বিরাজ করছে। মানুষ উৎসব মুখর পরিবেশে ভোট কেন্দ্রে আসবে। তিনি বলেন, আন্দোলনের নামে বিএনপি ধ্বংসাত্মক ও নাশকতা করছে। তাদের ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপে সরকারের কিছুই হবেনা, বিএনপি নিজেই ধ্বংস হয়ে যাবে। এ সময় জেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কমান্ডের আয়োজনে স্থানীয় সুর সম্রাট দি আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন র.আ.ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি। আলোচনা সভায় জেলা আওয়ামীলীগ ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও সর্বস্তরের মুক্তিযোদ্ধারা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে শত্রুমুক্ত করতে ৩০ নভেম্বর থেকে জেলার আখাউড়া সীমান্ত এলাকায় মিত্রবাহিনী পাকবাহিনীর ওপর বেপরোয়া আক্রমণ চালাতে থাকে। ১ ডিসেম্বর আখাউড়া সীমান্ত এলাকায় ২০ পাকিস্তানী সৈন্য নিহত হয়। ৩ ডিসেম্বর আখাউড়ার আজমপুরে প্রচন্ড যুদ্ধ হয়। সেখানে ১১ পাকিস্তানি সৈন্য নিহত হয়। শহীদ হন ৩ মুক্তিযোদ্ধা।
এরই মধ্যে বিজয়নগর উপজেলার মেরাশানী, সিঙ্গারবিল, মুকুন্দপুর, হরষপুর, আখাউড়া উপজেলার আজমপুর, রাজাপুর এলাকা মুক্তিবাহিনীর দখলে চলে আসে।
৪ ডিসেম্বর পাক হানাদাররা পিছু হটতে থাকলে আখাউড়া অনেকটাই শত্রæমুক্ত হয়। এখানে রেলওয়ে স্টেশনের যুদ্ধে পাক বাহিনীর দু’শতাধিক সেনা হতাহত হয়। ৬ ডিসেম্বর আখাউড়া সম্পূর্ণভাবে মুক্ত হয়।
এরপর চলতে থাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া মুক্ত করার প্রস্তুতি। মুক্তিবাহিনীর একটি অংশ কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়ক দিয়ে এবং মিত্রবাহিনীর ৫৭তম মাউন্ট ডিভিশন রেজিমেন্টের সদস্যরা আখাউড়া-ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেললাইন ও উজানিসার সড়ক দিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের দিকে অগ্রসর হতে থাকে। শহরের চারিদিকে মুক্তিবাহিনী অবস্থান নিতে থাকায় ৬ ডিসেম্বর পাক সেনারা পালিয়ে যাওয়ার সময় রাজাকারদের সহায়তায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া কলেজের অধ্যাপক কে.এম লুৎফুর রহমানসহ জেলা কারাগারে আটক অর্ধশত বুদ্ধিজীবী ও সাধারণ মানুষকে চোখ বেঁধে শহরের করুলিয়া খালের পাড়ে নিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে।
৭ ডিসেম্বর রাতের আঁধারে পাকিস্তানীরা ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহর ছেড়ে আশুগঞ্জের দিকে পালাতে থাকে। পরে ৮ ডিসেম্বর কোনও ধরনের প্রতিরোধ ছাড়াই ব্রাহ্মণবাড়িয়া শত্রুমুক্ত হয়।
৮ ডিসেম্বর সকাল ৯টার দিকে মুজিবনগর সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে মুক্তিযুদ্ধের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল যুদ্ধের পরিচালনাকারী জহুর আহমেদ চৌধুরী স্থানীয় পুরাতন কাচারী প্রাঙ্গনে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন। একই দিন সন্ধ্যায় জেলার সরাইল উপজেলা শত্রুমুক্ত হয়।