চলারপথে ডেস্ক :
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার-২০২১ বিজয়ীদের হাতে তুলে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ ৯ মার্চ বৃহস্পতিবার বিকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এ পুরস্কার তুলে দেন তিনি।
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সভাপতিত্বে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০২১ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি রয়েছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি ও সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনায় করছেন দেশের জনপ্রিয় দুই তারকা ফেরদৌস আহমেদ ও নুসরাত ফারিয়া।
চলচ্চিত্র শিল্পে বিশেষ অবদান রাখায় ২০২১ সালের নির্বাচিত সিনেমা থেকে এ বছর ২৭ ক্যাটাগরিতে ৩৪টি পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে।এছাড়া চলচ্চিত্রে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখায় যৌথভাবে এবার আজীবন সম্মাননা পেয়েছেন অভিনেত্রী ডলি জহুর ও অভিনেতা ইলিয়াস কাঞ্চন।
যারা পেলেন পুরস্কার: শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র যৌথভাবে হয়েছে মাতিয়া বানু শুকু (লাল মোরগের ঝুঁটি) ও রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিত (নোনাজলের কাব্য)। শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র পরিচালক রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিত (নোনাজলের কাব্য), শ্রেষ্ঠ অভিনেতা যৌথভাবে মো. সিয়াম আহমেদ (মৃধা বনাম মৃধা) ও মীর সাব্বির মাহমুদ (রাতজাগা ফুল), শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী যৌথভাবে আজমেরী হক বাঁধন (রেহানা মরিয়ম নূর) ও তাসনোভা তামান্না (নোনাজলের কাব্য), শ্রেষ্ঠ অভিনেতা পার্শ্ব চরিত্রে এম ফজলুর রহমান বাবু (নোনাজলের কাব্য), শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী পার্শ্ব চরিত্রে শম্পা রেজা (পদ্মপুরাণ), শ্রেষ্ঠ অভিনেতা খল চরিত্রে মো. আবদুল মান্নান জয়রাজ (লাল মোরগের ঝুঁটি)।
শ্রেষ্ঠ অভিনেতা কৌতুক চরিত্রে প্রভাষ কুমার ভট্টাচার্য্য মিলন (মৃধা বনাম মৃধা), শ্রেষ্ঠ শিশুশিল্পী আফিয়া তাবাসসুম (রেহানা মরিয়ম নূর), শিশুশিল্পী শাখায় বিশেষ পুরস্কার জান্নাতুল মাওয়া ঝিলিক (যা হারিয়ে যায়)।
শ্রেষ্ঠ সংগীত পরিচালক সুজেয় শ্যাম (যৈবতী কন্যার মন), শ্রেষ্ঠ গায়ক কে এম আবদুল্লাহ-আল-মুর্তজা মুহিন (শোনাতে এসেছি আজ-পদ্মপুরাণ), শ্রেষ্ঠ গায়িকা চন্দনা মজুমদার (দেখলে ছবি পাগল হবি-পদ্মপুরাণ), শ্রেষ্ঠ গীতিকার প্রয়াত গাজী মাজহারুল আনোয়ার (অন্তরে অন্তর জ্বালা-যৈবতী কন্যার মন), শ্রেষ্ঠ সুরকার সুজেয় শ্যাম (অন্তরে অন্তর জ্বালা-যৈবতী কন্যার মন)।
শ্রেষ্ঠ কাহিনিকার রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিত (নোনাজলের কাব্য), শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যকার নূরুল আলম আতিক (লাল মোরগের ঝুঁটি), শ্রেষ্ঠ সংলাপ রচয়িতা তৌকীর আহমেদ (স্ফুলিঙ্গ)।
শ্রেষ্ঠ সম্পাদক সামির আহমেদ (লাল মোরগের ঝুঁটি), শ্রেষ্ঠ শিল্প নির্দেশক শিহাব নূরুন নবী (নোনাজলের কাব্য), শ্রেষ্ঠ চিত্রগ্রাহক দলগত-সৈয়দ কাশেফ শাহবাজি, সুমন কুমার সরকার, মাজহারুল ইসলাম রাজু (লাল মোরগের ঝুঁটি), শ্রেষ্ঠ শব্দগ্রাহক শৈব তালুকদার (রেহানা মরিয়ম নূর), শ্রেষ্ঠ পোশাক ও সাজসজ্জা ইদিলা কাছরিন ফরিদ (নোনাজলের কাব্য)। শ্রেষ্ঠ মেক-আপম্যান দলগত- মো. ফারুখ, মো. ফরহাদ রেজা মিলন (লাল মোরগের ঝুঁটি)।
শ্রেষ্ঠ স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র আকা রেজা গালিব (ধর), শ্রেষ্ঠ প্রামাণ্য চলচ্চিত্র কাওসার চৌধুরী (বধ্যভূমিতে একদিন)।
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার দেওয়ার জন্য গত বছরের ১৬ আগস্ট তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় ১৩ সদস্যের জুরি বোর্ড গঠন করে। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের জন্য ২০২১ সালের মুক্তিপ্রাপ্ত ২১টি পূর্ণদের্ঘ্য, ১৭টি স্বল্পদৈর্ঘ্য ও ৭টি প্রামাণ্য চলচ্চিত্রসহ মোট ৪৫টি চলচ্চিত্র জমা পড়েছিল।
চলারপথে রিপোর্ট :
আগামী নির্বাচন বর্জন করলে বিএনপি গুরুত্বহীন দলে রূপান্তরিত হবে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
আজ ৯ এপ্রিল রবিবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে টেলিভিশন ক্যামেরা জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন (টিসিএ) আয়োজিত ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমরা চাই আগামী নির্বাচনে বিএনপিসহ সব রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করুক। দেশের গণতন্ত্র সংহত হোক।
আওয়ামী লীগের এ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপির জন্য অত্যন্ত দুঃখজনক যে, দেশে যখন জাতীয় সংসদের ৫০ বছর পূর্তি হচ্ছে, তখন তারা সংসদে নেই। আসলে তারা পার্লামেন্টারি ডেমোক্রেসি বা সংসদীয় গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। সে কারণে তারা সংসদে থাকলেও কিছুদিন আগে পদত্যাগ করেছে।
হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি ভেবেছিল তারা সংসদ থেকে পদত্যাগ করলে সরকারের মধ্যে ঝাঁকুনি লাগবে, সরকার কাঁপবে, পড়ে যাবে। কিন্তু সরকারের কিছুই হয়নি, একটু কাতুকুতু লেগেছে, এর বেশি কিছু না।
তথ্যমন্ত্রী এসময় ক্যামেরা সাংবাদিকসহ সব সাংবাদিকের কাজকে রাষ্ট্র ও সমাজের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, গণমাধ্যম রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ। এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবার আন্তরিক কাজের মধ্যদিয়ে দেশ এগিয়ে যাবে।
টিসিএ সভাপতি শেখ মাহবুব আলমের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শহিদুল হক জীবনের সঞ্চালনায় সভায় আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ কাদের খান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, এশিয়ান টিভির চেয়ারম্যান হারুন অর রশীদ বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন।
চলারপথে ডেস্ক :
আজ ২৪ এপ্রিল সোমবার বেলা ১১টার দিকে রাজধানীতে অবস্থিত বঙ্গভবনের দরবার হলে বাংলাদেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেন মো. সাহাবুদ্দিন। চেয়ার বদলের মাধ্যমে এদিন রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পদে দায়িত্ব নেন তিনি। তাকে শপথ পড়ান বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, জাতীয় সংসদ সদস্য, প্রধান নির্বাচন কমিশনার, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি, রাজনৈতিক দলের বিভিন্ন নেতা, তিন বাহিনীর প্রধান, কূটনীতিক, বিভিন্ন গণমাধ্যমের সম্পাদকসহ জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক এবং পদস্থ বেসামরিক ও সামরিক।
শপথ অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন নতুন রাষ্ট্রপতির স্ত্রী ড. রেবেকা সুলতানা ও ছেলে আরশাদ আদনান রনিসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা।
শপথ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন। আর শপথ অনুষ্ঠান আয়োজন করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের আপন বিভাগ।
এই শপথের মধ্যে দিয়ে রাষ্ট্রপতি হিসেবে টানা দুই বারের মেয়াদ শেষ হলো আবদুল হামিদের। তিনিই বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি দিন দায়িত্ব পালন করা রাষ্ট্রপ্রধান।
সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমানের মৃত্যুর পর ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি হিসেবে ৪১ দিনসহ টানা দুই মেয়াদে রাষ্ট্রপতি হিসেবে ১০ বছর ৪১ দিন অতিবাহিত করে বিদায় নেন আবদুল হামিদ।
এদিকে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রপতি পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন সাহাবুদ্দিন।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর থেকে ২১ মেয়াদে এই পদে কয়েকজন একাধিকবার নির্বাচিত হয়েছেন। সেই হিসাবে সাহাবুদ্দিন সপ্তদশ ব্যক্তি, যিনি দায়িত্ব নিলেন।
শপথ বাক্য পাঠের পরে আবদুল হামিদের সঙ্গে করমর্দন করবেন। এরপর চেয়ার বদলের মধ্য দিয়ে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হয়।
বিদায়ী রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ শপথ অনুষ্ঠানের পর ঢাকার নিকুঞ্জ আবাসিক এলাকায় তার বাসভবন প্রেসিডেন্ট প্যালেসে উঠবেন। ২০০০ সালে সংসদ সদস্য হিসেবে তিন কাঠার এই জমি বরাদ্দ পান তিনি। সেখানে কয়েক বছর পর তোলেন বাড়ি।
জানা যায়, নতুন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ১৯৪৯ সালের ১০ ডিসেম্বর পাবনা শহরের শিবরামপুরের জুবিলী ট্যাংক পাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তার ডাক নাম চুপ্পু। পিতা শরফুদ্দিন আনছারী, মাতা খায়রুন্নেসা।
১৯৭৪ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএসসি ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। পরে এলএলবি ও বিসিএস (বিচার) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।
পাবনা এডওয়ার্ড কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক, পাবনা জেলা ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সভাপতি ছিলেন। জেলা বাকশালের যুগ্ম-সম্পাদক ও জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।
সাহাবুদ্দিন ৬৬’র ৬ দফা আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান, সত্তরের নির্বাচন এবং একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন।
পাবনা জেলার আন্দোলন-সংগ্রামে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন তিনি। পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের পর তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ করেন। ওই সময় সামরিক স্বৈরশাসকদের রোষানলে তিন বছর জেল খাটেন এবং অমানুষিক নির্যাতনের শিকার হন।
মো. সাহাবুদ্দিন দৈনিক বাংলার বাণীতে সাংবাদিকতাও করেছেন। তার অনেক কলাম বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে ছাপা হয়েছে।
কর্মজীবনে তিনি জেলা ও দায়রা জজ এবং দুদকের কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক এবং বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে নিযুক্ত সমন্বয়কারী হিসেবেও তিনি দায়িত্ব পালন করেন তিনি। সাহাবুদ্দিন পরপর দুবার বিসিএস (বিচার) অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব নির্বাচিত হন। চাকরি থেকে অবসরের পর হাইকোর্টে আইন পেশায় নিযুক্ত হন।
২০০১ সালের নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা তদন্তে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। দুদক কমিশনার হিসেবে সাহাবুদ্দিন পদ্মা সেতু প্রকল্পের বিরুদ্ধে ওঠা তথাকথিত দুর্নীতির ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় দৃঢ়তার পরিচয় দেন।
সাবেক এ ছাত্রনেতা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এবং কেন্দ্রীয় প্রচার ও প্রকাশনা উপ-কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন সাহাবুদ্দিন।
অনলাইন ডেস্ক :
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার প্রথম পর্বের (বরিশাল, সিলেট, রংপুর বিভাগ) লিখিত পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। লিখিত পরীক্ষায় ৯ হাজার ৩৩৭ জন উত্তীর্ণ হয়েছেন।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট www.mopme.gov.bd এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট www.dpe.gov.bd -তে ফলাফল পাওয়া যাবে। উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীরা মোবাইল ফোনেও মেসেজ পাবেন।
মৌখিক পরীক্ষার তারিখ পরবর্তীতে জানানো হবে। চলতি বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি এ পরীক্ষা সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়।
গত ৮ ডিসেম্বর রংপুর, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের ১৮ জেলায় একযোগে প্রাথমিকে সহকারী শিক্ষক নিয়োগের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এ নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিতে আবেদন ৩ লাখ ৬০ হাজার ৬৯৭ জন।
এদিকে, অনিয়ম-জালিয়াতি এবং হরতাল-অবরোধের মধ্যে পরীক্ষা নেওয়ায় ১ লাখ ৫৮ হাজার প্রার্থী অনুপস্থিত দাবি করে পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন কিছু প্রার্থী। তারা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে লিখিত আবেদন এবং জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচিও করেছেন।
পাশাপাশি ৫৪ জন প্রার্থীর পক্ষে ফাতেমা আক্তার নামে একজন প্রার্থী হাইকোর্টে রিট আবেদন করেছেন। এ রিট নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ফল প্রকাশ ও নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত রাখতে দুই মন্ত্রণালয়সহ ১৩ অধিদপ্তর-দপ্তরে নোটিশও পাঠিয়েছেন। তবে নিয়োগ সংশ্লিষ্টরা এ নোটিশ পাননি বলে জানিয়েছেন।
অনলাইন ডেস্ক :
২১ মে বিশ্ব মেডিটেশন দিবস। এ বছর দেশে দিবসটির প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে- ভালো মানুষ ভালো দেশ, স্বর্গভূমি বাংলাদেশ। মেডিটেশন দিবস উপলক্ষে এবারও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন সারাদেশে ভোর ৬টায় একযোগে বিভিন্ন উন্মুক্ত স্থানে প্রাণায়াম বা দমচর্চা, প্রত্যয়ন পাঠ ও মেডিটেশন চর্চার আয়োজন করেছে। আর এর মধ্য দিয়ে ধ্যানীরা সুস্থতা ও প্রশান্তির বাণী ছড়িয়ে দেবেন।
কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন জানিয়েছে, দেশে দিন দিন মেডিটেশনের জনপ্রিয়তা বাড়ছে। পরিপূর্ণ সুস্থতার জন্য বিদ্যমান চিকিৎসার পাশাপাশি মেডিটেশন যে প্রয়োজন, সেই পরামর্শ এখন চিকিৎসকরা দিচ্ছেন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সম্প্রতি যোগ-মেডিটেশনকে স্বাস্থ্যসেবার পরিপূরক হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করেছে।
সাত বছর আগে উইল উইলিয়ামস নামে এক ব্রিটিশ মেডিটেশন প্রশিক্ষক প্রথম দিবসটি পালনের উদ্যোগ নেন। তিনি ছিলেন অনিদ্রার রোগী। মেডিটেশনের মাধ্যমে নিরাময় লাভের পর এ সম্পর্কে আরও উৎসাহী হয়ে ওঠেন উইলিয়ামস। বাংলাদেশে মেডিটেশন চর্চার ইতিহাসে টানা ৩১ বছর ধরে কাজ করে যাচ্ছে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন। এই চর্চার সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন লাখো মানুষ।
চলারপথে ডেস্ক :
পঞ্চাশ বছরের পথ চলায় জাতীয় সংসদ অনেক ঐতিহাসিক ঘটনার স্বাক্ষী হয়ে আছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সংসদীয় গণতন্ত্রের কেন্দ্রবিন্দু জাতীয় সংসদ অনেক চড়াই-উৎরাইয়ের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিতে ভূমিকা রেখে চলেছে। সরকারের জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার মধ্য দিয়ে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় মহান জাতীয় সংসদ অনন্য ভূমিকা পালন করছে।
আজ ৭ এপ্রিল শুক্রবার জাতীয় সংসদ সংসদের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ১৪৭ বিধিতে (সাধারণ প্রস্তাব) আনা প্রস্তাব উত্থাপনকালে সংসদ নেতা এসব কথা বলেন।
এর আগে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ভাষণ দেন। পরে প্রধানমন্ত্রী প্রস্তাব উত্থাপন করলে তার ওপরে সাধারণ আলোচনায় অংশ নেন প্রথম জাতীয় সংসদের সদস্য ও সরকারি দলের আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ ও শেখ ফজলুল করিম সেলিম।
প্রধানমন্ত্রীর উত্থাপিত প্রস্তাবে বরা হয়, ‘বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের ৫০ বছর পূর্তির এই মাহেন্দ্রক্ষণে সংসদের অভিমত এই যে, বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ সংসদীয় গণতন্ত্রের কেন্দ্রবিন্দুরূপে জনগণের জীবনমান উন্নয়ন এবং আশা আকাঙ্ক্ষার সফল বাস্তবায়নে অব্যাহতভাবে কার্যকর ও সক্রিয় ভূমিকা রাখবে এবং এর মধ্য দিয়ে গণতন্ত্র হবে সুসংহত, শোষণমুক্ত সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে, সকলের জন্য সাম্য ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত হবে, সংবিধানের এ অঙ্গীকারসমূহ পূরণে আমরা সকলে একযোগে কাজ করবো, গড়ে তুলবো আগামীর সুখী, সমৃদ্ধ, উন্নত, ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত স্মার্ট বাংলাদেশ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা- এই হোক আমাদের প্রত্যয়।’
প্রস্তাব উত্থাপনকালে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা জাতির পিতার আদর্শ নিয়ে পথ চলি। তাই ধারাবাহিকভাবে ২০০৮ সালের পরে দেশে গণতন্ত্র অব্যাহত আছে। যার ফলে একটা স্থিতিশীলতা আছে। মাঝে মাঝে আমাদের প্রতিবন্ধকতা, অনেক চড়াই-উৎরাই পার হতে হয়। তারপরও বাংলাদেশকে আমরা এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। আজকে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে, আশা করি ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ এবং জাতির পিতার স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ে উঠবে।’
তিনি বলেন, ৫০ বছরের পথ চলায় জাতীয় সংসদ অনেক ঐতিহাসিক ঘটনার স্বাক্ষী হয়ে আছে। সংসদীয় গণতন্ত্রের কেন্দ্রবিন্দু জাতীয় সংসদ অনেক চড়াই-উৎরাইয়ের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্র এগিয়ে নিতে ভূমিকা রেখে চলেছে। ৫০ বছরের পথপরিক্রমা অনেক ক্ষেত্রেই মসৃণ ছিল না। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালো রাতে জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর বার বার সামরিক ফরমান জারি করে সংবিধানকে ক্ষতবিক্ষত করা হয়েছে। গণতন্ত্র ও জাতীয় সংসদের ওপর আঘাত হেনেছে। অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল সামরিক ও স্বৈরশাসনের পালাবদলের মধ্য দিয়ে সংবিধানের চার মুলনীতিতে আঘাত করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার বন্ধে ১৯৭৯ সালে দ্বিতীয় সংসদে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশকে কালো আইনে পরিণত করা ছিল সংসদীয় ইতিহাসে এক কলঙ্কজনক অধ্যায়। পরবর্তী সময়ে সপ্তম সংসদে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ বাতিলের মধ্য দিয়ে ইতিহাসের নিকৃষ্টতম ও নির্মম হত্যাকাণ্ডের বিচারের পথ সুগম করা হয়।
শেখ হাসিনা বলেন, সরকারের জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার মধ্য দিয়ে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় মহান জাতীয় সংসদ অনন্য ভূমিকা পালন করছে। সংসদের স্থায়ী কমিটিগুলো এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
?প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর মন্ত্রণালয়ের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে স্থায়ী কমিটির সভাপতি পদে মন্ত্রীর পরিবর্তে সদস্যদের নির্বাচিত করা হচ্ছে। বিরোধী দলের সদস্যদের থেকে স্থায়ী কমিটির সভাপতি নির্বাচিত করা হচ্ছে। সিপিএ ও আইপিউতে সভাপতিত্ব ছিল বাংলাদেশের সংসদের প্রতি আন্তর্জাতিক অঙ্গনের আস্থার প্রতীক।
নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশের সংসদ একটি অনন্য দৃষ্টান্ত- একথা উল্লেখ করে সংসদ নেতা বলেন, বর্তমান সংসদে স্পিকার, সংসদ নেতা, সংসদ উপনেতা, বিরোধী দলের নেতা, একজন হুইপ, চারজন স্থায়ী কমিটির সভাপতির ভূমিকা পালন করছেন নারী। জাতীয় রাজনীতিকে নারীদের উৎসাহিত করতে সংসদে নারী আসন ৫০-এ উন্নীত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, গত তিন মেয়াদে জাতীয় সংসদের ধারবাহিক অগ্রযাত্রা, সংসদীয় গণতন্ত্রের স্থায়ীত্ব ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বাংলাদেশের ব্যাপক উন্নয়নের ক্ষেত্র রচনা করেছে। জনগণের জীবনমানের উন্নয়নে আজ বাংলাদেশ বিশ্বের বিস্ময়। দারিদ্র বিমোচন, দুর্যোগ মোকাবিলা, নারীর ক্ষমতায়ন, শিশু মৃত্যুহার হ্রাস ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে বিশ্বে বাংলাদেশ আজ রোল মডেল।
শেখ হাসিনা বলেন, সংসদীয় গণতন্ত্রের মঞ্চ মহান জাতীয় সংসদ সরকারের সামগ্রিক উন্নয়নে অংশীদার এবং সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অর্জনসমূহ সংসদে আলোচনার মাধ্যমে জাতির সামনে উপস্থাপিত হয়।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর সাড়ে তিন বছরের শাসনকালে দেশের জন্য সবচেয়ে বেশি কার্যকর ভূমিকা পালন করেছিলেন বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, একটি বিরল দৃষ্টান্ত জাতির সামনে রেখে গিয়েছিলেন জাতির পিতা যে, ইচ্ছা থাকলে কত দ্রুত একটা দেশকে পুনর্গঠন, পুনর্বাসন এবং উন্নয়ন করা যায়। আজকে তিনি বেঁচে থাকলে বাংলাদেশ অনেক আগেই উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে উঠতো।
আলোচনায় অংশ নিয়ে গণপরিষদ এবং প্রথম জাতীয় সংসদের সদস্য তোফায়েল আহমেদ বলেন, বঙ্গবন্ধু একটি লক্ষ্য নিয়েই রাজনীতি করেছিলেন- দেশের স্বাধীনতা এবং মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর বোন শেখ রেহানা আছেন। বঙ্গবন্ধুকন্যার হাতে আওয়ামী লীগের পতাকা তুলে দেওয়া হয়। সে পতাকা হাতে নিয়ে তিনি যত্ন সহকারে রাষ্ট্র পরিচালনা করছেন।
প্রথম জাতীয় সংসদের আরেক সদস্য আমির হোসেন আমু বলেন, ষড়যন্ত্র নানা দিকে বিস্তৃত। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র দেশের উন্নয়ন ও স্বাধীনতার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র।
তিনি সব ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রগতিশীল শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, তাঁরা একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে এগিয়ে যেতে চান। কিন্তু সেখানে বাধা আছে। যারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছিল, বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিদেশে চাকরি দিয়েছিল তারা বাধা।
সরকারের উন্নয়নের কথা তুলে ধরে সরকারি দলের এই জ্যেষ্ঠ সংসদ সদস্য বলেন, গ্রামের মানুষ এখন একবেলাও অভুক্ত থাকে না। সংসদ সদস্যরা এর সাক্ষী।
শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন, আর যাতে কোনো সামরিক জান্তা ক্ষমতায় আসতে না পারে সেইদিকে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।
সংসদ সদস্যদের আলোচনা শেষে রোববার এই প্রস্তাব গ্রহণ করা হবে।