চলারপথে রিপোর্ট :
বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানি লি. এ কর্মচারী নিয়োগে প্রশ্নপত্র ফাঁস ও ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ আনা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে অবিলম্বে নিয়োগ বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করা হয়েছে।
আজ ১২ মার্চ রবিবার বেলা সাড়ে ১১টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরতলীর বিরাসারে বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানি লি. এর প্রধান কার্যালয়ের সামনে এ কর্মসূচি পালিত হয়। সচেতন ছাত্র সমাজের ব্যানারে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য দেন কাজী খায়রুল আলম, মো. নুরুজ্জামান, আব্দুল আলিম, কাজী নুরুল আমিন আকাশ ও আতাউর রহমান রিপন মিয়া।
এ সময় বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, গ্যাস ফিল্ডস-এর কিছু কর্মকর্তা ২০২১ সালে বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানিতে এ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির আলোকে রাষ্ট্রদ্রোহী ও বিস্ফোরক মামলার আসামিদের অর্থ লেনদেনের মাধ্যমে ও প্রশ্নপত্র ফাঁস করে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন।
তারা আরো বলেন, এ নিয়োগ প্রক্রিয়ায় মুক্তিযোদ্ধাদের কোটা উপেক্ষা করাসহ যোগ্য প্রার্থীদের বঞ্চিত করে কর্মকর্তারা তাদের আত্মীয় স্বজনদের নিয়োগ দিয়েছেন। তারা অবিলম্বে এ নিয়োগ বাতিল করে নতুনভাবে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে স্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়ার দাবি জানান।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানি লি. এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শোয়েব, জিএম ও এডমিন মাহমুদুন নবী মিলনকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তারা ফোন রিসিভ করেননি।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আসামি না পেয়ে এক নারীর মাথায় পিস্তল ঠেকানোর ঘটনায় আদালতে অভিযোগ দিয়েছেন এক ভুক্তভোগী। অভিযোগে ডিবি পুলিশের সদস্য রেজাউল করিমসহ পাঁচজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া ডিবি পুলিশের সঙ্গীয় অজ্ঞাতনামা আরও আটজনকে আসামি করা হয়।
আজ ১৩ মে সোমবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ১ আদালতের বিচারক বেগম আফরিন আহমেদ হ্যাপীর বরাবর অভিযোগটি জমা দেন ভোক্তভোগী বন্যা বেগম।
আদালতে জমা দেওয়া অভিযোগে সদর উপজেলার চান্দিয়ারা এলাকার এনামুল হক, একই এলাকার তার স্বজন সামসুল ইসলাম ও তাজুল ইসলাম ও ভাই মো. সাগর এবং ঘটনার প্রধান অভিযুক্ত জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) রেজাউল করিমসহ ডিবি পুলিশের সঙ্গীয় অজ্ঞাতনামা আরও ৮ জনকে আসামি করা হয়।
জানা গেছে, গত শুক্রবার বিকেলে আসামি গ্রেপ্তার করতে সদর উপজেলার থলিয়ারা গ্রামের বাসিন্দা ও সৌদিপ্রবাসী নূরুল আলমের বাড়িতে অভিযান চালায় ডিবি পুলিশ। আসামি নুরুল ইসলামকে না পেয়ে বাড়ির নারী ও শিশুদের মারধরসহ একপর্যায়ে ডিবির সদস্য রেজাউল করিম আসামির স্ত্রী বন্যা বেগমের মাথায় পিস্তল ঠেকান বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বিশেষ) মো. জয়নাল আবেদীনকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে পুলিশ। তদন্ত কমিটির অপর দুই সদস্য হলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. বিল্লাল হোসেন ও পুলিশ পরিদর্শক (অপরাধ) হাবিবুল্লাহ সরকার।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, নুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে ৪০৬ ও ৪২০ ধারায় দায়ের করা মমালার বাদী এনামুল হক, তার আত্মীয় সামছুল ইসলাম ও তাজুল ইসলাম এবং ভাই মো. সাগর সঙ্গে পুলিশকে নিয়ে ভূক্তভোগীর বাড়িতে অভিযান চালায়। অভিযানে বাড়িতে ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে আসামি নুরুলের স্ত্রী বন্যা বেগম (৩৩) ও তার নয় বছর বয়সী মেয়েকে মারধর করে। এক পর্যায়ে বন্যার মাথায় বন্দুক তাক করেন। দুটি গুলিও করে ডিবি সদস্যরা।
বন্যা বেগমের আইনজীবী মো. শওকত আলী বলেন, সোমবার ভুক্তভোগী বন্যা বেগমের বাড়িতে ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করা, শিশুসহ কয়েকজনকে মারধর দুটি গুলি করেছেন ইত্যাদি উল্লেখ করে এজাহার আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে। তবে এই এজাহারের বিষয়ে আদালতে কোনো শুনানি হয়নি।
চলারপথে রিপোর্ট :
আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩-(সদর-বিজয়নগর) আসনে আওয়ামীলীগের মনোনীত প্রার্থী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা র.আ.ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি বলেছেন, আগামী ৭ জানুয়ারির নির্বাচন হচ্ছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন। আমি আপনাদেরকে অনুরোধ করব আপনারা ভোট কেন্দ্রে যাবেন এবং আপনাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।
আজ ২১ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার সকালে শহরের কাউতলী কাঁচা বাজার ও মৌড়াইল বৌ-বাজারে গণসংযোগকালে তিনি এসব কথা বলেন।
গণ সংযোগকালে র.আ.ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের আমলে সারা দেশে সকল সেক্টরে অভাবনীয় উন্নয়ন হয়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকান্ড বাস্তবায়িত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়ন কর্মকান্ড আপনাদের চোখের সামনে দৃশ্যমান। এটা দেখে বিচার-বিবেচনা করে এবং আগামী দিনে যাতে শেখ হাসিনা আবারো সরকার গঠন করতে পারে সেই বিবেচনা করে আপনারা ভোট দিবেন।
তিনি বলেন, আমি দাবি করব, আপনারা উন্নয়নের পক্ষে ভোট দিবেন। নৌকা মার্কায় ভোট দিবেন। ভোট আপনাদের পবিত্র আমানত। আপনারা চিন্তা-ভাবনা করে ভোট দিবেন।
র.আ.ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি বলেন, আমি মনে করি, আমি একজন দুধের ফেরিওয়ালা, বাজারে গেলে আপনার দুধই কেনা উচিত। দুধ ছাড়া পঁচা-দুর্গন্ধযুক্ত জিনিসের দিকে নিশ্চয়ই আপনাদের নজর যাবে না।
তিনি বলেন, নির্বাচনে অনেকেই প্রতিদ্ব›িদ্বতা করছেন। কোন প্রার্থী সম্পর্কে আমি কোন কথা বলবোনা। বিবেচনা আপনাদের, বিচার আপনাদের। তিনি বলেন, আমি কোনো দিন আপনাদের প্রতি কোন ধরনের অন্যায় করিনি। আপনাদের কোনো ক্ষতি করিনি। এই কথাটি আপনারা একটু মনে রাখবেন। আমার সাধ্য অনুযায়ী ও আল্লাহতায়ালার ইচ্ছায় যতটা পেরেছি মানুষের জন্য কাজ করেছি। আপনারা দেশের উন্নয়ন -অগ্রগতির ধারা অব্যাহত রাখতে আবারো নৌকা মার্কাকে বিজয়ী করবেন।এ সময় জেলা আওয়ামীলীগ ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা তাঁর সাথে ছিলেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক হেলথ এন্ড মেডিকেল সোসাইটি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখার পরিচিতি সভা ও অভিষেক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত।
আজ ৪ নভেম্বর শনিবার দুপুর ২ টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া মসজিদ রোডে অবস্থিত ক্বারী চাইনিজ হোটেল এন্ড রেষ্টুরেন্টের অডিটোরিয়ামে এ অভিষেক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা হোমিওপ্যাথিক হেলথ এন্ড মেডিকেল সোসাইটির সভাপতি ডাঃ মোঃ মোকলেছুর রহমানের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক ডা. এম. নাঈমুর রহমান ও কার্যকরি সদস্য মোহাম্মদ জামাল হোসেন পান্নার যৌথ সঞ্চালনায় এতে প্রধান অতিথি ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাড. মাহবুবুল আলম খোকন।
বিশেষ অতিথি ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবের সাবেক সহ-সভাপতি মোঃ ইব্রাহিম খান সাদাত, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা হোমিওপ্যাথিক হেলথ এন্ড মেডিকেল সোসাইটির উপদেষ্টা এড. কামরুল ইসলাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোঃ জসিম উদ্দিন রানা, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার স্বনামধন্য ডাঃ মেরাজুল ইসলাম অভিষেক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা হোমিওপ্যাথিক হেলথ এন্ড মেডিকেল সোসাইটির সিনিয়র সহ-সভাপতি ডাঃ মাও. নুরুজ্জামান, সাংগঠনিক সম্পাদক ডাঃ মুমিনুল ইসলাম, কার্যকরি সদস্য ডাঃ ফাতেমা তোজ্জোখরা প্রমুখ।
বক্তাগণ গত ২ নভেম্বর জাতীয় সংসদে বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা শিক্ষা বিল-২০২৩ পাস করায় প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা, স্বাস্থ্য মন্ত্রী জাহিদ মালেক ও হোমিওপ্যাথিক বোর্ড চেয়ারম্যান ডা. দিলীপ রায় সহ সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।
এছাড়াও বক্তগণ হোমিওপ্যাথিক ডাক্তারদের এক্য ও কল্যাণের লক্ষ্যে কাজ করার জন্য সকলের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান।
পবিত্র কুরআন থেকে তেলোয়াত করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা হোমিওপ্যাথিক হেলথ এন্ড মেডিকেল সোসাইটির দপ্তর সম্পাদক ডাঃ মুফতী সাইফুল ইসলাম শাওন।
চলারপথে রিপোর্ট :
যথাযোগ্য মর্যাদায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মহান বিজয় দিবস পালিত হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হয়। আজ ১৬ ডিসেম্বর শনিবার সূর্যোদয়ের সাথে সাথে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসটি শুভ সূচনা হয়। একই সময়ে শহরের ফারুকী পার্কে অবস্থিত স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তক অর্পনের মাধ্যমে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
প্রথমেই স্মৃতি সৌধে পুষ্পস্তবক অর্পন করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য ও বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি ও জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি র.আ.ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী।
পরে জেলা প্রশাসনের পক্ষে নবাগত জেলা প্রশাসক মোঃ হাবিবুর রহমান, জেলা পুলিশের পক্ষে পুলিশ সুপার মোঃ শাখাওয়াত হোসেন, জেলা পরিষদের পক্ষে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এম.এম. মাহমুদুর রহমান, পৌর সভার পক্ষে মেয়র মিসেস নায়ার কবির।
পরে পুলিশের একটি চৌকস দল শহীদদের স্মরণে গার্ড অব অনার প্রদান করে। এ সময় বিউগলে করুন সুর বেজে উঠে।
এর পর স্মৃতিসৌধ উম্মুক্ত করে দিলে পুষ্পস্তবক অর্পন করেন জেলা আওয়ামীলীগ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাব, বাংণাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ইউনিট, সড়ক ও জনপথ বিভাগ, এলজিইডিসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও পেশাজীবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
সকাল ৮টায় জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে স্থানীয় নিয়াজ মুহাম্মদ স্টেডিয়ামে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন জেলা প্রশাসক মোঃ হাবিবুর রহমান। পরে কুচকাওয়াজ, ডিসপ্লে, ঐতিহ্যবাহী লাঠিখেলা, মোরগ লড়াই, কারাতে, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা দেয়া হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
আশুগঞ্জ-আখাউড়া নির্মাণাধীন মহাসড়কের ফোরলের প্রকল্পের কাজ বন্ধ হয়ে গেছে। গত ৫ আগষ্ট পদত্যাগ করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশত্যাগের পর প্রকল্পের নির্মাণ কাজ ফেলে চলে যায় প্রকল্পে কর্মরত ভারতীয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শ্রমিকেরা। এতে করে বন্ধ হয়ে গেছে ফোরলেন প্রকল্পের কাজ। এই অবস্থায় খানাখন্দে ভরপুর চট্টগ্রাম-সিলেট ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়া অংশে যানবাহন চলাচলে বেড়েছে ভোগান্তি। বর্তমানে তা চরম আকার ধারণ করেছে।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, এই প্রকল্পের কাজ আবার কবে নাগাদ শুরু হবে তা এখনই নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ২০১৭ সালে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) অনুমোদন হওয়ার পর ভারতীয় নমনীয় ঋন এলওসির অধীনে ২০১৮ সালে তিনটি প্যাকেজে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ থেকে আখাউড়া পর্যন্ত দুইলেন থেকে মহাসড়কটি চারলেনে উন্নয়ন কাজ শুরু করে ভারতীয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এফকনস ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড। প্রকল্পটির কাজ শুরুর পর গত ২০১৯ এবং ২০২০ সালে করোনা মহামারির কারণে প্রকল্পটির কাজ অনেকটাই থমকে যায়। পরবর্তীতে বালু সংকটের কারণে আরো ৬মাস বিলম্ব হয় প্রকল্পের নির্মান কাজের। এরই মধ্যে গত ২০২২ সালে প্রকল্পটির কাজ পুরোদমে এগিয়ে চলছিল। এর মধ্যে প্যাকেজ-১ এর অধীনে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের আশুগঞ্জের গোল চত্বর থেকে বিশ্বরোড মোড় পর্যন্ত একপাশের দুই লেনের কাজ পুরোপুরি শেষ হয়েছে।
প্যাকেজ-২ এর অধীনে বিশ্বরোড থেকে ধরখার পর্যন্ত এক পাশের কাজ অনেকাংশেই শেষ হয়েছে। তবে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহর বাইপাস, ঘাটুরা বিরাসার, পৈরতলা, রাধিকা ও উজানিসার এলাকায় মহাসড়কের একপাশে খানাখন্দ থাকায় অনেকটা ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে যানবাহন। এতে সৃষ্টি হচ্ছে তীব্র যানজট। এতে করে সড়কটি দিয়ে চলাচলরত যানবাহন, চালক এবং যাত্রীদের ভোগান্তির শেষ নেই।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার নাটাই উত্তর ইউনিয়নের বটতলী গ্রামের বাসিন্দা মোঃ আল আমিন জানান, আখাউড়া-আশুগঞ্জ সড়কটির ব্রাহ্মণবাড়িয়া অংশের কাজ বন্ধ থাকায় যানবাহনের চালক, যাত্রী এবং স্থানীয়রা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। খানাখন্দ সড়কের কারণে প্রতিনিই ঘাটুরা, বিরাসার, পৈরতলা, পুনিয়াউট, রাধিকা এলাকায় যানজট লেগে থাকে। এতে করে যাত্রীরা ঘন্টার পর ঘন্টা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
অন্যদিকে সড়কের তীব্র ধুলার কারণে আশপাশের বাসা বাড়ি সহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ক্রেতা সংকটে অনেকটাই লাটে উঠেছে। তিনি দ্রুত এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেয়ার জন্যে সরকারের প্রতি দাবি জানান।
পরিবহন চালক আলমগীর মিয়া বলেন, নির্মাণাধীন সড়কটি দিয়ে যানবাহন চালাতে গিয়ে ভোগান্তিতে পড়তে হয়। ঘন্টার পর ঘন্টা যানজটে পড়ে থাকার পাশাপাশি যানবাহনের নাট-বল্টু, চাকা, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সড়কটি যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে গেছে। তিনি সড়কটির কাজ দ্রুত শেষ করার দাবি জানান।
এ ব্যাপারে আখাউড়া-আশুগঞ্জ ফোরলেন প্রকল্পের ব্যবস্থাপক মোঃ শামীম আহমেদ জানান, আশুগঞ্জ থেকে আখাউড়া পর্যন্ত চারলেন প্রকল্পটি তিনটি প্যাকেজে বাস্তবায়ন হচ্ছিল। তিনটি প্যাকেজেই ঠিকাদার ছিলেন ভারতের এফকনস ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড। দেশের চলমান পরিস্থিতিতে ভারতীয়রা তাদের হাইকমিশনে নিরাপত্তার কথা বলে সবাই দেশে চলে গেছেন। তারা কবে ফিরে আসবে এ ব্যাপারে কিছুই জানায়নি তারা। শ্রমিকরা চলে যাবার পর থেকে আমাদের প্রকল্পের কাজ পুরোপুরি বন্ধ আছে। কবে চালু হবে আমরা তা এখন বলতে পারছি না। চলমান দুইটি প্যাকেজের মধ্যে প্রায় সাড়ে তিনশত ভারতীয় লোক কাজ করতো। বর্তমানে তাদের মধ্যে একজনও বাংলাদেশে নেই।
তিনি আরো জানান, আমাদের প্যাকেজ-১ এর আশুগঞ্জ থেকে বিশ্বরোড পর্যন্ত মহাসড়কের ৬২ শতাংশ এবং বিশ্বরোড থেকে ধরখার বাজার পর্যন্ত ৫২ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। পুরো কাজ যেহেতু ভারতীয় ঠিকাদারের অধীনে ছিল, তাই রাস্তার বর্তমানে মেরামতের দায়িত্বও তাদের ছিল। যেহেতু তারা নেই, তাই রাস্তা মেরামত করার মত জনবল বা যন্ত্রপাতি আমাদের হাতে নেই। আমরা রাজস্ব খাত থেকে টাকা দিয়ে মানুষের ভোগান্তি কমানোর জন্য চেষ্টা করছি। আশা করছি দ্রুতই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসবে উপর থেকে।
প্রকল্প ব্যবস্থাপক মোঃ শামীম আহমেদ আরো বলেন, গত ৫ আগষ্ট পদত্যাগ করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশত্যাগের পর নির্মানাধীন প্রকল্পটির ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ৩৬০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শ্রমিক চলে যাওয়ার পর প্রকল্পের মূল্যবান জিনিসপত্র চুরি হচ্ছে। আমরা চুরি ঠেকানোর জন্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তা নিয়েও চুরি ঠেকাতে পারছিনা। তিনি এই প্রকল্পের ভবিষ্যৎ নিয়ে শংঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
উল্লেখ্য, আখাউড়া থেকে আশুগঞ্জ পর্যন্ত ৫১ কিলোমিটার ফোরলেন প্রকল্পটিতে একটি উড়াল সেতুসহ ১৬টি ব্রীজ-কালভার্ট রয়েছে। প্রকল্পের নির্মান ব্যয় ধরা হয়েছে ৫ হাজার ৮৯১ কোটি টাকা।