চলারপথে রিপোর্ট :
বিশ্ব ভোক্তা অধিকার দিবস ১৫ মার্চ। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও দিবসটি পালন করা হচ্ছে। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘নিরাপদ জ্বালানি, ভোক্তাবান্ধব পৃথিবী’।
১৯৬২ সালের ১৫ মার্চ মার্কিন প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডির উদ্যোগে মার্কিন কংগ্রেসে ক্রেতা-ভোক্তার স্বার্থে চারটি অধিকার স্বীকৃতি লাভ করে। মার্কিন কংগ্রেসে ক্রেতা-ভোক্তা আন্দোলনের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতির ঐতিহাসিক দিনটি স্মরণে প্রতিবছর ১৫ মার্চ পালিত হয় বিশ্ব ভোক্তা অধিকার দিবস।
১৯৮৫ সালে জাতিসংঘের মাধ্যমে জাতিসংঘ ভোক্তা অধিকার রক্ষার নীতিমালায় কেনেডি বর্ণিত চারটি মৌলিক অধিকারকে বিস্তৃত করে অতিরিক্ত আরো আটটি মৌলিক অধিকার সংযুক্ত করা হয়।
বিশ্বজুড়ে ১১৫টি দেশে ২২০টি ভোক্তা অধিকার সংগঠন দিবসটি পালন করে থাকে।
অনলাইন ডেস্ক :
অনলাইনে প্রেম, এরপর প্রেমিকার সাথে দেখা করতে অবৈধভাবে বাংলাদেশে এসে ধরা পড়ে ৩ বছর কারাভোগ। প্রেমের জন্য এমন ইতিহাস এ কালের। কারাভোগ শেষে আফফান শেখকে ২৫ মে বৃহস্পতিবার দুপুর ১টার দিকে চুয়াডাঙ্গার দর্শনা সীমান্তে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে তাকে ফেরত দেওয়া হয়।
বাংলাদেশের কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর থানার একটি মেয়ের সাথে মোবাইলে আনলাইনে প্রেম হয় ভারতের পম্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার জলংঙ্গি থানার কলেজ ছাত্র আফফান শেখ্রে। এরপর প্রেমিকার সাথে দেখা করতে অবৈধভাবে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে আসে আফফান শেখ। ফিরে যাবার সময় ধরা পড়ে বিজিবির হাতে। অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে ৩ মাসের জেল হয় তার। এরপর বন্দি ফেরত প্রক্রিয়ার আইনি জটিলতায় ৩ বছর জেলে থাকতে হয় তার।
আফফান শেখ ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার জলংঙ্গি থানার সরকার পাড়া গ্রামের ইসমাইল শেখের ছেলে।
এ সময় আফফান শেখ বলেন, ‘আসলে অনলাইন প্রেম একটি আবেগ আর প্রতারনা। আমার জীবন থেকে ৩টি বছর ঝরে গেল। আমি আমার প্রেমিকার সাথে দেখা করে ফিরে যাবার সময় তার ভাইয়েরা আমাকে বিজিবির হাতে ধরিয়ে দেয়। আমার মতো কেউ যেন এভাবে ফাঁদে না পড়ে আর অবৈধভাবে কেউ যেন বাংলাদেশে না আসে।’
আফফান শেখের বাবা ঈসমাঈল শেখ বলেন, ‘আমি ফার্নিচার মিস্ত্রী। ফার্নিচারের নকশা কাটি। ছেলে আমার কলেজে বিএ পড়তো। আমাকে হাতের কাজে সাহায্যও করতো। হঠাৎ একদিন বাংলাদেশে চলে আসে। ধরা পড়ে বিজিবির হাতে। বিজিবি আমাকে ফোন দিয়ে জানায়। এরপর অনেক চেষ্টা করে হাই কমিশনে দৌঁড়াদৌড়ি করে আজকে ছেলেকে ফেরত পেলাম। আমার বুকের ধন বুকে ফিরে এসেছে।কি যে ভাল লাগছে বোঝাতে পারব না।’
চুয়াডাঙ্গার দর্শনা ইমিগ্রেশনের অফিসার ইনচার্জ আবু নাঈম জানান, ২০২০ সালের ১১ সেপ্টেম্বর কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর থানার সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে অবৈধভাবে বাংলাদেশে প্রবেশ করার কারণে বিজিবি তাকে আটক করে দৌলতপুর থানায় সোপর্দ করেন। দৌলতপুর থানা পুলিশ মামলা দায়ের করে আদালতে পাঠালে আদালত আফফান শেখকে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন।
কুষ্টিয়া জেলা কারাগারে সাজা ভোগ শেষে দর্শনা সীমান্তে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স (বিএসএফ)’র পতাকা বৈঠকের পর তাকে ভারতে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
দর্শনা আইসিপি বিজিবি ক্যাম্প কমান্ডার নায়েব সুবেদার আব্দুল জলিল ও গেদে বিএসএফ ক্যাম্প কমান্ডার এসি মহেশ পোদ্দারের নের্তৃত্বে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে তাকে দর্শনা সীমান্ত দিয়ে ভারতে ফেরত পাঠানো হয়। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা দর্শনা ইমিগ্রেশনের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবু নাঈম, গেদে ইমিগ্রেশন ইনচার্জ গোপাল চন্দ্র , গেঁেদ কাস্টমস ইনচার্জ সুব্রত মন্ডল, দর্শনা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) স্বপন কুমার, কৃষ্ণগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সুমন কুমার ঘোষ, ডিএসবি কামাল হোসেন, এনজিও কর্মী চিত্ত রঞ্জনসহ আফফান শেখের পরিবারের লোকজন।
চলারপথে রিপোর্ট :
পাবনার ঈশ্বরদীতে বাস-ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছেন আরো ১০ জন। আজ ১৫ জুলাই শনিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে পাবনা-রাজশাহী মহাসড়কের মুলাডুলি আমতলা নামক স্থানে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত বাসের হেলপার ভরত চন্দ্র সরকার রাজশাহী জেলার পুঠিয়া উপজেলার কৃষ্ণপুর গ্রামের নারায়ণ চন্দ্র সরকারের ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, সকালে রাজশাহী থেকে রাব্বি পরিবহন নামে একটি যাত্রীবাহী বাস পাবনার দিকে যাচ্ছিল। একই সময়ে বিপরীতমুখী দ্রুতগামী একটি ট্রাক নাটোরে দিকে যাচ্ছিল। মুলাডুলি আমতলা অতিক্রমকালে মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় ঘটনাস্থলে বাসের হেলপার নিহত হয়।
পাকশী হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশীষ কুমার স্যানাল বলেন, খবর পাওয়ার পরপরই পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা সেখানে উপস্থিত হয়ে উদ্ধার অভিযান শুরু করে। আহতদের ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন এলাকায় চিকিৎসা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ ব্যাপারে পাবনার পাকশী হাইওয়ে থানায় একটি মামলার প্রস্তুতি চলছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
আজ ৬ সেপ্টেম্বর ‘সুরসম্রাট’ ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর ৫২তম মৃত্যুবার্ষিকী। তিনিই প্রথম বাঙালি, যিনি সর্বপ্রথম পাশ্চাত্যে উপমহাদেশের রাগসঙ্গীতকে পরিচিত করান।
ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ ১৮৬২ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার শিবপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন খ্যাতনামা উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতশিল্পী ও সরোদবিশারদ। বাবা সঙ্গীতজ্ঞ সবদর হোসেন খাঁ ওরফে সদু খাঁ, মা সুন্দরী বেগম। ছোটবেলায় তার বড় ভাই ফকির (তাপস) আফতাব উদ্দিন খাঁর কাছে সঙ্গীতের হাতেখড়ি। সুরের সন্ধানে মাত্র ১০ বছর বয়সে বাড়ি থেকে পালিয়ে এক যাত্রাদলে যোগ দিয়ে ঘুরে বেড়ান গ্রামে গ্রামে। ওই সময় তিনি জারি-সারি, বাউল, ভাটিয়ালি, কীর্তন, পাঁচালি প্রভৃতি গানের সাথে পরিচিত হন। পরে কলকাতায় গিয়ে প্রখ্যাত সঙ্গীত সাধক গোপাল কৃষ্ণ ভট্টাচার্য ওরফে নুলো গোপালের শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন। বাঁশি, পিকলু, সেতার, ম্যান্ডোলিন, বেঞ্জো ইত্যাদি বাদ্যযন্ত্র বাজানো শেখেন সঙ্গীত পরিচালক অমৃত লাল দত্ত ওরফে হাবু দত্তের কাছে। সেই সাথে তিনি লবো সাহেব নামে এক গোয়ানিজ ব্যান্ডমাস্টারের কাছে পাশ্চাত্য রীতিতে এবং বিশিষ্ট সঙ্গীতজ্ঞ অমর দাসের কাছে দেশীয় পদ্ধতিতে বেহালা শেখেন। এ ছাড়া হাজারী ওস্তাদের কাছে শেখেন মৃদঙ্গ ও তবলা। ১৯১৮ সালের পর তিনি ভারতে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন।
ব্রিটিশ সরকার তাকে ‘খাঁ সাহেব’ উপাধিতে ভূষিত করে। আলাউদ্দিন খাঁ ১৯৭২ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ভারতের মাইহারে মদিনা ভবনে মারা যান। রাষ্ট্রীয়ভাবে ভারতে তার মৃত্যুবার্ষিকী পালন করা হয়। বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয়ভাবে ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর জন্ম কিংবা মৃত্যু কোনো দিবসই পালন করা হয় না। অপর দিকে তার স্মৃতিচিহ্নগুলো সংরক্ষণের কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। ফলে নামে-বেনামে বেদখল হয়ে যাচ্ছে জমিজমা, বাড়িঘর, নিজ হাতে তৈরি করা মসজিদের জায়গা ও পুকুর। সবমিলিয়ে নিজ জন্মভূমিতেই অবহেলিত উপমহাদেশের সঙ্গীতজগতের কিংবদন্তি ‘সুরসম্রাট’ খ্যাত ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ।
চলারপথে রিপোট
নোয়াখালী কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাটে অনিয়মের অভিযোগে পাঁচ ফার্মেসিকে জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। আজ ৪ সেপ্টেম্বর সোমবার দুপুরে উপজেলার বসুরহাট বাজারের কলেজরোড ও হাসপাতাল গেইট এলাকায় উপজেলা কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট পিয়াস চন্দ্র দাসের নেতৃত্বে এ অভিযান চালানো হয়।
ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা যায, দুপুরের দিকে উপজেলার বসুরহাট বাজারের কলেজরোড ও হাসপাতাল গেইট এলাকার বিভিন্ন ওষুধ দোকানে অভিযান চালায় ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময় ড্রাগ লাইসেন্স না থাকা, মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ রাখা, ফিজিশিয়ান স্যাম্পল বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে মজুদ রাখা, অনিবন্ধিত ওষুধ মজুদ রাখা, খুচরা মূল্যে ঘষামাজা করার অপরাধে ৫ টি ফার্মেসি দোকারদারকে ১ লাখ ৩৫হাজার টাকা জরিমানা করা হয় এবং তাৎক্ষণিক আদায় হয়। অভিযান পরিচালনায় সহযোগিতা করেন ড্রাগ সুপার নোয়াখালী ও কোম্পানীগঞ্জ থানা পুলিশের একটি দল।
চলারপথে রিপোর্ট :
৭ মার্চ বাঙালির স্বাধীনতা সংগ্রামের একটি ঐতিহাসিক দিন। স্বাধীনতা সংগ্রামের চূড়ান্ত পর্যায়ে এসে ১৯৭১ সালের এদিনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালি জাতিকে মুক্তিযুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হওয়ার নির্দেশ দেন।
মুক্তিযুদ্ধ অবশ্যম্ভাবী এবং যে কোনো সময় জাতিকে অস্ত্র হাতে শত্রুর বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামতে হবে ৭ মার্চের ভাষণের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধু সেটা স্পষ্ট করেছিলেন।
আজ বৃহস্পতিবার সেই ঐতিহাসিক ৭ মার্চ।
পরাধীনতা থেকে বাঙালি জাতির মুক্তি এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণটি এক অনন্য সাধারণ ও তাৎপর্যপূর্ণ। এ ভাষণের মধ্যে বঙ্গবন্ধু স্পষ্টভাবেই বাংলাদেশের স্বাধীনতা শব্দটি উচ্চারণ করেছিলেন এবং মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে সেই স্বাধীনতা অর্জনে যে গেরিলাযুদ্ধের প্রয়োজন তার প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুর এ ভাষণটি আজ বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবেও স্বীকৃত। এটি বিশ্বে সর্বাধিকবার প্রচারিত অলিখিত ভাষণ। ২০১৭ সালের অক্টোবরে জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থা ইউনেস্কো বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণটি বিশ্ব ঐতিহ্যের (ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ) স্বীকৃতি দেয়।
এদিনে তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এক উত্তাল জনসমুদ্রে দাঁড়িয়ে বলেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম।’ ১৯৭১ সালের ৭ মার্চের এ ঐতিহাসিক ভাষণের মধ্য দিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালি জাতিকে রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়তে উদ্বুদ্ধ করেন। তার এ ভাষণ ছিল জাতিকে মুক্তিযুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকার চূড়ান্ত নির্দেশনা।
এদিনে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে লাখ লাখ জনতার সামনে দাঁড়িয়ে বঙ্গবন্ধু তার এ ভাষণে শতাব্দির পর শতাব্দি ধরে পরাধীন জাতিকে স্বাধীনতার জন্য মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়তে উদ্বুদ্ধ করেন। মাত্র ১৮ মিনিটের ভাষণে তিনি কেন মুক্তিযুদ্ধের প্রয়োজন এবং মুক্তিযুদ্ধের জন্য জাতিকে কী করতে হবে সব দিক নির্দেশনায়ই দিয়ে দেন। তার ওই ভাষণের মধ্য দিয়েই স্পষ্ট হয়ে উঠে স্বাধীনতার ঘোষণা। মুক্তিযুদ্ধের জন্য জাতিকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেছিলেন, ‘ঘরে ঘরে দূর্গ গড়ে তোলো। আমি যদি হুকুম দিবার নাও পারি…, তোমাদের যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবিলা করতে প্রস্তুত থাক।’ পাকিস্তানের শাসন-শোষণ-নির্যাতনের বিরুদ্ধে দীর্ঘ আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের চূড়ান্ত পর্বে বঙ্গবন্ধু এ ভাষণ দেন।
স্বাধীনতার জন্য অদম্য স্পৃহা নিয়ে সংগ্রামরত মুক্তিকামী জাতির আশা-আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে বঙ্গবন্ধু সেদিন বজ্র কণ্ঠে উচ্চারণ করেছিলেন, ‘প্রত্যেক গ্রামে, প্রত্যেক মহল্লায়, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে সংগ্রাম পরিষদ গড়ে তোলো এবং তোমাদের যা কিছু আছে তাই নিয়ে প্রস্তুত থাকো। মনে রাখবা রক্ত যখন দিয়েছি, রক্ত আরও দেব, এদেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়বো ইনশাআল্লাহ।’ বঙ্গবন্ধুর ওই নির্দেশের পর ছাত্র, যুবক, কৃষক, শ্রমিক, পেশাজীবীসহ সমাজের সর্বস্তরের মানুষ মুক্তিযুদ্ধের জন্য সেভাবেই প্রস্তুতি নেয়।
১৯৪৭ সালে ধর্মভিত্তিক ভ্রান্ত দ্বি-জাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে চাপিয়ে দেওয়া অসম পাকিস্তান রাষ্ট্রের শাসন-শোষণ-নির্যাতনের বিরুদ্ধে বাঙালি জাতি দীর্ঘ দিন ধরে লড়াই-সংগ্রাম চালিয়ে যায়। ধাপে ধাপে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এড়িয়ে চলা বাঙালি পাকিস্তান রাষ্ট্র থেকে আলাদা হতে স্বাধীনতা সংগ্রাম শুরু করে। বাঙালির এ স্বাধীনতা সংগ্রামের নেতৃত্ব দেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ৭ মার্চে বঙ্গবন্ধুর ভাষণের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা সংগ্রামে নতুন মাত্রাযুক্ত হয়। এর পরই ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন এবং মুক্তিযুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন। দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে ১৬ ডিসেম্বর বাঙালি জাতির বিজয় অর্জিত হয়।