চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা জাতীয় পার্টির আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। জাতীয় পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদের অনুমতিক্রমে জাতীয় পার্টির দশম জাতীয় সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য সচিব ও বিরোধী দলীয় নেতার রাজনৈতিক সচিব গোলাম মসীহ ১২৫ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি অনুমোদন দেন। গত মঙ্গলবার রাতে নতুন কমিটি অনুমোদন দেয়া হলেও আজ ১৫ মার্চ বুধবার দুপুরে কমিটি প্রকাশ করা হয়।
নতুন গঠিত কমিটিতে শাহ জামাল রানাকে আহবায়ক ও অ্যাডভোকেট আবদুল্লাহ আল-হেলালকে সদস্য সচিব করা হয়।
কমিটিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২-(সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জাতীয় পার্টির নির্বাহী কমিটির সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধা ও এরশাদ ট্রাস্টের চেয়ারম্যান এবং জাতীয় পার্টি ও বিরোধী দলীয় নেতার মুখপাত্র কাজী মোঃ মামুনুর রশীদকে সম্মানিত সদস্য করা হয়েছে।
কমিটিতে যুগ্ম আহবায়ক হিসেবে ফিরোজ খান, আবদুল আজিজ, আবুল কালাম, অ্যাডভোকেট আমজাদ হোসেন, মেরাজ সিকদার, হুমায়ূন কবির ও আবদুল্লাহকে রাখা হয়েছে।
কমিটির যুগ্ম সদস্য সচিব হলেন সৈয়দ মোকাব্বের, অ্যাডভোকেট ইজাজ আহমেদ জীবন, সোলায়মান ও আজিম খান বাবু।
এ ব্যাপারে নব-ঘোষিত কমিটির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবদুল্লাহ আল-হেলালের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি নতুন কমিটি গঠনের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ১২৫ সদস্য বিশিষ্ট জেলা জাতীয় পার্টির আহবায়ক কমিটি অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
তবে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির অতিরিক্ত মহাসচিব ও জেলা জাতীয় পার্টির আহবায়ক অ্যাডভোকেট রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়ার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, পার্টির চেয়ারম্যান জি.এম. কাদের এমপি ও মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু এমপি ছাড়া অন্য কারো কমিটি গঠন করার কোন এখতিয়ার নেই। বেগম রওশন এরশাদ এমপি আমাদের দলের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা। তিনি কোন কমিটি গঠন করার কোন এখতিয়ার রাখেন না। নতুন কোন কমিটি গঠন করা হলে এটা হবে সম্পূর্ণ অবৈধ।
অনলাইন ডেস্ক :
সন্ত্রাসবিরোধী আইনে আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। গতকাল ২৪ অক্টোবর বুধবার রাতে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ।
গত মঙ্গলবার ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করাসহ পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছিল শেখ হাসিনার পতনের অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এর পরদিনই নির্বাহী আদেশে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার। এ সিদ্ধান্তে রাতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আনন্দ মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন উচ্ছ্বাস প্রকাশ করলেও অন্য ছাত্র সংগঠনগুলো সতর্ক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। অজ্ঞাত স্থান থেকে গতকাল রাতেই বিবৃতিতে ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান নিষিদ্ধকে ষড়যন্ত্র আখ্যা দিয়েছেন।
১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ কয়েকজন ছাত্রনেতা ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করেন। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, বাষট্টির শিক্ষা আন্দোলন, ছেষট্টির ছয় দফা, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান, বাংলাদেশের স্বাধীনতা এবং মুক্তিযুদ্ধে সংগঠনটির গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা রয়েছে।
নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম শক্তি ছিল ঐতিহ্যবাহী এ সংগঠন। তবে স্বাধীনতাপরবর্তী সময়ে এবং ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ছাত্রলীগের অনেকের বিরুদ্ধে অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ তৃতীয় দফায় ক্ষমতায় আসার পর এই ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দখলদারিত্ব, মারামারি, টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, অপহরণ, মাদক বাণিজ্য, বিরোধী দলগুলোর কর্মসূচিতে হামলা, দমনপীড়ন, অস্ত্রবাজির মতো অপরাধের শত শত অভিযোগ ওঠে।
এই সময়ে ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে অন্তত অর্ধশত প্রাণহানি ঘটেছে। ২০১২ সালে বিশ্বজিৎ দাস এবং ২০১৯ সালে আবরার হত্যায় সংগঠনটি ধিকৃত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ‘গেস্ট রুম’ নামে নিপীড়নের কুখ্যাতিও রয়েছে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে।
২০১৮ সালের নিরাপদ সড়ক আন্দোলন, কোটা সংস্কার আন্দোলনে ছাত্রলীগ ছিল দমনকারীর ভূমিকায়। গত জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান শুরুর পর শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মারমুখী ছিল। গত ১৫ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীদের নজিরবিহীন মারধর করে, যা থেকে সারাদেশে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের আগের দিনেও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর অভ্যুত্থান দমনে অস্ত্র হাতে রাজপথে দেখা যায়। অভ্যুত্থানের সময় এবং শেখ হাসিনার পতনের পর বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ নিয়ন্ত্রিত কক্ষ থেকে বিপুল সংখ্যক অস্ত্র পাওয়া যায়। মধ্য জুলাই থেকেই অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছাত্রলীগকে বের করে দিয়েছে অভ্যুত্থানকারীরা। ৫ আগস্টের পর ছাত্রলীগের তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না।
প্রজ্ঞাপনেও ছাত্রলীগকে গত ১৫ বছরের স্বৈরাচারী শাসনামলে হত্যা, নির্যাতন, বিশ্ববিদ্যালয়ের গণরুমকেন্দ্রিক নিপীড়ন, ছাত্রাবাসে সিট বাণিজ্য, টেন্ডারবাজি, ধর্ষণ, যৌন নিপীড়নের জন্য দায়ী করা হয়েছে। এতে উল্লেখ করা হয়েছে, জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী নানা কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল ছাত্রলীগ। এসবের প্রমাণ দেশের সব গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে। কিছু সন্ত্রাসী ঘটনায় সংগঠনটির নেতাকর্মীর অপরাধ আদালতেও প্রমাণ হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে আরো উল্লেখ করা হয়, গত ১৫ জুলাই থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সাধারণ ছাত্রছাত্রী ও জনগণের ওপর আক্রমণ করে শত শত নিরপরাধ শিক্ষার্থী ও ব্যক্তিকে হত্যা করেছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মী; অসংখ্য মানুষের জীবন বিপন্ন করেছে। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরও ছাত্রলীগ রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক, ধ্বংসাত্মক, উস্কানিমূলক ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত। সরকারের কাছে এসব কর্মকাণ্ডের যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে।
রাষ্ট্রপতির আদেশে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন নামাঙ্কিত রাজনৈতিক শাখা-২-এর জারি করা প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, সন্ত্রাসবিরোধী আইন, ২০০৯-এর ধারা ১৮-এর উপধারা (১)-এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলো। নিষিদ্ধ সত্তা হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হলো।
আইনের ১৯ ধারা অনুযায়ী, নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আবেদনে ৩০ দিন সময় পাবে ছাত্রলীগ। আবেদন করলে সরকার তা ৯০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করবে। নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত বহাল থাকলে ৩০ দিনের মধ্যে হাইকোর্টে আপিলের সুযোগ পাবে।
সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ২০ ধারায় উল্লেখ করা হয়েছে, নিষিদ্ধ ঘোষিত সত্তার কার্যালয় বন্ধ করবে সরকার। ব্যাংক হিসাব বা অন্য সম্পদ জব্দ হবে। নিষিদ্ধ সংগঠনের সদস্যরা দেশ ত্যাগ করতে পারবে না। সংগঠনের পক্ষে বা সমর্থনে বিবৃতি, বিজ্ঞপ্তি, প্রকাশনা, প্রচারণা, সংবাদ সম্মেলন বা জনসমক্ষে বক্তৃতা নিষিদ্ধ হবে।
গত ১ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার একই আইনে জামায়াতে ইসলামী এবং ইসলামী ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ করেছিল। তাদের আবেদনে অন্তর্বর্তী সরকার গত ২৮ আগস্ট নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়।
ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধে বুধবার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আনন্দ মিছিলের পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নুসরাত তাবাসসুম বলেন, জীবনের অন্যতম আনন্দের দিন আজ। ছাত্রলীগ দীর্ঘ ১৬ বছর ধরেই সন্ত্রাসী কার্যক্রম করেছে। তাদের বিরুদ্ধে কথা বলার কেউ ছিল না। এই ছাত্রলীগ ১৫ জুলাই আমাদের ওপর হামলা করেছে। সারাদেশে তারা অসংখ্য ছাত্র-জনতাকে শহীদ করেছে। সরকারকে ধন্যবাদ জানাই ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করায়। আর কোনো ছাত্র সংগঠন যেন এমন সন্ত্রাসী না হয়।
সমন্বয়ক হাসিব আল ইসলাম বলেন, যারা কথায় কথায় আন্দোলনে জঙ্গিবাদ খুঁজত, তাদেরকেই জঙ্গি ঘোষণা করা হয়েছে। তাদের গর্ত থেকে বের করে ধোলাই দিতে হবে।
আশরিফা খাতুন বলেন, আবু সাঈদের মৃত্যুর পর ছাত্রলীগ রাজাকার দমন হয়েছে বলে উল্লাস করেছিল। যখনই কোনো ন্যায্য দাবিতে রাজু ভাস্কর্যে দাঁড়িয়েছি, ছাত্রলীগ মেরেছে। ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসার জন্য গেলে, সেখানেও মারত। কোনোভাবেই ছাত্রলীগ যেন ফিরতে না পারে।
অন্য ছাত্র সংগঠনগুলো ছাত্রলীগ নিষিদ্ধের বিরুদ্ধে না বললেও উচ্ছ্বাস দেখায়নি। ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসির বলেন, ছাত্রলীগ খুন, ধর্ষণ, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস, ভোট ডাকাতি, গণহত্যাসহ সব ধরনের মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে। সব জঙ্গি সংগঠন মিলে যত মানুষ খুন করেছে; ছাত্রলীগ এককভাবে বেশি করেছে। ছাত্রদলের শতাধিক নেতাকর্মী গুমের শিকার হয়েছে এবং শহীদ হয়েছে। ছাত্রলীগ নিষিদ্ধে ছাত্র রাজনীতি কলঙ্কমুক্ত হয়েছে। সুস্থ রাজনীতিচর্চার পথ উন্মুক্ত হয়েছে। তবে ছাত্রলীগ নিষিদ্ধই সমাধান নয়। সংগঠনটির যারা সন্ত্রাস করেছে, তাদের সবাইকে বিচারের আওতায় আনতে হবে।
ছাত্রশিবিরের প্রচার সম্পাদক ডা. সাদেক আবদুল্লাহ বলেন, ছাত্র রাজনীতিকে কলুষিত করেছে ছাত্রলীগ। সন্ত্রাস, নিপীড়ন, নির্যাতনের কারণে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ছাত্রলীগকে চায় না। ছাত্রলীগের অপরাধীদের বিচার চায়।
ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি মশিউর রহমান রিচার্ড বলেন, ছাত্রলীগের নিষিদ্ধকে সাধুবাদ জানাই। নিষিদ্ধ হলেই অপতৎপরতা বন্ধ হবে না। অপরাপর সংগঠনের সঙ্গে আলাপে নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া প্রয়োজন ছিল। ছাত্রলীগের তৎপরতা বন্ধে জাতীয় ঐক্য প্রয়োজন।
ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি মেঘমল্লার বোস বলেন, নির্বাহী আদেশে কয়েক দিন আগে জামায়াতকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। ক্ষমতার পরিবর্তনে তা বদলেও গেছে। একটি সংগঠনকে নিষিদ্ধ করা কতখানি ফলপ্রসূ হবে, জানি না। নির্বাহী আদেশে ছাত্রলীগকে কতটুকু নিঃশেষ করা যাবে, জানি না। ছাত্রলীগকে মোকাবিলা করতে হবে আদর্শের জায়গায় এবং মাঠের রাজনীতিতে। রাজনৈতিকভাবে সতর্ক থাকতে হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
২ ব্যবসায়ীকে ৬ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। ৬ মার্চ বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা শহরের মেড্ডা বাজারে অভিযান পরিচালনা করে এই জরিমানা করেন সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুক্তা গোস্বামী।
ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকারী সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুক্তা গোস্বামী জানান, পবিত্র রমজান মাসে দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল ও ভেজাল পণ্যের বিরুদ্ধে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার মেড্ডা বাজারে বাজার মনিটরিং করা হয়। বাজার মনিটরিংয়ে রমজানকে সামনে রেখে কিছু ব্যবসায়ী অতিরিক্ত দামে পণ্য বিক্রি ও ক্রয় রসিদ প্রদর্শন করতে পারেনি।
পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে কৃষি বিপণন আইন-২০১৮ এর ধারায় ২ মামলায় ৬ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। জনস্বার্থে ভ্রাম্যমাণ আদালতের এই অভিযান অব্যাহত থাকবে। এ সময় সদর মডেল থানা পুলিশ উপস্থিত ছিল।
চলারপথে রিপোর্ট :
দীর্ঘ ৭ বছর পর বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ ব্রাহ্মণবাড়িয়া শাখার দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ ২৯ জুন শনিবার শহরের শ্রী শ্রী আনন্দময়ী কালিবাড়ি নাটমন্দির চত্বরে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে জেলার ৯ উপজেলা থেকে আনন্দ মিছিল নিয়ে শহরের হালদার পাড়াস্থ শ্রী শ্রী আনন্দময়ী কালিবাড়ি নাটমন্দির চত্বরে সম্মেলনস্থলে সমবেত হন।
এ সময় কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে জাতীয় পতাকা ও সংগঠনের পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সন্তোষ শর্মা।
সম্মেলনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের আহবায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা সুনিল চন্দ্র দেবের সভাপতিত্বে ও জেলা পূজা উদযাপন পরিষদেও সদস্য সচিব সঞ্জীব চন্দ্র সাহা বাপ্পীর সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রবিন্দ্র নাথ বসু, সাংগঠনিক সম্পাদক এড: কিশোর কুমার রায় চৌধুরী পিন্টু, কার্যকরী সদস্য ডা: আশীষ কুমার চক্রবর্তী।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর আসনের সংসদ সদস্য ও বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি র.আ.ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী বলেছেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ধ্বংসস্তুপে পরিনত হওয়া একটি দেশকে পুর্নগঠিত করেছিলেন। আর তাঁর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে উন্নয়নের সোপানে নিয়ে গেছেন। দেশ এখন উন্নয়নের রোড মডেল।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমলে দেশের সকল সেক্টরে অভাবনীয় উন্নয়ন হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জনগণের জন্য কাজ করছেন, দেশের জন্য কাজ করছেন।
আজ ৯ নভেম্বর বৃহস্পতিবার বিকেলে সদর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে সদর উপজেলার আইন-শৃংখলা কমিটির মাসিক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ সেলিম শেখের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে র.আ.ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি আরো বলেন, সকলের প্রচেষ্টায় সদর উপজেলার আইন-শৃংখলা পরিস্থিতি ভালো অবস্থায় আছে। পরিস্থিতি আরো উন্নয়ন করতে হবে। সভায় সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে শারদীয় দুর্গোৎসব উদযাপন হওয়ায় তিনি সদর উপজেলা প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, গত ৫ বছরে আমি সবার সহযোগীতা পেয়েছি।
সভায় বক্তব্য রাখেন, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান লায়ন ফিরোজুর রহমান, সদর থানার ট্রাফিক ইন্সপেক্টর দেবব্রত কর, সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুমন বনিক, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোঃ বাহারুল ইসলাম মোল্লা, সাদেকপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ নাছির আহমেদ, নাটাই উত্তর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু সাঈদ, নাটাই দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ শাহআলম, বাসুদেব ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ হাকিম মোল্লা, সুহিলপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুর রশীদ ভূঁইয়া, এনজিও নেতা এস.এম শাহীন প্রমুখ।
সভায় শহরের লোকনাথ উদ্যান ও খ্রীষ্টিয়ান মিশন ব্যাপিষ্ট চার্চের সামনে রাস্তার উপরের ময়লার ভাগাঢ় অপসারণ, শহরের নিউ মার্কেটের পিছনের রাস্তার কসাইখানা অপসারণ, পাওয়ার হাউজ রোডের সন্ধ্যাকালীন মাছের বাজার অপসারণ, দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিরোধে বাজার মনিটরিং বাড়ানো, শহরের কোর্ট রোড ও মসজিদ রোডের হকার উচ্ছেদ করার দাবি জানানো হয়।
সভায় শহরের যানজট নিরসনে ট্রাফিক পুলিশের সংখ্যা বাড়ানো ও মাদক বিরোধী অভিযান জোরদার করার দাবি জানানো হয়। সভায় সম্প্রতি শহরে ছিচকে চুরি বৃদ্ধি পাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।
সভায় সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডঃ লোকমান হোসেন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শামীমা মুজিব, সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম ভূইয়া, সাধারণ সম্পাদক এম.এ.এইচ মাহবুব আলম, সদর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যানগণ ও আইন-শৃংখলা কমিটির সদস্যগণ উপস্থিত ছিলেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
অতিরিক্ত গরমে রেললাইন বেঁকে মালবাহী ট্রেনের ৭টি ওয়াগন লাইনচ্যুতের ঘটনার পর সাত ঘণ্টা পার হলেও বন্ধ থাকা আপলাইনে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়নি। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত দুর্ঘটনাকবলিত ট্রেনটি উদ্ধারে কাজ চলছিল।
এদিকে এক লাইনে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় ঘটেছে। সব ট্রেন নির্ধারিত সময়ের চেয়ে কয়েক ঘণ্টা বিলম্বে ছেড়ে যাচ্ছে। আপলাইনে ঢাকার সঙ্গে চট্টগ্রাম ও সিলেটের রেল যোগাযোগ সচল হতে আরো অন্তত ৩ ঘণ্টা লাগবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনের মাস্টার মো. রফিকুল ইসলাম জানান, চট্টগ্রাম থেকে আসা মালবাহী একটি ট্রেন দুপুর ১টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার দাড়িয়াপুর এলাকায় লাইনচ্যুত হয়। অতিরিক্ত গরমে রেললাইন বেঁকে যাওয়ায় ট্রেনটির ৭টি ওয়াগনের ১২টিরও বেশি চাকা লাইনচ্যুত হয়। দুর্ঘটনার পর আখাউড়া রেলজংশনের লোকোশেডে খবর দেওয়ার পর উদ্ধারকারী ট্রেন এসে বিকেলে উদ্ধার কাজ শুরু করে।
তিনি আরো জানান, দুর্ঘটনায় প্রায় পাঁচশত মিটার রেলপথ ও স্লিপার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ট্রেনটির উদ্ধারকাজ শেষে ক্ষতিগ্রস্ত রেললাইন ও স্লিপার মেরামত শেষে করে ট্রেন চলাচল সচল হতে আরও ২-৩ ঘণ্টা লাগবে।
এদিকে, দুর্ঘটনার কারণে শিডিউল বিপর্যয় ঘটায় চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী আন্তঃনগর চট্টলা এক্সপ্রেস ট্রেনটি নির্ধারিত সময়ের প্রায় সাড়ে ৪ ঘণ্টা বিলম্বে সন্ধ্যা ৬টার দিকে দুর্ঘটনাস্থল অতিক্রম করে। এছাড়া প্রায় সোয়া ৪ ঘণ্টা বিলম্বে ব্রাহ্মণবাড়িয়া অতিক্রম করে ময়মনসিংহগামী আন্তঃনগর বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেন।