কৃষকরা ঝুঁকছেন ভুট্টার চাষে

আখাউড়া, 16 March 2023, 1350 Views,

চলারপথে ডেস্ক :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিভিন্ন উপজেলায় চাষ পদ্ধতি সহজলভ্য হওয়া কৃষকরা দিন দিন ঝুঁকছেন ভুট্টার চাষের দিকে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায় যা চোখে পড়ার মত। অনুকূল আবহাওয়া ও আধুনিক কৃষি প্রযুক্তিতে কৃষকদের আগ্রহ সৃষ্টি হওয়ায় ভুট্টার বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকরা স্থানীয়রা কৃষকরা।

banner

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে উপজেলায় প্রায় ১৫ হেক্টর জমিতে ভুট্টার আবাদ করা হয়। যা গত বছরের চেয়ে ৫ হেক্টর বেশি। তবে ভুট্টা চাষে উদ্বুদ্ধ করতে কৃষকদের সার, বীজসহ সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে।

কৃষক সামছু মিয়া বলেন, কত কয়েকবছর যাবৎত ধরে ভুট্টা চাষ করছেন। এ মৌসুমে তিনি বাড়ি সংলগ্ন ৪ বিঘা জমি ভুট্টা আবাদ করেন। এ চাষ করতে বিনামূল্যে বীজ ও সারসহ অন্যান্য সব উপকরণ পেয়েছেন। ভুট্টা আবাদ করতে প্রতি বিঘায় পানি, জমি প্রস্তুত, লাগানোসহ তার ৮/১০ হাজার টাকা তার খরচ হয়। প্রতিটি জমিতেই এখন ফুল এসেছে। কয়েকদিনের মধ্যেই মোটা হয়ে যাবে। বর্তমানে জমিতে যে অবস্থা দেখা যাচ্ছে তাতে মনে হচ্ছে কোনো দুর্যোগ না হলে ভালো ফলন পাওয়া যাবে।

আরেক কৃষক ফরিদ মিয়া বলেন, বোরো ধানের চেয়ে ভুট্টায় লাভ বেশি। তাই তিনি ভুট্টা চাষ করছেন। ভুট্টার কোনো কিছুই ফেলে দেওয়া হয় না। এর পাতা গরুকে খাওয়ানো হয়, তাছাড়া ডাটা ও মোচা লাকড়ি হিসেবে ব্যবহার করা হয়।

উপজেলা কৃষি অফিস বলেন, সব ধরনের ফসল উৎপাদনে আমরা কৃষকদের আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করছি। যাতে করে কৃষকরা সহজভাবে কৃষি উপকরণ পেয়ে ফলন বৃদ্ধি করতে পারে। বিশেষ করে ভুট্টা চাষ করতে আগ্রহী কৃষকদের মাঝে উন্নত মানের ভুট্টার বীজ ও সার বিনামূল্যে দেওয়া হয়। বীজ, সার ও তেলের জন্য সার্বক্ষণিক মনিটরিং করছি।

Leave a Reply

গাজীপুরে মামা হত্যার আসামি ভাগিনা গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : গাজীপুরে আনিসুর রহমান হত্যার মামলার আসামি ভাগিনা Read more

সদর মডেল থানায় যোগদান করেই কঠোর…

সঞ্জীব ভট্টাচার্য্য : আজহারুল ইসলাম সম্প্রতি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার

চলারপথে রিপোর্ট : ফ্ল্যাট বাসা থেকে শরীর মীর (৪০) নামের Read more

নাসিরনগরে বাবাকে হত্যার ঘটনায় ছেলে আটক

চলারপথে রিপোর্ট : নাসিরনগরে আলম মিয়া (৬০) নামের এক ব্যবসায়ী Read more

আখাউড়ায় খেলাফত মজলিসের প্রার্থীর মতবিনিময়

মোঃ ইসমাইল: ব্রাহ্মণবাড়িয়া- ৪ (কসবা-আখাউড়া) আসনের খেলাফত মজলিস মনোনীত প্রার্থী Read more

৫০ কেজি গাঁজাসহ একজন গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : ৫০ কেজি গাঁজা ও ১টি সিএনজি উদ্ধারসহ Read more

কাপ্তাই হ্রদের পানি বিপদসীমায়, জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের…

অনলাইন ডেস্ক : বর্ষার শেষপ্রহরে নেমে আসা অবিরাম বৃষ্টি ও Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার নতুন ওসি আজহারুল…

চলারপথে রিপোর্ট : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে Read more

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে…

অনলাইন ডেস্ক : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ঐতিহাসিক Read more

কুমিল্লার দাউদকান্দিতে ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : কুমিল্লার দাউদকান্দি বারপাড়া ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) Read more

মেক্সিকোতে যাত্রীবাহী বাসে ট্রেনের ধাক্কায় ১০জন…

অনলাইন ডেস্ক : মেক্সিকোর আটলাকোমুলকো শহরে একটি পণ্যবাহী ট্রেন ও Read more

কানাডায় বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত

মুমিনুল হক : কানাডার টরেন্টোতে বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত হয়েছে। Read more

আখাউড়ায় তিন কন্যাসহ গৃহবধূ নিখোঁজ : থানায় জিডি

আখাউড়া, বিজয়নগর, 8 June 2024, 1221 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
বাবার বাড়ি থেকে স্বামীর বাড়ি ফেরার পথে তিন শিশুকন্যাসহ খালেদা আক্তার রিতু নামে এক গৃহবধূ নিখোঁজ হয়েছেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া উপজেলার সিঙ্গারবিলে ঘটনাটি ঘটেছে।

banner

আজ ৮ জুন শনিবার দুপুরে এ ঘটনায় নিখোঁজ গৃহবধূর বাবা আব্দুল আউয়াল ভুঁইয়া বিজয়নগর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। নিখোঁজ গৃহবধূ খালেদা আক্তার ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া দক্ষিণ ইউনিয়নের দ্বিজয়পুর গ্রামের আতাউর রহমান ভূঁইয়ার স্ত্রী। রিতুর বাবার বাড়ি বিজয়নগর উপজেলার মিরাশানী (ভূঁইয়া বাড়ি) গ্রামে। তার তিন শিশুকন্যা হলো- তাবাসসুম আক্তার (১০), তানিশা আক্তার (৭) এবং হুমায়রা আক্তার (৫)। এর আগে ৭ জুন শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টায় বাবার বাড়ি থেকে স্বামীর বাড়ি ফেরার পথে নিখোঁজ হন তারা।

নিখোঁজ গৃহবধূর স্বামী আতাউর রহমান ভূঁইয়া জানান, গত রবিবার তার স্ত্রী তিন কন্যাকে নিয়ে তাদের বাড়ি থেকে বিজয়নগর উপজেলার মিরাশানী (ভূঁইয়া বাড়ি) তার বাবার বাড়ি বেড়াতে যায়। শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তারা আখাউড়ায় তাদের বাড়ির উদ্দেশ্যে পরিচিত এক অটোরিকশাযোগে বিজয়নগরের সিঙ্গারবিল বাজারে আসেন। পরে এ অটোরিকশা থেকে নেমে অজ্ঞাতপরিচয় অন্য একটি অটোরিকশাতে ওঠে। পরে সন্ধ্যা হয়ে গেলেও স্ত্রী ও সন্তান বাড়িতে না পৌঁছালে তিনি তার শ্বশুরকে ফোন করে জানতে পারেন তারা সকালেই বাড়ির উদ্দেশ্যে বেরিয়েছেন। তখন আশপাশের আত্মীয়-স্বজন, হাসপাতালসহ বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ করেও তাদের কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি।

অটোচালক সুমন বলেন, আমি তাদের বাড়ির সামনে থেকে সিঙ্গাবিল বাজার পর্যন্ত নিয়ে আসি। পরে আখাউড়া বাইপাস পর্যন্ত যাওয়ার জন্য অন্য একটি অটোরিকশায় তুলে দেই।

বিজয়নগর থানার ওসি আসাদুল ইসলাম জিডি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এক গৃহবধূ তিন সন্তানসহ নিখোঁজের ঘটনায় দুপুরে একটি জিডি করেছে তার বাবা আব্দুল আউয়াল। বিষয়টি নিয়ে আমাদের তদন্ত চলছে।

আজ বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস

আখাউড়া, কসবা, জাতীয়, নাসিরনগর, বিজয়নগর, রাজনীতি, সরাইল, 9 January 2023, 8195 Views,
স্টাফ রিপোর্টার:
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আজ। পাকিস্তানের বন্দিদশা থেকে মুক্তি পেয়ে ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি তিনি সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের মাটিতে প্রত্যাবর্তন করেন। এর আগে ৮ জানুয়ারি পাকিস্তানের মিয়ানওয়ালি কারাগারে দীর্ঘ ৯ মাস কারাভোগের পর মুক্তি লাভ করেন তিনি। পরে তিনি পাকিস্তান থেকে লন্ডন যান। তারপর দিল্লী হয়ে ঢাকা ফেরেন বঙ্গবন্ধু। দিবসটি পালন উপলক্ষে আওয়ামী লীগ ও দলের বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনসহ বিভিন্ন দল ও সংগঠন ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
১৯৭১ সালের ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করে বঙ্গবন্ধু সর্বস্তরের জনগণকে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানান। স্বাধীনতা ঘোষণার অব্যবহিত পর পাকিস্তানের সামরিক শাসক জেনারেল ইয়াহিয়া খানের নির্দেশে তাকে গ্রেফতার করে তদানীন্তন পশ্চিম পাকিস্তানের কারাগারে নিয়ে আটক রাখা হয়। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি সৈন্যদের বিরুদ্ধে নয় মাস যুদ্ধের পর চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হলেও ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মধ্য দিয়ে জাতি বিজয়ের পূর্ণ স্বাদ গ্রহণ করে।
জাতির পিতা পাকিস্তান থেকে ছাড়া পান ১৯৭২ সালের ৭ জানুয়ারি ভোর রাতে ইংরেজি হিসেবে ৮ জানুয়ারি। এদিন বঙ্গবন্ধু ও ড. কামাল হোসেনকে বিমানে তুলে দেওয়া হয়। সকাল সাড়ে ৬টায় তারা পৌঁছান লন্ডনের হিথরো বিমানবন্দরে। বেলা ১০টার পর থেকে বঙ্গবন্ধু কথা বলেন, ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী এডওয়ার্ড হিথ, তাজউদ্দিন আহমদ ও ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীসহ অনেকের সঙ্গে। পরে ব্রিটেনের বিমান বাহিনীর একটি বিমানে করে পরের দিন ৯ জানুয়ারি দেশের পথে যাত্রা করেন।
১০ জানুয়ারি সকালেই তিনি নামেন দিল্লীতে। সেখানে ভারতের রাষ্ট্রপতি ভিভি গিরি, প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী, সমগ্র মন্ত্রিসভা, শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দ, তিন বাহিনীর প্রধান এবং অন্যান্য অতিথি ও সেদেশের জনগণের কাছ থেকে উষ্ণ সংবর্ধনা লাভ করেন সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের পিতা শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধু ভারতের নেতৃবৃন্দ এবং জনগণের কাছে তাদের অকৃপণ সাহায্যের জন্য আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানান। তার এই স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে আখ্যায়িত করেছিলেন ‘অন্ধকার হতে আলোর পথে যাত্রা হিসেবে।’
এদিন বেলা ১টা ৪১ মিনিটে তিনি ঢাকা এসে পৌঁছেন। চূড়ান্ত বিজয়ের পর ১০ জানুয়ারি বাঙালি জাতি বঙ্গবন্ধুকে প্রাণঢালা সংবর্ধনা জানানোর জন্য প্রাণবন্ত অপেক্ষায় ছিল। আনন্দে আত্মহারা লাখ লাখ মানুষ ঢাকা বিমান বন্দর থেকে রেসকোর্স ময়দান পর্যন্ত তাঁকে স্বতঃস্ফূর্ত সংবর্ধনা জানান। বিকাল পাঁচটায় রেসকোর্স ময়দানে প্রায় ১০ লাখ লোকের উপস্থিতিতে তিনি ভাষণ দেন। পরের দিন দৈনিক ইত্তেফাক, সংবাদসহ বিভিন্ন পত্রিকায় বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন নিয়ে এভাবেই লিখা হয়- ‘স্বদেশের মাটি ছুঁয়ে বাংলাদেশের ইতিহাসের নির্মাতা শিশুর মতো আবেগে আকুল হলেন। আনন্দ-বেদনার অশ্রুধারা নামলো তার দু’চোখ বেয়ে। প্রিয় নেতাকে ফিরে পেয়ে সেদিন সাড়ে সাত কোটি বাঙালি আনন্দাশ্রুতে সিক্ত হয়ে জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু ধ্বনিতে প্রকম্পিত করে তোলে বাংলার আকাশ-বাতাস।’
জনগণ নন্দিত শেখ মুজিব সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দাঁড়িয়ে তাঁর ঐতিহাসিক ধ্রুপদি বক্তৃতায় বলেন, ‘যে মাটিকে আমি এত ভালবাসি, যে মানুষকে আমি এত ভালবাসি, যে জাতিকে আমি এত ভালবাসি, আমি জানতাম না সে বাংলায় আমি যেতে পারবো কিনা। আজ আমি বাংলায় ফিরে এসেছি বাংলার ভাইয়েদের কাছে, মায়েদের কাছে, বোনদের কাছে। বাংলা আমার স্বাধীন, বাংলাদেশ আজ স্বাধীন। সশ্রদ্ধ চিত্তে তিনি সবার ত্যাগের কথা স্মরণ করেন এবং সবাইকে দেশ গড়ার কাজে উদ্বুদ্ধ করে বলেন, ‘আজ থেকে আমার অনুরোধ, আজ থেকে আমার আদেশ, আজ থেকে আমার হুকুম ভাই হিসেবে, নেতা হিসেবে নয় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নয় প্রেসিডেন্ট হিসেবে নয়। আমি তোমাদের ভাই, তোমরা আমার ভাই। এ স্বাধীনতা আমার পূর্ণ হবে না যদি বাংলার মানুষ পেট ভরে ভাত না পায়, এ স্বাধীনতা আমার পূর্ণ হবে না যদি বাংলার মা-বোনেরা কাপড় না পায়, এ স্বাধীনতা আমার পূর্ণ হবে না যদি এদেশের যুবক যারা আছে তারা চাকরি না পায়। মুক্তিবাহিনী, ছাত্র সমাজ তোমাদের মোবারকবাদ জানাই তোমরা গেরিলা হয়েছো, তোমরা রক্ত দিয়েছো, রক্ত বৃথা যাবে না, রক্ত বৃথা যায় নাই।
বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘একটা কথা-আজ থেকে বাংলায় যেন আর চুরি-ডাকাতি না হয়। বাংলায় যেন আর লুটতরাজ না হয়। বাংলায় যারা অন্য লোক আছে অন্য দেশের লোক, পশ্চিম পাকিস্তানের লোক বাংলায় কথা বলে না, তাদের বলছি তোমরা বাঙালি হয়ে যাও। আর আমি আমার ভাইদের বলছি তাদের উপর হাত তুলো না আমরা মানুষ, মানুষ ভালোবাসি। ‘তবে যারা দালালি করেছে যারা আমার লোকদের ঘরে ঢুকে হত্যা করেছে তাদের বিচার হবে এবং শাস্তি হবে’ উল্লেখ করে জাতির পিতা বলেন, ‘তাদের বাংলার স্বাধীন সরকারের হাতে ছেড়ে দেন, একজনকেও ক্ষমা করা হবে না। তবে আমি চাই স্বাধীন দেশে স্বাধীন আদালতে বিচার হয়ে এদের শাস্তি হবে। আমি দেখিয়ে দিতে চাই দুনিয়ার কাছে শান্তিপূর্ণ বাঙালি রক্ত দিতে জানে, শান্তিপূর্ণ বাঙালি শান্তি বজায় রাখতেও জানে।’ বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘আমায় আপনারা পেয়েছেন। আমি আসছি। জানতাম না আমার ফাঁসির হুকুম হয়ে গেছে। আমার সেলের পাশে আমার জন্য কবর খোড়া হয়েছিলো। আমি প্রস্তুত হয়েছিলাম, বলেছিলাম আমি বাঙালি, আমি মানুষ, আমি মুসলমান, মুসলমান একবার মরে দুইবার মরে না। আমি বলেছিলাম, আমার মৃত্যু আসে যদি আমি হাসতে হাসতে যাবো। আমার বাঙালি জাতকে অপমান করে যাবো না, তোমাদের কাছে ক্ষমা চাইবো না। এবং যাবার সময় বলে যাবো জয় বাংলা, স্বাধীন বাংলা, বাঙালি আমার জাতি, বাংলা আমার ভাষা, বাংলার মাটি আমার স্থান।’
বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে মুক্তিযুদ্ধে প্রবাসী সরকার তাঁর নির্দেশিত যুদ্ধ পরিচালনা করে। নয় মাসের যুদ্ধের এক পর্যায়ে বাঙালির মুক্তিযুদ্ধ চূড়ান্ত রূপ নিতে শুরু করে। ধীরে ধীরে স্বাধীনতা অর্জনের পথে মুক্তিযোদ্ধা, জনতা ও মিত্রবাহিনীর যৌথ আক্রমণ তীব্র হয়। জয় তখন সময়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায় মাত্র। একই সাথে বঙ্গবন্ধুর মুক্তির দাবিতে বিশ্বব্যাপী জনমত গড়ে তোলা হয় প্রবাসী সরকারের নেতৃত্বে। বিশ্ব নেতৃবৃন্দ বঙ্গবন্ধুর মুক্তির দাবিতে সোচ্চার হলে পাকিস্তানী বর্বর শাসকগোষ্ঠী বাধ্য হয় তাঁকে সসম্মানে মুক্তি দিতে।
১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীন দেশের রাষ্ট্রপতি হিসেবে বাংলাদেশের মাটিতে প্রত্যাবর্তন করেন। এর আগে সরকার পরিচালনা করে অস্থায়ী প্রবাসী সরকার। ১২ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। ২৩ সদস্য বিশিষ্ট আওয়ামী লীগের মন্ত্রিসভা রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বভার গ্রহণ করে। ১৯৭২ সালের ২৩ মার্চ জারিকৃত প্রেসিডেন্সিয়াল আদেশ বলে গণপরিষদ গঠন করে নভেম্বর মাসের মধ্যেই দেশের জন্য একটি সংবিধান উপহার দেয়া হয় এবং যা ১৯৭২ সালের ১৬ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হয়। বাসস।

আখাউড়া স্থলবন্দরে কর্মবিরতি, আমদানি-রপ্তানি ব্যাহত

আখাউড়া, 30 January 2023, 1655 Views,
ফাইল ছবি

আখাউড়া প্রতিনিধি :
সারা দেশের ন্যায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া স্থলবন্দরেও চলছে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টদের কর্মবিরতি কর্মসূচি। এর ফলে ব্যাহত হচ্ছে পণ্য আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম।

banner

আজ ৩০ জানুয়ারি সোমবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কোনো পণ্যবোঝাই ট্রাক ভারতে প্রবেশ করেনি। এসময় স্থলবন্দরে আটকা পড়েছে মাছসহ বিভিন্ন পণ্যবোঝাই ১৯টি ট্রাক।

ফেডারেশন অব বাংলাদেশ কাস্টমস ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং (সিঅ্যান্ডএফ) এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের ডাকে চলা এ কর্মবিরতি আগামীকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত চলবে বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।

আখাউড়া স্থলবন্দরের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ফোরকান আহমেদ খলিফা জানান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক মৌলিক অধিকার পরিপন্থী কাস্টমস এজেন্টস লাইসেন্সিং বিধিমালা-২০২০ এবং পণ্য চালান শুল্কায়নে এইচএস কোড ও সিপিসি নির্ধারণে প্রণীত বিতর্কিত আইন বাতিলের দাবিতে সারা দেশেই কর্মবিরতি চলছে।

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ

আখাউড়া, 18 September 2024, 510 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
আখাউড়ায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থীদের মাঝে খাতা-কলম বিতরণ করেছেন বসুন্ধরা শুভসংঘের প্রতিনিধিরা। আজ ১৮ সেপ্টেম্বর বুধবার এসব শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করা হয়। দুইটি বিদ্যালয়ের মোট ১০০ জন শিক্ষার্থীর মাঝে এসব খাতা কলম দেওয়া হয়। বিডি অ্যানিমেল হেলথ নামের একটি প্রতিষ্ঠান ও প্রবাসী ইনামুল হক এ কাজে সহায়তা করেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়নের আব্দুল্লাহপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়। পরে রহিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে খাতা-কলম দেওয়া হয়।

banner

এ সময় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদ সদস্য মো. সাইফুল ইসলাম, আখাউড়া পৌরসভার কাউন্সিলর শিপন হায়দার, উপজেলা পুজা উদযাপন কমিটির আহবায়ক দীপক কুমার ঘোষ, যায়যায়দিনের সাংবাদিক কাজী হান্নান খাদেম, নয়াদিগন্তের মো. নুরুন্নবী ভূঁইয়া, আনন্দ বাজারের কাজী মফিকুল ইসলাম, খবরের কাগজের জুটন বনিক, সাবেক ছাত্রনেতা মো. মনির হোসেন, প্রবাসী মো. আলমগীর হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

কালের কণ্ঠের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি বিশ্বজিৎ পাল বাবু এই আয়োজনের সমন্বয় করেন।
এ সময় জানানো হয়, বসুন্ধরা শুভসংঘের উদ্যোগটি অব্যাহত থাকবে।

অনুষ্ঠানে অংশগ্রহনকারী অতিথি ও বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা এ কাজের প্রশংসা করে বলেন, বন্যার সময় শিক্ষার্থীদের বই খাতা পানিতে নষ্ট হয়েছে। কিন্তু এ ধরনের ক্ষতির কথা কারোর মাথায় ছিল না। বসুন্ধরা শুভসংঘের এই ধরনের চিন্তাটা খুবই সৃজনশীল। এতে দরিদ্র শিক্ষার্থীদের উপকার হলো। আব্দুল্লাহপুর বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. শাহীন ও সুলতানা তাহমিনা এ উদ্যোগের প্রশংসা করেন। প্রশংসা করেছেন রহিমপুরের প্রধান শিক্ষক জাহানারা বেগম। বন্যার্ত শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করায় তারা বসুন্ধরা শুভসংঘের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

স্বাধীন হত্যা মামলার মূল হোতাসহ ২জন গ্রেফতার

আখাউড়া, 16 November 2024, 428 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
আখাউড়ায় স্বাধীন হত্যার ৮ ঘন্টার মধ্যে মূল হোতা স্বপন চৌধুরীসহ এজাহারভূক্ত দুই আসামিকে আটক করেছে পুলিশ। আখাউড়া থানার ইন্সপেক্টর তদন্ত মোঃ ছমি উদ্দিনের নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার নারুই গ্রাম থেকে শনিবার ভোরে তাদেরকে গ্রেফতার করে।

banner

গ্রেফতারকৃত আসামীরা হলো আখাউড়া উপজেলার উত্তর ইউনিয়নের রামধননগর গ্রামের রোকন উদ্দিনের ছেলে স্বপন চৌধুরী (৪০) ও শরীফ চৌধুরী (৫০)। এ ঘটনায় স্বপন চৌধুরীর স্ত্রী ইতি বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় ডেকে নিয়েছে পুলিশ। হত্যায় ব্যবহৃত ছুরিটি উদ্ধার করা হয়েছে।

গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় আমোদাবাদ গ্রামের ফজল মিয়ার ছেলে স্বাধীন মিয়া (২৫) কে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে স্বপন। রাতেই নিহত স্বাধীন মিয়ার পিতা ফজল মিয়া বাদী হয়ে ৫ জনকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেন।

পুলিশ ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার সন্ধ্যা ৭ টার দিকে আজমপুর রেলওয়ে কলোনী মসজিদের সামনেস্বাধীন মিয়াকে ছুরিকাঘাত করে স্বাধীন চৌধুরী। স্থানীয়রা স্বাধীন উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ওই এলাকার লুৎফল আমিন চৌধুরী বলেন আমি মাছের প্রজেক্ট দেখতে যাচ্ছিলাম। আজমপুর রেলওয়ে কলোনী মসজিদের সামনে দুইজনকে ধস্তাধস্তি করতে দেখে শান্ত করে দেওয়ার চেষ্টা করি। কিছুক্ষণ পর আরো ৪/৫ জন যুবক এসে স্বাধীনকে মারধর শুরু করে। এক পর্যায়ে স্বপন চৌধুরী স্বাধীনকে লম্বা ছুরি দিয়ে পেটে আঘাত করে। তাৎক্ষনিক আমি থানায় অবগত করি এবং লোকজন স্বাধীনকে হাসপাতালে নিয়ে যায়।

একাধিক সূত্রে জানা যায়, স্বাধীন একজন মাদক সেবী ও মাদক কারবারি।

নিহত স্বাধীনের মা জরিনা বেগম হাসপাতালে বিলাপ করতে করতে বলে স্বপন আমার ছেলেরে মাইরা লাইছে।

জানতে চাইলে ডাঃ ফয়জুন্নেছা আমিন বলেন ৭ টা ২৩ মি মৃত অবস্থায় ওই যুবককে হাসপাতালে নিয়ে এসেছে। পেটে ছুরিকাঘাত রয়েছে। অনেক রক্তক্ষরণ হয়েছে। বিস্তারিত ময়না তদন্ত শেষে জানা যাবে।

আখাউড়া থানার ইন্সপেক্টর তদন্ত মোঃ ছমি উদ্দিন বলেন নিহত স্বাধীন মিয়ার বাবা ফজল মিয়া রাতে ৫ জনকে আসামি করে থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়। তথ্য প্রযুক্তি এবং আমাদের সোর্সের মাধ্যমে রাত ৩ টার দিকে নবীনগর উপজেলার নারুই গ্রাম থেকে এজহার নামীয় দুই আসামীকে আটক করেছি। স্বপনের বিরুদ্ধে একাধিক মাদক মামলা রয়েছে। গ্রেফতারকৃতদেরকে আদালতে পাঠিয়ে ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হবে।