চলারপথে রিপোর্ট :
নবীনগর উপজেলার শ্রীরামপুর ইউনিয়নের দুই গ্রামের হতদরিদ্র মানুষদের ন্যায্যমূলের টিসিবির পণ্য ক্রয় করতে না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কাজী জাকি উদ্দিনের বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে চেয়ারম্যান কাজী জাকি উদ্দিন দম্ভোক্তি করে বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে কোনো নিউজ করার থাকলে করেন’।
২০ মার্চ সোমবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত ইউনিয়ন পরিষদে টিসিবির পণ্য ক্রয়ের লাইনে দাঁড়িয়ে খালি হাতে বাড়ি ফিরতে হয়েছে দুই গ্রামের মানুষদের।
ভুক্তভোগীরা জানান, আমরা সকাল থেকে কম দামে টিসিবি পণ্য কেনার জন্য পরিষদের লাইনে দাঁড়িয়ে আছি। এখন দুপুর হয়ে গেছে চেয়ারম্যান বা টিসিবি পণ্যের দেখা নেই।
তাদের মধ্যে ৬নং ও ৯নং ওয়ার্ডের হতদরিদ্র সাধারণ মানুষরা জানান, আমাদের ওয়ার্ডের মেম্বারের সঙ্গে চেয়ারম্যানের বিরোধের কারণে, গত তিন মাস যাবত আমরা টিসিবির পণ্যসহ ইউনিয়ন পরিষদের সরকারি কোনো সুবিধা পাচ্ছি না। আমাদের ওপর অন্যায় করা হচ্ছে। আমরা এর বিচার চাই।
ওই ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের মেম্বার ইয়ার হোসেন ও ৯নং ওয়ার্ডের মেম্বার মো. ইলিয়াস জানান, গত তিন মাস যাবত আমাদের ওয়ার্ড দুটিতে টিসিবি পণ্যসহ সব ধরনের সেবা বন্ধ করে দিয়েছেন চেয়ারম্যান। ফলে ভোগান্তির শিকার হচ্ছে আমাদের দুই ওয়ার্ডের সাধারণ হতদরিদ্র মানুষ।
তারা আরো জানান, চেয়ারম্যান সাধারণ মানুষজনকে জিম্মি করে জন্মনিবন্ধন ফি ২শ টাকা ও ওয়ারিশ সার্টিফিকেট বাবদ ৫শ টাকা করে নিচ্ছেন। আমরা এসবের বিরোধিতা করায় এসব করছেন তিনি। জন্মনিবন্ধন করতে গেলে সরকারি ফি থেকে অধিক মূল্য দিতে হয় তাও আবার সময়মতো সেবা গ্রহণ করতে পারছি না। শুধু জন্মনিবন্ধন নয়, ইউনিয়নের বিভিন্ন সেবা থেকে আমরা বঞ্চিত।
এ বিষয়ে জানতে ইউনিয়ন পরিষদে গেলে চেয়ারম্যানের অফিস তালাবদ্ধ পাওয়া যায়। পরে মোবাইল ফোনে ইউপি চেয়ারম্যান কাজী জাকি উদ্দিন জানান, আমি মসজিদের ছাদ ঢালাই করছি। এখন আসতে পারব না। আমার বিরুদ্ধে কোনো নিউজ করার থাকলে করেন।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার একরামুল সিদ্দিক বলেন, এ ব্যাপারে কোনো অভিযোগ আমার কাছে আসেনি, আসলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগরে ড্রেজার দিয়ে অতিরিক্ত বালু উত্তোলন ও অবৈধভাবে নদীর পাড় থেকে মাটি কাটার দায়ে ৫ লাখ টাকা জরিমানা ও তিনজনকে ৬ মাস করে সাজা দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
সোমবার দুপুরে উপজেলার জাফরাবাদ ও চর মানিকনগর এলাকায় পৃথক অভিযান পরিচালনা করে সাজা ও জরিমানা প্রদান করেন নবীনগর ইউএনও তানভীর ফরহাদ শামীম।
ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনাকারী নবীনগর ইউএনও তানভীর ফরহাদ শামীম জানান, উপজেলার বড়িকান্দি ইউনিয়নের জাফরাবাদ এলাকায় সরকার নির্ধারিত ড্রেজার মেশিনের চেয়ে অধিক ড্রেজার মেশিন দিয়ে নদী থেকে বালু উত্তোলন করছে- এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সেখানে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় নিয়ম বহির্ভূতভাবে বালু উত্তোলন করায় দায়ে একজনকে আটক করা হয়। পরে ভ্রাম্যমান আদালত বালু উত্তোলন করার দায়ে ইজারাদারের প্রতিনিধি সাদেক মিয়াকে ৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
তিনি আরো জানান, আরেক অভিযানে উপজেলার চর মানিকনগর এলাকার মেঘনা নদীর পাড়ে অবৈধ ড্রেজার মেশিন দিয়ে নদীর পাড় থেকে মাটি কাটার সময় বাদশা মিয়া, জসিম উদ্দিন ও ইকবাল হোসেনকে আটক করা হয়। পরে তাদের তিনজনকে ৬ মাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগরে বজ্রপাতে আব্দুল আওয়াল (৫০) নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। আজ ১৬ এপ্রিল বুধবার দুপুরে নবীনগর উপজেলার নাটঘর ইউনিয়নের কুড়িঘর বিলে এই ঘটনা ঘটে। তিনি কুড়িঘর গ্রামের মৃত সুরুজ আলীর ছেলে। নাটঘর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আক্তারুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা যায়, বুধবার দুপুরে কুড়িঘর গ্রামের পার্শ্ববর্তী বিলের ফসলি জমি থেকে ধান কাটতে যান আব্দুল আওয়াল। ধান কাটা শেষ করে বিলে গোসল করার সময় বজ্রপাতে ঘটনাস্থলে তিনি মারা যান।
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ধান কাটার পর বিলে বজ্রপাতে একজন কৃষক মারা যান।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাজিব চৌধুরী বলেন, নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে আবেদন করা হলে কৃষকের পরিবারকে সহযোগীতা করা হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কারা নির্যাতিত সাবেক ছাত্রনেতা এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপ-কমিটির সদস্য বীর আবু আব্বাস ভূঁইয়া তার নিজ নির্বাচনী এলাকা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে দ্বিতীয় দফা গণসংযোগ করেছেন।
আজ ৭ নভেম্বর মঙ্গলবার দুপুরে নবীনগর উপজেলার উত্তরাঞ্চলের তিনটি ইউনিয়নের একাধিক স্থানে নেতাকর্মী ও অনুসারীদের সঙ্গে নিয়ে গণসংযোগ করেন তিনি।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিজ এলাকা থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী এই নেতা বেলা ১১টার দিকে বড়াইল ইউনিয়নের বড়াইল বাজারে লিফলেট বিতরণের মধ্য দিয়ে গণসংযোগ শুরু করেন। এরপর দুপুরে তিনি গোসাইপুর বাজার পরিচালনা কমিটির কার্যালয়ে সংক্ষিপ্ত সভা করেন। সভা শেষ করে তিনি পার্শ্ববর্তী কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের কৃষ্ণনগর বাজারে গণসংযোগ করেন এবং কৃষ্ণনগর আব্দুল জব্বার স্কুল অ্যান্ড কলেজ ছুটি ঘোষণার পরপর ওই প্রতিষ্ঠান চত্বরে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী গ্রন্থ নিয়ে আলোচনা করেন।
এ সময় তিনি ১৯৪৯ সালে এই বিদ্যালয় উদ্বোধনকালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পদচারণার কথা নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরেন। এরপর তিনি বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিবিজড়িত স্থানটিতে নির্মিত স্মৃতিফলক ও বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। পরে তিনি ওই প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শিক্ষকদের সঙ্গেও মতবিনিময় করেন।
মতবিনিময় শেষে তিনি বীরগাঁও ইউনিয়নের বাইশমৌজা বাজারে গণসংযোগ করেন। সরকারের উন্নয়ন বার্তা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে তিনি গ্রামের সাধারণ মানুষদের হাতে হাতে লিফলেট বিতরণ করেন। এ সময় তার অনুসারী নেতাকর্মীরা মিছিল ও স্লোগানসহ গণসংযোগে অংশ নেন।
স্থানীয় বড়াইল ইউনিয়ন শাখা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান জাকির হোসেন, সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক মোল্লা, কৃষ্ণনগর আব্দুল জব্বার স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ফেরদাউসুর রহমান, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের দপ্তর সম্পাদক জহির রায়হান, স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ফখরুল আলম টনিক, জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ফাহিম হিরণ, নবীনগর উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি এম নাঈমুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার নারী ভাইস চেয়ারম্যান মোসাম্মাৎ শিউলি আক্তার ও তার স্বামী কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতালের স্টোর কর্মকর্তা মো. হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুদক। ২৫ মে বৃহস্পতিবার কুমিল্লা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক রাফি মো. নাজমুস্ সাদাৎ বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
মো. হাবিবুর রহমান উপজেলার চরলাপাংয়ের চিত্রী গ্রামের খোরশেদ আলমের ছেলে।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কুমিল্লা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. ফজলুল হক জানান, মো. হাবিবুর রহমান ও তার স্ত্রী শিউলি আক্তার একে অপরের সহযোগিতায় এক কোটি ৪ লাখ ১৪ হাজার ৭৬৪ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ ভোগদখলে রেখেছেন।
দুদকের অনুসন্ধানে জানা যায়, হাবিবুর রহমান ১৯৮৮ সালে স্বাস্থ্য সহকারী পদে নবীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগদান করেন। তিনি ১৯৯৩ সালে স্টোরকিপার পদে ও ২০১৫ সালে স্টোর অফিসার পদে পদোন্নতি লাভ করে বর্তমানে কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতালে ঢাকায় কর্মরত রয়েছেন। হাবিবুর রহমানের নামে ৫৫ লাখ ৯১ হাজার ৬৬৬ টাকার স্থাবর সম্পদ এবং ৩২ লাখ ৮০ হাজার টাকার অস্থাবর সম্পদ অর্জন করার তথ্য পাওয়া যায়। এছাড়া তার আয়কর নথিতে প্রদর্শিত পারিবারিক ব্যয় ১৫ লাখ ৬ হাজার ৫০৮ টাকা। পারিবারিক ব্যয়সহ তার মোট সম্পদের পরিমাণ এক কোটি ৩ লাখ ৭৮ হাজার ১৭৪ টাকা। উক্ত সম্পদ অর্জনের বিপরীতে ২০১৭-১৮ কর বর্ষে আয়কর নথি খোলার সময় পূর্বের বছরগুলোতে চাকরির বেতন-ভাতা হতে সঞ্চয় এবং আয়কর নথি খোলার পরের বেতন-ভাতাসহ আয় পাওয়া যায় ৭৮ লাখ ৮৮ হাজার ৫০৮ টাকা। অনুসন্ধানকালে তার নামে অর্জিত সম্পদের চেয়ে আয়ের উৎস ২৪ লাখ ৮৯ হাজার ৬৬৬ টাকা কম পাওয়া যায়।
অপরদিকে তার স্ত্রী নারী ভাইস চেয়ারম্যান শিউলি আক্তারের আয়-ব্যয় পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০১৯ সাল থেকে নবীনগর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তিনি ২০১৪-১৫ কর বর্ষ হতে ২০২১-২২ কর বর্ষ পর্যন্ত খাত ভিত্তিক আয়-ব্যয়ের হিসাব বিবরণী দাখিল করে আসছেন। তিনি তার দুই ছেলের নিকট থেকে হেবা ঘোষণাপত্রের মাধ্যমে প্রাপ্ত স্থাবর সম্পদ ব্যতীত তার নামে এক কোটি ১৫ লাখ ৪৫ হাজার টাকার স্থাবর সম্পদ এবং ৪৯ লাখ ৩২হাজার ৫১৪ টাকার অস্থাবর সম্পদ অর্জন করেছেন। তিনি নিজের নামে এক কোটি ৬৪ লাখ ৭৭ হাজার ৫১৪ টাকা মূল্যের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের মালিকানা অর্জন করেছেন। তার পারিবারিক ও অন্যান্য ব্যয় পাওয়া যায় ২৬ লাখ ৫৮ হাজার ৯৩৩ টাকা। পারিবারিক ব্যয়সহ তার সম্পদের পরিমাণ এক কোটি ৯১ লাখ ৩৬ হাজার ৪৪৭ টাকা। এ সম্পদ অর্জনের বিপরীতে ২০১৪-১৫ কর বর্ষে আয়কর নথি খোলার পূর্বের বছরগুলোতে বিভিন্ন আয় এবং আয়কর নথি খোলার পরের ব্যবসা, বাড়িভাড়া ও ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে প্রাপ্ত ভাতাসহ তার এক কোটি ১২ লাখ ১১ হাজার ৩৪৯ টাকার আয়ের উৎস পাওয়া যায়। তার নামে অর্জিত সম্পদের চেয়ে ৭৯ লাখ ২৫ হাজার ৯৮ টাকার আয়ের উৎস কম পাওয়া যায়। অনুসন্ধানকালে মো. হাবিবুর রহমান ও তার স্ত্রীর এক কোটি ৪ লাখ ১৪ হাজার ৭৬৪ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের তথ্য পাওয়া যায়।
চলারপথে রিপোর্ট :
নবীনগরে পুলিশের মাদক বিরোধী অভিযানে বিটঘর টু শিবপুরগামী রাস্তার উপর থেকে বিদেশি ৪৬ বোতল মদসহ বাইজিদ জমাদ্দার (২৪) নামে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
আজ ৫ অক্টোবর মঙ্গলবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলায় কর্তব্যরত এসআই (নিঃ) আক্কাস আলী সঙ্গীয় অফিসার মাদক বিরোধী অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেফতার করে। বাইজিদ জমাদ্দার কসবা উপজেলার ব্রাহ্মণগ্রাম (সানখোলা)’ র মৃত মোতালেব এর ছেলে।
গ্রেফতারকৃতের বিরুদ্ধে নবীনগর থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮ তে মামলা রুজু করা হয়।