বাঞ্ছারামপুরে পুলিশ হেফাজতে যুবককে নির্যাতনের অভিযোগ

বাঞ্চারামপুর, 23 March 2023, 1001 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় আবদুল আহম্মদ ওরফে রুবেল (২৬) নামে এক যুবককে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী উপজেলার সোনারামপুর ইউনিয়নের চরশিবপুর গ্রামের লিল মিয়ার ছেলে।

এ ঘটনায় দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন আবদুল আহম্মদের মা আমেনা বেগম। ডাকযোগে পাঠানো অভিযোগটি ২২ মার্চ বুধবার দুপুরে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে পৌঁছেছে বলে জানা গেছে৷

অভিযুক্তরা হলেন, বাঞ্ছারামপুর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) তরুণ কান্তি দে, সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আল-আমিন মানিক ও উপজেলার দুর্গাপুরের মধ্যপাড়ার বাসিন্দা রবি উল্লাহ।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, রবি উল্লাহ সঙ্গে আবদুল আহম্মদ ওরফে রুবেলের পরিবারের দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এই বিরোধকে কেন্দ্র করে আবদুল আহম্মদের পরিবার রবি উল্লাহর বিরুদ্ধে আদালতে মামলাও করেছে। মামলাটি চলমান। এরই জেরে রবি উল্লাহর সঙ্গে আহম্মদের বিরোধ আরো প্রকট হয়। রবি উল্লাহ ক্ষিপ্ত হয়ে আহম্মদ ও তার পরিবারের লোকজনের ক্ষতি করার চেষ্টা করে আসছিলেন।

এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৪ মার্চ বিকেলে রবি উল্লাহর প্ররোচনায় ও প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় অন্যায়ভাবে বাঞ্ছারামপুর মডেল থানার এএসআই আল আমিনসহ চারজন সাদা পোশাকের পুলিশ সদস্য আবদুল আহাম্মদকে তার বাড়ি থেকে আটক করেন। থানায় নিয়ে রবি উল্লাহর কথা মতো পরিদর্শক তরুণ কান্তি দে ও এএসআই আল-আমিন দফায় দফায় লাঠি দিয়ে আবদুল আহাম্মদকে মারধর করেন। মারধরের কারণে আহাম্মদের পুরো শরীরে রক্তাক্ত জখম হয়।

আটকের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আব্দুলকে আদালতে না পাঠিয়ে থানায় শারীরিকভাবে নির্যাতন অব্যাহত রাখলে তার মা সংবাদ সম্মেলনের প্রস্তুতি নেন। বিষয়টি জেনে তড়িঘড়ি করে আটকের একদিন পর ১৬ মার্চ দুপুরের দিকে আবদুলকে একটি মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠায় পুলিশ।

সেখানে আব্দুলের শরীরের জখম দেখে আদালতের পুলিশ সদস্যরা তাকে গ্রহণ না করে চিকিৎসার পরামর্শ দেন। সেসময় আদালত থেকে আবদুলকে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে পুনরায় আদালতে নেওয়া হয়। পরে আদালত তাকে জেলা কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

এই ঘটনায় গত ১৯ মার্চ রবিবার নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু নিবারণ আইনে তাদের তিনজনকে আসামি করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আহাম্মদের মা আমেনা বেগম বাদী হয়ে অভিযোগ দেন। পরদিন ২০ মার্চ সোমবার জেলা ও দায়রা জজ শারমিন নিগার মামলাটি খারিজ করে দিয়ে এ বিষয়ে পুলিশ সুপারকে জানানোর সুযোগ রয়েছে উল্লেখ করে কিছু নির্দেশনা দেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন আহম্মদের মা।

আবদুল আহম্মদের স্ত্রী মায়া মনি বলেন, আমার স্বামীকে আটকের পর পুলিশ হেফাজতে রেখে নির্যাতন করে। ১৪ মার্চ তাকে আটক করলেও ১৬ মার্চ তাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে আদালতের পাঠায়।

তিনি আরো বলেন, আবদুলকে প্রচুর নির্যাতন করে আদালতে পাঠালে কোর্ট পুলিশ আহতাবস্থায় তাকে গ্রহণ করেনি। আদালত থেকে চিকিৎসার জন্য তাকে নিয়ে যাওয়ার প্রমাণ সিসিটিভি ফুটেজ দেখলে মিলবে। পুলিশের ভয়ে আমরা নিরাপত্তাহীনতায় আছি।

জানতে চাইলে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তের জন্য অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি তদন্ত শেষে প্রতিবেদন দেবেন।

Leave a Reply

আন্দোলনে আহতদের দেখতে নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে প্রধান…

অনলাইন ডেস্ক : ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আহত ব্যক্তিদের খোঁজখবর নিতে রাজধানীর Read more

বাঞ্ছারামপুরে শেখ হাসিনাসহ তার দোসরদের বিচারের…

চলারপথে রিপোর্ট : বাঞ্ছারামপুর উপজেলা বিএনপির সহনশীলতায় বিশ্বাস করে, শান্তিপ্রিয় Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রাক্তন স্কাউটদের বিশেষ সাধারণ সভা

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রাক্তন স্কাউটস সংগঠনের গঠনতন্ত্র প্রণয়ন ও Read more

আখাউড়ায় মাকে বাঁচাতে গিয়ে মৃত্যুর কোলে…

চলারপথে রিপোর্ট : আখাউড়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় আহত মাকে দেখামাত্র অসুস্থ Read more

বিশ্বকাপ বাছাইয়ে ইকুয়েডরকে হারাল ব্রাজিল

অনলাইন ডেস্ক : ইকুয়েডরের বিপক্ষে রদ্রিগোর একমাত্র গোলে জয়ের দেখা Read more

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ ও হতাহতদের…

চলারপথে রিপোর্ট : বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া, জেলা ছাত্রদল, যুবদলের Read more

মালয়েশিয়ায় একদিনে অভিযানে ২২২ বাংলাদেশি আটক

অনলাইন ডেস্ক : মালয়েশিয়ার কেদাহ রাজ্যে অভিযান চালিয়ে ২২২ জন Read more

নবীনগরে ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ’র ৫২তম মৃত্যুবার্ষিকী…

চলারপথে রিপোর্ট : উপমহাদেশের শাস্ত্রীয় সঙ্গীত জগতের কিংবদন্তি ‘সুরসম্রাট’ খ্যাত Read more

ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর মৃত্যুবার্ষিকী আজ

চলারপথে রিপোর্ট : আজ ৬ সেপ্টেম্বর ‘সুরসম্রাট’ ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর Read more

জাতীয় সঙ্গীতের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে উদীচীর…

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জাতীয় সঙ্গীতের বিরুদ্ধে সকল ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে Read more

সালমান শাহকে হারানোর আজ ২৮ বছর

অনলাইন ডেস্ক : বাংলাদেশী চলচ্চিত্রের বাঁক ঘোরানো তুমুল জনপ্রিয় অভিনেতা Read more

দু’দল গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষে আহত প্রায়…

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবায় দুই গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষের Read more

বাঞ্ছারামপুরে বেপরোয়া গতির বাইকের চাপায় প্রাণ গেল শিশুর

বাঞ্চারামপুর, 4 March 2024, 366 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় বেপরোয়া গতির মোটরসাইকেল চাপায় মো. আয়াত (৩) নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।

৩ মার্চ রবিবার সন্ধ্যায় বাঞ্ছারামপুর উপজেলার পাড়াতলী এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। আয়াত উপজেলার আইয়ুবপুর ইউনিয়নের বাঁশগাড়ি গ্রামের মামুন সিকদারের ছেলে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রবিবার সন্ধ্যায় পাড়াতলী এলাকায় আইসক্রিম কিনতে যাওয়ার জন্য রাস্তার পাশে মায়ের সঙ্গে দাঁড়িয়ে ছিল আয়াত। এ সময় স্থানীয় রবিউল নামে এক যুবকের বেপরোয়া গতির মোটরসাইকেলের চাপায় আয়াত গুরুতর আহত হয়। পরে তাকে দ্রুত উদ্ধার করে বাঞ্ছারামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা রেফার্ড করে। ঢাকায় নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।

আয়াতের মা ফারজানা আক্তার এনি বলেন, আয়াত আমার সঙ্গে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে ছিল। এক যুবকের দ্রুতগতির মোটরসাইকেল আয়াতকে চাপা দেয়। এতে আমার ছেলে মারা গেছে। আমাদের তো কোনো দোষ ছিল না। আমি এর সঠিক বিচার চাই।

বাঞ্ছারামপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মহিউদ্দিন জানান, শিশু মৃত্যুর ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সাবেক প্রতিমন্ত্রী তাজুল ইসলামের ৯ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর

বাঞ্চারামপুর, 21 August 2024, 37 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ (বাঞ্ছারামপুর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী ক্যাপ্টেন (অব.) এ বি তাজুল ইসলামকে ২১ মাস আগে বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে করা এক মামলায় রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। আজ ২১ আগস্ট বুধবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট চতুর্থ আদালতের বিচারক সাদেকুর রহমান তাঁর ৯ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

ক্যাপ্টেন (অব.) তাজুল ইসলাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য। তিনি ২০০৮ সাল থেকে টানা চার মেয়াদে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন। এর আগে তিনি ১৯৯৬ সালে একই আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। ২০০৯ সালের শেখ হাসিনা সরকারের মন্ত্রিসভার মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান তিনি। একই সঙ্গে তিনি দলটির মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদকও ছিলেন। পরে কমিটি থেকে বাদ পড়েন। গতকাল ২০ আগস্ট মঙ্গলবার রাতে তাজুল ইসলামকে রাজধানীর বনশ্রী এলাকা থেকে আটক করে পুলিশ।

পুলিশ ও বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২০২২ সালের ১৯ নভেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারামপুরে মিছিল বের করাকে কেন্দ্র করে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। ওই সংঘর্ষ চলাকালে উপজেলার সোনারামপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সহ-সভাপতি রফিকুল পেটে গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে বাঞ্ছারামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়। ওই দিন সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান তিনি।

এ ঘটনায় ২০২২ সালের ২০ নভেম্বর বাঞ্ছারামপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আফজাল হোসেন বাদী হয়ে ৩০২ ধারাসহ (হত্যা) বিভিন্ন ধারায় বিএনপির ১৭ জন নেতা-কর্মীর নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ১০০ থেকে ১২০ জনকে আসামি করে মামলা করেন। বর্তমানে মামলাটি তদন্ত করছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। ওই মামলার এজাহারে সাবেক সংসদ সদস্য তাজুলের নাম নেই, তবে এই মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আজ দুপুরে রিমান্ডের আবেদন করে পুলিশ।

জানতে চাইলে জেলা ডিবির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সহিদুল ইসলাম বলেন, ছাত্রদল নেতা নিহত হওয়ার ঘটনায় পেছন থেকে ইন্ধনদাতা হিসেবে তাজুল ইসলামের জড়িত থাকার বিষয়ে তথ্যপ্রমাণ পেয়েছে পুলিশ। এ কারণে অজ্ঞাতনামা আসামি হিসেবে তাঁকে মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

ওসি সহিদুল ইসলাম বলেন, ওই মামলায় জেলা গোয়েন্দা শাখার উপপরিদর্শক (এসআই) সোহেল আহমেদ ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। আদালতে ৯ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর হয়েছে। এর আগে একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে তিনি ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ পুলিশ কর্মকর্তারা তাঁকে ঢাকা থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিয়ে আসেন।

সরেজমিন দেখা গেছে, আজ দুপুরে তাজুল ইসলামকে পুলিশের বুলেট প্রুফ জ্যাকেট ও হেলমেট পরিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট চতুর্থ আদালতে তোলা হয়। এ সময় আদালতের ভেতর বিএনপির আইনজীবীরা ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদনের জন্য হইচই করেন। আওয়ামী লীগের চারজন আইনজীবী সেখানে উপস্থিত হলেও পরিস্থিতি অনুকুলে না থাকায় কোনো কথা বলেননি। একপর্যায়ে তাঁরা এজলাস ত্যাগ করে চলে যান। তিনটায় আদালতের রায়ের পর প্রিজন ভ্যানে তুলে পুলিশ তাঁকে আদালত থেকে নিয়ে যায়। এ সময় বিএনপির আইনজীবীরা বিভিন্ন স্লোগান দেন।

কয়েকজন আইনজীবী বলেন, আদালত প্রথমে তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। আইনজীবীদের হইচইয়ের কারণে পরে ৯ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি কামরুজ্জামান মামুন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক তারেকুল ইসলাম খান ও জেলা ‍যুবদলের সহ-সভাপতি আইনজীবী আবদুর রহিম বলেন, ছাত্রদল নেতা রফিকুল হত্যা মামলায় তাজুল ইসলামের ইন্ধন রয়েছে। সে সময় থানায় মামলা করতে গেলেও পুলিশ গ্রহণ করেনি। আদালতে পুলিশসহ ৬০ জনের বেশি আসামি করে মামলা দিলেও তা খারিজ হয়ে যায়।

এদিকে তাজুল ইসলামকে গ্রেপ্তারের খবরে আজ দুপুরে বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় আনন্দমিছিল করেছে উপজেলা বিএনপি ও সহযোগী অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। দুপুরে উপজেলার মুসা মার্কেট থেকে কেন্দ্রীয় কৃষক দলের নেতাকর্মীরা আনন্দমিছিল বের করে উপজেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান প্রদক্ষিণ করেন।

এতে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কৃষক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান, উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব আবদুল্লাহ আল মহসিন, সদস্য সাখাওয়াত হোসেন, আবদুল করিম, দেলোয়ার হোসেন, আবদুল করিম, উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক হারুন অর রশিদ প্রমুখ।

বঙ্গবন্ধুর ডাকে সারা দিয়ে এদেশের স্বাধীনতা এনেছি : তাজুল ইসলাম এমপি

বাঞ্চারামপুর, 21 August 2023, 621 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ক্যাপ্টেন (অব.) এবি তাজুল ইসলাম এমপি বলেছেন, এদেশের মাটির মালিক দেশের জনগণ, ক্ষমতায় আসতে হলে জনতার কাছে যেতে হবে। প্রবাসে বসে আর টকশোতে কথা বলে ক্ষমতায় আসতে পারবেন না। জাতির জনকের কথায় রক্ত দিয়ে এদেশের স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছি। আর তারই সুযোগ্য কন্যা মামনীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নত রাষ্ট্রে পরিনত হচ্ছে দেশ।

তিনি আরো বলেন, ১৫, ২১ আগষ্ট যারা ঘটিয়েছে তারা নির্বাচনে আসতে ভয় পায়, কিন্তু ষড়যন্ত্রে তারা নাম্বারে এক। আগামী নির্বাচনে ষড়যন্ত্রকারীদেরকে জনগণ ভোট দিবে না, জনগণ শেখ হাসিনাকেই আবার নির্বাচিত করে দেশের রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসিন করবে।

আজ ২১ আগস্ট সোমবার বাঞ্ছারামপুর ক্যাপ্টেন এবি তাজুল ইসলাম অডিটোরিয়ামে উপজেলা আওয়ামী লীগ কর্তৃক আয়োজিত ২১আগষ্ট গ্রেনেড হামলার আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

বাঞ্ছারামপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. সিরাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে আরো উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মো. মহি উদ্দিন আহমেদ মহি, জেলা আওয়ামী লীগ সহ-সভাপতি প্রিন্সিপাল আবুল খায়ের দুলাল, উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মো. নুরুল ইসলাম, সহ-সভাপতি মো. সায়েদুল ইসলাম বকুল ভূইয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী জাদিদ আল রহমান জনি, বাঞ্ছারামপুর পৌর মেয়র তফাজ্জল হোসেন, সাংস্কৃতিক সম্পাদক মাহবুুুবুর রহমান উজ্জল, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ সভাপতি মাহমূদুল হাসান ভূঁইয়া, উপজেলা শ্রমিকলীগ আহ্বায়ক সৈয়দ আ. আজিজ, উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি এমএস রানা, সাধারণ সম্পাদক আঃ রাজ্জাক, পৌর ছাত্রলীগ সভাপতি হিমেল সরকার, সাধারণ সম্পাদক সামুয়েল আহমেদ, কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি মাসুদ রানা, সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান মাসুদ প্রমুখ।

ভোটে লড়তে ইউপি চেয়ারম্যানের পদ ছাড়লেন আমিনুল ইসলাম

বাঞ্চারামপুর, 30 April 2024, 301 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মবাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারামপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে অংশ নিতে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম।

২৮ এপ্রিল রবিবার তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ে পদত্যাগপত্র জমা দেন।

আমিনুল ইসলাম ব্রাহ্মবাড়িয়া জেলার উপজেলার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার ছয়ফুল্লাহকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের টানা তিনবারের চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ (বাঞ্ছারামপুর) আসনের সংসদ সদস্য এ বি তাজুল ইসলামের ভাতিজা ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি।

জেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্র জানায়, ২৯ মে তৃতীয় ধাপে বাঞ্ছারামপুর ও আশুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২ মে, যাচাই-বাছাই ৫ মে ও প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ১২ মে।

সংসদ সদস্য এ বি তাজুল ইসলামের ভাগিনা কাজী জাদিদ আল রহমান উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও উপজেলার উজানচর ইউনিয়ন পরিষদের দুইবারের চেয়ারম্যান। তিনিও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন। কিন্তু কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নির্দেশনা পেয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে তিনি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান। তবে ভাগিনা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেও সংসদ সদস্যের ভাতিজা মাঠে আছেন।

স্ত্রী হত্যায় স্বামীর ১০ বছরের সশ্রম কারাদন্ড

বাঞ্চারামপুর, 23 November 2023, 478 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় গৃহবধূ রহিমা বেগম (২৮) হত্যা মামলায় ঘাতক স্বামী মো. আল আমিন মিয়া (৩২) কে ১০ বছরের সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেছে আদালত।

আজ ২৩ নভেম্বর বৃহস্পতিবার দুপুরে আসামির উপস্থিতিতে আদালত এই রায় প্রদান করেন।

আদালত ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, বাঞ্ছারামপুর উপজেলার ছয়ফুল্লাকান্দি ইউনিয়নের মধ্যনগর গ্রামের মুন্সিবাড়ির জাকির হোসেন এর কন্যা রহিমা বেগমের সঙ্গে একই উপজেলার দড়িকান্দি ইউনিয়নের খাল্লা নতুনপাড়া গ্রামের কুদ্দুস মিয়ার ছেলে মো. আল আমিন মিয়ার সঙ্গে বিয়ে হয়। আল আমিন পেশায় অটোরিক্সা চালক ছিলেন। দীর্ঘ ৮ বছরের দাম্পত্য জীবনে নুসাইবা আক্তার (৬) নামে তাদের সংসারে একটি কন্যা সন্তান রয়েছে।

এদিকে রহিমা ও আমিনের পরিবারে অভাব-অনটনসহ পরিবারিক নানা বিষয়াদি নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া বিবাদ লেগেই থাকতো। এর মধ্যে হত্যার ঘটনার ৩ মাস আগে রহিমার স্বামী আল আমিন মিয়া রহিমার অজান্তে খাল্লা গ্রামের এক লোকের কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা ধার নেয়। পরে এই ধারের টাকা পরিশোধ করার জন্যে রহিমার উপর চাপ দেয় স্বামী আল আমিন। ধারের টাকা কিভাবে পরিশোধ করবে এ নিয়ে প্রায়শই তাদের মধ্যে ঝগড়া হতো। পরে এ নিয়ে ২০২১ সালের ১৫ ডিসেম্বর বুধবার রাত অনুমানিক ২টার দিকে স্বামী- স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়। ঝগড়া চলাকালে আল আমিন উত্তেজিত হয়ে লোহার রড দিয়ে রহিমার মাথায় আঘাত করলে ঘটনাস্থলেই রহিমা প্রাণ হারায়। পরে রহিমা নিহত হওয়ার ঘটনাটিকে ভিন্ন দিকে চালিয়ে দেওয়ার জন্যে তার স্বামী আল আমিন বাড়িতে চোর এসেছে বলে চিৎকার করতে থাকে। পরে তার চিৎকারে এলাকার লোকজন জড়ো হয়। এরই মধ্যে খবর পেয়ে রাতেই নিহতের পরিবারের সদস্যরা ঘটনাস্থলে ছোঁটে আসেন। পরে তারা জানতে পারেন রহিমাকে তার স্বামীই হত্যা করেছে। পরে এলাকাবাসীর সহায়তায় স্বামী আল আমিনকে ধরে ওই রাতেই পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন। পরে নিহত রহিমার পিতা মো. জাকির হোসেন বাদী হয়ে আল আমিনকে প্রধান আসামি করে বাঞ্ছারামপুর থানায় একটি হত্যা মামালা দায়ের করেন। পরে মামলটি অধিকতর তদন্ত করে থানা পুলিশ আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন। আসামিও ১৬৪ ধারায় আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করেছেন। পরে আদালত স্বাক্ষী প্রমানের ভিত্তিতে আসামির উপস্থিতিতে আল আমিনকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন। রায়ে ৫ হাজার টাকা অর্থদন্ডও প্রদান করা হয়। অনাদায়ে আরো ৬ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়।

মামলার রায় প্রসঙ্গে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিডিউটর এডভোকেট মাহবুবুল আলম খোকন জানান, মামলটি সন্দেহাতিত ভাবে প্রমাণিত হওয়ায় ৩০৪ ধারায় আসামিকে ১০ বছরের কারাদণ্ড প্রদান করা হয়। এ রায়ের মধ্য দিয়ে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।