চলারপথে রিপোর্ট :
হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে সিএনজি অটোরিক্সা ও এক্সকেভেটরের সংঘর্ষে দুই ভাই নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছে একই পরিবারের আরও তিনজন।আজ ২৫ মার্চ শনিবার সন্ধ্যা ৭ টার দিকে হবিগঞ্জ-বানিয়াচং সড়কের ভাটিপাড়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
আহতদের উদ্ধার করে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। নিহতরা হলো- বানিয়াচং উপজেলার ছিলাপাঞ্জা গ্রামের কালাই উল্লাহর ছেলে আব্দুল মঈন (৬০) ও তাজ উদ্দিন (৩৫)।
বানিয়াচং থানার (ওসি) অজয় চন্দ্র দেব জানান, আব্দুল মঈনের শাশুড়ির নামাজে জানাজায় যোগ দিতে দুপুরে নিজ বাড়ি থেকে একই উপজেলার উজিরপুরে যান পরিবারের পাঁচজন। সেখান থেকে সন্ধ্যায় পাঁচজন সিএনজি অটোরিক্সায় বাড়ি ফিরছিলেন। এ সময় তাদের সিএনজি অটোরিক্সাটি ভাটিপাড়া এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি এক্সকেভেটরের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই দুই ভাই মারা যান। বাকি তিন আহতকে উদ্ধার করে প্রথমে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে সিলেটে প্রেরণ করা হয়।
অনলাইন ডেস্ক :
জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করতে সব ধরনের প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, ২৪ মে প্রধান উপদেষ্টার সাথে অনুষ্ঠিত এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন, এমন একটি নির্বাচন হবে যেখানে একটি ইতিহাস তৈরি হবে। প্রত্যেকটি মানুষ হাসিমুখে ভোট দিয়ে বের হবে। কেউ গিয়ে দেখবে না যে, একজনের ভোট আরেকজন দিয়ে এসেছে।
আজ ২৫ মে রবিবার দুপুরে মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় আয়োজিত চা শ্রমিকদের সাথে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
বৈঠকে জামায়াতের পক্ষ থেকে নির্বাচনের স্বচ্ছতা ও অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে নানা প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বলেও জানান ডা. শফিকুর রহমান। তিনি আরও বলেন, মানবিক করিডোর না দেওয়ার বিষয়ে আমাদের অবস্থান সরকারকে জানানো হয়েছে।
চা শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়ন এবং তাদের নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠার বিষয়ে তিনি বলেন, এই দেশে সকল নাগরিক সমান অধিকার নিয়ে বেঁচে থাকবে। চা শ্রমিকদের দায়িত্বও সরকারকে অন্যান্য নাগরিকদের মতো সমানভাবে নিতে হবে। তারা এখনও মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত। আমরা যদি জনগণের ভোটে দায়িত্ব পাই, তাহলে তাদের সম্মানের সঙ্গে বসবাস নিশ্চিত করব। তাদের সন্তানদের প্রতিভার বিকাশে পাশে থাকব। চা শ্রমিকদের শিক্ষিত করে আধুনিক বাগান ব্যবস্থাপনার সঙ্গে যুক্ত করার চিন্তা আমাদের রয়েছে। ধর্মের ভিত্তিতে আমরা কাউকে বিবেচনা করি না। আমরা একটি বন্ধুপ্রতিম সমাজ গড়তে চাই। চা শ্রমিকদের উদ্দেশে বলতে চাই- আপনার ডাক দিতে সময় লাগবে, কিন্তু আমাদের পৌঁছাতে সময় লাগবে না। আমরা সবাই এই দেশের মালিক।
উপজেলা জামায়াতের আমির সহকারী অধ্যাপক আব্দুল মুন্তাজিমের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, সিলেট মহানগরীর আমির মো. ফখরুল ইসলাম, জেলা জামায়াতের আমির প্রকৌশলী এম. সায়েদ আলী, সেক্রেটারি অধ্যক্ষ ইয়ামীর আলী, উপজেলা জামায়াতের সাবেক আমির খন্দকার আব্দুস সোবহান ও প্রভাষক হামিদ খান, বর্তমান সেক্রেটারি বেলাল আহমদ চৌধুরী এবং জেলা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মো. নিজাম উদ্দিন প্রমুখ।
চা শ্রমিকদের সাথে মতবিনিময় ছাড়াও ডা. শফিকুর রহমান দিনব্যাপী বিভিন্ন দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
নেত্রকোনায় আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও সচেতনতামূলক মহড়া অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ ১২ অক্টোবর বৃহস্পতিবার বেলা ১২টায় নেত্রকোনা শহরের ঐতিহাসিক মোক্তারপাড়া মাঠে ‘অসমতার বিরুদ্ধে লড়াই করি, দুর্যোগ সহনশীল ভবিষ্যৎ গড়ি’ স্লোগানে দিবসটি পালিত হয়।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের সহযোগিতায় জেলা প্রশাসনের আয়োজনে আলোচনা সভা এবং ভূমিকম্প ও অগ্নিকাণ্ড বিষয়ক সচেতনতা মূলক মহড়া প্রদর্শন করে নেত্রকোনা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা।
সচেতনতা মহড়া প্রদর্শন পূর্বক আলোচনা সভায় জেলা প্রশাসক শাহেদ পারভেজের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মামুন খন্দকার, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) আশিক নূর, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) শাহ শিবলী সাদিক, ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক হাফিজুর রহমান (ডিএডি), জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মোহাম্মদ রুহুল আমীন, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানিয়া তাবাসসুম, নেত্রকোনা পৌর মেয়র নজরুল ইসলাম খান, রেড ক্রিসেন্টের সম্পাদক গাজী মোজাম্মেল হোসেন টুকু।
ভূমিকম্প প্রতিরোধ ও অগ্নি নির্বাপক মহড়ার নেতৃত্ব দেন নেত্রকোনা ফায়ার স্টেশনের লিডার খানে আলম খান। মহড়ায় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের স্কাউটরা অংশ নেয়।
aঅনলাইন ডেস্ক :
রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কর্তৃক পরিচালিত অভিযানে সহযোগিতার জন্য সংশ্লিষ্ট এলাকার আপডেটেড যোগাযোগ নম্বর প্রকাশ করেছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)।
আজ ১৩ মে মঙ্গলবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আইএসপিআরের সহকারী পরিচালক রাশেদুল আলম খান এই তথ্য জানান। আইএসপিআর জানায়, নিম্নোক্ত এলাকায় সেনা ক্যাম্পের সহায়তা প্রয়োজন হলে সংশ্লিষ্ট নম্বরসমূহে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ করা যাচ্ছে-
বিজ্ঞপ্তিতে গাজীপুর, কোনাবাড়ী, পূবাইল, কালিয়াকৈর, জয়দেবপুর, টঙ্গি, কাপাসিয়া, কালিগঞ্জ, কাশিমপুর, শ্রীপুর, নারায়ণগঞ্জ, বন্দর, ফতুল্লা, সিদ্ধিরগঞ্জ, আড়াইহাজার, রূপগঞ্জ, সোনারগাঁও এবং গজারিয়ার জন্য ০১৭৬৯-০৯৫১৯৮, ০১৭৬৯-০৯৫২৫০ ও ০১৭৬৯-০৯১০২০ নাম্বারে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।
ডেমরা, ওয়ারী, রমনা, শাহবাগ, পল্টন, মতিঝিল, কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন, শাহজাহানপুর, কোতোয়ালী, বংশাল, গেন্ডারিয়া, সূত্রাপুর, যাত্রাবাড়ী, শ্যামপুর এবং কদমতলী এলাকার জন্য ০১৭৬৯-০৯২৪২৮, ০১৭৬৯-০৯৫১৯৮, ০১৭৬৯-০৯৫২৫০ ও ০১৭৬৯-০৯১০২০ নাম্বারে যোগাযোগ করতে হবে।
সাভার, আশুলিয়া, কেরানীগঞ্জ, হেমায়েতপুর, বাইপাইল, দোহার, গাজীপুর, মৌচাক ও মানিকগঞ্জের জন্য ০১৭৬৯-০৯৫২০৯, ০১৭৬৯-০৯৫১৯৮, ০১৭৬৯-০৯৫২৫০ ও ০১৭৬৯-০৯১০২০ মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগের অনুরোধ জানিয়েছে আইএসপিআর।
ফরিদপুর, নরসিংদী, মুন্সিগঞ্জ এবং শরীয়তপুর এলাকায় থাকা সেনাক্যাম্পে যোগাযোগের নম্বরসমূহ হলো ০১৭৬৯-০৯৩৫০৯, ০১৭৬৯-০৯৫১৯৮, ০১৭৬৯-০৯৫২৫০ ও ০১৭৬৯-০৯১০২০।
বিমানবন্দর, খিলক্ষেত, দক্ষিণ খান, উত্তরখান ও উত্তরা পূর্ব এলাকায় থাকা সেনাক্যাম্পে যোগাযোগের নম্বরসমূহ হলো ০১৭৬৯-০২৫৭৬৬, ০১৭৬৯-০২৫৭৬৯, ০১৭৬৯-০২৫৮৬৫, ও ০১৭৬৯-০২৫৭৬৭।
মিরপুর মডেল থানা, মিরপুর-২, ৬, ৭, ১০, দুয়ারীপাড়া, রুপনগর, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া ও মনিপুর এলাকার যোগাযোগের নম্বরসমূহ হলো ০১৭৬৯-০৫০৭১০, ০১৭৬৯-০৫০৬৯৩, ০১৭৬৯-০৫০৬৯৫ ও ০১৭৬৯-০৫০৬৯৬।
উত্তরা তুরাগ থানা ও উত্তরা পশ্চিম থানা এলাকায় থাকা সেনাক্যাম্পে যোগাযোগের নম্বরসমূহ হলো ০১৭৬৯-০৮২৮৩৬, ০১৩১৮-৩৭১৫৫৪, ০১৩১৮-৩৭১৫৫৫।
দারুসসালাম থানা এবং শাহআলী থানার জন্য যোগাযোগের নম্বরসমূহ হলো ০১৭৬৯-০৩৩৭০০, ০১৭৬৯-০৩৩৭০২, ও ০১৭৬৯-০৩৩৭০৪।
গুলশান, বনানী, ভাটারা এবং বাড্ডা থানা এলাকার যোগাযোগের নম্বরসমূহ হলো ০১৭৬৯০৫০২৮৩, ও ০১৭৬৯০১১৫৫৯।
এছাড়াও খিলগাঁও, সবুজবাগ ও মুগদা থানার জন্য ০১৭৬৯০৫৩১৪৪; রামপুরা, সবুজবাগ এবং তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় ০১৭৬৯০৫৩১৬৮; ক্যান্টনমেন্ট, কাফরুল ও ভাসানটেক এলাকায় ০১৭৬৯-০৫১৮২৫, ০১৭৬৯-০১৯০৭৩ ও ০১৭৬৯-০১৩২৩৬; হাজারীবাগ, ধানমন্ডি, কলাবাগান এবং নিউমার্কেট থানায় ০১৮৯৭৯১৪৮৬২, ০১৮৯৭৯১৪৮৬৩, ০১৮৯৭৯১৪৮৬৪, ০১৮৯৭৯১৪৮৬৫, ০১৭৬৯০৫১৮৩৮, ০১৭৬৯০৫১৮৩৯।
শের-ই-বাংলা নগর, আদাবর এবং মোহাম্মদপুর থানা এলাকায় ০১৮১৫৭৯৫৯৫১, ০১৭৬৯০৫৯৮৮৮, ০১৭৬৯০৫১৮৩৮, ০১৭৬৯০৫১৮৩৯; তেজগাঁও থানা এলাকার জন্য ০১৭৬৯০১৯৪০৯, ০১৭৬৯০১৯৪১৫, ০১৭৬৯০৫১৮৩৮, ০১৭৬৯০৫১৮৩৯; লালবাগ, চকবাজার এবং কামরাঙ্গীরচর থানা এলাকার সেনাক্যাম্পের সহায়তা পেতে ০১৭৬৯০১৩৪৩৯, ০১৬১৯৮৩২০৬৯, ০১৭৬৯০৫১৮৩৮ ও ০১৭৬৯০৫১৮৩৯ মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগের অনুরোধ জানিয়েছে আইএসপিআর।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে- দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কর্তৃক অভিযান অব্যাহত রয়েছে। সাধারণ জনগণকে যেকোনো সন্দেহজনক কার্যকলাপের বিষয়ে নিকটস্থ সেনা ক্যাম্পে তথ্য দেওয়ার অনুরোধ জানানো হচ্ছে।
জায়েদুল কবির ভাঙ্গি, আঞ্চলিক প্রতিনিধি, গাজীপুর :
রাত পোহালেই ৭ জুন শনিবার পবিত্র ঈদুল আযহা। ঈদযাত্রার শেষ দিনে গাজীপুরের ঢাকা-ময়মনসিংহ ও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে আজ ৬ জুন শুক্রবার সকাল থেকেই গাড়ি ও মানুষের ঢল নেমেছে।
ফলে আজ ৬ জুন সকালে গাজীপুরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যানজটের ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে ঘরমুখো মানুষকে। সকাল ৭টার দিকে ভোগড়া বাইপাস মোড় ও চান্দনা-চৌরাস্তা এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে ফ্লাইওয়ের মধ্যে ঘরমুখো যাত্রীবাহী সকল গাড়ি অনেকটা ঠাঁই দাড়িয়ে রয়েছে দীর্ঘক্ষণ ধরে। যাত্রীদের অনেকেই গাড়ির ভেতরে গরমে অতিষ্ঠ ও দীর্ঘক্ষনের অপেক্ষায় বিরক্ত হয়ে রাস্তা তথা ফ্লাইওয়েতে নেমে যান। কখন গাড়ি চলবে সেই সময় গুনতে থাকেন।
নেত্রকোনাগামী নেত্র পরিবহনের এক বাসযাত্রী আবুল কালাম ৫বছরের শিশুসন্তান নিয়ে শুক্রবার ভোর চার দিকে ঢাকা থেকে রওনা হয়ে সকাল ৭টার দিকে গাজীপুরের ভোগড়া বাইপাস মোড়ের ফ্লাইওয়েতে পৌঁছে যানজটের কবলে চল্লিশ মিনিট ধরে বাসে বসে আছেন। তার শিশুসন্তানটি গরমে অতিষ্ঠি হয়ে কান্না শুরু করলে নিচে নেমে অপেক্ষা করতে থাকেন।
ময়মনসিংহ থেকে পিকআপ যোগে মুরগী পরিবহন করে রাজধানী যাচ্ছিলেন ব্যবসায়ী আকরাম হোসেন। তিনি জানান, শুক্রবার সকালে গাজীপুরের চৌরাস্তা এলাকায় পৌঁছানোর চার কিলোমিটার আগে থেকেই যানজটে আটকা পড়েন। যানজটের কবলে পড়ে গরমে ইতোমধ্যে তার ২০টির মতো মুরগী মারা গেছে। বৃহস্পতিবারও একই কারণে তার ১৮টি মুরগী মারা যায়। যানজট মানুষের যেমন ভোগান্তি বাড়াচ্ছে, অন্যদিকে মানুষ আর্থিক ক্ষতিরও শিকার হচ্ছে।
গাজীপুরের চান্দনা-চৌরাস্তা এলাকায় বিকল্প যান মোটরবাইকও যাত্রী পরিবহণ করছে। এখানকার মোটর বাইকচালক জনি জানান, বৃহস্পতিবার যানজটের মধ্যেও যাত্রী নিয়ে চলা গেছে। কিন্তু শুক্রবার সকালে এমন একটা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে যে চান্দনা-চৌরাস্তা এলাকায় খালি দেহ নিয়ে পার হওয়ার মতো অবস্থা নেই। তারপরও বিকল্প পথে যাত্রী নিয়ে তারা যেতে পেরেছেন। কিন্তু অন্য পরিবহণকে দীর্ঘক্ষণ একই জায়গায় দাড়িয়ে থাকতে হয়েছে।
ঢাকার হৃদরোগ হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়ে অ্যাম্বুলেন্সযোগে রোগী নিয়ে ফিরছিলেন আলী। তিনিও শুক্রবার সকলে গাজীপুরের ভোগড়া ফ্লাইওয়েতে যানজটে আটকা পড়েন। প্রায় চল্লিশ মিনিট একইস্থলে দাঁড়িয়ে থেকে তিনি গালাগালি শুরু করেন পুলিশকে। কিন্তু আশেপাশে কোন পুলিশ ছিলো না। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, আমরা এ ভোগান্তি থেকে কবে রক্ষা পাব। দীর্ঘক্ষণ গরমের মধ্যে আটকা পড়ে রোগীও অসুস্থ্য হয়ে উঠেছে।
এদিকে, সকালে গাজীপুরের টঙ্গীর স্টেশনরোডের উত্তরে চেরেগ আলী এলাকার পর থেকে চান্দনা চৌরাস্তার তেলিপাড়া পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে যানবাহনের দীর্ঘ সারি লক্ষ্য করা গেছে।
এছাড়া একইসময়ে কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক এলাকা থেকে চন্দ্রা মোড় পর্যন্ত যানবাহনের দীর্ঘ লাইন রয়েছে। বৃহস্পতিবার বা তার আগে যারা বাড়ি যেতে পারেননি তারা আজ শুক্রবার সকাল থেকে রওনা হয়েছেন। ভোর থেকেই তারা ঢাকা-টাঙ্গাইল ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে জড়ো হয়ে অপেক্ষা করছেন বাস কিংবা গণপরিবহনের জন্য। যে যেভাবে পারছেন ট্রাক কিংবা পিকআপে করেও গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন।
রংপুর থেকে ছেড়ে আসা বাসের চালক আবুল কাশেম জানান, গতকাল যেসব বাস গাজীপুর থেকে ছেড়ে উত্তরাঞ্চলে গিয়েছিল তারা কালিয়াকৈর-চন্দ্রা মোড়, টাঙ্গাইল এবং যমুনা সেতুর উভয় প্রান্তে ব্যাপক যানজটের কবলে পড়ে। তাই নির্ধারিত সময়ের চাইতেও অধিক সময় লেগেছে গন্তব্যে পৌঁছাতে। এছাড়া যাত্রী নামিয়ে গাজীপুরে ফিরতেও অনেক সময় লেগেছে। যার কারণে আজ শুক্রবার সকাল থেকেই বাসের সংখ্যা তুলনামূলক কমে গেছে।
গাজীপুর মহানগরের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর মো. আক্তারুজ্জামান জানিয়েছেন, আজ ভোরে চান্দনা-চৌরাস্তা এলাকায় একটি লরি বিকল পয়ে পড়লে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে যানবাহন আটকা পড়ে গাড়ির দীর্ঘ লাইন সৃষ্টি হয় প্রায় এক ঘন্টা পর লরিটি উদ্ধার করলে যানবাহন চলাচল শুরু হয়। তবে এর এক ঘন্টা পরও গাড়ির চাপ কমেনি। এদিকে মনোযোগ দিতে গিয়ে কারা বেশি ভাড়া নিচ্ছে সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হয়নি। সকাল সাড়ে ৯টার দিকেও গাজীপুরের চান্দনা-চৌরাস্তা এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে ঘরমুখো মানুষ ও যানবাহনের প্রচন্ড ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।
কালিয়াকৈর পল্লীবিদ্যুৎ এলাকার পোশাক শ্রমিক অনোয়ার হোসেন বলেন, বৃহস্পতিবার ‘‘কারখানা ছুটি হয়েছে দুপুরে। এরপর শুক্রবার সকালে গ্রামের বাড়ি বগুড়ায় যাওয়ার জন্য অটোরিকশায় চন্দ্রায় যাই৷ সেখানে গিয়ে দেখি হাজার হাজার যাত্রী। কোন বাস-গাড়ি খালি নেই। কখন বাস পাব আর কখন বাড়ি পৌঁছব জানি না।’’ নাওজোর হাইওয়ে পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সওগাতুল আলম বলেন, বৃহস্পতিবার ‘‘দুপুরে কলকারখানা ছুটির পর বিকেলে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের মৌচাক, চন্দ্রা মোড় ও সফিপুর এলাকায় যাত্রীদের ঢল নামে। শুক্রবার সকালেও একই অবস্থা চলছে। যানবাহন সঙ্কটে কিছুটা ভোগান্তি হচ্ছে। মহাসড়কে যানবাহনের চাপ রয়েছে।’’
ওসি সওগাতুল আলম বলেন, বৃহস্পতিবারের তুলনায় আজ সকালে সড়কে গণপরিবহন ও যাত্রীসংখ্যা বেড়েছে। তবে যাত্রীর তুলনায় গণপরিবহনের সংখ্যা কম। শুক্রবার সকালে যাত্রীদের একটু চাপ বেশি থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে চাপ কমে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের পরিদর্শক তরিকুল ইসলাম জানান, গাজীপুর চান্দনা চৌরাস্তায় সকাল থেকেই যাত্রীদের ভিড় থাকায় যানবাহনের চাপ রয়েছে। তবে বেলা বাড়ার সাথে সাথে সেই চাপ কমে আসবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
চট্টগ্রামে প্রাইভেটকারের ধাক্কায় মোটর সাইকেলে থাকা মোহাম্মদ মুজাহিদ চৌধুরী নামের এক ট্রাফিক সার্জেন্ট নিহত হয়েছেন। ১৩ মার্চ সোমবার রাত ১১টার দিকে বন্দরের আউটার রিং রোড এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত মোহাম্মদ মুজাহিদ চৌধুরীর গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ উপজেলার তালশহর গ্রামে।
তিনি চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) বন্দর ট্রাফিক বিভাগে কর্মরত ছিলেন।স্ত্রী ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। সন্তানের মুখ দেখার আগেই সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হলেন এ ট্রাফিক সার্জেন্ট। বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন সিএমপির বন্দর ট্রাফিক জোনের উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান।
তিনি বলেন, পতেঙ্গা এলাকায় ডিউটি ছিল মুজাহিদের। আরেক সার্জেন্ট ও কনস্টেবলের সঙ্গে আলাদা আলাদা মোটর সাইকেলে তারা ফৌজদারহাটের দিকে যাচ্ছিলেন। পথে ওয়াই জংশন এলাকায় পৌঁছালে দ্রুতগামী একটি প্রাইভেটকার তাকে পেছন দিক থেকে ধাক্কা দেয়। এতে সড়কে ছিটকে পড়েন মুজাহিদ। আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে পাহাড়তলি থানার পুলিশ প্রাইভেটকার চালককে আটক করেছে।
পুলিশের এই কর্মকর্তা আরো জানান, মুজাহিদের স্ত্রী ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। আগামী মাসেই তিনি সন্তান প্রসব করবেন বলে চিকিৎসক সম্ভাব্য তারিখ জানিয়েছেন। প্রিয় সন্তানের মুখ দেখার জন্য অধীর আগ্রহে ছিলেন মুজাহিদ। সন্তানের মুখ দেখার আগেই সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল তার।