মুসল্লীর অপেক্ষায় আখাউড়া মডেল মসজিদ

আখাউড়া, 9 April 2023, 1022 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
আখাউড়ায় অত্যাধুনিক দৃষ্টিনন্দন মডেল মসজিদের উদ্বোধন হয়েছে। গত ১৬ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আখাউড়া উপজেলা মডেল মসজিদসহ সারা দেশে ৫০টি মসজিদের উদ্বোধন করেন।

তিন তলা ভীত বিশিষ্ট এ মসজিদটিতে প্রায় ১০০০ হাজার মুসল্লী নামাজ আদায় করতে পারবে। নামাজ ছাড়াও থাকছে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা। আখাউড়া-আগরতলা সড়কের উপজেলা প্রশাসনিক ভবনের পূর্বে পাশে সড়কের দিক মুখ করে মসজিদটি নির্মাণ করা হয়েছে।

তবে উদ্বোধন হলেও ইমাম-মুয়াজ্জিন নিয়োগ চূড়ান্ত না হওয়ায় এবং কিছু কাজ বাকী থাকায় নামাজসহ অন্যান্য কার্যক্রম এখনও শুরু হয়নি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রমজানের ঈদের পরে নামাজসহ অন্যান্য কার্যক্রম শুরু হবে।

জানা যায়, মুজিববর্ষ উপলক্ষে দেশের প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় দৃষ্টিনন্দন ৫৬০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণ করছে সরকার। ধর্ম মন্ত্রণালয় ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের যৌথ উদ্যোগ বাস্তবায়িত করেছে সরকারের গণপূর্ত অধিদপ্তর। নির্মিত অত্যাধুনিক এই মডেল মসজিদে একসঙ্গে প্রায় ১০০০ মুসল্লির নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা।

নারীদের আলাদা ওজু ও নামাজ পড়ার ব্যবস্থাও রয়েছে। নারী ও পুরুষের নামাজ আদায় ছাড়াও থাকছে ইসলামিক বই বিক্রয় কেন্দ্র, লাইব্রেরি, ইমাম প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, হেফজখানা, শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম, নারী ও হজ যাত্রীদের নিবন্ধন, প্রশিক্ষণ প্রভৃতি।

এরই ধারাবাহিকতায় ১২ কোটি ৪১ লাখ টাকা ব্যয়ে আখাউড়া উপজেলা মডেল মসজিদ নির্মাণ করা হচ্ছে। উপজেলা পরিষদ ভবনের সামান্য পূর্বে আখাউড়া-আগরতলা সড়কের দক্ষিণ পাশে আধুনিক নির্মাণশৈলী ও নান্দনিক ডিজাইনে তিনতলা বিশিষ্ট দৃষ্টিনন্দন মডেল মসজিদের নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স মোস্তাফা কামাল এন্ড মেসার্স নির্মাণ বিল্ডার্স আধুনিক এই মসজিদটি নির্মাণ করছে। ২০১৯ সালের ১৩ ডিসেম্বর আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এমপি মসজিদের নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।

ভবন নির্মাণ সংক্রান্ত তথ্যে জানা যায়, তিন তলা ভবনের নীচ তলা ১০ হাজার ৬০০ বর্গফুট, ২য় তলা ১০ হাজার ৬৭০ বর্গফুট এবং ৩য় তলা ৭ হাজার ৪১৫ বর্গফুট আয়তন রয়েছে। এছাড়া ইমাম-মুয়াজ্জিনের আবাসহ কর্মকর্তা কর্মচারীদের জন্য অফিসের ব্যবস্থা এবং গাড়ি পার্কিংয়ের সুবিধা রাখা হয়েছে।

সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, সাদা রংয়ের তিন তলা ভবনটি নির্মাণ শৈলীর গুণে খুবই সুন্দর লাগছে। ভেতরে আলোকসজ্জাসহ কাঠের নকশার ডিজাইন খুবই আকর্ষণীয়। শ্রমিকরা সাইড ওয়ালের পাইলিংয়ের কাজে ব্যস্ত। মিনারের শেষ মুহুর্তের রংয়ের ফিনিংসের কাজ চলছে।

জানতে চাইলে নির্মাণ ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী আমজাদ হোসেন দুলাল বলেন, মূল ভবনের কাজ প্রায় শেষ। রংয়ের ফিনিংসের কাজ চলছে। একটি সাইড ওয়াল এবং কালভার্ট নির্মাণ কাজ বাকী আছে। তবে কর্তৃপক্ষ চাইলে যে কোন সময় মূল ভবন বুঝিয়ে দিতে পারব।

আখাউড়া ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সুপার ভাইজার আব্দুল মতিন মোল্লা বলেন, মডেল মসজিদের জন্য ইমাম, মোয়াজ্জিন এবং খাদেম নিয়োগ পক্রিয়াধীন আছে। আগ্রহী প্রার্থীদের আবেদনপত্র যাচাই বাছাই চলছে। রোজার ঈদের পরে লিখিত এবং ভাইবা পরীক্ষার পর নিয়োগ দেওয়া হবে। তারপরই নামাজ আদায় শুরু হবে। ইমামের জন্য যোগ্যতা কামেল বা দাউরা হাদিস পাস এবং বয়স্ক অনুর্ধ ৪৫ বছর বলে তিনি জানান।

আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার অংগ্যজাই মারমা বলেন, সরকার প্রতিটি জেলা এবং উপজেলায় একটি করে দৃষ্টিনন্দন মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণের প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। তারই ধারাবাহিকতায় আখাউড়া মডেল মসজিদের নির্মাণ কাজ প্রায় ৯৫ ভাগ শেষ হয়েছে। সামান্য কাজ বাকী আছে। আশা করছি রমজানের ঈদের পরপরই মসজিদে নামাজ আদায় শুরু করতে পারব।

Leave a Reply

ফাইল ছবি

আজ পবিত্র মিলাদুন্নবী (সা.)

চলারপথে রিপোর্ট : আজ ১২ রবিউল আউয়াল। পবিত্র মিলাদুন্নবী (সা.)। Read more

আখাউড়া ব্লাড ফাউন্ডেশন বর্ষপূর্তি উপলক্ষে মিলনমেলা…

চলারপথে রিপোর্ট : রক্তদান হোক আপনার জীবনের শ্রেষ্ঠ উপহার, এই Read more
ফাইল ছবি

সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকসহ ৯ জনের…

চলারপথে রিপোর্ট : উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রে আব্দুল হাদিস নামের Read more

আশুগঞ্জে গাঁজাসহ দুই নারী আটক

চলারপথে রিপোর্ট : আশুগঞ্জে যাত্রীবাহী বাস থেকে ৬ কেজি গাঁজাসহ Read more

অভ্যুত্থানে শহীদ ৪২২ জন বিএনপির: মির্জা…

অনলাইন ডেস্ক : ‘জুলাই-আগস্ট গণহত্যায়’ ১৩ আগস্ট পর্যন্ত সমগ্র দেশে Read more

অসামাজিক কাজের লিপ্ত থাকার অভিযোগে আটক…

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিজ বাড়িতে অসামাজিক কাজে লিপ্ত থাকার Read more

মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছাড়ছেন কেজরিওয়াল!

অনলাইন ডেস্ক : জেল থেকে জামিনে বের হওয়ার দু’দিন পরই Read more

আমরা ছাপানো ভোটে নির্বাচিত হতে চাই…

চলারপথে রিপোর্ট : বিএনপির অর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার খালেদ হোসেন Read more

টানা বৃষ্টির পানিতে ডুবল তাজমহল

অনলাইন ডেস্ক : গত তিন দিন ধরে টানা বৃষ্টিতে নাজেহাল Read more

মাজারে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে…

অনলাইন ডেস্ক : দেশে ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক স্থান ছাড়াও সুফি Read more

মহাপরিচালকসহ নন নার্সিং প্রশাসনের ক্যাডারদের অপসারণ…

চলারপথে রিপোর্ট : নার্সিং পেশা ও নার্সদের নিয়ে কটুক্তি করায় Read more

স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা হত্যার প্রতিবাদে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়…

চলারপথে রিপোর্ট : জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি এস. Read more

রামবুটান ফল চাষে প্রবাসীর মুখে হাসি

আখাউড়া, 6 July 2023, 714 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
গায়ে কাঁটাযুক্ত এই ফল দেখতে কিছুটা কদম ফুলের মতো। ফলটি কাঁচা অবস্থায় সবুজ ও পাকলে লাল বা গোলাপি রং ধারণ করে। ফলের ওপরের খোসা ফেলে দিলে ভেতরের অংশটা দেখতে লিচুর মতো, স্বাদে-গন্ধে অতুলনীয়। এটি বিদেশী ফল রামবুটান।

আখাউড়ায় প্রথম বারের মত রামবুটান চাষ করে সফল হয়েছেন প্রবাস ফেরত রাজু আহমেদ মোল্লা। তিনি আখাউড়া উপজেলার উত্তর ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী চাঁনপুর গ্রামের বাসিন্দা মরহুম নাছির মোল্লার পুত্র। কৃষি কাজে রাজু মোল্লার খুবই আগ্রহ। তিনি প্রায় ১ একর ৮০ শতক জায়গা জুড়ে বিভিন্ন ধরনের ফলের বাগান করেছেন। তার বাগানে রয়েছে কাঁঠাল, লিচু, বড়ই, লেবুসহ বিভিন্ন ধরনের ফলের গাছ।

এদিকে রাজু মোল্লার রামবুটান ফল নিয়ে এলাকার মানুষের মধ্যে ব্যপক উৎসাহ সৃষ্টি হয়েছে। অনেকে এই ফলের গাছ ও ফল দেখতে তার বাড়িতে ভীড় করেন। রাজু মোল্লার সফলতা দেখে রামবুটান চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছে এলাকার মানুষ।

সরজমিনে চাঁনপুর গ্রামে রাজু মোল্লার ফুলকলি গার্ডেন গাউসে গিয়ে দেখা যায়, রামবুটান গাছে পাতার পাতার ফাঁেক চিকন ডালে থোকায় থোকায় রামবুটান ঝুলছে। সবুজ এবং লালচে রংয়ের ফল। উপরিভাগে সবুজ রংয়ের লোমের মত। দেখতে লিচু মত তবে আকাড়ে লিচুর চেয়ে কিছুটা বড়।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এই ফলটির জন্মস্থল মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া অঞ্চলে। এখন আমাদের দেশেও বিভিন্ন জায়গায় ফলটি চাষ হচ্ছে। রামবুটান গাছে মার্চ মাসে ফুল ফোটা শুরু হয় এবং এপ্রিল মাসে কচি সবুজ রঙের ফল ধরতে আরম্ভ করে। ফুল ফোটার ৩-৪ মাস পর জুলাই-আগস্ট মাসে ফল পাকে। ফল পুষ্ট হলে সবুজ রঙের ফল হঠাৎ করে লাল, মেরুন রঙে রূপান্তর হতে থাকে। এ অবস্থা শুরু হওয়ার ১৫-২০ দিনের মধ্যে ফল সংগ্রহ করতে হয়।

চাষী রাজু আহমেদ মোল্লা বলেন, দীর্ঘ ২২ বছর মালয়েশিয়ায় কর্মজীবন কাটিয়ে গত বছরের মাঝামাঝি পরিবারের প্রয়োজনে দেশে ফিরে আসি। দেশে এসেই হঠাৎ করে বেকার হয়ে পড়ি। তারপর কৃষিকাজটা মন থেকে বেছে নিলাম। হালাল পথে আয়-রোজগার করার এটা ভালো পথ।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কোন জায়গা যেন অনাবাদি না থাকে। তাই আমি প্রতিটি জায়গায় কৃষি এবং ফসল ফলানোর চেষ্টা করছি। এটা করতে আমার ভালো লাগে। কৃষিকাজ-গাছের যত্ন করে আমার সময় কেটে যায়। নিজে খাওয়ার পাশাপাশি ফল বিক্রি করে ভালো আয় হয়। আল্লাহর রহমতে আমি মোটামুটি স্বাবলম্বী এবং ভালো আছি।

তিনি বলেন, ২০০২ সালে মালয়েশিয়া থেকে দেশে ফেরার সময় সঙ্গে করে একটি রামবুটান ফলের চারা নিয়ে এসেছিলাম। বাবাকে সঙ্গে নিয়ে বাড়ির আঙিনায় চারাটি রোপন করে যাই। ৬/৭ বছর পর গাছে ফল আসতে শুরু করে। প্রথম কয়েক বছর অল্প পরিমাণে ফল আসতো। নিজেরাও খেয়েছি। কিছু আত্মীয় স্বজনকে দিয়েছি।

এবছর প্রায় এক মন ফল এসেছে। ৩০-৩৫ হাজার টাকার ফল বিক্রি করতে পারবেন বলে তিনি আশা করছেন তিনি।

তিনি আরো বলেন, রাম্বুটান ফল চাষ করতে বাড়তি কোন পরিশ্রম করতে হয় না। লিচু গাছের মতই চারা রোপন করে দিলে আস্তে গাছ বড় হয়ে যায়। স্বাভাবিক যতœ নিলেই হয়। তবে এ গাছের শত্রু বাদুড়, ইঁদুর ও পাখি। এ জন্য গাছে জাল দিয়ে পেঁচিয়ে দিতে হয়।

আখাউড়া সড়ক বাজারের ফল বিক্রেতা মোঃ মোশারফ হোসেন বলেন, রামবুটান ফলটি আখাউড়ায় কেউ বিক্রি করেনা। তবে ঢাকায় পাওয়া যায়। শুনেছি ৮০০ থেকে এক হাজার টাকা কেজি ধরে বিক্রি হয়।

আখাউড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহানা বেগম বলেন, রামবুটান ফলটি লিচু পরিবারের। এটি মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়ায় ও ভিয়েতনাম ইত্যাদি দেশে বেশি জন্মে। ফলটির খোসায় হালকা চুলের মতো আবরণে ঢাকা। ফলটির ভেতরে লিচুর মতো শ্বাস থাকে। খেতে সুস্বাদু ও মুখরোচক এবং রয়েছে ঔষধি গুণও। আখাউড়া উপজেলার পাহাড়ী এলাকা রামবুটান চাষের জন্য উপযোগি।

বিশেষ করে যেখানে লিচু, কাঠাল ফল হয় সেখানে রামবুটান ভালো চাষ হবে। তিনি বলেন, চাষী রাজু মোল্লাকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি। তিনি আরও বলেন, আমরা চাই এ ফল চাষ আখাউড়ায় আরও সম্প্রসারিত হয়।

আখাউড়ায় মারধরের মামলায় কাউন্সিলর গ্রেফতার

আখাউড়া, 6 December 2023, 467 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ইব্রাহিম মিয়া প্রকাশ সুজনকে (২৮) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আজ ৬ ডিসেম্বর বুধবার বিকেলে আখাউড়া উপজেলার আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলী চৌধুরীকে মারধরের এক ঘণ্টার মধ্যে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।

এর আগে গত ২৯ অক্টোবর তার বিরুদ্ধে বিএনপির কর্মসূচিকে ঘিরে নাশকতার অভিযোগ এনে আখাউড়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) হারুণ অর রশিদ মামলা দায়ের করেন। যদিও সুজনকে দীর্ঘদিন যাবত আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কর্মসূচিতে সামনের সারিতে দেখা গেছে।

আখাউড়া উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. শাহবুদ্দিন বেগ শাপলু সাংবাদিকদের জানান, কাউন্সিলর সুজন নিজেকে আওয়ামী লীগের লোক হিসেবে সবার সামনে নিজেকে উপস্থাপন করতে চান। আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রস্তুতি কমিটিতে না রাখায় সভাপতির ওপর তিনি হামলা করেছেন।

আখাউড়া থানার ওসি মো. আসাদুল ইসলাম জানান, নাশকতার মামলার আসামি হিসেবে বুধবার বিকেলে কাউন্সিলর সুজনকে গ্রেফতার করা হয়। এ ছাড়া সাব্বির নামে আরো একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

তবে আওয়ামী লীগ সভাপতির ওপর হামলার ঘটনায় থানায় অভিযোগ উঠেনি।

স্থানীয় একাধিক সূত্র ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সভাপতি মোহাম্মদ আলী চৌধুরী (৭০) সড়ক বাজার এলাকায় একটি ওষুধের দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। এ সময় কাউন্সিলর সুজনের এক ছোট ভাইসহ কয়েকজন এসে মোহাম্মদ আলী চৌধুরীকে গালমন্দ করেন ও টেনে সড়কে নিয়ে আসেন। এরপর কাউন্সিল সুজনসহ অন্যরা তাকে ব্যাপক মারধর করেন।

আওয়ামী লীগ সভাপতিকে মাটিতে ফেলে মারধর করা হয় বলে সিসি টিভি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গেছে। ঘটনার পর মোহাম্মদ আলী চৌধুরী বাসায় চলে যান। কিছুদিন আগে স্থানীয় একটি বিষয় নিয়ে মোহাম্মদ আলীর বাসায় যান কাউন্সিলর সুজন। এ সময় পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কাউন্সিলরের বিতণ্ডা হয়।
আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ আলী নিজেকে অসুস্থ দাবি করে মুখ খুলতে না চাইলেও তার স্ত্রী উষা বেগম (৬২) জানান, কাউন্সিলরসহ ৪-৫ জন লোকজন বাড়ির ফটকে আঘাত করতে থাকেন।

ফটক খুলতেই তারা ভেতরে ঢুকে ভাঙচুর এবং তার স্বামীকে খোঁজ করেন। না পেয়ে তার পিঠে ও পায়ে লাঠি দিয়ে আঘাত করে তারা।

গ্রেফতারের আগে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে ও সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে কাউন্সিলর সুজন জানিয়েছেন, একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে তাকে হয়রানি করা হচ্ছে। মূলত উপজেলা আওয়ামী লীগের এক নেতার সঙ্গে বিরোধের জের ধরে তাকে ফাঁসানো হচ্ছে। আরেক নেতাও এখন এতে যোগ দিয়েছে।

আখাউড়ায় বৃষ্টির জন্য ইসতিসকার নামাজ আদায়

আখাউড়া, 27 April 2024, 207 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
সারাদেশে তীব্র দাবদাহে অতিষ্ঠ জনজীবন। এই তীব্র দাবদাহ থেকে বাঁচতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় বৃষ্টির জন্য ইসতিসকার নামাজ আদায় করেছেন মুসল্লিরা।

আজ ২৭ এপ্রিল শনিবার দুপুরে পৌর শহরের মসজিদ পাড়া উপজেলা সদর ঈদগাহ মাঠে এ নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। এই নামাজ শেষে মুসল্লিরা রহমতের বৃষ্টির জন্য মহান আল্লাহ দরবারে প্রার্থনা করেন।

ইসতিসকার নামাজের ইমামতি করেন মসজিদ পাড়া সদর জামে মসজিদের ইমাম মুফতি মাওলানা ইয়াকুব হাসান। নামাজে পৌর শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে মুসল্লিরা স্বত:স্ফুর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন। নামাজ শেষে ইমাম আরবিতে খুতবা দেন। এরপর তিনি তীব্র গরমের কথা উল্লেখ করে গরম থেকে মুক্তি পেতে আল্লাহর কাছে রহমতের বৃষ্টির জন্য দোয়া করেন। এ সময় প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে মুক্তিসহ দেশ ও জাতির কল্যাণে দোয়া করা হয়।

নামাজে অংশগ্রহণকারীরা জানান, বৈশাখের শুরু থেকে তীব্র দাবদাহে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বৃষ্টি না হওয়ায় তীব্র গরমে কষ্ট ভোগ করছেন সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ। তীব্র গরম থেকে মুক্তি পেতে আল্লাহর সাহায্য চেয়ে এই নামাজ আদায় করেন তারা।

মাওলানা ইয়াকুব হাসান বলেন, কোরআন-হাসিদের আলোকে যতটুকু জানা গেছে, তা হলো মানুষের সৃষ্ট পাপের কারণেই মহান আল্লাহ এমন অনাবৃষ্টি ও খরা দেন। বৃষ্টিপাত না হলে আমাদের প্রিয় নবী হজরত মোহাম্মদ (সা.) সাহাবিদের নিয়ে খোলা ময়দানে ইসতিসকার নামাজ আদায় করতেন। সেজন্য তারা মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে পাপের জন্য তওবা করে এবং ক্ষমা চেয়ে দুই রাকাত নামাজ আদায় করে রহমতের বৃষ্টির জন্য দোয়া করা হয়।

উপজেলা সদর মসজিদ পাড়া ঈদগাহ মাঠ পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো: মনির হোসেন বাবুল বলেন, তীব্র তাবদাহে মানবজাতিসহ অন্যান্য প্রাণিকূল অতিষ্ঠ হয়ে গেছে। আমরা মনে করি এটা একটি আল্লাহ তাআলার গজব। আমাদের পাপাচারের কারণে অনেক সময় মানবজাতিকে দুর্ভোগে ফেলেন। আমরা এই তীব্র তাপদাহ থেকে মুক্তি পেতে এখানে ইসতিসকার নামাজ আদায় করেছি। এ সময় মুসল্লিরা নিজেদের ভুলের জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা চান। একই সঙ্গে রহমতের বৃষ্টির জন্য আল্লাহ দরবারে প্রার্থনা করা হয়েছে।

আখাউড়ায় মাকে বাঁচাতে গিয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন ছেলে

আখাউড়া, 7 September 2024, 31 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
আখাউড়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় আহত মাকে দেখামাত্র অসুস্থ হয়ে মারা গেছেন ছেলে। ৬ সেপ্টেম্বর শুক্রবার রাতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ ঘটনা ঘটে। মারা যাওয়া সোহেল মিয়া নামে ওই যুবক ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া উপজেলার উত্তর ইউনিয়নের আজমপুর গ্রামের কৌড়াতলীর বকুল মিয়ার ছেলে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আজমপুর রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন সোহেলের মা মাজেদা বেগম। এ সময় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা আরেকটি মোটর সাইকেলকে সাইড দিতে গিয়ে মাজেদা বেগমকে ধাক্কা দেন। এতে আহত মাজেদা বেগমকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন লোকজন। খবর পেয়ে সেখানে ছুটে যান সোহেল। হাসপাতালে মাকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখেই হৃদযন্ত্রের ক্রিয়াবন্ধ হয়ে মারা যান সোহেল।

আজমপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৫নং ওয়ার্ডের সদস্য (মেম্বার) মো. কুদ্দুস খান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, মাকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখে অসুস্থ হয়ে পড়েন সোহেল। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

আখাউড়ায় শিক্ষাঙ্গণে শিক্ষকসহ কিছু ক্যাটাগরিতে সেরার স্বীকৃতি

আখাউড়া, 4 June 2023, 827 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায় জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ ২০২২ উপলক্ষে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে সেরা নির্বাচিত করেছেন উপজেলা প্রশাসন। এরমধ্যে ৩ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠান, তিনজনকে শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠান প্রধান, তিনজন শ্রেষ্ঠ শিক্ষকসহ আরো কিছু ক্যাটাগরিতে সেরার স্বীকৃতি প্রদান করেছে।

সম্প্রতি এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানিয়েছে আখাউড়া উপজেলা প্রশাসন।

স্কুল পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান হয়েছেন কাজী মোঃ তারেক। তিনি উপজেলার উত্তর ইউনিয়নের আমোদাবাদ আলহাজ্ব শাহ্আলম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।

কাজী মোঃ তারেক উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত একজন অভিজ্ঞ ও দক্ষ শিক্ষক। তিনি এম.এ, এম.এড, ডিগ্রীর পাশাপাশি আইন বিষয়ে এল.এল.বি, এল.এল.এম এবং এস.এইচ.আর.এল ডিগ্রী অর্জন করেছেন। তিনি অত্যন্ত দক্ষতা, যোগ্যতা ও সুনামের সাথে বিদ্যালয়ে শিক্ষাকার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন। উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়া সত্বেও বিদ্যালয়ের ফলাফল ও অন্যান্য কার্যক্রম সন্তোষজনক।

কলেজ পর্যায়ে আখাউড়া ক্যামব্রিয়ান কলেজের অধ্যক্ষ গৌবিন্দ চন্দ্র রায় ও মাদ্রাসা পর্যায়ে টনকি ছাদেকুল উলুম আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো. আব্দুল কাইউম শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠান প্রধান হয়েছেন।

তাছাড়া শ্রেষ্ঠ শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান হিসেবে আখাউড়া ক্যামব্রিয়ান কলেজ (কলেজ পর্যায়), নাছরীন নবী পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (স্কুল পর্যায়) ও টনকি ছাদেকুল উলুম আলিম মাদ্রাসাকে (মাদ্রাসা পর্যায়) নির্বাচিত করা হয়।

কলেজ পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শ্রেণী শিক্ষক নির্বাচিত হয়েছেন আখাউড়া শহীদ স্মৃতি সরকারি কলেজের প্রভাষক (ইংরেজি) ফয়জুন্নেসা লিজা। স্কুল পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শ্রেণি শিক্ষক নির্বাচিত হয়েছেন দেবগ্রাম সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (বিজ্ঞান) মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ খান ও মাদ্রাসা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শ্রেণি শিক্ষক হয়েছেন টনকি ছাদেকুল উলুম আলিম মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক (আরবি) মো. রেজাউল কবির।

শ্রেষ্ঠ স্কাউট শিক্ষক নির্বাচিত হয়েছেন বাংলাদেশ রেলওয়ে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. সেলিম। শ্রেষ্ঠ গার্ল গাইড শিক্ষক নির্বাচিত হয়েছেন নাছরীন নবী পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক কাজী সাফিয়া খাতুন।

শ্রেষ্ঠ রোভার শিক্ষক নির্বাচিত হয়েছেন আখাউড়া শহীদ স্মৃতি সরকারি কলেজের প্রভাষক (রসায়ন) এ জেড এম শামসুল আরেফিন। শ্রেষ্ঠ শিক্ষার্থী হিসেবে দেবগ্রাম সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী অদ্বীপ্ত চক্রবর্তী, টনকি ছাদেকুল উলুম আলিম মাদ্রাসার আলিম প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী মারিয়া আক্তার ও আখাউড়া ক্যামব্রিয়ান কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী তাসলিমা খানমকে নির্বাচিত করা হয়।

শ্রেষ্ঠ স্কাউট নির্বাচিত হয়েছেন দেবগ্রাম সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী মো. ইমতিয়াজুর রহমান। শ্রেষ্ঠ রোভার নির্বাচিত হয়েছেন আখাউড়া শহীদ স্মৃতি সরকারি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী মো. ইমন।

শ্রেষ্ঠ স্কাউট গ্রুপ নির্বাচিত হয়েছেন মো. ইমতিয়াজুর রহমান ও তার দল। তারা দেবগ্রাম সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী। এ ব্যাপারে আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অংগ্যজাই মারমা বলেন, বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে আবেদনের পরিপেক্ষিতে তাদেরকে নির্বাচিত করা হয়েছে। এর মাধ্যমে নিজ নিজ দায়িত্ব পালন সম্পর্কে শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে এক ধরনের আগ্রহ সৃষ্টি হবে।