চলারপথে রিপোর্ট :
পবিত্র ঈদ-উল ফিতরকে সামনে রেখে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জমে উঠেছে ঈদের বেচা কেনা। শহরের প্রতিটি মার্কেট, শপিংমল ও বিপনী বিতানগুলোতে এখন ক্রেতাদের উপচেপড়া ভীড়। গভীর রাত পর্যন্ত চলছে বেচা-কেনা।
মাকের্টের দোকান গুলোতে রয়েছে সব বয়সী মানুষেরই কাপড়-চোপড়ের বিপুল সমাহার। ক্রেতারাও পছন্দসই কাপড় কিনে হাসি মুখে বাড়ি ফিরছেন।
পবিত্র ঈদ-উল ফিতরকে সামনে রেখে ক্রেতারা যাতে কোন ধরনের ভোগান্তিতে না পড়েন সে জন্য মার্কেট কমিটিগুলোর পাশাপাশি জেলা পুলিশের পক্ষ থেকেও ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে। বসানো হয়েছে পুলিশী ছাউনী। এছাড়াও সিসি ক্যামেরা দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে দোকানগুলো।
প্রতিটি মার্কেটেই নারী ক্রেতাদের উপস্থিতি বেশী লক্ষ্য করা গেছে।
শহরের নিউ মার্কেট, পৌর আধুনিক সুপার মার্কেট, সমবায় মার্কেট, আশিক প্লাজা, ফরিদ উদ্দিন আনোয়ারা টাওয়ার, গ্রীণ সুপার মার্কেট, সিটি সেন্টার, বি-বাড়িয়া টাওয়ার, গোলাপ সুপার মার্কেট, সড়ক বাজার, পৌর হকার্স মার্কেটসহ প্রতিটি মার্কেটেই এখন ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়। এছাড়াও পাড়া মহল্লায় গড়ে উঠা বিভিন্ন কাপড়ের দোকানগুলোতেও ক্রেতাদের ভীড় লক্ষ্য করা গেছে।
দোকানগুলোতে দেখা গেছে মেয়েদের জন্য ডিসপ্লেতে সাজিয়ে রাখা হয়েছে স্কার্ট, টপস, থ্রিপিস, জিন্স প্যান্ট, জামদানি শাড়ি, বেনারশি, কাতান, সিল্ক, জর্জেট শাড়ী, জয়পুরি শাড়ী, লেহেঙ্গা, পার্টি গাউন, সফট কাতান, বেনারসি, ঢাকাই জামদানি, ভারতীয় জামদানি, রাজশাহী সিল্ক ও টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়ি।
ছেলেদের জন্য শার্ট, জিন্সের প্যান্ট, নবাবী পাঞ্জাবী, শেরওয়ানী, ফতুয়া, কাতুয়া, বিভিন্ন ধরনের গেঞ্জি।
সরজমিনে মার্কেটগুলো ঘুরে দেখা গেছে, সকাল ৯টার পর থেকেই মার্কেটগুলোতে ক্রেতারা আসতে থাকেন। বেলা বাড়ার সাথে সাথে বাড়ে ভীড়। বিকেল ৫টার পর ভীড় একটু কমলেও ইফতারের পরে আবার বাড়তে থাকে ভীড়। বেচা-বিক্রি চলে গভীর রাত পর্যন্ত। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় কাপড়-চোপড়ের দাম একটু বেশী।
শহরের সড়ক বাজারের শাড়ীর দোকান কমলালয়, ইলোরা, জান্নাত ফ্যাশন, শাড়ি বিচিত্রা, নীলাচল, আঁচল নামের দোকানগুলোতে দেখা গেছে মহিলাদের উপড়েপড়া ভীড়।
নিউ মার্কেটের পাঞ্জাবীর দোকান “পাঞ্জাবী ফ্যাশন” এ গিয়ে দেখা যায় হরেক রকমের পাঞ্জাবীর সমাহার।
শহরের কান্দিপাড়ার বাসিন্দা বরকত উল্লাহ ও রুমা আক্তার বলেন, ছেলে-মেয়েদের জন্য কাপড় কিনতে মার্কেটে এসেছি। এ বছর কাপড়-চোপড়ের দাম একটু বেশী।
সদর উপজেলার সুহিলপুরের বাসিন্দা, ফরিদ মিয়া বলেন, ছেলে-মেয়েকে নিয়ে এসেছ কাপড় কিনতে। কয়েকটা দোকান ঘুরে মেয়ের জন্য একটা থ্রি-পিস ও ছেলের জন্য একটা শার্ট ও জিন্সের প্যান্ট কিনেছি। তিনি বলেন, এ বছর কাপড়-চোপড়ের দাম একটু বেশী।
মধ্যপাড়ার রুবি বলেন, প্রচন্ড গরম ও দিনের বেলা মার্কেটগুলোতে অনেক ভীড় থাকায় রাতের বেলা কিনতে এসেছি। তবে এবার কাপড়ের দাম বেশী। ফরিদ উদ্দিন আনোয়ারা টাওয়ারের সুপার সপ লাইক ফ্যাশন হাউজের স্বত্বাধিকারী মোঃ এমরানুল হক বলেন, গত কয়েক বছরে করোনার কারনে বেচা-কেনা কম হয়েছে।
তবে এবার বেশ ভালো হচ্ছে, আগামী দিন গুলোতে আরো ভালো হবে বলে আশা করি। তিনি জানান, তার শো-রুমে শার্ট, গেঞ্জি, পাঞ্জাবি, জিন্স প্যান্ট, টি-শার্ট ও মহিলাদের থ্রি-পিস ও বাচ্চাদের পোশাক বেশি বিক্রি হচ্ছে।
নিউ মার্কেটের এলিগেন্স গার্মেন্টসের মালিক মাসুম শেখ জানান, আলহামদুলিল্লাহ বেচা-কেনা ভালো হচ্ছে। আগামীদিন গুলোতে আরো ভালো হবে বলে আশা করি।
নিউ মার্কেটের পাঞ্জাবীর দোকান পাঞ্জাবী ফ্যাশনের মালিক মোঃ রুহুল আমিন বলেন, গত কয়েক বছরের তুলনায় এ বছর বেশ ভালো বিক্রি হচ্ছে। গরমের জন্য সূতি পাঞ্জাবির চাহিদা একটু বেশী।
শহরের অভিজাত শাড়ীর দোকান কমলালয়ের মালিক আশিষ সাহা বলেন, পোশাক তৈরির সব উপকরণের দাম বেড়ে যাওয়ায় তাঁরাও বেশি দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। তবে এবার ঈদের বেচাকেনা ভালো। বিশেষ করে থ্রি-পিসের বেচাকেনা বেশি হচ্ছে। এছাড়াও তার দোকানে সব ধরনের শাড়ীই বিক্রি হচ্ছে।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ এমরানুল ইসলাম বলেন, ঈদকে সামনে রেখে সদর ও শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশ কাজ করছে। ঈদ বাজারের নিরাপত্তায় পুলিশের ১৫ টি পেট্রোল টিম, ৫ টা হোন্ডা টিম কাজ করছে।
পাশাপাশি জরুরি সেবার জন্য ৪টি টিম সার্বক্ষনিক প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পৌর মার্কেটের সামনে পুলিশের একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। রাতে মার্কেটে আসা কোন মানুষের যাতে কোন ধরনের কষ্ট না হয় সেজন্য পুলিশ টহল দিচ্ছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
এ যেন জীবন্ত পুতুল। যেন পুতুলে প্রাণের ছোঁয়া। গানের তালে তালে নাচছে পুতুল। দর্শকদের মুহুর্মুহু করতালি। মুখে হাসির ঝিলিক।
২৬ মার্চ মঙ্গলবার স্বাধীনতা দিবসের আয়োজনে পুতুল সেজে গানের সঙ্গে নেচেছে সূর্যমুখী কিন্ডার গার্টেনের শিশু শিক্ষার্থীরা।
সংখ্যায় ওরা ৪৮জন। সবাই সেজেছে পুতুলের সাজে। ওরা সবাই শিশু। মঙ্গলবার সকাল পৌণে দশটায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নিয়াজ মুহম্মদ স্টেডিয়ামে পুতুলের এই নাচ প্রদর্শিত হয়। জেলা প্রশাসনের আয়োজনে সূর্যমুখী কিন্ডার গার্টেনের শিশু শিক্ষার্থীরা পুতুল নাচের ডিসপ্লে করে।
ডিসপ্লের শুরুতেই হাজারো উপস্থিতি জীবন্ত পুতুলদের করতালি দিয়ে স্বাগত জানায়। ডিসপ্লে চলাকালেও ছিলো বেশ উচ্ছ¡াস। পুতুল নাচের এ ডিসপ্লে জেলার বেশ আলোচনার জন্ম দেয়।
পুতুল নাচ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঐতিহ্য। তবে সেটা যেন বিলিনের পথে। তবে এই প্রথমবারের মতো জেলার কোনো বড় আয়োজনে শিশুদের পুতুল সাজিয়ে নাচানো হলো। এর আগে সূর্যমুখী কিন্ডার গার্টেন নিজেদের ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজনে শিশুদেরকে পুতুল সাজিয়ে নাচায়।
পুতুল নাচের অংশ নেওয়া মুনতাহা জানায়, সে আগে কখনো পুতুল নাচ দেখেনি। ডিসপ্লের জন্য বেশ কয়েকবার দেখেছে। এরপর প্রশিক্ষক তাদেরকে তৈরি করেছেন। এ নাচে অংশ নিতে পেরে সে বেশ খুশি।
কথা হয় অভিভাবক শ্যামল মোদক ও প্রিয়াংকা সাহার সঙ্গে। তারা বলেন, ‘আমাদের সন্তানরা এ আয়োজনের গর্বিত অংশীদার হতে পেরেছে। আমাদের খুব লাগছে। এ নাচের মধ্য দিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঐতিহ্য ফুটে উঠেছে।
নাচের পরিকল্পনাকারি ও প্রশিক্ষক জিয়া আমিন জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুতুল নাচের ঐতিহ্য ফেরাতে এই প্রচেষ্টা। এতে তিনি অনেকটা সফল হয়েছেন বলে দাবি করেন।
এ ব্যাপারে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জেসমিন সুলতানা বলেন, ‘পুতুল নাচ আমাদের ঐতিহ্য। আমরা চাই শিশুরা ঐতিহ্যের সঙ্গে মিশে থাকুক। এ ধরণের আয়োজনকে সমৃদ্ধ করতে আমাদের সহযোগিতা থাকবে।’
স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ রুহুল আমীন বলেন, ‘শিশুরা পুতুল নাচের ডিসপ্লে বেশ চমৎকারভাবে উপস্থাপন করেছে। জেলা প্রশাসন তাদের পাশে থাকবে।’
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার ভাটপাড়ায় ডিবি পুলিশ পরিচয়ে অপহরণের সময় ৩ জনকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে স্হানীয়রা। ২০ অক্টোবর রোববার রাত সাড়ে ৯টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার নাটাই উত্তর ইউপির ভাটপাড়া গ্রাম থেকে তাদের আটক করা হয়।
আটককৃতরা হলেন- ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সদর উপজেলার নাটাই বটতলী গ্রামের আমীর খাঁর ছেলে মো. আশিক (২৫), জেলা শহরের কান্দিপাড়া এলাকার জিল্লুর রহমানের ছেলে নাজিবুর রহমান সানি (২৭) ও ঢাকার খিলগাঁও এলাকার রুবেল আহম্মদের ছেলে মো. সফিক (২৬)।
জানা যায়, রোববার রাত সাড়ে ৯টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার নাটাই উত্তর ইউপির ভাটপাড়া গ্রামের লোকমান হোসেনের বাড়িতে কিছু লোক ঘোরাফেরা করছিল। তখন লোকমান তাদের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে তারা নিজেদের ডিবি পুলিশ পরিচয় দেয়। তারা লোকমানকে বলে, সে গ্রেফতারি পরোয়ানামূলে আসামি। তখন লোকমান তাদেরকে গ্রেফতারি পরোয়ানার কপি দেখাতে বললে, তাদের মধ্যে একজন লোকমানের মুখ চাপ দিয়ে ধরে টেনেহিঁচড়ে তাদের সঙ্গে থাকা একটি নোহা গাড়িতে তুলে ফেলে। এ সময় লোকমানের স্ত্রী, ছেলেমেয়েরা ঘর থেকে বাইরে এসে চিৎকার শুরু করলে তারা এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করে। পরে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এসে ঘটনাস্থল থেকে আশিক, শফিক ও সানিকে আটক করে। তাদের সঙ্গে থাকা আরো ৪ জন পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন থানায় খবর দিলে পুলিশ গিয়ে তাদের আটক করে। এ সময় তাদের ব্যবহৃত একটি নোহা গাড়ি উদ্ধার করা হয়।
আটককৃত ৩ জন প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানান, লোকমানের ছোট ভাই খান জাহান আলী রমজানের নির্দেশে তারা লোকমানকে তুলে নেয়ার জন্য আসে। জাহান আলী লোকমানকে তুলে নেয়ার জন্য তাদের ৭০ হাজার টাকা দিয়েছেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ওসি মো. মোজাফ্ফর হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, এ ঘটনায় লোকমান হোসেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় ৭ জনের নামোল্লেখ করে একটি মামলা দায়ের করেছেন। গ্রেফতারকৃত ৩ জনকে আদালতে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। বাকি আসামিদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বসতবাড়িতে গ্যাস সংযোগ দেওয়ার প্রতিশ্রুতিতে গ্রামবাসীর কাছ থেকে অর্ধকোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে করা মামলায় স্থানীয় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানসহ দুজনকে জেলহাজতে পাঠিয়েছেন আদালত।
গতকাল বৃহস্পতিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আফরিন আহমেদ হ্যাপী এ আদেশ দেন।
আসামিরা হলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার নাটাই দক্ষিণ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সদর উপজেলার কালিসীমা গ্রামের বাসিন্দা কাইয়ূম মিয়া ও একই গ্রামের এলাই মিয়া।
ব্রাহ্মণবাাড়িয়া জেলা আদালতের পুলিশ পরিদর্শক কাজী দিদারুল আলম বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, আসামিরা চার মামলায় আদালতে হাজিরা দিতে আসেন। আদালত তাদের জামিন না মঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠান।
মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, অভিযুক্ত আব্দুল কাইয়ূম ও এলাই মিয়া নিজেদের বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের বৈধ ঠিকাদার বলে ভুয়া পরিচয় দিয়ে গ্রামবাসীকে প্রলুব্ধ করেন। বসতবাড়িতে গ্যাস সংযোগ দেওয়ার কথা বলে কালিসীমা গ্রামের মানুষের কাছ মোট অংকের টাকা হাতিয়ে নেন। তারা প্রতিটি পরিবারের কাছ থেকে ৭০ হাজার টাকা করে নিয়েছেন। এভাবে গ্রামের মোট ৫৮টি পরিবারের কাছ থেকে ৫০ লাখেরও বেশি টাকা নেন।
এতে আরো উল্লেখ করা হয়, এক পর্যায়ে আসামিরা ভুয়া গ্যাস বিলের বই ছাপিয়ে এতে ভুতুড়ে হিসাব নম্বর বসিয়ে দুই মাসের অগ্রিম বিল পরিশোধের কথা বলে গ্রামবাসীর কাছ থেকে আরও টাকা নেন। পরে গ্রামের কয়েকজন বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশনের ব্রাহ্মণবাড়িয়া কার্যালয়ে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, আসামিরা তাদের যে বিলের বই ও হিসাব নম্বর দিয়েছেন সেগুলো ভুয়া।
এ নিয়ে ভুক্তভোগীরা ক্ষুব্ধ হলে গ্রাম্য সালিশ বসানো হয়। সালিশে অভিযুক্তরা গ্যাস সংযোগ দিতে অপরাগতা স্বীকার করেন এবং সবাইকে টাকা ফেরত দেওয়ার আশ্বাস দেন। এরপর টাকা ফেরত না দিয়ে কালক্ষেপণ করায় ভুক্তভোগীরা আদালতে মামলা করেন।
এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ সাফায়েত উল্লাহ তদন্তে গ্যাস সংযোগ দেওয়ার নামে টাকা আত্মসাতের সত্যতা পেয়েছেন মর্মে আদালতে প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বন্যার সুযোগে বেশি দামে শুকনাে খাবার বিক্রির দায়ে তিন দোকানিকে ২১ হাজার টাকা জরিমানা করেছে জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
আজ ২৬ আগস্ট সোমবার দুপুরে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া কার্যালয়ের সহকারি পরিচালক ইফতেখারুল আলম রিজভী শহরের আনন্দ বাজারে (চিড়া-মুড়ি-গুড়ের মার্কেট) অভিযান চালিয়ে দোকানে মূল্য তালিকা না থাকা, ক্রয়-বিক্রয় ভাউচার না থাকা ও অতিরিক্ত মূল্যে পণ্য বিক্রির দায়ে তিন দোকানিকে ৭ হাজার টাকা করে ২১ হাজার টাকা জরিমানা করেন। এ সময় জরিমানার পাশাপাশি দোকানিদেরকে সর্তকও করা হয়।
উল্লেখ্য, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া ও কসবা উপজেলা বন্যা কবলিত। বন্যার্তদের সহায়তায় বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠন, সমিতি, বে-সরকারি প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি উদ্যোগে ত্রাণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ফলে শুকনা খাবারের (চিড়া-মুড়ি-গুড়) সহ প্রয়োজনীয় কিছু পন্যের বেচা-কেনা বেড়ে যায়। এই সুযোগে কয়েকটি পন্যের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
চলারপথে রিপোর্ট :
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহিদ ও আহতদের স্মরণে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় স্মরণ সভা এবং জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘটনা প্রবাহ নিয়ে সাংস্কৃতিক কার্যক্রম আজ ২৬ নভেম্বর মঙ্গলবার সকাল ১১টায় অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজ কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে লেকচার থিয়েটার (এল টি) ভবনে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক ও কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ মোশাররফ হোসাইনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অধ্যক্ষ প্রফেসর আবু জাফর মোহাম্মদ আরিফ।
দর্শন বিভাগের সহকারি অধ্যাপক মোঃ নাছির উদ্দিন এর উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজ শিক্ষক পরিষদ সম্পাদক মোহাম্মদ আবু হানিফ ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে উত্তরা আজমপুরে বিস্কুট পানি বিতরণ করতে যেয়ে পুলিশের গুলিতে শহীদ মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধ’র পিতা মীর মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল।
শিক্ষার্থী তাহির আহমেদের কোরআন তিলাওয়াতের মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া স্মরণ সভায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকালীন ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও রাজধানী ঢাকার সরেজমিন প্রামাণ্য ভিডিও চিত্র প্রদর্শিত হয়।
আলোচনায় অংশ নেন অধ্যাপক মোঃ আবদুল কুদ্দুছ, অধ্যাপক আবদুল কাদির আলম শাহ, অধ্যাপক দিলারা আক্তার খান, সহযোগী অধ্যাপক এ.কে.এম. ওবাইদুল হক, সহযোগী অধ্যাপক মোঃ মাইদুল ইসলাম। ছাত্র আন্দোলনকালীন ঘটনাপ্রবাহ বর্ণনা করেন শিক্ষার্থী নিশাত তাসনিম চৌধুরী, মোঃ আসাদুজ্জামান, শাহ আলম পালোয়ান।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের প্রয়োজনীয়তা গুরুত্ব উল্লেখ করে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যক্ষ প্রফেসর আবু জাফর মোহাম্মদ আরিফ বলেন, চাকুরী ও সমাজসহ সর্বক্ষেত্রে যে বৈষম্য বিরাজ করছে তা যেন দূর হয়ে যায়। আমরা বৈষম্যহীন (মুক্ত) একটা সমাজ চাই। যেখানে সবাই স্বস্তি ও শান্তিতে থাকবে।
বিশেষ অতিথি শহীদ মুগ্ধ’র পিতা মীর মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, শুধু শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড এতে আমি বিশ্বাস করি না। সুশিক্ষাই হলো একটা জাতির মেরুদন্ড। কারও দালালী না করে লেখাপড়া করে মানুষের মতো মানুষ হতে হবে। সুশিক্ষা গ্রহণ করে নীতি নৈতিকতা বজায় রেখে সুনাগরিক হয়ে গড়ে উঠতে হবে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত ও আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করে দোয়া মোনাজাত পরিচালনা করেন কলেজ মসজিদের খতিব মাওলানা মোঃ ইয়াহিয়া। পরে কলেজের শিক্ষার্থীরা সাংস্কৃতিক কার্যক্রমে অংশ নেয়।