চলারপথে ডেস্ক :
কুমিল্লায় দুর্ঘটনাকবলিত ট্রেনে ছিলেন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ১২ কর্মকর্তা। তারা চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় ফিরছিলেন। তাদের মধ্যে ৫ জন সামান্য আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
ইসির ওই কর্মকর্তাদের কয়েকজন হলেন, সিনিয়র সহকারি সচিব রৌশন আরা বেগম, সিনিয়র সহকারি সচিব মোহাম্মাদ নাজিম উদ্দিন, সহকারি সচিব মোহাম্মদ আশফাকুর রহমান, আইসিটির সিস্টেম এনালিস্ট মামুনুর হোসেন, নির্বাচন কমিশনার বেগম রাশেদা সুলতানার পিএস হাবিবা আক্তার, নির্বাচনি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের উপপরিচালক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম ও আবুল কাশেম মোহাম্মদ মাজহারুল ইসলাম, সহকারী প্রোগ্রামার শুধাংশু কুমার সরকার, এনআইডি উইংয়ের ফারজানা লিজা এবং রাঙ্গামাটির একটি উপজেলার নির্বাচন অফিসার আমিনুল ইসলাম।
নির্বাচন কমিশনার মো. আহসান হাবীব জানান, ইসির ওই ১২ কর্মকর্তা সবাই নিরাপদে রয়েছেন।
উল্লেখ্য, রবিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে মালবাহী ট্রেনের সঙ্গে আন্তঃনগর সোনার বাংলা এক্সপ্রেসের সংঘর্ষ হয়। এতে অন্তত ৩০জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন লাকসাম রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জসিম উদ্দিন চৌধুরী। দুই ট্রেনের সংঘর্ষে সোনার বাংলা এক্সপ্রেসের ৭টি বগি লাইনচ্যুত হয়েছে।
অনলাইন ডেস্ক :
গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনার নদীর পানি সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে ৭ সে.মি. বৃদ্ধি পেয়েছে। পানি বাড়ার সাথে সাথে যমুনা নদীর তীরবর্তী এলাকায় ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়েছে। প্রতিদিন ভাঙনে বিলীন হচ্ছে বসতভিটা-ফসলী জমি-গাছপালা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বহু স্থাপনা। এতে নিঃস্ব হয়ে পড়ছে ভাঙনকবলিতরা।
তাদের অভিযোগ, ভাঙনরোধে পাউবো যেমন ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না তেমনি ভাঙনের শিকার মানুষগুলো খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবনযাপন করলেও কেউ খোঁজ নিচ্ছে না। ভাঙনের শঙ্কায় নির্ঘুম রাত কাটছে নদী তীরবর্তী মানুষের। অন্যদিকে, পানি বাড়ায় চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে শুরু করেছে।
জানা যায়, গত এক সপ্তাহ যাবত যমুনা নদীর পানি পানি বাড়ছে। পানি বাড়ার সাথে সাথে যমুনার অরক্ষিত তীরবর্তী বিস্তৃর্ন এলাকায় ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। বর্তমানে শাহজাদপুর উপজেলার কৈজুরী, জালালপুর ইউনিয়ন, এনায়েতপুরের ব্রাহ্মণগ্রাম, চৌহালীর খাসপুকুরিয়া ইউপির ভুতের মোড়, বাঘুটিয়া, ওমারপুর, বেলকুচি এবং কাজিপুর উপজেলার নিশ্চিন্তপুর চরে ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। প্রতিদিন ভাঙনে বসতবাড়ী, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ ফসলি জমি বিলীন হয়ে যাচ্ছে। ভাঙন আতঙ্কে নদীর তীরবর্তী মানুষ নির্ঘুম রাত পার করছে।
আর গত দেড়মাসে এসব অঞ্চলের প্রায় ৩ সহস্রাধিক বসতভিটা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিলীন হয়ে গেছে।
শাহজাদপুরের পাঁচিল গ্রামের বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম, রহিমা খাতুন, শরিফুল ইসলাম ও শুকুর ফকির জানান, দুদিন আগেও বসতভিটা ছিল। হঠাৎ প্রবল ঘুর্নাবর্তের কারণে বসতভিটাসহ আসবাবপত্র সব কিছু নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। কোনরকম ছেলে-মেয়ে নিয়ে রক্ষা পেয়েছি। বর্তমানে যাবার কোনো জায়গা না থাকায় খোলা আকাশের নীচে মানবেতর জীবনযাপন করছি। বসতঘর তোলার জায়গা না থাকায় ঘরগুলো ওয়াপদা বাঁধসহ বিভিন্ন স্থানে স্তুপ করে রেখেছে। ঝড় বৃষ্টি ও রোদে পুড়ে খেয়ে না খেয়ে আমাদের জীবন পার করছি। এতো কস্টে থাকলেও কেউ আমাদের খোঁজ নিতে আসেনি।
চৌহালীর বাসিন্দা মনিরুল ইসলাম জানান, ভাঙনে ফসলি জমি বিলীন হয়ে গেছে। এক ইঞ্চি জায়গাও নেই। এখন একেবারে নিঃস্ব অবস্থায় পড়ে গেছি। ভবিষ্যতে কিভাবে চলবে সে চিন্তায় রাতে ঘুম হয় না। সরকার বা জনপ্রতি ও প্রশাসন কেউ আমাদের একটু সহযোগিতা করছে না। স্থানীয়দের অভিযোগ, সরকার নদী তীর রক্ষায় সাড়ে ৬শ কোটি টাকা ও চৌহালী রক্ষায় প্রায় ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিলেও পাউবো ও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজ না করায় তাদের গাফিলতির কারণে নদী ভাঙছে।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রনজিত কুমার সরকার জানান, যমুনা পানি বাড়ায় ভাঙ্গনও বাড়ছে। বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে ভাঙন শুরু হয়েছে। এতো বড় এরিয়ায় ভাঙনরোধে ব্যবস্থা গ্রহণের সামর্থ্য পাউবোর নেই। এরপরেও যেখানে বেশি ভাঙছে সেখানে জিওব্যাগ ফেলে ভাঙন নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
গাজীপুরের পূবাইলে নেশা জাতীয় দ্রব্য খাওয়ায়ে চালককে অচেতন করে গলায় গামছা পেঁচিয়ে হত্যার পর লাশ ডোবায় ফেলে তার অটোরিক্সাটি নিয়ে যায় ছিনতাইকারীরা। প্রায় সোয়া তিনবছর পর ক্লুলেস এ ঘটনার রহস্য উদঘাটন করে জড়িত তিন ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। আজ ৮ জুন গাজীপুর পিবিআই’র পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান এ তথ্য জানিয়েছেন।
গ্রেফতারকৃতরা হলো মুন্সিগঞ্জের লৌহজং থানার মাওয়া এলাকার মৃত মজিদ হাওলাদারের ছেলে মোঃ শাহীন (৪৭), ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্চারামপুর থানার ছয়আনি এলাকার মোঃ মিলনের ছেলে মোঃ সালাম ওরফে চঞ্চল (৪০) ও ফরিদপুর জেলার সালতা থানার ফুলবাড়িয়া এলাকার মৃত হোসেন মজুমদারের ছেলে মোঃ জাহাঙ্গীর (৪০)। তারা সবাই ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় থাকতো।
গাজীপুর পিবিআইর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান জানান, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের পূবাইল থানাধীন তালটিয়া পূর্বপাড়া এলাকার মৃত নবাব আলীর ছেলে রবিউল ইসলাম (৪০) এলাকায় অটোরিক্সা চালাতেন। প্রতিদিনের মতো ২০১৯ সালের ২৪ মার্চ বিকেলে যাত্রী বহনের জন্য তিনি তার অটোরিক্সা নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন। এরপর নিখোঁজ হন তিনি। স্বজনরা বিভিন্নস্থানে খোঁজাখুঁজি করেও তার কোন সন্ধান পায় নি। নিখোঁজের পর ১৩ এপ্রিল বিকেলে স্থানীয় বিন্দান এলাকার জহিরুল ইসলামের দোকানের পিছনের খাল থেকে রবিউলের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী মরিয়ম বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেন। কিন্তু দীর্ঘদিনেও এ ঘটনার রহস্য উদঘাটন করতে পারেনি থানা পুলিশ।
তিনি জানান, থানা পুলিশ তদন্তকালে ঘটনার রহস্য উদঘাটন করতে না পারায় পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের নির্দেশে মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পিবিআই গাজীপুরকে দেওয়া হয়। এরপ্রেক্ষিতে পিবিআইর তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পুলিশ পরিদর্শক (নিঃ) মোঃ জামাল উদ্দিন তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে ও অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে ঢাকার মিরপুর পল্লবী এলাকা থেকে শাহীনকে গ্রেফতার করেন। পরে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে খিলক্ষেত এলাকা থেকে চঞ্চল ও জাহাঙ্গীরকে গ্রেফতার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদেরকে বুধবার আদালতে সোপর্দ করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা ভিকটিম রবিউল ইসলাম হত্যার সঙ্গে নিজেদেরক জড়িয়ে বিস্তারিত বর্ণনা করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। এর প্রেক্ষিতে ঘটনার সোয়া তিন বছর পর চাঞ্চল্যকর অটোরিক্সা চালক রবিউল ইসলাম হত্যার রহস্য উন্মোচন হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান বলেছেন, ভারত বাংলাদেশকে স্বাধীন দেশ মনে করে না, তারা বাংলাদেশকে ভারতের উপনিবেশ মনে করে। আর আমাদের লড়াই হচ্ছে তার বিরুদ্ধে, যাতে আমরা আমাদের স্বাধীনতা অক্ষুন্ন রাখতে পারি।
আজ ২ ডিসেম্বর সোমবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়া মাদরাসায় হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় মহসচিবসহ আলেম উলামাদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে ঢাকা-আগরতলা-ঢাকা পথে চলাচলকারী শ্যামলী পরিবহনের দুর্ঘটনাকবলিত একটি বাস নিয়ে ভারতীয় বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমসহ ভারতীয় কর্তৃপক্ষের মিথ্যাচার সংক্রান্ত সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন। এ সময় তিনি আরও বলেন, এ দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ধর্ম ইসলাম আমরা যাতে ইসলামের মর্যাদা রক্ষা করতে পারি এটাই আমাদের লক্ষ্য। হিন্দুত্ববাদীরা মিথ্যার ওপর দাঁড়িয়েছে, তারা মিথ্যা দিয়ে পৃথিবীকে জয় করতে চায়। আল্লাহর আইন হচ্ছে সত্যের জয় হবে এবং মিথ্যা পরাজিত হবে।
আজ সোমবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের স্থানীয় বঙ্গবন্ধু স্কয়ারের জাতীয় বীর আব্দুল কুদ্দস মাখন পৌর মুক্ত মঞ্চ ময়দানে ঐতিহাসিক শহীদ বাবরী মসজিদ দিবস উপলক্ষে আয়োজিত প্রতিবাদী কনফারেন্সে প্রধান আলোচকের বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
২০১৩ সালের শাপলা চত্বরে হেফাজতের আন্দোলনে গণহত্যা, ২০২১ সালের মোদি বিরোধী আন্দোলনে হত্যাকাণ্ড, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানে গণহত্যা বিচার দাবি ও বাবরী মসজিদ দিবস উপলক্ষে জামিয়া ইসলামীয়া ইউনুছিয়ার মুহতামিম আল্লামা মুফতী মুবারক উল্লাহ’র সভাপতিত্বে প্রতিবাদী কনফারেন্সে প্রধান অতিথি ছিলেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় মহাসচিব আল্লামা শায়েখ সাজিদুর রহমান। প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
তিনি বলেন ভারতে প্রতিনিয়ত মুসলিম নির্যাতনসহ মসজিদ ধ্বংস করা হচ্ছে। যারা নিজের দেশে সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন চালাচ্ছে তাদের কোনো নৈতিক অধিকার নেই বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের নিয়ে কথা বলার। তিনি ভারত তথা সমগ্র বিশ্বে মুসলিমদের নির্যাতন নীপিড়নের বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিবাদ গড়ে তোলার আহবান জানান। তিনি বলেন, এদেশের তৌহিদি জনতা ফ্যাসিবাদকে পরাজিত করে ভারতীয় হেজেমনিকে উৎখাত করেছে। তারা আর কোনোদিন ভারতীয় হেজেমনি বা শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদকে এদেশে প্রত্যাবর্তন করতে দিবেনা।
সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, রাজনৈতিক কিংবা ধর্মীয় বিষয়ে বিভাজন থাকতে পারে কিন্তু দেশের স্বার্থে সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। তাহলে কোনো ষড়যন্ত্র সফল হতে পারবেনা। যদি ফাটল থাকে তাহলে ফ্যাসিবাদ আবারো প্রত্যাবর্তনের চেষ্টা করবে।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মাও: জুনাইদ আল হাবিব, কবি ও রাষ্ট্র চিন্তক মুসা আল হাফিজ, বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ আতাউল্লাহ আমিন, লেখক ও গবেষক রুহুল আমীন সাদী, আলী হাসান তৈয়ুব, জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য আশরাফ মাহদী প্রমুখ।
এসময় ড. মাহমুদুর রহমান তাঁর বক্তব্যে বলেন, সংখ্যালঘু ইস্যু নিয়ে আমাদের দেশে এখন অপপ্রচার হচ্ছে। আপনারা খোঁজ নিয়ে দেখেন আমাদের দেশে হিন্দুদের চাকরী বেশী। বাংলাদেশের হিন্দুরা নিরাপদে আছে। আমাদের দেশের আলেমগণ তাদের বক্তব্যে হিন্দুদের নিরাপত্তার কথা বলেন। মন্দির পাহারা দেন। আর ভারতীয়রা মুসলমানদের হত্যার কথা বলে, কী পার্থক্য এবার বুঝেন। ভারতে মুসলমানদের প্রতি অত্যাচারের প্রতিবাদ করতে আমরা বারবার ব্যর্থ হয়েছি। অনুষ্ঠানে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার যুব ফোরামের উদ্যোগে আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমানকে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দিদারুল আলম বলেছেন, সবাই মিলে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা করতে হবে।
জেলা প্রশাসন আয়োজিত আইন-শৃংখলা সম্পর্কিত বিশেষ সভা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আজ ২৭ নভেম্বর বুধবার বিকেলে সভাপতির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
জেলা প্রশাসক আরো বলেন, কেউ অনিরাপদ মনে করলে প্রশাসনকে জানাবেন। কেউ যাতে আইন-শৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি করতে না পারে এজন্য সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। তিনি বলেন, দেশটা আমাদের, সবাই দেশটাকে ভালোবাসতে হবে। সবার মধ্যে দেশপ্রেম জাগ্রত করতে হবে।
সভায় পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাবেদুর রহমান বলেন, সারা বিশ্বে বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। কেউ শান্তি বিনষ্ট করলে তাকে ছাড় দেয়া হবেনা। সবাইকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ সাইফুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন ৬০ বিজিবির অধিনায়ক, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাড: কামরুজ্জামান মামুন, প্রেসক্লাবের সভাপতি জাবেদ রহিম বিজন, জেলা বিএনপির আহবায়ক অ্যাড: আবদুল মান্নান, সদস্য সচিব মোঃ সিরাজুল ইসলাম সিরাজ, প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোঃ বাহারুল ইসলাম মোল্লা, জেলা জামায়াতে ইসলামীর সাধারণ সম্পাদক মোবারক হোসেন, জেলা হেফাজতে ইসলামীর সভাপতি মুফতি মোঃ মোবারকুল্লাহ, হিন্দু-বৌদ্ধ-খৃষ্টান ঐক্য পরিষদের জেলা সভাপতি দিলীপ কুমার নাগ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর বিভূতি ভূষন দেবনাথ, বিটিজেএ’র সভাপতি আল-আমীন শাহীন, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি প্রবীর চৌধুরী রিপন প্রমুখ।
সভায় বক্তারা বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সু-দীর্ঘকাল ধরে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির চমৎকার সম্পর্ক বিদ্যমান আছে। কাউকে এই সম্প্রীতি নষ্ট করতে দেয়া হবেনা।
বক্তারা বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় ও বিভিন্ন উপজেলার কিছু দুর্বৃত্ত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বিভিন্ন ধরনের স্ট্যাটাস দিয়ে, সামাজের বিভিন্ন গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের ছবি বিকৃত করে ছবি আপলোড করে ও ফেসবুকে লেখালেখি করে সামাজিক অস্থিরতা ও ধর্মীয় উম্মাদনা ছড়াচ্ছে। তাদেরকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।
বক্তারা চট্টগ্রামের আইনজীবী হত্যার তীব্র নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত দোষীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।
বক্তারা জেলার প্রতিটি উপজেলায় প্রশাসনের উদ্যোগে আইন-শৃংখলা সম্পর্কিত বিশেষ সভা এবং শান্তি ও সম্প্রীতি সমাবেশ করার দাবি জানান এবং আগামী শুক্রবার জুমার নামাজের খুতবায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় ইমামদেরকে বয়ান ও জেলার বিভিন্ন উপাসনালয়ে তাদের উদ্যোগে কেউ যাতে সাম্প্রদায়িক-সম্প্রীতি নষ্ট করতে না পারে সেজন্য সভা করার আহবান জানান।
সভায় আইন-শৃংখলা সম্পর্কিত বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাগণ, জেলা প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাগণ, বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক দলের নেতৃবৃন্দ ও জেলার সূধীজনেরা উপস্থিত ছিলেন।
অনলাইন ডেস্ক :
আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মুক্তিযোদ্ধাদের ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’ লেখা স্মার্টকার্ড প্রদানের সিদ্ধান্ত দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এক্ষেত্রে ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত যারা আবেদন করবেন তাদেরটা আগে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংস্থাটি।
সম্প্রতি অনুষ্ঠিত মাসিক সমন্বয় সভায় এমন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট শাখাকে নির্দেশনা দিয়েছেন জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক একেএম হুমায়ূন কবীর।
নির্দেশনায় তিনি বলেন, ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত যে বীর মুক্তিযোদ্ধারা স্মার্টকার্ডের জন্য আবেদন করবেন, তাদের মুক্তিযোদ্ধা গেজেট অনুসারে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় থেকে যাচাইপূর্বক বীর মুক্তিযোদ্ধা খচিত স্মার্টকার্ড দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
জানা গেছে, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্রের চিপসের নিচে ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’ শব্দ দুটি স্থাপনের বিষয়ে গত বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত সভায় মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। এতে সর্বসম্মতিক্রমে ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’ স্থাপনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় পত্রের মাধ্যমে তাদের সম্মতি দেয়। তবে কোনো বীর মুক্তিযোদ্ধা জাতীয় পরিচয়পত্রে ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’ শব্দ দুটি স্থাপনের জন্য আবেদন করলে তা মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ভেটিং করিয়ে সন্নিবেশের সিদ্ধান্ত হয়।
জাতির সেরা সন্তানদের সম্মানার্থে কে এম নূরুল হুদার বিগত কমিশন ২০২২ সালে এই কার্যক্রম শুরু করেছিল। ওই বছর ১৩ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর একটি অভিজাত হোটেলে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ১০০ জন মুক্তিযোদ্ধার হাতে স্মার্টকার্ড তুলে দেওয়াও হয়।
বিগত কমিশন বাংলাদেশ গেজেটে প্রকাশিত তালিকা অনুযায়ী ১ লাখ ৮৩ হাজার মুক্তিযোদ্ধাকে বিশেষ এ স্মার্টকার্ড দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এক্ষেত্রে প্রথমবারের মতো কোনো একটি সুনির্দিষ্ট শ্রেণীর জন্য স্মার্টকার্ডের নকশায় পরিবর্তন আনেন তারা। তবে কোনো আলোচনা না করে মুক্তিযোদ্ধাদের বিশেষ স্মার্টকার্ড দেওয়ার এখতিয়ার নির্বাচন কমিশনের নেই বলে মন্ত্রণালয় আপত্তি জানালে সেই উদ্যোগ বন্ধ হয়ে যায়।
বর্তমানে সে উদ্যোগটিই মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করে চালু করছে কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন বর্তমান কমিশন। এক্ষেত্রে কোনো মুক্তিযোদ্ধা বিশেষ এ কার্ড নেওয়ার জন্য কেবল আবেদন করলেই নির্বাচন কমিশনার যথাযথ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে তা নিষ্পত্তি করবেন।