চলারপথে নিউজ :
সৌদি আরব প্রবাসী মুবাশ্বির ঈদের পর ২৬ এপ্রিল ছুটিতে বাড়িতে আসার কথা ছিল। পরিবারের সবাই আনন্দে উদ্বেল হয়ে তার আগমনের অপেক্ষার প্রহর গুণছিল। কিন্তু যে দিন আসার কথা তার আগের দিন তার মৃত্যু সংবাদ পেল পরিবার। মুহুর্তের মধ্যেই সব আনন্দ ফিকে হয়ে পরিবারের নেমে এলো বিষাদের ছায়া। মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর থেকেই স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে আকাশ বাতাস। এলাকায় নেমে আসে শোকের ছায়া।
গতকাল মঙ্গলবার স্ট্রোক করে মারা যায় সে। নিহত মুবাশ্বির ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়নের গাজীর বাজারের ব্যবসায়ী ও সাহেব নগর গ্রামের আবু জাহের ভূঁইয়ার ছেলে।
মুবাশ্বিরের পঞ্চাশোর্ধ্ব মা রোকেয়া বেগম আহাজারি করে কাঁদছিলেন ‘তোমরা আমার বুকের মানিককে আমার বুকে ফিরিয়ে দাও’।
নিহত মুব্বাশির ভূঁইয়ার ছোট ভাই মুকাদ্দেস ভুঁইয়া জানান গত ৪ বছর আগে পরিবারের সুখের আশায় সৌদি আরব পাড়ি জমিয়েছিল মুব্বাশির ভূঁইয়া। এরই মধ্যে গত ৬ মাস আগে দেশে এসে ছুটি কাটিয়ে আবার প্রবাসে চলে যান। ঈদের পর ছুটিতে দেশে আসার কথা ছিল। সে অনুযায়ী দেশে আসার সকল প্রস্তুতিও সম্পন্ন করেছিল।
আজ ২৬ এপ্রিল বুধবার দেশে আসার কথা ছিল। আমি গাড়ি ভাড়া করে রেখে ছিলাম রাতে ঢাকা এয়ারপোর্টে গিয়ে দুপুরের মধ্যে তাকে নিয়ে বাড়ি আসব। এর একদিন আগেই স্ট্রোক করে মারা যান তিনি। কথা গুলো বলার সময় কন্ঠ জড়িয়ে আসে তার।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে আখাউড়া দক্ষিণ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ জালাল উদ্দিন বলেন, নিহত মুবাশ্বির আমার এলাকার সাহেবনগর গ্রামের বাসিন্দা। তার মৃত্যু সংবাদটি আমি পেয়েছি। আমি তার পরিবারের খোঁজ খবর রাখছি। আমি তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।
চলারপথে রিপোর্ট :
২১ মঙ্গলবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা ও আখাউড়া উপজেলা পরিষদের নির্বাচন।
দুই উপজেলার নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৬ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৬ এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। দুই উপজেলায় মোট ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৯ হাজার ২৩৬ জন।
ইতিমধ্যেই ভোট গ্রহনের সকল প্রস্ততি গ্রহন করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
আজ ২০ মে সোমবার দুপুরে কসবা ও আখাউড়া উপজেলার ১২৯ টি ভোট কেন্দ্রে নির্বাচনী সরঞ্জাম বিতরণ করা হয়। স্ব স্ব উপজেলার উপজেলা পরিষদ মিলনায়তন থেকে বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
এ সময় সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার উপস্থিতিতে দুটি উপজেলার ১২৯ টি ভোট কেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তার কাছে ব্যালট বাক্স, সীলসহ নির্বাচনী সরাঞ্জাম বুঝিয়ে দেয়া হয়। পরে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে এসব সরাঞ্জাম পৌছে দেয়া হয়।
তবে ২১ মে মঙ্গলবার ভোর থেকে কেন্দ্রগুলোতে ব্যালট পেপার পৌছে দেয়া হবে। দুই উপজেলার ১২৯টি ভোট কেন্দ্রের মধ্যে ৭৬ টি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ। এর মধ্যে কসবা উপজেলার ৮৩টি ভোট কেন্দ্রের মধ্যে ৫০টি এবং আখাউড়া উপজেলার ৪৬টি ভোট কেন্দ্রের মধ্যে ২৬টি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ।
জেলা পুলিশের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, অফিসারসহ দুই উপজেলায় ১০২৯জন পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়াও কসবা উপজেলায় মোবাইল টীম ৩৩টি, স্ট্রাইকিং টীম ২টি, স্ট্যান্ডবাইটীম ১টি স্পেশাল মোবাইল টীম ১৫টি থাকবে।
আখাউড়া উপজেলায় মোবাইল টীম ২০টি, স্ট্রাইকিং টীম ২টি, স্ট্যান্ডবাইটীম ১টি স্পেশাল মোবাইল টীম ১২টি থাকবে। এছাড়াও র্যাব, বিজিবি, আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যরা নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করবেন।
এ ব্যাপারে নির্বাচনে রিটার্নিং অফিসার ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ সাইফুল ইসলাম জানান, নির্বাচনে আইন শৃংঙ্খলা রক্ষায় বিপুল পরিমান পুলিশ, র্যাব, বিজিবি ও আনসার বাহিনীর পাশাপাশি নির্বাহী ম্যজিস্ট্রেট এবং জুডিসিয়াল ম্যজিস্ট্রেটগণ দায়িত্ব পালন করবেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
পবিত্র লাইলাতুল কদর, ঈদুল ফিতর ও সাপ্তাহিক ছুটি উপলক্ষে ৬ দিন বন্ধ থাকবে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া স্থলবন্দর। তবে এ সময় ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে উভয় দেশের পাসপোর্টধারী যাত্রী পারাপার কার্যক্রম স্বাভাবিক থাকবে। আখাউড়া স্থলবন্দরের আমদানি-রফতানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. শফিকুল ইসলাম বন্ধ থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, পবিত্র লাইলাতুল কদর উপলক্ষে ৭ এপ্রিল রবিবার এ বন্দরের যাবতীয় কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। পরদিন ৮ ও ৯ এপ্রিল দুদিন যথারীতি যাবতীয় কার্যক্রম চালু থাকবে। এরপর পবিত্র ঈদুল ফিতর ও সাপ্তাহিক ছুটি উপলক্ষে আগামী ১০ এপ্রিল থেকে ১৪ এপ্রিল পযর্ন্ত টানা ৫ দিন এ বন্দর দিয়ে যাবতীয় আমদানি-রফতানি কার্যক্রম বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বিষয়টি ভারতীয় ব্যবসায়ীদেরকে চিঠির মাধ্যমে জানানো হয়েছে। আগামী ১৫ এপ্রিল সোমবার সকাল থেকে পুনরায় এ বন্দর দিয়ে যাবতীয় আমদানি-রফতানি কার্যক্রম শুরু হবে।
আখাউড়া স্থলবন্দরের ইমিগ্রেশন ইনচার্জ খায়রুল আলম বলেন, পবিত্র শবেবরাত, ঈদুল ফিতর ও সাপ্তাহিক ছুটি উপলক্ষে যাবতীয় আমদানি-রফতানি কার্যক্রম ৬ দিন বন্ধ থাকলেও এ বন্দর দিয়ে উভয় দেশের পাসপোর্টধারী যাত্রী পারাপার অন্য সময়ের মতো স্বাভাবিক থাকবে।
উল্লেখ্য, আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যসহ উত্তর-পূর্ব ভারতের ৭টি পাহাড়ি রাজ্যে পাথর, ছোট বড় মাছ, সিমেন্টসহ অর্ধশতাধিক পণ্য রফতানি করা হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায় ২ মাস আগে হত্যার শিকার এক গৃহবধু হত্যা মামলা ১১ লাখ টাকায় আপোষ মিমাংসা হয়েছে বলে জানা গেছে।
গতকাল রবিবার বিকালে আখাউড়া পৌরসভা ভবনের ৩য় তলায় বর্তমান ও সাবেক কয়েকজন পৌর কাউন্সিলর ও সালিশকারকের উপস্থিতিতে এক সভায় বিষয়টির আপস মিমাংসা হয়।
পৌর মেয়রের বড় ভাই দানিস খলিফার সভাপতিত্বে সভা সঞ্চালনা করেন ৫নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শিপন হায়দার। বিকাল ৪টায় শুরু হয়ে সভা শেষ হয় সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায়।
সালিশ সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্যানেল মেয়র এনামুল আহসান খাদেম, বাবুল মিয়া, পৌর কাউন্সিলর জান্নাত হোসেন ঈশান, সাবেক কাউন্সিলর আতিকুর রহমান, কাজী লিটন খাদেম, রফিকুল ইসলাম শিশু, মোঃ তাজুল ইসলাম, ৮নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ সভাপতি কাদির মোল্লা, ৭নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি মোঃ মানিক মিয়া।
সভা শেষে ১৬ জনের একটি জুড়ি বোর্ড গঠন করা হয়। ওই জুড়ি বোর্ড নিহতের পরিবারকে ১১ লাখ টাকা দেয়ার রায় ঘোষণা করেন। আসামী পক্ষ তাৎক্ষনিক ২ লক্ষ টাকা সালিশ বোর্ডে জমা দেয়।
এদিকে হত্যা মামলা সালিশের মাধ্যমে শেষ হওয়া নিয়ে এলাকায় আলোচনা-সমালোচনা চলছে।
গত ২২ জুন সকালে কথাকাটির জেরে আখাউড়া পৌরশহরের ৭নং ওয়ার্ডের চন্দনসার এলাকার সোমা আক্তার (২৭) নামে ওই গৃহবধুকে বেদম মারধর করে একই এলাকার আরিফ হাসান জিকু ও তার পরিবারের লোকজন। পরদিন শুক্রবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
নিহত সোমা আক্তার চন্দনসারের জাকির হোসেন টিপু’র স্ত্রী। তার ৫ বছরের একটি মেয়ে ও ২ বছরের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। এ ঘটনায় সোমা আক্তারের পিতা মোঃ সেলিম মিয়া বাদী হয়ে আরিফ হাসান জিকুসহ তার পরিবারের ৪ জনকে আসামী করে আখাউড়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ জিকুর মা হোসনে আরা বেগম (৫৫) কে আটক করে। বাকী আসামীরা এখনও পলাতক রয়েছে।
৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র এনামুল আহসান খাদেম, উভয় পক্ষের সম্মতিতে সালিশ বৈঠকে সোমা আক্তার হত্যার ঘটনাটি মিমাংসা করেছি। নিহতের পরিবারকে ১১ লক্ষ টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ৫নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শিপন হায়দার বলেন, সোমা আক্তারের হত্যার বিষয়টি শেষ হয়েছে। সোমার ২ সন্তানকে ৪ লক্ষ এবং তার বাবাকে ৭ লক্ষ টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা জজ কোর্টের বিজ্ঞ আইনজীবী এড. নাসির উদ্দিন বলেছেন, হত্যা মামলা আপোষ যোগ্য না। এটা আপোষ করা যায় না।
আখাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আসাদুল ইসলাম বলেন, হত্যা মামলা সামাজিক ভাবে মিমাংসা করার কোন সুযোগ নাই। আমরা একজন আসামীকে আটক করেছি। বাকীরা পলাতক আছে। তাদেরকে গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে। এখন বাইরে কে কি করলো এটার আমাদের দেখার বিষয় না।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া মুক্ত দিবস আজ। ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর শত্রুমুক্ত হয়েছিল আখাউড়া উপজেলা। ওই দিন সড়ক বাজারের পোস্ট অফিসের সামনে উড়ানো হয়েছিল স্বাধীন সার্বভৌমত্ব দেশের লাল সবুজের পতাকা। আখাউড়া মুক্ত হওয়ার মধ্য দিয়ে শত্রুমুক্ত হতে শুরু করে পুরো ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা।
এই দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে দুইদিন ব্যাপি কর্মসূচি হাতে নিয়েছে আখাউড়া উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড এবং উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ড। এর মধ্যে গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৫টা ৩০ মিনিটের দিকে অ্যাডভোকেট সিরাজুল হক পৌর মুক্তমঞ্চে প্রদীপ প্রজ্জলন করা হয়। আজ বুধবার সকালে উপজেলা স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে আনন্দ র্যালি বের করা হবে। র্যালি শেষে পোস্ট অফিসের সামনে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উড়ানো হবে।
আখাউড়ার বেশ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধারা জানান, ৩০ ডিসেম্বর ও ১ ডিসেম্বর উপজেলার আজমপুর ও রাজাপুর এলাকায় পাক বাহিনীর সঙ্গে মুক্তিবাহিনীর তুমুল যুদ্ধ হয়। ৩ ডিসেম্বরের যুদ্ধে হানাদার বাহিনীর ১১ সদস্য নিহত ও মুক্তিবাহিনীর দুইজন শহীদ হন। ৪ ডিসেম্বর মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনী মিলে আখাউড়ায় আক্রমন শুরু করে। ওই দিন আজমপুরে শহীদ হন লেফটেন্যান্ট ইবনে ফজল বদিউজ্জামান। ৫ ডিসেম্বর দিন ও রাতের যুদ্ধে শত্রুমুক্ত হয় আখাউড়া।
চলারপথে রিপোর্ট :
আখাউড়া থানা পুলিশের মাদক উদ্ধার ও গ্রেফতারী পরোয়ানা তামিল অভিযানে গত ২৪ ঘন্টায় ২০ বিশ কেজি গাঁজাসহ ১জনকে আটক করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার গভীর রাতে উপজেলার মনিয়ন্দ ইউনিয়নের তুলাই শিমুল গ্রামের জাহাঙ্গীর খন্দকারের বসত ঘরের টিনের ড্রামের ভিতর হইতে ২০ গাঁজা উদ্ধার করে পুলিশ। এসময় ওই গ্রামের মোঃ জাহাঙ্গীর খন্দকার (৫৫) কে আটক করা হয়।
থানা সূত্রে জানা গেছে, এস আই হারুন অর রশিদের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল গোপন সংবাদে জাহাঙ্গীর আলমের বসত ঘরে তল্লাশী চালিয়ে উল্লেখিত গাজা উদ্ধার করে। তার বিরুদ্ধে আগেও ২ টি মাদক মামলা রয়েছে। তার বিরুদ্ধে আখাউড়া থানায় নিয়মিত মাদক মামলা দায়ের পূর্বক শুক্রবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।