চলারপথে রিপোর্ট :
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, বাংলাদেশকে ধ্বংস করার জন্য দুই-তিনটা রাজনৈতিক দল খুব চেষ্টা করছে। জনগণকে সেই ষড়যন্ত্র সম্বন্ধে সজাগ থাকার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি বাংলাদেশের মানুষ তাদের ষড়যন্ত্র প্রতিহত করবে এবং ছিন্নভিন্ন করে দিবে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে তিনি নিজ নির্বাচনী এলাকা আখাউড়ায় আজ ২ মে মঙ্গলবার দিনভর গণসংযোগ করেন। গণসংযোগকালে মনিয়ন্দ ইউনিয়নের শৌনলোহঘর প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠের পথসভায় বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
আইনমন্ত্রী বলেন, করোনা মহামারির সময় জননেত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের মানুষকে বিনা পয়সায় ৩টি টিকা দিয়েছেন। ১ লাখ ৮৩ হাজার কোটি টাকা প্রণোদনা দিয়েছেন। গার্মেন্টস শ্রমিকদেরকে বিনা কাজে ৩ মাস বেতন দিয়েছেন।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের মানুষের টাকা পদ্মা সেতু নির্মাণ হয়েছে। জননেত্রী শেখ হাসিনা গৃহহীনকে গৃহ দিয়েছেন। পরে তুলাই উচ্চ বিদ্যালয় মাঠের পথসভায় মন্ত্রী আরও বলেন, শেখ হাসিনা থাকলেই বাংলাদেশের উন্নয়ন হবে। বিএনপি জামাত থাকলে বাংলাদেশ ধ্বংস হয়ে যাবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশকে সারা বিশ্বে উন্নয়নের রুল মডেল হিসাবে ধরা হয়। জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা আরও উন্নত হতে চাই। তাঁর পরিকল্পনা অনুযায়ী বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে ২০৪১ সালে আমরা একটি উন্নত দেশ হব।
পথসভায় নৌকা মার্কায় ভোট দেয়ার আহবান জানিয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য আনিসুল হক বলেন, আওয়ামী লীগকে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আবারো বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করলে বাংলাদেশের উন্নয়ন অব্যাহত থাকবে।
পথসভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আখাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলী চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র তাকজিল খলিফা কাজল, কসবা উপজেলা চেয়ারম্যান চেয়ারম্যান রাশেদুল কায়সার জীবন, কসবা পৌরসভার মেয়র এম.জি হাক্কানি, মনিয়ন্দ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহবুবুল আলম চৌধুরী দীপক, আখাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেন বাবুল, যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক আব্দুল মমিন বাবুল, আতাউর রহমান নাজিম, তুলাই শিমুল উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি সভাপতি মোঃ লুৎফুর রহমান প্রমুখ।
এর আগে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সকাল সাড়ে ১০টায় মনিয়ন্দ ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে পথসভার মাধ্যমে এসব পথসভায় তিনি এলাকার অসমাপ্ত উন্নয়ন কাজ করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। বিগত ২০২০ সাল থেকে করোনা ভাইরাস অতিমারির কারণে এলাকার সংসদ সদস্য হিসেবে এলাকায় লোকজনকে দেখাশোনা করতে না পারায় তিনি দু:খ প্রকাশ করেন। দিনভর গণসংযোগ শুরু করেন। বেলা সাড়ে ৩টা পর্যন্ত তিনি মনিয়ন্দ ইউনিয়নের ৯টি পথসভায় যোগদান করেন।
আখাউড়া প্রতিনিধি :
একটি প্রভাবশালী মহল ফসলি জমির পাশে খাল দখলে নিয়ে বেড়িবাঁধ নির্মাণ করে জমির পানি নিষ্কাশন বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টির প্রতিকার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন কৃষকরা।
লিখিত অভিযোগ ও ভুক্তভোগী কৃষক সূত্রে জানা যায়, উপজেলার মোগড়া ইউনিয়নের চরনারায়ণপুর মৌজায় বুড়িবিলের পাশে ৫ শতাধিক বিঘা কৃষি জমি রয়েছে। উপজেলার মোগড়া ইউনিয়নের দরুইন গ্রামের মৃত শরিয়ত উল্লার ছেলে মো. তাহের মিয়া ও একই গ্রামের হাজী আবুল কাশেমের ছেলে মো. রাসেল মিয়া বিগত কয়েক বছর পূর্বে চরনারায়ণপুর মৌজাতে কিছু জমি ক্রয় করে জমিগুলোর পশ্চিম পাশে উত্তর-দক্ষিণ করে একটি বেড়িবাঁধ নির্মাণ করে। যার ফলে ওই এলাকার শত শত বিঘা কৃষি জমিতে বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা ও শুস্ক মৌসুমে পানির অভাব সৃষ্টির হয়ে জমিগুলো চাষে অযোগ্য হওয়ার উপক্রম। ভুক্তভোগী কৃষকরা এসব নিয়ে প্রতিবাদ করলে তাদের উপর চড়াও হয়ে ভয়ভীতি হুমকি ধমকি দেন তারা। এ চক্রটির দাপটে কেউ কথা বলার সাহস পায়না। নিরীহ কৃষকদের জমি দখলের চেষ্টায় লিপ্ত আছে বলে অভিযোগ কৃষকদের।
সম্প্রতি আবারও জমি কেটে পুকুর নির্মাণ শুরু করেছে তাহের মিয়া। কিন্তু পুকুরের পাড় নির্মাণের কারণে পুকুরের পেছনের প্রায় ৫০০ বিঘা জমি থেকে পানি নিষ্কাশন বন্ধ হয়ে যাবে। আবার বর্ষাকালে পানি সরাতে না পেরে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হবে। ফলে শত শত বিঘা জমির চাষাবাদ হুমকির মুখে পড়ছে।
খাল দখলের ফলে ভুক্তভোগী কৃষক লিয়াকত আলী অভিযোগ করে বলেন, আমার এখানে প্রায় ২৮ বিঘা জমি রয়েছে। চারদিকে ঘুরিয়ে যে বাঁধ দিচ্ছে এতে করে আমাদের জমিগুলোর পানি নিষ্কাশন পথ বন্ধ হয়ে পরেছে। এ বাঁধের ভেতরে শত শত বিঘা জমি জলাবদ্ধ হয়ে চাষাবাদ বন্ধ হয়ে যাবে। চাষাবাদ না করতে পারলে আমরা না খেয়ে মরব।
স্থানীয় বাসিন্দা মিলন মিয়া বলেন, একটি প্রভাবশালী মহল খালে মাটি ফেলে বেড়িবাঁধ দিয়েছে। আমরা বাঁধা দিয়েছি কিন্তু তারা আমাদের বাঁধা মানে নাই। তারা বলেছিল ব্রীজ করে দিবে কিন্তু ব্রিজ করে দেয় নাই। এ জন্য জমির পানি নিষ্কাশন হয় না। আমরা অনেক কষ্টের মধ্যে আছি।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে অভিযুক্ত তাহের মিয়া বলেন, এখানে কোনো খাল নেই। নিজের জায়গায় বাঁধ দিয়েছি। এতে করে কৃষকদের কোনো ক্ষতি হবে না।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহানা বেগম বলেন, চরনরায়ণপুরে ৫০০ বিঘা জমি রয়েছে। ২০১৯ সালে কৃষকরা ইউএনও স্যারের কাছে অভিযোগ দিয়েছিল। স্যারের নির্দেশে আমি তদন্ত করার জন্য সেখানে গিয়েছিলাম। সেখানে উঁচু বাঁধের কারণে কৃষকদের জমিতে পানি আসা-যাওয়া বাঁধাগ্রস্ত হয়। এখানে যদি আবারও বড় বাঁধা তৈরি করা হয় তাহলে কৃষি জমির ক্ষতি হবে। সেচের অভাবে জমিগুলো খালি পড়ে থাকবে। এটা কৃষির জন্য হুমকি স্বরুপ।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মোগড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন বলেন, কৃষকদের যাতে ক্ষতি না হয় সে ব্যাপারে উভয় পক্ষের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার অংগ্যজাই মারমা বলেন, কৃষকদের একটি দরখাস্ত পেয়েছি। স্থানীয় চেয়ারম্যানকে বিষয়টি দেখার জন্য বলেছি।
চলারপথে রিপোর্ট :
চলতি বছরের শেষে অথবা ২০২৪ সালের জানুয়ারী মাসে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। সে হিসাবে নির্বাচনের আরও বাকী আছে প্রায় ৮ মাস। অনেকটা আগে ভাগেই নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করছেন কসবা- আখাউড়ার সংসদ সদস্য ও আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এমপি। ২ মে মঙ্গলবার থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী গণসংযোগ শুরু করবেন তিনি। সোমবার সকালে আখাউড়ায় সাংবাদিক সস্মেলন করে মন্ত্রীর উন্নয়ন কর্মকান্ডসহ নির্বাচনী প্রচারণার তথ্য তুলে ধরেন উপজেলা আওয়ামী লীগ। আওয়ামীলীগের দলীয় কার্যালয়ে এ সাংবাদিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলী চৌধুরীর সভাপতিত্বে সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে পাঠ করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র তাকজিল খলিফা কাজল। সাংবাদিক সম্মেলনে আখাউড়ার প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্যে আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক কাজল বলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ২০১৪ সাল থেকে পরপর দুই মেয়াদে এমপি নির্বাচিত হয়ে আইনমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি কসবা আখাউড়ায় ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন। গত ১০ বছরে আইনমন্ত্রী এলজিইডি এবং পিআইও দপ্তরের মাধ্যমে প্রায় ৩২০ কোটি টাকার উন্নয়ণ করেছেন। এছাড়া পৌরসভার মাধ্যমে ৩০ কোটি টাকা এবং পৌরসভার ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্টের জন ১০০ কোটি টাকার প্রকল্পের ব্যবস্থা করেছেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পুরাতন ভবন মেরামতের জন্য এক কোটি ৭৭ লাখ টাকা ব্যয় করা হয়েছে। এছাড়াও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, গণপূর্ত, পানি উন্নয়ন বোর্ড, বিদ্যুত বিভাগ, জেলা পরিষদসহ বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে শত শত কোটি টাকার উন্নয়ন হয়েছে বলে তিনি দাবী করেন।
কসবা আখাউড়াবাসীর সার্বিক উন্নয়ন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দর্শন, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে জনগণের সমর্থনের মাধ্যমে আনিসুল হককে আবারও এমপি নির্বাচিত করে এলাকার উন্নয়নে অংশীদার হতে সকলের সহযোগিতা চাওয়া হয় সাংবাদিক সম্মেলনে।
তফসিল ঘোষণার আগে নির্বাচনী প্রচার করা যায় কিনা সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামীলীগ সেক্রেটারি বলেন উনি উনার জনগণের সাথে গণসংযোগ করতে মনে হয় এতে কোন সমস্যা হবে না।
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন এ আসনে আনিসুল হক আওয়ামীলীগের মনোনয়ন পাবেন এটা নিশ্চিত করে বলা যায়। সাংবাদিক সম্মেলনে এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক মনির হোসেন বাবুল, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাড. আব্দুল্লাহ ভূঁইয়া বাদল, উপজেলা যুবলীগের যুগ্ন আহবায়ক আতাউর রহমান নাজিম, আব্দুল মমিন বাবুল, আওয়ামীলীগ নেতা দীপক ঘোষ, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শাহাব উদ্দিন বেগ শাপলু, সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন নয়ন প্রমুখ।
চলারপথে রিপোর্ট :
দেশের চলমান পরিস্থিতিতে জেলার শান্তি-শৃংখলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য জেলাবাসীর প্রতি আহবান জানিয়েছেন জেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দ।
আজ ৬ আগস্ট মঙ্গলবার দুপুরে পৃথক সময়ে দুর্বৃত্তদের হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রেসক্লাব পরিদর্শনে এসে জেলা বিএনপির দুইপক্ষের নেতারা এ আহবান জানান।
দুপুর ১টার দিকে প্রেসক্লাব পরিদর্শনে আসেন জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র হাফিজুর রহমান কচি ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক জহিরুল হক জহিরের নেতৃত্বে জেলা বিএনপির একটি অংশ।
এসময় তারা সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে বলেন, সাংবাদিকরা জাতির বিবেক। তারা পেশাদারিত্বের সাথে সাংবাদিকতা করেন।
এ সময় তারা বলেন, প্রেসক্লাব সকলের। প্রেসক্লাবে হামলা কারো কাম্য নয়। নেতৃবৃন্দ প্রেসক্লাবে হামলার নিন্দা জানিয়ে বলেন, আমরা মঙ্গলবারের জেলা বিএনপির বিজয় মিছিল বাতিল করেছি। এ সময় নেতৃবৃন্দ বলেন, আজকে ছাত্র সমাজ জাতিকে স্বৈরাচারের হাত থেকে মুক্ত করেছে। সাংবাদিকদের স্বধীনভাবে তাদের কাজ করার সুযোগ করে দিয়েছে। বক্তারা সরকারি স্থাপনা, প্রতিপক্ষের নেতা-কর্মীদের বাড়ি এবং সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা চালিয়ে কেউ যাতে অরাজকতা সৃষ্টি করতে না পারে সে জন্য জেলা বিএনপির সকল নেতা-কর্মীকে সজাগ থাকার আহবান জানান।
দুপুর দেড়টার দিকে প্রেসক্লাবে আসেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মোঃ সিরাজুল ইসলাম সিরাজের নেতৃত্বে বিএনপির অপর অংশ।
এ সময় তিনি বলেন, জনগণের কাঙ্ক্ষিত বিজয় যাতে কেউ নস্যাৎ করতে না পারে সেজন্য জেলা বিএনপির নেতা-কর্মীদেরকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কেউ যাতে সরকারি স্থাপনা ও আওয়ামীলীগের নেতা-কর্মীদের বাড়ি-ঘরে হামলা করতে না পারে সেজন্য শহরের প্রতিটি ওয়ার্ডে দলের সকল নেতাকর্মী সজাগ থাকার আহবান জানান। জনসচেতনা বৃদ্ধির জন্য বিএনপির পক্ষ থেকে শহরে মাইকিং করা হচ্ছে। তিনি বিশেষ করে কেউ যাতে সংখ্যালঘুদের বাড়ি-ঘর, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে হামলা করতে না পারে সেজন্য দলীয় নেতা-কর্মীদের খেয়াল রাখার আহবান জানান। নেতৃবৃন্দ পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে জেলায় কর্মরত বিভিন্ন সাংবাদিকের উপর হামলা ও প্রেসক্লাবে হামলার ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেন।
অনলাইন ডেস্ক :
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া কাউকে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে না। তিনি বলেন, সরকার প্রশাসনিক রদবদল করছে না, কর্মকর্তাদের বদলি করছে নির্বাচন কমিশন। এ নিয়ে আওয়ামী লীগের আপত্তি নাই।
আজ ৩ ডিসেম্বর রবিবার দুপুরে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক বিফ্রিংয়ে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
এসময় স্বতন্ত্র প্রার্থীদের বহিষ্কারের বিষয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে পাল্টা প্রশ্ন করে তিনি বলেন, ‘তাদের কেন বহিষ্কার করা হবে? আমরা কি দলের পক্ষ থেকে বলেছি যে, যারা স্বতন্ত্র নির্বাচন করবেন তাদের দল থেকে বহিষ্কার করবো? এ সিদ্ধান্ত আওয়ামী লীগে এখনও হয়নি।’
বিএনপির রাজনৈতিক কর্মসূচির সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিএনপি জনসমর্থনের অভাবে তাদের আন্দোলন মুখ থুবড়ে পড়েছে। সেই কারণে তারা সন্ত্রাস, অগ্নিসন্ত্রাস, হিংসা, চোরাগুপ্তা হামলা, নাশকতা করছে। স্বাভাবিক পথ থেকে বিচ্যুত হয়ে তারা রাজনীতিটাকে সন্ত্রাসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। প্রতিদিন গাড়ি পোড়াচ্ছে।’
তিনি বলেন, বিএনপি গণবিরোধী রাজনীতির সমর্থন না দিয়ে তারা জনগণকে শত্রæ ভাবে। বেলাল হোসেনের মতো একজন নিরীহ বাস হেলপারকে ৮০ শতাংশ পুড়িয়ে দিয়েছে।
‘চোরাগুপ্তা হামলার জন্য বিএনপি নেতাকর্মীদের পাচ্ছে না’ উল্লেখ করে তিনি অভিযোগ করেন, ‘তাই তারা ভাড়া করা টোকাই দিয়ে তারা হামলা করছে। তাদের দিয়ে বোমা হামলা, পেট্রোল বোমা মারছে; এসব অপকর্ম করছে।’
বিএনপির রাজনীতিতে জড়িয়ে অনেকেই নিজের জীবন নষ্ট করতে চায় না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘যারা বিএনপি থেকে সুস্থ রাজনীতিতে বেরিয়ে এসেছেন তাদের ধন্যবাদ। ভবিষ্যতে দলটির আরও নেতাকর্মীরা সুস্থ রাজনীতির দিকে আসবেন বলে আশা করছি।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বাংলাদেশের নির্বাচন এলেই কিছু মানুষ বা গোষ্ঠী ষড়যন্ত্র করে। জনসমর্থহীন এসব গোষ্ঠী তারা নির্বাচনে হেরে যাবে। সবসময় তারা পেছনের দরজা খোলা রাখে। পেছনের দরজা দিয়ে তারা ক্ষমতায় আসার ষড়যন্ত্র করে।’
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, সুজিত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণবিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, শিক্ষা ও মানবসম্পদবিষয়ক সম্পাদক শামসুন নাহার চাপা, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান, কার্যনির্বাহী সদস্য সাহাবুদ্দিন ফরাজী প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
অনলাইন ডেস্ক :
ঢাকা সফররত যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক-নির্বাচনী প্রতিনিধিদল কোনো পরামর্শ দেয়নি বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি বলেন, নির্বাচন নিয়ে আমাকে কোনো পরামর্শ দেননি, জানতে চেয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদলটি আজ ১১ অক্টোবর বুধবার দুপুরের পর সচিবালয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সঙ্গে বৈঠক করে। পরে আইনমন্ত্রী সাংবাদিকদের কাছে বৈঠকের বিষয়বস্তু তুলে ধরেন।
মন্ত্রী বলেন, প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাইবার আইন নিয়ে কথা হয়েছে। এ ছাড়া অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের বিষয়েও কথা হয়েছে। আমি ওনাদের বলেছি, শেখ হাসিনার সরকার অবাধ, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করার ব্যাপারে জনগেণের কাছে অঙ্গীকারবদ্ধ। নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূরর্ণ হবে। এই সরকার অবাধ, নিরপেক্ষ এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করতে এবং নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতা বজায় রাখতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের যে আইন উপমহাদেশে নেই, এমনকি এদেশেও ৫০ বছর ছিল না, সেটি প্রণয়ন করেছি।
তিনি বলেন, তাদের মূল বক্তব্য ছিল ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট এবং সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্টের মধ্যে পার্থক্য নিয়ে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পরিবর্তন করে যে সাইবার নিরাপত্তা আইন করা হয়েছে তাতে কী পরিবর্তন রয়েছে সে বিষয়ে। আমি সেই পার্থক্যের কথা তাদের অত্যন্ত পরিষ্কারভাবে বলেছি। নির্বাচন নিয়ে তারা আমাকে কোনো পরামর্শ দেননি, জানতে চেয়েছেন। সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট, জুডিসিয়ারি সম্বন্ধে জানতে চেয়েছেন। আমি জুডিসিয়ারির সম্পূর্ণ ইতিহাস তুলে ধরেছি। তারা মামলাজট সম্বন্ধে জানতে চেয়েছেন, এজন্য আমরা কী করেছি তা বলেছি।
আনিসুল হক বলেন, নির্বাচন কমিশন নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ হওয়ার জন্য আইনের কিছু পরিবর্তন চেয়েছিল। সেই পরিবর্তনগুলো করা হয়েছে। আমি বলেছি, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরপরই নির্বাচন সংক্রান্ত যেসব অফিস-আদালত, ডিপার্টমেন্ট রয়েছে সেগুলো নির্বাচন কমিশনের নিয়ন্ত্রণে চলে যাবে। এই ৩টি জিনিস খেয়াল করলেই বোঝা যাবে, শেখ হাসিনার সরকার বাংলাদেশ অবাধ, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূরর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক সেটা তারা চায়।
সংলাপের বিষয়ে কিছু বলেছেন কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, সংলাপ হবে কিনা জানতে চাননি। কেউ নির্বাচনে আসবে না এমন আশঙ্কা করা হচ্ছে কি-না, এটা জিজ্ঞাসা করেছেন। আমি বলেছি, শেখ হাসিনার সরকার চায় সব দল নির্বাচনে আসুক। কিন্তু কে নির্বাচনে আসবে, কে নির্বাচনে আসবে না- সেটা সেই দলের সিদ্ধান্ত।