অনলাইন ডেস্ক :
ভারতের একটি জেলে এক গ্যাংস্টারকে রড দিয়ে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। তার নাম তিল্লু তাজপুরিয়া ওরফে সুনীল মান। আজ ২ মে মঙ্গলবার সকালে এই ঘটনা ঘটে।
এনডিটিভির খবরে উল্লেখ করা হয়েছে, মঙ্গলবার সকালে দিল্লির তিহার জেলের মধ্যে তিল্লু তাজপুরিয়ার ওপর হামলা চালান তার প্রতিপক্ষ যোগেশ টুন্ডা ও তার সহকারীরা। তিহার জেলের ৯ নম্বর সেলে বন্দী ছিলেন তিল্লু তাজপুরিয়া। তার পাশের ৮ নম্বর সেলে ছিলেন যোগেশ টুন্ডা। লোহার গ্রিল টপকে রড দিয়ে যোগেশ ও তার সহকারীরা তিল্লু তাজপুরিয়ার ওপর চড়াও হন বলে অভিযোগ উঠে।
দুই পক্ষের মধ্য সংঘর্ষ বাঁধে। সংঘর্ষে আহত তিল্লু তাজপুরিয়া ও রোহিত নামের আরেকজনকে দিল্লির দীনদয়াল উপাধ্যায় হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকেরা তিল্লু তাজপুরিয়াকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। আহত রোহিতের চিকিৎসা চলছে। এ ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। এ ঘটনার পর অন্য বন্দীদের নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে।
গত বছর দিল্লির রোহিনী আদালতের মধ্যে গ্যাংস্টার জিতেন্দ্র যোগীর ওপর গুলি চালানোর অভিযোগ উঠে গ্যাংস্টার তিল্লু তাজপুরিয়ার বিরুদ্ধে। সেই ঘটনার প্রতিশোধ নিতেই জিতেন্দ্র যোগী পক্ষের সদস্যরা যোগেশ টুন্ডাকে ভাড়া করেছেন বলে ধারণা করছে পুলিশ। সূত্র: এনডিটিভি
অনলাইন ডেস্ক :
মালয়েশিয়ায় সহজে ও কম সময়ে ই-পাসপোর্ট এবং ভিসা সেবা প্রদানের লক্ষ্যে ‘কল সেন্টার’ উদ্বোধন করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন।
আজ ৫ জানুয়ারি শুক্রবার কুয়ালালামপুরে সাউথগেট কমার্শিয়াল সেন্টারে ভার্চুয়ালি উপস্থিত থেকে তিনি এর উদ্বোধন করেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পক্ষে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. শামীম আহসান ফিতা কাটেন।
এসময় এ সার্ভিসের জন্য চুক্তিবদ্ধ আউটসোর্সিং প্রতিষ্ঠান ‘এক্সপ্যাট সার্ভিসেস লিমিটেড’ কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক গিয়াসউদ্দিন আহমেদ, প্রবাসী মিডিয়াকর্মীসহ বাংলাদেশ হাইকমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
‘জাতীয় প্রবাসী দিবস’ উপলক্ষে সেবা সপ্তাহ পালন করছে কুয়ালালামপুরস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশন। এর শেষ দিনে এ কল সেন্টার উদ্বোধন করা হলো।
‘কল সেন্টার’ চালুর জন্য হাইকমিশনকে ধন্যবাদ জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রবাসীদের সেবা ও কল্যাণ নিশ্চিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘প্রবাসী-বান্ধব নীতি’ অনুসরণ করছেন। এ লক্ষ্যে ৩০ ডিসেম্বরকে ‘জাতীয় প্রবাসী দিবস’ ঘোষণা করেছে সরকার। বাংলাদেশ হাইকমিশন তাদের সীমিত জনবল দিয়ে মালয়েশিয়ায় বসবাসরত ১২ লক্ষাধিক প্রবাসীদের পাসপোর্টসহ অন্যান্য সেবা এবং বিদেশিদের ভিসা সেবা দিয়ে আসছে। সাম্প্রতিক সই করা চুক্তির আওতায় গত একবছরে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বাংলাদেশি মালয়েশিয়ায় এসেছেন। ফলশ্রুতিতে, পূর্বের যে কোনো সময়ের তুলনায় হাইকমিশনের কাজের পরিধি বেড়েছে।
সেবা প্রদানের পুরো প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতের পাশাপাশি প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার করা হয়েছে বলে জানান মন্ত্রী।
মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. শামীম আহসান তার বক্তব্যে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রবাসী-বান্ধব নীতি ও ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের ধারাবাহিকতায় ‘কল সেন্টার’ চালু হলো।
শিগগির ই-পাসপোর্ট ও ভিসা প্রদান কার্যক্রম চালু হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
ই-পাসপোর্ট এবং মালয়েশিয়া ও অন্যান্য দেশের নাগরিকদের বাংলাদেশের ভিসা প্রদানের লক্ষ্যে কুয়ালালামপুরের কেন্দ্রস্থলে জালান দুয়া-চান শো লিনে (সিটি সেন্টারের পাশে) প্রায় ১৪ হাজার বর্গফুট ভবন ভাড়া নিয়ে ‘ওয়ান স্টপ সার্ভিস সেন্টার’ করা হয়েছে।
কল সেন্টারের নম্বর- 0392120267। সোম থেকে শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত পাসপোর্ট ও ভিসা বিষয়ে এ নম্বরে কল দিয়ে পরামর্শ নেওয়া যাবে।
অনলাইন ডেস্ক :
বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক নৈশভোজে যোগ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। ৩ এপ্রিল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় থাইল্যান্ডের ব্যাংককের একটি হোটেলে এ নৈশভোজের আয়োজন করা হয়।
এ সময় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস নৈশভোজে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রর সঙ্গে ছবি তোলেন।
বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে আজ দুপুরে ব্যাংককে পৌঁছান প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। বিমানবন্দরে প্রধান উপদেষ্টাকে অভ্যর্থনা জানান থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সংযুক্ত মন্ত্রী জিরাপরন সিন্দোপারি।
অনলাইন ডেস্ক :
গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী র. আ. ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এম.পি আজ ২৮ মে জাপানের নাগাসাকি শহরের পিস পার্কে বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের পক্ষে বাংলাদেশের নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত একটি শান্তি স্মৃতিস্তম্ভের উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মাঝে জাপানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শাহাবুদ্দিন আহমদ, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ নবীরুল ইসলাম এবং নাগাসাকির মেয়র শিরো সুজুকি উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক একটি পারমাণবিক বোমামুক্ত, শান্তিপূর্ণ বিশ্বের অন্বেষণে জাপানের জনগণকে ও বিশ্বে ‘শান্তির সংস্কৃতি’র বার্তা পৌঁছে দেওয়ার অংশ হিসেবে বাংলাদেশ সরকার নাগাসাকি পিস পার্কে শান্তি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের প্রস্তাব দেয়। তৎপ্রেক্ষিতে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি স্মৃতিস্তম্ভটি উদ্বোধন করেন।
স্মৃতিস্তম্ভের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণে সার্বিক সহযোগিতার জন্য নাগাসাকির মেয়রসহ এ প্রকল্পের সাথে সম্পৃক্ত বাংলাদেশ ও জাপানের সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানান।
স্থপতি অনিন্দ্য পন্ডিত কর্তৃক নকশাকৃত ৩ মিটার উচু এ স্মৃতিস্তম্ভটি কালো গ্রানাইট ও সাদা মার্বেল পাথর দিয়ে নির্মিত। বাংলাদেশ দূতাবাস টোকিওর সহযোগিতায় স্মৃতিস্তম্ভটি নির্মাণ করেছে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অধীন গণপূর্ত অধিদপ্তর।
অনুষ্ঠানের আগে ১৯৪৫ সালে নাগাসাকিতে পারমাণবিক বোমা হামলার সময়ের সাথে মিলিয়ে বেলা ১১ টা ২ মিনিটে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
স্মৃতিস্তম্ভ উন্মোচন অনুষ্ঠান শেষে গণপূর্তমন্ত্রী উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর নেতৃত্বে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদল পারমাণবিক বোমা বিস্ফোরণের কেন্দ্রস্থলে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। তিনি শান্তি-স্মৃতি (পিস মেমোরিয়াল) জাদুঘর পরিদর্শন করেন ও সেখানে দর্শনার্থী বই-এ মন্তব্য লেখেন।
দুপুরে নাগাসাকির মেয়র সুজুকি বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের সম্মানে মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করেন। মধ্যাহ্নভোজের বক্তৃতায় রাষ্ট্রদূত শাহাবুদ্দিন আহমেদ অনুষ্ঠানটি সফলভাবে আয়োজনে সার্বিক সহযোগিতা ও আন্তরিকতার জন্য মেয়র সুজুকিকে ধন্যবাদ জানান।
অনুষ্ঠানে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব হামিদুর রহমান খান, বাংলাদেশ দূতাবাসের ডেপুটি চিফ অফ মিশন শাহ আসিফ রহমান, দূতালয় প্রধান শেখ ফরিদ এবং দ্বিতীয় সচিব (প্রেস) মোঃ ইমরানুল হাসান উপস্থিত ছিলেন।
অনলাইন ডেস্ক :
যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসের পূর্বাঞ্চল ও পশ্চিমাঞ্চলে ছড়িয়ে পড়া ভয়াবহ দাবানল শুক্রবারও নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি। তবে অগ্নিনির্বাপণকর্মীরা দাবানল ছড়িয়ে পড়ার গতিও কিছুটা কমাতে পেরেছেন। দাবানলে প্রাণহানি বেড়ে ১০ জনে পৌঁছেছে। এতে অন্তত ১০ হাজার ঘরবাড়ি পুড়ে গেছে। এছাড়া পুড়ে গেছে অন্য ভবন ও স্থাপনাও।
দাবানল কীভাবে হলিউডকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে?
লস অ্যাঞ্জেলেস হলো হলিউডের প্রাণকেন্দ্র। যেটি আমেরিকার প্রধান বিনোদন কেন্দ্র। সেখানে ভয়াবহ দাবানলের আগুনে পুড়ে ছাই হচ্ছে লস অ্যাঞ্জেলসের বিশাল অংশ। বৃহস্পতিবার সেখানে পাচটি সক্রিয় দাবানলে পুড়ছিল সবকিছু। এরমধ্যে ইটন নামে একটি দাবানল গতকাল পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণের বাইরে ছিল। এ দাবানলটি ১৭ হাজার ৬০০ একর জায়গাজুড়ে ছড়িয়েছিল। শক্তিশালী বাতাস, শুষ্ক আবহাওয়া এবং পানির চাপ কম থাকায় আগুনের তীব্রতা শুধু বাড়ছিল। দাবানলে পুড়ে গেছে হলিউড হিলসও।
সানসেট নামের দাবানলে জ্বলছে হলিউড হিলস। যেখানে বিখ্যাত হলিউড সাইনবোর্ডটি অবস্থিত। স্থানীয় সময় বুধবার সেখানকার সাধারণ মানুষকে সরে যেতে বলা হয়। এরপরই মানুষের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়। ভয়াবহ এ আগুনে হলিউডের বেশ কয়েকজন তারকার বাড়ি পুড়ে গেছে। এছাড়া হার্স্ট এবং লিডিয়া নামের দুটি ছোট আকৃতির দাবানলও লস অ্যাঞ্জেলসে জ্বলছে।
দাবানলে পুড়ে গেছে যেসব তারকার ঘরবাড়ি
বিলি ক্রিস্টাল
৭৬ বছর বয়সী বিলি ক্রিস্টাল একজন আমেরিকান কৌতুক অভিনেতা এবং চলচ্চিত্র নির্মাতা। তিনি একজন স্ট্যান্ডআপ কমেডিয়ান এবং তিনি মঞ্চ নাটকের জন্য বেশি পরিচিত। সানসেট নামের দাবানলে ১৯৭৯ সালে নির্মাণ করা তার প্যাসিফিক প্যালিসেডস নামের বাড়িটি পুড়ে যায়। বিলি ক্রিস্টাল এবং তার স্ত্রী জেনিস বুধবার (৮ জানুয়ারি) একটি বিবৃতি দিয়ে জানান, তাদের ৪৫ বছরের পুরোনো বাড়ি প্যাসিফিক প্যালিসেডস অঞ্চলে পুড়ে গেছে। বিলি ক্রিস্টাল এবং তার স্ত্রী জেনিস বুধবার বিবৃতিতে জানান, তাদের ৪৫ বছরের পুরোনো বাড়ি প্যাসিফিক প্যালিসেডস অঞ্চলে পুড়ে গেছে। বিবৃতিতে তারা লিখেছেন, ‘জেনিস এবং আমি ১৯৭৯ সাল থেকে আমাদের বাড়িতে বাস করছি। আমরা এখানে আমাদের সন্তান ও নাতি-নাতনিদের বড় করেছি। আমাদের বাড়ির প্রতিটি ইঞ্চি ভালোবাসায় পূর্ণ ছিল, সুন্দর স্মৃতি যা কখনো চলে যাবে না। আদের অবশ্যই হৃদয় ভেঙ্গেছে। কিন্তু আমাদের সন্তান ও বন্ধুদের ভালোবাসায় আমরা এই পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠব।’
মেল গিবসন
মেল গিবসন আমেরিকান বংশোদ্ভূত অস্ট্রেলিয়ান অভিনেতা ও চলচ্চিত্র পরিচালক। তিনি নিউজ নেশনকে জানিয়েছেন, টেক্সাসের অস্টিনে শ্যুটিং করার সময় তার বাড়িটি দাবানলে পুড়ে গেছে। তিনি বলেন, এটা আবেগের বিষয়। বাড়িটিতে আমি দীর্ঘদিন ধরে বাস করছি। সেখানে আমার সব জিনিসপত্র ছিল। সেগুলো সব পুড়ে গেছে। তবে কিছু নথিপত্র সিন্ডারে রাখা আছে সেগুলোর জন্য কিছুটা স্বস্তি পেয়েছি।
জেফ ব্রিজস
প্রবীণ অভিনেতা জেফ ব্রিজসের মুখপাত্র দ্য হলিউড পত্রিকাকে জানান, মালিবুতে জেফ ব্রিজসের বাড়ি আগুনে পুুড়ে গেছে।
প্যারিস হিলটন
জনপ্রিয় টিভিব্যক্তিত্ব প্যারিস হিলটনের বাড়ি দাবানলে পুড়ে গেছে। মালিবুতে তার বাড়ি সম্পূর্ণ ভস্মীভূত। খবরে সরাসরি সম্প্রচার দেখে জেনেছেন সে কথা। ঝলকের কিছু অংশ ইনস্টাগ্রামে প্রকাশ করে তিনি লিখেছেন, ‘এই অভিজ্ঞতা যেন আর কারও না হয়।’ তিনি আরও জানান, এই বাড়িতে অনেক মূল্যবান স্মৃতি ছিল তার। আগুনের লেলিহান শিখা গ্রাস করেছে সব। তার পরিবারের সদস্য ও পোষ্যদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
এদিকে বৃহস্পতিবার সেই ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়েই কাঁদলেন প্যারিস হিলটন। প্রিয় বাড়িটি যে এভাবে পুড়ে ছাই হয়ে যাবে, স্বপ্নেও কল্পনা করতে পারেননি প্যারিস হিলটন। সেই বিধ্বংসী পরিস্থিতির ভিডিও শেয়ার করেছেন এ হলিউড অভিনেত্রী। দুঃখ ভারাক্রান্ত হৃদয়ে তিনি লিখলেন, ‘আমি এখন সেই ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে যেটা আমার স্বপ্নের বাড়িছিল। কতটা কষ্ট হচ্ছে বলে বোঝাতে পারব না। প্রথম যখন খবরটা পেলাম, আমি কিছুক্ষণের জন্য হতভম্ব হয়ে গিয়েছিলাম। কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারিনি প্রথমে। তবে এখন এই ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে নিজে যা প্রত্যক্ষ করছি, আমার মন ভেঙে খান খান হয়ে গেল।’
নিজেকে কিছুটা সামলে নিয়ে প্যারিস হিলটন বলেন, ‘এটা শুধু আমার বাসস্থান ছিল না। এই সেই বাড়ি যেখানে আমরা একসঙ্গে স্বপ্ন দেখেছি, হেসেছি-কেঁদেছি, পুরো পরিবারকে নিয়ে কত সুন্দর সুন্দর স্মৃতি তৈরি করেছি। যে বাড়ির প্রতিটা কোণায় কোণায় ভালোবাসার চিহ্ন রয়েছে। সেই বাড়ি এভাবে ছাইয়ে পরিণত হয়ে গেল। আমি বাকরুদ্ধ।’
ক্যারি এলওয়েস
ভয়াবহ অভিজ্ঞতা জানিয়েছেন ‘দ্য প্রিন্সেস ব্রাইড’ ছবির অভিনেতা ক্যারি এলওয়েসেও। তার বাড়িও পুড়ে ছাই। কোনোমতে প্রাণে বেঁচে রয়েছেন পরিবারের অন্যরা। গত রোববার রাতেই ‘দ্য ব্রুটালিস্ট’ সিনেমার জন্য গোল্ডেন গ্লোবে সেরা অভিনেতার পুরস্কার পেয়েছেন অ্যাড্রিয়েন ব্রডি। মার্কিন গণমাধ্যম টিএমজেড জানিয়েছে, দাবানলে অস্কারজয়ী এই অভিনেতার বাড়িও পুড়ে গেছে।
কেট বেকিনসল
অনেক দিন ধরেই প্যাসিফিক প্যালিসেডসের বাসিন্দা ব্রিটিশ অভিনেত্রী কেট বেকিনসল। প্যাসিফিক প্যালিসেডসের ধ্বংসযজ্ঞের ছবি ইনস্টাগ্রামে প্রকাশ করে তিনি লিখেছেন, ‘আমার ও আমার মেয়ের শৈশবের বেশির ভাগ সময় এখানেই কেটেছে। এক নিমেষেই আমাদের শৈশব হারিয়ে গেল। আমার হৃদয় ভেঙে গেছে।’
জেমি লি কার্টিস
অস্কার, এমি ও গোল্ডেন গ্লোবজয়ী অভিনেত্রী জেমি লি কার্টিস সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানিয়েছেন, তার পরিবার নিরাপদ, কিন্তু তাদের বাড়ি রক্ষা পায়নি। তিনি উদ্ধারকারীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।
ম্যান্ডি মুর
সংগীতশিল্পী ও অভিনেত্রী ম্যান্ডি মুর ইনস্টাগ্রামে লিখেছেন, আগুন থেকে বাচতে তিনি তার সন্তান ও পোষা প্রাণীদের নিয়ে এলাকা ছেড়েছেন। লস অ্যাঞ্জেলেসের আলতাদেনার বাসিন্দা মুর আরও লিখেছেন, দাবানলে তার বসবাসের এলাকাটি ধ্বংস হয়ে গেছে। দাবানল ভয়াবহ রূপ নেওয়ার আগেই পরিবারের সবাইকে নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসতে পেরেছিলেন তিনি।
মিলো ভেন্টিমিগ্লিয়া
আরেকজন তারকা মিলো ভেন্টিমিগ্লিয়া সিবিএস নিউজকে জানান, তিনি এবং তার গর্ভবতী স্ত্রী জারাহ মারিয়ানো তাদের মালিবু বাড়ি হারিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, আপনি বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র যাচ্ছেন সেখানে এক ধরনের বিষণ্ন মুহূর্ত রয়েছে। এটি বাস্তবে ঘটেছে। আমরা হার মেনে নিয়েছি।’
দাবানলে উদ্বিগ্ন প্রিয়াঙ্কা
লস অ্যাঞ্জেলেসের দাবানল নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন প্রিয়াঙ্কা চোপড়া। ভারতীয় এই অভিনেত্রী কর্মসূত্রে কয়েক বছর ধরে হলিউডের বাসিন্দা। প্রিয়াঙ্কা ইনস্টাগ্রামে লিখেছেন, ‘এই দাবানল রুখতে যারা প্রথম থেকে লড়াই করছেন, তাদের কুর্নিশ। রাত জেগে যারা কাজ করে চলেছেন ও ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের পরিবারকে অনবরত সাহায্য করে চলেছেন তাদের ধন্যবাদ।’
পুরস্কার অনুষ্ঠান পেছাল
হলিউডে এখন পুরস্কারের মৌসুম। গত রোববার রাতে অনুষ্ঠিত হয়েছে গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কার। আগামী দুই মাসে অস্কারসহ গুরুত্বপূর্ণ আরও বেশ কয়েক পুরস্কার অনুষ্ঠান হওয়ার কথা। কিন্তু দাবানলের কারণে এসব অনুষ্ঠান নিয়েও অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। চলচ্চিত্রবিষয়ক মার্কিন গণমাধ্যম ভ্যারাইটি জানিয়েছে, দাবানালের কারণে অস্কার মনোনয়ন ঘোষণা পেছনে হয়েছে, বাড়ানো হয়েছে ভোটদানের সময়ও। পূর্বনির্ধারিত সূচি অনুযায়ী, ১৭ জানুয়ারি অস্কারের চূড়ান্ত মনোনয়ন ঘোষণার কথা ছিল। কিন্তু এখন সেটা দুই দিন পিছিয়ে মনোনয়ন ঘোষণার তারিখ ১৯ জানুয়ারি করা হয়েছে। ৮ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে মনোনয়নের জন্য ভোটদান, যা ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত চলার কথা ছিল। কিন্তু নতুন ঘোষণা অনুযায়ী, ১৪ জানুয়ারি পর্যন্ত ভোট দিতে পারবেন একাডেমির ভোটাররা।
পিছিয়েছে ক্রিটিকস চয়েজ অ্যাওয়ার্ডও। চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন অঙ্গনের এক বছরের সেরা কাজের পুরস্কার দেওয়া হয় এই আয়োজনে। আগামী রোববার এ অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল। এখন তা পিছিয়ে ২৬ জানুয়ারি করা হয়েছে।
প্রিমিয়ার, শুটিং বাতিল
ভ্যারাইটি জানিয়েছে, দাবানলের কারণে লস অ্যাঞ্জেলেসে পূর্বনির্ধারিত বেশ কয়েকটি সিনেমার প্রিমিয়ার স্থগিত করা হয়েছে। এসব সিনেমার মধ্যে আছে ‘আনস্টপেবল’, ‘উলফম্যান’, ‘বেটার ম্যান, ‘দ্য পিট’, ‘দ্য লাস্ট শোগার্ল’ ইত্যাদি।
এ ছাড়া মার্কিন গণমাধ্যম ডেডলাইন প্রযোজনা সংস্থাগুলোর বরাতে জানিয়েছে, দাবানলের কারণে বেশ কয়েকটি সিনেমা ও সিরিজের শুটিং বাতিল করা হয়েছে। বাতিল হওয়া সিনেমা, সিরিজের মধ্যে আছে ‘হ্যাকস’, ‘টেড’, ‘সুইটস: এলএ’, ‘হ্যাপি প্লেস’, ‘ফলআউট ২’, ‘আফটার মিডনাইট’ ইত্যাদি।
অনলাইন ডেস্ক :
ভারতের উড়িষ্যায় ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনার প্রায় ১১৬ ঘণ্টা পর ফের ট্র্যাকে ফিরল করমণ্ডল এক্সপ্রেস। আজ ৭ জুন বুধবার কলকাতার শালিমার স্টেশন থেকে ফের যাত্রা শুরু করল যাত্রীতে পরিপূর্ণ করমণ্ডল এক্সপ্রেস। নির্দিষ্ট সময় দুপুর ৩টা ২০ মিনিট থেকে ৬ মিনিট দেরিতে এদিন শালিমার স্টেশন থেকে রওনা দেয় চেন্নাইয়ের উদ্দেশ্যে।
ভারতের তিন দশকের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনার পর প্রথমবার ট্র্যাকে ফেরা করমণ্ডল সফরে আতঙ্কই যেন ছিল যাত্রীদের সঙ্গী। যাত্রীদের মধ্যেও চলে শুক্রবারের বিভীষিকাময় দুর্ঘটনা নিয়ে আলোচনা। তা সত্ত্বেও যেতে হবেই, বলছেন যাত্রীদের অনেকে। তা প্রিয়জনকে বিদায় জানিয়ে ঈশ্বরকে স্মরণ করে গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা দেন যাত্রীরা। ট্রেনের যাত্রীদের মধ্যে দুর্ঘটনার পর প্রথম যাত্রায় ছিল মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
উদ্বেগের মধ্যেই ট্রেনটি ছাড়ার ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই সাঁতরাগাছি পৌঁছনোর পর এসি বিকল হয়ে যায় ট্রেনের তাপানুকুল কামরার। সাঁতরাগাছিতে বেশ কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে যায় করমণ্ডল এক্সপ্রেস। দমবন্ধ পরিস্থিতিতে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন যাত্রীরা। এরপর দ্রুতগতিতে মেরামত কাজ শুরু করে রেল। বি–১ এবং বি–২ কোচে এসি চালু হলেও বি–৩ কোচে ফের এসি বিভ্রাট দেখা দেয়। তবে প্রায় ৩০ মিনিট পরে অবশ্য ঠিক হয়ে যায় সেটিও।
এদিকে বুধবার ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহত এবং আহতদের পরিবারের হাতে চেক বিতরণের পর নেতাজি সুভাষ ইনডোর স্টেডিয়ামের এক অনুষ্ঠানে বিস্ফোরক দাবি করেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতা বলেন, ‘সিবিআইকে কাজে লাগিয়ে করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার প্রকৃত তদন্ত ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে কেন্দ্র। ট্রেন দুর্ঘটনার সত্য ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চলছে। যাঁরা পরিবারের সদস্যদের হারিয়েছেন তাঁরা এঁদের কাছে কৈফিয়ত চান। সত্য সামনে আসুক। কেন দুর্ঘটনা হল? কেন এতজন মারা গেলেন? বিংশ শতাব্দীর সবচেয়ে বড় দুর্ঘটনা। সিবিআই কী করবে? ক্রিমিনাল কেস হলে সিবিআই করবে। পুলওয়ামা দেখেননি? তৎকালীন রাজ্যপাল তো বলেই দিয়েছেন।’ একইসঙ্গে করমণ্ডল-বিপর্যয়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের ১০০ ছেলেমেয়ের পড়াশোনার দায়িত্ব নেওয়ার ঘোষণা দেন মমতা। পাশাপাশি যারা এ দুর্ঘটনায় দায়ী তাঁদের কঠোর শাস্তির দাবিও জানান মুখ্যমন্ত্রী।