চলারপথে রিপোর্ট :
ঢাকা নগরীর তাপমাত্রা সহনশীল রাখতে আগামী দুই বছরে দুই লাখ গাছ লাগানোর ঘোষণা দিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম। এছাড়া কল্যাণপুরে জলাধারে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) বালু দিয়ে ভরাটের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।
আজ ৩ মে বুধবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে ঢাকার তাপমাত্রা সহনশীল বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থা অ্যাড্রিয়েন আর্শট-রকফেলার ফাউন্ডেশন রেজিলিয়েন্স সেন্টারের (আর্শট-রকফেলার) সঙ্গে ডিএনসিসি যৌথভাবে কার্যক্রম পরিচালনার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ ঘোষণা দেন।
যৌথ এই কার্যক্রমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ডিজাস্টার সায়েন্স অ্যান্ড ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্স বিভাগও যুক্ত থাকবে। এ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য মেয়র আতিকুল ইসলামের মেয়ে বুশরা আফরিনকে উত্তর সিটি করপোরেশনের ‘চিফ হিট অফিসার’ নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, তাপপ্রবাহ একটি নীরব ঘাতক। এটি সবার ক্ষতি করছে। জলবায়ু পরিবর্তনের এই বিরূপ প্রভাবে বেশি ক্ষতির মুখে আছে আমাদের নারী ও শিশুরা। এজন্য সবার একত্রে কাজ করতে হবে। আমরা প্রত্যেক কাউন্সিলরকে গাছগুলো দেব। কাউন্সিলররা এলাকার সব স্তরের মানুষকে নিয়ে কমিউনিটি গঠন করে গাছগুলো লাগাবে। সবাই গাছগুলো নিজেদের মনে করলে এটি বাস্তবায়ন সহজ হবে।
আধুনিক পদ্ধতিতে বীজ আলু উৎপাদনের এক প্রকল্পে গাবতলী এলাকায় কল্যাণপুর জলাধারের ৩৬ বিঘা জমি ভরাট করেছে বিএডিসি। গত ২৯ মার্চ সংস্থাটিকে এক চিঠিতে ডিএনসিসি বলেছে, কল্যাণপুর জলাধারসংলগ্ন বিএডিসির প্রায় ১১৭ একর জায়গা ড্যাপের নকশা অনুযায়ী জলাধারের আওতাভুক্ত। সেখানে ভারী স্থাপনা হলে জলাধারের উন্নয়ন কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হবে।
এ বিষয়ে উল্লেখ করে মেয়র বলেন, কল্যাণপুরে জলাধারে মিরপুর, মোহাম্মদপুর, শ্যামলী, আদাবরে সাড়ে সাত লাখ লোকের জন্য ইকো-পার্কের মেজরমেন্ট করছি। তখন সরকারি একটি সংস্থা বালু ভরে দিচ্ছে। এটা কীভাবে সম্ভব। এখানে আলু চাষের জন্য শীতকালে তো জায়গা আছেই। আট মাস পানি থাকবে এবং চারমাস বীজের চাষ করা যাবে।
তিনি বলেন, আমাদের ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। কোনো ধরনের জলাধার দখল করা যাবে না। জলাধার আইন আছে, কিন্তু সরকারি প্রতিষ্ঠান যদি আইন না মানে তাহলে আমরা কই যাব। অবিলম্বে যে বালু দিয়ে তারা ভরাট করেছে সে বালু যেন তারা নিয়ে যায়। না হলে আমি অবশ্যই আইনের আশ্রয় নেব।
এছাড়া তিনি ছাদ কৃষিতে ১০ শতাংশ হোল্ডিং ট্যাক্স মওকুফ, বৃষ্টির পানি পুনর্ব্যবহার করে পরবর্তীসময়ে বাগানে ব্যবহার করতে ফুটপাতে ওয়াটার রিসার্জেবল স্টেশন স্থাপনের পরিকল্পনার কথা জানান।
সভায় সভাপ্রধান ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান। এছাড়া ঢাবি উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মাকসুদ কামাল, ব্রিটিশ ঢাকায় নিযুক্ত ব্রিটিশ ডেপুটি হাইকমিশনার ম্যাট ক্যানেল, অ্যাড্রিয়েন আর্শট-রকফেলার ফাউন্ডেশনের পরিচালক ও সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ক্যাথি বাঘম্যান ম্যাকলিওড, অ্যাড্রিয়েন আর্শট-রকফেলার ফাউন্ডেশনের হিট অ্যান্ড সিটি ডিপ্লোমেসি বিভাগের প্রধান উপদেষ্টা মরিসিও রোডাস, শক্তি ফাউন্ডেশনের ক্লাইমেট চেঞ্জ প্রোগ্রামের প্রধান সোহানি হক ইলিয়াস, ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম রেজা ও নবনিযুক্ত চিফ হিট অফিসার বুশরা আফরিন বক্তব্য দেন।
অনলাইন ডেস্ক :
আজ ৪ ডিসেম্বর সোমবার ঝিনাইগাতী মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাক হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে মিত্র বাহিনীর সহযোগীতায় মুক্তিযোদ্ধারা ঝিনাইগাতী অঞ্চলকে শত্রু মুক্ত করে।
দিনটি উপলক্ষে আজ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমিটি ও ঝিনাইগাতী উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড শ্রদ্ধাভারে শস্মরণ করবে বলে মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের সভাপতি সাইফুল ইসলাম জানায়।
পাক-হানাদার বাহিনী ১৯৭১ এর ২৫ মার্চ কালো রাতে যখন ঢাকার বুকে হত্যাযজ্ঞে ঝাঁপিয়ে পড়ে সেই রাতেই ৩-৪৫ মিনিটে প্রেরীত স্বাধীনতার ঘোষনার টেলিগ্রাম ম্যাসেজ ঝিনাইগাতী ভি এইচ এফ ওয়্যারলেস অফিসে এসে পৌঁছে।
ম্যাসেজ পেয়েই ওয়্যারলেস মাস্টার জামান সাহেব তার অফিসের পিয়ন পাঠিয়ে শেষ রাতের দিকে আওয়ামী লীগ নেতা ফকির আ: মান্নানের বাসায় সংবাদ দেন।স্বাধীনতার ঘোষনার সংবাদ পেয়ে পরদিন ভোরেই অর্থাৎ ২৬ শে মার্চ সকালে ছাত্র নেতা ফকির আ: মান্নান, হারুনুর রশিদ মাষ্টার, বাবু অনন্ত কুমার রায়, সেকান্দর আলী ফকির সহ অনেকেই ওয়্যারলেস অফিসে এসে পৌছান।
ইংরেজীতে লেখা টেলিগ্রাম ম্যাসেজটি পেয়েই নেতৃবৃন্দ তৎক্ষনাৎ তা শেরপুর সংগ্রাম পরিষদ নেতৃবৃন্দের কাছে প্রেরন করেন। ২৬ মার্চ সকাল থেকেই বাঁধভাঙ্গা জোয়ারের মতো ঢাকার সর্বশেষ সংবাদ কি তা জানার জন্যে শেরপুর শহরে মানুষ সমবেত হতে থাকে।
ঝিনাইগাতী ওয়্যারলেসে পাঠানো স্বাধীনতার ঘোষণা পত্রটি শেরপুর সংগ্রাম পরিষদ নেতৃবৃন্দ হাতে পেয়েই তা বাংলায় অনুবাদ করে শেরপুর নিউ মার্কেট মোড়ে জনতার স্বতঃস্ফুর্ত সমাবেশে পাঠ করে শুনানো হয়।
বঙ্গবন্ধুর পাঠানো স্বাধীনতার ঘোষনার শ্রবণ করে সমবেত জনতা মুর্হুমুর্হু শ্লোগানে মুখরিত করে তোলে শেরপুরের আকাশ বাতাস। ২৭ মার্চ সকালে শেরপুর সংগ্রাম পরিষদ নেতৃবৃন্দ সর্বজনাব এডভোকেট আব্দুল হালিম সাবেক এমপি, মুহসিন আলী মাস্টার ও ছাত্র নেতা আমজাদ আলী ঝিনাইগাতী এসে পৌছেন।
ঝিনাইগাতীর নেতৃবৃন্দ তাদের অভ্যর্থনা জানান। ছাত্রনেতা ফকির আব্দুল মান্নানকে সঙ্গে নিয়ে তারা নকশি ইপিআর ক্যাম্পে যান। নকশি ক্যাম্পের সুবেদার হাকিম নেতৃবৃন্দের সাথে বৈঠকে বসেই বিদ্রোহ ঘোষণা করেন।
দেশকে শত্রু মুক্ত করা সহ পাক হানাদার বাহিনীকে প্রতিরোধ করার জন্য পরিকল্পনা গ্রহণ করে শুরু হলো প্রতিরোধ সংগ্রাম। যুদ্ধের প্রস্তুতি হিসাবে রাংটিয়া পাতার ক্যাম্পে প্রশিক্ষণ শিবির খোলা হয়। ট্রেনিং শেষে এসব স্বেচ্ছাসেবক সহ মুজিব বাহিনী ও ইপিআর সৈনিকদের নিয়ে সুবেদার হাকিম মধুপুরে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন।
পরে তা পিছু হটে পুরাতন ব্র্হ্মপুত্র নদের চরে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। ২৬ এপ্রিল সুবেদার হাকিম এর খোলা জীপ এসে দাঁড়ায় ঝিনাইগাতী আমতলায়। সুবেদার হাকিম জনতাকে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে অনুরোধ জানিয়ে ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত ঝিনাইগাতী শত্রু মুক্ত ছিল। ২৭ এপ্রিল পাক বাহিনীরা বহর নিয়ে গোলা বর্ষন করতে করতে পৌছায় ঝিনাইগাতী বাজারে।
ঝিনাইগাতী প্রবেশ করেই আওয়ামী লীগ অফিস আগুন ধরিয়ে দেয়। গাড়ী বহর নিয়ে রাংটিয়া পাহাড় পর্যন্ত গিয়ে আবার পিছনে ফিরে এসে ঐদিন বিকালেই কোয়ারীরোডে পাক বাহিনী ক্যাম্প স্থাপন করে। পরে ঝিনাইগাতীর এক মাইল দক্ষিণে আহম্মদ নগর হাই স্কুলে তাদের সেক্টর হেড কোর্য়াটার স্থাপন করে। যা মুক্তিযোদ্ধাদের ১১নং সেক্টরের বিপরীতে পাক বাহিনীর ব্রহ্মপুত্র নদের উত্তরে একমাত্র সেক্টর হেড কোর্য়াটার যার দায়িত্বে ছিলেন মেজর রিয়াজ।
এছাড়া পাক বাহিনী শালচূড়া, নকশি, হলদীগ্রাম, তাওয়াকোচা, মোল্লাপাড়ায় ক্যাম্প স্থাপন করে। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ১৬ বৈশাখ জগৎপুর গ্রামে হানা দিয়ে গ্রামটি পুড়িয়ে দেয় এবং পাক বাহিনী ৪১ জন গ্রাম বাসীকে গুলি করে হত্যা করে। ৫ জুলাই কাটাখালি ব্রীজ ধ্বংস করে মুক্তিযোদ্ধারা রাংঙ্গামাটি গ্রামে আশ্রয় নেয়। দালালদের খবরে পাক বাহিনী রাংঙ্গামাটি গ্রামে তিন দিক থেকে ঘিরে ফেলে। শুধু রাংঙ্গামাটি বিলের দিক খোলা ছিল।
সম্মুখ যুদ্ধে কমান্ডার নাজমুল আহসান শহীদ হন। তাঁর লাশ আনতে গিয়ে আলী হুসেন ও মোফাজ্জল শহীদ হন। পরদিন রাঙ্গামাটি গ্রামে হানা দিয়ে পাক বাহিনী ৯জন গ্রাম বাসীকে এক লাইনে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করে। ২৩ আগষ্ট বীর মুক্তিযোদ্ধারা তাওয়াকুচা ক্যাম্প দখল করে এবং মুক্ত তাওয়াকুচায় বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলণ করে। তাওয়াকুচা যুদ্ধে ৪ জন পাক সৈন্য ও ৭ জন রাজাকার নিহত হলে পাক বাহিনী ক্যাম্প ছেড়ে দিয়ে পিছু হটে আসে। ৩ আগষ্ট নকশি ক্যাম্প আক্রমন করে মুক্তিযোদ্ধারা।
আগের দিন ২ আগষ্ট বিকেলে মেজর জিয়া নকশি ক্যাম্প আক্রমনের জন্যে মুক্তিযোদ্ধাদের হাতিয়ারের অবস্থান গুলো পরিদর্শন করেন। ওই দিনের যুদ্ধে ২৬ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ও নিখোজ হন। যুদ্ধে পাক বাহিনীর ৩৫ জন সৈন্য নিহত হয়।
২৭ নভেম্বর কমান্ডার জাফর ইকবালের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা ঝিনাইগাতী বাজারের রাজাকার ক্যাম্প দখল করে ৮টি রাইফেল সহ ৮ জন রাজাকারকে ধরে নিয়ে যায়।
২৮ নভেম্বর পাক বাহিনী ঝিনাইগাতী হানা দিয়ে মুক্তিযোদ্ধা এবিএম সিদ্দিকের ছোট ভাই ওমর (১১) ও মুক্তিযোদ্ধা মকবুলের পুত্র খালেক (১০), পাক বাহিনীর দালালদের খবরে ৮ জনকে আহম্মদ নগর ক্যাম্পের বধ্যভূমিতে ধরে নিয়ে এক লাইনে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করে। পরে তাদের এক গর্তে মাটি চাপা দিয়ে পুতে রাখে।
৩ ডিসেম্বর রাত আনুমানিক দেড়টায় শালচূড়া ক্যাম্পের পাক বাহিনী কামালপুর দুর্গের পতনের আগাম সংবাদ পেয়ে পিছু হটে এবং আহম্মদ নগর হেড কোর্য়ারটারের সৈনিকদের সাথে নিয়ে রাতেই মোল্লাপাড়া ক্যাম্প গুটিয়ে শেরপুরে আশ্রয় নেয়।
এভাবে রাতের আঁধারে বিনা যুদ্ধে ঝিনাইগাতী শত্রু মুক্ত হয়। ৪ ডিসেম্বর বীর মুক্তিযোদ্ধারা ঝিনাইগাতীতে স্বাধীন বাংলার অহংকারের পতাকা উড়ায় এবং মুক্তদিবস ঘোষণা করা হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
মুহূর্তের মধ্যেই বন্ধ হয়ে গেল হৈ হুল্লোড় আর কোলাহল। আনন্দে মেতে থাকা লোকজনগুলো রাস্তায় পড়ে ছটফট করছিলেন। আবার কারো কারো নিথর দেহ পড়ে ছিল গাড়ির ভেতরে। রক্তে লাল হয়েছে পুরো মহাসড়ক। আনন্দ ভ্রমণ রূপ নিল বিষাদে। সিলেটে ঘুরতে যাওয়ার সময় মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের নরসিংদীর শিবপুরের ঘাসিরদিয়া নামক স্থানে পাথর বোঝাই ট্রাক ও মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে প্রাণ গেছে একটি পোশাক কারখানার ৭ জন কর্মকর্তার। আহত হয়েছে আরও ৪ জন। তাদেরকে আশংকাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ঘাসিরদিয়া নামক স্থানে এই দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনায় নিহতদের স্বজনরা হাসপাতালে এসে কান্নায় ভেঙে পড়েন। স্বজনদের আহাজারিতে হাসপাতালের পরিবেশ ভারি হয়ে ওঠে। হাসপাতালটিতে হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। পরিবারের উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে শোকে বিহব্বল হয়ে পড়েন নিহতের পরিবারের সদস্যরা।
নিহতরা হলেন টাঙ্গাইল জেলার দেলদুয়ার উপজেলার মীর কুমুল্লী এলাকার মোতাহের হোসেনের ছেলে মীর নাজমুল হক সবুজ, গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার লতিফপুর গ্রামের আইয়ুব খানের ছেলে আল আমিন খান, ঝালকাঠির পাড় গোপালপুর গ্রামের আবদুল গনি হাওলাদারের ছেলে আল আমিন, জামালপুর সরিষাবাড়ির ধারাবর্ষা গ্রামের দুদু মিয়ার ছেলে রাজু আহমেদ, মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার উত্তর কৃষ্ণনগর গ্রামের তোফায়েল হাওলাদারের ছেলে আবদুল আওয়াল, বরিশাল জেলার মুলাদী গ্রামের মো. মজিবর সিকদারের ছেলে রায়হান শিকদার ওরফে আরিয়ান (২৪) এবং মাইক্রোবাসের চালক নাসির।
আহতরা হলেন সাকিব আহমেদ (২৮), পারভেজ (২৯), দোয়েল (২২) ও মিথুন (৩৫)।
হতাহতরা সাভারের ইপিজেড এলাকার একটি পোশাক কারখানার কর্মকর্তা-কর্মচারী। তারা একটি ভাড়া করা হাইয়েস মাইক্রোবাসে করে সিলেট ভ্রমণের উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলেন।
নরসিংদী সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. মো. তৌহিদুল আলম বলেন, রাত ৩টার দিকে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত ৬ জনকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। এরমধ্যে একজন মৃত ছিল। হাসপাতালে আনার কিছুক্ষণের মধ্যেই আরো একজন মারা যায়। বাকি ৪ জনের অবস্থা গুরুত ছিল। আমরা তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ভোর ৪টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করি।
হাইওয়ে পুলিশ গাজীপুর অঞ্চলের পুলিশ সুপার পুলিশ সুপার মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রাথমিকভাবে দেখতে পেয়েছি ট্রাকটি নিজের লেনেই ছিল, আর মাইক্রোবাসটি অন্য একটি লেনে পড়ে ছিল। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, মাইক্রোবাসটি অন্য কোন যানবাহনকে ওভারটেক করতে গিয়ে ট্রাকের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটে। এতে ঘটনাস্থলেই ৫ জন ও হাসপাতালে ২ জন মারা যায়। আমরা ট্রাকটির চালককে আটক করেছি, তাকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত করা হচ্ছে।
অনলাইন ডেস্ক :
ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রথম ধাপে আগামী ৮ মে ১৫২ উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে ২২টিতে ভোটগ্রহণ ইভিএমে করা হবে।
আজ ২১ মার্চ বৃহস্পতিবার ২৯তম কমিশন বৈঠক শেষে নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ এ তফসিল ঘোষণা করেন।
তিনি বলেন, রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমার শেষ সময় ১৫ এপ্রিল, বাছাই ১৭ এপ্রিল, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২২ এপ্রিল। ভোট হবে ৮ মে।
মোট চার ধাপের এই নির্বাচনের পরবর্তীতে তিন ধাপের ভোট ২৩, ২৯ মে ও ৫ জুন অনুষ্ঠিত হবে। দেশে মোট উপজেলার সংখ্যা ৪৯৫টি।
প্রথম ধাপে যেসব উপজেলায় ভোট হবে
চট্টগ্রাম বিভাগের ব্রাহ্মণাবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর ও সরাইল, কুমিল্লা জেলার মনোহরগঞ্জ, লাকসাম, লাঙ্গলকোট ও মেঘনা; চাঁদপুর জেলার মতলব উত্তর (ইভিএম) ও মতলব দক্ষিণ (ইভিএম); ফেনী জেলার পরশুরাম ও ফুলগাজী; নোয়াখালী জেলার সুবর্ণচর ও হাতিয়া; লক্ষ্মীপুর জেলার রামগতি ও কমলনগর, চট্টগ্রাম জেলার মিরসরাই, সীতাকুন্ডু ও সন্দ্বীপ; কক্সবাজার জেলার কুতুবদিয়া(ইভিএম) , সদর (ইভিএম) ও মহেশখালী (ইভিএম); খাগড়াছড়ি জেলার মনিকছড়ি, লক্ষ্মীছড়ি, রামগড় ও মাটিরাঙ্গা; রাঙ্গামাটি জেলার সদর, কাউখালী, জুরাছড়ি ও বরকল; বান্দরবান জেলার সদর, রোয়াংছড়ি, থানছি ও আলীকদম।
রংপুর বিভাগের পঞ্চগড় জেলার সদর, তেতুলিয়া ও আটোয়ারী; ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গী ও হরিপুর, নীলফামারী জেলার ডোমার ও ডিমলা; দিনাজপুর জেলার ঘোড়াঘাট, হাকিমপুর ও বিরামপুর; লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম ও হাতীবান্ধা; রংপুর জেলার কাউনিয়া ও পীরগাছা; কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী, চর রাজিবপুর ও চিলমারী; গাইবান্ধা জেলার সাঘাটা ও ফুলছড়ি।
রাজশাহী বিভাগের জয়পুরহাট জেলার ক্ষেতলাল, কালাই ও আক্কেলপুর; বগুড়া জেলার সারিয়াকান্দি, সোনাতলা ও গাবতলী; চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার নাচোল, গোমস্তাপুর ও ভোলাহাট; নওগাঁ জেলার ধামইরহাট, পত্নীতলা, মহাদেবপুর ও বদলগাছী; রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ী ও তানোর; নাটোর জেলার সদর, নলডাঙ্গা ও সিংড়া; সিরাজগঞ্জ জেলার সদর(ইভিএম), কাজিপুর (ইভিএম) ও বেলকুচি (ইভিএম); পাবনা জেলার সাঁথিয়া (ইভিএম) , সুজানগর (ইভিএম) ও বেড়া (ইভিএম)।
খুলনা বিভাগের মেহেরপুর জেলার সদর ও মুজিবনগর; কুষ্টিয়া জেলার খোকসা, সদর ও কুমারখালী; চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবননগর ও দামুড়হুদা, ঝিনাইদহ জেলার সদর ও কালীগঞ্জ; যশোর জেলার মনিরামপুর (ইভিএম) ও কেশবপুর (ইভিএম); মাগুরা জেলার সদর ও শ্রীপুর; নড়াইল জেলার কালিয়া; বাগেরহাট জেলার সদর, রামপাল ও কচুয়া; সাতক্ষীরা জেলার কালিগঞ্জ ও শ্যামনগর।
বরিশাল বিভাগের বরিশাল জেলার সদর ও বাকেরগঞ্জ; পিরোজপুর জেলার সদর (ইভিএম), নাজিরপুর (ইভিএম) ও ইন্দুরকানী (ইভিএম)।
ঢাকা বিভাগের ঢাকা জেলার দোহার, নবাবগঞ্জ ও কেরানীগঞ্জ; গোপালগঞ্জ জেলার সদর, কোটালীপাড়া ও টুঙ্গীপাড়া; নারায়নগঞ্জ জেলার সদর ও বন্দর; গাজীপুর জেলার সদর, কালীগঞ্জ ও কাপাসিয়া; রাজবাড়ী জেলার কালুখালী ও পাংশা; মানিকগঞ্জ জেলার সিংগাইর (ইভিএম) ও হরিরামপুর (ইভিএম); ফরিদপুর জেলার চরভদ্রাসন, মধুখালী ও সদর; মাদারীপুর জেলার সদর, শিবচর ও রাজৈর, শরিয়তপুর জেলার নড়িয়া (ইভিএম) ও ভেদরগঞ্জ (ইভিএম)। নরসিংহী জেলার সদর ও পলাশ, টাঙ্গাইল জেলার ধনবাড়ী, মধুপুর ও গোপালপুর; মুন্সিগঞ্জ জেলার সদর ও গজারিয়া; কিশোরগঞ্জ জেলার সদর, হোসেনপুর ও পাকুন্দিয়া।
ময়মনসিংহ বিভাগের ময়মনসিংহ জেলার হালুয়াঘাট, ধোবাউড়া ও ফুলপুর; জামালপুর জেলার সদর (ইভিএম) ও সরিষাবাড়ি (ইভিএম); শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতী ও শ্রীবরদী, নেত্রকোনা জেলার দুর্গাপুর ও কলমাকান্দা।
সিলেট বিভাগের সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই ও শাল্লা; সিলেট জেলার সদর, বিশ্বনাথ, গোলাপগঞ্জ ও দক্ষিণ সুরমা; মৌলভীবাজার জেলার জুড়ি, কুলাউড়া ও বড়লেখা; হবিগঞ্জ জেলার আজমিরীগঞ্জ ও বানিাচং।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি।।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আদালতে চলমান অচলাবস্থা নিরসনে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিনের সঙ্গে জেলা আইনজীবী সমিতির নেতাদের বৈঠক হয়েছে। আইনজীবী ও কর্মচারীদের পাল্টাপাল্টি অবস্থানের কারণে এ ঘটনা ঘটে।ঢাকায় আইনমন্ত্রীর গুলশানের আবাসিক কার্যালয়ে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।আজ বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বাবুল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।বৈঠকের বিষয়ে মফিজুর রহমান জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আদালতে যা চলছে, সে সম্পর্কে আদ্যপান্ত জানানোর পর আইনমন্ত্রী বিষয়টি দ্রুত সুরাহা করার ব্যাপারে তাদের আশ্বস্ত করেন। বৈঠকে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের প্রতিনিধি হিসেবে মোহাম্মদ সাঈদ আহমেদ রাজা, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির ও সাধারণ সম্পাদক আবদুর নূর দুলালও উপস্থিত ছিলেন।জেলা আইনজীবী সমিতির এই নেতা বলেন, দুর্নীতিবাজ কর্মচারীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়ার কারণে যে আমরা জেলা জজ শারমিন নিগারের অপসারণ দাবি করছি, তাও তাদের বলেছি। এ ছাড়া বিচারক ফারুক আহমেদও যে চাকরি বিধিমালা লঙ্ঘন করে তিনটি জরুরি মামলা গ্রহণ না করে, আইনজীবীদের সঙ্গে অসঙ্গত আচরণ এবং ঢালাওভাবে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সব আইনজীবীদের নিয়ে খারাপ মন্তব্য করেছেন। সেটাও অবহিত করা হয়েছে।
এদিকে আজ বৃহস্পতিবারও আইনজীবীদের আদালত বর্জনের কর্মসূচি চলমান থাকবে জানিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি তানবীর ভূঁইয়া বলেন, আইনজীবীদের দাবি অনুযায়ী জেলা জজসহ দুই বিচারক ও দুর্নীতিবাজ নাজিরকে অপসারণ না করা পর্যন্ত আদালত বর্জন কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। উল্লেখ্য, শীতকালীন ছুটির আগে আদালতের শেষ কার্যদিবস ছিল গত ১ ডিসেম্বর। ওই দিন তিনটি মামলা না নেওয়ায় গত ১ জানুয়ারি থেকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মোহাম্মদ ফারুকের আদালত বর্জন করেন আইনজীবীরা। এরপর গত ২ জানুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১-এর এজলাস চলাকালে বিচারক মোহাম্মদ ফারুকের সঙ্গে আইনজীবীদের বাদানুবাদের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পরে গত ৪ জানুয়ারি জেলা বিচার বিভাগীয় কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশন আদালতের সব এজলাসের দরজা ও প্রধান ফটকে তালা দিয়ে এক দিনের কর্মবিরতি পালন করে। এর প্রতিবাদে ৫ জানুয়ারি আইনজীবীরা সাধারণ সভা করে তিন কার্যদিবসের কর্মবিরতির ডাক দেন। পরে এটি বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বাড়ানো হয়। গত সপ্তাহের বুধবার থেকে আজ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত টানা সাত কার্যদিবস আদালতে বিচারিক কার্যক্রম বন্ধ আছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ইসরাফিল হত্যা মামলার আসামী বাবু মিয়া(৩৫) কে চট্টগ্রাম থেকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। ৭ ফেব্রুয়ারি দুপুর ২টার দিকে চট্টগ্রামের খুলশী থানার টাইগারপাস আমবাগান এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত বাবু মিয়া কসবা উপজেলার খেওড়া গ্রামের মজনু মিয়ার ছেলে। আজ ৮ ফেব্রুয়ারি শনিবার দুপুরে র্যাব-৯- এর সিলেট ক্যাম্পের মিডিয়া অফিসার সহকারী পুলিশ সুপার মোঃ মশিহুর রহমান সোহেল স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, টাকার লেনদেনকে কেন্দ্র করে গত ১৪ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৭টার দিকে স্টীলের পাইপ দিয়ে ইসরাফিলের মাথায় আঘাত করে বাবু মিয়া। এতে ইসরাফিল মাটিতে পড়ে গেলে তার মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য বাবু মিয়া ও তার সহযোগীরা পুনরায় ইসরাফিলের মাথাসহ সমস্ত শরীরে আঘাত করে।
পরে স্থানীয়রা রক্তাক্ত অবস্থায় ইসরাফিলকে উদ্ধার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় ইসরাফিলের ভাই ইসমাইল বাদী হয়ে কসবা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
বিজ্ঞপ্তিতে আরো উল্লেখ করা হয়েছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শুক্রবার দুপুরে চট্টগ্রাম মহানগরীর খুলশী থানার টাইগারপাস আমবাগান এলাকায় অভিযান চালিয়ে ইসরাফিল হত্যা মামলার আসামি বাবু মিয়াকে গ্রেফতার করা হয়। সকালে তাকে কসবা থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।