চলারপথে রিপোর্ট :
সরাইলে মোটর সাইকেলের ফুয়েল ট্যাংকের ভেতর থেকে ৩ কেজি গাঁজা জব্দ করেছে পুলিশ। গাঁজা বহনকারী মো. আলীকে (৩৬) আটক করে তার মোটরসাইকেলও জব্দ করা হয়েছে।
আজ ৪ মে বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের উপজেলার কুট্টাপাড়া এলাকার ব্র্যাক অফিসের সামনে থেকে তাকে আটক করা হয়।
আটক আলী জেলার বিজয়নগর উপজেলার বিষ্ণুপুর গ্রামের মৃত নুরু মিয়ার ছেলে।
সরাইল খাটিহাতা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকুল চন্দ্র বিশ্বাস জানান, ওই মহাসড়ক দিয়ে আলী তার মোটরসাইকেলের ফুয়েল ট্যাংকের ভেতরে করে গাঁজা বহন করছিলেন। গতিরোধ করে তাকে আটক করা হয়। পরে ফুয়েল ট্যাংকের ভেতর থেকে পলিথিনে মোড়ানো তিন কেজি গাঁজা জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় তার নামে সরাইল থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
সরাইলে মাদক সেবন করে অশ্লীল আচরণ ও অঙ্গভঙ্গি করার সময় তিনজনকে সাজা দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। আজ ৬ এপ্রিল রোববার দুপুরে সরাইল উপজেলার কালিকচ্ছ ইউনিয়নের ভূঁইয়াঘাট এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদের এই সাজা দেন সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মোশারফ হোসাইন। সাজাপ্রাপ্তরা হলেন: ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগর উপজেলার শফিকুল ইসলামের ছেলে হৃদয় (২০), একই উপজেলার শাজাহানের ছেলে মাসুক (২৫) এবং নূর মিয়ার ছেলে শরিফ (২২)।
ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকারী সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোশারফ হোসাইন জানান, উপজেলার কালিকচ্ছ ইউনিয়নের ভূঁইয়াঘাট এলাকায় তিন যুবক মাদক সেবন করে মাতাল অবস্থায় অশ্লীল আচরণ ও অঙ্গভঙ্গি করে এলাকার পরিবেশ নষ্ট করছিলেন। এলাকাবাসীর মাধ্যমে খবর পেয়ে পুলিশ তাদের আটক করে। পরে ভ্রাম্যমান আদালত সেখানে উপস্থিত হয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮ এর ৩৬(৫) ধারায় মাসুককে ১০ দিন, হৃদয়কে ৫ দিন এবং শরিফকে ৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করে। পাশাপাশি প্রত্যেকে ১০০ টাকা করে জরিমানা করা হয়। জনস্বার্থে ভ্রাম্যমান আদালতের এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানানো হয়েছে।
এ সময় সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল হাসান উপস্থিত ছিলেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
সরাইলে ধরন্তী বিলে মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজ রবির হোসেন নামে (১৭) এক কিশোরের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
আজ ২৪ জুন শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় দমকল বাহিনীরা সদস্যরা বিল সংলগ্ন তিতাস নদী থেকে তার মরদেহটি উদ্ধার করে।
সে কালিকচ্ছ ইউনিয়নের ধরন্তী গ্রামের জলিল মিয়ার ছেলে।
সরাইল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো: তরিকুল জানান, শুক্রবার রাতে রবির তার ভাইকে সঙ্গে নিয়ে ধরন্তী বিলে মাছ ধরতে গিয়ে বিলের পানিতে তলিয়ে যায়। পরে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান পাওয়া যায়নি। পরে শনিবার (২৪ জুন) সকালে দমকল বাহিনীর সদস্যরা তিতাস নদীতে অভিযান চালিয়ে তার মরদেহ উদ্ধার করে। কিশোরের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মর্গে পাঠানো হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলায় ইটভাটায় সন্তানের সামনে নয়ন তারা (৩৫) নামে এক নারীকে কুপিয়ে হত্যা করেছেন তার স্বামী।
আজ ১৩ মে শনিবার ভোরে উপজেলার ধরন্তি এলাকায় দি নিউ আশা ব্রিক ফিল্ডে এ ঘটনা ঘটে। ইটভাটার অন্য শ্রমিকরা ঘাতক চাঁন মোস্তফাকে আটকের পর পুলিশের কাছে দিয়েছেন।
ইটভাটার শ্রমিকরা জানান, চাঁন মোস্তফা ধরন্তি এলাকার দি নিউ আশা ব্রিক ফিল্ডে শ্রমিকের কাজ করতেন। সেখানে অন্য শ্রমিকদের মতো ছাউনি ঘরে স্ত্রী নয়ন তারা ও একমাত্র মেয়ে তাজিনকে (১০) নিয়ে বসবাস করেন।
শুক্রবার রাতে পারিবারিক কলহ নিয়ে চাঁন মোস্তফা ও তার স্ত্রী নয়ন তারার মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। এ সময় ঘুম থেকে জেগে যায় মেয়ে তাজিন। এক পর্যায়ে সন্তানের সামনেই চাঁন মোস্তফা দা দিয়ে কোপাতে থাকে তার স্ত্রীকে। এ অবস্থায় মেয়ে তাজিন ঘর থেকে বেরিয়ে অন্য শ্রমিকদের বিষয়টি জানায়। তারা গিয়ে দেখেন নয়ন তারার রক্তাক্ত নিথর দেহ মেঝেতে পড়ে আছে। পরে চাঁন মোস্তফাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম হোসাইন বলেন, মরদেহ সুরতহাল রিপোর্টের পর মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় তার পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি চলছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
সরাইলে অধ্যক্ষ শেখ মোঃ আবু হামেদ স্মরণে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ ৩ মার্চ শুক্রবার বিকেলে আবু হামেদ স্মৃতি সংসদ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মারুফা আক্তার পপি।
আবু হামেদ স্মৃতি সংসদের আহবায়ক সঞ্জীব কুমার দেবনাথের সভাপতিত্বে ও সরাইল প্রেসক্লাবের সাহিত্য সম্পাদক জহিরুল ইসলাম রিপনের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন সাবেক সচিব ড. আরিফুর রহমান, বাংলাদেশ আইন সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট কামরুজ্জামান আনসারী, জাতীয় প্রেসক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আশরাফ আলী, কবি ও গবেষক জয়দুল হোসেন, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রোকেয়া বেগম, সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আসলাম হোসেন, প্রাবন্ধিক ও গবেষক ঠাকুর জিয়া উদ্দিন আহমেদ, শাহবাজপুর বহুমূখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আলী, প্রাবন্ধিক ও গবেষক ড. ওবায়েদুল্লাহ মামুন প্রমুখ।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন- জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক শেখ আদনান ফাহাদ।
সভায় বক্তারা বলেন, অধ্যক্ষ শেখ মোঃ আবু হামেদ ছিলেন একজন সত্যিকারের দেশপ্রেমিক, শিক্ষানুরাগী ও রাজনীতিবিদ। আবু হামেদ আপাদ মস্তক ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার চেতনাধারণকারী অসাম্প্রদায়িক চেতনার মানুষ। তার নীতি ও আদর্শ বর্তমান ও পরবর্তী প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে।
সভায় আবু হামেদের সংক্ষিপ্ত জীবনীসহ একটি মুর্যাল নির্মাণ করার প্রস্তাব করা হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
রাজধানী ঢাকার বেইলি রোডে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনায় হতাহতের মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইলের একই পরিবারের পাঁচজন নিহত হয়েছেন। এরা হলেন ইতালি প্রবাসী সৈয়দ মোবারক হোসেন কাউসার (৪৫), তার স্ত্রী স্বপ্না আক্তার (৩৫), দুই মেয়ে সৈয়দা ফাতেমা তুজ জোহরা কাশফিয়া (১৫) ও সৈয়দা আমেনা আক্তার নূর (১২) এবং ছেলে সৈয়দ আব্দুল্লাহ (৭)।
তাদের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নের শাহবাজপুর গ্রামে।
তারা ঢাকার মগবাজার এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। সৈয়দ মোবারক হোসেন ইতালির সাবুনা শহরে ব্যবসা করতেন। সেখানে ৪টি কসমেটিক দোকান পরিচালনা করতেন। তার বড় মেয়ে সৈয়দা ফাতেমা তুজ জোহরা কাশফিয়া মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজ, সৈয়দা আমেনা আক্তার নূর ইস্পাহানী স্কুলে এবং সৈয়দ আব্দুল্লাহ মগবাজারের একটি মাদ্রাসায় লেখাপড়া করতেন।
আজ ১ মার্চ শুক্রবার তাদের গ্রামের বাড়িতে আসার কথা ছিল। কিন্তু বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে তারা লাশ হয়ে একে একে এ্যাম্বুলেন্স করে গ্রামের নিজ বাড়ির উঠোনে ফিরলেন।
নিহতদের স্বজনরা জানান, সৈয়দ মোবারক হোসেন কাউসার তার স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে মগবাজারে থাকতেন। গত বৃহষ্পতিবার রাতে বেইলী রোডে অগ্নিকান্ড সংঘঠিত হওয়া ভবনটিতে রাতের খাবার খেতে গিয়েছিলেন। সেখানেই আগুনে পুড়ে তাদের মৃত্যু হয়। নিহতদের মরদেহ বাড়িতে আসার পর বাদ আসর খন্দকার মসজিদ প্রাঙ্গনে জানাযা শেষে বাড়ির পাশে পারিবারিক গোরস্তানে দাফন করা হবে। তাদের মৃত্যুর খবরে শাহবাজপুর ইউনিয়নে শোকের ছায়া নেমে আসে।
ইতালিতে স্থায়ীভাবে থাকার সুযোগ পেয়েছিলেন বাংলাদেশি সৈয়দ মোবারক হোসেন কাউসার। পরিবারের সবাই ভিসাও হয়েছিল। চলতি মাসে স্ত্রী ও তিন সন্তানকে নিয়ে ইতালিতে যাওয়ার কথা ছিল তার। কিন্তু পুরো পরিবার আর ইতালিতে পাড়ি জমানো হলো না। সৈয়দ মোবারক হোসেন কাউসার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার শাহবাজপুর গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে। তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন তৃতীয় সন্তান।
নিহত মোবারকের খালাতো ভাই আলমগীর হোসেন জানান, মোবারক প্রথমে সিঙ্গাপুর প্রবাসী ছিলেন। প্রায় ২০ বছর আগে তিনি ইতালি পাড়ি দেন। তার দেশে আসা যাওয়া ছিল। গত দেড় মাস আগে প্রায় দুই বছর পর ইতালি থেকে দেশে ফিরেন মোবারক। স্ত্রী-সন্তানদের ইতালি নিয়ে যাওয়ার জন্য ভিসা ও টিকিটও সংগ্রহ করেছিলেন। আগামী ২০ মার্চ ইতালিতে যাওয়ার দিন নির্ধারিত করেছি।
নিহত মোবারের স্বজন মো. ফয়সাল বলেন, ইতালিতে স্থায়ী ভাবে বসবাসের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল পরিবারটি। ভিসাও হয়েছিল। পরিবারের সকলে খেতে যাওয়াটাই কাল হলো তাদের। ইতালি যাওয়ার স্বপ্ন অপূরণীয় রয়ে গেলো। ওই পরিবারে আর কেউ বেঁচে রইল না।
নিহত সৈয়দ মোবারক হোসেন কাউসারের শ্বশুর একই গ্রামের মুন্সী বাহার উদ্দিন জানান, তার মেয়ের জামাই মোবারক ঢাকার মগবাজার এলাকায় থাকতেন। তার মেয়ে স্বপ্না আক্তার, দুই নাতনি সৈয়দা ফাতেমা তুজ জোহরা কাশফিয়া ও সৈয়দা আমেনা আক্তার নূর এবং একমাত্র নাতি সৈয়দ আব্দুল্লাহকে সঙ্গে নিয়ে রাতের খাবার খেতে ‘কাচ্চি ভাই’ রেস্তোরায় গিয়েছিলেন। কিন্তু সেখানে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় সবাই পুড়ে মারা গেছেন। পুরো পরিবার নিশ্চিহ্ন হয়ে গেল।