চলারপথে ডেস্ক :
এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের নামে প্রতারণা করার অভিযোগে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) লালবাগ বিভাগের একটি দল এক কলেজছাত্রকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতার আব্দুর রউফ প্রীতম আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজের শিক্ষার্থী। অনলাইনে জুয়া খেলার টাকা সংগ্রহ করার জন্যই প্রীতম এই প্রতারণার আশ্রয় নেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
ডিবির সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, শুক্রবার দিবাগত রাতে ডিএমপি ডিবি লালবাগ বিভাগের গাড়ি চুরি প্রতিরোধ টিম জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) সহযোগিতায় ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট বঙ্গবন্ধু বিমানবাহিনী ঘাঁটির সামনে থেকে আব্দুর রউফ প্রীতমকে গ্রেফতার করে। প্রীতম আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র। চলমান এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস করতে পারবে এরকম শতভাগ নিশ্চয়তা দিয়ে তার ফেসবুক এবং মেসেঞ্জারে বিজ্ঞাপন দিয়ে বিভিন্ন ছাত্র-ছাত্রী ও তাদের অভিভাবকদের কাছ থেকে নগদ এবং বিকাশ মাধ্যমে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
ডিবি সূত্র আরও জানায়, এসএসসি ব্যাচ-২০২৩, এসএসসি শর্ট সিলেবাস-২০২৩ এবং দেশ ভিউ নামে একটি ফেসবুক পেজ থেকে প্রীতম চলমান এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস সংক্রান্ত প্রচারণা চালাতে থাকেন। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অনেক ছাত্রছাত্রী এবং তাদের অভিভাবকেরা তার এই প্রচারণায় বিশ্বাস করে তার সঙ্গে বিভিন্ন অ্যাপসে যোগাযোগ করেন। একপর্যায়ে তার চাহিদামতো টাকা মোবাইল ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান বিকাশ, নগদ ও রকেটের মাধ্যমে পাঠিয়েছেন। প্রশ্নপত্র ফাঁসের নামে প্রতারণার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার জন্য এই প্রতারক ছাত্র তার বাবা ওয়ারেন্ট অফিসার হারুনুর রশিদ এবং তার মায়ের জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে একাধিক ব্যাংক হিসাব খুলেছিলেন।
ডিবির ডিসি মশিউর রহমান বলেন, চলমান এসএসসি পরীক্ষা প্রশ্নপত্র প্রণয়ন, সংরক্ষণ, পরিবহণ অথবা বিতরণের মতো কোনো কাজেই এই ছাত্র বা তার কোনো আত্মীয় জড়িত ছিল না। তাই তার পক্ষে প্রশ্নপত্র ফাঁস করা একেবারেই অসম্ভব ছিল। অনলাইন জুয়া খেলায় দীর্ঘদিন ধরে আসক্ত এই ছাত্র জুয়া খেলা ও বন্ধুবান্ধব নিয়ে ফুর্তি করার টাকা সংগ্রহ করার জন্যই এই প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছিলেন। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে প্রীতমের বিরুদ্ধে একটি নিয়মিত মামলা করা হয়েছে।
অনলাইন ডেস্ক :
এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হবে আগামীকাল ২৬ নভেম্বর রবিবার। এদিন সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে ফলাফল হস্তান্তরের পর বেলা ১১টায় স্ব স্ব কলেজ ও শিক্ষা বোর্ডগুলোর ওয়েবসাইটে একযোগে পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হবে। এবার শিক্ষার্থীরা কলেজে না গিয়ে ঘরে বসেই ফল দেখতে পারবে।
আন্তঃশিক্ষাবোর্ড জানিয়েছে, কলেজ নোটিশ বোর্ড ছাড়াও বোর্ডের নির্ধারিত ওয়েবসাইটে ও এসএমএসের মাধ্যমে ফল জানতে পারবে পরীক্ষার্থীরা। ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ফল জানতে শিক্ষার্থীকে প্রথমেwww.educationboardresults.gov.bd এ ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে।
পরীক্ষার ফল জানবেন যেভাবে
ঢাকা শিক্ষা বোর্ড এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, বোর্ডগুলোর সমন্বিত ওয়েবসাইটে (www.educationboardresults.gov.bd) ঢুকে পরীক্ষার্থীর রোল ও রেজিস্ট্রেশন নম্বর টাইপ করে ফল জানতে পারবেন।
শিক্ষার্থীরা রেজাল্ট শিট ডাউনলোড করতে পারবেন এই ওয়েবসাইট থেকে। তা করতে চাইলে সমন্বিত ওয়েবসাইটের রেজাল্ট কর্নারে ক্লিক করে থেকে ফলাফল ডাউনলোড করা যাবে।
এছাড়া এসএমএসের মাধ্যমেও ফল জানা যাবে। এইচএসসির ফল জানতে HSC লিখে স্পেস দিয়ে শিক্ষা বোর্ডের নামের প্রথম তিন অক্ষর লিখে স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে ২০২৩ লিখে ১৬২২২ নম্বরে পাঠাতে হবে। ফিরতি এসএমএসে আসবে ফল।
আলিমের ফল পেতে ALIM লিখে স্পেস দিয়ে Mad লিখে স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে ২০২৩ লিখে ১৬২২২ নম্বরে পাঠাতে হবে।
কারিগরি বোর্ডের ক্ষেত্রে HSC লিখে স্পেস দিয়ে Tec লিখে স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে ২০২৩ লিখে ১৬২২২ নম্বরে পাঠালে ফিরতি এসএমএসে ফলাফল জানানো হবে।
গত ১৭ আগস্ট এ বছরের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হয়েছিল। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে চট্টগ্রাম এবং মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা কিছুদিন পর শুরু হয়েছিল। এবার পুনর্বিন্যাস করা পাঠ্যসূচি অনুযায়ী একটি বাদে সব বিষয়ে পূর্ণ নম্বর ও পূর্ণ সময়ে পরীক্ষা হয়েছে। শুধু তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) পরীক্ষা শেষ সময়ে এসে ১০০ নম্বরের পরিবর্তে ৭৫ নম্বরে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
অনলাইন ডেস্ক :
দুই বছর আগে গুম ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগম, অভিনেত্রী শমী কায়সার ও তারানা হালিমসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধ মামলা করেছেন বিএনপির কর্মী সৈয়দ হাসান মাহমুদ। আজ ৯ অক্টোবর বুধবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তিনি এ মামলার আবেদন করেন।
ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বেলাল হোসেন বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে অভিযোগের বিষয়ে অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। অপর আসামিদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, ওবায়দুল কাদের, আনিসুল হক, হাছান মাহমুদ, দিলীপ বড়ুয়া, জাতীয় পার্টির মশিউর রহমান রাঙ্গা, পুলিশ কর্মকর্তা হারুন অর রশীদ।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, ১৯৯০ সালের ছাত্র আন্দোলনে শহীদ নূর হোসেনকে নিয়ে মানহানিকর বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগে বাদী ২০১১ সালের ২১ নভেম্বর তৎকালীন ১৪ দলীয় জোটের নেতা মশিউর রহমান রাঙ্গার বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলাটি সিএমএম আদালত খারিজ করে দেন। ওই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে বাদী মগবাজার নয়াতলা নিজের বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র চলে যেতে বাধ্য হয়। বাদী ২০১৯ সালের সিটি করপোরেশন ঢাকা উত্তরের ৩৫ নম্বর ওয়ার্ড থেকে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির পক্ষে কমিশনার পদে নমিনেশন প্রত্যাশী ছিল।
এলাকায় প্রচার প্রচারণা শুরু করলে তাকে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করার জন্য ২০২২ সালের ২২ জুন বাদীর ওপর হামলা করে দোকানের মালামাল লুটপাট করা হয়। এরপর ওই বছর ২৫ জুন সন্ধ্যা ৬টায় বাদী মগবাজার থেকে তার ব্যবসায?িক কাজে রামপুরা ব্রিজে যাওয়ার পথে সাদা পোশাকধারীরা তাকে মাইক্রোবাসে তুলে চোখে কালো কাপড় বেঁধে ও হাতে হাতকড়া পরিয়ে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। সেখানে হাত-পা বেধে মশিউর রহমান রাঙ্গা, শমী কায়সার ও তারানা হালিমের উপস্থিতিতে অমানবিক নির্যাতন করা হয়। সেখানে চার দিন গুম করে রেখে ২৯ জুন হাতিরঝিল রাস্তার আইল্যান্ডের ওপরে রেখে যায়।
এরপর ওই বছরের ৮ জুলাই ভোর ৫টায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে তুলে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে গিয়ে অমানবিক নির্যাতন করে ১৪ দিন পর গত ২১ জুলাই সকাল ৬টার দিকে হলি ফ্যামিলি হাসপাতালের সামনে ফেলে রেখে যায়। সর্বশেষ ওই বছর ২৬ জুলাই ভোর ৭টায় হাতিরঝিল থানার পুলিশ বাদীকে তুলে নিয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দেয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
জাপান, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে ১৫ দিনের রাষ্ট্রীয় সফর শেষ ঢাকায় ফিরলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীকে বহন করা বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি বিশেষ বিমান আজ ৯ মে মঙ্গলবার সকাল ১০টা ৬ মিনিটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
এর আগে, লন্ডনের স্থানীয় সময় ৮ মে সোমবার সন্ধ্যা ৬টা ২৫ মিনিটে সফরসঙ্গীদের নিয়ে হিথ্রো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করেন তিনি। বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে বিদায় জানান যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনীম।
এর আগে, গত ৪ মে রাজা তৃতীয় চার্লসের রাজ্যাভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে তিন দেশ সফরের তৃতীয় ধাপে যুক্তরাজ্যে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার আগে, তিনি জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার আমন্ত্রণে টোকিওতে চার দিনের সরকারি সফর শেষ করে ২৯ এপ্রিল ওয়াশিংটন ডিসি পৌঁছান।
গত ২৫ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিমানের একটি বিশেষ ভিভিআইপি ফ্লাইটে স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা ৪৫ মিনিটে টোকিওর হানেদা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন।
অনলাইন ডেস্ক :
আসন্ন রোজায় বাজার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার পাশাপাশি মজুদদারি বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসকদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পাশাপাশি নতুন সরকারের নির্বাচনি ইশতেহার বাস্তবায়ন এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ‘দক্ষ ও স্মার্ট প্রশাসন’ গড়ে তোলার লক্ষ্যে বিভিন্ন দিক নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি।
আজ ৩ মার্চ রবিবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে ডিসি সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সরকার প্রধানের এসব নির্দেশনা আসে।
বাজার নিয়ন্ত্রণে মাঠ প্রশাসনকে উদ্যোগী হওয়ার তাগিদ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের সব থেকে লক্ষ্য রাখতে হবে, আমাদের বাজার পরিস্থিতি কেমন। আর তাছাড়া সামনে রোজা আসছে, এই রমজান মাসে কিছু কিছু ব্যবসায়ী থাকে যারা মজুদদারি করে দাম বাড়িয়ে কিছু মুনাফা লুটতে চায়। সেই দিকে বিশেষভাবে নজর দিতে হবে।
“কারণ এটা আশু করণীয় একটা কাজ আমাদের। কোথাও যেন ভোক্তাদের কোনো হয়রানি হতে না হয়, সেদিকে দৃষ্টি দিতে হবে। আমাদের উৎপাদন বাড়াতে হবে। পরনির্ভরশীলতা আমাদের কমাতে হবে এবং এটা যে আমরা পারি, এটা আমরা অনেক ক্ষেত্রে প্রমাণ করেছি। কাজেই সেদিকে নজর রাখা দরকার।”
শেখ হাসিনা বলেন, “সরবরাহের ক্ষেত্রেও কখনো শোনা যায়, কখনও সেটা নিয়ে নানা সমস্যা সৃষ্টি হয়, একটা কৃত্রিম সমস্যার সৃষ্টি করার চেষ্টা করা হয়। মজুদদারি করে পচিয়ে ফেলবে, কিন্তু বাজারে দেবে না। এরকম একটা অবস্থার সৃষ্টি হয়। সেই দিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি এবং কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার।
“রমজান মাস সামনে রেখেই আমি বললাম, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য যেন সাধারণ মানুষের কাছে যথাযথভাবে পৌঁছাতে পারে। সেই ব্যবস্থার দিকে সকলকে নজর দিতে হবে।”
খাদ্যে ভেজাল বন্ধে নজর রাখার নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “রোজা এলে এই সমস্যাগুলো বেশি দেখা যায়। খাদ্যে নানা রকম সমস্যা করে, এগুলোর ওপর নজর দিতে হবে।”
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার বিষয়ে দিক নির্দেশনা দিতে গিয়ে জেলা প্রশাসকদের সামনে ‘কিশোর গ্যাং’ নিয়েও কথা বলেন সরকারপ্রধান।
তিনি বলেন, “ইতোমধ্যে কয়েকটি সমস্যা আমরা দেখতে পাচ্ছি। কিশোর গ্যাং, যখন ছেলেমেয়েরা স্কুলে যাবে পড়াশোনা করবে, সেই সময়ে এই কিশের গ্যাং। যখন করোনাভাইরাসের অতিমারী সব থেকে বেশি, সে সময়ে এটা সামনে এসেছে। প্রত্যেকটা এলাকাভিত্তিক যে ছেলেমেয়েরা, যারা শিক্ষাগ্রহণ করবে? তারা কেন এই ধরনের গ্যাং হবে? তারা কেন এই ধরনের অসামাজিক কাজে বা ছিনতাই খুন ডাকাতিতে লিপ্ত হবে? সে সমস্ত বিষয় নজরদারি করা একান্তভাবে অপরিহার্য।
“আমাদের কমিশনারবৃন্দ এবং জেলা প্রশাসকবৃন্দ, একেবারে উপজেলা পর্যন্ত, ইউনিয়ন পর্যন্ত স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছেৃ সেখানে ছেলেমেয়েরা কী কী কাজ করছে, জঙ্গিবাদ, মাদক অথবা এই কিশোর গ্যাংয়ের মধ্যে যুক্ত হচ্ছে কি না, সেদিকে একটু নজরদারি বাড়াতে হবে। আমার মনে হয়, পরিবারকে একটু সচেতন করতে পারলে, এই জিনিসগুলো কমবে।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “শুধু গ্রেপ্তার করে, ধরে লাভ নেই। কারণ গ্রেপ্তার করে জেলে পাঠালে জেলেৃ অপরাধীদের সঙ্গে মিশে এরা আরও খারাপ হয়ে যায়। সে কারণে গোড়া থেকে আমাদের ধরতে হবে। পরিবার থেকেই শুরু করতে হবে। বিশেষ করে স্কুল কলেজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকেই শুরু করতে হবে। ছেলেমেয়েরা যেন এই পথে যেতে না পারে।”
পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকা যেন কোনোভাবে অস্থির না হয়, সে দিকেও নজর রাখতে মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের তাগিদ দেন সরকারপ্রধান।
তিনি বলেন, “আমরা পার্বত্য চট্রগ্রামে শান্তি চুক্তি করেছি। আমরা কিন্তু অন্য কোনো দেশের সাহায়তা নিইনি। কারণ তারা আমার দেশের নাগরিক। আমি ৮১ সালে দেশে ফিরে আসার পর থেকে এ ব্যপারে যথেষ্ট সচেতন ছিলাম। আমাদের দলের পক্ষ থেকে আমরা একটা বিশেষ কমিটি করে দিয়েছিলাম। যার মাধ্যমে ওই অঞ্চলে কী সমস্যা, কেন এই অবস্থার সৃষ্টি হলে, কী কারণে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল ১৯৭৬ সালের পর থেকেৃ সেগুলো জেনে আমরা দীর্ঘ দিন কাজ করেছি।
“যারা বিক্ষুব্ধ ছিল, তাদের সঙ্গে আলোচনা করেছি এবং যখন ১৯৯৬ এ ক্ষমতায় এসেছি, তখন সংসদে কমিটি করেছি। পাশাপাশি আমি নিজেও এদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে আমরা একটা শান্তি চুক্তি করতে সক্ষম হয়েছি। শুধু শান্তি চুক্তি না, সেখানে যারা অস্ত্রধারী ছিল, ১৮০০ অস্ত্রধারী, প্রকাশ্যে আমার সামনে তারা অস্ত্র সারেন্ডার করেছে। পৃথিবীর বহু দেশে শান্তি চুক্তি হয়েছে, কিন্তু আমাদেরটা ছিল অনন্য ঘটনা।“
শেখ হাসিনা বলেন, “এ ধরনের ঘটনা কমই ঘটে যে অস্ত্র সারেন্ডার করে। পর্বত্য চট্টগ্রামে খুব উন্নয়নের কাজ চলছে। অর্থ সামাজিক উন্নয়ন, অবকাঠামোগত উন্নয়ন সেগুলো আমরা করে যাচ্ছি। আমাদের এখানে বর্ডার লাইন ছিল না, সেখানে কোনো বর্ডার পোস্ট ছিলো না। আমরা নতুন করে সেখানে বর্ডার পোস্ট তৈরি করা শুরু করে দিয়েছি।
“পার্বত্য চট্টগ্রামে এখনও কিছু কিছু দুর্ঘটনা ঘটে। এই বিষয়েও সকলকে নজর দিতে হবে। সেখানে কোনো রকম যেন অশান্ত পরিবেশ অবার ফিরে না আসে। সেখানে শান্তি সৌহার্দ্যপূর্ণ অবস্থা যেন বিরাজমান হয়। এরা বিশেষ আইনে চলে, সেদিকে লক্ষ্য রেখেও তাদের সার্বিক বিবেচনায় দৃষ্টি দিতে হবে।”
সর্বজনীন পেনশন স্কিমে আসতে মানুষকে সচেতন করার জন্য ডিসিদের তাগিদ দেন সরকারপ্রধান। পাশাপাশি কৃষি উৎপাদন যেন বৃদ্ধি পায়, সে বিষয়ে নজর দিতে বলেন।
তিনি বলেন, “আমাদের এলাকাভিক্তিক কিছু উৎপাদিত পণ্য আছে। সেগুলোর ওপর গুরুত্ব দিয়ে উৎপাদন বাড়ানো এবং কোয়ালিটিটা দেখা, সেই বিষয়ে নজর দেওয়া দরকার।”
প্রকল্প নেওয়ার ক্ষেত্রে মানুষের কতটুকু কাজে আসবে, সে বিষয়টি আগে বিবেচনায় নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘শুধু প্রকল্প প্রণয়ন এবং প্রকল্প বাস্তবায়নই নয়, সাধারণ মানুষ কতটুকু উপকৃত হবে? আর্থিকভাবে দেশ কতটুকু স্বচ্ছল হবে? সে অঞ্চলের মানুষের কতটুকু আর্থসামাজিক উন্নতি হবে? সেসব বিবেচনা করেই প্রকল্প গ্রহণ করতে হবে। শুধুমাত্র বড়সড় একটা টাকার অংক আর একটা প্রকল্প, সেই প্রকল্প কিন্তু আমি গ্রহণ করি না।”
গ্রামীণ অর্থনীতিকে যত বেশি শক্তিশালী করা যায়, গ্রামের মানুষের ক্রয় ক্ষমতা যেন বাড়ানো যায়, সেদিকে দৃষ্টি দিতে জেলা প্রশাসকদের প্রতি আহ্বান জানান শেখ হাসিনা।
শিশু-কিশোর ও যুবকদের খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত করার তাগিদ দিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, “একবার যখন জঙ্গিবাদ সন্ত্রাস শুরু হল, আমাদের দেশে একটামাত্র ঘটনাই ঘটেছিল, সেটা খুব তাড়াতাড়ি সমাধান করতে পেরেছি। কিন্তু অনেকগুলো মানুষকে আমরা বাঁচাতে পারিনি।”
এরপর যে ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত কমিটি করে অভিভাবকদের সচেতন করা শুরু হয়েছিল, সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “পাশাপাশি যুব সমাজকে ব্যস্ত রাখার জন্য বা শিশু কিশোরদের ব্যস্ত রাখার জন্য ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার বিভিন্ন কার্যক্রমের সাথে সম্পৃক্ত রাখতে হবে।”
উন্নয়নশীল দেশের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আগ থেকে প্রস্তুতি নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “জাতির পিতা যেখানে স্বল্পোন্নত দেশ রেখে গিয়েছিলেন, সেখান থেকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা নিয়ে যাত্রা শুরু করব ২০২৬ সালে। এখন থেকে সেই প্রস্তুতিটা নিতে হবে।”
প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্য শেষে ডিসি সম্মেলনের উদ্বোধন ঘোষণা করেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন। পরে বক্তব্য দেন জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।
মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, সিনিয়র সচিব ও সচিবরা, বিভাগীয় কমিশনাররা, জেলা প্রশাসকরা উপস্থিত ছিলেন সম্মেলনে।
সম্মেলনের বিভিন্ন কার্য-অধিবেশন হবে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে। সরকারের নীতি-নির্ধারক ও জেলা প্রশাসকদের মধ্যে সামনাসামনি মতবিনিময় এবং প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেওয়ার জন্য প্রতি বছর ডিসি সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
নওগাঁর মান্দায় সড়ক দূর্ঘটনায় দুই যুবক নিহত হয়েছেন। আজ ১৩ সেপ্টেম্বর বুধবার সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে বিজয়পুর মোড়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন, বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলার চৌমহনী এলাকার আবু মুসার ছেলে রবিউল ইসলাম (১৯) ও নাটোরের লালপুর উপজেলার হাজিরহাট ভবানীপুর এলাকার লিটন মিয়ার ছেলে আরিয়ান খান রকি (২০)।
স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বেপরোয়া গতিতে দুটি মোটর সাইকেল রাজশাহীর দিক থেকে নওগাঁর দিকে যাচ্ছিল। এর মধ্যে একটি বাইক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সামনে থাকা চার্জারভ্যানের পেছনের দিকে ধাক্কা লাগে। এতে ওই বাইকে থাকা দুই যুবক গুরুতর জখম হন। সংবাদ পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের লোকজন তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
মান্দা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আব্দুল মালেক বলেন, আহত আরিয়ান খান রকি হাসপাতালে নেওয়ার আগে এবং রবিউল ইসলাম জরুরি বিভাগে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
মান্দা থানার ওসি-তদন্ত আব্দুল গণি বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তাঁদের পরিবারের লোকজন এখনো থানায় এসে পৌঁছায়নি। এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।