চলারপথে রিপোর্ট :
গ্রামবাংলায় গ্রীষ্মকালে যে বনফুলটি বেশি চোখে পড়ে, সেটি হল- বরুণ গাছের ফুল। গাছ ভরা অফুরন্ত প্রস্ফুটিত এ ফুল প্রকৃতিতে এক অনাবিল উচ্ছ্বাস এনে দেয়। বরুণকে নবীনগরের আঞ্চলিক ভাষায় বলে বন্না ফুল। গ্রামের শিশুরা বরুণ ফুল ও ফল খেলার উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করে। এখন বরুণ ফুল ফোটার সময়, এ সময় গ্রামে গেলে নয়নাভিরাম বরুণ ফুলের নান্দনিক সৌন্দর্যে বিমোহিত না হয়ে উপায় নাই। বরুণের বৈজ্ঞানিক নাম-Crateva religiosa. ইংরেজি-sacred garlic pear এবং temple plant . এটি Crateva গণের একটি ফুল। এদের অন্য নাম হল- বালাই লামক, অবিয়ুচ, বন্না, এবং বিদাসি। এটি জাপান, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং কতিপয় প্রজাতি দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জের স্থানীয় গাছ। বাংলাদেশের মানুষ অতীতকালে ফল পাকাতে এই গাছের পাতা ব্যবহার করতেন। বর্তমানে ফল পাকাতে ক্ষতিকারক ক্যালসিয়াম কার্বাইডের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় এই গাছের কদর এখন নেই। বর্ষায় বরুণের ফল ঝুলে থাকতে দেখা যায়, ফল দেখতে কদবেলের মত। গাছ মাঝারি ধরনের এবং প্রচুর ডালপালা যুক্ত। বাকল ছাই রঙের মধ্যে সাদা সাদা ফোঁটা যুক্ত। পাতা যৌগিক, তিনটি পত্রক একক বোঁটায় জন্মে। ফুল চৈত্র-বৈশাখ মাসে ফুটে। ফুলের পাপড়ি ঘিয়ে রঙের, পুংকেশর দেখতে অনেকটা বিড়ালের গোঁফের মতো। মাঘ ফাগুনে পাতা ঝরে যায়, পূর্ণ প্রস্ফুটিত বরুণ গাছ বড়ই দৃষ্টিনন্দন। হাজারো ফুলের মাঝে নিচু জলাভূমিতে বসন্তে স্নিগ্ধতা ছড়ায় বরুণ ফুল। বরুণ ভাটি এলাকায় বেশি জন্মায়, নবীনগরের যে গ্রাম গুলো পানিতে তলিয়ে যায় সে গ্রাম গুলিতে অনেকটা অনাদর অবহেলায় আজ ও টিকে আছে বরুণ গাছ।
বরুণের ভেষজ গুণ :- অর্শরোগীরা রোগে খুব কষ্ট পেলে তিলের তেলে মাখানো বরুণ পাতা জলে সিদ্ধ করে ওই জলে গোসল করলে অর্শ রোগের ব্যথা-বেদনা দূর হয়। এর পাতা চর্মরোগ, ব্যথা, বাত নিরাময়ে ব্যবহৃত হয়। শিকড়ের বাকলের নির্যাস গ্যাস্ট্রিক রোগে ব্যবহার করা হয়। কাঁচা ফল রান্না করে সবজি হিসেবে খাওয়া যায়। শ্রীলঙ্কায় বাতের রোগে বরুণ পাতা ব্যবহৃত হয়। খাওয়ার আগে বরুণের মুকুল একটু লবণের সঙ্গে মিশিয়ে খেলে ক্ষুধা বাড়ে। পিত্তপাথরের রোগে ১০ গ্রাম বরুণের বাকল কেটে ৪ কাপ জলে সিদ্ধ করে অর্ধেক অবস্থায় নামিয়ে সকাল-বিকাল সেবন করলে ভালো ফল পাওয়া যায়। মেয়েদের মুখের মেছতা দূর করতেও বরুণ বেশ উপকারী। এ ক্ষেত্রে বরুণ বাকল ছাগলের দুধে মিশিয়ে দৈনিক একবার করে মুখের কাল দাগে লাগালে দাগ ধীরে ধীরে দূর হয়ে যায়। যাদের শরীরের গাঁটে গাঁটে বাতের ব্যথা, এমনকি পায়ের তলাতেও ব্যথা ও ফোলা, তারা শুষ্ক বরুণ পাতা (৫-৭ গ্রাম) ৩ কাপ পানিতে সিদ্ধ করে আনুমানিক ১ কাপ থাকতে নামিয়ে ছেঁকে পানিটা আধা গ্রাম শুষ্ক আদাচূর্ণের সঙ্গে মিশিয়ে সকালে ও বিকালে খেলে ব্যথা ও ফোলা দুটোই কমে যায়।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগরে বর্তমান সরকারের উন্নয়নের আরো একটি মেগা প্রকল্প শিবপুর- রাধিকা সড়কের দুইটি অংশের মধ্যে আজ ১২ মে শুক্রবার রাধিকা অংশের পিচ ঢালাই কাজের উদ্বোধন করা হয়েছে।
কাজের উদ্বোধন করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৫ নবীনগর আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য মোহাম্মদ এবাদুল করিম বুলবুল।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল মান্নান, নবীনগর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো.মনিরুজ্জামান মনির, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একরামুল সিদ্দিক, বিশিষ্ট শিল্পপতি রিপন মুন্সি, উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান জাকির হোসেন সাদেক, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদ প্যানেল মেয়র নাসির উদ্দিন, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সহ-সভাপতি এডভোকেট সুজিত কুমার দেব, কাজী ইয়াবের হাসান জামিল মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলাম নজু, তাণ ও পূর্ণবাসন সম্পাদক নিয়াজুল হক কাজল, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক কবির আহমেদ, ধর্মবিষয়ক সম্পাদক ডাক্তার শফিকুর রহমান, কাজী ফেরদৌস, কার্যকরী সদস্য সাইফুর রহমান সোহেল, বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানগণ উপজেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
আবহমান গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী নিপুণ বাসা তৈরিতে দক্ষ কারিগর বাবুই পাখি ও এর বাসা এখন আর আগের মত চোখে পড়ে না। পরিবেশ বিপর্যয়, জলবায়ু পরিবর্তন, বন উজার, নতুন বনায়নে বাসযোগ্য পরিবেশ ও খাদ্যের অভাব, নির্বিচারে তালগাছ কর্তন, অসাধু শিকারীর ফাঁদসহ বহুবিধ কারণে কালের আবর্তে প্রকৃতির স্থপতি, বয়ন শিল্পী এবং সামাজিক বন্ধনের প্রতিচ্ছবি বাবুই পাখি ও এর দৃষ্টিনন্দন বাসা ক্রমান্বয়ে হারিয়ে যাচ্ছে।
আজ থেকে ১৫-২০ বছর আগেও গ্রাম-গঞ্জে ব্যাপক ভাবে বাবুই পাখির বাসা চোখে পড়ত। নিরীহ, শান্ত প্রকৃতির এই বাবুই পাখি উচু এবং নিরিবিলি পরিবেশে বাসা তৈরি করে। এরা গ্রাম-গঞ্জের তাল, সুপারি, নারিকেল, খেজুর গাছে বাসা তৈরি করতে স্বাচ্ছন্দ বোধ করে। এ সব গাছের সংকটে মাঝে মাঝে হিজল গাছেও বাসা বাধতে দেখা যায়। কিন্তু কালের বিবর্তনে বড় বড় গাছ নিধন ও পাখি শিকারের কারণে পরিবেশ থেকে হারিয়ে যাচ্ছে বাবুই পাখি। উঁচু তাল, নারিকেল ও খেজুর গাছে বাসা বাঁধলেও এ সব গাছ বিলুপ্ত হওয়ায় বাবুই পাখিও হারিয়ে যেতে বসেছে প্রকৃতি থেকে। এই পাখি বাসা তৈরির কাজে ব্যবহার করে খড়ের ফালি, ধানের পাতা, তালের কঁচি পাতা, ঝাউ ও কাঁশবনের লতা। চমৎকার আকৃতির এই বাসা বিশেষ করে তাল গাছের ডালে এমন ভাবে সাটানো থাকে যাতে কোনো ঝড়-তুফানে সহসাই ছিড়ে না পড়ে। এদের বাসা শুধু শৈল্পিক নিদর্শনই নয়, মানুষের মনে চিন্তার খোরাক জোগায় এবং স্বাবলম্বী হতে উৎসাহিত করে। ঠোট দিয়ে বাবুই পাখি আন্তর ছড়ায়। পেট দিয়ে ঘঁষে তা আবার মসৃণ করে। বাসা বানাতে শুরুতই দুটি নিম্নমুখী গর্ত করে থাকে। পরে তা একদিকে বন্ধ করে ডিম পাড়ার জায়গা করে। অন্যদিকে লম্বা করে প্রবেশ ও প্রস্থান পথ তৈরি করে। ব্যালেন্স করার জন্য বাসার ভিতরে কাদার প্রলেপ দেয়। আধুনিক যুগে যা বড়ই যুক্তি সংগত। বাসার ভিতরে ঠিক মাঝখানে একটি আড়া তৈরি করে বাবুই পাখি। কি অপূর্ব বিজ্ঞান সম্মত চেতোনাবোধ। ছোট হলেও বুদ্ধিতে সব পাখিকে হার মানায়।
বাবুই ডিমে তা দেয়ার দুই সপ্তাহের মধ্যে বাচ্চা ফোটে। কৃষকের ধান ঘরে ওঠার মৌসুম হল বাবুই পাখির প্রজনন মৌসুম। বাবুই পাখির বাসা শুধু শৈল্পিক নিদর্শনই না, মানুষকে আত্মনির্ভশীল হতে উৎসাহ দেয়। কৃষ্ণনগর গ্রামের প্রবীণ ব্যক্তি অলেক মিয়া বলেন- “গত কয়েক বছর ধরে তাদের গ্রামের কয়েকটি তালগাছে বাবুই পাখিন বাসা দেখছেন। পাখি ও পাখির বাসা দেখতে এবং কিচির মিচির শব্দ শুনতে খুবই ভাল লাগে। গৃহিনী আসমা বেগম বলেন- তাদের বাড়ির সামনের তাল গাছে বাবুই পাখি বাসা বানিয়েছে। সাংস্কৃতিককর্মী মাহমুদ জানান- দিন দিন তাল গাছ নিধনের ফলে বাবুই পাখি আজ বিলুপ্তির পথে। তাই বড় বড় তাল গাছ রক্ষা ও নতুন করে বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে পাখি সংরক্ষণের দাবি জানান তিনি। সুর সম্রাট আলাউদ্দীন খাঁ ডিগ্রি কলেজের জীববিজ্ঞান বিভাগের সহকারি অধ্যাপক মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, “সারাবিশ্বে বাবুই পাখির প্রজাতির সংখ্যা ১১৭টি। তবে বাংলাদেশে তিন প্রজাতির বাবুই পাখির বাস।
তিনি আরও বলেন- বাবুই পাখির অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো রাতের বেলায় ঘর আলোকিত করার জন্য এরা জোনাকি পোকা ধরে নিয়ে বাসায় রাখে এবং সকাল হলে আবার তাদের ছেড়ে দেয়। ধান, চাল, গম ও পোকা-মাকড় প্রভৃতি তাদের প্রধান খাবার। বাবুই পাখির জন্মগত ভাবেই শৈল্পিক দক্ষতা থাকে। কি ভাবে বাসা বাঁধবে এটা তারা তাদের মায়ের কাছ থেকেই শিখে নেয়। এই গুণ অন্য পাখির মধ্যে নেই। এরা সমাজবদ্ধ ভাবে বসবাস করে বলে তাদের সামাজিক পাখিও বলা হয়। এরা শস্য দানা, ধান, গম ইত্যাদি খেয়ে জীবনধারণ করে। তিনি বলেন, এ পাখির মধ্যে একটি বৈজ্ঞানিক গুণও আছে। পুরুষ পাখিরা বিশ্রামের জন্য বাসা বাঁধে আর নারী পাখিরা বাসা বাঁধে ডিম ফুটানো ও বাচ্চা সংরক্ষণের জন্য। যখন বাচ্চা ফোটার সময় হয় তখন মা পাখিরা এক টুকরা গোবর নিয়ে বাসায় রাখে। যাতে ব্যাকটেরিয়া আক্রমণ করে বাচ্চাদের ক্ষতি করতে না পারে”।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগরসহ সারাদেশে মাধ্যমিক পর্যায়ে প্রতিষ্ঠান প্রধান ও আন্যান্য শিক্ষকদের বল প্রয়োগে পদত্যাগ করানোর প্রতিবাদে আজ ৫ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। দুপুরে নবীনগর প্রেসক্লাব চত্বরে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির উদ্যোগে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
নবীনগর ইচ্ছাময়ী পাইলট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষক সমিতির সদস্য সচিব মোসাম্মৎ কাউসার বেগমের সভাপতিত্বে এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি মোর্শেদুল ইসলাম লিটন, ইব্রাহিমপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. জাকির হোসেন, কৃষ্ণনগর আব্দুল জব্বার স্কুল এন্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক ফেরদৌস রহমান, শিক্ষক শাজাহান কবির, শিক্ষক ইয়ার হোসেন, শিক্ষক পার্থ পালসহ প্রমুখ। নবীনগর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সদস্য সচিব প্রধান শিক্ষক মোসাম্মৎ কাউসার বেগম বলেন, সারাদেশে আমাদের শিক্ষক সমাজের উপর অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটানো হচ্ছে। শিক্ষকদের বল প্রয়োগ করে পদত্যাগ করানো হচ্ছে। এসব বলপ্রয়োগ বন্ধ করে শিক্ষকগণের কর্মস্থলে ফিরিয়ে আনা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। অন্যথায় আমরা শিক্ষক সমাজ কর্মবিরতিতে যাবো।
মানববন্ধন শেষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে শিক্ষা উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষক সমাজ। এসময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানভির ফরহাদ শামীম বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যসস্থা নেওয়ার আশ^াস প্রদান করেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার মধ্যে দিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগরে খারঘর গণহত্যা দিবস পালিত হয়েছে। খারঘর গণকবর বাস্তবায়ন কমিটির উদ্যোগে আজ ১০ অক্টোবর মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার নবীনগর বড়াইল ইউনিয়নের পাগলা নদীর তীরে স্থাপিত খারঘর গণকবরের স্মৃতি ৭১ “স্মৃতিস্তম্ভ”এ সর্বস্তরের জনগণ পুষ্পস্তবক অর্পন করে শহীদদের শ্রদ্ধা জানান।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও নিরীহ গ্রামবাসীর স্মরণে পুলিশের পক্ষ থেকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়।
পরে নবীনগর উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের পক্ষে শহীদদের স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তক অর্পনের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন নবীনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার তানভীর ফরহাদ শামীম। পরে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, নবীনগর থানা পুলিশ, আনসার-ভিডিপি, শহীদ পরিবারের সদস্য সহ স্থানীয় গ্রামবাসী শহীদদেরকে শ্রদ্ধা জানান।
পরে স্মৃতিচারণ করে বীরমুক্তিযোদ্ধা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ১৯৭১ সালে যারা শহীদ হয়েছেন তাদেরকে আমরা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি। মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানী সেনারা এখানেই ৪৩জন নিরস্ত্র মানুষকে ধরে নিয়ে গণহত্যা করা হয়েছিলো। আমরা শহীদদের আত্মার শান্তি কামনা করি।
উপজেলার বড়াইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ জাকির হোসেন বলেন, ১৯৭১ সালে ১০ অক্টোবর সকাল সাড়ে ৭টার দিকে পাকিস্তানী বাহিনী পাগলা নদী দিয়ে স্টীমারে করে খারঘর গ্রামে হানা দেয়।
এ সময় সোহরাওয়ার্দী নামে এক মুক্তিযোদ্ধা পাক বাহিনীরকে প্রতিরোধ করার চেষ্টা করে। পরে পাকিস্তানী বাহিনী গ্রামের মধ্যে নির্বিচারে গণহত্যা চালায়। এ সময় তাদের হামলায় মুক্তিযোদ্ধাসহ ৪৩জন গ্রামবাসী শহীদ হন।
নবীনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার তানভীর ফরহাদ শামীম বলেন, ১৯৭১ সালে ১০ অক্টোবর খারঘরের এই জায়গায় পাকিস্তানী বাহিনীর সাথে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মুখ যুদ্ধ হয়েছিলো। সেই যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাসহ ৪৩জন শহীদ হয়েছিলেন। আজকে আমরা সরকারের পক্ষ থেকে সেসব শহীদদের আমরা শ্রদ্ধা ভরে স্মরণ করি। পরে শহীদের আত্মার মাগফেরাত কামনায় দোয়া করা হয়।
উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ১০ অক্টোবর খারঘর গ্রামে গণহত্যা চালিয়েছিলো পাকিস্তানী বাহিনী। তারা মুক্তিযোদ্ধাসহ ৪৩ জন নিরীহ গ্রামবাসীকে নির্বিচারে হত্যা করেন।
এর পর থেকে প্রতিবছর ১০ অক্টোবর দিনটিকে খারঘর গণহত্যা দিবস হিসেবে পালন করে আসছে খারঘর গণকবর বাস্তবায়ন কমিটি।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার লাউর ফতেহপুর ইউনিয়নের তৃণমূল আওয়ামী লীগের সাথে ঈদ শুভেচ্ছা ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গতকাল শনিবার দুপুরে উপজেলার আর এন টি বালিকা উচ্চ বিদ্যায় প্রাঙ্গনে ঈদ শুভেচ্ছা ও মতবিনিময় সভায় লাউর ফতেহপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আবুল কাশেম মোকাদ্দছের সভাপতিত্বে ও উপজেলা পরিষদের বাইস চেয়ারম্যান জাকির হোসেন সাদেকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্থানীয় সংসদ সদস্য ও তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মোহাম্মদ এবাদুল করিম বুলবুল এমপি।
বিশেষ অতিথি ছিলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জহির উদ্দিন চৌধুরী শাহান,জেলা পরিষদ সদস্য নাসির উদ্দিন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ সভাপতি সুজিত কুমার দেব ত্রাণ সম্পাদক নিয়াজুল হক কাজল, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলাম নজু, উপপ্রচার সম্পাদক প্রনয় কুমার ভদ্র।
প্রধান অতিথি বক্তব্যে এম পি বলেন লাউর ফতেহপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগকে সুসংগঠিত করার জন্য আমার পক্ষ থেকে যা যা করার দরকার আমি তা করব এবং আগামী নির্বাচনে নৌকাকে বিজয়ী করতে হলে আপনারা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সকলে মিলে ভোটারদেও স্ব স্ব অবস্থানে গিয়ে বুঝিয়ে ভোট সংগ্রহ জন্য কাজ করতে হবে।
সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন লাউর ফতেহপুর কমলাকান্ত গুরুচরণ বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি আবদুল্লা আল মাসুম। সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম, লাউর ফতেহপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম, প্রেসক্লাব সভাপতি শ্যামাপ্রশাদ চত্রবতী, সিনিয়র সহ-সভাপতি আরিফুল ইসলাম ভূঁইয়া মিনাজ, মডেল প্রেসক্লাব সভাপতি মো. আবু কাওসার, সাধারণ সম্পাদক মো.মাজেদুল ইসলাম, বাংলাদেশ সমাচার প্রতিনিধি মো. আলমগীর হোসেন প্রমুখ।