চলারপথে রিপোর্ট :
বর্ণাঢ্য আয়োজনে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আজ ১২ মে শুক্রবার আন্তর্জাতিক নার্স দিবস পালিত হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে “আমাদের নার্স, আমাদের ভবিষ্যত” এই প্রতিপাদ্যকে নিয়ে শুক্রবার সকাল ১০টায় ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতাল চত্বরে থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া নার্সিং ইন্সটিটিউটের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের এক বর্ণাঢ্য র্যালি বের হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা শিল্পকলা একাডেমী চত্বরে এসে শেষ হয়।
পরে জেলা শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মোঃ শাহগীর আলম।
সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ একরামউল্লাহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোঃ বাহারুল ইসলাম মোল্লা, ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার উপসেবা তত্ত্বাবধায়ক (ভারপ্রাপ্ত) মমতাজ বেগম ও নার্সিং ইনস্টিটিউটের ইন্সট্রাকটর ইনচার্জ মোঃ সালাহ উদ্দিন মাধবর।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মোঃ শাহগীর আলম বলেন, নার্সিং একটি মহৎ পেশা। মানুষের সেবা করার মাধ্যমে ফ্লোরেন্স নাইটিংগেল সারা বিশ্বে নার্সদের আদর্শে পরিনত হয়েছেন। তিনি করোনাকালে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নার্সরা মানুষের সেবা করার জন্য নার্সদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, সেবার মানসিকতা নিয়ে কাজ করলে তোমরাও একদিন বিখ্যাত হতে পারবে।
আলোচনা সভা শেষে অতিথিগণ আধুনিক নার্সিংয়ের জনক ফ্লোরেন্স নাইটিংগেলের জন্মদিন উপলক্ষে কেক কাটেন। অনুষ্ঠানে সাংবাদিক শাহাদাৎ হোসেন, মাঈনুদ্দিন রুবেলসহ প্রায় দুই শতাধিক নার্সিং শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
র্যাবের মহাপরিচালক ও অতিরিক্ত আইজিপি এম. খুরশীদ হোসেন বলেছেন, জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনাক্রমে যে কোনো চ্যালেঞ্জ নিতে র্যাব প্রস্তুত।
তিনি আজ ১২ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের কাজীপাড়ার সরকারপাড়ায় র্যাব-৯-এর অধীনে ক্রাইম প্রিভেশন কোম্পানী-১ এর উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন।
এ সময় র্যাব মহাপরিচালক এম. খুরশীদ হোসেন আরো বলেন, জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশকে ভালোবাসতেন। আমরা যারা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বিশ্বাস করি, আমরা দেশকে ভালোবাসি, দেশের মানুষকে ভালোবাসি আমরা তারই অনুসারী। আমরা দেশের এবং মানুষের নিরাপত্তার জন্য কাজ করি।
তিনি বলেন, জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচনকালীন সময়ে আইন-শৃংখলা বাহিনী নির্বাচন কমিশনের অধীনে থাকবে। তারা যেভাবে পরিচালনা করেন ঠিক সেভাবে পরিচালিত হবে।
তবে আমাদের দায়িত্ব হবে সাধারণ মানুষের নির্বিঘ্নে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে তারা যাতে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন এই বিষয়টি নিশ্চিত করা। আমরা এটা দৃঢ়ভাবে করবো। এ ধরনের যে কোন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় র্যাব মানসিকভাবে প্রস্তুত।
পরে তিনি র্যাবের ক্রাইম প্রিভেনশন কোম্পানি-১ এর উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত সূধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন।
র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্ণেল মাহাবুব আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সূধী সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মোঃ শাহগীর আলম, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক খান রফিকুল ইসলাম এবং জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আল-মামুন সরকার।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন র্যাব-৯-এর অধিনায়ক উইং কমান্ডার মোঃ মুমিনুল হক।
অনুষ্ঠানে সিভিল সার্জন মোহাম্মদ একরাম উল্লাহ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ এ.এস.এম শফিকুল্লাহসহ র্যাবের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সূধী সমাবেশে র্যাবের মহাপরিচালক এম.খুরশীদ হোসেন বলেন, দেশের আগামী প্রজন্মকে ধ্বংস করার জন্য আর্ন্তজাতিকভাবে সুপরিকল্পিতভাবে দেশে মাদক ঢুকছে। মাদকের সাথে আপোষ করলে পরবর্তী প্রজন্মের কি হবে? দেশে এখন মেয়েরাও মাদক সেবন করে। উচ্চ ও মধ্যবিত্তের ছেলে মেয়েরা মাদকাসক্ত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা চলমান থাকলে আগামী ১০বছর পর কাউকে পাব না যারা আইনশৃংখলা বাহিনীতে যোগ দিতে পারবে।
তিনি বলেন, মাদক ব্যবসায় সংক্ষিপ্ত সময়ে অনেক টাকার মালিক হওয়া যায়। জনপ্রতিনিধিরাও মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত। মাদকের গড ফাদারদের গ্রেফতার করতে হবে। তাই মাদক পাচার প্রতিরোধে জনপ্রতিনিধিসহ সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
সূধী সমাবেশের পর র্যাব-৯-এর অধীনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ক্রাইম প্রিভেনশন কোম্পানী-১-এর বিভিন্ন অংশ ঘুরে দেখেন র্যাব মহাপরিচালক। এর আগে র্যাব মহাপরিচালক র্যাবের নিজস্ব হেলিকপ্টারে করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের কাজীপাড়ায় কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে অবতরণ করেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভাপতি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উদযাপনে দু’দিনের কর্মসূচি পালন করবে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগ। কর্মসূচির মধ্যে থাকবে আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী থাকায় বাদ জোহর মসজিদে মসজিদে দোয়া, মন্দির ও গীর্জায় সুবিধানজনক সময়ে প্রার্থনা, বাদ আসর সুর সম্রাট দি আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গনে মিলাদ ও কেককাটা। ২৯ সেপ্টেম্বর দুপুরের পর থেকে শহরের বিভিন্ন স্থান থেকে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের পক্ষ থেকে বর্ণাঢ্য আনন্দ শোভাযাত্রা ও বিকালে বঙ্গবন্ধু স্কয়ারে সমাবেশ।
আজ ১৬ সেপ্টেম্বর শনিবার সকালে শহরের হালদারপাড়াস্থ জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে ঘোষিত জেলা আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ এবং উপজেলা সভাপতি/সাধারণ সম্পাদকদের বৈঠক ও দুপুরে অনুষ্ঠিত বর্তমান কমিটির নেতৃবৃন্দ ও সাবেক জেলা আওয়ামী লীগ কমিটির নেতবৃন্দের বৈঠকে উপরোক্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপির সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা আল মামুন সরকারের সঞ্চালনায় এ সময় উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন, সহ-সভাপতি হাজি মো. হেলাল উদ্দিন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুল বারী চৌধুরী মন্টু, সাবেক কমিটির সহসভাপতি তাজ মো. ইয়াছিন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক গোলাম মহিউদ্দিন খান খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক এড. মাহবুবুল আলম খোকন, আবদুল হান্নান রতন, প্রচার সম্পাদক সৈয়দ নজরুল ইসলাম, দপ্তর সম্পাদক তানজিন আহমেদ, তথ্য গবেষণা সম্পাদক সৈয়দ মিজানুর রেজা, অর্থ সম্পাদক মহসিন মিয়া, শ্রম সম্পাদক শেখ মো. মহসিন, ত্রাণ সম্পাদক শেখ মো. আনার, শিল্প বানিজ্য সম্পাদক শাহআলম, উপপ্রচার সম্পাদক স্বপন রায়, উপদপ্তর সম্পাদক মো.মনির হোসেন, কার্যকরী সদস্য সেলিম রেজা হাবিব, রেহেনা বেগম রানী,সৈয়দ মো. আসলাম, কাচন মিয়া, ফারুকুল ইসলাম, মাহমুদুর রহমান জগলু, শাহআলম, খোকন কান্তি আচার্য, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম ভূঞা, সাধারণ সম্পাদক এমএএইচ মাহবুব আলম, পৌর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, জেলা যুবলীগ সভাপতি এড. শাহানুর ইসলাম, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এড. তাসলিমা সুলতানা খানম নিশাত, জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ সভাপতি এড. লোকমান হোসেন, সাধারণ সম্পাদক সাইদুজ্জামান আরিফ, জেলা পরিবহন শ্রমিকলীগ সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান তানিম, জেলা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন শোভন।
এছাড়া সভায় জেলার বিভিন্ন উপজেলার সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকগণ উপস্থিত ছিলেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সদর উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে সর্বজনীন পেনশন স্কীম সংক্রান্ত অবহিতকরন সভা আজ ২০ সেপ্টেম্বর বুধবার সকালে অনুষ্ঠিত হয়। সকাল সাড়ে ১০টায় সদর উপজেলা পরিষদ চত্বরে অনুষ্ঠিত অবহিতকরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মোঃ শাহগীর আলম।
সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ সেলিম শেখের সভাপতিত্বে অবহিতকরণ সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফিরোজুর রহমান, সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আসলাম হোসাইন, সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট লোকমান হোসেন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শামীমা আক্তার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোঃ জসিম উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক মোঃ বাহারুল ইসলাম মোল্লা, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম.এ.এইচ মাহবুব আলম ও ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আলামিনুল হক পাভেল।
অবহিতকরণ সভায় ¯স্লাইড (তথ্য চিত্র) প্রদর্শন করেন সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ সেলিম শেখ।
অবহিতকরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মোঃ শাহগীর আলম বলেন, বর্তমান সরকার গত ১৫ বছরে দেশে অনেক উত্তম কর্মকান্ড করেছেন। পেনশন স্কীম চালু বর্তমান সরকারের একটি সর্বোত্তম কর্মকান্ড। সর্বজনীন পেনশন স্কীমে মানুষের সুরক্ষার বিষয়টি রয়েছে।
জেলা প্রশাসক মোঃ শাহগীর আলম আরো বলেন, সঞ্চয় মানুষের শেষ জীবনের জন্য খুবই জরুরী। এই পেনশনের ফলে শেষ বয়সে কাউকে বৃদ্ধাশ্রমে যেতে হবে না, এটা তাদের শেষ অবলম্বন। এটা সরকারের একটা যুগান্তকারী পদক্ষেপ।
তিনি বলেন, সর্বজনীন পেনশন নিয়ে একটা মহল অপপ্রচার চালাচ্ছে। এটা একটা গুজব। সরকার কখনো কারো টাকা মারে না। তিনি সবাইকে সর্বজনীন পেনশন স্কীমে অর্ন্তভুক্ত হওয়ার আহবান জানান। অনুষ্ঠানে সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাগন, সাংবাদিক, জনপ্রতিনিধি ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
মাছ বেচা কেনা নিয়ে দু’দল গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষে শিশু-বৃদ্ধসহ অন্তত ১৫জন আহত হয়েছে। আজ ৩১ আগস্ট শনিবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার কান্দিপাড়ার মাইমল হাটিতে এই ঘটনা ঘটে। গুরুতর আহতদের মধ্যে একজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। স্থানীয় সূত্র, প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানায়, জেলা শহরের কান্দিপাড়া এলাকার মাইমলহাটির কয়েকজন বাসিন্দা শহরের আনন্দ বাজারে মাছের ব্যবসা করেন।
সকাল ১০টার দিকে আনন্দ বাজারে মাছ বেচা-কেনা নিয়ে কান্দিপাড়ার মাইমলহাটির ভাইট্টাইল্লা গোষ্ঠীর বাবুল মিয়ার সাথে একই মহল্লার মীর কাসিমের ছেলে সাগর মিয়ার কথা কাটাকাটি হয়।
কথা কাটাকাটির জেরে দুপুরে উভয় গোষ্ঠীর লোকজন দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পরে। এক পর্যায়ে উভয়পক্ষের লোকজন এক অপরের পক্ষের বাড়িঘরে হামলা ও ভাংচুর করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
সংঘর্ষে আহত মাইমল হাটির শিপন (২২), জুয়েল মিয়া (৩২), মেঘা মিয়া (১৫), নীরব মিয়া (১২), মোঃ রাজ কুমার (২৫), আকলিমা বেগম (২৫), শামীম মিয়া (৩০), আবদুল হান্নান (৬৭), বিশাল- (২৩), সাইমন (২৪), খোদেজা বেগম (৮০) ও নিরব (১৩) কে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চিকিৎসা দেয়া হয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় শিপনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
স্থানীয়রা জানান, শনিবার সকাল ১০টার দিকে আনন্দবাজারে মাইমলহাটির ভাইট্টাইল্লা গোষ্ঠীর মাছ ব্যবসায়ী হান্নাফ মিয়ার ছেলে শামীম, শাদিল, বাবুল এবং হান্নাফের ছোট ভাই জাকিরের ছেলে টিটনের সাথে আরেক মাছ ব্যবসায়ী একই এলাকার বড় গোষ্ঠীর মীর কাসিম মিয়ার ছেলে সাগর মিয়া ও তার পক্ষের শিপন মিয়ার মাছ বেচা-কেনা নিয়ে কথা কাটাকাটির ও তর্ক হয়। দুপুরের তারা কান্দিপাড়ার মাইমলহাটি এলাকায় নিজেদের বাড়িতে ফিরে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। বড় গোষ্ঠীর লোকজন ভাইট্টাইল্লা গোষ্ঠীর পক্ষের লোকজনের বাড়িঘরে হামলা ও ভাংচুর চালায়।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ মোজাফফর হোসেন বলেন, মাছ বেচা নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। তবে এ ঘটনায় উভয়পক্ষের কেউই থানায় কোনো অভিযোগ দায়ের করেনি।
চলারপথে রিপোর্ট :
পবিত্র ঈদ-উল ফিতরকে সামনে রেখে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জমে উঠেছে ঈদের বেচা কেনা। শহরের প্রতিটি মার্কেট, শপিংমল ও বিপনী বিতানগুলোতে এখন ক্রেতাদের উপচেপড়া ভীড়। গভীর রাত পর্যন্ত চলছে বেচা-কেনা।
মাকের্টের দোকান গুলোতে রয়েছে সব বয়সী মানুষেরই কাপড়-চোপড়ের বিপুল সমাহার। ক্রেতারাও পছন্দসই কাপড় কিনে হাসি মুখে বাড়ি ফিরছেন।
পবিত্র ঈদ-উল ফিতরকে সামনে রেখে ক্রেতারা যাতে কোন ধরনের ভোগান্তিতে না পড়েন সে জন্য মার্কেট কমিটিগুলোর পাশাপাশি জেলা পুলিশের পক্ষ থেকেও ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে। বসানো হয়েছে পুলিশী ছাউনী। এছাড়াও সিসি ক্যামেরা দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে দোকানগুলো।
প্রতিটি মার্কেটেই নারী ক্রেতাদের উপস্থিতি বেশী লক্ষ্য করা গেছে।
শহরের নিউ মার্কেট, পৌর আধুনিক সুপার মার্কেট, সমবায় মার্কেট, আশিক প্লাজা, ফরিদ উদ্দিন আনোয়ারা টাওয়ার, গ্রীণ সুপার মার্কেট, সিটি সেন্টার, বি-বাড়িয়া টাওয়ার, গোলাপ সুপার মার্কেট, সড়ক বাজার, পৌর হকার্স মার্কেটসহ প্রতিটি মার্কেটেই এখন ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়। এছাড়াও পাড়া মহল্লায় গড়ে উঠা বিভিন্ন কাপড়ের দোকানগুলোতেও ক্রেতাদের ভীড় লক্ষ্য করা গেছে।
দোকানগুলোতে দেখা গেছে মেয়েদের জন্য ডিসপ্লেতে সাজিয়ে রাখা হয়েছে স্কার্ট, টপস, থ্রিপিস, জিন্স প্যান্ট, জামদানি শাড়ি, বেনারশি, কাতান, সিল্ক, জর্জেট শাড়ী, জয়পুরি শাড়ী, লেহেঙ্গা, পার্টি গাউন, সফট কাতান, বেনারসি, ঢাকাই জামদানি, ভারতীয় জামদানি, রাজশাহী সিল্ক ও টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়ি।
ছেলেদের জন্য শার্ট, জিন্সের প্যান্ট, নবাবী পাঞ্জাবী, শেরওয়ানী, ফতুয়া, কাতুয়া, বিভিন্ন ধরনের গেঞ্জি।
সরজমিনে মার্কেটগুলো ঘুরে দেখা গেছে, সকাল ৯টার পর থেকেই মার্কেটগুলোতে ক্রেতারা আসতে থাকেন। বেলা বাড়ার সাথে সাথে বাড়ে ভীড়। বিকেল ৫টার পর ভীড় একটু কমলেও ইফতারের পরে আবার বাড়তে থাকে ভীড়। বেচা-বিক্রি চলে গভীর রাত পর্যন্ত। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় কাপড়-চোপড়ের দাম একটু বেশী।
শহরের সড়ক বাজারের শাড়ীর দোকান কমলালয়, ইলোরা, জান্নাত ফ্যাশন, শাড়ি বিচিত্রা, নীলাচল, আঁচল নামের দোকানগুলোতে দেখা গেছে মহিলাদের উপড়েপড়া ভীড়।
নিউ মার্কেটের পাঞ্জাবীর দোকান “পাঞ্জাবী ফ্যাশন” এ গিয়ে দেখা যায় হরেক রকমের পাঞ্জাবীর সমাহার।
শহরের কান্দিপাড়ার বাসিন্দা বরকত উল্লাহ ও রুমা আক্তার বলেন, ছেলে-মেয়েদের জন্য কাপড় কিনতে মার্কেটে এসেছি। এ বছর কাপড়-চোপড়ের দাম একটু বেশী।
সদর উপজেলার সুহিলপুরের বাসিন্দা, ফরিদ মিয়া বলেন, ছেলে-মেয়েকে নিয়ে এসেছ কাপড় কিনতে। কয়েকটা দোকান ঘুরে মেয়ের জন্য একটা থ্রি-পিস ও ছেলের জন্য একটা শার্ট ও জিন্সের প্যান্ট কিনেছি। তিনি বলেন, এ বছর কাপড়-চোপড়ের দাম একটু বেশী।
মধ্যপাড়ার রুবি বলেন, প্রচন্ড গরম ও দিনের বেলা মার্কেটগুলোতে অনেক ভীড় থাকায় রাতের বেলা কিনতে এসেছি। তবে এবার কাপড়ের দাম বেশী। ফরিদ উদ্দিন আনোয়ারা টাওয়ারের সুপার সপ লাইক ফ্যাশন হাউজের স্বত্বাধিকারী মোঃ এমরানুল হক বলেন, গত কয়েক বছরে করোনার কারনে বেচা-কেনা কম হয়েছে।
তবে এবার বেশ ভালো হচ্ছে, আগামী দিন গুলোতে আরো ভালো হবে বলে আশা করি। তিনি জানান, তার শো-রুমে শার্ট, গেঞ্জি, পাঞ্জাবি, জিন্স প্যান্ট, টি-শার্ট ও মহিলাদের থ্রি-পিস ও বাচ্চাদের পোশাক বেশি বিক্রি হচ্ছে।
নিউ মার্কেটের এলিগেন্স গার্মেন্টসের মালিক মাসুম শেখ জানান, আলহামদুলিল্লাহ বেচা-কেনা ভালো হচ্ছে। আগামীদিন গুলোতে আরো ভালো হবে বলে আশা করি।
নিউ মার্কেটের পাঞ্জাবীর দোকান পাঞ্জাবী ফ্যাশনের মালিক মোঃ রুহুল আমিন বলেন, গত কয়েক বছরের তুলনায় এ বছর বেশ ভালো বিক্রি হচ্ছে। গরমের জন্য সূতি পাঞ্জাবির চাহিদা একটু বেশী।
শহরের অভিজাত শাড়ীর দোকান কমলালয়ের মালিক আশিষ সাহা বলেন, পোশাক তৈরির সব উপকরণের দাম বেড়ে যাওয়ায় তাঁরাও বেশি দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। তবে এবার ঈদের বেচাকেনা ভালো। বিশেষ করে থ্রি-পিসের বেচাকেনা বেশি হচ্ছে। এছাড়াও তার দোকানে সব ধরনের শাড়ীই বিক্রি হচ্ছে।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ এমরানুল ইসলাম বলেন, ঈদকে সামনে রেখে সদর ও শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশ কাজ করছে। ঈদ বাজারের নিরাপত্তায় পুলিশের ১৫ টি পেট্রোল টিম, ৫ টা হোন্ডা টিম কাজ করছে।
পাশাপাশি জরুরি সেবার জন্য ৪টি টিম সার্বক্ষনিক প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পৌর মার্কেটের সামনে পুলিশের একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। রাতে মার্কেটে আসা কোন মানুষের যাতে কোন ধরনের কষ্ট না হয় সেজন্য পুলিশ টহল দিচ্ছে।