চলারপথে রিপোর্ট:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর বাজারে জমে উঠেছে মৌসুমী ফল তালের শাঁস বিক্রির ধুম। এদিকে বারছে বজ্রপাত, কমছে তাল গাছ। নবীনগর পৌরশহরের নবীনগর-কোম্পানীগঞ্জ রোড, উপজেলা গেইট, সরকারি কলেজ গেইট, সরকারি হাইস্কুল গেইট, বাজারের বিভিন্ন মোড়ে প্রতিদিন কাঁচা তাল নিয়ে বসছেন ব্যবসায়ীরা। প্রতি পিস তালের শাঁস (কাঁচা তাল) বিক্রি হচ্ছে ৪০/৫০ টাকা, এক কুড়ি তালের শাঁস ৪০০-৫০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। যেখানে এক কুড়ি পাকা তাল ৩৫০ টাকায় বিক্রি হয়। উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য মতে, উপজেলার ২১ ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় ৭ হাজার ৫০০ টি তাল গাছ রয়েছে। এর মধ্যে শ্যামগ্রাম, রছুল্লাবাদ, রতনপুর, সাতমোড়া, লাউর-ফতেহপুর, বিটঘর, শিবপুর, বড়িকান্দি, সলিমগঞ্জ ইউনিয়নে বেশী তাল গাছ রয়েছে। নবীনগর বাসিন্দা আব্দুল রহিম জানান- এখন আর আগের মত তাল পাওয়া যায় না। আগে রাস্তার পাশে তালের রস নিয়ে বসত, সেটি এখন আর দেখা যায় না। এখন কাঁচা তালের শাঁস খাচ্ছি। কিছু দিন পর এটিও আর খেতে পারব কিনা জানি না। কেননা যে ভাবে তালের গাছ কাটা হচ্ছে, তাতে বেশি দিন আর এ গুলো খাওয়া যাবে না। আগে এক হালি (৪টি) তাল কিনতে পারতাম ৫০-৮০ টাকায়, এখন ২০০ টাকায়ও মিলছে না। ক্রেতা মাজেদুল ইসলাম বলেন, তাল একটি মৌসুমী ফল, এটি অনেক সুস্বাদু ও উপকারী। তাল গাছ কমে যাওয়ায় আগের থেকে এখন দাম বেশী। নবীনগর পৌরসভার মাঝিকাড়া গ্রামের বাসিন্দা মৌসুমী ফল ব্যবসায়ী আবুল মিয়া – এখন সরকারি হাইস্কুল গেটের পাশে প্রতিদিন তাল বিক্রি করছেন। তিনি বলেন, আমি পাঁচ বছর ধরে এই ব্যবসা করছি। গত দুই বছর করোনার কারণে ভাল ভাবে ব্যবসা করতে পারিনি আশা করি এ বছর আমি স্বাবলম্বী হব। এ বছর তালের দাম বেশী । ১২ বছর ধরে নবীনগর সরকারি কলেজ গেইটে তালের ব্যবসা করেন আব্দুর মোতালিব, তিনি বলেন- তখন তালের কুড়ি ছিল ১৭০ টাকা। এরপর বাড়তে বাড়তে বর্তমানে এক কুড়ি তাল বিক্রি হচ্ছে ৪০০/৫০০ টাকায়। আমি প্রতিটা গাছ কিনেছি ২৫০০ টাকায়। সেই গাছের তাল বিক্রি করছি ৬৫০০-৭৫০০ টাকায়। প্রতিটা গাছে ৩০০-৩৫০০ টাকা লাভ হয়। নবীনগর উপজেলা কৃষি কর্মকতা জাহাঙ্গীর আলম লিটন বলেন, তালের শাঁস সুস্বাদু ও পুষ্টিকর, তালের রসও অনেক উপকারী। তালের রস দিয়ে গুড়, মিছরি তৈরি হয়। বৈশ্বিক আবহাওয়ার কারণে তাল গাছ দিন দিন কমে যাচ্ছে। তবে আমরা কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে তাল গাছ বাড়ানোর জন্য একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছি। নবীনগর কৃষি অফিস জানায় “দুর্যোগ ব্যাবস্থাপনা” মন্ত্রাণালয় একটি লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিয়ে বজ্রপাত সহনশলী এই তাল গাছের বীজ ও চারা রোপণ করার উদ্দোগ নিয়েছে। দিন দিন তালগাছ কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, গ্রামাঞ্চলের মানুষ তালগাছের গুরুত্ব না বুঝে কেটে ফেলছে। যেহেতু তাল গাছে বছরে একবার ফলন হয়, লাভ কম, সে কারণে তালগাছ কেটে ফল বা কাঠের গাছ রোপন করছে, সে কারণে তালগাছ কমে যাচ্ছে। তালগাছে ফলন কম হলেও দুর্যোগ (বজ্রপাত) থেকে মানুষকে রক্ষা করে।
চলারপথে রিপোর্ট :
যৌথ বাহিনীর অবৈধ অস্ত্র ও চিহ্নিত সন্ত্রাসী উদ্ধার অভিযানে নবীনগরে ২ জন সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ীকে নিজ বাড়ি থেকে আটক করেছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলায় নুরজাহানপুর পশ্চিমপাড়ায় আজ ১২ অক্টোবর শনিবার ভোরে আনুমানিক ৪টায় সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে যৌথ বাহিনী অভিযান পরিচালনা করা হয়।
এতে সন্ত্রাসী ও অবৈধ মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের অবস্থান সম্পর্কে প্রাপ্ত গোপন সূত্রের তথ্যের ভিত্তিতে নবীনগর উপজেলায় নুরজাহানপুর পশ্চিমপাড়ায় ২ জনকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃতরা হলেন- মো. মনেক মিয়া (পিতা মৃত সৃদন মিয়া) ও মো. সুমন মিয়া (পিতা কালা মিয়া)। এই ২ জন সন্ত্রাসীকে স্থানীয় নিজ বাড়ি হতে আটক করা হয়। তাদের কাছ থেকে ১ টি চাকু, ১ টি নম্বর প্লেট বিহীন সুজকি মোটর সাইকেল, ৩ টি অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল, ১ টি বাটন মোবাইল ও নগদ ৪০,০০০ টাকা উদ্ধার করা হয়।
পরবর্তীতে গ্রেফতারকৃত ব্যক্তি এবং উদ্ধারকৃত দ্রব্যসামগ্রী নবীনগর থানায় হস্তান্তর করা হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
নবীনগরে মেঘনা নদী থেকে বালু উত্তোলনকে কেন্দ্র করে দুর্বৃত্তদের গুলিতে ৫ জন বালু মহলের ইজারাদার ও শ্রমিক গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। ১ সেপ্টেম্বর রবিবার সন্ধ্যায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার বড়িকান্দি ইউনিয়নের সোনাবালুয়া ঘাটে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় প্রায় শতাধিক গুলির আওয়াজে এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে।
গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আহত চারজনকে নবীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর আশঙ্কাজনক অবস্থায় কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করে।
অন্য ১জনকে উপজেলার সলিমগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহতরা হলেন কবির মিয়া (৪৫), সফিদ মিয়া (৪০), খলিল মিয়া (৪২), ফারুক মিয়া ও আলকাছ মিয়া (৩৬)। তারা সবাই উপজেলার ধরাভাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা।
এলাকাবাসী ও বালুমহল ইজারাদার সূত্রে জানা যায়, নবীনগর উপজেলার বড়িকান্দি ইউনিয়নের জাফরাবাদ মৌজায় অবস্থিত মেঘনা নদী থেকে সম্প্রতি প্রায় ৭০ কোটি টাকা ব্যয়ে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী বালু উত্তোলনের ইজারা পায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মুন্সি এন্টারপ্রাইজ।
ইজারা পাওয়ার পর থেকে মেঘনা নদীর জাফরাবাদ ও নতুন চর বালু মহালের বালু উত্তোলন শুরু করে। তবে মেঘনা নদীর ওপর প্রান্ত অবস্থিত নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার কিছু লোক এই এলাকা থেকে বালু উত্তোলন করতে মোটা অংকের টাকা চাঁদা দিতে হবে বলে বারবার দাবি করে আসছিলেন। ইজারাদার থেকে চাঁদার টাকা না পেয়ে গত দুদিন থেকে অবৈধভাবে ৬টি ড্রেজার দিয়ে চুরি করে বালু উত্তোলন করে নিয়ে যাচ্ছিল দুর্বৃত্তরা। তখন স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়ে শরণাপন্ন হন ইজারাদার কর্তৃপক্ষ।
তাতে ক্ষিপ্ত হয়ে দুর্বৃত্ত সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা রবিবার সন্ধ্যায় ২/৩টি স্পিডবোটযোগে এসে বালু মহালের ক্যাশ কাউন্টারে হামলা চালায়। এ সময় শ্রমিকদের ওপর অতর্কিতভাবে এলোপাথাড়ি গুলি ছুঁড়ে ৫ জনকে গুরুতর আহত করে।
নবীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আফজাল হোসাইন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘ঘটনাটি আমরা শুনেছি, অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’
চলারপথে রিপোর্ট :
নবীনগর উপজেলায় ধানী জমিতে সেচ দিতে মোটর চালু করতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে হয়ে শামিম মিয়া (৩২) নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনাটি ঘটেছে আজ ১৫ জানুয়ারি বুধবার সকালে নবীনগর উপজেলার নাটঘর ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামের ধানী জমিতে। নিহত শামিম মিয়া একই গ্রামের মোল্লাবাড়ির হুমায়ুন মিয়ার ছেলে৷
হাসপাতাল ও ঘটনা সূত্রে জানা যায়, বিকালে স্থানীয় মোবারক মিয়ার ধানী জমিতে শামিম মিয়া সেচ দিতে যান। এ সময় জমির বৈদ্যুতিক খুঁটিতে কারেন্টের তার লাগিয়ে মোটর চালু করতে গিয়ে শামিম শক লেগে জমিতে ছিটকে পড়েন।
পরিবারের লোকজন শামিমকে উদ্ধার করেন জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. তাজুল ইসলাম মৃত ঘোষণা করেন।
এ ব্যাপারে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মোজাফ্ফর হোসেন জানান, নবীনগর থানাকে অবগত করেছি। নিহতের লাশ জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মর্গে রাখা আছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
উপমহাদেশের শাস্ত্রীয় সঙ্গীত জগতের কিংবদন্তি ‘সুরসম্রাট’ খ্যাত ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর নিজ জন্মভূমিতে ৫২তম মৃত্যুবার্ষিকী যথাযথ মর্যাদায় নানান কর্মসূচির মাধ্যমে পালিত হয়েছে।
আজ ৬ সেপ্টেম্বর শুক্রবার সকালে নবীনগরে শিবপুর সুর সম্রাট আলাউদ্দিন খাঁ ডিগ্রি কলেজের উদ্যোগে আলাউদ্দিন খাঁর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও আলোচনা সভা, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আলাউদ্দিন খাঁ মহাবিদ্যালয় হল রুমে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোহসীন সরকারের সভাপতিত্বে ও প্রভাষক গোলাম কিবরিয়ার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর ফরহাদ শামীম।
আরো বক্তব্য রাখেন নবীনগর থানার অফিসার্স ইনচার্জ আফজাল হোসেন, অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম, ইউপি চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান, এটিএম আবদুল্লাহ, নবীনগর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি জালাল উদ্দিন মনির। শিশু খাঁন, রানা শামীম, শাহীন বিশ্বাস প্রমুখ।
আলোচনা সভা শেষে ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ সাহেবের রুহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া মোনাজাত করা হয়। পরে অতিথিগণকে সাথে নিয়ে উস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর নিজ হাতে গড়া শিবপুর খাঁ বাড়ি জামে মসজিদে জুম্মার নামাজ আদায় করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর ফরহাদ শামীম বলেন, ঐতিহ্যেবাহি এই মসজিদটি সংস্কার ও আলাউদ্দিন খাঁর নামে কলেজের প্রবেশ পথে একটি তোরণের নির্মাণ কাজ দ্রুতই শুরু করা হবে।